যতনে রাখিলাম যাতনা পর্ব ৩৬
মম সাহা
বাহিরে সূর্যের আলো প্রখর। পাখির কিচিরমিচির শব্দ। চাঁদনীর গায়ে একদম সাদামাটা একটা থ্রি-পিস। কেউ দেখে বুঝার উপায় নেই যে চাঁদনীকে পাত্রপক্ষ দেখতে এসেছে এবং পাত্র তার সামনেই দাঁড়ানো। পাত্র চমৎকার হাস্যোজ্জ্বল। এসেই কথা বলতে চেয়েছে চাঁদনীর সাথে। তার পরিবার নিচে বসা। সে পাত্রীর সাথে আলাদা কথা বলবে। খোলামেলা প্রস্তাব দিয়েছে এটাই। পাত্রের প্রতি চাঁদনীর কোনো আকর্ষণ ছিলো না। একমাত্র বাবা-মায়ের আত্মিক শান্তির জন্যই সে পাত্রপক্ষের সামনে দাঁড়ালো। কিন্তু পাত্রের অকপটে এমন প্রস্তাবে সে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গিয়ে ছিলো।
“বলুন তো আকাশ কখন মন খারাপ করে?”
পাত্রের অদ্ভুত প্রশ্নে ভ্রু কুঁচকালো চাঁদনী, “জানি না।”
“যখন মানুষের মন খারাপ থাকে।”
“অদ্ভুত প্রশ্ন!” বিড়বিড় করে বলল চাঁদনী।
“বলুন তো এই পৃথিবীতে সবচেয়ে তেজস্বী কে?”
“কে? সূর্য?” সংশয় ভরা কণ্ঠে বলল চাঁদনী।
“না, নারী।”
“নারী?”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“হ্যাঁ। কারণ সূর্যের তেজ সহ্য করা যায় কিন্তু নারীর তেজ কেউ সহ্য করতে পারে না। এই পৃথিবীতে এমন কত গল্প রয়েছে! যেখানে নারীর তেজের কাছে হেরে গিয়েছে বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড।”
ছেলেটিকে বেশ অদ্ভুত লাগলো চাঁদনীর। মেয়ে দেখতে এসে কেউ এমন প্রশ্ন করে? তার জানা নেই।
ছেলেটি এবার জিজ্ঞেস করল, “আপনার প্রিয় শখ কী?”
নাম, ধাম না জিজ্ঞেস করে কেউ হবু বউয়ের শখ জানতে চায় তা আজ প্রথমই চাঁদনী দেখলো। সামনের ছেলেটির বয়স তেমন বেশি নয়। তারই বয়সী হবে হয়তো! কিন্তু আপাদমস্তক উদ্ভট মানুষ ছেলেটি। কখন, কী প্রশ্ন করে বসছে চাঁদনী বুঝতেই পারছে না।
“বললেন না আপনার প্রিয় শখ কী?”
“পাহাড় চড়া। আমার ইচ্ছে জীবনে পাহাড় দেখা, পাহাড় চড়ে বেড়ানো। ঘুরে ঘুরে জীবন কাটানো।”
“বাহ্! দারুণ শখ।”
চাঁদনী ভদ্রতার খাতিরে জিজ্ঞেস করল, “আপনার শখ কী?”
ছেলেটি মুচকি হাসলো। বাতাসের তালে তালে তার সুন্দর চুল গুলো মৃদু কাঁপছে। সে বেশ আগ্রহী স্বরে উত্তর দিলো, “চাঁদ দেখা।”
“এটাও কি শখ হয়?”
“হ্যাঁ। আমার এটাই শখ। আচ্ছা, সামনের বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটা কি আপনার প্রেমিক?”
