এলিজা পর্ব ৬+৭
Dayna
তিলকনগর_
রমজান কাপা কন্ঠে , উত্তেজিত হয়ে বলো উঠলো,পাখি মা -পাখি মা কি হইছে তোর। এ তোমরা কই দেখো পাখির কি হইছে।
দৌড়ে আসে-এলিজা জয়তুন।
পাখির কোন জ্ঞান নেই, জমিনে পরে আছে ।,রমজান পাজা কোলে করে চৌকিতে শুইয়ে দেয়। এলিজা পানি চোখে ছিটাতে থাকে।
পাখি নিস্তেজ হয়ে আছে। এলিজা ভেজা কন্ঠে বললো,এইবোন চোখ খোল। আর কত কষ্ট দিবি এই অভাগা বোনকে। বলেই অঝরে কান্না শুরু করে এলিজা
রমজান : আমাদের শহরে যাওয়া দরকার। ওর চিকিৎসা করানোর মত সমর্থন তো আমাদের নাই। এই অবস্থায় ওরে নিয়ে বসে থাকবো। সেদিন যে ছেলেটা আসছিলো, ওর কাছে একবার গিয়ে দেখলে হয়না?
এলিজা পাখিকে বুকের মধ্যে জড়িয়ে বললো,না মামা কারো দয়া নিয়ে বাঁচতে চাইনা। আমার বোনের কিছু হবে না। আমি আছি আমার পাখির জন্য।
পাখি কিছুক্ষণ পর চোখ টিপ টিপ করতে থাকে। এলিজা পাখির মাথায় হাত বুলিয়ে বললো, তোর কিছু হবে না। যতদিন আমি আছি।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
জয়তুন: আমাদের ছোট্ট পাখির কি হইবো শুনি!পাখি শিঘ্রই সুস্থ হইয়া যাইবো।
পাখি শোয়া থেকে উঠে বসলো। এলিজার দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসলো।
এলিজা অন্য দিকে ফিরে হাতের উল্টো দিক দিয়ে চোখের পানি মুছে বললো,
-কি খাবি বল? আমি বানিয়ে দিবো।আজকে তুই যেটা বলবি সেটাই বানাবো।
পাখি মুচকি হেসে নরম গলায় বললো,আপু তোমার হাতে খিচুরি অনেক মজা ।
দিবে আমায় রান্না করে?
এলিজা : কেন দেবো না – আমার পাখির জন্য আমি জীবন দিয়ে দিতে পারি।
পাখির কপালে এলিজা চুমু খায়।
রমজান : তোগো এই বন্ধন আল্লাহ কোনদিন ছিন্ন না করে।
মামি তুমি পাখির কাছে থাকো আমি সবার জন্য খিচুরি রান্না করি।
এলিজা চৌকি থেকে উঠে যেতেই- পাখি পেছন থেকে ওরনাটা টেনে -ধরে।
এলিজা থমকে গিয়ে পেছনে তাকায়।
পাখি বললো,আপু আমাকে তুমি শহরে নিয়ে চিরিখানার বাঘ, সিনেমা দেখাবে না?
এলিজা পাখির কাছে গিয়ে দুই হাত পাখির দুপাশে রেখে বললো,
– এবার তুই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে গেলেই নিয়ে যাবো।
পাখি : সত্যি তো?
এলিজা : তিন সত্যি।
এলিজা রান্না ঘরে খিচুড়ি রান্না করছে। এলিজা করো উপস্থিতি অনুভব করলো।
মনে হলো পেছনে কেউ আছে। পেছন ঘুরে দেখলো নিরা দাঁড়িয়ে আছে।
এলিজা: ভাবি আপনি? একটা পিরি টেনে দেয়। মৃদু হেসে বললো বসো ভাবি।
নিরা : কাদছিস কেন এলিজা- ?
