আপনাতেই আমি সিজন ২ পর্ব ৪৩
ইশিকা ইসলাম ইশা
বিশাল বড় মাস্টার বেডরুম এ এসে থামল তীব্র।রিদিকে কোলে থেকে নামিয়ে বেড এ বসিয়ে বলল,
আজকের রাতটা এখানে থেকে কাল সকালেই বেরিয়ে যাবেন এই বাড়ি থেকে।
রিদি তীব্রর কথায় তোয়াক্কা না করে খাট থেকে নামতে নামতে বিরবির করে বলল,
তাহলে এখানে আনার কি দরকার ছিল?হু??
রিদি বিরবির করে বললেও তীব্র শুনেছে। তীব্র কিছুটা প্রতিবাদ স্বরুপ বলল,
তীব্র চৌধুরীর “বৌ”কারো বাসায় থাক এটা লোকে জানলে কি বলবে!সেই ভেবেই এখানে নিয়ে আসা নয়তো আই ডোন্ট কেয়ার আবাউট ইউ!!
রিদি তীব্রর কথায় লাফিয়ে উঠে বলল,
কি??আমি এখুনি চলে যাব।এতো অপমান আর সহ্য হচ্ছে না।
রিদি কথাটুকু শেষ করে যেই না কয়েক কদম এগিয়েছে তীব্র রাগে হিসহিসিয়ে বললো,
খবরদার!এক পা যদি আর বাইরের দিকে যাই তো এখানেই পুতে রাখব!
রিদি তীব্রর হুমকি শুনে মুচকি হাসল।মনে মনে ভাবল দাদি ঠিক ই বলেছে এই পোলা হচ্ছে আগুনের গোলা।আর আগুনের গোলাকে খুব ধীরে ধীরে নদীতে ডুবাতে হবে।প্রেমের নদীতে!! যদিও প্রেমের সাগরে ডুবাতে চেয়েছিল! কিন্তু তাতে কোন সমস্যা নেই।ছোট(নদী) থেকেই শুরু হোক!!
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
রিদি পুরো বেডরুমের এদিক ওদিক ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলো। বিশাল বড় বেডরুম।ঠিক কোন মুভিতে দেখা সিনারির মতো। একপাশে বিশাল বড় বড় সোফা।অন্যপাশের পুরো দেওয়াল জুড়ে আলমারি। একপাশে একটা কাচের দরজা হয়তো বাথরুম।ঘরের মাঝে বিশাল বড় বেড।একদম সাদা সাদা।মানে বেড থেকে যাবতীয় সব সাদা।রিদির এতো সাদার মাঝে নিজেকে কালো বিন্দু মনে হচ্ছে।তবে অসম্ভব সুন্দর এই রুম।
এদিক ওদিক দেখতে দেখতে হুট করেই রিদির চোখ যাই ছাদের দিকে।রিদি ছাদের দিকে তাকাতেই লাফিয়ে উঠে তীব্র কে জরিয়ে ধরে। তীব্র কিছুটা হচকচিয়ে উঠল।বুকের মাঝে মিশে থাকা ছোট্ট এই পাখিটাকে এখন আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করলেও নিজের ইগো আর রাগ বজায় রাখতে ধরল না।তবে নিজের থেকে সরালেও না,
সমস্যা কি?
আল্লাহ !আপনার বাসার ছাদ থেকে পানি বের হচ্ছে ! দেখুন দেখুন!!
তীব্র ভু কুঁচকে একবার উপরে তাকাল মাথার উপর কাচ সিস্টেম করে ছাঁদ করা।সেই ছাদ এ চকচকে কাচের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সচ্ছ পানি। তীব্র শান্ত স্বরে বলল,
ভয়ের কি আছে!!এটা ডিজাইন!
যদি ফুটো হয়ে গায়ে পড়ে পানি?
