আপনাতেই আমি পর্ব ৬০
ইশিকা ইসলাম ইশা
🎶🎶🎶হো….
একা মনে প্রশ্ন শুধুই জবাব খুঁজে যায়…
তোর ভুলেরই মাসুল তোকে গুনতে হবে হায়……
কেউ দেবে না রে জবাব খুঁজে ……
ভুলকে যখন নিলি বুঝে…..
থামবি কেন ভুলের ঠিকানায়….
ও বন্ধুরে …বন্ধুরে…ও বন্ধুরে…এএএএ
ওওওও
একটা মনে এতো ব্যাথা…
যায় ভিজে যায় চোখের পাতা…
জুরবে কি আর ভাঙ্গা হিয়া রে…….এএএএ
হায় …
যায় না ভোলা তবু তাকে…
চায় যেন সে সুখে থাকে….
সইবে হিয়া একাই ব্যাথা রে…..
ও বন্ধুরে …বন্ধুরে…ও বন্ধুরে…এএএএ….
(গানটা সবাই হয়তো শুনেছেন।পুরোটা লিখি নি।যতটুকু আরকি গল্পের সাথে যায় ততটুকু)
গিটারের তার ছিড়ে হাতের আঙ্গুল কেটে টপটপিয়ে রক্ত পড়ছে রিদির।চোখের পানি আজ বাঁধাহীন। সেদিকে কোন ধ্যান নেই!!হুট করে কাধে কারো স্পর্শে পেছনে তাকায় রিদি। মাথায় ব্যান্ডেজ হাতে ব্যান্ডেজ নিয়ে তার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে রায়ান। রায়ান কে দেখে রিদির কান্নার মাএা দ্বিগুণ হল।জোরেই কেঁদে উঠলো।
“আমি আর পারছি না ভাইয়া!!দম বন্ধ হয়ে আসছে আমার!কেন পারছি না সব ভুলে যেতে!কি করব আমি!!আমাকে মেরে ফেলো প্লিজ!!
রিদি কান্নায় রায়ানের চোখ ভিজে এলো।রিদি আবারো বলে,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
বলনা ভাইয়া আমি কি করব?ওরা একে অন্যের সাথে সুখেই আছে তাহলে আমি কেন পারছি না!কেন ওদের একসাথে দেখে আমার দম আটকে আসছে!আমি কেন মেনে নিতে পারছি না তীব্র আমার না!!আমি কেন পারছি না!!
রায়ান কি বলবে বুঝছে না।কিভাবে কোন কথা বললে রিদির ব্যাথা কমবে।কিভাবে সে বোনকে বুঝাবে।আজো যার মনে তীব্রর বসবাস। রায়ানের রাগ হচ্ছে নিজের উপর কেন সে রিদিকে তার এক্সিডেন্ট এর খবর পৌঁছাতে দিল।রিদি এখানে না আসলে তো আর এমন কিছু হতো না!! রায়ান রিদিকে বসিয়ে ওর পাশে বসল।কাটা হাত নিজের হাতে নিয়ে রিদির ওরনায় পেঁচিয়ে কল করল কাউকে!! রায়ান চেয়েও রাগ করতে পারছে না রিদির ওপর! এইটুকু না হলেই কি চলত না।
সেদিন সারাদিন রোজ কে নিয়ে বাইরে ঘুরেছে রায়ান।রোজ ঘুরতে পছন্দ করে।এই টুক একটা বাচ্চা ঘুরার কি বোঝে!! বুঝে পায় না। কিন্তু বাইরে লোকজন, গাড়ি দেখলে ফোকলা দাঁতে হাসে।সাথে অবশ্য রিদি,নীর,আর ওর ছোট ভাই ছিল।রাতে বাইরে খেয়েই একবারে বাড়িতে এসেছে তাই আর রাতে ঝামেলা ছিল না।নীরের বাবা মার জন্যও খাবার এনেছিল। তারাও অনেক খুশি।
তখন বাজে ১১টা ১০,
রায়ান রিদির রুমের সামনে গিয়ে নক করে বলে,
রিদু আসব!!!
