মি মাফিয়া পর্ব ২১
সুমাইয়া সাবিহা
আরিয়া নিজের রুমে বসে নিজে নিজে কথা বলছে ,,কেনো করলেন এমন ভাইয়া ? আপনি তো আমায় খুব ভালোবাসেন তাইনা ? তাহলে এটা কিভাবে পারলেন? নাকি আমায় ভালোবাসেন না আমি নিজেই ধরে নিয়েছি ভালোবাসেন। আজ ৪ টা দিন ধরে বাসায় আসেন নি ,কেন আসেন নি সেটা তো আজ নিজের চোখেই দেখে আসলাম ।অথচ আজ এসেও আমাকে একটি বার ডাকলেননা দেখেও ইগনোর করলেন কেনো ভাইয়া কেনো? আমায় আপনি ধোকা দিলেন? নাকি শুধু আমাকে দিয়ে নিজের ইচ্ছা পুরন করতে চেয়েছেন? আর ঐ মেয়ে টাকে সত্যি ভালো বাসে তাইনা । আপনি তো আমায় বলেছিলেন যাই হয়ে যাক আমাকে আপনি নিজের কাছে রাখবেন অথচ ঐ মেয়েটার সাথে রেস্টুরেন্টে সময় কাটাচ্ছেন ,ভালো আমিও আর আপনার সাথে কথা বলবো না। আর কখনো আপনাকে নিয়ে ভাববো না ।কখনো না ।
দরজায় করাঘাতের আওয়াজ পেয়ে চোখের জল মুছে ভাবলো
__এখন আবার কে আসলো?চাচার তো এতোক্ষনে ঘুমিয়ে পরার কথা । নাকি সামিরা এসেছে ?হবে হয়তো কোনো দরকারে ভেবেই দরজা খুলে কিছু বলতে যাবে তার আগেই অপ্রত্যাশিত মানুষ টি কে দেখে বিরক্ত নিয়ে সাথে সাথে দরজা আটকাতে চায় কিন্তু আফরান বাতাসের গতিতে ভেতরে ঢুকে দরজা আটকিয়ে নেয় ।
আরিয়া একটু তেজ নিয়ে বললো
__প্রব্লেম কি আপনার?
__সেটাই জিজ্ঞেস করছি ,প্রবলেম কি তোমার ?
আরিয়া বিদ্র হেসে বললো,
__আমার আবার প্রবলেম ।
__ দেখো মাথা গরম করোনা বলে দিলাম সোজাসুজি বলো কি হয়েছে ?
___আশ্চর্য আপনি আমায় প্রশ্ন করার কে হ্যা ? রুম থেকে বের হয়ে যান এক্ষুনি।
কথাটা কর্নপাত হতেই আফরান আরিয়ার গালে স্বজোড়ে চর বসায় ।
আরিয়ার শরীরের তীব্র ঘৃনা প্রকাশ করে চেঁচিয়ে বললো
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
__পারবেন তো শুধু এটাই করতে আর কি করবেন?আপনার কাজই তো এটা তাইনা। মেরে ফেলুন আমায় বেচে থাকার ইচ্ছে আমার কোনো কালেই ছিলোনা ।
আফরানের রাগের সীমা ছাড়ায় । আরিয়ার চুলের মুঠি ধরে এক হাতে ঠোট বরাবর দুগালে চেপে ধরে বলতে লাগলো :
__সমস্যা কি তোর? আমায় শান্তিতে থাকতে দিবিনা একটু? ভালোভাবে বলেছিলাম কি হয়েছে বলতে না বলে উল্টো ভাব নিচ্ছিস?একদম মেরে দিবো বলে দিলাম।
___মেরে ফেলুন না একদম বললাম তো মেরে দিতে নিষেধ করিনি তো।
আফরান এবার ধাক্কা মেরে আরিয়ার চুলের মুঠি ছেড়ে দিয়ে কষিয়ে দুগালে দুটো করে চারটা থাপ্পড় বসায় একেরপর এক। টাল সামলাতে না পেরে আরিয়া ফ্লোড়ে পরে গিয়ে ঠোটের কিছু অংশ কেটে রক্ত প্রকাশ পেয়েছে আরিয়ার।
____মুখের উপর তর্ক করছিস আবার ? শুন আমি শান্তিতে না থাকতে পারলে তোকেও শান্তিতে থাকতে দেবো না বুঝলি? বাড়াবাড়ি করলে এমন ভাবে মারবো যতোটা তোর কল্পনার বাইরে বুঝেছিস ?
