এলিজা পর্ব ১৮
Dayna
দিন ফুরিয়ে রাত হয়ে যায়।
ফরিদ :শায়ান কোথায়?
জবেদা বললো,সকালে বেড়িয়েছে তারপর আর ঘরে আসেনি।
শান্তা ঘাপটি মেরে বসে আছে। সে জানে তার ভাই কোথায়।
,,,, নদীর তীরে বসে আছে শায়ান। সন্ধ্যা হয়ে আসছে।সারাদিন বাড়ি ফেরেনি খায়নি।
তখন এলিজা একটা কোন কথা বললো না বুকের ভেতরটা জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে।
নিশ্চুপ চারপাশ, শান্ত নদী, সন্ধ্যা মেলায় যেন ওরা আমাকে নিয়ে মজা করছে ,হাসছে ওরা।আমি বুঝতে পারছি।
হাত দুটো মাথার নিচে দিয়ে, ঘাসের উপর শুয়ে পরে।
একা একা ভাঙা হৃদয় নিয়ে বলতে থাকে,
বিথাতা,, কি অন্যায় করেছিলাম, কিসের জন্য আমাকে পুড়িয়ে দিলে এই বিষা’ক্ত ভালোবাসায়।উত্তর আছে কি তোমার। হা বলো কোন উত্তর আছে,।আমি জানি কোন উত্তর নেই কোন উত্তর নেই।
মনে হচ্ছে গোটা পৃথিবী টা আমাকে দেখে হাসছে, কারন আমি যে ব্যার্থ।
হে বিধাতা, বলে দাও আমাকে, যাকে আমি ভালোবাসি তাকে কি করে ঘৃনা করবো? কিভাবে!পারবো না আমি তাকে ঘৃনা করতে।
আকাশের দিকে তাকিয়ে ভারি একটা দ্বির্ঘশ্বাস ফেললো ।চোখের দু পাশ থেকে অঝরে পানি পরছে।আমার কেউ নেই কেউ না, বড্ড একা তাই,আজকে আমার ও গাইতে ইচ্ছা করছে–
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
নিথুয়া পাথারে নেমেছি বন্ধুরে
,, ধরো বন্ধু আমার কেহো নাই, ধরো বন্ধু আমার কেহো নাই ও বন্ধু ধরো বন্ধু আমার কেহো নাই ,,
অল্প বয়সে পিরিতি করিয়া ,, হয়ে গেলো জীবনের ও শেষ,,
হয়ে গেলো জীবনের ও শেষ ও বন্ধু হয়ে গেলো জীবনের ও শেষ।
নিথুয়া পাথারে নেমেছি বন্ধু রে..ধরো বন্ধু আমার কেউ নাই।
চিকোনো থুতিখানী পরিতে না জানি, না জানি বান্দিতে কেশ , না জানি বান্দিতে কেশ,ও বন্ধু না জানি বান্দিতে কেশ।**
চারপাশ যেন নিস্তব্ধ।
ভালোবাসার মায়ায়, আমাকে আজ মেরে ফেলেছে,।আকাশের দিকে তাকিয়ে।
আমার মত কপাল যেন কোন পুরুষের না হয়।
পরদিন সকাল বেলা—-
রমজান : অপূর্ব শহর থেকে তোমার মা চিঠি পাঠিয়েছে!
কে দিলো?
একজন লোক এসে দিয়ে গেছে।
() অপূর্ব :বাবা অসুস্থ,,
সূর্য:কি বলিস আংকেল এর হঠাৎ কি হলো?
জানি না আজকেই ফিরতে হবে।
রমজান : কি করে যাবে আজকে যে ঢাকায় যাওয়ার জন্য সমস্ত গাড়ি বন্ধ। আর তোমাদের গাড়ি তো এখানে নেই,,
সূর্য: একটা উপায় আছে ,
কি উপায়?
দীগন্ত নদী তে টলার আছে আমরা টলার করে যেতে পারি।
রমজান:বাবা দীগন্ত নদী তো সুবিধার নয়। জন্ত জানো,,য়ার থাকে!