এলিজা – অন্য দিকে ফিরে হাতের উল্টো দিক দিয়ে চোখের পানি মুছে বললো,
কোথায় কান্না করছি। আগুনের তাপ লেগেছে হয়তো।
নিরা :বোকা ভেবেছিস , আমি সব বুঝি।
পাখির জন্য মন খারাপ- আল্লাহ চাইলে ঠিক হয়ে যাবে।
এলিজা নিরার দিকে দৃষ্টি স্থাপন করলো।চোখে আগুনের ঝলকানি- নিয়ে বললো,পোড়া কপাল আমার।
নিরা এলিজার মুখে এরকম বাক্য শুনে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।ভ্রু কুঁচকে ভাবলো এরকম কথা বলছে কেন।
ঢাকা স্টামফোর্ড কলেজ__
মিরা কলেজের পিয়ন কে উদ্দেশ্য করে জিজ্ঞেস করলো,শায়ান স্যার কোথায় ?
পিয়ন : সে তো ,বাংলা বিভাগের ক্লাস নিচ্ছে ৩ তলায়।কোন দরকার?
মিরা : না এমনি – বলেই মিরা চলে যায় তিনতলার দিকে ।
শায়ান তালুকদার’ ঢাকা স্টামফোর্ড কলেজের শিক্ষকতার চাকরি করেন । চাকরির তার কোন দরকার নেই। কারন তার বাবা একজন প্রতাবশালী। কিন্তু এলিজাকে পেতে হলে করতে হবে।নয় বেকার বলে সম্বোধন করে প্রত্যাখান করবে।
মিরা , বাংলা বিভাগ ক্লাসের সামনে এসে ঘুর ঘুর করছে। শায়ান ক্লাস নিচ্ছে।
শায়ানের ক্লাস করার জন্য প্রতিটা মেয়েই পাগল। আর কারো ক্লাস করুক আর না করুক শায়ানের ক্লাস করার জন্য তারা পাগল।
শায়ানের চোখ পরলো মিরার দিকে।
মিরাও একজন শিক্ষিকা-
শায়ান : মিরা ম্যাডাম কিছু বলবেন?
মিরা : না আসলে দুপুরের খাওয়ার সময় হয়েছে! খেতে যাবেন না?
শায়ান : হ্যাঁ , ক্লাস টা শেষ করেই যাবো।
মিরা :আমি আপনকে আজকে লান্স এর জন্য দাওয়াত দিলে কি গ্রহন করবেন?
শায়ান : কেন নয় ম্যাডাম। আপনার দাওয়াত ফেলা যায়।
বলেই একসাথে হেসে উঠলো শায়ান ও মিরা।
মিরা -ক্লাসের দিকে পরোখ করতেই দেখলো ক্লাস ভর্তি মেয়েরা । বুঝতে আর বাকি নয়। শায়ান ক্লাস নিচ্ছে আর মেয়েরা ক্লাসে করবে না এটা হতে পারে না।
তবে মিরার খুব হিংসা হচ্ছে। বলতে পারছে না।
ক্লাসের সময় শেষ।
শায়ান : চলুন যাওয়া যাক।
দুজন পাশাপাশি হাঁটতে হাঁটছে।,মিরা শায়ান কে উদ্দেশ্যে করে জিজ্ঞেস করলো,
শায়ান স্যার এর বাড়িতে কে কে আছে , ?
শায়ান : মা বাবা, দাদু, ছোট বোন।
মিরা : আর ভাবি ,?
শায়ান হেসে বলে উঠলো।বললো,
এখনো হয়নি তবে আশাকরি খুব শীঘ্রই হবে।
মিরা : এখানে ভালো একটা হোটেল আছে রজনীগন্ধা হোটেল চলেন ওখানে যাই।
দুজন হাটতে থাকে পথের বাকে।- মিরা সাদা রঙের শাড়ি পরা চুলটা খোপা করা দেখতে ভারি সুন্দর লাগলেও , শায়ান পরোক্ষ ই করছে না। কিছুদূর যেতেই পথের কাছে একজন বেলিফুল বিক্রেতা কে দেখতে পায় শায়ান।
শায়ান বেলিফুল এর মালা গুলো দেখছে। শায়ান বিক্রেতার কাছে যায়। শায়ান প্রশ্ন করলো বিক্রেতাকে
এই দুপুর বেলাও বেলি ফুল বিক্রি করছেন। শুকিয়ে যাবে না?
