এলিজা পর্ব ২+৩
Dayna
রুশ রাজ্য ক্যাম্পিং মেয়াদ কাল আজ শেষ। আগামীকাল সকালে সকলে ঢাকার উদ্দেশ্যে চলে যাবে।তাই সবাই শেষ বারের মত জায়গাটি পরিদর্শন করছে।কেউ কেউ হাতে নোট_কলম নিয়ে কিছু লিখছে।
রায়হান , তানভির,মিদুল সহ সকলে রিসোর্টের বাহিরে।
সাদিক অপূর্বর কাছে বসে আছে। অপূর্বর কার্যকলাপ পরোক্ষ করছে। গতকাল যে নুপুরটি অপূর্ব পেয়েছে সেটি নিয়ে ভাবনাতে মশগুল।
অপূর্ব নুপুরটি কে দর্পন করে ভাবছে,কে ছিলো মেয়েটি?এই জঙ্গলে ই বা এত রাতে কি করছিলো?সবাই বলছে কোন জ্বী’ন। নিশ্চয়ই নয়।যদি কোন জ্বীন ই হতো তবে, মেয়েটি নিজের নাম বলতো না।জ্বীন কি কখনো কথা বলে?নাকি মানুষের ছদ্মবেশে কোন জ্বীন ই এসেছিল?
অপূর্ব এসব ভাবতেই সাদিক অপূর্বর ভাবনা ভাঙিয়ে বললো,
নুপুরটি ফেলে দে। গতকাল কোন মেয়েই ছিল না ।তুই ভুল দেখেছিস।
অপূর্ব আপত্তি স্বরে বলল, অপূর্ব কোনদিন ভুল দেখে না।কোন মেয়ে ছিল।আর আমি ওকে আজকে দিনের মধ্যে খুঁজে বের করবো।
সাদিক কাট গলায় বললো,মানে?
অপূর্ব মৃদু হেসে বললো, এখানে দূর দূরে গ্রাম আছে।সেই গ্রামে গিয়ে মেয়েটিকে খুঁজবো। আশাকরি মেয়েটিকে পেয়ে যাবো
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
সাদিক চাপ গলায় বলল, অন্ধকার রাতে তো মেয়েটিকে দেখেসনি। শনাক্ত করবি কিভাবে যে ওটাই সেই মেয়ে?
অপূর্ব সাদিকের সামনে নুপুরটি ঝুলিয়ে বললো,এটা থেকে।যার এই নুপুরটি নিশ্চয়ই যার তার-এক পা খালি থাকবে।আর অপর পায়ে এরকম নুপুর থাকবে ।আর মেয়েটি সুন্দরী হবে।চিনে ফেলবো।এখন তুই চল।
সাদিক বললো,এই কাট ফাটা রৌদ্রের মধ্যে আমি কোথাও যাচ্ছি না। তাছাড়া জায়গাটা একদম ঠিক নয়। যদি আমার কিছু হয়?
অপূর্ব আওয়াজ করে হাসলো।বললো,এত ভিতু আমার বন্ধু।তোকে পুলিশের চাকরি টা কে দিয়েছে রে?
সাদিক চোখ সরিয়ে মাথা চুলকালো।
অপূর্ব মৃদু হেসে বললো,সবই টাকার জোড় তাইনা।
সাদিক হেসে বললো,তোর জন্য ই তো চাকরিটা নিয়েছিলাম।আর তুই কথা শুনাচ্ছিস।
অপূর্ব বললো,ঝগড়া না করে চল।
অপূর্ব এবং সাদিক গ্রাম খোঁজার উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পরে।
রুশরাজ্য থেকে দক্ষিণে কয়েক কিলোমিটার হেঁটে যায়। গাছপালা ব্যতিত কোন জনব মানব দেখলো না। শুধু হেঁটেই যাচ্ছে হেঁটেই যাচ্ছে।
সাদিক ক্লান্তি শরীরে বললো,ভাই আমি আর পারছি না। প্রচন্ড গরম লাগছে।
অপূর্ব বললো, আমার জন্য এতটুকু কষ্ট করতে পারবি না?
