হয়তো নায়ক নয়তো খলনায়ক পর্ব ১১
Tahrim Muntahana
রাত দশটার মতো বাজে। বেশ রাত। বাড়ি ফেরে নি আফরা। সেই কখন থেকে বাইরে দৃষ্টি ফেলে দরজায় বসে আছে মিরা। ফোন টাও তুলছে না। দুশ্চিন্তায় প্রকৃতির জোড়ালো হাওয়াতেও ঘামছে সে। এরকম রাত আফরা কোনোদিন ই করেনি, দুশ্চিন্তা হওয়ার ই কথা। আদিল মাহমুদ আবার কিছু করে নি তো? মিরা দরজায় তালা দিয়ে বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়লো আবার। উদ্দেশ্য নাদিয়ার কাছে যাওয়া! মেয়েটাই তাকে সাহায্য করতে পারবে। প্রকৃতির উথাল হাওয়ায় বাইক চালানোতে হিমশিম খেতে হয় মিরা কে, তবে সে থেমে থাকে না বরং সর্বোচ্চ স্পিডে আহমেদ বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ায়। বাড়িটা দেখেই তার চোখ যেন জ্বলে উঠে। আগুনের স্ফুলিঙ্গ গুলো যেন চোখের মনিতেই নেচে উঠে। খুব তাড়াতাড়িই স্বাভাবিক করে নেয় নিজেকে। চেয়ারে বসে থাকা দারোয়ান তাকে দেখেই দাঁড়িয়ে গেছে, এগিয়ে এসে কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই মিরা বললো,
~ নাদিয়া কে ডাকুন তো, ফোন করছি ধরছে না। একটু তাড়াতাড়ি।
দারোয়ান ও আর কিছু বলে না। ভেতরে চলে যায়, মিরা বাইরে দাঁড়িয়েই আফরার ফোনে লাগাতার ফোন দিতে থাকে। রিং বেজে কেটে যায়, কেউ উঠায় না।
মদ খেয়ে উল্লাস করছিল নাদিয়া, এই সময়টাই সে নিজের মতো একা কাটায়। দরজায় টোকা পড়ায় চরম বিরক্ত হয় সে। বিশ্রি ভাষায় দুটো গালিও দেয়, দরজার অপাশে দাঁড়ানো কাজের মেয়েটা গালি শুনেও দরজা ধাক্কাতে থাকে। এ আর নতুন কি? এ বাড়িতে যবে থেকে কাজ করছে, প্রতিদিন তাকে এমন গালিগালাজ শুনতে হয়। প্রথম কয়েকদিন কষ্ট হতো, কাঁদতো তবে এখন আর ইমোশন কাজ করে না। পেট চালাতে পারছে এটাই অনেক। দরজা খুলছে না বলে এবার মেয়েটা চেঁচিয়ে বললো,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
~ আপা নিচে একজন মেয়ে বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, আপনাকে খুঁজছে। শুনছেন?
দরজা খুলে যায়। নাদিয়া কাজের মেয়েটাকে কিছু না বলেই পা চালিয়ে নিচে চলে যায়। তার মন বলছে আফরা বা মিরা’র মধ্যে কেউ এসেছে। আর সে যা আশংকা করছে তা নয় তো? কেমন যেন কেঁপে উঠে নাদিয়া। এমন হলে ধ্বংস বুঝি কেউ আটকাতে পারবে না! গেইট পেরিয়ে যেতেই মিরা কে অস্থির চিত্তে পাইচারি করতে দেখে যা বুঝার বুঝে যায় নাদিয়া। চেঁচিয়ে বলে উঠে,
~ বাইক চালাও মিরা, ফাস্ট!
মিরা আর কথা বাড়ায় না। বাইক স্টার্ট দিতেই উঠে বসে নাদিয়া। চোখের পলকেই যেন বাইক টা হাওয়া হয়ে যায়।
দারোয়ান কিছুক্ষণ রাস্তার দিকে তাকিয়ে থাকে। হুট করে কি যেন মনে হতেই পকেটে থাকা বাটন ফোনটা বের করে কিছু একটা লিখে সেন্ড করে দেয়। তার কাজ আপাতত এটাই!