বিক্রেতা: কি করবো স্যার বিক্রি হচ্ছে না।
শায়ান : আমাকে দিয়ে দেন সব গুলো। বিক্রেতা মহাখুশি।
মিরার বেলিফুল পছন্দ, মনে মনে নিজের জন্য কিনছে সেই চিন্তা ই করছে।
মিরা:- ফুলগুলো কার জন্য?
শায়ান মৃদু হেসে বলল,,তার বেলিফুল পছন্দ আর আমার পছন্দ তার মুখের হাসি।
মিরা:কার পছন্দ আমি কি জানতে পারি? ,
শায়ান : ম্যাডাম খুব খিদে পেয়েছে এখনি সব বলে দিলে , পরে বলবো কি ।
শায়ান বাম হাত করে- বেলিফুল গুলো বুকের সাথে আগলে রেখেছে।
মিরা খেতে খেতে বার বার শায়ান এর দিকে পরোক্ষ করছে। এমন ভাবে ফুল গুলো ধরে আছে যেন,কেউ ছিনিয়ে নিবে।
মিরা কোন প্রশ্ন করলো না।
খাওয়া শেষ করে দুজনে ক্যাম্পাস এর উদ্দেশ্যে হাটতে শুরু করে।
মিরা- শায়ান দিকে দৃষ্টি স্থাপন করে বললো,
মিরা: স্যার আপনার কাছে ভালোবাসা মানে কি?
শায়ান ভারি একটা দ্বির্ঘশ্বাস ফেলে –বললো
শায়ান : ভালোবাসা মানে, যত্ন, ভালোবাসা মানে সম্মান, ভালোবাসা মানে ভালোবাসার মানুষ টিকে আগলে রাখা, তার দেহরক্ষী’তা হওয়া,তাকে বোঝা, কেউ তার ভালোবাসার মানুষটির দিকে খারাপ নজর দিলে তার চোখ উপরে ফেলা।
মিরা ঠোট কুঁচকে হেসে বললো,আপনি তো দেখছি পুরাই শাহজাহান।
শায়ান: শাহজাহান কিনা জানিনা, তবে শাহজাহান এর মত তাজমহল, না করতে পারলে তার জন্য পূরো জীবন টা উৎসর্গ করে দিবো।
মিরা উৎফুল্ল হয়ে জিজ্ঞেস করলো, কাউকে ভালোবাসেন?
শায়ান: মুচকি হেসে ফুল গুলোর দিকে তাকিয়ে হ্যাঁ সুচক মাথা নাড়ে। –
মিরা : কে সেই ভাগ্যবতী নারী– ?
শায়ান : আছে একজন ভুবনমোহিনী সুন্দরী রানী।যার সৌন্দর্যের তুলনা হয়না।তবে , সে চাক বা না ,চাক পরের সাত জনম ধরেও আমি তাকে ভালোবাসবো।
কথা বলতে বলতে ক্যাম্পাস এর কাছে চলে আসে।
চৌধুরী বাড়ি। (গতকাল রাতের বাকি অংশ) __
অপূর্ব ভাই মিথ্যা বলিস না ভয় দেখাস না। আমি জানি রায়হান তোর বাসায় ।
তোরা দুজন মিলে ভয় দেখাচ্ছিস। ছোট বেলায় ও তো ঠিক এমনটাই করতি।
অপূর্ব ক্রোধের স্বরে বলে বললো,ফালতু কথা বন্ধ কর। এটা মজা করার সময় নয় এতদিন পর বাসায় ফিরেছে। আর আমরা লুকোচুরি খেলবো।
সূর্য : তাহলে ও কোথায়?