আরিয়া নিজের অপারগতা প্রকাশ না করে স্ট্রং হয়ে ফ্লোড় থেকে উঠে দাড়িয়ে বললো,
__কেনো? কেনো বলুন তো? আমি কি আপনার চাকরানী নাকি দাসী? নাকি মেয়েলুভী পুরুষ আপনি? সুন্দরী মেয়ে দেখলেই নিজেকে আর সামলে রাখতে পারেন না টেল মি । আমাকে বলুন আমি পৃথিবী থেকে খুজে সব চেয়ে সুন্দরী মেয়েদের কে আপনার সামনে প্রেজেন্ট করবো তাদের কে দিয়ে আপনার ইচ্ছা পুরন হয়ে যাবে নিশ্চয়ই ।
আফরানের ধৈর্যের বাধ ভাঙ্গে । চোখ গুলোতে যেনো লাল রং ঢেলে দেওয়া হয়েছে হাত দুটো মুঠো বদ্ধ হয়ে আসে । কপালের রগ গুলো দুলখাচ্ছে উঠানামা করছে। শার্টের উপরের বোতাম দুটো খোলা নিশ্বাস টা ঘনঘন পরছে এই বুঝি সব শেষ করে দেবে ঝংকার তুলে সব ছিন্নভিন্ন করে দেবে ।
আফরানের অবস্থা দেখে আরিয়া এবার নিজেই ভয়ে কাপতে থাকে।
আফরানের রক্তিম চোখ জোড়া হয়তো গরমের তাপ সহ্য করতে না পেরে দু ফোটা জল গড়ায় ।
আফরান কি করবে নিজেও বুজতে পারছে না এই মুহুর্তে তার নিশ্চয়ই এই মেয়েকে মেরে দেওয়া উচিৎ ?,হ্যা এই মেয়েকে মেরেই দেওয়া উচিৎ কিন্তু কিন্তু কিন্তু তার নিল্লজ্জ বেহায়া মনের জন্য সেটাও করতে পারবেনা এটা ভেবেই পাশের দেয়াল টায় সব টা শক্তি দিয়ে স্বজোড়ে আঘাত করে বসে মুষ্টিমেয় হাতটি ।সঙ্গে সঙ্গে আফরানের হাত ফেটে প্রবাহিত রক্তের ন্যায় গড়িয়ে রক্ত বের হতে থাকে । দেয়ালের আওয়াজে আরিয়া কেঁপে উঠে চোখ বন্ধ করে নেয় শরীর কাপছে আরিয়ার ভিষন ভাবে ।
দেয়ালের শব্দে হয়তো বাড়ির অনেকেরই ঘুম ভেঙে যায় । কিন্তু ঘুম থেকে হঠাৎ আওয়াজে কারো বোধগম্য হলো না কি হয়েছে ।
আফরান দেয়ালে হাত মেরে সেখানেই হাত রেখে দাড়িয়ে আছে এই মুহুর্তে আরিয়ার চেহারা টা দেখার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নেই।সাদা টাইলসের দেয়াল বেয়ে আফরানের হাত বরাবর নিচে রক্ত গড়াচ্ছে । আফরান চোখ বন্ধ করে নিজেকে কনট্রোল করার চেষ্টা করছে যথেষ্ট।
আরিয়া একটু সাহস নিয়ে চোখ খুলে তাকিয়ে আফরানের এই অবস্থা দেখে বিচলিত হয়ে কাদতে কাদতে এগিয়ে আফরানের হাত ছুতে যায় কিন্তু আফরান ডান হাতের পাচ আঙুল দাড় করিয়ে বলে উঠে
__একদম টাচ করবি না আমায় তুই ,,
আরিয়া আফরানের ধমকে কেপে উঠে।
আফরান : আর কখনো আমার সামনে আসবিনা তুই । বলেই আফরান লালচে বর্ণের এই রাগ নিয়েই হনহনিয়ে রুম ছাড়ে একটিবারের জন্যও পেছনে তাকায়নি ।
আরিয়া জায়গায় বসে কাদতে থাকে পাশে আফরানের হাত থেকে ঝড়ে যাওয়া রক্তে স্পর্শ্ব করে চোখের জল ফেলে।
