আপনাতেই আমি পর্ব ৩৩
ইশিকা ইসলাম ইশা
আয়ানের ছোট খাটো একটা এক্সিডেন্ট হয়েছে।বেশি কিছু নয় নি তবে পা,হাত ছিলে গেছে অনেকখানি। আয়ান সবেই নার্স টার একটু ফ্ল্যাটিং শুরু করেছে হুরমুর করে রুমে ঢুকে মেঘ।আয়ান কিছু বুঝার আগেই এসেই জরিয়ে ধরে আয়ান কে,
তুই ঠিক আছিস??কিভাবে হল এমন?
আমি একদম ঠিক আছি!তুই জানলি কিভাবে??
তোকে ফোন করেছিলাম আঙ্কেল বলল।
ফোন করলি আমাকে!তোকে বলল আঙ্কেল!!
মেঘ আয়ান কে ছেড়ে ধপাধপ মেরে বলল,
শয়তান!তোর ফোন আঙ্কেল এর কাছে ছিল!!
এমনিতেই তো ব্যাথা আবার মারছিস কেন?আর একি কেঁদে কেঁদে কি অবস্থা করেছিস?কি হয়েছে? বাসায় কি বিয়ে নিয়ে কিছু বলেছে!!
মেঘের যেন হুস ফিরে আয়ানের কথায়।সে তো ভুলেই গেছিল আয়ান দি প্লে বয়ের জন্য তার ফিলিং সবসময় অবহেলা।এবার আয়ান কে পুরোপুরি ছেড়ে দূরে সরে বসে মেঘ। চোখের পানি মুছে বলে,
না কিছু বলে নি!তোকে দাওয়াত দিতে ফোন করেছিলাম দুদিন পর আমার এনগেজমেন্ট।
আয়ানের হুট করেই রাগ হলো এনগেজমেন্ট এর কথা শুনে,রাগে খিটমিট করে বলল,
আমাকে দাওয়াত দিতে হবে কেন?আমি আবার কে??আর তুই এমন দূরে সরে বসলি কেন?
হ্যা!!(অবাক হয়ে)তোর গার্লফ্রেন্ড আর আমার হবু হাজবেন্ড এটা খারাপ চোখে দেখবে না!
বালের বাল দেখবে!! এইখানে এসে বস।
বেকার কথা বলিস না!!এখন শরীর কেমন আছে??
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
বেটার!
আগে কথা বলার আগেই সেখানে প্রবেশ করে আয়ানের বর্তমান জি এফ মায়রা!!এসেই জরিয়ে ধরে বলল,
বেবি তোমার কি বেশিই কষ্ট হচ্ছে??আমি কি তোমাকে একটু আদর করে দিব!!
মেঘ জানে এখন এদের কাহিনী শুরু হবে তাই চলে যেতে নিলেই পেছন থেকে হাত ধরে আয়ান!মেঘ পেছনে ফিরে বলল,
কিছু বলবি!!
এখানে বস!!!
মেঘ মায়রার দিকে তাকিয়ে বলল,মায়রা মাইন্ড করবে আয়ান!তুই ওর সাথে কথা বল আমি পরে আসছি!!
মেঘ হাত ছাড়াতে চাইলে আয়ান বলে যাওয়ার দরকার নেই। কিন্তু মেঘ এদের ডং দেখতে আগ্রহী না তাই জোর করে হাত ছাড়াতে চাইলে শক্ত করে ধরে আয়ান,
আয়ান লিমিট ক্রস করিস না!!ছাড়ড়ড়!!
আজ সেটাই করব।কথাটা বলেই মেঘ কে টান মেরে নিজের কাছে এনে গাল চেপে ঠোঁটে ঠোঁট চেপে ধরল।মায়রা রেগে বেরিয়ে গেল। এদিকে মেঘ হতভম্ব হয়ে গেছে। আয়ান মেঘ কে ছাড়তেই ঠাসসস করে থাপ্পর মারে মেঘ।
ছি!!এতো অধঃপতন তোর?
বলে উঠে চলে যেতে চাইলে আয়ান আবারো ধরে মেঘের হাত। ক্লান্ত স্বরে বলে,
একজন কে না পাওয়ার একবুক নিরাশা! এখন তোকে হারানোর ভয়! আমার কষ্ট হচ্ছে মেঘ!
