Violent love part 7

Violent love part 7
Mariam akter juthi

‘তুই কোলে না উঠলে কি তোকে জোর করে উঠাতে পারতো?
‘আমাকে মারবেন না, সত্যি বলছি আর কোন দিন রাদিফ ভায়ের কোলে উঠবো না।
‘কোরবো না,যাবো না, খেলবো না, এই কথা গুলো শুনতে শুনতে আমার মাথাটা জ্বালাপালা হয়ে গেছে। কিন্তু আজ আর আমি তোর এই কথায় ভুলছি না,আজ তোকে এমন শাস্তি দিব যা তোর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মনে থাকবে। আগুন চোখে কথা গুলো বললো।
জুথি আরিশের কঠিন কথা শুনে, জোরে জোরে কান্না করে বললো,

‘আ,আপনাকে আমার ভী,ভীষণ ভ,ভয় লাগছে, প্লিজ এইখান থেকে আ,আমাকে যেতে দিন।
আরিশ জুথির কান্নায় পাত্তা দিল না, নিজের মতন করে খাটের পাশে রাখা ছোট টেবিলের ডয়ার খুলে দাঁড়ালো কিছু একটার মত বের করে, ডান হাতে নিয়ে বাম হাতের আঙ্গুলের উপর এপিঠ ওপিট করে বাঁকা হাসলো। আড় চোখে জুথির দিকে তাকিয়ে ডেভিল হাসি দিয়ে ওর একদম কাছে চলে যায়। এটা দেখে জুথি ভয় পেয়ে আরো দু’পা পিছিয়ে গিয়ে বলল,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

‘আ,আমি কিন্তু সবাইকে ডাকবো জোরে জোরে চিৎকার করব, বলে দিলাম।
‘ও আচ্ছা তাই? তো ডাক না, দেখি কে আজকে তোকে আমার হাত থেকে বাঁচায়?
‘আমি ওনার সাথে কথা বললে আপনি সবসময় এমন করেন কেন? আয়ান ভাইয়া ও তো আমার ভাই হয়, রাদিফ ভায়ের মতো। কই আয়ান ভাইয়ের সাথে খেললে কথা বললে তো আপনি এমন করেন না? নাক টেনে টেনে।
আরিশ সব কথা শুনলো, তবে ওর কানে একটা কথাই বারবার বাজলো, ওনার সাথে শব্দ টা। তাই তেরে গিয়ে পরপর দুটো থাপ্পর দিয়ে বললো,

‘খুব শখ রাদিফের মতো ছ্যাঁচড়া কে উনি বানানোর তাই না? তোকে কে তো আমি,,, আরিশ বড়ো বড়ো নিঃশ্বাস ফেলে আবারো বলল, — ‘ ওই *বালে তোকে কোলে নিয়েছিল তাই না? তোর কোমর তোর পেট ওই নরম হাত স্পর্শ করেছিল তাই না? ঠিক আছে তোর যেই যেই জায়গা স্পর্শ করেছে তোর সেই সব জায়গা আমি ছিন্নভিন্ন করে দিব। আরিশের কথাটা বলতে দেরি কিন্তু জুরির পেটের কাছের জামাটা ছিরে হাতের ধারালো বেলেট দিয়ে পোঁচ দিতে দেরি হলো না, পেট থেকে ঝরঝর করে রক্তের পাশাপাশি ব্যথা অনুভব করতে জুথি চিৎকার করে ওর মা, বড়ো আম্মু, বড়ো আব্বু কে ডাকছে। ছোট্ট হাত দিয়ে পেটের কাটা জায়গায় চেপে ধরে অবতরণ জোরে জোরে কান্না করছে।
জুথির চিৎকার শুনে রাদিফ’দের পাশাপাশি বাড়ির প্রত্যেকটা মানুষ আরিশের বন্ধ দরজার সামনে জড়ো হয়। ভিতর থেকে জুথির কান্না ও চিৎকার শুনে সানজিদা খান বলেন,

‘আরিশ দরজা খুলো,মৌ কে বের করো। ও চিৎকার করে কান্না করছে আরিশ। তুমি একদম ওর গায়ে হাত দিবে না। — ওনার পাশাপাশি সাফওয়ান খান ও ডাকাডাকি শুরু করলেন কিন্তু আরিশ দরজা খুললো না। বরং জুথির পেটে পোঁচ দিয়েও সান্তি হয়নি ওর, পরপর দুটো পোঁচ বসায় জুথির পেটে।জুথির আবারো চিৎকার শুনে আরিশ ডয়ার থেকে টেপ কস বের করে ওর মুখে লাগিয়ে দেয়,সাথে জুথির চুলের মুঠি পিছন থেকে শক্ত করে ধরে শাসিয়ে বললো,
‘ এখন তো শুধু মাত্র পেট কাটলাম। তোকে তো এখন আগুনে পুড়বো।