রিদির আওয়াজ শুনে রায়ান ভেতরে ঢুকে দেখে
রিদি টেবিলে বসে ফাইল দেখছে।খাটে বসে নীর কি যেন করছে।আর রোজ একপাশে ঘুমিয়ে আছে।
রিদি এই সময় ভাইকে দেখে বলে,
ভাইয়া কিছু বলবে!!
রায়ান রিদির দিকে তাকিয়ে বলে,
হ্যা! আসলে আমাকে এখুনি ঢাকায় যেতে হবে!!
রিদি কিছু বলার আগেই নীর উত্তেজিত হয়ে বলল,
এতো রাতে!!
রায়ান আর চোখে নীর কে দেখল।মেয়েটাকে চিন্তিত মনে হল। কিন্তু কেন??
রিদি রায়ানের দিকে তাকিয়ে নীরের দিকে তাকালো,
কিছু হয়েছে ভাইয়া!!এতো রাতে যাবে!!
রায়ান মুচকি হেসে বলে,
এতো চিন্তা করিস!!আসলে কাল জরুরি একটা মিটিং পড়ে গেছে।সকালে বের হলে যেতে দেরি হবে।তাই এখনি বের হতে চাচ্ছি!
রিদি চিন্তিত হয়ে বলল,
কিন্তু এতো রাতে!!
রায়ান রিদির মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,
তুই চিন্তা করিস না।আমি ড্রাইভার কে আসতে বলেছি ও এলেই যাব।একা যাচ্ছি না। তাই এতো চিন্তা করিস না তো!!
কিন্তু তবুও!!
ইম্পর্ট্যান্ট রিদু!!বলছি তো চিন্তা করিস না।
নীর ভাইবোনের কথার মাঝে বলে,
চিন্তা করবে না মানে!! অবশ্যই চিন্তা করবে!আপনি বললে তো আর চিন্তা রা চলে যাবে না।সে তো ঠিক মাথা মাড়রে বসে থাকবে।
রায়ান সরাসরি তাকাল নীরের দিকে বিরক্ত হয়ে বলল,
তুমি ওকে ভয় দেখাচ্ছো কেন?? চুপচাপ ঘুমাও!!
রায়ান আর বেশি কথা না বাড়িয়ে বেরিয়ে আসে রুম থেকে।একটু পরেই রায়ানের ড্রাইভার এসলে রায়ান চলে যায়।গ্রাম সাইড শুনশান রাস্তা বেশ এনজয় করছে রায়ান।তার শান্ত পরিবেশ বেশ পছন্দ।গাড়ি গ্রামের রাস্তা পেরিয়ে পাকা রাস্তায় উঠে চলতে থাকে শহরের উদ্দেশ্যে। কিছুদূর যেতেই হুট করেই একটা ট্রাকের সাথে ধাক্কা লাগে গাড়ির। রায়ান কিছু বোঝার আগেই মাথায় আঘাত পায়।সামনের কাচ ভেঙে শরীরে বিধে যায়।এরপর চোখের সামনে সব অন্ধকার হয়ে আসে।
যখন চোখ খুলে নিজেকে পায় হসপিটালে।পাশেই কেঁদে কেটে একাকার হয়ে বসে আছে রিদি। রায়ান কে চোখ খুলতে দেখেই হাসি ফুটে উঠল মুখে। রায়ান ও বোনের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো। ডক্টর এসে সব চেক করে বলল।
সব ঠিক আছে। আঘাত সময়ের সাথে সেরে যাবে!! ওষুধ ঠিক মতো খেতে হবে। তাছাড়া আপনার বাড়িতেই তো ডক্টর আছে।
রায়ান মুচকি হাসল। ডক্টর বের হতেই রুমে ঢুকে নীর! তার কোলে কাঁদছে রোজ।রোজ কে কাঁদতে দেখেই ঝটপট উঠে কোলে তুলে নেয় রিদি।
কি হয়েছে মামনি!!
