রং পর্ব ৬৪

রং পর্ব ৬৪
তন্নী তনু

ধরণীজুড়ে নেমে আসা ঘন কালো আধার,শোকের মাতম, ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। জানালায় দাঁড়ালে ফুরফুরে মনেরও থেমে যেতে হবে, বিষণ্ন হতে হবে, তলিয়ে যেতে হবে। থাই গ্লাসের সামনে পর্দা ঝুলছে। বেলকুনি থেকে ঠান্ডা বাতাস এসে কক্ষে’র পর্দাগুলোকে উড়িয়ে দেয়। একাকী বিষণ্ন মনটা আলো আধারে লুকোচুরি খেলে। জানালার গ্লাস ঠেলে সরিয়ে এককোণে দাঁড়িয়ে যায় তিথি। দূরের আকাশে ঘন কালো মেঘ, আকাশ চিড়ে বেড়িয়ে আসে আলো। গুড়ো গুড়ো হয়ে ঝরে আকাশের কান্না। গ্রীলের ফাঁকে হাত বাড়ায় তিথি। একটু একটু করে হাত ভিজে ওঠে। গুড়ো গুড়ো দানার সময় নিয়ে ঝড়া বৃষ্টির ফোটা বিষণ্ন মনের এককোণে ,দলা পাকানো কষ্ট’দের আদর করে দেয়। মনের কথাগুলো উড়িয়ে দেয় হাওয়ায়,

— আর পাঁচ’টা মেয়ের মতো আমি সহজে দেখাতে পারিনা আমি ভঙ্গুর! আমি সহজেই সহজ হতে পারিনা। আমি আর পাঁচ’টা মেয়ের মতো তেলাপোকা দেখে লাফিয়ে উঠতে পারিনা।বিদ‍্যুৎ চমকালে আমার আমাকে আগলে রাখার জন‍্য উষ্ণ বুকের প্রয়োজন হয়, সেও বলতে পারিনা। আমি না সহজেই বলতে পারিনা,”তোমাকে লাগবে।” আমি সহজেই সহজ হতে পারিনা। কিন্তু আমি চাই তুমি আমাকে আগলে রাখো। আমাকে বোঝ! এই পৃথিবীতে এই ছোট্ট ছোট্ট চাওয়ার বাইরে আমার কিছু পেতেও ইচ্ছে করেনা। এই যে আধারে তলিয়ে যাওয়া চারপাশ, গুড়ো বৃষ্টি; ভিষণ মনে পড়ছে তোমাকে। এই মূহুর্তে তোমাকে প্রয়োজন। ভিষণ প্রয়োজন!
সহসাই মৃদু শব্দে বেজে ওঠে ফোন। তিথি’র ঠোঁটের কোণে একচিলতে আলো। একছুটে কয়েক সেকেন্ডে ফোন’টা তুলে নেয় তিথি,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

— জানি কল দিবে!
–কি করে জানো?
— আমি বুঝি!
— মিস করছিলে?
— হুউউউ!
— তাই তো বলি আমার বুকটা এতো পোড়ে ক‍্যান?
— কবে ফিরবেন?
— কেনো? ভালোবেসে দিবে?আদোল কলে দিবে?
— ধুররর!
— গাড়ি পাঠিয়েছি। রেডি হয়ে নাও।
–কেনো?
— মিস সিনথিয়া’র বাসায় যাবে।
–ও যে কল ধরে না। ঠিক আছে তো ও?
— হুম! ওর ভাইয়া মারা গেছে। আমি জানি তুমি মনের দিক থেকে স্ট্রং! যেয়ে সবাইকে সামলে রাখবে। কাঁদবে না। সব জায়গায় কাঁদতে হয় না। কিছু জায়গায় কান্না সকলের কান্না দমানোর চেষ্টা করতে হয় বুঝলে?
— কিন্তু ঐ বাচ্চা’টা? টুম্পা
— হুম! ঘটনা মর্মস্পর্শী। তবে তুমি স্ট্রং থাকবে। কাঁদবে না।
— এত কঠিন শর্ত?
— শর্ত না; “ভালোবাসা”। তুমি কাঁদলে আমার ভাললাগে না। আমি চাইনা তুমি কোনো কারণে কাঁদো।
অকস্মাৎ ডোর বেলটা বেজে ওঠে। নির্জন, নিরব অন‍্যমনস্ক তিথি’র ভেতরে সহসাই কেঁপে ওঠে। ওপাশের গলাটা কোমল,

