আপনাতেই আমি সিজন ২ পর্ব ৪৫
ইশিকা ইসলাম ইশা
কানাডার টরেন্টো শহরের খ্যাতিমান হসপিটালের বিশাল করিডর দিয়ে একটি রুমে ঢুকল নাস। কানাডিয়ান ভাষায় মেয়েটি ডক্টর কে পেসেন্ট এর হাজবেন্ড এর নাম বলতেই।ডক্টরটি চমকে উঠে কানাডিয়ান ভাষায় বললো,
কার ওয়াইফ???
এখুনি মেয়েটার হ্যাজবেন্ট এর নাম কি বললে?
নাস মেয়েটি হচকচিয়ে বলল,
তীব্র চৌধুরী!!
হোয়াট??
নাসটি ঘাবরালো ডক্টরের রিয়একশন দেখে। বেচারি বুঝল না কি এমন বলল সে,
আর ইউ ওকে! ডক্টর ম্যারিডোনা…….
ডক্টর ম্যারি আশ্চর্য হয়ে বলল,
তীব্র চৌধুরী ওয়াইফ!!!আর ইউ সিউর??
নাসটি ডক্টর ম্যারির অভিব্যাক্তি বুঝল না। হঠাৎ এমন রিয়্যাক্ট করার কারনটাও বুঝল না।
ইয়েস।দি গাল ইজ তীব্র চৌধুরী ওয়াইফ!
ডক্টর ম্যারিডোনা এবার তাকালো রিদির দিকে।বেশি বয়স না মেয়েটার। তীব্র চৌধুরীর বৌ হওয়ার মতো যোগ্য বলেও মনে হচ্ছে না।তবে মেয়েটার চোখে মুখে উপচে পড়া মায়া।এমন মায়াভরা মুখ তিনি খুব কম দেখেছেন।ম্যারিডোনা এগিয়ে গিয়ে চেক করল রিদিকে।গলা আর ঘারের দাগগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখল।তার মতে শারীরিক দূর্বলতার জন্য ঙ্গান হারাই নি।তিনি রিদিকে আবারো ভালোভাবে চেক করল।এখন রিপোর্ট দেখে বাকি সব ধারনা করতে পারবে।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
ডক্টর ম্যারিডোনা রিদিকে চেক করে বের হতেই হতদন্ত পায়ে অনুমতি ছাড়াই রুমে ঢুকে তীব্র। তীব্র কে এলোমেলো অবস্থায় দেখে ম্যারিডোনার চোখ ছানাবড়া।সে এতোটাই অবাক হয়েছে যে তীব্র যে রিদির কাছে পৌছে গেছে তা তিনি শুধুই দেখে গেলেন।
এদিকে তীব্র রিদির কাছে এসে পাগলের ঝাঁকিয়ে বললো,
এই বৌ উঠ!এই বৌ!এই!!কি হয়েছে তোর?আমাকে বল প্লিজ!!এই রিদি উঠ না!গেট আপ…….
ডক্টর ম্যারিডোনার এবার হুস ফিরল। তিনি হতদন্ত হয়ে তীব্রর কাছে গিয়ে বলল,
রিল্যাক্স তীব্র!সি ইজ ফাইন! রিল্যাক্স……সি ইজ যাস্ট স্পিলিং……
তীব্র ঝট করে উঠে ডক্টরের মুখোমুখি হয়ে বলল,
কি বালের ডক্টর হয়েছেন হ্যা!!!ওর ঙ্গান ফেরে নি কেন??
ডক্টর ম্যারিডোনা এমন উত্তেজিত তীব্র কে দেখে কিছু বলার ভাষা খুজে পেলেন না। তীব্র চৌধুরীকে মিলাতে তার বেশ বেগ পোহাতে হচ্ছে।আদো মানুষটা আসল নাকি নকল!
ডক্টর কে চুপ থাকতে দেখে তীব্র রেগে বলল,
হোয়াট হ্যাপেন্ড টু হার ডক্টর?টেল মি…….
