ভিলেন ক্যান বি লাভার পর্ব ৬৩ (৪)
মিথুবুড়ি
‘সোনালি দ্যুতি আশ্লেষে মুছে দিয়েছে আকাশের ঘন কালো মেঘ। আকাশ ভেঙে পড়া বৃষ্টির নিষ্পত্তি ঘটেছে অনেক আগেই। বর্ষার শীতল আদরে ধুয়েমুছে গেছে শহরের ধূসর ছাপ। আকাশে এখন মেঘের উপস্থিতি তেমন নেই।রোদের উপ্ত তাপে বোঝাও মুশকিল, কিছুক্ষণ আগেও শৈত্যপ্রবাহে লন্ডভন্ড হচ্ছিল প্রকৃতির প্রফুল্লতা। তবে এখন চারিদিক শান্ত সৌম্য, নীরব, পরিতৃপ্ত।
‘কাকভেজা অবস্থায় ম্যানশনে ফিরল এই নবদম্পতি। বিয়ের সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে তারা বেরিয়েছিল এক লং ড্রাইভে। মেঘমেদুর দিনে, ভিজে শহরের প্রতিটি কোণা ঘুরে তারা শুরু করল নতুন জীবনের প্রথম অধ্যায়। ম্যানশনের দোরগোড়ায় পৌঁছেই, একে অপরের চোখে একফালি হাসি৷ তারপর আর কোনো দেরি নয়। দু’জনে একসঙ্গে ঢুকে পড়ল বাথরুমে লম্বা হট শাওয়ারের জন্য।
‘এলিজাবেথের নরম শরীরে ঢিলে সাদা বাথরোব, হাঁটুতে মুখ গুঁজে বসে সে ডুবে ছিল নিজের ভাবনার অতল গহ্বরে। এমন সময় টাওয়াল দিয়ে চুল মুছতে মুছতে বাথরুম থেকে বেরিয়ে এলো রিচার্ড। হঠাৎ থমকে দাঁড়ায় সে। চোখ আটকে যায় এক অদ্ভুত মোহে৷ তার প্রিয় নারীর ভেজা লাল কেশের ফাঁকে ফাঁকে জলকণাগুলো টুপটাপ করে ঝরে পড়ছে। সেই দৃশ্য দেখে রিচার্ডের ভিতরে বয়ে যায় এক প্রশান্তির কোমল স্রোত। এ তো সেই সকাল, যার জন্য অপেক্ষা ছিল দীর্ঘ।এমন প্রতিটি সকালে সে চেয়েছিল এলিজাবেথকে পাশে পেতে। এই মেয়েটির প্রেমেই তো মত্ত হয়েছিল সে। এমনভাবে হারিয়ে গিয়েছিল যে ভুলেই গিয়েছিল নিজের কঠিন আত্মপ্রতিমা।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
‘এই যে লালিত্যে ভরা ওষ্ঠ, ললিত কপোল, ডাগরডোগর চোখ, গোলাপ বর্ণের পেলব চেহারা,সূর্যের তেজস্ক্রিয় রশ্মির ন্যায় চোখ ধাধানো কুন্তলরাশি সবটা জুড়েই শুধু মায়া আর মায়া। এ যেন মায়াময় ইন্দ্রজাল। মোহাচ্ছন্ন হাসিতে উদ্ভাসিত হলো রিচার্ডের ঠৌঁটের কোণ। শুকনো ঢোক গিলল সে। এই মুহুর্তে নিজেকে অনুভব করল খুবই দূর্বল। দ্রবীভূত হতে শুরু করেছে তার ইস্পাতের ন্যায় ধারালো সংযম। দুনির্বার এক আকর্ষণে নৈঃশব্দ্যে পা ফেলে এগিয়ে যায় রিচার্ড৷ পিছন থেকে রুশরমণীর মসৃণ কোমড়ের মোহনীয় বাঁক দু’হাতে জড়িয়ে,উন্মুক্ত পৃষ্ঠদেশে ঠৌঁট ছোঁয়াতেই শিউরে ওঠে সে। প্রেমিকের স্পর্শে কাঁপতে থাকে প্রিয়ার দেহবল্লরী। প্রিয়র প্রেম নিবেদন পত্র অশিষ্ট প্রত্যাখ্যান জানিয়ে নড়েচড়ে বসল নিষ্টুর প্রিয়া। রিচার্ডের কপোলে ভাঁজ পড়ে, কুঞ্চিত হয় ভ্রু। সে সন্দিহান চোখে এলিজাবেথের মুখাবয়ব নিরক্ষণ, নিরীক্ষণ করে ডগডগে পায়ে বেরিয়ে গেল।