— ভয় পেয়োনা। আগে দেখো লুকিং গ্লাসে। বাবাও হতে পারে। ভয়ের কিছু নেই। আমার বউ’কে ইনসিকিউর জায়গায় আমি ফেলে আসিনি। মৃত‍্যু ব‍্যতিত আমার কাছে থেকে তোমাকে কেউ নিয়ে যেতে পারবে না তিথি।
মন্থর গতিতে শব্দহীন পায়ে দরজার লুকিং গ্লাসে চোখ রাখে তিথি। আত্মা কেঁপে ওঠে সহসাই। ওষ্ঠাধরের কিঞ্চিত হা হওয়া। মুখ থেকে বিরবিরিয়ে বলে ওঠে,
— মমমামি……!
— ডোন্ট প‍্যানিক ডিয়ার। বাবাও আছে সাথে। দরজা খুলে দাও। মা যতোই কাঁদুক সাথে যাবে না।
— মানে?
— মানে তোমার বর বলেছে তাই তুমি যাবেনা। বুঝতে পেরেছো?
–মামি আমাকে নিতে এসেছে?
–এই খুশিতে সব ভুলে যেও না। আমি বলেছি যাবেনা তুমি যাবে না। কিছু মানুষের কিছু দিন শাস্তি দরকার আছে।
–কি সব উল্টাপাল্টা কথা বলছো তুমি। তোমার মা তো..।
— হুম সে আমার মা, তো….! আমি বলেছি যাবেনা তুমি যাবেনা।

আইনি প্রক্রিয়া শেষে রাফসান’কে ইরফাদ নেওয়ার অনুমতি পায়। অনন্ত যাত্রা’র সকল আয়োজন শেষ!! সাদা কাপড়ে পুরো শরীর আবৃত রাফসানের, মুখ টুকুতে নেমে এসেছে পৃথিবীর সকল স্নিগ্ধতা। বাড়ির সামনের খোলা জায়গায় চকচকে খাটে শান্তির ঘুমে ঘুমিয়ে আছে রাফসান। গুড়ি বৃষ্টির ঠেকাতে উপরে দেয়া হয়েছে অস্থায়ী জল নিধরোক। টুম্পা ঘুম উঠে গেছে সকাল হতেই। তবে তাকে আর নিচে নামানো হয় নি। মেয়েকে সামলাতে নিজের ও একবারো নিচে নামা হয়নি। তবে চিরবিদায়ের পূর্বে মেয়েকে তো নিয়ে যেতেই হবে। ঘটনা যতোই কঠিন, যতোই মর্মস্পর্শী, হৃদয়বিদারক হোক; সম্মুখীন হতেই হবে। ইভা ইরফাদ’কে কল দেয়।”– একটু উপরে আসতে পারবে ভাইয়া!!”
রাফসানের খাটের চারদি’কে লোকজন চেয়ারে বসা। সিনথিয়ার মা-বাবাও চলে এসেছেন সকালেই। সিনথিয়া রাফসানের খাটের পাশে নিরবে মাটিতে বসে আছে। চোখের কোণ ছুঁয়ে গড়িয়ে পড়ছে উষ্ণ জল। অভিব‍্যক্তিহীন সিনথিয়া পাথরের মতো বসে আছে। কানে ফোন ধরেই সিনথিয়া’র পাশে বসে ইরফাদ। নিগূঢ়, গুরুগম্ভীর গলার স্বরে এখন কেবল কোমলতা,

