টেরিবেল পর্ব ১০
অনুপ্রভা মেহেরিন
তপ্ত রোদ এই ব্যস্ত শহরটায় ঘেমে নেয়ে একাকার মানুষজন।অলিগলি, বড় রাস্তা কিংবা ওভার ব্রিজ কোথাও কারো থেমে থাকার তাড়া নেই।এই শহরের মানুষেরা ব্যস্ত তাদের জনজীবন ব্যস্ত।পাপেট হুটহাট এই শহরে নিরিবিলি হেটে বেড়ায়।নাহ তখন তার চোখে লালসার থাকে না কিংবা মনটাও কলুষিত থাকে না।তখন সে জহুরি চোখে দেখতে থাকে কোথায় কি হচ্ছে?কোথায় কয়টা ঘর?কোন গলিতে মানুষজনের আনাগোনা কম।পুলিশ তৎপরতা বেড়েছে সেই সাথে মানুষের সতর্কতাও বেড়েছে।এসব নিয়ে পাপেট হাসে বেশ মজা পায়।হুজুগে বাঙালির এই এক সমস্যা কোন কিছু রটলে বা ঘটলে তা নিয়ে তিন চারদিন বেশ মাতামাতি বাড়তি সতর্কতা।এরপর?এরপর এক সাপ্তাহ যেতে যে যেভাবে ছিল ঠিক সে সেভাবে।
অপরাধীরা কি থেমে থাকে?না থেমে থাকে না।মানুষ যখন অন্যকিছুতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে তখন অপরাধীরা আবার সক্রিয় হয়।এই যে এই নিয়মে চলছে বছরেরপর বছর।
পাপেট সিম সাম শাট পড়েছে সেই সাথে মাথায় দিয়েছে ক্যাপ তার সরল দৃষ্টি সাধাসিধে হাঁটা চলা কেউ ধরতেই পারবে না এই লোকটা কতটা ভয়ংকর।হাটার মাঝেই পাপেট দেখতে পেল একটা ছোট মেয়ে সবার গাড়ির কাছে গিয়ে ভিক্ষা করছে বয়স ঠিক কত হবে?দশ কি এগারো।পাপেট সেখানে দাঁড়াল মেয়েটার কার্যক্রম লক্ষ্য করে বাঁকা হাসল।দুঃখ জনক ভাবে মেয়েটা এসে পাপেটের পা চেপে ধরে বলল,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
” কয়ডা টাহা দেন গো স্যার।কিছু খাই না।”
পাপেট মেয়েটার কথার অনুকরণ করে বলে,
” খাস না?না খাইলে বাচি আছিস কেমনে?”
” এত কথা কন কে?টাহা চাইছি টাহা দেন।”
মেয়েটা পাপেটের উপর বিরক্ত হলো।পাপেট অবশ্য সেই বিরক্তি ধরতে পারলেও এক চিলতে হেসে উড়িয়ে দিল।
” নাম কি তোর?”
” আমার নাম নাই।”
” মানুষের নাম থাকে।আজকাল তো পশু পাখিদেরো শখ করে নাম রাখা হয়।”
” আমি কারো শখের না।”
” তুই তো পশুপাখি না।তুই মানুষ তোর নাম তো থাকবেই।”
” আগে টাহা দেন তাইলে কমু।”
মেয়েটার কথা শুনে পাপেট পকেট থেকে হাজার টাকার একটা নোট বের করল।খুশিতে নেচে উঠল মেয়েটার মন।পাপেট টাকা বাড়িয়ে দিয়ে বলল,
” এবার নাম বল।”
” টুনি।”
” তোকে এই এলাকায় পাব?”
” হ পাইবেন আমি এহানেই থাহি।”
” কয়েকদিন পর আবার আসব তোকে টাকা দিতে। তুই থাকবি তো?”