পেটের কাটা জায়গা গুলোতে তীব্র ব্যথা ও সেই স্থান থেকে রক্ত ঝরে জুথির হাত জামা সহ সমস্ত পেট রক্তে লাল হয়ে গেছে।ওর মুখে টেপ থাকায় কোনো কথা বলতে না পারায় উম উম শব্দ করে আরিশ কে বোঝানোর চেষ্টা করলো, ‘সে যেন তার সাথে এমন টা না করে’ কিন্তু আরিশ শুনছে না উন্মাদের মত লোহা মেচ দিয়ে গরম করে জুথির হাতের তালুতে চেপে ধরে ,জুথি ব্যথায় চিৎকার পর্যন্ত করতে পারছে না, চোখ দুটো দিয়ে শুধু অবতরণ পানি ঝরছে। জুথির অসহায় চোখ দুটো আরিশের দিকে তাকিয়ে আছে। একসময় মুখে টেপ লাগানো থাকায় পাশাপাশি অতিরিক্ত কান্নার জন্য নাকে সর্দি আটকে যায়,যে কারণে শ্বাস নিতে না পারায় হাতের ব্যালেন্স ছেড়ে দিয়ে সেন্সলেস হয়ে মেঝেতে পরতে নিলে আরিশ তার মৌয়ের রক্তাক্ত শরীর টা বুকের সাথে আঁকড়ে ধরে ওর দিকে তাকিয়ে দেখে তার বাচ্চা বউ টার রক্তে পুরো শরীর মাখো মাখো হয়ে গেছে।

ওর রাগ কিছুটা কমে আসে চোখ দুটো স্থির হয় যখন দেখে তার মৌয়ের কান্না রত চুপসে যাওয়া মুখখানা। আরিশ জুথির মুখ থেকে কসটেপ টা খুলে দেয়। ওভাবে কিছুক্ষণ তাকায় আদলের দিকে তখন নিবে জাওয়া রাগ টা যেন আবারো মাথায় টনক নড়ে ওঠে। প্রতিবার তার অবুঝ বউ টাকেই মার খেতে হয় আজ রক্তাক্ত ও হলো ওর জন্য এর মাসুল ওকেও দিতে হবে ।ওর ফোঁস ফোঁস করার মধ্যে দরজা ধাক্কানোর শব্দটা আরো তীব্র হয়। বাহির থেকে সবার আহাজারি শোন যায়,‘আরিশ মেয়েটা কে মারিস না। একসময় আরিশ তীব্র রাগ নিয়ে দরজা টা খুলে দেয়। দরজা খুলে আরিশ কে দেখে সবাই হতভম্ব হয়ে যায়। হাতে রক্ত লেগে আছে, চুলগুলো অগোছালো চোখ দুটো লাল, এটা দেখে জুথির আম্মু আরিশের আম্মু রাদিফের আম্মু সবাই রুমের মধ্যে ঢুকে পুরো বাকরুদ্ধ হয়ে যায়। সানজিদা খান জুথির বেহালা অবস্থা দেখে তেরে গিয়ে আরিশ কে পরপর দুটো ঠাটিয়ে থাপ্পড় দেয়, থাপ্পড় খেয়ে আরিশের ভাবন্তর হলো না। ক্রোধ নিয়ে তখন ও রাদিফের দিকে তাকিয়ে আছে। সাফওয়ান খান ওই রুমে আর দাঁড়ালেন না, জুথি কে কোলে নিয়ে হাঁটলেন হসপিটাল এর উদ্দেশ্যে। উনার সাথে আয়ান ও গেল, সাথে রাদিফ ও গেল। ওরা যাওয়াতে জুথির আম্মু চোখের পানিটা মুছে আরিশের রুম থেকে বেরিয়ে যায়। সবার চোখেই পানি, শুধু পানি নেই আরিশের চোখে। ও তখনও নিচের দিকে নাক ফুলিয়ে তাকিয়ে আছে। তখন সানজিদা খান চেঁচিয়ে বললেন,