আমার জান যে তুমি কি হয়েছে! কাঁদছ কেন?
নীর ভাঙ্গা গলায় বলে,
চুপছে না আপু! অনেকক্ষণ ধরেই কাঁদছে।
রিদি ব্যাস্ত কন্ঠে বলে,
নীল তুই ভাইয়ার কাছে বস।আমি ওকে দেখছি।বলে রিদি বের হয়ে যায়।নীর ধীর পায়ে রুমের সোফায় বসে। রায়ান নীর কে সোফায় বসতে দেখে বলে।
একি আপনার এমন অবস্থা কেন??
নীর ভাঙ্গা গলায় বলে,
কিছু না!এমনিতেই!
রায়ান নীরের দিকে বেশ কিছুক্ষণ চেয়ে থেকে বলে,
এমনিতেই!!নাকি কেঁদেছেন!!
নীর মাথা নিচু করে বসে আছে। রায়ান উওর না পেয়ে মুচকি হাসলো।সব উওর জানার প্রয়োজন নেই হয়তো।কিছু থাক আজানা।
করিডরে এদিক থেকে ওদিক হাঁটছে রিদি।মূলত রোজ কে ঘুম পাড়াচ্ছে।রায়ানের এক্সিডেন্ট এর খবর পেয়ে ঘুমন্ত রোজ কে তুলে নিয়ে রাতেই রওনা দিয়েছিল।ঘুম ঠিক মতো না হওয়াই চিরচিরা হয়ে আছে।রিদি ঘুরে ঘুরে কোন মতে ঘুম দেয়।রোজ ঘুমাচ্ছে কি না সেটার দিকে তাকাতে গিয়ে হুট করেই কারো সাথে ধাক্কা খায় রিদি। রোজ কে শক্ত করে চেপে ধরে সরি বলতে মুখ তুললেই পরিচিত মুখ দেখে অবাক হয়ে তাকায় রিদি।
রিদি তুমি!!! এখানে!!!
রিদি মোনাকে দেখে অবাক হলেও মনে পড়ে গেল সেদিন সকালের কথা।মোনাকে দেখে যেন সেই ক্ষত তাজা হলো।সেই ভেজা চুল,মুখের দাগ,তীব্রর পিঠের দাগ! মনে পড়তেই বুকে চিনচিনে ব্যথা শুরু হল।চোখ টলমল করে উঠল। শক্ত করে চেপে ধরলো ঘুমন্ত রোজ কে।মোনা রিদিকে কিছু বলার আগেই রিদির সামনে একটা কেবিনে থেকে বের হয় তীব্র।তীব্রর হাত ধরে বের হয়ে আসে মুগ্ধ।রিদি পেছনে থাকায় তীব্র হয়তো খেয়াল করে নি। মুগ্ধ তীব্র কে এটা ওটা বলছে।রিদির কানে এসে বাজল কিছু কথা…..
আমরা ঘুরতে যাব পপ!!!
ইয়েস আমরা ঘুরতে যাব! প্লেনে করে আমেরিকা!!
ইউ হ্যাপি!!
মুগ্ধ খুশিতে আত্মহারা হয়ে তীব্র কে জরিয়ে ধরল।দুইজনে মোনার কাছে আসতেই মোনাকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকতে দেখে বলে,
কি হলো চলো!!আমাদের লেট হচ্ছে!!
মোনা কিছু বলার আগেই মুগ্ধ ওর হাত ধরে।এক হাতে তীব্রর হাত অন্য হাতে মোনার হাত!রিদি এই দৃশ্য দেখে দুইপা পিছিয়ে যায়।মনে হচ্ছে শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। এক পা দু পা করে রিদি দৌড়ে রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দরজা ধরেই নিচে বসে পড়ে। কেন সে মানতে পারছে না তীব্র এখন অন্যকারো।রিদি নিজেকে শক্ত করতে চাইলেও পেরে উঠছে না। ঘুমন্ত রোজ কে ধরেই হু হু করে কেঁদে উঠলো রিদি।বুকের ভেতর ফেটে যাচ্ছে।এমনতো হওয়ার কথা ছিল না!!কিছু সময় রোজ কে বুকে চেপে নিজেকে শান্ত করল রিদি।এরপর উঠে রায়ানের রুমে এসে বলে।
নীর তোমার কাছে থাক আমি বাসায় যাব!!