” হ থাহুম।”
বাচ্চা মেয়েটা এক দৌঁড়ে চলে গেল।পাপেট সামনের দিকে অগ্রসর হলো।ঠোঁটে লেগে আছে ক্রুর হাসি।বাচ্চা মেয়েটা জানেই না তার জীবনের মূল্য পাপেটের কাছে হাজার টাকায় বিক্রি হয়ে গেছে।ভাগ্য দেবতা সবসময় পাপেটের সহায় হয় এবারো নিশ্চয়ই হবে।
এডউইনকে আজ বেশ হাস্যোজ্জ্বল দেখা যাচ্ছে ছেলেটার ঠোঁটের কোণে লেগে থাকা হাসির কারণ আন্দ্রিয়া জানে না।এই তো একটু আগেও আন্দ্রিয়াকে কোলে নিয়ে সারাটা প্যালেস হেটেছে এত আনন্দের কারণ কী?দুপুরে আন্দ্রিয়া ঘুমিয়েছে সেই ঘুম ভাঙলো বিকেলে এরপর থেকে উঠে এডউইনের কাণ্ডকারখানা কিছুই তার মাথায় ঢুকছে না।কি হচ্ছে এসব?কিন্তু এডউইন যে কারণেই খুশি থাকুক না কেন তার মনের কথা বলার উপযুক্ত সময় আজকেই।
এডউইন মাফিনকে কোলে তুলে আদুরে হাত বুলাচ্ছে আন্দ্রিয়া পাশে বসেই শুধায়।
” এডউইন শুনছেন?”
” বলো সুইটি।”
” ইয়ে আসলে বিয়ের ব্যাপারে।”
” হুম বলো।”
আন্দ্রিয়া ঢোক গিলল নিজেকে কিছুটা প্রস্তুত করে বলল,
” আমি চাইছিলাম বাড়ি ফিরতে।”
মুহূর্তে বদলে গেল এডউইনের চাহনি।চোখের পলকে আন্দ্রিয়ার পানে তাকাল হিংস্র দৃষ্টিতে।তার রক্তিম ভয়ংকর চাহনি শক্ত চোয়াল সব মিলিয়ে ভয়ে কুঁকড়ে উঠল আন্দ্রিয়া।মাফিনকে কোল থেকে নামিয়ে ঘুরে বসল এডউইন।আন্দ্রিয়া মেরির একটা বাক্যে সে রেগে গেছে,ভীষণ রেগে গেছে কিন্তু এই রাগ প্রকাশ করা বোকামি ছাড়া কিছুই নয়।এডউইন নিজেকে যথেষ্ট শান্ত রেখে বলল,
” হোয়াট ডিড ইউ সে সুইটি?সে ইট এগেইন।”
এডউইন এই কথা শান্ত সুরে বললেও তার কথায় রাগ ঝরছে।আন্দ্রিয়া এডউইনের হাত চেপে বলে,
” আমি চাইছিলাম কি আমাদের বিয়ের কথা বাড়িতে জানাতে।”
” তো?”
” আপনি তো জানেন আমি বন্ধুদের সাথে ব্যাংকক যাওয়ার উদ্দেশ্যে পালিয়ে এসেছি।এখন হঠাৎ করে বিয়ে করে সবার সামনে যাওয়া কেমন দেখায় না?তারা আমাকে ছোট থেকে মানুষ করেছে জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তাদের না জানানো কেমন যেন লাগে।”
এডউইন ধপ করে নিভে গেল।সেদিন রাতে আন্দ্রিয়া পালিয়ে আসার ব্যাপারটা এডউইনকে জানিয়েছে এসব নিয়ে খুব বেশি মাথা ব্যথা দেখায়নি কিন্তু আন্দ্রিয়ার মাথায় এখন যা চলছে তা নিয়ে এডউইনের যথেষ্ট আপত্তি আছে।আন্দ্রিয়া জেদি ত্যাদড় হলেও ভীষণ নরম মনের মেয়ে।এডউইন আচমকাই চুপচাপ হয়ে গেল মাফিনকে পুনরায় কোলে নিয়ে কাঁদো কাঁদো হয়ে এলো তার মুখ।আন্দ্রিয়া এডউইনের ভাব ভঙ্গিমা কিছুই বুঝতে পারছে না কি হচ্ছে কি? এডউইন হঠাৎ দমে গেল কেন?
” এডউইন কিছু বলছেন না কেন?”
” তুমি যে আমার হবে না তা আমি বুঝতে পারছি আন্দ্রিয়া।”
আন্দ্রিয়া চমকে গেল।
” মানে?কিন্তু কেন?”