তৎক্ষণাৎ অপূর্ব সামনের দিকে দেখলো, একজন মৌলভি আসছে।
অপূর্ব মনস্থির করলো এনাকে জিজ্ঞেস করবে, এখানে কোথাও গ্রাম আছে কিনা।
মৌলভি কাছে আসতেই অপূর্ব লম্বা গলায় সালাম দিলো।
মৌলভি থমকে দাঁড়ায়। সালামের জবাব দিয়ে বললো,তোমরা কারা?
অপূর্ব বললো,আমরা শহর থেকে ক্যাম্পিং করতে এসেছি। এখানের গ্রাম গুলো পরিদর্শন করতে বলা হয়েছে।
কিন্তু এখানে তো গ্রাম ই দেখতে পাচ্ছি না।
মৌলভি বললো, উত্তর দিকে তিলকনগর। সেখানে কিছু গ্রাম পাবে।
অপূর্ব মৌলভী কে ধন্যবাদ দিয়ে তিলকনগর এর উদ্দেশ্যে চলে যায়।
বেশ কিছুক্ষণ এর মধ্যে পৌঁছে যায় তিলকনগর।
অপূর্ব দেখলো প্রথমেই কিছু কাঠের ঘর দেখা যাচ্ছে।কাঠের হলেও আকর্ষণীয়।
বাড়ির পরিচ্ছেদ পরিপাটি। অপূর্ব বললো,চল এই বাড়িতে ই প্রথমেই যাওয়া যাক।
সাদিক বললো, কিন্তু আমরা বলবো কি? কিসের জন্য এসেছি?
অপূর্ব বললো,চল !আমাকে অনুসরণ কর।আমাকে দেখে কিছু শিখ। কিভাবে অচেনা মানুষের সাথে পরিচিত হতে হয় তোকে এখনই শিখিয়ে দিচ্ছি।
সাদিক মুখ কুঁচকে দিলো।
সর্বপ্রথম পরলো ছোট একটি ঘর। অপূর্ব চড়া গলায় কেউ আছেন বলে ডাকলো।
একজন বৃদ্ধা লোক বেড়িয়ে আসলো।বললো,কারা তোমরা?
অপূর্ব মৃদু হেসে বললো, চাঁচা আমরা শহর থেকে রুশরাজ্যে এসেছি।ক্যাম্পিং এর জন্য।
আশেপাশের গ্রাম গুলো ঘুরে ঘুরে পরিদর্শন করছিলাম।যা গরম পরেছে, পানির পিপাসা পেয়ে গেছে।
লোকটি বললো, তোমরা দাঁড়াও আমি আনছি।
সাদিক বললো, তুই পানি খাবি?
অপূর্ব বললো,আমি খাবো কখন বললাম তুই খাবি।
কিন্তু আমার তো পিপাসা লাগেনি।
তো কি হয়েছে।তুই ই খাবি।
সাদিক কিছু বলার আগেই লোকটি পানি নিয়ে আসে।
অপূর্ব সাদিক কে ইশারা করলো।সাদিক ইতস্তত বোধ করে পানি টা খেয়ে নিলো। ততক্ষণে অপূর্ব আশপাশে পরোখ করলো।কোথাও কাউকে দেখতে পেলো না।যাকে দেখে গতকালের মেয়েটির মত মনে হবে।
প্রথম ঘরটি ত্যাগ করে।
কিছুদূর আর একটা ঘর। অপূর্ব একই ভাবে সেই ঘরটি থেকেও পানি নিলো।সাদিক বাধ্য হয়ে খেলো। সেখানে ও তেমন কাউকে দেখলো না।
তৃতীয় আর একটি ঘর। অপূর্ব সেই ঘরে গিয়েও একই ভাবে ডাকলো।
সাদিক ক্লান্তি কন্ঠে বললো,এই ভাই আমি আর পানি খেতে পারবো না।বলির পাঠা পেয়েছিস নাকি?
অপূর্ব বললো,পানি খেতে বলেছি।বি’ষ নয়।মনে কর আমার বিয়ের পানি পানি।
সাদিক বললো,বিয়েতে কেউ পানি খায়?