বাইক থামে আদিলের অফিসে। চারপাশ অন্ধকার, কেমন একটা ভুতুড়ে পরিবেশ। অবাক করার ব্যাপার হলেও অফিসে কোনো গার্ড নেই! গেইট পাসওয়ার্ড ছাড়া খুলবে না, মানে আদিল অফিসে নেই। নাদিয়া হিসাব কষে, ভাই কে ফোন দেয়। তবে তাকে নিরাশ করে অপর পাশে মেয়েলি কন্ঠ ভেসে আসে, বন্ধ! চিন্তায় চুল খামচে ধরে সে। মিরা উন্মাদের মতো বলে উঠে,
~ আমাকে যেতে হবে, নাদিয়া। তুমি বাড়ি চলে যাও, পেছনে এসো না।
বলেই বাইক ছুটায়, রাগে চিৎকার করে উঠে নাদিয়া। এত রাতে মেয়ে টা তাকে একা রেখ গেল কিভাবে? এর শোধ পরে তুলবে, আগে আফরা কে খুঁজে বের করতে হবে। সে চাইছে না খেলাটা মাঝপথে থেমে যাক। এত এত খেলোয়াড়দের হুটহাট আত্মচিৎকার দেখতে তার মজা লাগে। অনেক দিন পর আবার সেই নম্বরে ফোন দেয় নাদিয়া। ফোন রিসিভ হবে যেনেও ধৈর্য রাখতে পারে না। চেঁচিয়ে উঠে সে,
~ পিকআপ দা কল!
অপর পাশের মানুষটা মনে হয় রিসিভ করেই কথাটা শুনতে পায়। হেসে উঠে। হেঁয়ালি করে বলে,
~ খুব মিস করছো বুঝি?
~ নিজেকে ফানি ম্যান হিসেবে তুলে ধরো না, আপাতত আমার কাছে। আপাদমস্তক পুরোটাই আমার চেনা।
হাসির শব্দ শুনতে পায় নাদিয়া। নিজের কথায় নিজেই লজ্জা পায়। আপাদমস্তক পুরোটা সে সত্যিই চিনে? সম্ভব? লোকটি বললো,
~ আমাকে চেনা বড় কঠিন। আমি দুর্লভ! অন্ধকারের রহস্য খুঁজে বের করা মানেই অন্ধকারে হারিয়ে যাওয়া। তুমি কি আঁধার পছন্দ করছো নাকি? সেখানে কিন্তু মদ পাবে না।
~ আমার ড্রিংকস করা নিয়ে কথা বলবে না। আউট কথা বাদ, আফরা মিসিং। খুঁজে বের করো।
~ আফরা মিসিং তো আমি কি করবো? আমার কিছু হয় সে?
রাগে কাঁপছে নাদিয়া। এই হেঁয়ালি তার একদম পছন্দ হচ্ছে না। এই লোকটা কি বুঝতে পারছে না, আফরার কিছু হলে পুরো খেলাটাই পাল্টে যাবে? চিৎকার করে বললো,
~ আর ইউ ম্যাড। তুমি বুঝতে পারছো না বিষয়টা? আফরা’র কিছু হলে তুমি টিকতে পারবে?