মেঘ ঘুরে তাকালো নিচু মস্তিষ্ক নিয়ে বসে আছে আয়ান।মেঘকে তাকাতে দেখে বলে,
“”তুই ছেড়ে যাস না মেঘ!প্রমেস করছি তুই আমার প্রথম অনূভুতি না হলেও শেষ পর্যন্ত তুই ই থাকবি””
মেঘের চোখে যেন আজ বর্ষা নামছে।সে তো বেশি কিছু চাইনি।চাইনি রিদির মতো প্রথম অনূভুতি হতে,প্রথম ভালবাসা হতে।সে তো শেষ পর্যন্ত থাকতে চেয়েছে একসাথে। মেঘ ধীরে এসে জরিয়ে ধরে আয়ান কে!!আয়ানের মুখে তৃপ্তির হাসি ফুটে উঠে।ভাবেনি এতো সহজে মেঘ মানবে। ভালবাসা এমনই হয়।সে মানুষটার প্রতি আমরা ভীষণ দূবল থাকি যাকে আমরা ভালোবাসি।
গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে সব শুনল রিদি আর তীব্র।রিদির চোখে পানি টলমল করলেও তীব্রর চোখে বিরক্ত।সবসময় তার জান নিয়েই এমন টানাটানি করবে কেন সবাই।ধুর।মেঘের সাথে আয়ান আজ সেট না হলে এর একটা ব্যবস্থা আজ করেই ছাড়তো।তবে যাক মেঘের সাথে থাকলে ওকে।সমস্যা নাই।তবে বৌয়ের চোখে পানি তাকে পিরা দিচ্ছে।
জান চলেন ওঁদের একা ছেড়ে দিই!!হি ইজ ফাইন নাও।আমরা কাল আসব ওকে।রিদি তীব্রর সাথে চলে আসে।
চৌধুরী বাড়ির একদম রমরমা পরিবেশ।দুই ছেলে,দুই বৌমা, নাতনি,মা নিয়ে আমির চৌধুরী ডিনার করতে বসেছে।অনেক বছর পর বাড়িতে খুশির ঝলক।তীব্রর নরমাল ব্যবহার করা ই জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া আমিরের কাছে।
রিদির খেতে বিরক্ত লাগছে।বিকেলেই সে ভরপেট নাস্তা করেছে। কিন্তু তীব্রর চোখ রাঙানো দেখে ভয়েই বসেছে টেবিলে।দু তিন লোকমা খেয়েই অসহায় চোখে তাকাল তীব্রর দিকে,
আর পারছি না!!
তীব্র নিজের প্লেটে রিদির ভাত তুলে নিতেই ঝনঝন শব্দ করে বাটি ফেলে দেয় কাজের মেয়েটি।সবাই চমকে উঠল বাটি পড়া ঝনঝন শব্দে।মেয়েটি এখনো অবাক হয়ে দেখছে তীব্রর প্লেট এ এটো ভাত।তাও তীব্র নিয়েছে। এটা কখনো সম্ভব! মেয়েটি আরো বেশি অবাক হল যখন তীব্র কোনদিকে কান না দিয়ে এটো ভাত তুলে খাচ্ছে।মেয়েটি প্রায় অঙ্গান হবে এমন ভাব!
আপনাতেই আমি পর্ব ৩২
তীর:আজ তো বেচে গেছে স্টিল এর বাসন বলে!
রিদি: কিন্তু এতো অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে কেন??
তীর:তোমার জামাই এর খাওয়া দেখে।যে নিজের ব্যবহৃত জিনিস ও কাউকে ব্যবহার করতে দেয় না।সেখানে অন্যর খাওয়া মানে এটো খাচ্ছে তাই!!
রিদি ভাবল, মজনু হিসেবে তো বিয়ের পর থেকেই ই খায় আমরা একই প্লেট এ। হ্যা!!তখন কি জানতাম ছদ্মবেশী মজনু আসলে তীব্র! তাহলে আমিও নিশ্চিত এমন অবাক হতাম!!