তীব্রর চিৎকার শুনে ডক্টর ম্যারিডোনা ভয় পেয়ে দু কদম পিছিয়ে গেল। এদিকে তীব্রর চিৎকার শুনে মিরও দৌড়ে রুমে টুকল ।তীব্র কে রাগে ফুসতে দেখ
মির তপ্ত নিঃশ্বাস ফেলে জোর করে চেয়ারে বসিয়ে বলল,
প্লিজ শান্ত হ!আগে ওনাকে বলতে তো দে! শান্ত হয়ে ডক্টরের কথা শোন।
ইতিমধ্যে একজন রিদির কিছু রিপোর্ট দিয়ে গেল। ডক্টর ম্যারিডোনা একবার রিপোর্ট গুলো দেখে তীব্রর দিকে এগিয়ে দিল।তীব্র নিজেও দেখল রিপোর্ট গুলো। ডক্টর ম্যারিডোনা তীব্র কে দেখে ভয় পেলেও নিজেকে সামলে বলল,
দেখুন!রিদিতার শারীরিক কোন দূর্বলতার সমস্যা নেই।হয়তো মানসিক কোন সমস্যা বা কোন ঘটনা থেকে কিছু দেখে ভয় পেয়েছে। আপনার ওয়াইফের মানে ওনার কি মানসিক কোন সমস্যা আছে?এমনটা কি প্রায় হয়!!মাথা ব্যাথা বা মাথায় কোন………..
তীব্রর গম্ভীর গলায় জবাব,
ভয় পেয়েছে টিভিতে হরর মুভি……….
ইউ মিন ঢু সে রিদি হরর মুভি দেখে ভয় পেয়েছে?
ডক্টর ম্যারিডোনার কথায় তীব্র উওর করল না। গম্ভীর মুখ করে উঠে ভেতরের রুমে ঢুকে পড়লেন। ততক্ষণে রিদির ঙ্গান ফিরেছে।নাস মেয়েটি তীব্র কে দেখে ড্যাবড্যাব করে তাকাল তীব্রর দিকে।।কালো ঢোলা একটা টাওজারের সাথে একটা শার্ট জড়ানো। চুলগুলো একদম এলোমেলো হয়ে লেপ্টে আছে কপালে।পরিহিত শার্টের উপরের বোতাম কয়েকটা খোলা।যার কারনে ফর্সা বুকের অনেকাংশ দৃশ্যমান। এলোমেলো সুঠামদেহী সুশ্রী সুদর্শন পুরুষটি সবার নজর কাড়তে সক্ষম।নাসটি ও বাদ যায়নি।
এদিকে তীব্র রিদির দিকে এগিয়ে গেল।রিদির ঙ্গান ফিরেছে কিছুক্ষণ আগে।সে বার বার বাংলায় জিগ্গেস করেছে এটা কোন জায়গা?সে এখানে কি করছে? কিন্তু নাস মেয়েটি বাংলা বুঝতে অক্ষম হওয়াই রিদির কথার অর্থ বুঝতেও ব্যর্থ। রিদি তীব্র কে আসতে দেখে ঝট করে উঠতে চাইলেও উঠতে পারল না।মাথায় অসহ্য ব্যাথাটা যেন আবারো ফিরে এসেছে। তবুও সেটা তীব্র কে বুঝতে না দিয়ে মিষ্টি হেসে হাত বাড়াতেই তীব্র গম্ভীর মুখে রিদির বাড়িয়ে দেওয়া হাত না ধরে সরাসরি মুখ গুজল রিদির গলার ভাজে।দুহাতে রিদিকে জরিয়ে ধরল নিজের সাথে।রিদি হতবাক হয়ে গেল তীব্রর কান্ডে।আড়চোখে নাস মেয়েটিকে দেখল স্ট্যাচুর মতো হা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে।রিদি দু হাতে তীব্র কে সরাতে চাইলে তীব্র বিরক্ত হয়ে বলল,
সমস্যা কি??
রিদি আমতা আমতা করে বলল,
ইয়ে মানে!আমরা বাসায় নেই!!
তো!!!
রিদি হচকচিয়ে গেল তীব্রর কথায়।বিনা বাক্যে তীব্র কে চরম নির্লজ্জের ট্যাগ দেওয়াই যাই।রিদি আড়চোখে আবারো নাসটিকে দেখে বলল,
বাসায় চলুন!!