ফুটো!!লাইক সিরিয়াসলি!ফুটো হলে এখুনি ফুটো হয়ে আপনার গায়ে পানি পড়ছে না কেন?আর কথায় কথায় এভাবে জড়িয়ে ধরবেন……
রিদি সাথে সাথেই তীব্র কে ছেড়ে দিয়ে ভেংচি কেটে বলল,
আপনাকে এভাবে কেন? কোনভাবেই জরিয়ে ধরার শখ নেই আমার।হু!! নিজেকে কি মনে করে?যেই দেখতে একটু সুন্দর ওমনি নিজেকে বলিউড, হলিউড হিরো ভাবে!!হু
তীব্র রিদির কথায় খানিকটা অবাক হলেও দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
তো কাকে জরিয়ে ধরার শখ আছে?আর নিজেকে কিছু মনে করার প্রয়োজন নেই।আই নো হু আই আম!
রিদি হামি তুলে বলল,
আমার প্রিন্স কে!! আবার কাকে?আর আমিও জানি হু ইউ আর তো বেশি পকপক না করে দেখি সরুন ঘুমাবো!কাল আবার জার্নি করতে হবে।চলেই যখন যেতে হবে একটু ঘুমিয়ে নিই।
তীব্র রিদির নির্ভয় ব্যবহারে কিছুটা অবাক হয়েছে তবে তা প্রকাশ না রিদির চুপচাপ শুয়ে পড়া দেখল।রিদির চুপচাপ শুয়ে পড়া দেখে তীব্রর মেজাজ খারাপ হল।ঠাস করে পাশে থাকা ছোট্ট ফুলদানি ভেঙে ফেলতেই রিদি লাফিয়ে উঠে বলল,
কি সমস্যা কি আপনার?এতো রাগ দেখাচ্ছেন কেন? বললাম তো কালকেই চলে যাব।আর আসবো না আপনার কাছে।এবার প্লিজ শান্ত হন।ঘুমান আর ঘুমাতে দিন।বলেই কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ল।
তীব্র এবারো বেশ অবাক হল রিদির হঠাৎ এমন ব্যবহারে।তবে আর কিছু না বলে খাটের অপর পাশে শুয়ে পড়লো। তীব্র শুয়ে পড়তেই তিনি ফুস করে নিশ্বাস ছাড়ে।বাপরে বাপ!বাঘের গুহায় বাঘকে টেক্কা দেওয়া লাগছে তার কাছে ব্যাপারটা ঠিক এমনই।
এদিকে তীব্র বারবার রিদির কথাই ভাবছে।এই ভিতুর ডিমের হলো টা কি?যাকে দেখলেই দিনে দুবার করে ঙ্গান হারায় তার সাথে আজ এতো কথা বলছে তাও এতো রোব নিয়ে।এতো সাহস হলো কবে!!
তীব্রর ভাবনার মাঝেই রিদি আরো একটা সাহসিকতার কাজ করেছে।ঘুমের ঘোরে তীব্রর বুকে মাথা রেখে জরিয়ে ধরেছে। তীব্র চরম আবাক হয়ে কম্বলের ভেতরে ঘুমিয়ে থাকা চড়ুই পাখির মতো ছোট্ট পাখিটাকে দেখল।এক পা তীব্রর গায়ে তুলে একহাতে তীব্রর পেট জরিয়ে ধরে বুকে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছে।
তীব্র অনুভব করল এই চুড়ুই পাখির বাচ্চা তার বুকে থাকায় তার শরীরে শীতল বাতাস বইছে। কয়েকগুণ বেশি জোরে ধকধক করছে হৃৎপিণ্ড নামক যন্ত্রটা। তীব্র আলতো করে রিদিকে সরিয়ে দিলেও রিদি আবারো একই কাজ করছে।বালিশ রেখে তীব্রর বুকে উঠে আসছে। তীব্র ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেলে রিদিকে টেনে নিয়ে এলো নিজের আরো কাছে।রিদি আরাম পেয়ে তীব্রর সাথে আরো মিশে যেতেই তীব্র আলতো করে ঠোঁট ছোয়াল কপালে।
যাদু জানেন নাকি ব্ল্যাক রোজ?এই তো! মূহুর্তে কাবু করে নিলেন!আমার শত রাগ,জেদ,ইগো আপনাতে এসেই থেমে যায় কেন জানবৌ! আমার ম্যাজিশিয়ান আপনি জান…..