আমি খাওয়াই।
সাদিক ক্লান্তি চোখে অপূর্ব কে পরোখ করলো।
তৃতীয় ঘরটি থেকে কেউ পানি দিলে সাদিক বাধ্য হয়ে খেয়ে নিলো।
সাদিক বললো,এখন তো প্রচন্ড চাপ পেয়েছে।আর আমি খেতে পারবো না।আমি চলে যাচ্ছি।সাদিক চলে যেতেই অপূর্ব পেছন থেকে থাবা মেরে ধরে বললো,আর একটা ঘর আছে ঐ ঘরটায় যেয়ে তারপর চলে যাবো।
শেষের ঘরটি তে গিয়ে অপূর্ব অচেনা ভঙ্গিতে ডাকলো।কেউ বেড়িয়ে আসলো না। দ্বিতীয় বার ডাকার পর একজন মহিলা বেড়িয়ে আসলো।
জিজ্ঞেস করল,তোমরা কারা?ডাকছো কেন?
অপূর্ব বললো,আন্টি আমরা পুলিশ অফিসার।শহর থেকে এসেছি। এখানের গ্রাম গুলো পরিদর্শন করছিলাম। প্রচন্ড গরমের জন্য তৃষ্ণা পেয়ে যায়।তাই…
মহিলাটি বললো,তোমরা বসো আমি নিয়ে আসছি।
অপূর্ব বললো, অন্তত ইনি বসতে তো বলেছে।চল বসি।
সাদিক বললো,তুই কি বেহায়া ভাই।
ঘরের সামনের দিকে চৌকি পাতা। অপূর্ব সাদিক বসলো।
সাদিক কিছু টা শান্তি অনুভব করলো। অপূর্বর দৃষ্টি অস্থির । এদিক সেদিক বারবার পরোখ করলো। সেরকম কোন মেয়েকে দেখতে পেলো না।
ঘর থেকে মহিলাটি পানি নিয়ে আসলো।সাদিক খেয়ে নিলো।
অপূর্ব বললো, আঁচ্ছা আন্টি তাহলে আসি।
অপূর্ব সাদিক ঘর থেকে বের হতেই অপূর্বর চোখ পরলো বাড়ির পেছনের দিকে। খোলা বাতাসে কেউ চুল শুকাচ্ছে। চুল গুলো এপাশ ওপাশ করে ঝাপটাচ্ছে।পরনে তার কালো রঙের থ্রিপিছ।ফর্সা গায়ের রঙের অধিকারী। উল্টো দিকে মুখ ঘুরিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অপূর্বর বুকের ভেতর উৎফুল্ল হয়ে উঠলো।
চোখের পাতাগুলো পলক ফেলতে ভুলে যায়। অপূর্ব এক ধ্যানে মগ্ন হয়ে তাকিয়ে রইলো।
সাদিক অপূর্বর ভাবনা ভাঙিয়ে বললো,এই কি সে?
অপূর্ব ধির পায়ে মেয়েটির দিকে এগোতেই ঘর থেকে কেউ লম্বা সুরে এলিজা বলে ডাকলো।
এলিজা পেছন ঘুরে মৃদু গলায় বলল,যাই মামি!
অপূর্ব থম মেরে দাঁড়িয়ে রইলো।ভাবলো,যাকে আমি খুঁজছি তাকে আমি পেয়ে গেছি।এই সেই । এলিজা অপূর্ব কে উপেক্ষা করে ঘরের দিকে দৌড়ে আসলো। অপূর্ব মসৃন চোখে দেখলো। লম্বা টে শরীর,ভি_ কার থুতনি, চকচকে ফর্সা, চুল গুলো কমড় অব্দি।এক এক ভুবনমোহিনী সুন্দরী। অপূর্ব অপলকে দেখলো,।
এলিজা ঘরের ভেতর চলে যায়।
অপূর্ব সাদিক কে বললো,এটাই সেই মেয়ে।
সাদিক বললো,চিনলি কিভাবে?
অপূর্ব বললো,ওর এক পায়ে নূপুর নেই। তাছাড়া এক্ষুনি তো, এলিজা বলে ডাকলো।
সাদিক বললো,এখন কি করবি?