‘তুমি কি জানোয়ার? ওইটুকু মেয়েকে আঘাত করতে কিভাবে পারলে তুমি? তুমি আর কি কি করবে আরিশ? তুমি কি এখন মেয়েটাকে পৃথিবী দেখে বিদায় করতে চাও? কেন এমনটা করছো? তোমার অতিরিক্ত জেদের কারণে আমরা বাচ্চা মেয়েটাকে তোমার মত ২০ বছরের দামরা সাথে বিয়ে দিয়েছি, শুধু মেয়েটার প্রতি তোমার অত্যাচারের জন্য। কিন্তু এতেও তোমার অত্যাচার কমেনি,বরঞ্চ বেড়েছে। আর আজ তুমি তার সব কিছুর লিমিট ছাড়িয়ে গেছো। আমার তো ভয় হচ্ছে মেয়েটা আদৌ বাঁচবে কিনা। আর আজ যদি ওর কিছু হয়ে যায় না আরিশ আমি তোমাকে কখনো ক্ষমা করব না।
আরিশ চুপ করে মায়ের কথা শুনল কারণ সে তার গুরুজনদের ভীষণ সম্মান করে তাই ওভাবে নিচের দিক তাকিয়ে বললো,

‘ও আমার বউ হয়ে কেন পর পুরুষের কোলে উঠবে? কেন পর পুরুষের দিকে তাকাবে? ও কেন রাদিফের সাথে খেলবে? ও শুধু আমার দিকে তাকাবে আমার সাথে কথা বলবে আমার সাথে ঘুমাবে, আর যদি ও সেটা না করে, পর পুরুষের সাথে হেসে কথা বলে, তো এর চেয়েও খারাপ অবস্থা হবে। ওকে এই পৃথিবীতে বাঁচতে হলে সম্পূর্ণ শারীরিক মানসিকভাবে আমার হয়ে বাঁচতে হবে। আর নয়তো ওকে মারবো আমি নিজেও মরবো। আর আমাদের মাঝে যদি থার্ড পারসন ঢোকার চেষ্টা করে তো তাকে সবার আগে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত করব, বলে সানজিদা খান কে আর কিছু বলতে না দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
সানজিদা খান ছেলের এমন বেপরোয়া কোথায়, কিছুটা অসন্তুষ্ট হন। সাথে ছেলের চলে যাওয়া দেখে কিছুটা ভয়ও পান। এখন আবার কি নতুন কাণ্ড ঘটায়।

ঘড়ির কাটা টিকটিক করে পার হয়ে গেছে ঘন্টাখানেক সময়, ততক্ষণে হসপিটাল থেকে ফোন আসে জুথির জ্ঞান ফিরছে। এখন সে খানিকটা সুস্থ বিকালের দিকে নাকি বাড়ি নিয়ে আসতে পারবে। জ্ঞান ফিরেছে শুনে আরিশ আর দারাইনি, তার মৌ কে আনতে চলে গেছে হসপিটালে। আরিশ কে হসপিটালে জুথির কেবিনের দিকে যেতে দেখে সাফওয়ান খান আরিশের সামনে গিয়ে কঠিন কণ্ঠে বললেন,
‘তুমি এখানে কেন এসেছো? তোমাকে কি আমরা আসতে বলেছি?
‘আমার বউ আমি নিতে এসেছি, এখানে আমাকে কে আসতে বলবে?
‘ওকে নেওয়ার হলে আমরা নিব, তুমি চলে যাও।
আরিশ ওর বাবার কথায় তেমন পাত্তা না দিয়ে কেবিনের দিকে হাটা দিল। তখন ওর সামনে রাদিফ এসে বাধা দিয়ে বললো,

‘তুই ওর কাছে যেতে পারবি না, আর নাআমরা তোকে যেতে দিব।
‘তোর মত ছালার বস্তা আমাকে আমার মৌ এর কাছে যেতে আটকাবে? গম্ভীর কন্ঠে।
‘দেখ আরিশ এখানে সিনক্রেট করিস না।
‘তুই আমার সামনে থেকে সর আর নয়তো আমি ভুলে যাবো এটা হসপিটাল।
‘কি করবি তুই?
রাদিফের কথাটা বলতে দেরি কিন্তু আরিশের রাদিফের গায়ে হাত তুলতে দেরি হলো না। একসময় দুই ভাইয়ের মারাত্মক হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়।রাদিফের ঠোঁট কেটে রক্ত ঝরছে আর আরিশের নাক ফেটে। ওদের দুজনকে থামানোর জন্য সাফওয়ান খান পেড়ে উঠছিলেন না। প্রায় হসপিটালের সব মানুষ জড়ো হয়ে যায় এক জায়গায়। ওখানের মানুষরা দুইজনকে দুদিক টেনে নিয়ে যায়। তখনো আরিশ রাদিফের দিকে তাকিয়ে রাগে ফুলছিল। সাফওয়ান খান রাগে গজগজ করতে করতে আরিশের গালে থাপ্পড় লাগান স’জোরে। আরিশের দিকে তাকিয়ে ফোসফোস করতে করতে বললেন,