আমি ভাইয়াকে কষ্ট দিয়েছি খুব তাইনা ? ঠিক আছে আমারো কষ্ট পাওয়া উচিৎ । আজ খুব কথা শুনিয়েছি না ভাইয়াকে আমার কারনে ভাইয়া নিজেকে নিজে আঘাত করতে হলো তাইনা ? ঠিক আছে ।
আরিয়া নিজের সাথে নিজে কর্কশ কন্ঠে কথা গুলো বলে চোখের জল মুছে দাড়িয়ে চারদিকে একবার তাকিয়ে দুকদম হেটে ড্রয়ার থেকে নেইলকাঠার টা নিয়ে ছোট ছুরি খানা নিয়ে নিজের হাতে নিজে একটা- দুটা – তিনটা দাগ কাটে চোখ বন্ধ করে ।
ফোটাফোটা রক্ত হাত টপকে পরে ফ্লোরে ,,
আরিয়ার মাথা ঘুরছে হাত পা ঝিমুচ্ছে ,এখনি বোধয় পরে যাবে কোনো রকম ওয়াশরুমে গিয়ে শাওয়ার ছেড়ে দেয় মাথার উপর। কাটা জায়গা টার দিকে তাকিয়ে একটা শান্তির হাসি দেয় ।
__আমি এটারই যোগ্য । হ্যা ভাইয়া আমায় ধোকা দেয়নি কারন উনি তো কখনো আমায় ভালোবাসিই বলেননি তবে ধোঁকা কিভাবে দেবেন? তবে আমি রাগের মাথায় ওসব খারাব বাক্য উচ্চারন কেনো করলাম । আমার দোষ সব টা তো আমার দোষ । চোখ বন্ধ করে দাড়িয়ে ভিজছে আরিয়া ।
বেশ কিছুক্ষণ পর হঠাৎ ওয়াশরুমের দরজা ধাক্কানোর আওয়াজ পেয়ে আরিয়া বললো ,,
__যে হও চলে যাও আমার লেট হবে । বলে আবারো আরিয়া হাসি দেয় ।
আরিয়া দুলছে মাথা টা কেমন যেনো করছে।কিন্তু বারবার দরজায় আওয়াজ করায় বিরক্ত হয়ে দরজা টা খুলে দিলো । আরিয়া চোখ বন্ধ হয়ে আসছে বারবার ।একটু মাতাল মাতাল লাগছে আসলে মাতাল নয় মাথা বারবার ঘুরছে চোখে ঝাপসা দেখছে।
শরীর দুর্বলতায় দুলছে ।
আরিয়া চোখ খুলে দেখার চেষ্টা করলো কিন্তু সব ঝাপসা
___বললাম তো লেট হবে যাও এখান থেকে বলে দরজাটা আবার লাগাতে যায় কিন্তু তার আগেই আরিয়া খেয়াল করে সে হাওয়ায় ভাসছে ।
__কে আপনি? ছাড়ুন বলছি আমাকে একদম ছোবেন না । আমি খুব খারাপ জানেন? ছাড়ুন আমায়,
___একদম চুপ বেশি পন্ডিতি করতে কে বলেছে হুম? এখন তো দেখছি তোমারো সাইকোলজি প্রবলেম আছে ।
আরিয়া চোখ কচলিয়ে দেখার চেষ্টা করে কিন্তু স্পষ্ট দেখেনি তবে কন্ঠ শুনে বুঝার বাকি নেই এটা মি_মাফিয়া ছাড়া আর কেউ নয় ।
আরিয়া:আপনি আবার কেনো এসেছেন? আবার যদি বকে দেই তখন আবারো রাগ করবেন আবারো ব্যাথা পাবেন ।জানেন ! আপনি ব্যাথা পেলে আমার খুব কষ্ট হয় ।
আফরান কথা না বাড়িয়ে আরিয়া কে খাটের উপর শুয়ায় । ফাষ্ট এইড বক্স এনে একটু সময় নিয়ে আরিয়ার হাতে বেন্ডেজ করে দিয়ে বলে
__ জাস্ট এ মিনিট ,ওয়েট ।
আরিয়া চোখ বন্ধ রেখেই:
__শুনুন না
___পরে শুনবো আগে আসি একটু। বলে রুম ছেড়ে বেরিয়ে যায় ।
মিনিট দুয়ের মধ্যে হাতে খাবার নিয়ে চলে এসে আরিয়ার পাশে বসে বললো: __এখন বলো কি বলবে ?