তীব্র ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেলে রিদিকে কোলে তুলে বেরিয়ে গেল। এতোক্ষণে যে নাসটি তীব্র কে চোখ দিয়ে গিলে খেল।তাতে তীব্রর বিন্দুমাএ যায় আসে নি।বরং তার ভাবসাব এমন যেন এখানে ওরা ছাড়া আর কেউ নেই।সে রিদিকে কোলে তুলে বের হতেই নাসটিও বের হল।ডক্টর ম্যারিডোনা তখন চেয়ারে বসে গভীর ভাবনায় মত্ত। তীব্র কে বের হতে দেখে চট করে উঠে দাড়ালো। তীব্র দরজা পর্যন্ত এসে বলল,
বৌ দরজা একটু টান দিন।
রিদি তীব্রর কথায় দরজা টান দিয়ে খুলতেই তীব্র রিদিকে কোলে নিয়েই বেরিয়ে গেল।
তীব্র বের হতেই ডক্টর ম্যারিডোনা আবারো রিপোর্ট গুলো দেখলেন।তবে আড়চোখে তাকালো নাসটির দিকে।অল্পবয়সী সুন্দরী নাসটিকে দেখে মৃদু হাসল।সে যে তীব্র চৌধুরীকে দেখে থ হয়ে গেছে তা বুঝতে অসুবিধা হলো না।তিনি নাসটিকে আর কিছু বললেন না। রিপোর্ট দেখায় মনোযোগী হলো।
কানাডার রাস্তা ধরে তখন গাড়ি চলছে।চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বড় বড় গাছ গাছপালা আর সরু রাস্তা। প্রায় সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে।পেছনের সিটে বসে আছে তীব্র আর তীব্রর বুকের মাঝে গুটিশুটি মেরে নিরবে ঘুমিয়ে আছে রিদিতা।তীব্রর পেছনের সিটে বসে আছে কালো পোশাক পড়া একজন লোক।যার হাতে গান আর তা তাক করা আছে তীব্রর দিকে।সামনে একজন লোক ড্রাইভ করছে। কিন্তু তীব্রকে দেখে বোঝার উপায় নেই তার মাথার পেছনে বন্দুক ধরে আছে কোন শত্রু!প্রায় ঘন্টা দুয়েক পার হয়েছে হয়তো। তীব্র চুপচাপ বসে থেকে বৌয়ের ঘুমন্ত বাচ্চা মুখখানা দেখছে আর দু’হাতে রিদিকে বুকে চেপে আছে।কোথায় যাচ্ছে আপাতত তা জানা নেই।আর না জানার ইচ্ছে আছে।সে তো তার পিচ্চি বৌয়ের মুখবয়ে মত্ত। তীব্র রিদি দেখতে দেখতেই বিরবির করে বলে,
মায়া !!আস্ত একটা মায়াপরি!!অকারনেই এই মায়ায় জরিয়ে গেছে!এই আস্ত মায়াটাকে বুকে জড়িয়ে রাখলে সব ভুলে থাকা যায়।
ইতিমধ্যে রিদি নড়েচড়ে উঠে ঘুমঘুম চোখজোড়া মেলতেই বুঝল সে তীব্রর বুকে।কারন শ্বাস নিতেই মাতাল করা কড়া পারফিউম এর ঘ্রাণ পেল।রিদি তীব্রর মাতাল করা ঘ্রাণ শুকে নেশার মতো মুখ ডুবালো উষ্ণ বুকে।বুকে নাক মুখ ঘষে মাথা তুলে তীব্রর দিকে তাকাতেই দেখল তীব্র মুচকি হেসে তার দিকে তাকিয়ে আছে।তীব্রকে এভাবে তাকাতে দেখে রিদি লজ্জা পেয়ে আবারো মুখ ডুবালো উষ্ণ বুকে। তীব্র রিদিকে এতো লজ্জা পেতে দেখে বলল,
লজ্জা পাওয়ার কোন প্রতিযোগিতা হলে আপনাকে নোবেল দেওয়া হতো বৌ!!
রিদি মুচকি হেসে তীব্রর কোলে থেকে উঠে বসতেই পেছনে বসা লোকটাকে দেখে আঁতকে উঠে চিৎকার করল,
আআআআআআআ………..
তীব্র ঝটপট রিদিকে আবারো টেনে বুকে আগলে নিল।সে জানত এমন কিছু হবে।রিদি ভয়ে তীব্র কে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে বলল,
পিছে … আপনার মাথার পিছে বন্দুক ধরে আছে!
তীব্র রিদির কপালে,গালে পরপর উষ্ণ স্পর্শ দিয়ে মিহি গলায় বলল,
ভয় পেতে নেই বৌপাখি! শান্ত হন!আমি আছি তো!
রিদি তীব্রর কথায় ছলছল চোখে তাকালো তীব্রর দিকে। তীব্র দীর্ঘশ্বাস ফেলে রিদির কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে বলল,
এদিক ওদিক কোনদিক তাকানোর প্রয়োজন নেই।আপনি এভাবে চুপটি করে থাকুন।কিছু শুনতে পাবেন।
রিদি তীব্রর কথায় শান্ত হতে পারল না ছলছল নয়নে ছটফট বলল,
ওনারা আপনার মাথার পিছনে বন্দুক ধরে আছে কেন?
