হামিংবার্ড পর্ব ৩০
তাসমিয়া তাসনিন প্রিয়া
কখন থেকে তামান্নার পিছুপিছু ঘুরছে তালহা। কিন্তু বেচারা কথার সুযোগটা পাচ্ছে কই? তামান্না আজ তালহাকে পাত্তাই দিচ্ছে না।
“ এই তামু…. কী হয়েছে? আরে শোনো না!”
“ আমার হাতে অনেক কাজ এখন। পরে কথা শুনবো। “
তালহা অধৈর্য হয়ে গেছে। হুট করে তামান্নার সামনে গিয়ে দাঁড়াল সে। চমকাল তামান্না। তালহা একপা সামনে এগিয়ে শুধালো,
“ কী হয়েছে, বলো?”
“ আপনি একটা বোকা, মাথামোটা। “
এবার সত্যিই বোকা বনে গেলো তালহা। গলা খাঁকারি দিয়ে শুধালো,
“ শোনো তামান্না ভাটিয়া, তুমি এভাবে বলতে পারো না আমাকে। কী করেছি আমি, হ্যাঁ? “
“ কী করেননি তাই বলুন। আপনার পেত্নী মার্কা বোন জুস দিলো আর আপনি সেটা ভাবিকে দিলেন কেন? আপনি বুঝতে পারেন না, সাবিহা আপা, অরা ভাবিকে সহ্য করতে পারে না? আপনার বোন আরিশ ভাইকে পছন্দ করে। এজন্যই সব সময় ভাবিকে বিপদে ফেলতে চায়। বোকারাম কোথাকার। “
তামান্নার কথাগুলো হজম করতে কিছুটা সময় লাগলো তালহার। তবে বুঝতে অসুবিধা হলোনা। বিষয়টা নিয়ে তালহা নিজেও ভেবেছিল একবার, জুস খেয়েই অরার ওরকম হয়েছে। কিন্তু সাবিহা যে এতটা নিচ কাজ করতে পারবে সেটা ভাবনায় আনতে পারেনি তালহা।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“ আমি আসলেই বুঝতে পারিনি তামু। আমি সাবিহার সাথে কথা বলব। এভাবে অন্যের সংসারে সমস্যা সৃষ্টি করলে ওর কপালেও শনি আছে। হয় ঠিকমতো লেখাপড়া করবে নয়তো বিয়ে দিয়ে দেবো। “
তালহার কথায় তামান্না বেশ খুশি হয়েছে। মুচকি হাসল সে।
“ এবারে ঠিক আছে। “
তালহা কেশে উঠল একবার, তারপর মুচকি হাসল।
“ এখন বলো, আমি বোকারাম? “
“ মোটেও না। হ্যাঁ বুদ্ধি একটু কম কিন্তু পুরোপুরি না। “
তামান্না এ কথা বলে দ্রুত অন্যদিকে চলে গেলো। বেচারা তালহা একা একাই দাঁড়িয়ে রইলো সেখানে।
“ মেহরাব! “
আরিশের ডাক শুনে মেহরাব পিছনে ফিরে তাকাল। দেখল, আরিশ তার দিকেই এগিয়ে আসছে।
“ হ্যাঁ, বল। ভাবির কী অবস্থা এখন? “
“ আরে কোনোমতে শুইয়ে দিয়ে এলাম। তুই আর তালহা মিলে সবটা হ্যান্ডেল করে নে ভাই। “
“ ওকে, তুই রুমে যা। “
আরিশ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। মুচকি হেসে রুমের দিকে এগোল।
একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা নয়নার জীবনকে বদলে দিয়েছে চিরতরে। প্রতিদিন পাড়ার মানুষের কটাক্ষ, স্কুলের সহপাঠীদের বিদ্রুপ—সব মিলিয়ে হাঁপিয়ে ওঠে নয়না। সমাজটা যেন বরাবরই অন্যায়কারীর পাশে দাঁড়ায়, কিন্তু যে অন্যায়ের শিকার– তার জীবনটাই হয়ে পড়ে বিচারের কাঠগড়ায়। ধর্ষককে নিয়ে কেউ মুখ খোলে না, অথচ ভিক্টিমকে শুনতে হয় আজীবনের অপমান।
পড়ার টেবিলের সামনে বসে আছে নয়না, কিন্তু মনটা তার কোথাও হারিয়ে গেছে। কিছুক্ষণ আগে রোকসানা মল্লিক নয়নার ঘরের দরজায় উঁকি দিয়ে গিয়েছেন। সামনে বার্ষিক পরীক্ষা—নিয়েই বেশ উদ্বিগ্ন তিনি। মেয়ের পড়াশোনার দিকে তার নজর সবসময়ই তীক্ষ্ণ। নয়নার বাবার সঙ্গে কথা বলে একজন হোম টিউটর রাখার পরিকল্পনা করছেন রোকসানা।
“ লা লা… লা.. আআআ.. লা লা লা….”