–এখন তো চলো সিনথি! আবার না হয় এসো।
সিনথিয়া ভাবলেশহীন, নিরব নিস্তব্ধ। শুধু চোখ থেকে ফোটা ফোটায় জল পড়ে, থুতনি’টা কেঁপে কেঁপে ওঠে একটু পর পর। ইরফাদ আরেকবার ডাকে,”সিনথি!! ওঠো…!”
এগিয়ে আসেন সিনথিয়া’র মা। তিনি চেষ্টা করেন। তবে সিনথিয়া’র হেলদোল নেই। নিরবে তাকিয়ে থাকে একদিকেই। আর নিরবে কাঁদে। হৃদয়ে যে যন্ত্রণা চলছে, হৃদয় যেভাবে কাঁদছে, ভেতর যে শূন‍্য হয়ে যাচ্ছে এই ব‍্যথা কি কোনো শব্দে প্রকাশ করা যায়!! যার হারায় তার যে পোড়ে, সে দহন তো আর কাউকে ছুঁতে পারে না। ইরফাদ মাথায় হাত বুলায়,
–পাগলামি কোরোনা সিনথি…! ওঠো প্লিজ….
সিনথি নিরবতা ভাঙে, র!ক্ত জমাট বাঁধা চোখ দুটো মুছে নেয়। তারপর ভাঙাচোরা গলায় বলে,
— এই একটু সময় ই তো কাছে পাচ্ছি, শেষ অবধি একটা সেকেন্ড চোখের আড়াল করতে চাই না।
ইরফাদ থামে, সিনথিয়াকে নিজের মতো থাকতে দেয়। এর মধ‍্যেই চলে আসে তিথি। সিনথিয়ার পাশে ঘেঁষে দাঁড়াতেই ইরফাদ বলে,
–একটু দেখো! দুই মিনিটে ফিরছি।
তিথি বসে সিনথিয়া’র পাশে। সিনথিয়া নিরবে, নিস্তব্ধ। তিথি’কে দেখেই চোখের জলের ফোটা ভাড়ি হয়।

উপরে যায় ইরফাদ। ইভা চোখে জমাট বেঁধেছে ব‍্যথার দল। বুক ছিড়ে গেলেও মেয়ের জন‍্য চোখের জলকে দমিয়ে রাখতে হচ্ছে। ইরফাদ কক্ষে প্রবেশ করা মাত্র ইভা বলে ওঠে,
–একটু বসো ওর কাছে। আমি চোখে পানি দিয়ে আসছি। চোখ জ্বলছে।
ইরফাদ জানে সব’টাই। আর বাঁধা দিয়ে যদি চোখের জল থামানো যেতোই তাহলে সে বাঁধাই দিতো। তবে এখন কান্নাই বাঁচাবে, বুকের ভার কমাবে। তাই ইভা কাঁদুক! আরোও কাঁদুক।
টুম্পা’র কানের কাছে সূরা প্লে করা। মন দিয়ে শুনছে আর কিছু কিছু লাইন পূণরায় বলছে। পাশে বসে ইরফাদ। বাচ্চা মেয়েটা’কে কাছে টেনে নেয়। বুকের মধ‍্যে জড়িয়ে নিয়ে পরপর কয়েকটা চুমু খায়। এরপরে কোমল গলায় বলে,
— মা!!
স্নিগ্ধ মুখ নিয়ে একটু হাসে মেয়েটা। কি যে আদর লাগে! ইরফাদ আবার ডাকে,

— মা! শুনছো?
— হুউউউ।
— মামাই একটু গল্প করি তোমার সাথে।
টুম্পা মাথা নাড়ায়।
— জানোত তুমি পাপা অসুস্থ! ঘুমায়? জানো তুমি?
— চলো যাই পাপা’ল কাছে। আদোল দিয়ে আসি।
ইরফাদ থামে। কোলে নিয়ে হাঁটে। হাঁটে আর হাঁটে। তীক্ষ্ম মস্তিষ্কধারী ইরফাদ কথা খুঁজে পায় না কোন কথাটা এই মূহুর্ত্তে এই বাচ্চার জন‍্য দরকার। থেমে থাকে কিছুক্ষণ। তারপর বলে,
— পাপা তো ঘুমিয়ে গেছে, বেশি অসুস্থ । কখনো কখনো ব‍্যথা কমানো ‘র মেডিসিন আমাদের হাতে থাকে না বাবা। থাকে কেবল আল্লাহ্’র কাছে। কখনো কখনো ভালোবাসার মানুষ গুলোকে আল্লাহ্’র কাছে পাঠিয়ে দিতে হয়। আর দোয়া করতে হয়। তোমার পাপাকেও পাঠিয়ে দিতে হবে। তুমি তো পাপাকে ভালোবাসো, তাই না মা!