” তুমি যখন বাড়ি ফিরবে তোমার চাচারা ভীষণ রেগে যাবেন।শোনো যতই ভালোবাসুক মা বাবার চেয়ে আপন কেউ হয় না।তোমার ফিরে যাওয়াটা তারা হয়তো মেনে নিতে পারবে না।তুমি যখন বিয়ের কথা বলবে তারা তোমার সাথে পালটা রাগ দেখিয়ে অন্যত্র বিয়ের ব্যবস্থা করবে।”
” এমনটা করবে না।”
” তার নিশ্চয়তা দিতে পারো?তুমি তোমার পরিবারকে ভালোভাবে বুঝো আমি না।আমি শুধু এইটুকুই বলতে পারি আমি তোমাকে হারাতে পারব না।”
আন্দ্রিয়া চিন্তায় পড়ল।সত্যিই তো চাচিমনিরা চাচারা তার উপর ভীষণ রেগে যাবে বাড়ি থেকে যে বের করে দেবে না তার নিশ্চয়তা নেই।তাছাড়া ছোট থেকেই দেখেছে সে যা চায় তার দুই চাচি তার বিরোধীতা করে আর না হয় যা চাইবে তা সরিয়ে ফেলবে।হোক সেটা খাবার থেকে শুরু করে পোশাক।আন্দ্রিয়া যখন চিন্তায় বিভোর তখনি আগমন ঘটল শালোমীর।
শালোমী আড়ালে দাঁড়িয়ে শুধায়,
” আন্দ্রিয়া মেরি শুনছেন?এডউইন আপনাকে ভালোবাসে তাকে ছেড়ে যাওয়ার স্পর্ধা দেখাবেন না।এডউইন উইলসন যা বলছে তা শুনুন।”
আন্দ্রিয়া শালোমীর কথায় প্রত্যুত্তর করল না।চুপচাপ বসে রইল নিগূঢ়।এডউইন আন্দ্রিয়াকে কিছুটা সময় দিয়ে পুনরায় বলে,
” আন্দ্রিয়া আমাদের বিয়েটা হয়ে যাক দেখবে তারা আপত্তি করলেও কিচ্ছু করার থাকবে না।ঠিকি হাসি মুখে মেনে নেবে সবটা।আমাকে বিশ্বাস হয় না?একবার বিশ্বাস করো।”
” আপনাকে আমি বিশ্বাস করি এডউইন।”
” তাছাড়া যার জীবণ বেধে আছে এই জঙ্গলে এত এত পশুপাখীর সাথে তার সাথে কেউ মেয়ে বিয়ে দেবে?তুমি আমাকে যতটা বুঝতে পারছো তারা কিন্তু পারবে না।আন্দ্রিয়া জীবন তোমার সিদ্ধান্ত তোমার।”
” এসব কথা বাদ দিন। আপনার মা কী জানাল?”
” মম আজ রাতেই আসবে।”
” সত্যি?”
” হুম।”
এডউইনের মা নাওমি ছেলের বিয়ের ব্যাপারটা জানাতেই তিনি ভীষণ রেগে যান।অবশ্য রেগে যাওয়ার নিশ্চয়ই কোন কারণ ছিল হোক সেটা নিজ স্বার্থ বা বিরোধীতা।এডউইন তার মাকে সাফ সাফ জানিয়ে দিয়েছে সে শুধু চায় তার মায়ের উপস্থিতি এর বাইরে কোন কিছুই নয়।একটা মন্তব্যও আশা করছে না সে।আন্দ্রিয়া এডউইনের কোলে শুয়ে পড়ল।মেয়েটা চিন্তিত কণ্ঠে বলেন,
” এডউইন আপনার মা যদি আমাকে মেনে না নেয়?”