অপূর্ব :মামা নদী পথে কোন জানো,য়ার আক্রমন করবে না!
রমজান:দেখো এলিজা-যদি রাজি হয় আমার কোন আপত্তি নেই।
এলিজা বারান্দায় এক কোনে দাঁড়িয়ে আছে। অপূর্ব পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বললো,মন খারাপ করে আছো, তোমার আর শায়ান কে নিয়ে আমার কোন অভিযোগ নেই।তোমার মনের কোন এক কোনে ও যদি শায়ান এর জন্য মায়া থেকে থাকে তাহলে চলে যাও। ভালোবাসা হয় মুক্ত পাখির মত।যদি তুমি ফিরে এসো তবেই তুমি আমার।
এলিজা আঝাপটা — দিয়ে জড়িয়ে ধরে অপূর্ব কে।
কাপা কন্ঠে বললো,এমন কথা বলবেন না,। আমার পৃথিবী আপনি। আপনি যে আমার জান্নাত।আমার মনে শুধু আপনার ই জায়গা।
অপূর্ব মৃদু হেসে, এলিজার কপালে চুমু খায়।
অপূর্ব :আমি চাই মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এলিজা এমন থাকুক। এলিজার এই রুপ কোনদিন যেন পাল্টে না যায়।বলেই বুকে জড়িয়ে নেয় এলিজাকে।
অপূর্ব: আজকে যে আমাদের যেতে হবে।
এলিজা :কোথায়?
অপূর্ব :ঢাকায়,মায়ের চিঠি এসেছে, বাবা অসুস্থ ।
এলিজা:কি বলছেন বাবা অসুস্থ।
কিন্তু সমস্ত গাড়ি বন্ধ কি করে যাবো।,
অপূর্ব:দিগন্ত নদী, টলার করে।
এলিজা অপূর্বর দিকে কে আ’হত চোখে তাকিয়ে বললো,আমি যাবো না, নদীটা ঠিক নয়। ভয়ানক সবাই বলে!
কিছু হবে না যেতে হবেই।আর তোমার থেকে ভয়া’নক কেউ আছে নাকি। তুমি সবথেকে বেশি ভয়ানক।
এলিজা মৃদু সুরে হাসলো।
টলার ভারা করে রমজান। এলিজা সূর্য অপূর্ব,সবার কাছ থেকে বিদায় নেয়।
এলিজা পাখিকে আদুরে গলায় বলল,তুই একদম শুকিয়ে গেছিস? আমি আবার এসে তোকে যেন এভাবে না দেখি!!
পাখি বললো, তুমি ও নিজের খেয়াল রেখো।আর আমি নিজেকে পরিবর্তন করে নেবো। আবার এসে তুমি আমায় ভিন্ন রকম দেখবে।
একটা ভ্যানে করে তিনজন বেড়িয়ে পরে দীগন্ত নদীর তীরের উদ্দেশ্যে। চারদিক
অন্ধকার।বিন্দু বিন্দু চাঁদের আলো। আকাশে মেঘের দর্পন থাকায় চাঁদনীর আলো পড়ছে না।
সন্ধ্যা ঠিক – ৭ টা নাগাদ।
অপূর্ব,, এদিক ওদিক দেখছে। চারদিক পরোখ করছে,।অপূর্ব পূর্ব দিকের ঝোপঝাড় দিকে লক্ষ্য করলে দেখলো। অপূর্ব যা দেখলো তাতে তার মাথা ঘুরে যায়।
শ্যামলী ঝোপঝাড় থেকে দৌড়ে কোথায় যাচ্ছে।অনেক ক্ষন পরোক্ষ করলো।হ্যা ওটা তো শ্যামলি।
অপূর্ব কিছুক্ষন চোখ বুঝে ভাবতে থাকে।, হ্যালোসোলেশন হচ্ছে। কিছুক্ষণ পর চোখ মেলে দেখে ঘাটের কাছে চলে আসছে। অপূর্ব ভাবলো,উফ, বাবার চিন্তায় মাথা শেষ। তারমানে ভুল দেখছিলাম।
টলারে এলিজা উঠে যায়, সূর্য উঠে যায়।
অপূর্ব উঠবে ঠিক তখনই
পেছন থেকে ঝাপটা মেরে কেউ হাত ধরে ফেলে।
অপূর্ব পেছন ঘুরতেই দেখে, মৌলবী সাহেব।
অপূর্বর চোখ গুলো ছানাবড়া হয়ে যায়। মৌলবী সাহেব আপনি?