ঘরে ঢুকেই অরার কণ্ঠে ভেসে আসা গানের সুরে থমকে গেল আরিশ। কিন্তু পরমুহূর্তেই তার দৃষ্টি স্থির হয়ে গেল এক অসম্ভব দৃশ্যের ওপর। নিজের টিশার্ট আর হাফপ্যান্ট পরে অরা দাঁড়িয়ে আছে বিছানার ওপর – চুলগুলো এলোমেলো খোলা, চোখে একধরনের নিষ্পাপ দুষ্টুমি। টলমলে পায়ে হাঁটছে, হঠাৎ বসে পড়ছে আবার হেসে উঠছে। দৃশ্যটা যেন স্বপ্ন আর বাস্তবের সীমারেখা ঘোলা করে দিচ্ছে। আরিশ গিলে ফেলল এক ঢোক নিঃশ্বাস – অরাকে এতটা মোহময়, এতটা কামনাময় আগে কখনো দেখেনি।
“ ওলে… ওলে… আমার রাগী ভূতটা এসেছে রে… “
আরিশকে দেখেই খিলখিল করে হেসে উঠল অরা। মুহূর্তেই বাস্তবে ফিরল আরিশ। দরজাটা ধীরে ধীরে টেনে বন্ধ করে দিল সে, চোখে একরকম অস্পষ্ট তাড়া। তারপর নিঃশব্দে অরার দিকে এগিয়ে গেল– বিছানার ওপরে বসে থাকা, এলোমেলো চুলের সেই উচ্ছ্বল মেয়েটার দিকে।
“ তুমি না বললে, তোমার আসতে দুই মিনিট লাগবে? এই বুঝি দুই মিনিট? আমি কি অশিক্ষিত? সংখ্যা বুঝি না? শোনো, এক.. দুই… তিন তারপর হবে নয়। তুমি নয় মিনিট লেট করেছ রাগী ভূত। “
আরিশ অরাকে ধরে আস্তে করে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে বলল,
“ এমন ভয়ংকর পড়াশোনা কে শেখাল তোমাকে , হামিংবার্ড?”
অরার দুষ্টু হেসে এসে আরিশের কোলে চেপে বসল। দুহাতে গলা জড়িয়ে ধরে কয়েকবার ঘনঘন চোখের পলক ফেলল। আরিশ ঠিকমতো হাসতেও পারছে না, যদি তার বউ রাগ করে!
“ তুমি শিখিয়েছ, রাগী ভূত। তোমার দোষ সব। “
আরিশ ধীরে ধীরে অরাকে কোলে তুলে নিল। অরার হাত দুটো তার গলায়, আর পা দুটো শক্ত করে জড়িয়ে আছে আরিশের পিঠের চারপাশে। মেয়েটা যেন পুরোটা ভরসা করে নিজের ওজনটা তুলে দিয়েছে তার প্রিয় মানুষের ওপর। হালকা হাসিমুখে, মাঝে মাঝে কিছু ফিসফিস কথা চালাচালি, আরিশ এগিয়ে চলেছে ওয়াশরুমের দিকে।
“ ইয়েস, ম্যাডাম। সব দোষ আমার। তুমি এখন লক্ষ্মী মেয়ের মতো গোসল সেরে নাও। “
ওয়াশরুমে ঢুকে দরজা টেনে বন্ধ করে দিল আরিশ। তারপর ধীরে ধীরে অরাকে কোল থেকে নামিয়ে দাঁড় করাল। চারপাশে একবার চোখ বুলিয়ে নিল। যেন এই ঘরে প্রথমবার ঢুকেছে অরা।
অরার ভেজা চুল, এলোমেলো মুখের হাসি, আর চোখে নেশার ঝাপসা দৃষ্টি – সব মিলিয়ে মেয়েটা অসম্ভব রকমের মোহময় লাগছে। আরিশ ভেতর ভেতর টাল খাচ্ছে, ইচ্ছেগুলো যেন দম বন্ধ করে জাগতে চাইছে। কিন্তু অরা এখন পুরোপুরি হুঁশে নেই – এই ভাবনাটাই যেন তাকে থামিয়ে রাখল। নিজেকে কঠোরভাবে সামলে নিল সে।
নিজেকে বলল,
‘এখন না, আরিশ… একটুও না।’
“ তুমিও গোসল করবে?”