~ রিলেক্স! এগিয়ে এসো, কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে দাঁড়িয়ে আছি।
নাদিয়ার ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে। ফোনটা পকেটে ঢুকিয়ে এক দৌড়ে কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে চলে যায়। হুডি পরিহিত অবয়ব দেখে এগিয়ে যায় সে। কোনো রকম শব্দ ব্যয় না করেই বাইকে বসে পড়ে। বাইক ছুটতে শুরু করে তবে কথা হয়না। পিনপতন নিরবতা বিরাজ করে। নাদিয়া জানে না, কোথায় যাচ্ছে তারা। তবে এটা নিশ্চিত যে আফরা কে ঠিক পেয়ে যাবে।
আলো-আঁধারি ঘর। মাঝখানটাই একটা চেয়ার রাখা, তাছাড়া এই ঘরে আর কিছু দেখা যাচ্ছে না। চেয়ারের উপর কেউ বসে আছে। ঠিক বসে আছে না, তাকে তো বেঁধে রাখা হয়েছে। সেই ব্যক্তি এখন অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে অচেনা জায়গায় টাই। ঘরটা নিস্তব্ধ নয়, কেমন খটখট শব্দ হচ্ছে। মনে হয় কেউ লোহা জাতীয় কিছু তে বার বার বারি দিচ্ছে। হয়তো কোনো কিছু মেরামত করছে। ঘরে জ্বলে থাকা লাল বাতিটার কিরণ এসে বারি খাচ্ছে সদ্য শান দেওয়া চা* পাটির উপর। কিরণ গুলো কারো চোখে আনন্দ সৃষ্টিও করছে। মনে হচ্ছে তার আনন্দে চা* পাটি টাও আনন্দ পাচ্ছে, তার মতো চা* পাটি টাও কারো রক্ত ছুঁয়ে দেওয়ার জন্য ছটফট করছে। অপেক্ষা শুধু জ্ঞান ফেরার!
সময় পেরিয়ে যায় কয়েক মিনিট। লোকটি পিটপিট করে চোখ খুলে। মস্তিষ্কের নিউরন যখন আপন ভুমিকায় জেগে উঠে, চমকে উঠে সে। দাঁড়াতে চায়, পারে না। নিজেকে বাঁধা অবস্থায় দেখে চেঁচিয়ে উঠে,
~ কে আছো? কে নিয়ে এসেছো আমাকে? শুনতে পাচ্ছো কেউ?
উত্তর ফিরে আসে না, অপেক্ষা করে সে। হুট করেই গম্ভীর কন্ঠ ভেসে আসে,
~ ইন্সপেক্টর আতিকুর যে, কেমন লাগছে নিজেকে এমন দেখে?
ভীষণ ভাবে চমকায় আতিকুর। থানা থেকে আগে বের হয়েছিল আফরা’র কাছে যাবে বলে। অর্ধেক পথ তো এসেই পড়েছিল, তবে হুট করে এক বাইক এসে সামনে দাঁড়ালো, সে নেমে শাসাতেই যাচ্ছিলো। তবে হয়ে উঠে নি, পেছন থেকে কিছু একটা স্প্রে করতেই অজ্ঞান হয়ে ঢলে পড়ে জমিনে। বর্তমানে নিজেকে এমন অপরিচিত জায়গায় বাঁধা অবস্থায় দেখে চতুর মস্তিষ্কের আতিকুর নিজের বিপদ বুঝেই ফেলেছে। তবে কন্ঠটা চেনা চেনা লাগছে কেন? কিছু বলার সুযোগ তার হয়ে উঠে না, তার আগেই মুখ বেঁধে দেওয়া হয় তার। অজ্ঞাত মুখোশধারী ব্যক্তিটা নিজের উল্লাস প্রকাশ করতে হো হো করে হেসে উঠে। হাসার সময় এতটা দীর্ঘ হয় যে আতিকুরের কান গরম হয়ে আসে, মাথা ধপ করে জ্বলে উঠে। এ কেমন সর্বনাশা হাসি! এ কেমন উল্লাস!
হাসি থামে, এগিয়ে আসে অজ্ঞাত লোকটি। নিজের হাতে থাকা চা* পাটি টা আতিকুর কে দেখিয়ে বলে উঠে,
~ দেখেছিস এটা? এই চা* পাটি দিয়ে তোর শরীর আমি একটু একটু করে কা* টবো। বিশ্বাস কর একটুও কষ্ট হবে না, রক্ত দেখে আমার আনন্দ হবে। আকাশ ছোঁয়া আনন্দ!