তীব্র এসব ভাবতে ভাবতেই একসময় ঘুমিয়ে পড়ল। তীব্রর ঘুম ভাঙল বুকের মাঝে খালি খালি লাগায়।হাতরে রিদিকে বুকে না পেয়ে ঝট করেই উঠে বসলো। আশেপাশে তাকিয়ে রিদিকে না দেখে ডাকার উদ্দেশ্য মুখ খুলতেই গিটারের টুংটাং শব্দ কানে এসে বাড়ি খেল। গিটারের শব্দ আসছে উপর থেকে। মানে ছাদে!! তীব্র হতদন্ত পায়ে ছাদে উঠে চারদিক অন্ধকার দেখে লাইট জ্বালাতেই চারপাশ আলোয় আলোয় আলোকিত হয়ে উঠল।লাল বেলুন দিয়ে সুন্দর করে ডেকোরেট করা পুরো ছাদ।ছাদের উপর থাকা সুইমিং পুলে পুরোটা জুড়েই লাল গোলাপে ভরা। তীব্রর ভু কুঁচকে গেল এসব দেখে।তবে এসবে তার হৃদয় ভিজল না। চিন্তিত মুখে আবারো রিদিতার নাম ধরে ডাকবে তার আগেই ভেসে এলো গানের কন্ঠ,
Maahi maahi maahi
Maahi maahi maahi
Bas mera too maahi
saanson mein hai maahi
(তীব্র গানের আওয়াজ শুনে কিছুটা এগিয়ে যেতেই থমকে গেল রিদিকে দেখে।লাল টকটকে একটা গাউন পরে ছাদের ঠিক কিনারায় ঘেসে একটা ঢুলে বসে আছে।হাতে গিটার! তাতেই সুর তুলে গাইছে।খোলা চুলগুলো ফ্লোরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ।চারদিকে মৃদু বাতাস বইছে।যার কারনে হাওয়ার তালে দুলছে তারা।মুখে তেমন কোন মেকআপ নেই তবে ঠোঁট লাল লিপস্টিক,ডাগর ডাগর চোখজোড়ায় কাজল টানা ব্যাস।তাতেই এতো মায়াময়ী লাগছে!!)
Hai mujhe hai tera armaan,
hai tuje hai meraa bananaa,
Har ghadi teri dil mein aahat
Too milee mil jae raahat
(রিদি গান গাইতে গাইতে তাকালো তীব্রর দিকে।যেন গানের প্রতিটি লাইন তার মনের অব্যাক্ত! না বলা কথা গুলো প্রকাশ করছে।রিদির চোখে পানি টলমল করছে।)
Jud ke bhee too mujse juda sa,
Milke bhee too kyun hai khafa sa,
Aaja meri baahon mein aaja re,
Jud ke bhee too mujse juda sa,
Milke bhee too kyun hai khafa sa
Aaja meri baahon mein aaja re
Dil roye ya ilaahi too aaja mere maahi
Dil roye ya ilaahi too aaja mere maahi
Dil roye ya ilaahi too aaja mere maahi
Dil roye ya ilaahi too aaja mere maahi
এই টুকু গেয়েই থেমে যায় রিদি।গানের প্রত্যক টি লাইনে যেন নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেছে সে। কিন্তু কান্নার ফলে আর গলা ভারি হয়ে আসায় গাইতে পারল না।
এদিকে তীব্র রিদিকে থামতে দেখে কোন কথা ছাড়াই পেছনে ঘুরে চলে যেতে চাইলে রিদি সাথে সাথেই ডেকে উঠে,
“অপ্রিয় রাক্ষস মশাই”
তীব্র যেতে গিয়েও থেমে যায়।রিদি তীব্র কে থামতে দেখে ভারি গাউন তুলে এগিয়ে আসে কয়েক কদম।
“আমি আপনাকে অনেক ভালোবাসি প্রিয় রাক্ষস মশাই ।আপনি আমার উপর রাগ করেছেন আমি জানি। কিন্তু বিশ্বাস করুন আমার জীবনে আপনার চেয়ে বেশি ইম্পর্ট্যান্ট কেউ নেই।আম্মা যখন আমাকে সেই ভিডিও দেখাচ্ছিল তখন না চাইতেও আমার কষ্ট হয়েছিল।হয়তো জন্মদাতা পিতা বলে।আমি শুধু চেয়েছি বাবাকে যেন আর না মারা হয়।”
রিদি থামতেই তীব্র শান্ত স্বরে বলে,
ওহহ !!ছেড়ে দিয়েছি।তাই স্বামীর কথা মনে পড়েছে তাই তো!!!!