তীব্র ক্ষিপ্ত হয়ে বিরবির করল,
বাল গুলার মরার পাখা গজিয়েছে তাই।
রিদি তীব্রকে বিরবির করতে দেখে বলল,
কি হলো বলুন??
তীব্র তপ্ত নিঃশ্বাস ফেলে নিজেকে শান্ত করে বললো,
জানি না বৌ!
রিদি কাঁদতে কাঁদতে বলল,
ওনাকে বলুন আপনাকে ছেড়ে দিতে !!
তীব্র কিছুক্ষণ রিদির কান্নামাখা মুখটা দেখে বলল,
শুশুন বৌ!!!!
রিদি তীব্রর দিকে তাকাতেই তীব্র বলল,
আপনাকে একটু টেস্ট করি বৌ!আপনি অনেক ইয়ামি বৌ!!
রিদি তীব্রর এমন কথায় কান্না ভুলে ড্যাবড্যাব করে তাকালো তীব্রর দিকে।কোন জন্মে কেউ এমন আবদার কাউকে করেছে কি না জানা নাই?সে কি খাবার!!!তাকে কি খাওয়া যায়!! অদ্ভুত সব বাক্য তীব্রর। আপনাকে একটু টেস্ট করি!!!! মানে সে কি টেষ্ট করার মতো কিছু!!
তীব্র রিদিকে কান্না ভুলে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকতে দেখে মুচকি হাসল।ধীরে ধীরে রিদিকে কোলে তুলে মুখটা রিদির মুখের কাছে এনে ফিসফিস করে বলল,
ট্রাস্ট মি বৌজান!ইউ আর ভেরি ট্রেস্টি!এন্ড আই লাভ ইউর টেস্টি স্মেল!
তীব্রর উষ্ণ নিঃশ্বাস রিদির মুখে পড়তেই রিদির সম্পন শরীর শিহরিত হল। মৃদু কম্পন সৃষ্টি হল পুরো শরীর জুড়ে।শুকনো ঢোক গিলে নিজেকে সামলাতে চাইলেও তীব্রর নিঃশ্বাসের ঘনত্বে বেশিক্ষণ স্বাভাবিক থাকতে পারল না।তিরতির করে কেঁপে উঠল ঠোঁটজোড়া।তীব্রর হাতের ছোঁয়া তখন পিঠ বেয়ে ঘাড়ের কাছে আসতেই আচমকা গলার পেছনের অংশে চিনচিনে ব্যাথায় ধীরে ধীরে চোখ বন্ধ হয়ে গেল রিদির।
রিদির ঙ্গান হারিয়ে চোখ বন্ধ করতেই তীব্র ঠোঁট ছোয়াল ঠোঁটে। ঙ্গানহীন রিদিকে একদম পিষ্টে ধরল বুকে।অস্থির লাগছে তীব্রর। তবুও নিজেকে শক্ত করে সিটে রিদিকে শুইয়ে দিয়ে ওরনা দিয়ে পুরো শরীর ভালোভাবে পেঁচিয়ে দিয়ে কানাডিয়ান ভাষায় লোকটিকে বলল,
গাড়ি সামনের দিকে সাইড কর। তোদের গাড়িতে বসব।মেয়েটি গাড়িতেই থাকবে।তোদের আমাকে দরকার ওকে না।
লোকটিও কানাডিয়ান ভাষায় বলল,
আমি তোকে ভরসা করছি না।তোকে বাগে পাওয়া সহজ নয় তীব্র চৌধুরী।বাট মেয়েটির জন্য তুই এখনো কোন কিছু করতে পারিস নি।তাই মেয়েটাও আমাদের সাথেই যাবে।
তীব্রর চোয়াল শক্ত হয়ে এলো।রিদি এই মূহুর্তে গাড়িতে না থাকলে এই চুনোপুটি কে মারতে তার দু মিনিট এর বেশি সময় লাগত না।নিহাত এই বালের বৌ তার হাত পা বেঁধে রেখেছে।নয়তো….হাহ…. তীব্র ফোস করে একটা নিঃশ্বাস ফেলে বলল,
ওকে সাথে নিলে ধ্বংস হতে বেশি সময় নাই তোদের।এন্ড আই প্রমিস ইউ দ্যাট।নাউ চয়েস ইজ ইউরস!!!