কথাটা শেষ করেই লোকটি চা* পাটি চালিয়ে দেয় আতিকুরের হাতে। এক কো* পেই বাম হাত শরীর থেকে আলাদা হয়ে যায়। গগণ শুনিয়ে চিৎকার করার কথা থাকলেও আতিকুর টু শব্দ পর্যন্ত করতে পারে না। চোখ বেয়ে তপ্ত জল গুলো অবিরাম পড়তে থাকে। চোখে মুখে বাঁচার আকুতি, ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ। তবে অজ্ঞাত সেই মুখোশধারীর কি সেই আকুতি দেখার সময় বা ইচ্ছে আছে? সে তো র* ক্ত দেখেই উন্মাদনায় হারিয়ে গেছে। বাম হাত থেকে নজর ঘুরিয়ে লোকটি ডান হাতের দিকে তাকায়, চোখ তার জ্বলে উঠে। এই ডান হাত ছিল বলেই তো অকারণে অন্যের উপর জুলুম করতে পেরেছে। তবে একটু পর কি করবে? হিসহিসিয়ে বললো,
~ এই হাত দিয়েই তো অসহায় মানুষের উপর প্রহার করিস? এই হাত দিয়েই তো অসহায় মেয়ের সম্ভ্রমে হাত দিস? এই হাত দিয়েই তো মেয়েদের অনিচ্ছা সত্ত্বেও জোর করে কাছে টেনে নিস, ভোগের সামগ্রী বানিয়ে রাখিস? আজ এই হাত তোর পাপের প্রায়শ্চিত্ত করবে!
চেয়ারের হাতলে বেছানো হাতের আঙ্গুলে চা* পাটি টা চেপে ধরে। ছটফট করে আতিকুর, ধাপাতে চায় পা। কিন্তু পা দুটোও যে বাঁধা। আজ যেন মুখোশধারী লোকটা নিজের ভেতরের সকল হিংস্রতা ঢেলে দিচ্ছে আতিকুরের মাঝে। হাতের চারটে আঙুলে হাত থেকে আলাদা হয়ে মাটিতে গড়াগড়ি খায়, ফ্লোর রক্তে ভেসে যায়। মুখোশধারী এবার চা* পাটি চালিয়ে দেয় হাতের উপরাংশে। একটু একটু করে আলাদা করে হাতের অংশ গুলো। এত ব্যাথা হয়তো আতিকুর সহ্য করতে পারেনি, আবার অজ্ঞান হয়ে যায়। বিরক্তিতে চোখ মুখ কুঁচকে নেয় মুখোশধারী। ‘চ’ শব্দ করে বাম হাতের কা* টা অংশ টা হাতে তুলে নেয়। জ্ঞান ফিরলে আবার তার হিংস্রতা শুরু করবে, তার আগে এই হাত* টাকে কুঁ* চি কুঁ* চি করা যাক! সময় নিয়ে হাতটাকে একেকটা মাংসের টু* করো বানায়। হাড্ডি গুলো সাইডে রেখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে অনিমেষ। আর ধৈর্য ধরতে পারে না সে, ধপাধপ পা ফেলে বাইরে চলে যায়, ফিরে আসে এক বোতল পানি নিয়ে। মুখের উপর পুরো টা ঢেলে দেয়। নিভু নিভু চোখ খুলে আতিকুর। মুখোশধারী বুঝতে পারে দুর্বল চিত্তের লোকটা একটু পর আবার অজ্ঞান হয়ে যাবে। তাই মনের স্বাদ মেটাতে বললো,
~ চিন্তা নেই! মেয়েকে খুব ভালোবাসিস তো? পুরুষ মানুষ খারাপ হোক, বাবা হিসেবে যেন সে পারফেক্ট। তোকে না দেখলে হয়তো বুঝতে পারতাম না। আমার বাবাও না আমাকে খুব ভালোবাসতো। একদম প্রাণ ছিলাম তার। তবুও দেখ তার প্রাণ টা কত কষ্ট পেয়েছে। তবে তোর মেয়ের কোনো ক্ষতি আমি করবো না। ক্ষতি যেন না হয় তাই দেখবো। এখন রিলেক্স মুডে পর* পারে চলে যা তো। তুই মরা* র পর তোর শরীর টা আমি কু*চি কু*চি করে কা* টবো, কেউ চিনতেই পারবে না।
হো হো করে হেসে চা* পাটি টা গ* লায় চা* লিয়ে দেয়। নিভে যাওয়া শরীরটা কিছুক্ষণ ছটফট করে মৃ* ত্যর কোলে ঢোলে পড়ে। মুখোশধারী চোখ মেলে পুরো দৃশ্যটা অন্তরে ধারণ করে। এতটা তৃপ্তি সে কয়েক বছরে পায় নি। এরপর আস্তে আস্তে শরীর টা মাংসের আস্তরণে পরিণত হয়। মাংস গুলো বিক্রি করলে হয়তো অনেক টাকার মালিক হয়ে যেত। আইডিয়া টা খারাপ না! ভাবতেই ভাবতেই হাসে সে, আজ তার জীবনে সবচেয়ে আনন্দময় সময়, রাত। মনের বাসনা গুলো এভাবেই পূর্ণতা পাক। রক্তের ঘ্রাণ যে নেশা ধরায়! এ নেশা সহজে কাটে না!