‘এলিজাবেথ থমথমে মুখে বসে আছে। ভেতরে, ভেতরে শংকিত, রিচার্ড রাগ করল কি-না তা ভেবে। অস্বস্তিতে গুম হয়ে যায় মন। সে তো তেমনটা মিন করেনি। হঠাৎ স্পর্শে চমকে উঠেছিল, তা-ছাড়া তেমন জটিল কিছুই না। ভাবনার মধ্যেই ফিরে এল রিচার্ড। হাতে হট ওয়াটার ব্যাগ৷ সহসা কোনো কথা ছাড়া রিচার্ড ওয়াটার ব্যাগ আলগোছে চেপে ধরল এলিজাবেথের তলপেটে। বিস্ময়ে বাকশক্তি রহিত এলিজাবেথ। বিমূর্ত মূর্তির মতো বসে থাকে সে। সচকিত চোখে দেখছে রিচার্ডের নিপুণ হাতের কান্ড। এলিজাবেথ ততধিক বিস্ময় নিয়ে বলল,
“কি করছেন?”
‘রিচার্ড মাথা তুলে চোখে চোখ রাখল। চোখেমুখে সেই চিরচেনা গাম্ভীর্য। গম্ভীর গলায় প্রশ্নের পরিবর্তে প্রশ্ন ছুড়ে দিল,
“প্যাড নিয়েছ?”
‘চমকে ওঠে এলিজাবেথ। বিস্ময়ে তার ঠোঁট খানিকটা ফাঁকা হয়ে যায়। রিচার্ড ততক্ষণে আবার নিজের কাজে মনোযোগ দিয়েছে। সে হট ওয়াটার ব্যাগটা হাতে নিয়ে এলিজাবেথের পেছনে ঘেঁষে বসে। এক হাতে ব্যাগটা চেপে ধরে মেরুদণ্ড বরাবর আর অন্য হাতে সুনিপুণ ভঙ্গিতে কোমরে মালিশ করে দেয়। আঙুলের টান নিরবচ্ছিন্ন, নিখুঁত ছন্দে চলে অবিশ্রাম। এলিজাবেথ বিস্মিত হয় আরও, আবেগে আপ্লূত হয়। তার হৃদয়ের কুঞ্জবনে আবেগের কাঁপন তোলে এই অপ্রত্যাশিত যত্ন। এই মানুষটা—নাক উঁচু, অহংকারী, হৃদয়হীন মনে হতো যাকে;সে কী সহজেই ভেঙে পড়ে স্ত্রীর প্রয়োজনে। তখন সে আর কোনো গ্যাংস্টার বস নয়, হয়ে ওঠে নিখাদ এক আদর্শ স্বামী। তার হাতের প্রতিটি স্পর্শে মিশে থাকে স্নেহ, আস্থা, আর একরাশ ভরসা।
‘সব বুঝেও এলিজাবেথ চুপ থাকে। তবু চোখে ফুটে ওঠে শান্ত, মিটিমিটি হাসি। তার ভালোই লাগে এই পুরুষটার যত্ন।
“ফিলিং বেটার নাও?”
‘রিচার্ড ধীরে জানতে চায়। গলায় তখনও এক টুকরো সংকোচ। দীর্ঘক্ষণ পর এলিজাবেথ মুখ খোলে, ঠোঁটে এক চিলতে হাসি রেখে বলল,
“আপনাকে কে বলল, আই’ম অন মাই পিরিয়ড?”
‘রিচার্ডের চিবুক রূঢ় হলো। কাঁধের ওপর ঝুঁকে ছদ্ম রাগ নিয়ে বলল,
“তখন সরে গেলে যে?”