আচমকা ছেলেটির প্রশ্ন বোধগম্য হলো না চাঁদনীর। সে চোখ ঘুরিয়ে সামনের বারান্দার দিকে তাকালো। তাকাতেই তার চক্ষু চড়কগাছ। সামনের বারান্দায় দাঁড়ানো মৃন্ময়। সে তাকিয়ে ছিলো এদিকটাতেই। চাঁদনী তাকাতেই সে মাথা নামিয়ে নিজের ঘরের ভেতর চলে গেলো। দরজাটা আটকে দিলো এতটা জোরে যে সেই শব্দ এসে পৌঁছালো এই বারান্দা অব্দি।
চাঁদনী তপ্ত শ্বাস ফেলল। মৃন্ময়ের শূন্য বারান্দা থেকে চোখ ঘুরিয়ে ছেলেটির দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়লো, “আপনার কেন মনে হলো ঐ ছেলেটি আমার প্রেমিক?”
ছেলেটি মোটেও ভড়কালো না। বেশ গা-ছাড়া গোছে জবাব দিল, “যেভাবে আমাদের দিকে তাকিয়ে ছিলো মনে হচ্ছিলো গিলে খাবে। একটি ছেলে কখন এভাবে তাকায় তা বুঝতে কি আর সময় লাগে না-কি?”
চাঁদনী মাথা নাড়ালো, “না, ও আমার প্রেমিক নয়।”
“আচ্ছা। তাহলে হয়তো আপনাকে পছন্দ করতো।”
চাঁদনী এবারও অবাক হয়। লোকটা বড়ো চালাক। মানুষ দেখেই বুঝে যেতে পারে যেন সবটা।
চাঁদনীর নীরবতার ভেতরের হ্যাঁ সূচক উত্তরটি ধরে ফেলল বুদ্ধিদীপ্ত ছেলেটি। হাসলো গা দুলিয়ে। কী চঞ্চল হাসি! শব্দ করে হাসছে।
চাঁদনী সেই হাসির দিকে তাকালো। চোখ সরিয়ে ফেলার কথা হলেও সে চোখ সরালো না। কিছুটা লাজ ভেঙে, সংশয় ভেঙে তাকিয়ে থাকল। পুরুষ মানুষের চঞ্চল হাসি এতটা সুন্দর হয় তা কখনো সে জানতো না। ছেলেটির হাসি দেখে জানলো। হাসি কেবল নারীকে মানায় কথাটি একেবারে ভুল প্রমাণ করে দিয়ে সবচেয়ে সুন্দরতম হাসিটি যেন হাসছে ছেলেটা।
“হাসছেন কেন?” প্রশ্ন করে উত্তরের আশাতেই তাকিয়ে রইল চাঁদনী। ছেলেটি হাসি থামালো। এই এতক্ষণে একবারও ছেলেটি চাঁদনীর চোখে চোখ রাখেনি। তবে এবার রাখলো। স্পষ্ট, চতুর স্বরে বলল, “এমনিই। আমার হাসতে ভালো লাগে। তা আপনি কি বিয়েতে রাজি?”
চাঁদনীর ভেতর কোনো ছলচাতুরী নেই। মিথ্যে বলার অভিপ্রায় নেই। অকপটে সে স্বচ্ছ সত্যটুকু বলল, “না।”
“জানতাম।”
“জানতেন? কীভাবে?”
“যে পাহাড় চড়তে চায় তাকে কী সংসারের শেকড় আটকাতে পারে বলুন? সংসার যে বন্ধনের জায়গা। সে পিছুটান। আটকে ফেলবে আপনাকে। আর একবার আটকে গেলে শখের পাহাড় আর ছুঁয়ে দেখা হবে না।”
চাঁদনী বিমুগ্ধ হয়ে কথা গুলো শুনলো যেন। এভাবে কেউ বলতে পারে? এত সুন্দর করে?