–হুউউম।
— তুমি তো চাও বাবা’র ব‍্যথা কমে যাক।
–হুম।
— তাহলে যে আল্লাহ্’র কাছে দিয়ে দিতে হবে। দিবে তুমি?
— কবে আসবে পাপা?
ইরফাদ আবারো থামে। কঠিন হৃদয়ের মানুষটা দম নেয়। তারপর বলে,
— পাপা কেবল তোমার স্বপ্ন’তে আসবে মা। বাকি সময় আল্লাহ্’র কাছে থাকবে।
— তাহলে যেতে দিবো না।
— তাহলে যে বাবার ব‍্যথা বাড়বে!! তুমি কি চাও বাবা কষ্ট পা’ক।
— পাপা ওখানে গেলে ভালো থাকবে? ব‍্যতা কমে যাবে?
— হুমম। সবচেয়ে ভালো থাকবে মা। সবচেয়ে।
— ওকে মামাই। তাহলে চলো আল্লাহ্’র কাছে দিয়ে আসি।
শেষের কথাটা’র অর্থ বাচ্চা মেয়েটা না বুঝলেও ইরফাদ বোঝে। ক্ষীণ একটা শ্বাস নিরবে ফেলে ইরফাদ। এরমধ‍্যেই বেড়িয়ে আসে ইভা। অতঃপর….

রাফসানের ঠিক পাশেই মেয়েকে নিয়ে বসে যায় ইভা। টুম্পা এদিক সেদিক আর রাফসানের দিকে পরপর তাকায়। বাচ্চা মেয়েটা কোন প্রশ্নের উত্তর খোঁজে কে জানে। ইভা পাথুরে মূর্তির মতো বসে থাকে। টুম্পা ফিসফিসিয়ে ডাকে,
— পাপা! ও পাপা। ঘুমাচ্ছো?
আল্লাহ্’র কাছে যাবে তুমি? তাড়াতাড়ি চলে এসো পাপা।
ইভার হৃদয় এই মূহুর্তে কঠিন।সে কাঁদবে না। কাঁদবেই না। টুম্পা ইভার কাছে ফিসফিসিয়ে বলে,
— আরোও ধীরে বলবো? বাবার কি ঘুম ভেঙ্গে যাবে মামনি।
ইভার হৃদয় তোলপাড়, শুধু বলতে পারে না,” তোমার পাপা তো চিরতরে ঘুমিয়ে গেছে। চিৎকার করে ডাকলেও সে আর ফিরবে না।ফিরবেই না।” ইভা গলার তিক্ত ব‍্যথা ঠেলে বলে,
— ডাকো আজ! যতো খুশি! যতবার! যেমন ইচ্ছে। যতোবার ইচ্ছে।
— ঘুম ভেঙ্গে যাবে তো!!
— ডাকো! তবুও ডাকো তুমি।
টুম্পা ধীর গলায় ই ডাকে,
— পাপা! পাপা! তুমি আমাকে মিস কোরো প্লিজ! আমাকে মনে রেখো? আমাকে ভালোবেসো? আর আমার কাছে তাড়াতাড়ি চলে এসো বাবা। আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। তুমি আমাকে ঘুম পারাতে এসো কিন্তু ঠিকাছে?
ইভা টুম্পাকে কোলের মধ‍্যে বসিয়ে নেয়,