‘এলিজাবেথ বাচ্চাদের মতো দন্ত বিকশিত করে হাসল। শীর্ণ দু’হাতে মুখ চেপে হাসতে হাসতে বলল,
“কাতুকুতু লাগছিল, তাই।”
‘এলিজাবেথ হঠাৎ নিজের শরীর শূন্যে অনুভব করল। মাথাটা আঁচড়ে গিয়ে পড়ল একটি শক্ত, বিশ্বস্ত বৃক্ষপটে। নিজেকে আবিষ্কার করল রিচার্ডের কোলে। অকস্মাৎ, রিচার্ডের এহেন অনাহূত কান্ড থতমত খেয়ে গেল এলিজাবেথ। মাথাটা ঝিমঝিম করছে। রিচার্ড ওর চিবুক চেপে পেলব মুখখানা ওপরে তুলে গাঢ় কণ্ঠে হুশিয়ারি বার্তা এনে বলল,
“আমার ধৈর্য নিয়ে একদম খেলবে না,আই ওয়ার্ন ইউ।”
‘শুকনো ঢোক গিলা কিংবা ভয়ের বিপরীতে রহস্যময় হাসি ঝলক খেলো এলিজাবেথের চেহারায়। দগদগ করে হেসে দু’হাতে আশ্লেষে পেঁচিয়ে ধরল রিচার্ডের গলা। ঘাড় ওপরে তুলে অবিশ্রাম দু’পাশে মাথা দুলিয়ে পিটপিট করে চেয়ে বলল,
“চলুন আজ আমরা ইউনিক কিছু করি।”
‘রিচার্ডের চোখ মুহূর্তেই সতর্ক হয়ে উঠল। সন্দেহভরা দৃষ্টিতে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে লাগল এলিজাবেথকে। এই চাতুর্যের রহস্য কী? কোথায় লুকিয়ে আছে কাঁটার ফাঁদ? গ্যাংস্টার বস হয়ত অনেক কিছু বোঝে, অনেক কিছু পড়ে ফেলে চোখে দেখে কিন্তু এই নিষ্পাপ মুখশ্রীর আড়ালে যে এমন ভয়ংকর চাল থাকতে পারে, সেটা সে এখনও মানতে পারে না। এই মেয়ের ভেতরের ছলনার ছায়া সে চেনে, তবুও প্রতিবারই নতুনভাবে ধরা খায়। কারণ এলিজাবেথের মতিগতি আগুনের মতো। কখন জ্বলে ওঠে, কখন নিভে যায়, কে জানে! রিচার্ড ভুরু কুঁচকে হালকা অভিমানী স্বরে বলল,
“ইউনিক? রাতের বাসর দিনে হতে চলেছে, তুমি আর কি চাও রেড?”
‘রকেটের গতিতে জবাব ছুড়ে দেয় এলিজাবেথ,”বাসরের অল্টারনেটিভ কিছু।”
“ফালতু কথা বাদ দিয়ে কাছে আসো রেড, বাসরের কোনো বিকল্প হয় না।” বলে রিচার্ড এগিয়ে এলিজাবেথকে টানতে গেল। কিন্তু ধরা দেয় না এলিজাবেথ। দু’হাত ঠেলে দেয় সামনে, যেন এক প্রাচীর তুলে দেয় নিজেদের মাঝখানে। শক্ত গলায় বলল,
“শাট আপ মিস্টার কায়নাত। আমি আগেই বলেছি, আজ আমরা শুধু গল্প করব। And you have to keep my words.”
‘রিচার্ড প্রলম্বিত শ্বাস ফেলল। তার কণ্ঠে হতাশার রেশ,
“আচ্ছা, গল্প শুরু করল।”
‘এলিজাবেথ রিচার্ডের বুকে মাথা রেখে পা লম্বালম্বিভাবে বিছিয়ে দিয়ে খুবই আয়েশী ভঙ্গিতে শুলো। প্রসিদ্ধ জ্ঞানীদের মতো ভাবুক ভঙ্গিমায় বলল,
“আচ্ছা, আমি জন্ম না নিয়ে আপনি নিশ্চয়ই অন্য আরেকটা মেয়েকে বিয়ে করতেন,তাই না?”
