আপনাতেই আমি পর্ব ৫৮
ইশিকা ইসলাম ইশা
মুখে অক্সিজেন মাস্ক , মাথায় মোটা ব্যান্ডেজ,দু হাতে ক্যানলা ,পেটে সদ্য কাটা অবস্থা নিথর দেহ নিয়ে বেডে শুয়ে আছে রিদি।দরজা খুলেই তীব্রর পা যেন আর চলছে না!খুব কষ্টে কয়েক কদম এগিয়ে এসে বসে রিদির মাথার কাছে। কোথায় ধরবে খুজে পাচ্ছে না তীব্র।ভারি শরীরটা কোন মতে টেনে রিদির বেডের অল্প জায়গায় শুয়ে আলতো করে হাত রাখল রিদির মাথায় । অকপটে মুখ গুঁজে দিল গলায়।থামা থামা কন্ঠে বলল,
সময় বেশি নেই জান!চোখ খুলুন! আমাকে শুনতে পাচ্ছেন?এই জান!!
তীব্র একটু থেমে আবারো বলে,
আপনার কিছু হলে আমি কাউকে বাঁচতে দিব না!এতোদিন আপনার জন্য আমি নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছি।সবাইকে ছাড় দিয়েছি। কিন্তু…..
কিন্তু আপনার বাই এনি চান্স কিছু হলে ধ্বংসলীলা করতে আমি দুবার ভাববো না।একটারো অস্তিত্ব খুঁজে পাবে না কেউ কোনদিন।ফিরে আসুন!আমার কথা শুনতে পাচ্ছেন!!চোখ খুলুন!ফিরে আসুন।
রিদির তবুও কোন রেসপন্স নেই।তীব্র রিদির গলায় মুখ গুঁজেই জোরে শ্বাস নিলো।যেন নিশ্বাসের সাথে মিশিয়ে নিচ্ছে রিদির শরীরের সুবাস। তীব্রর চোখে পানি গিয়ে রিদির গলা ভিজিয়ে দিচ্ছে।আজ সে নিজেকে অসহায় মনে করছে।
তীব্র হাত বাড়িয়ে পকেট থেকে ফোনটা বের করে রিদির কানের কাছে মুখ এনে বলল,
আপনাকে ফিরতে হবে!! বাঁচতে হবে!লড়াই করতে হবে!আমি আগেও বলেছি আবারো বলছি আমি আপনার কিছু হলে কিন্তু আপনার বাচ্চা দেখব না আমি। আপনার বাচ্চা কাঁদছে জান!! ভীষণ কাঁদছে!!বলে ফোনটা রিদির কানের কাছে রাখে। সেখানে থেকে ভেসে আসছে বাচ্চার কান্নার শব্দ।তীব্রর এই কান্না সহ্য হচ্ছে না।চোখ মুখ শক্ত করে আবারো রিদির গলায় মুখ গুজে দিল।শক্ত করেই জরিয়ে ধরল রিদির অসুস্থ শরীর। এক মিনিট দু মিনিট প্রায় ৪ মিনিট অপর রিদির হাত নড়তে দেখে তীব্রর মুখে ফুটলো বাঁকা হাসি বিরবির করে বলল,
আমার চেয়েও মেয়ের প্রতি ভালবাসা বেশি!!নট ফেয়ার!!কথাটা বলে তীব্র রিদিকে ছেড়ে উঠে দাড়ালো।ফোনটা পকেটে রেখে আবারো রিদির দিকে এগিয়ে গেল,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
আপনি আমার দূর্বলতা না শক্তি হবেন এবার।বলে কপালে গাঢ় একটা চুমু একে বেরিয়ে আসে তীব্র।এরপর আর রিদির সাথে কথা বলে নি তীব্র কারন টা তাদের বাচ্চা।রুপেশ তীব্র কে রিদির থেকে দূরে থাকতে বলে কারন ও চায় তীব্র আর রিদির ডিভোর্স হয়ে যাক।এতে লাভ লস পরের হিসাব।তীব্রকে ভরসা করা যাবে না কোন মতে।তাই মূলত সে চাইছে রিদি আর তীব্র আলাদা হয়ে যাক।