রিদি তীব্রর কথায় ছলছল চোখে তাকালো তীব্রর দিকে।ছেড়ে দিয়েছে বলে যে তীব্রর কথা মনে পড়েছে তেমনটা নয়।সে তো সেদিন সকালেই ঢাকায় তীব্রর কাছে চৌধুরী নিবাসে যেতে চেয়েছিল কিন্তু পরে জানল তীব্র নাকি এখান থেকে সোজা এয়ার পোর্টে গিয়ে দেশের বাইরে চলে গেছে।এরপর টানা ৫দিন রিদি জ্বরে ভুগেছে। তবুও অসুস্থ শরীর নিয়েই জেদ ধরে এখানে আসা তার।তীব্র রিদির পাসপোর্ট অনেক অগেই করিয়ে রেখেছিল ।সেটা মিরের কাছে ছিল বলেই সে আসতে পেরেছে। নয়তো একদেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়া তার জন্য সম্ভব ছিল না।তবে পাসপোর্টে নিজের নামটা দেখে বেশ অবাক হয়েছিল।
রিদিকে কিছু বলতে না দেখে তীব্রর মেজাজ খারাপ হল।তিক্ত স্বরে বলল,
আপনার এসব নাটক শেষ হলে এবার আসতে পারেন।
রিদি ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্নার মাঝেই তীব্র আবারো বলল,
কি সমস্যা কি রে?কাদছিস কেন?
রিদি কান্নাভেজা স্বরে বলল,
আমাকে মাফ করে দিন।আমি আর কখনো আপনার অবাধ্য হব না।
সেই সুযোগ আমি আর দিব?
রিদি চোখের পানি মুছে নিজেকে শান্ত করতে চেয়েও পারল না। বারবার এই অবাধ্য চোখের পানি গুলো ঝরতেই আছে। তীব্র ফোস করে একটা নিঃশ্বাস ফেলে বললো,
এই রাতে আর কোন ড্রামা চাই না। চুপচাপ নিচে আসুন।
বলেই তীব্র গটগট করে চলে গেলেও রিদি জেদ করে সেখানেই দাঁড়িয়ে রইলো।
প্রকৃতি যেন ক্ষনে ক্ষনে রুপ বদলাচ্ছে।আজও তার ব্যাতিক্রম হয়নি।রিদির কান্নায় যেন মেঘেরাও আজ কাঁদবে।তাই তো চারদিকে মেঘের গর্জন শোনা যাচ্ছে।তারা যেন রিদিকে জানান দিচ্ছে আমি আসছি তোমার কান্নার ভাগিদার হতে।
চারদিকে তখন জোরালো হাওয়া বইতে শুরু করেছে। সন্ধ্যা থেকে আবহাওয়া গুম ধরে থাকলেও মধ্যে রাত বেশ বাতাস বইছে।সেই বাতাসের মধ্যেই ছাদের সুইমিংপুল সাইডে বসে আছে রিদি।শরীরে মৃদু কম্পন জানান দিচ্ছে তার শরীরে জ্বর এখনো তার পিছু ছাড়েনি।সুযোগ পেয়ে তারা আরো মনে হয় চেপে বসেছে। ঠান্ডায় কেপে কেপে উঠলেও একপ্রকার জেদের বসেই বসে আছে।ভারি গাউন এর নিচের অংশ পুরোটাই পানিতে ভেজা।খোলা চুলগুলো কোনমতে পেঁচিয়ে বেধেছে হয়তো। যার ফলে ওয়েস্টান এই পোশাকের পিঠ ও গলার অনেকাংশই দৃশ্যমান।