আরিয়া : কিছু বলবো না কিন্তু আমার মাথায় কি জানি হচ্ছে ভিষন ব্যাথা ।
আফরান আরিয়ার মাথার পেছনে হাত রেখে অস্তে করে উঠিয়ে বালিশে হেলান দিয়ে বসিয়ে বললো ,
__হা করো ,
আরিয়া : এগুলো কি খাবার?
আফরান : হুম । খাবার খেয়ে ওষুধ খেলে তোমার মাথা ব্যাথা ভালো হয়ে যাবে।
আরিয়া : খাবো তো কিন্তু আমার এখন শীত করছে ভিষন এটা খুলে দিয়ে ভালো জামা পরিয়ে দিন।
আফরান থতমত খেলো।
আরিয়া: চুপ করে আছেন কেনো ? ভালো জামা নিয়ে আসুন না প্লীজ ।
আরিয়ার প্রত্যেক টা কথা নেশাতুর হালকা সুশীল কন্ঠের শুনাচ্ছে । আসলে দুর্বল হওয়াতে চন্চলতা গুলো এই মুহুর্তে আরিয়ার গলায় প্রকাশ পাচ্ছে না।
আফরান কবার্ড থেকে এক সেট জামা এনে আরিয়া কে দিয়ে বললো ,
__নাও । আমি অপেক্ষা করছি বাইরে জলদি চেন্জ করে নাও।
আরিয়া আফরানের হাতের কাপড় গুলো নেওয়ার সময় আফরানের হাত টা হালকা ভাবে ধরে বললো
__এখানে বসুন ।
আফরান আরিয়ার কথা মতো বসতেই আরিয়া বললো
__আপনার হাতে বেন্ডেজ করে দিবো কিন্তু আমি দেখছিনা ভালো ভাবে তাকালে মাথায় ব্যাথা হয় আপনি খুব কষ্ট পেয়েছেন তাইনা ভাইয়া।
আফরান আরিয়ার স্পর্শ কৃত হাতটি ভালোভাবে মুঠোতে নিয়ে বলে ,
__ উহুম । বলে আরিয়ার আরেকটু পাশ ঘেসে বসে আরিয়ার ভেজা চুল গুলো মুছে দেয়
আফরান: জলদি চেন্জ করো ঠিক আছে ।
আরিয়া : ওকে ।
আফরান বাহিরে গিয়ে দরজা টা একটু চাপিয়ে দেয় ।
কিছুক্ষন পর আফরান দরজায় হালকা আওয়াজ করে বলে ,
__হয়েছে কি ? আসবো?
আরিয়া : আসুন
আফরান ভেতরে ঢুকে দরজাটা লাগিয়ে সামনে তাকাতেই চোখ দুটো গোল বৃত্ত হয়ে গেলো।
দৌড়ে এসে আরিয়া কে বুকে জড়িয়ে নিয়ে বলে
__এটা কি করেছো ?
আরিয়া : আমি তো তখন বলেছিলাম পরিয়ে দিতে আপনি তো দেননি আমি কি ঠিক মতো দেখতে পাচ্ছি? যে পরবো? উল্টো ভাজ এই তো বুজতে পারছিনা জামার।
আফরানের বুকে ধুকধুক আওয়াজ ঘন হচ্ছে ।
আরিয়া জামা খুলে নিচের ছোট জামা টা উল্টো ভাবে পরে বালিশে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে ছিলো আফরান ভেবেছিলো হয়তো আরিয়ার চেন্জ করা শেষ তাইতো এসেছে।
আরিয়াও তো তাই বলেছিল।