সবেই চোখটা বন্ধ করেছিল রায়ান।হুট করে রিদির কথায় হচকচিয়ে তাকাল রিদির দিকে।রিদির অবস্থা দেখে বিচলিত হয়ে বলে,
কি হয়েছে রিদু!!
রিদি স্থির হয়ে থেকে বলে,
আমি বাসায় যাব ভাইয়া! হসপিটালে দম বন্ধ হয়ে আসছে!! রায়ান অবাক হয়ে বলল,
কিন্তু!!
নীল আছে তো তোমার কাছে।আমি……
ঠিক আছে আমি বলছি…..
রায়ান তার পিএ কে ফোন করে সব বলে।ডিসাচ নিয়ে বাসায় ও চলে আসে। যেহেতু রিদি নিজেই ডক্টর তাই খুব একটা সমস্যা হয়নি। এদিকে নীল দুই ভাইবোনের দিকে হাবার মত তাকিয়ে রইল নীর। রায়ান জানে রিদি এমনি এমনি এমন করবে না।তাই আর কথা না বাড়িয়ে বাসায় চলে আসে।নীরের বাবা মা ফিরে যাবে তাই রায়ান ওদের যাবার ব্যবস্থা করে দেয়।
এদিকে নীল গাড়ি থেকে নেমে হা হয়ে গেল। বিশাল ৫তলা ডুপ্লেক্স বাড়ির প্রতিটি আনাচে কানাচে আভিজাত্যের ছোঁয়া।লিফট দিয়ে উপরে উঠে বাসায় এসেই আরো অবাক হয় নীল।এই বিশাল বড় বাড়িতে রায়ান একা থাকে।এই বাড়িতে না হলেও ১০এর অধিক মানুষ থাকা যাবে।অথচ রায়ান একা থাকে।
বাসায় এসে রিদি রোজ কে কোলে নিয়ে সোজা বা পাশের রুমে চলে যায়।রিদি যেতেই নীর বলে,
আপুর কি হয়েছে???
আমি জানি না!!হয়তো অতীত সামনে এসেছে।
মানে???
কিছু না!!রিদির পাশের রুম তোমার যাও ফ্রেশ হয়ে আসো! কথাটা বলেই রায়ান নিজের রুমে চলে আসে।পায়ে চোট লাগে নি তাই হাঁটতে সমস্যা হচ্ছে না রায়ানের। দুপুর গড়িয়ে প্রায় বিকেল পর রিদির রুমে আসে রায়ান।কি হয়েছে জানতে। কিন্তু রিদি কে পায় না। রোজ বিছানায় ঘুমিয়ে আছে। রায়ান রোজের মাথায় হাত বুলিয়ে আশেপাশে তাকিয়ে দেখল গিটার নেই।সামনের বিশাল বারান্দায় দিকে যেতেই গানের আওয়াজ শুনে রায়ান এগিয়ে যায়।গানটা যেন রিদির প্রতিটি কষ্টের কথা ফুটিয়ে তুলছে। রায়ানের চোখ টলমল করে উঠল। মনে মনে একটাই প্রশ্ন করল,
আর কত??আর কতো??তীব্র চৌধুরী?? এবার তো থেমে যান। প্রতিশোধ নিতে গিয়ে মেয়েটাকে শেষ করে দিবেন না! কথাগুলো ভেবে রায়ান দীর্ঘশ্বাস ফেলে রিদির দিকে এগিয়ে গেল।
বর্তমান,
আপু কি ঘুমিয়ে গেছে??