— বলো, আল্লাহ্!
টুম্পা বলে,
— আল্লাহ্।
— এই পৃথিবীতে যে ভুলের ক্ষমা কেউ দিলো না, সে ভুলের ক্ষমা তুমি করে দিও।
–এই পৃথিবীতে যে ভুলের ক্ষমা কেউ দিলোনা, সে ভুলের ক্ষমা তুমি করে দিও।
— শান্তির খোঁজে জীবনের শেষপ্রান্তে এসে পাপা যেভাবে ছটফট করলো।
–কি বলছো এসব মামনি। বুঝি না তো!
— তুমি রিপিট করো শুধু।
টুম্পা ভেঙ্গে ভেঙ্গে বলে,
–শান্তিল খোঁজে জীবনের শেষপ্রান্তে এসে পাপা যেভাবে ছটফট করলো।
— যা পেলোনা, যা হারালো। সবটুকু তুমি দিও।
–যা পেলোনা, যা হালালো। সবটুকু তুমি দিও।
–তুমি পাপাকে ভালো রেখো।
— তুমি পাপাকে ভালো রেখো প্লিজ।
এরপরেই ইভার কোল থেকে উঠে যায় টুম্পা। অবুঝ বাচ্চা ছুটে যায় তার বাবার দিকে। খাটের পাশ থেকে ছুঁতে চায় বাবাকে। ইরফাদ কোলে তুলে সহজ করে দেয়। কোমল হাতে ঘুমন্ত বাবার মুখে আলতো করে হাত বুলায় টুম্পা। তারপর বলে,

— পাপা’ল শীত লেগেছে। পাপা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। পাপাকে কাঁথা এনে দাও।
ইভা দম নেয় এরপরে বলে,
— আল্লাহ্ সব দিবেন।সব। তুমি একটু পাপাকে আদোর করে দাও শেষ বার।
টুম্পা কোমল হাতে রাফসানের মুখে হাত বুলায় আর বলে,
— “আদোল পাপা! আদোল। অনেক আদোল পাপা” এরপরে ছোট্ট করে একটা হামি দেয়। ইভা’র চোখ থেকে নিরবে পানি ঝরে। সকল ব‍্যথাকে দূরে রেখে ইভা বলে,
— পাপাকে বলো, ” অনেক ভালোবাসি পাপা। ”
— পাপা তোমাকে অনেক ভালোবাসি।
খানিক’টা দম নেয় ইভা। গলা রুদ্ধ হয়ে আসে। শ্বাসে বাড়ে যন্ত্রণা। বুক জ্বলে। যেনো আস্ত দাবানল বুকজুড়ে। রাফসানকে নিয়ে যাওয়ার সময় ঘনিয়ে আসে। টুম্পাকে সরিয়ে নেয় ইভা। কোলে নিয়ে উঠে দাঁড়ায়। সিনথিয়া মুখে ওড়না গুজে দেয়। একফোটা শব্দ যেনো ঐ অবুঝ বাচ্চা’র উপর না পড়ে। ইরফাদ সিনথিয়ার মাথায় হাত বুলায়। তারপর বলে,

রং পর্ব ৬৩ (২)

— শক্ত হও সিনথি। আসছি!
এরপরেই ইরফাদ খাটের ডান পাশে দাঁড়ায়। সাজিদ বাম দিকে। বাকি সবাই মিলে কাঁধের উপর তুলে নেয় খাট।
টুম্পা কেঁদে ওঠে।
–পাপাকে নিয়ে যাচ্ছে মামনি। পাপাকে নিয়ে গেলো। থামাও।
ইভা কঠিন,পাথর, নিস্তব্ধ, নিরব। শুধু ঠোঁটে নাড়িয়ে বলে,
— পাপা ভালো থাকবে সোনা। তুমি শুধু বলো;
পাপাকে বলো! আমি তোমার সব ভুলের ক্ষমা করে দিয়েছি। অন্ততকাল তুমি আমার হৃদয়ে ঘুমিয়ো বাবা, তুমি অনন্তকাল আমার হৃদয়ে বেঁচে থেকো।
টুম্পা পূণরাবৃত্তি করে,
— আমি তোমাল সব ভুলের ক্ষমা করে দিয়েছি।তুমি আমাল লিদয়ে ঘুমিয়ে থেকো পাপা , তুমি আমাল লিদয়ে বেঁচে থেকো।
অতঃপর অশান্ত হৃদয়গুলোতে লন্ডভন্ড ঝড়,তোলপাড়। হৃদয় শূন‍্যতায় ভরিয়ে দিয়ে রাফসানের চিরবিদায়!!

রং পর্ব ৬৫