‘আর কি কি করতে চাও তুমি? এত কিছু করেও তোমার শান্তি হচ্ছে না? আরিশকে আরো কঠিন কিছু কথা শুনিয়ে উনি রাদিফের দিকে তাকিয়ে বললেন,
‘মানুষ একদিনের হলেও তো তার বড় হয়? আর আরিশ তো তোমার তিন মাসের বড়।
‘বড় আব্বু,,,
‘আমি জানতাম তুমি একজন বুঝদার ছেলে, আমার ছেলের মত বেপরোয়া পাগল নয়। আর সেই তুমি হসপিটালে বসে,,,, আমাদের আর মান সম্মান কিছু রাখলে না তোমরা। — উনার কথা বলার মধ্যে আরিশ লোকগুলোর থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে জুথির কেবিনে গিয়ে ওর সামনে দাঁড়ায়। দেখে ওর হাতে ব্যান্ডেজ করা অন্য হাতে স্যালান লাগানো। আরিশ জুথির হাতের স্যালাইনের পাইপ খুলতে খুলতে দাঁত কিড়মিড় করে বললো,
‘এইসব বালছাল পরে তোকে এখানে থাকতে হবে না, চল তুই আমার সাথে, এখান থেকে এক্ষুনি তুই আমার সাথে চলে যাবি। বলে জুথি কে পাজা কোলে তুলে হনহন করে হাঁটতে শুরু করে।

সাফওয়ান খান রাদিফ আয়ান সবাই দেখলো আরিশের সাইকো গিরি। তবে কেউ কিছু বলল না। কারণ তিনি চান না এই মুহূর্তে হসপিটালে বাড়তি ঝামেলা করতে। তবে সফল খান দমেও যাননি। মনে মনে কিছু ভেবে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে উনার কাজ আছে বলে, ওদের বাসায় চলে যেতে বলে।

সন্ধ্যাবেলায় চারপাশ শুনশান নিরিবিলি আজ খান বাড়িতে, কারো মুখে কোন কথা নেই। থাকবে কি করে? বাড়ির বড় ছেলে যে কান্ড আজকে ঘটিয়েছে, তাতে কারো মুখে থেকে কোন কথা বের হচ্ছে না। তখন আরিশ ওভাবে জুথি কে নিয়ে আসার পরে ওর রুমে নিয়ে এসেছিল। রুমে এসে কাউকেই আর ঢুকতে দেয়নি। তার এক কথা— ‘যখন তার বউ রাদিসের সাথে খেলে, তখন বাড়ির সব থাকে কোথায়? তখন যদি সবাই তার বউকে রাদিফের কাছে যেতে না দিত খেলতে না দিত তাহলে কি সে তার বউকে এমন ভাবে আঘাত করত? কখনোই করতো না, সে তো তার এই বউটাকে মারাত্মক ভালোবাসে, তাহলে? সে তার বউকে অন্য কারো সাথে সহ্য করতে পারে না আর রাদিফ,, তাহলে তো প্রশ্নই আসে না। তার বুকের বা পাশটায় আজ ভীষণ কষ্ট হচ্ছে, অসহায় চোখ দুটো নিয়ে তার মৌয়ের ফ্যাকাসে আদলের দিকে তাকায়, তাকিয়ে ওর চোখ দুটোও পানিতে ভরে যায়। আজ তার ভীষণ মনে হচ্ছে তার মৌয়ের সমস্ত শরীরে চুমু দিয়ে বলতে,—‘ভীষণ ভুল হয়ে গেছে মৌ, ভীষণ ভুল হয়ে গেছে। কিন্তু আফসোস যা করে ফেলেছে সেটা তো এখন আর ঠিক করতে পারবে না।

Violent love part 6

আরিশের এসব ভাবার মধ্যে নিজ থেকে চেঁচামেচির আওয়াজ আসে ওর কানে, সাফওয়ান খান গলা ছেড়ে ডাকছেন ওকে, ওর কিছুটা বিরক্তি লাগে তবুও রুম থেকে বের হয়ে নিচে নামার জন্য,,,,

Violent love part 8