নীরের কথায় নীরের দিকে তাকাই রায়ান।নীরের কোলে ঘুমিয়ে আছে রোজ। ঘুমন্ত রোজের দিকে থেকে চোখ ফিরিয়ে তাকাই নীরের দিকে। বিষ্ময় নিয়ে তাকিয়ে আছে নীর।হয়তো রিদির কথাগুলো শুনেছে। রায়ান রিদির দিকে তাকিয়ে দেখল রিদি চুপচাপ তার কাঁধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে। চোখের পানি এখনো শুকায় নি। রায়ান বোনের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে ভাবল রিদিকে রুমে কিভাবে নিয়ে যাবে।এর মাঝেই হুট করেই নীর বলল,
আপুর কি হয়েছে??
রায়ান কিছু বলার জন্য মুখ খুলতেই কলিং বেল বেজে ওঠে।নীর আওয়াজ শুনে দরজা খুলতে যেতে নিলে রায়ান বলে,
তোমাকে যেতে হবে না!কাজের লোক খুলে দিবে!!তুমি রোজ কে দেখ।
আপু তো ঘুমিয়ে আছে?রুমে নিবেন কিভাবে? তাছাড়া আপনার হাতে ও তো আঘাত লেগেছে।
রায়ান কিছু বলার আগেই তড়িৎ তার সামনে এসে দাঁড়ায় রায়ানের পিএ।
স্যার ডেকেছেন??
দিদার!রিদুকে একটু রুমে দিয়ে এসো! এখানে ঘুমিয়ে পড়েছে! আমার হাত……..
দিদারের চটপট উত্তর,
কিন্তু স্যার!! ম্যাম তো………
দিদারের কথা শেষ হতেই রোজ হঠাৎ কেঁদে ওঠে।নীর রোজ কে চুপানোর চেষ্টা করছে কিন্তু পারছেনা।এদিকে রোজের কান্নার শব্দে ঘুম ভেঙ্গে যায় রিদির।হাতের চিনচিনে ব্যাথায় টনটন করে উঠলো আঙ্গুল।সেদিকে তোয়াক্কা না করে চট করে উঠে দাড়ালো।রোজ কে কাঁদতে দেখে সব ভুলে রোজ কে কোলে তুলে নেয়।রিদির কোলে কিছুক্ষণে শান্ত হয়ে যায় রোজ।
এদিকে দিদার স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে মনে মনে বলল,
বেঁচে গেলাম!! বাপরে তীব্র চৌধুরী যা জিনিস!তার জিনিস ছোয়া মানেই জীবন সমাপ্ত।
৩দিন পর,
রায়ান এখন কিছুটা সুস্থ।রিদি ব্যান্ডেজ শেষ করে রায়ানের উদ্দেশ্য বলল।
“বিকেলে একটু শপিং মল এ যাব।রোজের কিছু জিনিসপত্র লাগবে”
রায়ান তাকালো বোনের দিকে।সেদিনের পর যেন আবারো আগের মতো হয়ে গেছে রিদি।তবে রোজ না থাকলে হয়তো আরো ডিপ্রেশনে কাটাতো।
“দিদার কে বললেই তো এনে দিবে”
সমস্যা নাই আমি নীর গিয়ে নিয়ে আসব! রায়ান আর মানা করল না।বাইরে বের হলে হয়তো ভালো লাগবে।
“তবে দিদার যাবে তোদের সাথে”
রিদি হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়ল।
কিডস কেকশন থেকে কিছু জিনিস নিয়ে নিয়ে মেয়েদের কেকশনে আসে রিদি আর নীর।দিদার বাইরে দাঁড়িয়ে আছে।রোজ কে নীরের কোলে দিয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দেখতেই হুট করেই জরিয়ে ধরলো কেউ!! হঠাৎ এমন হওয়াই কিছুটা পিছিয়ে গেল রিদি।একটু পরে বুঝল এটা মেঘলা।
কেমন আছিস মেঘ??