এদিকে রিদির হৃদয় ভাঙা কান্নার অতনাদ তীব্র কে ভেঙে দিলেও তীব্র নিরুপায়।যে বাচ্চার জন্য এতো হাহাকার সেই বাচ্চা বেঁচে আছে সেটাও বলতে পারে নি। বরং আরো দূর ব্যবহার করেছে।যে সময় সবচেয়ে বেশি তাকে দরকার ছিল সেই সময় সে দূরে থেকেছে।চাইলেও সে রিদির কাছে আসতে পারত না।কারন রুপেশ মির্জার লোক তার উপর নজর রেখেছে।যদিও এসব হ্যান্ডেল করা তীব্রর কাছে বা হাতের খেলা।এমনি এমনি তো আর সে মাফিয়া না। কিন্তু ঐ যে দূর্বলতা,মায়ার সম্পর্ক।তার রাজকন্যা।সেখানেই আটকে তীব্র। এই মায়াই তার হাত পা বেঁধে রেখেছে।ইভেন সদ্য জন্মানো বাচ্চাকে খাবার দিবে না এটাও হুমকি দিয়েছে। এটুকু বাচ্চা যার একটু পর পর মায়ের খাবার চাই তাকে যদি খেতে না দেয়……..আর ভাবতে পারছে না তীব্র।
কিন্তু এটা বুঝল তার এতো দূবল হলে চলবে না।ঠান্ডা মাথায় কাজ করতে হবে।
রিদির থেকে দূরে থাকলেও রিদির সব তথ্য তার কাছে আসে।এতো এতো মানসিক চাপ ইচ্ছে করে ছুটে গিয়ে জরিয়ে ধরে সব চাপ দূর করতে। কিন্তু তীব্র পারে না।তিনটি জীবন তিনটা জায়গায় বিছিন্ন হয়ে আছে।একে অপরকে ছাড়া কেউ ই ভালো নেই।তীব্র কে ছাড়া রিদি,রিদি আর বাবু ছাড়া তীব্র।বাবা মা ছাড়া বাবু।কেউ ভালো নেই।তবে ভালো না থেকেই পরিস্থিতির সাথে লড়তে হবে।তীব্র প্ল্যান অনুযায়ী রুপেশ এর সব কথা মানলেও নিজের আলাদা পরিকল্পনাও করেছে সে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী সব চললেও মোনার সাথে সেদিন রাতে যা হয়েছে তা পরিকল্পনায় ছিল না।
মোনাকে ব্যবহার করেছে রুপেশ।মুগ্ধ কে আটকে রেখে।রুপেশের পরিকল্পনা অনুযায়ী তীব্র আর মোনার আগের রেশ টেনেই মূলত রিদির মনে তীব্রর প্রতি ঘৃণা তৈরি করতে চেয়েছে। অনেকাংশে সফলও সে। তীব্র নিজেই সেটা স্বীকার করে নেই। আর বিয়েতে রাজি ও হয় তীব্র।
রিদি তীব্র কে ছেড়ে চলে যাওয়ার কয়েকদিন পর মুগ্ধ কে বাঁচাতে পারলেও বাবুকে রুপেশ নিয়ে গেছে।এতেও তীব্র কোন রিয়্যাক্ট করে নি।বরং শান্ত থেকে পরবর্তী পরিকল্পনা করেছে।তার পরিকল্পনা কাজ করলেও এতো দ্রুত কাজ করবে না।কিছু সময় প্রয়োজন।তাই সে নিরব থেকেছে।যা হচ্ছে হতে দিয়েছে।তবে এর মাঝে আরো একটা ক্লু দিয়েছে মুগ্ধ।তাকে কোথায় রাখা হয়েছিল।জায়গা কেমন ছিল।সব ড্রয়িং করেছে মুগ্ধ।তীব্র তীক্ষ্ণ মস্তিষ্কে পরিকল্পনা আরো একটু জোর পেল।এভাবে কেটে গেছে দুটা মাস।
দুই মাসে রুপেশ বাচ্চাকে ভিডিও তে দেখালেও মুখ দেখায় নি।এতেও কোন প্রতিবাদ করে নি তীব্র। শুধু মনে মনে বলে,
পাপার রাজকন্যা তুমি জান।এক যুদ্ধ করে পৃথিবীর আলো দেখেছো। দ্বিতীয় যুদ্ধ করো তোমাকে সব ফিরিয়ে দিব।