চাঁদনীর উত্তর কিংবা প্রশ্ন কিছুরই আশা করল না ছেলেটি। নিজেই বলল, “আপনি পাহাড় দেখুন চন্দ্র, ঘুরে আসুন বিশ্বব্রহ্মাণ্ড। কোনো মেয়ে পাখির মতন উড়লে আমার ভীষণ ভালো লাগে জানেন? নারী যে ডানা মেলা গাঙ্গচিল। কিন্তু সংসার তার ডানা কেটে দেয় বলে এরা আহত হয়েই চিরজীবন বন্দী হয় সংসারে। সেই নিয়ম অমান্য করে দু-একটি চাঁদ নাহয় আকাশ ঘুরুক, পাহাড় চড়ুক, সমুদ্র সাতরে বেড়াক। আমি শুভকামনা জানাতে পেরেই খুশি থাকবো।”
চাঁদনী মুগ্ধতায় নিশ্চুপ হয়ে রইল। বাবার পর দ্বিতীয় কোনো পুরুষ বোধহয় চাঁদনীর উড়তে চাওয়ার স্বপ্নকে এমন বুক ফুলিয়ে উৎসাহ দিয়েছে! একটি অচেনা-অজানা ছেলে কি-না চাঁদনীকে উড়ে বেড়াতে বলছে। যে সমাজের পুরুষমানুষের জন্য চাঁদনী একবার নয় পর পর দু’বার কত লাঞ্ছিত হয়েছে, সেই সমাজেরই আরেকটি পুরুষ কী যত্নে তার স্বপ্নকে বড়ো করে দেখলো! আজকের দিনটি বোধহয় বিশেষ সুন্দর হয়ে উঠল চাঁদনীর কাছে।
“বিয়ে করবেন না বলে কথাও বলা বারণ কি? সে যাই হোক, নামটিও জিজ্ঞেস করলেন না আমার। আমার নাম শৈল। অর্থ জানেন তো?”
চাঁদনী চমকালো। অস্ফুটস্বরে বলল, “শৈল… অর্থ পাহাড়।”
ছেলেটি বলল, “হ্যাঁ, আমি পাহাড়। আপনার স্বপ্নের পাহাড় নই কিন্তু শখের পাহাড়।” কথা থামিয়ে খানিক চুপ করে রইল। তারপর উচ্চস্বরে হেসে বলল,
“হা হা হা… মজা করলাম।”
কথা শেষ করে ছেলেটি বিদায় জানালো। চাঁদনী তখনো অবাক। এমন অদ্ভুত পুরুষমানুষ তার ভাবনায় ঘোর লাগিয়ে দিয়েছে।
ছেলেটি বের হতে নিয়েও বারান্দার দরজায় কী ভেবে দাঁড়ালো। ঘাড় ঘুরিয়ে তাকিয়ে বলল, “কবে পাহাড়ে যাবেন বলবেন অবশ্যই। আমি বিদায় জানাতে আসবো। স্বপ্ন সুন্দর হয়- পূরণে। আমি চাই আপনি আপনার স্বপ্নকে উপভোগ করুন, পূরণ করুন।”
এবার আর চাঁদনী মুখ ভার করে রাখলো না। হাসলো ভীষণ মিষ্টি করে। ঘাড় কাঁত করে বলল, “আপনারও চাঁদ দেখার শখ পূরণ হোক, প্রার্থনা করলাম।”
“সে তো হয়ে গিয়েছে পূরণ। আপনাকে তো দেখে নিলাম, চাঁদ।”
ছেলেটি বেরিয়ে গেলো আর এক সেকেন্ড অপেক্ষা না করেই। চাঁদনীর গা কেঁপে উঠল শিরশির করে। এতক্ষণে সে বুঝতে পারল ছেলেটি কোন চাঁদ দেখার শখের কথা বলেছে। যদিও বত্রিশ বছরের জীবনটায় এমন কথাগুলো তার শিহরণ জাগানোর মতন তীব্র নয় তবুও ছেলেটির সুন্দর মুখটায় আর বলার ভঙ্গিতে শিহরণ জাগালো। তবে তার চেয়ে বেশি তীব্র হলো তার পাহাড় দেখার শখ। স্বপ্ন পূরণ করার তাগিদটা ভেতর ভেতর শক্ত হলো। একটু হয়তো ঢিলে হয়েছিলো কিন্তু আজ ছেলেটির কথায় তা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছে। এই এক জীবনে স্বপ্ন অপূরণীয় রেখে সে মরবে না। আর নয় পিছুডাক। এবার ছুটতে হবে। স্বপ্নের শেষ অব্দি ছুঁতে হবে।
প্রচন্ড ঝিম ধরা গরম। চিত্রার জামাটা ঘামে ভিজে লেপ্টে আছে পিঠে। তার পাশেই টুইংকেল ও বনফুল। পেছনে দাঁড়ানো বাহার ভাই।
গরমে অবস্থা বেগতিক দেখে মানুষটা তাড়া দিলেন,
“হলো? কী এক ফুল গাছ কিনবে তাতে এতক্ষণ লাগে?”