অপূর্ব বললো,চল চৌকিতে আবার বসি।
অপূর্ব কিভাবে এলিজার সাথে কথা বলবে,সেই চিন্তায় মশগুল হয়।
অপূর্ব সাদিক কে কিছু বলার আগেই, দু’জন লোক একটা মেয়েকে পাঁজা কোলে করে ঘরে নিয়ে আসলো। তৎক্ষণাৎ ঘরের মধ্যে থেকে কান্নার ধ্বনি ভেসে আসলো।
লোকটির কোলের মেয়েটির বয়স ১৩ থেকে ১৪।
অপূর্ব শ্রবন শক্তি কড়া করলো।
ঘরের ভেতর থেকে হুহু করে কান্নার আওয়াজ ভেসে আসছে। এলিজা ভেজা কন্ঠে বললো,এই পাখি চোখ খুল।কি হয়েছে তোর? সাড়া দে!
পাশ থেকে এলিজার মামি বললো,টাকার অভাবে মেয়েটির চিকিৎসা করা হলো না।আজ এই অসহায়ত্বর জন্য পাখির চিকিৎসা হলো না।
অপূর্ব বুঝতে পেরেছে, বাচ্চা মেয়েটি অসুস্থ।
তৎক্ষণাৎ ঘর থেকে দু’জন লোক বেড়িয়ে আসলো। একজন পকেট থেকে টাকা বের করে অপরজন কে দিলো।বললো, আপনার ভ্যান ভাড়া।
ভ্যান ওয়ালা বললো, রমজান ভাই তোমার ভাগ্নির অবস্থা তো বেশি ভালো নয়। ভালো চিকিৎসা করাও।শহরে নিয়ে চিকিৎসা করালে তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাইবো।
রমজান বললো,শহরে নিয়ে চিকিৎসা করানোর মত আমাদের সমর্থ্য নেই।দেখি সৃষ্টিকর্তা কি করেন।তার উপর ছেড়ে দিলাম।
ভ্যান ওয়ালা চলে যায়।
রমজান পেছন ঘুরতেই দেখলো, দু’জন অচেনা ছেলে। রমজান ভ্রু কুঁচকে বললো,তোমরা কারা?
অপূর্ব আমতা আমতা করে বলল, চাঁচা আমরা রুশ রাজ্য থেকে এসেছি।গ্রাম টা পরিদর্শন করছিলাম।কাট ফাটা রোদের জন্য পানির পিপাসা পায়।তাই পানি খেতে আসলাম।
রমজান বললো,পানি খেয়েছিলে?
হ্যাঁ।
রমজান বললো,তাহলে আসতে পারো।
অপূর্ব কিছু ভেবে আমতা আমতা করে বলল, চাচা কিছু মনে না করলে,একটা কথা বলবো?
রমজান নত দৃষ্টিতে বললো,বলো।
অপূর্ব বললো, আপনাদের কথা আমি
দুর্ভাগ্যবশত শুনে ফেলেছি।
বাচ্চা মেয়েটি হয়তো অসুস্থ।টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না।
আমি চাই ছেলে হিসেবে আপনাদের পাশে থাকতে।
রমজান কোন জবাব দিলো না।
অপূর্ব পকেট থেকে কাগজ বের করে কিছু লিখে রমজানের হাতে দিয়ে বললো, এখানে আমার ঠিকানা দেয়া আছে।আমায় ভরসা করতে পারেন। রমজান কাগজ টা নিলো।
অপূর্ব সাদিক বাড়ি ছেড়ে বের হয়।
___রমজান কে এলিজা বললো,ঐ ছেলেটা কি বললো?
রমজান বললো, তোমরা তো শুনেছো।
এলিজা বললো,আমি কারো দয়া নিয়ে বাঁচতে চাই না। আমার বোন সুস্থ হয়ে যাবে।
রমজান কাগজ টা এলিজার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো,এটা রেখে দে।যদি দরকার পরে তবে শহরে যেতেই হবে।
___অপূর্ব সাদিক রুশ রাজ্যর দিকে রওনা করলো। সাদিক বললো,তুই সত্যি ই ওদের সাহায্য করতে চাস?
অপূর্ব বললো,যদি করি তবে দোষের তো কিছু নয়। মানুষ মানুষের জন্য।
দিন ফুরিয়ে সন্ধ্যা হয়ে যায়। অপূর্ব সাদিকের ক্যাম্পে ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে যায়।
অপূর্ব খাওয়া-দাওয়া শেষ করে।দীগন্ত নদীর তীরে চলে যায়।
নদীর তীরে উষ্ন মনে বসে আছে। চাঁদনী রাত। গরমের আওতাফ সন্ধ্যা হওয়াতে কিছু কম।নদীর ঢেউয়ের তরতূপ শব্দ ভেসে আসছে।দূর দূরে মাঝিরা জ্বাল ফেলছে।
তৎক্ষণাৎ অপূর্ব কারো উপস্থিতি অনুভব করলো। পেছন ঘুরে দেখলো সাদিক।
অপূর্ব ভেজা কন্ঠে বললো,সবার সাথে আড্ডা রেখে এখানে চলে আসলি?