এদিকে তীব্র রুমে ফিরে আসলেও রিদিকে আসতে না দেখে মেজাজ চরম খারাপ হল।এই বাতাসের মধ্যেও মেয়েটা জেদ ধরে বসে আছে। তীব্র রাগে হিসহিসিয়ে নিজে নিজেই বলল,
এবার শরীর খারাপ হলে সত্যি সত্যি পুতে রাখবে এখানে।অবাধ্য নারী!!! ছ্যা……
তীব্র রিদির উপস্থিততে খুশি হলেও ইগোর কারনে তা প্রকাশ করছে না।না তার সাথে ভালো করে কথা বলছে।না তার থেকে দূরে থাকতে পারছে। না কাছে যেতে পারছে,না দূরে ঠেলে দিতে পারছে। অদ্ভুত এই সংঘর্ষে তার বিগরানো মেজাজ আরো খিঁচুনি দিয়ে উঠছে।রাগে দুঃখে ইচ্ছে করছে সব এখুনি তছনছ করে ফেলতে।আবার বৌয়ের জন্য মনটাও কেমন করছে।সে এইটুকু তো বুঝেছে রিদির সংস্পর্শে আসলে তার রাগ,জেদ,ইগো কিছুই আর কাজ করেনা।দূরে থাকলেই তাদের যতো মাতাব্বরি । তীব্র বিরক্ত হয়ে আবারো গটগট পায়ে ছাদে গিয়ে পৌছাল। ততক্ষণে বৃষ্টি শুরু হয়েছে ঝমঝমিয়ে। তীব্র ক্ষিপ্ত মেজাজ নিয়ে ছাদে আসলেও রিদিকে দেখে আঁতকে উঠল।কারন রিদি ছাদের রেলিং এর উপর পা ঝুলিয়ে বসে বৃষ্টিতে ভিজতে আছে।একটু এদিক এদিক হলেই সোজা নিচে পড়বে। তীব্র এদিকে ওদিক না তাকিয়ে ছুটে গিয়ে রিদিকে রেলিং থেকে নামিয়েই ঠাসস করে থাপ্পর বসাল গালে।রাগে গজগজ করতে করতে বলল….
এই!এই মরার শখ হয়েছে? হ্যাঁ মরবি!!
রিদি থাপ্পর খেয়ে উল্টে পড়ল নিচে।গালে হাত দিয়ে তাকালো তীব্রর দিকে।তীব্র আবারো তেড়ে আসতেই রিদি তীব্রর পা জরিয়ে ধরে ডুকরে উঠলো।তীব্র থমকে গেল।রিদির কান্না বরাবরই তার প্রিয়।বাচাদের মতো মুখ ফুলিয়ে যখন কাদে তখন ঠিক একটা আদুরে বাচ্চা লাগে। কিন্তু এখন এই কান্নায় তার বুকে কাটার মতো বিধছে। তীব্র হাটু মুড়ে রিদির সামনে বসতেই রিদি তীব্রর গলা জড়িয়ে কাধে মুখ গুজে দিয়ে বলে,
“আমি আপনার সাথে বাঁচতে চাই প্রিয় রাক্ষস মশাই।নিন না আমাকে আপনার করে।আর আবাধ্য হবো না তো!পাক্কা প্রমেস…..”