বাথটাবের দিকে এক পা এগিয়ে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করল অরা, একেবারে সরলভাবে। আরিশের চোখ দুটো যেন চেপে ধরেছে অরার শরীরের প্রতিটি রেখা। এলোমেলো চুল, হাঁটু অবধি পরা প্যান্ট, আর টি-শার্ট যা পেটের ওপর উঠে গেছে – এই ভঙ্গিমায় অরা যেন এক অদ্ভুত মোহ ছড়িয়ে পড়ছে। অবাক হয়ে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল আরিশ, কিন্তু কিছু বলার আগেই অরা আচমকা পানিভর্তি বাথটাবে বসে পড়লো। আরিশ কিছুটা চমকে ওঠে, শরীরে এক অদ্ভুত টান অনুভব করে।
“আরিশ বাবু? ও আরিশ বাবু? এদিকে এসো না?”
অরার গলা শুনে আরিশ ঠোঁট কামড়ে কিছুক্ষণ হেসে নিল। মাথায় একটা খুনসুটি ঘুরপাক খাচ্ছে – আগামীকাল যখন অরা আবার সব কিছু মনে করবে, তখন তার মুখটা কীভাবে বদলে যাবে, সেই ভাবনাটাই যেন তাকে আনন্দিত করছে।
“আমি বাবু?”
“ওলে… ওলে… তুমি তো বাবু না, তুমি হচ্ছ রাগী ভূত!”
অরার কথা শুনে আরিশ হেসে ফেলল – যেন অরার এই হাস্যকর ডাকেই এক রকম শিহরণ অনুভব হচ্ছে।
“ ওহ হামিংবার্ড! আর আবোলতাবোল বকতে হবে না। এসো মাথা ধুইয়ে দিচ্ছি, গোসল সেরে নিবে। ভালো লাগবে। “
আরিশ অরার মাথা ও চুল ধুয়ে দিতে এগিয়ে গেলে, অরা হঠাৎ করেই তাকে বাথটাবের ভেতর ফেলে দিল। তার চোখে-মুখে খুশির ঝিলিক, যেন অরা খুব মজা পেয়েছে। আরিশের শরীরে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লো। অরার ভেজা শরীর, চুলের লকগুলো আর পানির ছোঁয়া একে অপরকে ঘিরে। অরার উন্মুক্ত পেট, স্পষ্ট বক্ষ বিভাজনের খাঁজ, আর পানির গায়ে ছিটানো স্নিগ্ধতা– সব কিছুই যেন আরিশকে এক ঝলকে অন্য জগতে নিয়ে যাচ্ছে। ফর্সা উরুর ওপর পানির ছোঁয়া তার মনোযোগ পুরোপুরি অরার দিকে টেনে নিচ্ছে । নিজেকে সামলাতে, নিজের সাথে যুদ্ধ করে যাচ্ছে আরিশ। যার ফলস্বরূপ অস্থিরতা গ্রাস করে নিচ্ছে তাকে।
“ তুমি সব সময় আমাকে ব্যথা দিয়ে আদর করো কেনো?”
অরার কথাগুলো বড্ড করুণ শোনালো। আরিশ তার দিকে মনোযোগ দিলো এবার। অরাকে কোলের ওপর বসিয়ে, জড়িয়ে ধরল সে।
“ ডাজ ইট হার্ট মোর?”