অপূর্ব : চল ওর বাড়িতে যাওয়া যাক।
সূর্য : তাও এত রাতে?
অপূর্ব:এখন রাতের হিসেব করে সময়
নষ্ট করা যাবে না।
গেটের সামনে গাড়ির দিকে এগোবে ঠিক তখনই পেছন থেকে অপূর্বর কাদে কেউ হাত দেয়। অপূর্ব থমকে দাঁড়ায়। পেছন ফিরে দেখে জয়া।
অপুর্ব: মা এত রাতে তুমি এখানে?
জয়া : তোকে দেখলাম , বাহিরে বের হচ্ছিস তাও এত রাতে কিসের জন্য দেখতে এলাম।
জয়া: বাবা, সূর্য তুমি এত রাতে?
আসলে আন্টি হয়েছি কি- রায়হান এর কথা বলবে ঠিক তখনি অপূর্ব ইশারায় বারন করে।
অপূর্ব আমতা আমতা করে বলল ,মা- আসলে আমাদের এক বন্ধুর জন্মদিন, ওকেই সারপ্রাইজ দিতে যাচ্ছি। তুমি ভেতরে গিয়ে ঘুমিয়ে পরো।
দারোয়ান চাচাকে ডেকে অপূর্ব বললো,
চাচা মাকে ভেতরে নিয়ে যান। আর আমি না ফেরা পর্যন্ত, গেটের সামনে থেকে নরবে না।
আচ্ছা স্যার,
বলেই অপূর্ব – আর সূর্য গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যায়।
জয়ার বুঝতে আর বাকি রইলো না,অপূর্ব কিছু লুকিয়েছে। কিন্তু কি এমন হয়েছে তা যা লুকাতে হবে।
সূর্য:তুই তোর মাকে মিথ্যা বললি কেন?
অপূর্ব: সত্যি টা বললে আমাকে ঘর বন্দী করে রাখবে। চারদিকে যা হচ্ছে। মা তো চায় ই না আমি পুলিশ এর চাকরি করি।
রায়হান নিখোঁজ জানলে মা হতাশায় পরে যাবে।
সূর্য :- কিছুদিন আগে রায়হান এর জন্মদিনে শেষ দেখা হয় , কত আনন্দ করলাম , আর আজ কতদিন কোন কথা হয় না। ভেবেছি তোরা ফিরলে , দেখা করবো আগের মত আড্ডা দেবো।
অপূর্ব – থমকে গিয়ে গাড়িটা মাঝ রাস্তায় থামিয়ে দেয়।
সূর্যর দিকে দৃষ্টি স্থাপন করে ভ্রু কুঁচকে বললো,জন্মদিন? রায়হান এর ? কততম আর আমি জানি না।
সূর্য: তোর সাথে তো তখন ওর মনোমালিন্য হয়, ভুলে গেলি?
অপূর্ব : কত তম জন্মদিন ছিলো?
২৭ তম।
এটা শুনে অপূর্বর কপাল বেয়ে ঘাম ঝরতে থাকে। হাত পায় কাপুনি শুরু হয়।
বির বির করে বলছে- এটা হতে পারে না এটা হতে পারে না।
সূর্য — এই কি হলো তোর ?
ঠান্ডা হাওয়া বইছে আর তুই ঘামছিস কেন?
অপূর্ব কাপা কন্ঠে বলে বলে উঠলো,
কিছু না রায়হান এর জন্য চিন্তা হচ্ছে, ও যেন ঠিক থাকে। বলেই ক্রোধ দেখিয়ে স্টেরিয়াংএ একটা ঘুষি মেরে বললো, কি হচ্ছে এসব?