নিস্তব্ধ পরিবেশ! অন্ধকারাচ্ছন্ন অন্তরীক্ষ। আজ তারকারাজিও মেঘের আড়ালে লুকিয়ে আছে। মেঘেদের রাজত্ব চলছে পুরো আকাশ জুড়ে। যার প্রভাবে ধরনী আজ গুমোট। অমাবস্যা নাকি? চারদিকে এমন রহস্য রহস্য কেন? মনে হচ্ছে কেউ নিবিড় চোখে পরখ করছে। আদিল ফোনের ফ্লাশলাইট নিভিয়ে দিল। সন্ধানী চোখে এদিক ওদিক পরখ করে জুতাটা খুলে দু পা এগিয়ে আসলো। কিছু দূর কারো অবয়ব টের পাচ্ছে সে। ভয় চিন্তা কোনোটাই হচ্ছে না। এমন ভয়ের দিন সে কবেই পার করে এসেছে। তবে তার সন্দেহ হচ্ছে কালকের মতো আজকেও আবার মেয়েটি কৌতুহল মেটাতে চলে আসেনি তো? আজ তো আবার অফিসে এসেও নিজের উদ্দেশ্যের খানিক বুঝিয়ে দিয়ে গেছে। এমন হলে আজ মেয়েটি বাঁচবে না, সে হলফ করে বলতে পারে। অবয়ব যখন আস্তে আস্তে তার নিকটবর্তী হয় হাত বাড়িয়ে গলা চেপে ধরলো আদিল । মেয়েলি কুঁকানোর শব্দ। আদিল হেসে উঠে। তার সন্দেহ টাই তাহলে ঠিক হলো। মনের মাঝে উল্লাস ভেসে যায়। অন্ধকারের মাঝেই মেয়েটির কান বরাবর মুখ এনে বলে উঠে
~ আজ তৃপ্তি নিয়ে আহার করবো!
টের পায় মেয়েটি থরথর করে কাঁপছে। কিছুটা অবাক ও হয় সে। তার জানা মতে আফরা ইবনাত মেয়েটা তার যোগ্য প্রতিপক্ষ। কিন্তু সে ভুল। অন্য মেয়েদের মতো সেও ভীতু, দুর্বল, পুরুষের পায়ের তলায় থাকার যোগ্য। গলা ছেড়ে সামনের দিকে ধাক্কা দিয়ে গম্ভীর কন্ঠ বলল,
হয়তো নায়ক নয়তো খলনায়ক পর্ব ১০
~ আপনার সাহসের তারিফ করতে গিয়েও করতে পারলাম না। তবে আজ আদিল মাহমুদের থেকে আপনার মুক্তি নেই। আদিল মাহমুদ দুর্বল-সবল দেখে না, যাকে মনে ধরে তাকেই জীবনের মায়া ত্যাগ করতে বাধ্য করে! গলাটা তহলে ভিজিয়ে নিই?
ধপ করে পড়ার শব্দ, আদিল দু’পা পিছিয়ে যায়। তড়িঘড়ি করে ফোনের লাইট জ্বালিয়ে দেয়। বিস্ময় ঘিরে ধরে তাকে। কিভাবে কি?