‘রেড এলার্ট সাইরেন হুংকার তুলল রিচার্ডের কানের পাশবর্তী জায়গা দিয়ে। সে জানে, উত্তর দেওয়া এবং এড়িয়ে যাওয়া উভয় বিপদজনক এই মুহুর্তে। রিচার্ড বেশ কৌশল জবাব দিল প্রথম প্রশ্নের,
“অসম্ভব! বিয়ে, তাও তোমাকে ছাড়া? জান সেটাও আমি আমার জন্মের আগেও ভাবিনি।”
‘এলিজাবেথ ঘাড় ঘুরিয়ে সন্দেহভাজন দৃষ্টিতে তাকাই রিচার্ডের চোখে। রিচার্ড বহু করসতে নিজেকে গম্ভীর, ভাবলেশহীন রাখার চেষ্টা করল। এলিজাবেথ তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ফিরিয়ে নিয়ে বলল,
“আচ্ছা আপনি আমার প্রেমে সর্বপ্রথম কি দেখে পড়েছিলেন?”
‘কোনোরূপ জড়তা, সংকোচ ছাড়ায় জবাব দেয় স্পষ্টভাষী রিচার্ড,
“তোমার মনোমুগ্ধকর রূপে মোহিত হয়ে।”
“ডাস ইট মিন, আপনি আমার রূপের প্রেমে ধরা খেয়েছেন?”
“কাইন্ড অফ।”
‘এলিজাবেথ আরেক ধাপ এগিয়ে ফের করে বসল আরেকটি অদ্ভুত প্রশ্ন,
“আচ্ছা, আপনি তো শুধু আমার বাহ্যিক সৌন্দর্য দেখেছিলেন, ভেতরটা তো দেখেননি। ধরুন, আমাকে বিয়ে করার পর হঠাৎ দেখলেন আমি লেসবিয়ান বা বায় সেক্সচুয়াল, তখন কি করতেন?”
‘রিচার্ড দীর্ঘশ্বাস ফেলে আওড়ায়,”আমি দীর্ঘশ্বাস ফেলতাম।”
‘এলিজাবেথ উত্তের ধারধারল না। রেলগাড়ীর মতো তার মুখ অবিশ্রাম চলেই যাচ্ছে,
“যদি আমার রাতে, ঘুমের ঘোরে হাঁটার অভ্যাস থাকত, তখন?”
‘রিচার্ড দু’হাতে জড়িয়ে নিল পলকা দেহখানা। দু’হাতে জাপ্টে ধরে নিবিড় বন্ধে আবদ্ধ করে প্রসন্ন মনে প্রত্যুত্তর করে,
“আমি তোমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঘুমাতাম রোজ।”
“যদি আমার শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকত,তখন?”
‘রিচার্ড চুমু খেল এলিজাবেথের চুলে। কণ্ঠে অভিন্যস্ত কোমলতা,
“তখন আমি শুধু তোমার কপালে চুমু খেতাম ।”
“যদি অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে আমার মুখ পুড়ে যায়, তখন?”
‘রিচার্ড দু’হাতের কুয়াশাভরা আদলায় চেপে ধরল এলিজাবেথের চিবুক। লোকটার চোখেমুখে আষাঢ় আঁধার। কণ্ঠ খাদে। রিচার্ড এলিজাবেথের সমস্ত মুখে ছোট, ছোট চুমুতে ভরিয়ে দিয়ে আবারও শক্ত করে বুকের সাথে চেপে ধরে বলল,
“তখন সেই পুড়ে যাওয়া মেয়েটাকে এভাবে আদরে, আদরে ভরিয়ে বুকে জড়িয়ে রাখতাম আমি। সমাজের কারোর কুৎসিত দৃষ্টি পড়তে দিতাম না তার ওপর।”
‘এলিজাবেথের বুক ধাঁধিয়ে গেল শীতলতায়। অন্তরে বইল গনগনে উষ্ণ হাওয়া। মিটিমিটি হেসে আবারও অদ্ভুত রাজ্যের যতসব অদ্ভুত প্রশ্নের রঙবেরঙের সমাহার নিয়ে বসল। বলল,
“যদি,,,
‘রিচার্ড মুখে হাত চেপে থামিয়ে দিল। এলিজাবেথ মুখ থেকে হাত সরিয়ে অনুনয়ের সুরে বলল,
“আর একটি শুধু।”
‘তপ্ত শ্বাস ফেলল অধৈর্য গোছের ধৈর্যশীল স্বামী রিচার্ড কায়নাত। চোখে ইশারায় অনুমতি প্রধান করতেই এলিজাবেথ হইরই করে বলতে থাকে,
“ধরুন, আমি আমাকে বিয়ে করলেন, তারপর বাসর রাতে দেখলেন আমি আসলে ছেলে না, মেয়ে। সার্জারি করে ছেলে থেকে মেয়ে হয়েছি তখন কি করবেন?”