” আই ডোন্ট কেয়ার আমি তোমাকে ভালোবাসি।বিয়ে আমি তোমাকেই করব, কারো মতামত আমার চাই না।”
” এডউইন আপনার দ্বিতীয় বাবা সম্পর্কে কিছু বলুন।”
এডউইন শব্দ করে শ্বাস ছাড়ল।
” উনার সম্পর্কে বলার মতো কিছু নেই কিন্তু সেই অল্প সময়টাতে তিনি আমাকে অনেকবার মুগ্ধ করেছেন।সৎ বাবা হলেও তিনি কখনো ওই চোখে আমাকে দেখেননি জানি না কেন আমাকে এতটা ভালোবাসতেন।আমি কি খাব কোথায় যাব আমার কি চাই সব ব্যাপারে আমার মায়ের থেকেও উনার গুরুত্ব ছিল সবচেয়ে বেশি কিন্তু ওই মানুষটাকে আমি বোধহয় পরিপূর্ণ মর্যাদা দিতে পারিনি।”
আন্দ্রিয়া চুপচাপ রইল।তাকাল এডউইনের পানে ছেলেটার উষ্কখুষ্ক বাদামি চুল আর খোচা খোচা দাড়ি কি মিষ্টি লাগছে।
এডউইনের মা নাওমি প্যালেসে আসলেন রাত বারোটায়।তিনি যখন প্যালেসে প্রবেশ করলেন সবকিছু কেমন থমথমে হয়ে গেল।আন্দ্রিয়া নাওমিকে দেখেই চমকে গেল এডউইনের মাকে সে কোথায় দেখেছে?এত চেনা চেনা লাগছে কেন?
নাওমি ছেলের উপর রেগেই ছিলেন তার রাগটা প্রবল ভাবে বাড়ল যখন আন্দ্রিয়া মেরিকে একপলক দেখল।বাচ্চা একটা মেয়ে দেখতে ভারী মিষ্টি এডউইনের মাথা যে বিগড়ে যাবে তা তো অস্বাভাবিক কিছু নয়।তবে এডউইন নিজের স্বার্থের লোভে কেন মেয়েটার জীবন শেষ করছে!
নাওমি সোফায় বসলেন পাশে বসল আন্দ্রিয়া এডউইন ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে তাকিয়ে আছে দাঁতে দাঁত খিঁচে।এডউইনের মামা অর্থাৎ নাওমির ভাই নেহাল সঙ্গেই এসেছেন তিনি ভীষণ বিরক্ত এডউইনের ভাবসাবে।ইচ্ছে করছে কষিয়ে দুটো চড় মারতে।আন্দ্রিয়া আড় চোখে তাকাল নাওমির পানে-নাওমি দেখতে বেশ ফর্সা, পরনে সাদা গোল্ডেন মিশ্রণে জরজেট শাড়ি।গলায় ঝুলছে পার্লের নেকপিস।চুলগুলো নিশ্চয়ই রঙ করেছেন সাদা কালো চুলের এক পাশে ব্রাউন রঙটা চোখে পড়ছে।চোখে এটে আছে সোনালি ফ্রেমের চশমা।ঠোঁটে হালকা লিপস্টিকে ভদ্র মহিলাকে বেশ নজড়কাড়া সুন্দরী মনে হচ্ছে।উনার ফ্যাশন সেন্স বেশ ভালো তা আন্দ্রিয়া এক দেখায় বুঝে ফেলল।
নাওমি আন্দ্রিয়ার উদ্দেশ্যে বলেন,
“আমাকে চেনো?”
” চেনা চেনা লাগছে তবে…”
” আমি সমাজ সেবিকা নাওমি।চিনতে পারলে এবার?”
আন্দ্রিয়া চমকে উঠল।উনাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ চর্চা হয়।তার স্টাইল বচন ভঙ্গি দুঃসাহসিকতা কিংবা সমাজ সেবা সব নিয়ে বারবার আলোচনায় আসেন।তার একটা ফেসবুক পেইজ আছে সেখানে নাওমির টুকটাক কাজের ভিডিও দেওয়া হয়।
” মা তোমার নাম কী?”
আন্দ্রিয়ার মনোযোগ ভঙ্গ হলো নিজেকে কিছুটা প্রস্তুত করে বলল,
” আন্দ্রিয়া মেরি।”
” বাহ সুন্দর নাম।কোথায় থাকো?”