সেদিন সময় ঠিক ৩ টা বেজে সাত মিনিট।ঘন কালো জঙ্গলের দিকে বাইক নিয়ে ছুটছে তীব্র।বাইক চালাচ্ছে বললে ভুল হবে উড়াচ্ছে এক প্রকার। ঠিক জঙ্গলের মাঝামাঝি এসে বাইক থামিয়ে দেয় তীব্র।দূরবীক্ষন যন্ত্র দিয়ে বাড়িটা পর্যবেক্ষণ করে।
জঙ্গল ঘেরা একটা পুরানো বাড়ি।তীব্র দক্ষ পায়ে এগিয়ে যাই বাড়ির দিকে।পড়নে তার পুরো কালো হুডি।এই ঘুটঘুটে অন্ধকারে একদম মিশে যাচ্ছে তার পোশাক।
তীব্র শব্দ বিহীন হেটে পৌছাল বাড়ির পেছনে।ভেতরে প্রবেশ করার রাস্তা পেয়ে তার সাথে নিয়ে বেবি ক্যারিং ব্যাগ টা পড়ে নিল।ভেতরে ঢুকে চারদিকে চোখ বুলাল।না তেমন কাউকে দেখছে না।বাজ নজড়ে প্রতিটি ঘরেও চোখ চোখ বুলায়। নির্দিষ্ট ঘর খুঁজতে গিয়ে চোখ আটকে গেল নতুন দরজা দেওয়া একটি ঘরে। সেখানে মিটমিট আলো জ্বলছে।পাশের রুম থেকে ভেসে আসছে কারো মৃদু অতনাদ।বাকি রুম আর কোন আওয়াজ নেই ভেবে কয়েক কদম এগিয়েও আবারো পিছিয়ে আসে। পাশের রুম থেকে বের হয় একটি পুরুষ।প্যান্টের চেন তুলে নতুন দরজা দেওয়া ঘরে ঠকঠক শব্দ করে ডাকে কাউকে।
কয়েকপল পর বের হয়ে আসে আরো একটি পুরুষ।পুরুষটি শয়তানি হেসে বলে,
কেমন মাল ভাই!!!
এককারে খাসা মাল!!
আমি একটু মনটা জুড়িয়ে আসি।
যা! শোন!!
মাইয়া কি করে!!
১.৩০ এ ঘুমাইছে ভাই!এতো কাঁদে ভাই!মনডাই কয় এক আছাড় মারি!!
মারছোস নাকি!!!
হ ভাই!!
সালা ৩-৪মাসের বাচ্চা মারস কেনে!!বস জানতে পারলে আস্ত রাখবে না। কার বাচ্চা জানিস??
না ভাই!!কার?
তীব্র চৌধুরী কে চিনোস?? মাফিয়া তীব্র!! ডঃ তীব্র চৌধুরী!! বিজনেস ম্যান তীব্র চৌধুরী।আন্ডারওয়ার্ল্ডের যারে এক নামে চিনে!!ব্ল্যাক কিং!!হের মাইয়া!!সালা বহুত চালাক!তাইতো বস এই বাচ্চা রে নিয়া এই জঙ্গলে লুকাইয়া থাকতে কইছে।
আর ভুলেও যেন বসের কানে না যায় তীব্রর মাইয়্যার লাগি যে মেয়েরে রাখছে ।রাতে ওর ম্যাইয়া রে একা রাইখা আমরা ফূর্তি করি।ঐ ম্যাইয়া কিন্তু সোনার ডিম পাড়া মুরগী ।বস কইছে কোন আচর ও যেন না লাগে।
মনে থাকবে বস!!এখন যাই!!
সালা!!যা!!!আমার ঘুম পাইছে!! বলে দুইজন আলাদা রুমে ঢুকে যায়।
দুইজনের সব কথা শুনে তীব্রর চোয়াল শক্ত হয়ে এলো। পারলে এখুনি কলিজা টেনে বের করত।তবে এদের থেকে জরূরি হলো বাবু।শাস্তি তো পাবেই। ভয়ংকর শাস্তি। জাহান্নাম এই পৃথিবীতেই দেখাবে সে।তীব্র মিনিট দুয়েক অপেক্ষা করে ধীর পায়ে রুমের সামনে দাঁড়ায়। সাবধানে গেট খুলে আশেপাশে তাকায়।বুকের ভেতর ধুক ধুক করছে তার। সল্প আলোয় দেখা যাচ্ছে একটা স্যাঁতস্যাঁতে ঘর তীব্র চোখ মুখ লাল হয়ে এলো। আশেপাশে তাকিয়ে দেখল রুমের কর্নারের দিকে একটা দোলনা।তীব্রর উত্তেজনায় শরীর কাঁপছে।ওখানে তার নিজের মেয়ে।মানে তার মেয়ে।তার রাজকন্যা।এই রাজকন্যা কে বাঁচাতেই তো এতো শান্ত তীব্র।