আমি গুন্জন। মৌলভি কে ওরা মেরে ফেলেছে।
অপূর্ব: আপনি কে আর হাত ধরে রাখছেন কেন, ?আর এটা বলুন, ?মৌলবী কে’কে মেরেছে ?
গুঞ্জন বললো,
সব সত্যি জানতে চাও তো চলো, আমার সাথে।
সূর্য গুঞ্জন এর হাত সরিয়ে বললো,
দূরে সরে জান , যাওয়ার পথে বাধা দিতে নাই জানেন না,
অপূর্ব : মৌলবী সাহেব এর মৃত্যুর রহস্য জানতে পারার এটাই সুযোগ।,
তোর বাবা বড় না মৌলবী? সূর্য অপূর্ব কে জোড় করে টলারে উঠিয়ে নিয়ে চলে যায়।
টলার ছেড়ে দিলে গুন্জন বলতে থাকে জোড় গলায়,, ঘোর বিপদ ঘোর বিপদ।
কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে পৌঁছে যায় ঢাকায়।
অপূর্ব বাড়ি ফিরেই জাহাঙ্গীর কে খুঁজলো।
অপূর্ব :বাবা কোথায়
জয়া কোন উত্তর,দিলো না ।
বাবা বাবা ডাকতে থাকে অপূর্ব।
কোথাও সাড়া শব্দ নেই।
মনোরা-: বড় সাহেব ফ্যাক্টরিতে গেছেন।
কিহহহ তবে যে বললো অসুস্থ। অপূর্ব রাগান্বিত ভঙ্গিতে এক লাথি মারলো সোফাতে। দূরে সর সোফাটা।
অপূর্ব:তারমানে আমাকে মিথ্যা বলা হয়েছে।
এলিজা জয়ার পায়ে সালাম করে।
রান্না ঘরে মনোরা রান্না করছে।
এলিজা প্রথমবার রান্না ঘরে।
মনোরা :বউমনি,, আপনি এইহানে কে আপনি কন কি লাগবো আমি বানাই দেই।,,
এলিজা মৃদু হেসে বললো,
আমি আজ সবার জন্য রান্না করবো। আপনি সব কেটে ধুয়ে দিন।
মনোরা অনেক অনেক প্রশ্ন করতে থাকে এলিজাকে।কিভাবে পরিচয় বিয়ে, ব্লা ব্লা,
এলিজা সব কিছুর উত্তর দেয় ।
,, মনোরা : আঁচ্ছা বউমনি আপনার বাবার বাড়ি যেন কোথায়?
তিলকনগর-
মনোরা : ও আচ্ছা এই ব্যাপার ।বড় বাবুরা ও আগে তো তিলকনগর।থাকতো,, ১৫ বছর হয় ঢাকা চইলা আইছে।
ল্যান্থলাইনে ফোনের আওয়াজ।ফোনটা অপূর্ব রিসিভ করে বললো,
অপূর্ব বলছি ,
এলিজা পর্ব ১৭
ওপাশ থেকে একজন কনস্টেবল বললো, স্যার ডিসি সাহেব এর ছেলে সৈকত ,, কে কারা যেন খু,,ন করে ।
তার শরীর থেকে হার্ট বের করে তার লা’শটা মমি করে ,, পাঠিয়েছে।
সাথে রক্ত দিয়ে একটা চিরকুট পাঠিয়েছে,, আপনি তারাতাড়ি আসুন….