“ খুব, খুব। “
“ আমি তোমাকে আঘাত দিতে চাই না পাখি। কিন্তু আমার স্পর্শই এমন, যেখানে ছুঁই দাগ হয়ে যায়। “
“ তাহলে ছুঁতে হবে না, যাও। তুমি পঁচা। “
“ তোমার কাছাকাছি না এসে তো আমি থাকতে পারবো না, পাখি। এই যে এখন দূরে আছি, কেবল তোমার সম্মতির অপেক্ষায়। “
“ কীসের সম্মতি? “
আরিশের কপালে আঙুল ছুঁইয়ে শুধালো অরা।
“ তোমাকে নিজের করে নেওয়ার জন্য সম্মতি। “
“ না, করেছে কে?”
মুচকি হাসল আরিশ। অরার হাতটা ধরে কপাল থেকে নিচে নামিয়ে আনলো।
“ মাতাল অবস্থায় কেউই এসবে ‘না’ করে না, হামিংবার্ড। “
অরা কিছু বলল না। এক মুহূর্তের জন্য, আরিশ স্থির হয়ে রইল, কিন্তু তারপর অরার আচমকা কাছাকাছি চলে আসা তার মনোযোগ পুরোপুরি টেনে নিল। অবাক করে দিয়ে, অরা ধীরে ধীরে আরিশের ঠোঁটের দিকে এগোতে শুরু করল। শুকনো ঢোক গিলল আরিশ, যেন তার গলা আটকে এসেছে। তার হৃৎস্পন্দন দ্রুত হয়ে উঠল, যেন হৃদয় তার বুকের ভেতরটা ভেঙে বের হয়ে আসতে চাচ্ছিল। অরা এখন একদম তার ঠোঁটের কাছে, দুজনের মধ্যে একটা অবর্ণনীয় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
“ ডোন্ট ডু দিস, হামিংবার্ড। আই ওয়ন্ট বি অ্যাবল টু কন্ট্রোল মাইসেলফ। পরে তুুমি কষ্ট পাবে, তোমার খারাপ লাগবে। প্লিজ ডোন্ট ডু দিস। “
“ আমি এটাই করবো, রাগী ভূত। “
অরা জানে না সে আগুনে ঘি ঢালতে চলেছে। সেই আগুন যার তাপ সহ্য করার ক্ষমতা অরার নেই। আরিশ অরাকে থামাতেও পারবেনা। তার ভেতরের কামনাবাসনা তাকে অরাকে থামাতে দিচ্ছে না৷ মনে মনে চাইছে অরা তাঁকে গভীরভাবে ছুঁয়ে দিক। তারপর! অরা আরিশের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ছুঁইয়ে দিল। এরপর সে তার চুলগুলো শক্ত করে আঁকড়ে ধরে ঠোঁটের সমস্ত মধু পান করতে শুরু করল। আরিশ দু’বার লম্বা নিঃশ্বাস ফেলল, তারপর অরার কোমরে শক্ত করে হাত রাখল। সে নিজেকে পুরোপুরি অনুভূতিতে মগ্ন করে দিল, যেন মুহূর্তটি তার জন্য এক নতুন অনুভবের জায়গা হয়ে উঠেছে। ধীরে ধীরে ব্যথায় বিষিয়ে উঠল অরার কোমল ঠোঁট। মেয়েটা এখন সরে যেতে চাইছে কিন্তু উন্মাদ আরিশের আগ্রাসী থাবা তাকে সরতে দিচ্ছে না।
কিছুক্ষণ পর, আরিশ বুঝতে পারল, অরা এখন নড়াচড়া করছে না। বুকটা ধক করে উঠল, যেন এক মুহূর্তের জন্য সময় থেমে
গেছে। অরা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে। আরিশের শরীর থেমে গেল, নিঃশ্বাসের গভীরতা আরও বেড়ে গেল। তার মন দুর্বিষহ অনুভূতির মধ্যে আটকে গেল। নিজেকে সামলানো কঠিন হয়ে পড়ছে। কয়েক মিনিট এমনই বসে রইল সে, মনে মনে নিজেকে বোঝাতে চেষ্টা করছিল- এই উত্তেজনা, এই আবেগ, এসব সঠিক কিনা। মনে মনে নিজেকে অনেক কিছু বোঝাতে লাগল।