ঐই রাজকন্যার জন্য সব মুখ বুজে সহ্য করেছে সব।জীবনে প্রথম বার তাকে করা আঘাতের প্রতিশোধ নিতে অনেক বার ভেবেছে।তীব্র ধীর পায়ে এগিয়ে গেল দোলনার দিকে। মৃদু আলোয় ঘুমন্ত পরির মতো বাচ্চাটাকে দেখে ছলছল নয়নে চাইল তার দিকে।কি অদ্ভুত তীব্রর শরীর কাঁপছে !!খুশিতে!!।হাত বাড়িয়ে এক আঙ্গুল ছোয়াল বাচ্চার গালে।ওমনি নড়ে চড়ে উঠলো বাচ্চা টা।তীব্র ধীরে কোলে তুলে নিল।তোয়ালে মোড়ানো বাবুকে নিজের বুক ব্যাগ এ রেখে বুকের মাঝে জরিয়ে ধরলো।একই অনূভুতি!! যেমন রিদিকে জরিয়ে ধরলে হয়।তীব্রর চোখের কোনা বেয়ে গড়িয়ে পড়ল কয়েক ফোটা পানি।আলতো করে চুমু দিল কপালে।শরীর হালকা গরম দেখে বুঝল হয়তো জ্বর!!তীব্র আশেপাশে আরো একবার চোখ বুলাল।না তেমন কিছুই নেই। একপাশে বিছানা। বিছানায় পড়ে আছে কিছু খেলনা।আর কিছু জামা কাপড়।তীব্র ধীর পায়ে দরজা খুলে বেরিয়ে এলো।পাশের রুম থেকে বেরিয়ে আসছে মৃদু আর্তনাদ।তীব্র বাঁকা হাসল।বিরবির করে বলল,
“তীব্র ছাড় দিয়েছে,ছেড়ে দেয় নি।শেষ দিনের জন্য অপেক্ষা কর। আই প্রমেস মৃত্যুর জন্য তরপাবি কিন্তু মৃত্যু পাবি না”
তীব্র ধীর পায়ে আবারো বের হয়ে আসে।বুকের মাঝে তুলতুলে একটা পুতুল ঘুমিয়ে ।তাকে শক্ত করে ধরে বাইকের কাছে এসে দাঁড়াতেই পাতার মরমর শব্দ আসে কানে।তীব্রর তীক্ষ্ণ মস্তিষ্ক আজানা আকাঙ্ক্ষার আভাস পেল।কয়েকটি পায়ের শব্দ তুমুল গতিতে ছুটে আসছে তার দিকে তীব্র বাঁকা হাসল। ঘুমন্ত মেয়ের দিকে একধ্যানে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল “মায়াবতীর মায়াবী রাজকন্যা”
বাবু নড়চর করছে হয়তো ঘুমটা ভাংবে এখুনি।খিদে পাবে কি ঘুম ভাংলে!!কি খেত দিত!! আচ্ছা সমস্যা নাই আসছে যখন জিজ্ঞেস করেই না হয় যাবে।কথা গুলো মনে মনে ভাবে তীব্র।
এরই মাঝে দুইজন ছুটে আসে।চারদিকে তখন একটু একটু আলো হতে শুরু করেছে।তীব্র বাবুকে কোলে নিয়ে বাইকে বসলো।
এই সালা কেডা তুই!!!সাহস কিভাবে হয় এইহানে আসার!!
তীব্র উওর করল না।হাতের ইশারায় চুপ থাকতে বলল।
মেয়ে আমার ঘুমাচ্ছে!!তোদের জন্য যদি ও উঠে!!
এই সালা তোর মেয়ে মানে!!
তীব্র বিরক্ত হয়ে চ শব্দ উচ্চারণ করতেই গিয়ে করল না। কিন্তু এরই মাঝে ঘুম ভেঙ্গে গেল বাবুর।
পিটপিট করে চোখ খুলে ঠোঁট উল্টে কান্না করতেই যাচ্ছিল।তীব্র মুখের মাস্ক খুলে মোহনীয় হেসে বাবুকে বলে,
আম্মু কাঁদে না!!আমি আছি!!আব্বু আছে তো জান!!কলিজা তুমি না আব্বুর! কাঁদে না সোনা!!