সূর্য: চল এত চিন্তা করে কি হবে রায়হান দের বাড়ি যাওয়া যাক। হতে পারে কোন এভিডিয়েন্স পেয়ে যাবো।
দরজায় করা নাড়ার শব্দ
রেনু বেগম: মনে হয় রায়হান এসেছে। কে আছিস দরজাটা খোল আমার রায়হান আসছে।
৫০ বছরের রায়হান এর মা।
হাটতে পারে না। উইল চেয়ারে বসে থাকেন সারাদিন।
সেলিম দৌড়ে গিয়ে দরজাটা খুলেই দেখে , অপূর্ব ও সূর্য –
পিছনের দিকে উকি মেরে বললো,
সেলিম : রায়হান কোথায় ও আসে নি তোমাদের সাথে?
অপূর্ব ও সূর্য দুজন দুজনার মুখের দিকে চোখাচোখি করলো। অপূর্ব বললো, আসলে আংকেল,ও আছে হয়তো কোথাও ঘাপটি মেরে বসে আছে।হয়তো লুকোচুরি খেলছে আমাদের সাথে।
রেনু : কইরে আমার রায়হান? ও কোথায়? অপূর্ব বাবা তুই আসছো। অপূর্ব রায়হানের মায়ের কাছে গিয়ে হাটু ঘেরে বসে বললো,
আন্টি রায়হান এর কিছু হবে না, আমরা আছিতো।
অপূর্ব কান্না রত কন্ঠে বললো, ওর তো লুকোচুরি খেলার অভ্যাস ছোট থেকে ই। ও চলে আসবে।নিজে থেকে যদি না আসে আমরা খুজে নিয়ে আসবো,। বড্ড বার বেরেছে ও। ওকে এবার পেলে দেখবেন ওর কি অবস্থা করি।
রেনু হুহু করে কান্না শুরু করে।অপূর্বর হাত ধরে বললো, আমি কিন্তু বাঁচবো না অপূর্ব।, আমার ছেলে চাই। নয়তো আমায় মা ডাকবে কে? হা কে মা ডাকবে।
রায়হান তাদের একমাত্র ছেলে।
আর কোন সন্তান নেই তাদের।
সেলিম: ওর কিছু হবে নাতো?
অপূর্ব :আংকেল এসব কি বলছেন ওর কিছু হবে না।
সূর্য এদিকে পুরো ঘর খোজে কোথাও কিছু পায়নি।
সূর্য অপূর্ব কে ইশারা করলো ঘরে কিছু পাওয়া যায়নি।
অপূর্ব – : আন্টি আমরা , আসছি আর দেখবেন রায়হান শীঘ্রই ফিরে আসবে ।
বলেই উঠে দাঁড়িয়ে দরজার দিকে আসবে – তখনই রেনু বেগম পেছন থেকে অপূর্ব হাত টা ধরে অপূর্ব থমকে দাঁড়ায়।রেনু বললো,
কথা দাও রায়হান কে সুস্থ সবল অবস্থায় ফিরিয়ে দিবে?
অপূর্বর ধুকবুকানি টা বেড়ে যায়।নত স্বরে বললো, আন্টি ও ফিরে আসবে কথা দিচ্ছি। বলেই চোখ মুছে বেড়িরে যায়।
অপূর্ব সূর্য কে বললো,চল তোকে বাড়িতে ছেড়ে দেই।, অনেক রাত হয়েছে।
সূর্য : না আমি চলে যেতে পারবো ।
অপূর্ব:সময় টা ভালো না একা যাস না। ওঠ গাড়িতে ।
সূর্য কে বাড়িতে ছেড়ে অপূর্ব বাড়ি চলে আসে।
রাত ২:৩০ মিনিট।
বাড়ির মধ্যে ই প্রবেশ করতেই দেখে চাঁদনী সিড়িতে বসে আছে।
তুই এত রাতে এখনো ঘুমোসনি??
চাঁদনী:কি করে ঘুমাবো ফুবু তোর চিন্তায় অস্থির হয়ে পরে আছে। কি এমন দরকার যে তোকে এত রাতে বের হতে হবে??