আফরান চোখ বন্ধ করে আরিয়া কে জড়িয়ে আছে । আরিয়া ও আফরানের বুকটাকে প্রশান্তিময় বানিয়ে নড়ছেও না।
মিনিট কয়েক পরে আফরান এবার আরিয়াকে কোলে তুলে নিয়ে গিয়ে লাইট টা অফ করে দিয়ে এসে আড়িয়া কে বসাতে চাইলে আরিয়া বলল:
___এভাবেই থাকিনা প্লীজ।
আফরান কিভাবে বুজাবে এই মেয়েকে ,তার ভিতরে কি হচ্ছে ।
আফরান আরিয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে বললো ,
__ঠিক আছে এভাবেই থাকবে আগে জামা টা পরে নেও ।
আরিয়া : কেনো? আমিও তো সুন্দরী তাইনা? তাহলে আপনি ঐ মেয়ে টাকে জড়িয়ে ধরলেন আর আমাকে ধরলে প্রবলেম কি ঐ মেয়েটাও তো ছোট কাপর পরে ছিল।
আফরান এতোক্ষনে বুজলো আরিয়ার অভিমান কিংবা রাগের কারন টা।
নিশ্চয়ই দুপুর বেলা কলেজ থেকে ফিরার সময় দেখেছে স্নেহাকে কিন্তু সে তো প্রস্তুত ছিলোনা আচমকাই স্নেহা এসে তাকে জড়িয়ে ধরলো । এটাই বোধহয় তার প্রেয়সী দেখেছে কথাটা ভেবে মুচকি হেসে আফরান বললো
__ তাহলে আমার অভিমানীনী বুঝি এই কারনে আজ আমাকে বকা দিয়েছিলো?
__উহুম ,,
__তাহলে?
__ আপনিও অন্যদের মতো একসাথে এতো গুলো মেয়েকে টাইম পাস করেন জড়িয়ে ধরেন।
__ কিন্তু তুমি তো একজন কে দেখেছিলে তাহলে এতোগুলো হলো কিভাবে ?
__আমি সহ দুইজন আরো আছে আমি দেখিনি হয়তো ।
আফরান মৃদু হেসে বললো :
__আচ্ছা তাই বুঝি ? কিন্তু আমি যদি বলি আমার জীবনে তোমাকে ছাড়া কেউ নেই বিশ্বাস করবে?
__উহুম
__ বিশ্বাস না করেই এতো ভালোবাসো আমায় ?
আরিয়া কি যেনো ভেবে বললো ,
__করি তো বিশ্বাস , করতাম তো কিন্তু আজ কে থেকে করিনা।
আফরান আরিয়ার অভিমানী কথায় স্মীত হাসলো:
__ শুনো ! কাউকে ভালোবাসলে সে যা বলে সব মানতে হয় এটা জানো?
__হুম
__তাহলে শুনো আমি বলছি আমার জিবন মানে টাই তুমি আরু । তুমি ছাড়া আমি অচল । তোমাকে ছাড়া আমার অস্তিত্ব নিস্তেজময় হয়ে বিলুপ্ত হয়ে যাবে ।আমি তোমাতে সীমাবদ্ধ আরু আর শুধু তুমি তেই থাকতে চাই । আমি ভালোবাসায় বিশ্বাস করিনা কিন্তু তোমাকে আগলে রাখতে চাই । তোমাকে আমি আগলে রাখতে চাই সব টা দিয়ে তুমি যা দেখেছো আজ সব টা ভুল ছিলো লক্ষী সোনা। আমি ওকে জড়িয়ে নেইনি ঐ পচা মেয়েটাই হঠাৎ এসে আমাকে ধরেছিলো । আমার কথা গুলো বুজছো তুমি আরু?