সাদিক অপূর্বর পাশে এসে বসলো।বললো,তোকে ছাড়া অন্য কারো সাথে ভালো লাগে না।
অপূর্ব মৃদু আওয়াজে বললো,রায়হান কোথায়?
তৎক্ষণাৎ পেছন থেকে রায়হান বললো,আমিও দীগন্ত নদী দেখতে চলে আসলাম।
রায়হান ও বসে পরলো।
এতদিন টুরে কে কি শিখলো, না শিখলো,সেই নিয়ে তিনজন আলোচনা করছে।
রায়হান বললো, গতকালের মেয়েটাকে পেয়েছিস?
অপূর্ব বললো পেয়েছি।তবে কথা বলতে পারেনি।
রায়হান বললো, আগামীকাল সন্ধ্যায় তো আমাদের চলে যেতে হবে।তার আগে একবার কথা বলার চেষ্টা করিস। অপূর্ব মৃদু হাসলো।
অপূর্ব বললো,চল সামনের দিকে যাওয়া যাক।
সাদিক ইতস্তত বোধ করলো।বললো, আমি ওদিকে যাবো না। ওদিকে ঘন ঝোপঝাড়।কতটা ভয়া”নক এই জায়গা।
অপূর্ব বললো,আরে কিছু হবে না চল। আগামীকাল তো চলেই যাবো।তার আগেই শেষ বারের মত রাত টা উপভোগ করি।
সাদিক বাধ্য হয়ে গেলো।
চারদিক নিশ্চুপ।দূর দূরে শেয়াল ডাকছে। বাদুড়ের আলাপ আলোচনা। জোনাকি পোকাদের উর্ভব।
সাদিকের মনে হচ্ছে এখনই কোন জ’ন্তু জানো’য়ার তেরে আসবে।
বেশ কিছুক্ষণ চাঁদনী রাত উপভোগ করার পর অপূর্ব বললো,চল ফিরে যাওয়া যাক।
রিসোর্টের দিকে পা বাড়াতেই পেছন দিক থেকে পানির মধ্যে ঝব করে আওয়াজ আসলো।এমন মনে হলো কেউ নদীতে কিছু ফেলেছে।
অপূর্ব, রায়হান ,সাদিক হকচকিয়ে উঠলো। অপূর্ব বললো,কোন শব্দ পেয়েছিস?
রায়হান বললো,পানিতে কেউ কিছু ফেলে গেছে।দূর থেকে একটা টলার যাচ্ছে।
অপূর্ব বললো সামনে এগোই।সাদিক অপূর্বর হাত ধরে রাখলো।
কিছুটা সামনে এগোতেই দেখলো,একটা সাদা বস্তা ভেসে যাচ্ছে।
রায়হান বললো,একটা লাঠির সাহায্য আনা যাক। সাদিক বাধা দিলো।
রায়হান শুনলো না।
লম্বা একটা লাঠির সাহায্যে বস্তাটা আনলো।
সাদিক ভয়ে চুপসে গেলো।
এলিজা পর্ব ১
অপূর্ব বস্তাটা খুললো। রায়হান টর্চ লাইট দিয়ে দেখলো ,বস্তার ভেতর একটা ছেলের লা’শ।
অপূর্ব বস্তাটা সম্পূর্ন খুলে ফেললো।
২৬-২৭ বয়সের একটা ছেলের লা’শ।ছেলেটির হা’র্ট নেই।
সাদিক ছিটকে দূরে সরে যায়।
অপূর্ব বললো, এরকম নিকৃষ্ট খু’নি আর আমি দু’টো দেখেনি।কে এই খু’নি? ছেলেদের হা’র্ট নিয়ে কি করে?
রায়হান হতভম্ব হয়ে যায়।