চিত্রা ফুলের ভ্যানগাড়িটির উপর প্রায় উপুড় হয়ে গাছ খুঁজছে হন্যে হয়ে। মানুষটার তাড়ায় চোখ-মুখ প্রায় কুঁচকেই ফেলেছে। গাছ খুঁজতে খুঁজতে বিরক্তির সুরে বলল, “চুপ করে দাঁড়ান তো। পাচ্ছি না দেখছেন তো।”
“না পেলে বলে রাখো উনাকে। উনি কাল নিয়ে আসবে। কোন ফুলের গাছ চাচ্ছো?”
চিত্রা উত্তর দেওয়ার আগে উত্তর দিলো টুইংকেল, “রঙ্গন ফুলের।”
বাহার ভাইয়ের কপালে তিন ভাঁজ পড়লো এবার। চিত্রার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়লেন, “রঙ্গন ফুলের গাছ না তোমার ছাঁদে আছে? আবার কীসের জন্য?”
চিত্রা এবার ভ্যান থেকে উঠল। সোজা হয়ে দাঁড়ালো পরাজিত সৈনিকের মতন। ফুলগাছ আনা লোকটির দিকে তাকিয়ে ব্যর্থ স্বরে বলল, “মামা, গাছ তো নেই। কাল দু’টো আনবেন।”
ফুলের ভ্যান আনা লোকটি মাথা নাড়িয়ে বললেন, “অহন তো পাওয়া যায় না আম্মা সেই চারা। তাও খুঁজমু। পাইলে আপনেরে খবর দিমু। নাম্বারটা দিয়া যান।”
চিত্রা ঘাড় কাঁত করে নাম্বার দিতে উদ্যত হয় কিন্তু থামিয়ে দেন বাহার ভাই। চোখ রাঙান চিত্রাকে সবার অগোচরে। আগ বাড়িয়ে নিজেই ভ্যান চালককে বলেন, “আমি এই পথেই রোজ যাই। আপনি এনে রাখলে আমাকে দিয়ে দিয়েন।”
ভ্যান চালক সম্মতি দিয়ে ভ্যানটা নিয়ে এগিয়ে যান। পর পর শ্বাস ফেলে তিনটি মেয়েই। বাহার ভাই এবার তাড়া দেন, “চলো বাড়ি। গরম কি গায়ে লাগে না? আর যে ফুল আছে অলরেডি সেটা আবার নেওয়ার কী দরকার?”
চিত্রা মানুষটার দিকে না তাকিয়েই বলল, “আপনার বারান্দায় আর ছাদে লাগানোর জন্য খুঁজছিলাম। বাহার ভাই থাকবে আর রঙ্গন ফুল সেখানে থাকবে না বিষয়টা আমার হজম হয় না।”
চিত্রার কথায় শ্বাস ফেললেন বাহার ভাই। মেয়েটার হুটহাট মাথায় কী ভূত চাপে কে জানে!
ওদের দু’জনের কথোপকথনে তৃতীয় ব্যক্তি হয়ে প্রবেশ করল টুইংকেল। বলল,
“আমাকেও কি একটা রঙ্গন ফুলের গাছ দিবে, চিত্রা? আমি আমার সাথে নিয়ে যাবো।”
টুইংকেলের মামার বাড়ির আবদারে চিত্রার গায়ে বিরক্তি মাখালো যেন। আড়চোখে সে তাকালো একবার বাহার ভাইয়ের দিকে। লোকটা তাকানো টুইংকেলের মুখের দিকে। চিত্রার মনে হলো রাস্তা থেকে একটা ইট তুলে মাথা ফাটিয়ে ফেলতে বাহার ভাইয়ের। হা করে মেয়ে দেখা কবে থেকে শিখলো লোকটা কে জানে? বিদেশিনী বলেই এত আহ্লাদ করতে হবে? মনে হচ্ছে যেন কোন রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী মেয়েটা। যত্তসব ঢং!