মেঘ রিদিকে ছেড়ে বলে,
কেমন ফ্রেন্ড তুই হ্যাঁ!!একবার কল করে খোঁজ নিসনি। না কারো সাথে যোগাযোগ রেখেছিস! কোথায় আছিস?কেমন আছিস?একবারো জানাস নি!তোকে ফোন করে পাই না! রায়ান ভাইয়াকে জিঙ্গেস করলে বলে তুই ভালো আছিস। এখানে আর থাকিস না।এমন কেন তুই!!!এখন কোথায় আছিস?কেমন আছিস?আচ্ছা বল কোন হসপিটালে আছিস?
রিদি মৃদু হেসে বলে,
কোনটার উওর দিব??থাম একটু!!
মেঘ উত্তেজিত হয়ে বলল,
এই রিদু!!আমি আয়ান কে কল করি।ও আশেপাশে ই আছে!পরে সব কথা হবে!!
রিদিকে কোন কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে কল করল আয়ান কে।কল করার ৬ মিনিটের মাথায় কোথা থেকে ছুটে আসল আয়ান।
রিদি!!!
রিদি পিছে ঘুরে আয়ান কে দেখে হাসলো। কিছু সম্পর্ক রক্তের না হলেও অনেক সুন্দর হয়।যেমন বন্ধুত্ব!
কফি শপের একটা টেবিলে বসে আছে রিদি,মেঘ, আয়ান,নীর।রিদির কোলে পুঁচকে রোজ ডাগর ডাগর চোখে সবাইকে তাকিয়ে দেখছে।
এক কথায় মাশাআল্লাহ।এতো কিউট বাবু হয় নাকি!!
মেঘের কথায় রিদি মলিন হাসল।মেঘ , আয়ান রিদির ব্যাপারে সবটা জানলেও এটা জানে না হুট করেই রিদি কোথায় গেছে।এখন কোথায় থাকছে।তবে সবটা বলতেই দুইজনের মুখ ভার হয়ে এলো। আয়ান গম্ভীর গলায় বলল,
বিয়েতে আসবি না!!
রিদি রোজের দিকে তাকিয়ে বলল,
না!তবে দোয়া করি তোরা সুখি হ।আমি কাল পরশু চলে যাব!
মেঘ কিছু বলার আগেই আয়ান বলল,
তোকে খুঁজতে আমি,মেঘ কাল রায়ান ভাইয়ার বাসায় যেতাম।হাত পা ধরে হলেও তোর ঠিকানা নিয়ে তোর কাছে যেতাম।এখন তুই কি চাইছিস!!সেই হাত পা এখন ধরি!!
রিদি কিছু বলার জন্য মুখ খুলতেই মেঘ বলে,
আমাদের কেন শাস্তি দিচ্ছিস রিদু??তুই না আসলে কিন্তু বিয়েটা হচ্ছে না!!
রিদি অবাক হয়ে বলল,
পাগল নাকি তোরা?আমাকে এতো ইম্পর্ট্যান্ট কেন দিচ্ছিস?এখন বেশি ইম্পর্ট্যান্ট্যানস নিতেও ভয় পায় আমি। প্লিজ আমাকে নিয়ে এতো….
আয়ান রেগে বলল,
বেশি কথা ভালো লাগে না রিদু।পরশু বিয়ে রায়ান ভাইয়ার বাসায় কাডও চলে গেছে।তুই আজকে চল আমাদের সাথে।
পাগল হয়ে গেছিস তোরা!আমা…….
আপনাতেই আমি পর্ব ৫৯
এখন আসি তোর আসার ওপর আমাদের বিয়ে নির্ভর করছে। শুধু এটা মনে রাখিস!!চল মেঘ…..
মেঘ আয়ান যেতেই নীর এবার রিদির দিকে তাকালো। কয়েকদিন থেকে সে যা দেখছে শুনছে তাতে সব তার মাথার উপর দিয়েই যাচ্ছে। বিষয়টা এখনো তার কাছে ক্লিয়ার না।তবে আয়ানের কথা শুনে কিছুটা অবাক ই হয়েছে।এমন কোন ফ্রেন্ড থাকে যে এক ফ্রেন্ড না আসলে বিয়েই করবে না!! আশ্চর্য!!!!