___পাক্কা তো?
__একদম
___তাহলে ঠিক আছে ।
___এখন নামো লক্ষী মেয়ের মতো।
______উহুম
__ আবার কি হলো?
__আমার এইভাবেই তো জড়িয়ে ধরতে ভালো লাগছে জামার উপরে ভালো লাগেনা।
আফরান থতমত খেয়ে যায় । মুশকিলে পড়লাম তো এটাকে নিয়ে।
আফরান কি যেনো একটু ভেবে বললো ,
__এভাবে বেশিক্ষন থাকলে আমি কিন্তু ঠিক থাকতে পারবো না ,পরে আমাকে দোষ দিতে পারবেনা ।
__ওকে,
আফরান কি করবে বুজতে পারছে না ।কোনোভাবেই তো এই মেয়েকে বুঝানো যাচ্ছে না।
হঠাৎ করে ঘারে ঠেটের স্পর্শ্বে আফরান কেপে উঠে ।
-করছো কি আরু ।
__আমার খুব চুমু খেতে ইচ্ছে করছে ।উমমমম
___আরু তুমি ঠিক নেই
আরিয়া আফরানের কথা না শুনে আফরানের গলায় পরপর চুমু দিয়ে যাচ্ছে।
আফরান আরিয়ার মুখ চেপে বারবার আটকানোর চেষ্টা করছে।
কিন্তু আরিয়া আফরানের হাত সরিয়ে পরপর কিস করছে ।
আফরান বুঝলো আরিয়ার বেশামাল মন কে একটু কন্ট্রোল করতে হবে নয়তো আটকানো এভাবে বলে বলে অসম্ভব। তাছাড়া আফরানের কি ভালো লাগছেনা ?আরিয়ার ঠোঁটের ছোঁয়া তার শরীরে মিশে যাচ্ছে এটা যে না চাইতেই অনেক কিছু পাওয়া কতক্ষন আটকাবে সে তার প্রিয়া কে?
আফরান আরিয়াকে নিয়ে খাটের উপর ঐভাবেই শুয়ে পড়লো আরিয়া নিচে আফরান উপরে ।
আরিয়া এখনো পরপর কিস করছে বুকে ঘারে গলায় ।
আফরান আরিয়ার ইচ্ছেতেই ইচ্ছে করে যোগ দিয়ে ঠুটে ঠোট বসায়। কিছুক্ষন ঠোটে কিস করে পুরো শরীরে ঠোটের পরশ একে দিচ্ছে আরিয়া আফরানের শার্টের কলার খিচে ধরে আছে।
প্রায় অনেক টা সময় পর আফরান আরিয়া কে বললো ,
__লক্ষী টা আমার অনেক হয়েছে এবার চলবে পাগলামু বন্ধ করো ।
আরিয়া ঠোঁট উল্টে বললো
__উমমম,আরো আদর চাই অনেক ।
___ ঠিক আছে দেবো আগে কাপর পরো যদি জ্বর আসে তাহলে কিন্তু মার খাবা আগেই বলে দিলাম ।
আরিয়া ঠোট ফুলিয়ে বললো
__,ঠিক আছে পরবো কিন্তু বলুন পরে আদর দিবেন আরো অনেক ।
আফরান আরিয়ার কপালে আরেকবার ঠোঁটের ছোঁয়া দিয়ে বললো ,
__ঠিক আছে ।
আরিয়া উঠে বসলে আফরান ফোনের হালকা আলো তে ঠিক ভাবে পরিয়ে নিয়ে লাইট জালিয়ে খাবার খাওয়া শেষে ওষুধ টাও খাইয়ে দেয়। আরিয়ার শরীর টাও একটু হালকা হয়েছে মনে হয় ।
__এখন ঘুমাও ঠিক আছে ?
আরিয়া : উহুম আপনার সাথে ঘুমবো ।
আফরান প্রথমে না বললেও আরিয়ার কয়েকবার মায়াভরা আবদারের কাছে সে হার মানে।
আরিয়া আফরানের বুকে ঘুমনোর ইচ্ছে করে তাই শার্টের বোতাম গুলো খুলার চেষ্টা করে না পেরে জোড়ে এক টান মেরে শার্ট টাই ছিরে ফেলে।
মি মাফিয়া পর্ব ২০
আফরান কিছু বললো না শুধু আরিয়ার কাজ গুলো দেখছে আজ।
বউ তার এতো ইমোশনাল রোমান্টিক জেলাসি তা তার জানা ছিলো না ভেবে মুচকি হাসে । আজকের রাত টা না আসলে হয়তো কোনো দিন জানতেই পারতো না। তারপর…..