চিত্রার বিরক্তি বাড়লেও সেটা প্রকাশ করল না। জোর পূর্বক হেসে বলল,
“তোমাদের বরফের দেশে রঙ্গন ফুল কি বাঁচবে?”
“তাও তো কথা! সার্চ দিয়ে দেখবো পরে তাহলে।”
“রঙ্গন ফুল অনেক যত্নে রাখতে হবে। ইন্ডোর প্ল্যান্ট হিসেবে রাখতে হবে, গরম ঘর লাগবে, যত্ন লাগবে, তাপমাত্রা খেয়াল রাখতে হবে… অনেক ঝামেলা মিস. টুইংকেল।”
টুইংকেল আশাহত হলো বাহার ভাইয়ের কথায়। ছোটো স্বরে বলল, “ওহ্ থাক তাহলে। রঙ্গন ফুলের গাছটা নষ্ট হোক তা চাই না।”
কথা শেষ করেই হাঁটতে শুরু করল মেয়েটা। পেছন পেছন হাঁটতে লাগলো বনফুলও। চিত্রা মুখ ভেংচালো। বিরবির করে বলল,
“বেশি বাড়াবাড়ি করে ও। সবকিছুই ওর চাই যেন। চিত্রা হতে আসছে।”
বাহার ভাই ঠিক পেছনে থাকায় স্পষ্ট শুনলেন কথাটা। তিনিও চাপা স্বরে বললেন, “ও চিত্রা কেন হতে আসবে? রঙ্গন ফুল গাছ পৃথিবীতে অসংখ্য মানুষ কি কিনছে না? বোকার মতন কথা বলছো!”
চিত্রা তাজ্জব বনে গেলো। সোজাসুজি তাকাল লোকটার দিকে। মানুষটার কী হলো? টুইংকেলের নামে কিছু বলাই যাচ্ছে না!
চিত্রা রেগে গেলো, “আপনাকে তো বলিনি! আপনার গায়ে লাগছে কেন? দরদ বেশি দেখাচ্ছেন না?”
বাহার ভাই পকেটে হাত গুঁজলেন। চিত্রার দিকে ত্র লম্বা শরীরটা একটু নুইয়ে ফিসফিসিয়ে বললেন,
“এই পৃথিবীতে একজনের প্রতিই আমার সমস্ত দরদ, মায়া, মমতা, স্নেহ। এই কথাটি ধ্রুব সত্য। এর সাথে ভুলবশত অন্য কাউকে জড়িও না। ভালোবাসার অপমান হয়। ভালোবাসা পবিত্র জিনিস। প্রেমিকার কথার ধার তাকে অপমানিত করুক চাই না।”
যতনে রাখিলাম যাতনা পর্ব ৩৫
বাহার ভাইয়ের কাঠ কাঠ উত্তরে অভিমান হলো চিত্রার। অনুরাগ জর্জরিত কণ্ঠে বলল,
“আজকাল ওর জন্য আপনি গান গাইছেন। আর আমি বললেই দোষ?”
বাহার ভাই হাসলেন। চিত্রার মাথায় আলতো হাত বুলালেন, “পৃথিবীতে তোমার জানার বাহিরেও অনেক কিছু থাকে। কিন্তু সবকিছু কেবল প্রেম থেকেই হবে তেমনটা ভেবো না। টুইংকেলের যত্ন নাও একটু। ওর যত্নের প্রয়োজন।”
বাহার ভাইয়ের কথায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় হলো চিত্রা। মানুষটা তাকে আরেকটি মেয়ের যত্ন নিতে বলছেন? কীভাবে বলছেন? চিত্রার হৃদয় এমন কথায় ভাঙে তা কি লোকটা বুঝছে না?