লোকটি তীব্রর ঠান্ডা হুমকিতে খানিকটা ঘাবড়ে গেলেও নিজেকে সামলে নিল।আজ তার মৃত্যু নিশ্চিত ছিল তীব্র চৌধুরীর হাতে। কিন্তু তীব্র চৌধুরী এখনো কিছুই করে নি।মানে সে লিডার পর্যন্ত তীব্র কে পৌছাতে পারবে তাও একা।আজ না তার সাথে কোন গাড আছে না আর কেউ।তাছাড়া মেয়েটা তাদের কি কাজের!তারা শত্রতায় কখনো মেয়েদের আনে না। তাছাড়া লিডার পর্যন্ত তীব্র চৌধুরীকে একা নিয়ে আসাই মূল কথা।তাই লোকটি তীব্রর কথা মেনে নিয়ে বলল,
৫ মিনিট দূরে আমাদের গাড়ি আছে। এখানে থেকে হেটে ওখানে পর্যন্ত যাব। কিন্তু তোর হাত আর চোখ বাঁধা থাকবে।
তীব্র কয়েকপলক রিদিকে দেখে মুখে ওরনা টেনে দিয়ে হাত দুটো পেছনে করতেই লোকটা হাতে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে দিল।এরপর চোখ বেধে তীব্র কে গাড়ি থেকে নামিয়ে কিছুদূর হেটে অন্য গাড়িতে বসিয়ে দিল। তীব্র জোরে কয়েকবার নিঃশ্বাস ফেলে সেভাবেই বসে রইল।
জঙ্গলে ঘেরা একটা আদিম যুগের পুরানো বাড়ির কাছাকাছি এসে গাড়ি থামাই তীর।আগে গাড়ি নিয়ে যাওয়া যাবে না। খুব সাবধানে যেতে হবে। তীর,লাবিব দুইজনেই পেছনে রিদির দিকে তাকালো। তীর অসহায় গলায় বলল,
ইয়ে মানে পিচ্চি ভাবি!আমরা এর আগে আপনাকে নিয়ে যেতে পারবো না।আপনি মিরের সাথে গাড়িতেই থাকুন। ওখানে পরিস্থিতি কেমন সেটা…….
প্লিজ ভাইয়া!আমাকে ওনার কাছে নিয়ে চলুন! ওনার কিছু হলে !আমি কিভাবে থাকব!আমি এখানে থাকতে পারব না ভাইয়া!
তীর দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
পিচ্চি ভাবি তীব্রর কিছু হবে না। আপনি ওখানে গেলে রিস্ক বাড়বে।আপনার কিছু হলে তীব্র আমাকে আগেই কবরে পাঠাবে। প্লিজ ভাবি……
কিছু হবে না আমার!আমি জানি তীব্র আমার কিছু হতে দিবে না।প্লিজ প্লিজ আমাকে নিয়ে চলুন।
কিন্তু ভাবি আম্মা!!আপনি গেলে বস অনেক রেগে যাবে।বস আপনার জন্যই স্বেচ্ছায় ধরা দিয়েছে যাতে ওরা আপনার কোন ক্ষতি না করে।
আমি কিছু জানি না আমি যাবোই।আপনারা না নিয়ে গেলে আমি একাই যাব!!
লাবিব,তীর অসহায় দৃষ্টিতে তাকালো একে অপরের দিকে।মির ইতিমধ্যে বাইক নিয়ে হাজির হয়েছে।সাথে বড় একটা ব্যাগ।পড়নে পুরো কালো পোশাক।বাইকারদের মতো হাতে গ্লাভস। মাথায় হেলমেট।মির ব্যাগটা লাবিবের দিকে এগিয়ে দিয়ে একবার তাকালো রিদির দিকে। কেঁদে কেঁদে কি অবস্থা করেছে। মায়াবী মুখখানা চুপসে গেছে। কান্নার ফলে এখনো ভেজা আছে পাপড়ি গুলো।মির তপ্ত নিঃশ্বাস ফেলে লাবিবের দিকে তাকিয়ে বলল,
সব গান লোড করা।ম্যাপের হিসেব করলে আমাদের উত্তরের রাস্তা দিয়ে যেতে হবে।আমরা যাব জঙ্গল দিয়ে তীর আর বাকি পাঁচজন গাড রিদি সহ পশ্চিম এর রাস্তা দিয়ে।এ দিকে রিস্ক কম।
রিদিকে নিয়ে যাবে দেখে তীর বিরোধীতা করে বলল,
আপনাতেই আমি সিজন ২ পর্ব ৪৪
রিদি কে নিয়ে যাওয়া রিস্ক হবে মির!!
মির দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
রেখে গেলে আরো বেশি রিস্কি হবে। তাছাড়া বাড়িটির পিছনের দিকে সরু রাস্তা দিয়ে পাকা রাস্তায় উঠা যাবে।এর বেশি জানা সম্ভব হয়নি।লেটস গো…..