নাওমির কথায় বাঁধা প্রদান করল এডউইন,
” মম তোমাকে ইন্টারভিউ নিতে ডাকিনি।তুমি ওঁকে একবার দেখতে চেয়েছো দেখে নাও।এই ছাড়া ওর সম্পর্কে সব আমি তোমাকে পূর্বেই বলেছি।এত ভনিতার কিছু নেই।”
এডউইনের এরূপ কথায় আচমকা রেগে গেল নেহাল।এডউইনের উদ্দেশ্যে কিছু বলার আগেই নাওমি চোখ ইশারায় থামতে বলল।নাওমি এডউইনের উদ্দেশ্যে করে বললেন,
” ঠিক আছে।তবে একটা প্রশ্ন আন্দ্রিয়াকে আমি অবশ্যই করব।আন্দ্রিয়া মেরি আমার ছেলে এডউইন উইলসনকে তুমি সেচ্ছায় বিয়ে করছো?”
” জি।”
” বেশ।তার অতীত নিশ্চয়ই জানো?যেহেতু ভালোবেসে বিয়ে করছো আশা করি কোন কিছুই আড়াল হওয়ার কথা না।”
নাওমি ফোঁড়ন কেটে বলল আন্দ্রিয়াকে।কিন্তু এডউইন তো আন্দ্রিয়াকে অতীত সম্পর্কে বলেছে তার কাছে এসব অজানা নয়।এডউইনের জেলে থাকা রিহ্যাবে থাকা মাদকাসক্ত হওয়া সবটাই জানে তাই আন্দ্রিয়া হাস্যোজ্জ্বল কণ্ঠে বলে,
” আমি জানি এডউইন সব শেয়ার করেছে আমায়।”
নাওমি হতাশার শ্বাস ছাড়লেন।মূলত তিনি চান না আন্দ্রিয়ার এই বিয়েটা হোক।
” আন্দ্রিয়া আমি নিজ হাতে রান্না করে তোমাদের জন্য নিয়ে এসেছি টেবিলে রাখা আছে অবশ্যই খাবে।খেয়ে জানাবে কিন্তু কেমন হয়েছে।”
” জি অবশ্যই।”
আন্দ্রিয়াকে রেখে এডউইন প্যালেসের বাইরে গেল নাওমিকে এগিয়ে দিতে।আন্দ্রিয়ার অগোচরে যেতেই নেহাল চেপে ধরল এডউইনের কলার,
” এই তুই কাকে ভাব দেখাস?থাপড়ে তোর…
” আহ নেহাল কি হচ্ছে কি।”
নাওমির ধমকে নেহাল পিছ পা হলেম।বোনের আদেশ নিষেধ মানতে সে বাধ্য।এডউইন এসব তোয়াক্কা না করে নিজেকে সংযত করল।নাওমি নরম গলায় বললেন,
” এডউইন আমি একজন মা হয়ে নয় মেয়ে হয়ে বলছি আন্দ্রিয়াকে বিয়ে করে মেয়েটার জীবন নষ্ট করো না।প্লিজ সে থাকতে পারবে না তোমার সাথে।এমন পুরুষের সাথে কোন মেয়েই থাকতে পারবে না।আজ হোক কাল হোক বিবেক নাড়া দেবেই।”
এডউইন তীর্যক হেসে বলল,
” আমি দেখিয়ে দেব আন্দ্রিয়া আমার সাথে থাকবেই।”
” কি করে রাখবে?ধরে বেঁধে?এসব অন্যায় এডউইন প্লিজ যেভাবে ছিলে সেভাবে থাকো।একটা ফুটফুটে মেয়েটাকে নিংড়ে দিও না।”
” আহ আর শুনতে চাই না তোমার এসব কথা।আন্দ্রিয়া থাকতে পারবে কি পারবে না সেসব সময় বলে দেবে।”
” তোমার চিকিৎসা চলছিল সেসব ছেড়ে ছুড়ে এখানে এলে চিকিৎসাটাও পরিপূর্ণ করতে দিলে না।তোমার ছোট পাপাকে কথা দিয়েছিলে চিকিৎসা চালিয়ে যাবে।”
টেরিবেল পর্ব ৯
” মম প্লিজ এখান থেকে যাও।বিয়ের তারিখটা জানিয়ে দেব চলে আসবে।”
নাওমি চুপচাপ কিয়ৎক্ষণ তাকিয়ে রইলেন এডউইনের পানে।এই ছেলের
ঔদ্ধত্য আচরণ দিন দিন বেড়েই চলেছে।