অপূর্ব :আমি একজন পুলিশ, আমার রাত আর দিন নেই। যখন তখন কাজ থাকে। বলেই উপরে উঠতেই চাঁদনী পেছন থেকে বললো,অপূর্ব তোর ঘর থেকে এটা পেয়েছি। অপূর্ব ঘুরে তাকালে ই দেখে এলিজার নুপুর টি।
অপূর্ব : আমার জিনিসে হাত কেন দিয়েছিস, দে বলছি বলেই হাত থেকে টেনে নেয় ।
চাঁদনী:কার এটা?
অপূর্ব:সেই কৈফিয়ত কি তোকে দেবো।
বলেই নিজের ঘরে চলে যায়।
অপূর্বর মস্তিষ্কে হাজারো চিন্তা। – এত চিন্তার পর ও কোন এক কারনে অপূর্বর মুখে মৃদু হাসি। আনমনে নুপুর টি দেখছে।
বিড়বিড় করে বলছে,খুব শীঘ্রই তোমাকে আমার করে আনবো। এত দূরে তুমি তবুও কেন মনে হয়, খুব কাছে ।
আমার প্রিয় – এলিজা- বলেই নূপুর টিতে চুমু খায়।
এক বালিসে অপূর্ব অপর বালিসের উপর নূপুর টি। বললো,কবে যে নূপুর টির যায়গায় তুমি থাকবে।
রাত যতই বেড়েছে অপূর্ব চোখে ঘুম নেই। হঠাৎ উঠে বসে পরলো।
হঠাৎ করে মাথায় আসলো শায়ান এর কথা — বিড় বিড় করে বলছে- ঐ শালা না জানি আমার ভালোবাসাকে কেড়ে নেয়।
না, না এটা কি ভাবছি।
ভাগ্য থাকলে আমার এলিজাকে কেউ কেরে নিতে পারবে না।
ভাগ্য থাকলে পাবো এমন চিন্তাও কেন করছি। তাকে পাওয়ার জন্য সত চেষ্টা আমি করবো, হাজার মানুষের সাথে লড়াই করে হলেও আমার ভালোবাসা কে আমার করবো।
বেশ কিছুক্ষণ একা একা বিড়বিড় করতে করতে,মনের অজান্তেই ঘুমিয়ে পরে।
তিলকনগর————-
অপূর্বর দেয়া চিঠি টি এলিজা খুলে পরতে শুরু করলো। দ্বিতীয় বারের মত।
একা একা হাসছে। আর ভাবছে ছেলেটা কত চালাক
এক প্রান্তে ঠিকানা অপর প্রান্তে ভালোবাসার কথা —
পাখি ,চুপি চুপি উঠে বসে,
পাখি :আপু তুমি শায়ান ভাইয়ের দেয়া চিঠি পরছো। আমি কিন্তু সব জানি , ভাইয়া কিন্তু অনেক সুন্দর। তোমার সাথে ভালো মানাবে।
এলিজা পর্ব ৪+৫
এলিজা : পাকনা বুড়ি আপনি এখনো ঘুমাননি।
পাখি :ঘুমাবো কি করে পাশে বসে ফিস ফিস করে চিঠি পরলে!
তবেরে – বলেই আদুরে আচে মাইর শুরু করে এলিজা।
পাখি কাদ হয়ে এলিজাকে জড়িয়ে বললো,আপু আমার অনেক ইচ্ছা তোমার বিয়ে হবে, তুমি লাল বেনারশী শাড়ি পরবে হাতে মেহেদী পরবে , আমাদের শায়ান ভাইয়া বর সেজে আসবে আর আমি নাচবো।
এলিজা : শায়ান তোর মাথা খেয়ে নিয়েছে।
চলেন এবার আপনি ঘুমাবেন। অনেক রাত হয়েছে। নয় শরীর খারাপ করবে। …….