তীব্র রিদির কথায় মুচকি হাসল।রিদির বাচ্চামো কথাগুলো মনে ধরলেও প্রকাশ করল না।একহাত কোমরে পেঁচিয়ে রিদিকে কোলে তুলে নিয়ে রুমে এসে নামিয়ে দিল।
যান চেঞ্জ করে…বলে রিদির দিকে তাকাতেই শুকনো ঢোক গিলল।ভেজা কম্পিত রিদিকে দেখে তীব্রর মস্তিষ্ক শূন্য হয়ে পড়েছে।সে মন্ত্রমুগ্ধের মতো এগিয়ে এলো রিদির কাছে। ওয়েস্টান এই গাউনের গলা বড় হওয়াই গলা আর কাঁধের অংশ দৃশ্যমান আর তাতেই রিদিকে আবেদনময়ী লাগছে। তীব্র রিদির কাছে এসে রিদির নিচু করে রাখা মুখটা তুলে চোখ চোখ রেখে নেশাক্ত কন্ঠে বলল,
আপনাকে আমার করে নিই বৌ!!
রিদি তীব্রর এমন নেশাক্ত কন্ঠে আরো কেঁপে উঠলো,
ভয়ে, লজ্জায় মুখ গুজল তীব্রর বুকে।
তীব্র রিদির সম্মতি বুঝে রিদিকে কোলে তুলে বেডে শুইয়ে দিল। নেশাতুর কন্ঠে বলল,
চোখ খুলেন জান!!
তীব্রর নেশাতুর কন্ঠে রিদি শিহরিত হয়ে খামচে ধরল তীব্রর টিশার্ট।ধীরে ধীরে চোখ খুলে চাইলো তীব্রর দিকে। ভেজা ভেজা মুখে বিন্দু বিন্দু জল দানার মতো দেখাচ্ছে। চোখে চোখ পড়তেই রিদি যেন সম্মোহিত হয়ে গেল।নেশাক্ত নিলাভ আর্কষনীয় চোখজোড়া তার বরাবরই প্রিয় হলেও আজকে যেন সেই চোখ জোড়া সম্মোহিত করছে তাকে।তার নেশায় মত্ত করছে তাকে।
তীব্র রিদির কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিতেই রিদি চোখ বন্ধ করে নেই।চোখ বন্ধ করতেই বন্ধ চোখের কোনা থেকে গড়িয়ে পড়ল অশ্রুকনা।তবে এই অশ্রু কষ্টের না এই অশ্রু সুখময়। তীব্র রিদির বন্ধ চোখের উপর নিজের উষ্ণ ছোয়া দিয়ে আকরে ধরল রিদির কম্পিত ঠোটজোড়া।মত্ত হলো অমৃত সুধা পান করতে।রিদি একহাত তীব্রর টিশার্ট খামচে ধরে অন্য হাত দিয়ে তীব্রর চুল মুঠি করে ধরলো।তীব্রর অবাধ্য হাতের বিচরন বৃদ্ধি পেতেই রিদি ক্ষনে ক্ষনে কেঁপে উঠলো। তীব্র রিদির গাউনের চেইন টেনে নামাতেই রিদি ঝট করেই জরিয়ে ধরলো তীব্র কে।তীব্র রিদির ঠোঁট ছেড়ে গলায় মুখ ডুবাতেই রিদি জোরে জোরে শ্বাস নিয়ে গুঙ্গিয়ে উঠল।ধীরে ধীরে তীব্র নিচে নামতেই রিদি ছটফটিয়ে উঠে না না করতেই তীব্র রিদির কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বললো,
আপনাতেই আমি সিজন ২ পর্ব ৪২
“না.. করে না জান!”
তীব্রর কথায় ব্যাকুলতা স্পষ্ট।এই মুহূর্তে রিদির না তীব্র কোনমতেই মানতে রাজি না। তীব্র আবারো ব্যাকুল স্বরে বলল,
বিলিভ মি আই ডেসপারেটলি ওয়ান্ট ইউ রাইট নাউ!এন্ড ইউর স্মেল !!!আই লাভ ইউর স্মেল বৌ পাখি।ইটস ইয়ামি…..