“ অরা এখন নিজের মধ্যে নেই, বেহুঁশ সে৷ এই মুহুর্তে কিছু করা সম্ভব না। এটা অন্যায়। অরা জানলে ভীষণ কষ্ট পাবে। নাহ, আরিশ! তুই যথেষ্ট বুঝদার। এমন করতে পারিস না তুই। মেয়েটা হুঁশে নেই, তাকে দেখভাল করতে হবে। “
নিজেকে নিজেই মোটিভেট করতে লাগলো আরিশ।
পার্টি শেষে সবাই যার যার বাসায় চলে গিয়েছে। বাসার লোকজনও যার যার রুমে চলে গিয়েছে, কেবল সাবিহা ড্রইংরুমে বসে আছে। মেহরাব বাসায় ফেরেনি। আরিশের সাথে দেখা করে তারপর বাসায় ফিরবে। সাবিহার দিকে তাকাতেই কিছুটা ভাবুক হয়ে গেলো মেহরাব। তারপর মনে পড়লো, কিছুক্ষণ আগে এই মেয়েটাই তালহাকে একটা জুসের গ্লাস দিয়েছিল। আর তারপর কী হয়েছে সেটা সবাই জানে। ক্রুর হাসল মেহরাব। ধীরপায়ে সাবিহার দিকে এগোতে লাগলো।
“ হেই বিউটি কুইন, একা একা বসে আছো কেনো?”
আচমকা পুরুষালি কণ্ঠ শুনে মাথা উঁচিয়ে সামনে তাকাল সাবিহা। সাদা রঙের পোশাকে শ্যামবর্ণ মেহরাবকে দারুণ লাগছে।
“ সেটা আপনাকে কেনো, বলব? হু আর ইউ?”
“ নাইস কুয়েশ্চন। না বললে, বলতে হবে না। তুমি জাস্ট আমাকে এটা বলো, অরার ড্রিংকসে তুমি এলকোহল মিশিয়েছিলে কেনো?”
চমকাল সাবিহা৷ এই ভদ্রলোক কীভাবে জানলেন সেসব? ইতস্ততভাবে বলল সাবিহা,
“ কীসব বলছেন? “
“ ভুল কিছু তো বলিনি, বিউটি কুইন। “
“ তামান্না? তামান্না? “
আরিশের আগমনে নড়েচড়ে বসল সাবিহা। মেহরাব বসা থেকে উঠে দাঁড়াল।
“ তোর জন্য অপেক্ষা করছিলাম। ভাবি কেমন আছে এখন?”
সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে এলো আরিশ। এখনও ভেজা জামাকাপড় পরে আছে সে। সমস্ত শরীর থেকে পানি পড়ছে।
“ আগের মতোই। “
“ ঠিক হয়ে যাবে। তোর এই হাল কেনো?”
“ আর বলিস না! যাগগে, সাবধানে যাস। “
“ ওকে দোস্ত। পরে দেখা হবে। “
আরিশ হাসিমুখে বিদায় দিলো মেহরাবকে। এরমধ্যে তামান্নাও ড্রইং রুমে এসে উপস্থিত হয়েছে।
“ ভাইয়া ডেকেছেন?”
“ হ্যাঁ। রুমে যা। তোর ভাবির জামাকাপড় রাখা আছে, চেঞ্জ করিয়ে দে। “
হামিংবার্ড পর্ব ২৯
তামান্না মাথা নেড়ে দোতলার দিকে এগোল। সাবিহার ঠোঁটের কোণে মুচকি হাসি ফুটেছে। নিজের বউয়ের পোশাক চেঞ্জ করার জন্য অন্য কাউকে বলার মানে হলো নিশ্চয়ই ওদের মধ্যে স্বামীস্ত্রীর সম্পর্ক নেই। আনন্দে নাচতে ইচ্ছে করছে সাবিহার। আরিশ ধীর পায়ে দোতলায় যাচ্ছে। অরাকে অন্যভাবে দেখলে কোনোভাবেই নিজেকে সামলাতে পারতো না আরিশ৷ সেই কারণেই তামান্নাকে জামাকাপড় চেঞ্জ করতে পাঠাল।