বাবু কি বুঝল কে জানে।কান্না বাদ দিয়ে বড় বড় চোখে শুধু তাকিয়ে দেখল তীব্রকে।ক্যারিং ব্যাগে ঝুলন্ত মেয়েকে তার দিকে তাকাতে দেখে হাসি ফুটে উঠে তীব্রর মুখে। তৃপ্তির হাসি।
এদিকে তীব্র কে দেখে চিনছে না লোকদুটি।হয়তো দেখে নি। কিন্তু বাচ্চাটার সাথে এভাবে কথা বলায় বুঝল এটা তীব্র।চট করেই ফোন করল বাকি ছেলেদের।ভয়ে তাদের আত্মা শুকিয়ে আসছে।তীব্রর সম্পর্কে যা শুনেছে তাতে তো রক্তের বন্যা হবার কথা। কিন্তু এই তীব্র তো মেয়ের সাথে কথা বলছে।তাও আবার এতো সুন্দর শান্ত ভাবে।যেন কিছু হয়নি।
তীব্র এবার তাকালো ছেলেদুটোর দিকে। হেসে বলল,
কয়জনকে ডাকলি!!
ছেলে দুটো আবাক হয়ে আছে,
তীব্র আবারো বলল।কয়জনকে ডাকলি!!না মানে তোরা মোট কয়জন??
ছেলে দুটো ভ্যাবাচেকা খেয়ে তাকাল।তীব্রকে এভাবে কথা বলতে দেখে দুজনেই হতবাক।এর মাঝেই ছুটে আসে কয়েজন ছেলে।তীব্র বিরবির করে বলে,
মরার এতো শখ কেন এদের??আমি তো এদের বাঁচাতে চুপচাপ চলেই যাচ্ছিলাম।ধুর কেউ নিজ থেকে মরতে আসে কেন!আর মারলেই আমার দোষ!
তাদের মধ্যে একজন বলল,
বাচ্চা আমাকে দে!নয়তো!!
তীব্র বাবুর দিকে তাকিয়ে থেকে মুচকি হেসে বলল,
নয়তো!!
আগের দুইজন ছেলের মধ্যে থেকে একজন বলল,
তুই চিনস এ কে??ত তীব্র চৌধুরী!!
তীব্রর নাম শুনেই ইতিমধ্যে অনেকে ঘামতে শুরু করেছে।ব্ল্যাক কিং!! আন্ডারওয়ার্ল্ডের মাফিয়া কিং।
তীব্র মুখে মিষ্টি হাসি ফুটিয়ে বলল,
আম্মু আজ আমরা ঢিসুম ঢিসুম করব আচ্ছা!!বাবু তীব্রর কথা শুনছে আর ড্যাবড্যাব করে তাকাচ্ছে।তীব্র বাবুর মুখটা বুকের মাঝে লাগিয়ে তাকালো ছেলেগুলোর দিকে।
একটা ছেলে উল্টো দিকে থেকে চাকু নিয়ে তীব্রর দিকে আসতেই তীব্র হাতটা ঘুরিয়ে ওর পেটে ঢুকিয়ে দেয়।একহাতে বাবুকে জরিয়ে অন্য হাতে চাকু ঢুকাতেই দুই-তিন জন ছুটে আসতেই তীব্র সরে যায় পকেট থেকে গান বের করে তিনজনকে সুট করে।এরই মাঝে ছুটে আসে দুটো গাড়ি।দুটো গাড়ি থেকে পরপর তীব্রর গার্ড বের হয়ে আসে।লাবিব তীব্র কে আড়াল করে বলে,
আপনাতেই আমি পর্ব ৫৭
বস আপনি গাড়িতে বসেন!!এই মশা গুলোকে আমরা দেখছি।
তীব্র বিনা বাক্য ব্যায়ে গাড়িতে বসল,
এসির পাওয়ার বাড়িয়ে মুখটা মুছে তাকাল বাবুর দিকে।বাবার বুকে সে নিশ্চুপ হয়ে হাতের এক আঙ্গুল মুখে চুষছে সেটা।তীব্র হাসল।ব্যাগ থেকে বাবুকে বের করে একদম বুকে মাঝে রাখল। তুলতুলে ছোট্ট দেহটা বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরতেই তীব্রর চোখ বেয়ে আবারো গড়াল পানি।এর দু মিনিট পর ড্রাইভিং সিটে এসে বসে লাবিব।কোন কথা ছাড়াই গাড়ি স্টাট দেয়।তবে তীব্রকে দেখে মুখে তার হাসি ফুটে উঠল।নিজ চোখে তীব্রর হাহাকার দেখেছে সে।রিদির জন্য,বাবুর জন্য । এখন তীব্র কে শান্ত দেখে চোখ জুড়িয়ে গেল।তবে ভাবনা রয়েই গেল।আদো সব ঠিক হবে কবে!!!