‘মুহূর্তেই রিচার্ডের ফ্যাকাশে হয়ে রক্তশূণ্য দেখালো। ভাব দেখে অনুধাবন করা যাচ্ছে, সে এই মুহূর্তে, এক্ষুনি পালাতে চাচ্ছে। এই পৃথিবীর মোহমায়া, এই মেয়ের অভব্য কথাবার্তা, সব ফেলে পালাতে পারলে বেঁচে যায় সে। তবে সেই উপায় নেই। অতঃপর কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে ঠাঁই বসে রইল রিচার্ড। এলিজাবেথ উরুতে চিমটি কাটতেই সম্বিৎ ফিরে। নিস্তরঙ্গ মেজাজে বিস্মায়াবিষ্ট গলায় বলে,
“তাহলে আবারো সার্জারি করিয়ে ঘরের ছেলেকে ঘরে ফিরিয়ে দিতাম।”
‘রিচার্ডের জবাবে কোনো ভাবাবেগ প্রকাশ দেখা গেল না এলিজাবেথের মুখে। হঠাৎই তার উজ্জ্বল, চোখ ধাঁধানো মুখশ্রী ঢেকে গেল ঘুটঘুটে এক বিষণ্নতায়। এলিজাবেথের এই আকস্মিক রূপান্তরে থমকে গেল রিচার্ড। সদ্য মনখারাপের রাজ্যে পা রাখা মেয়েটিকে আদরে সোজা করে বসিয়ে উদগ্রীব গলায় জিজ্ঞেস করল,
“কি ব্যাপার, মুখটা হঠাৎ এমন অন্ধকার হয়ে গেল কেন?”
‘এলিজাবেথ চোখ সরিয়ে বিরস মুখে বলল,
“আমি তো আপনার পারমানেন্ট বউ, তাই না?”
‘রিচার্ডের কপোলে চিন্তার রেখা জেগে উঠল। তাও দৃঢ় গলায় বলল,
“ইউ আর মাই ওয়াইফ ফর, ফর এভার।”
“মানে আমাকে সারাজীবন… সারাজীবন,,
“হোয়াট?”
‘হঠাৎ অকারণেই চোখ দু’টো ছলছল করে উঠল। কাঁদো কাঁদো মুখে এলিজাবেথ বলল,
“আমাকে সারাজীবন আপনার আন্ডারওয়্যারও ধুতে হবে?”
‘রিচার্ড হতভম্ব। এমন প্রশ্নে মাথাটা দুপাক দোল খেলো। বিস্ময়ে হেঁচকি উঠে । এলিজাবেথ ভীষণ উত্তেজিত হয়ে জিজ্ঞেস করল,
“ওমা হঠাৎ হেঁচকি উঠল কেন আপনার?”
‘থেমে,কোনো ভূমিকা না দিয়েই এলিজাবেথ রিচার্ডের মাথার তালুতে হাতের তালু দিয়ে আলতো চাপড়াতে লাগল আর সঙ্গে সঙ্গে বলতে থাকল,
“হেঁচকি হেঁচকি মঙ্গলবার,
হেঁচকি দেয় দীঘিপাড়!”
‘এরূপ ছন্দে আশ্চর্যভাবে সত্যি সত্যিই হেঁচকি থেমে গেল রিচার্ডের। রিচার্ড মুখ কোঁচকালো। চোখ কুঁচকে বলল,
“হোয়াট দ্য হেল! এসব কি অড টাইপ কথা বলছ?”
‘এলিজাবেথ গম্ভীর মুখে বলল,
“বুঝবেন না আপনি। এটা হেঁচকির থেরাপি।”
“রিচার্ড ঠোঁট কামড়ে হেসে ফেলল। মাথায় যেন এক দুষ্টু চিন্তার ঢেউ খেলে গেল। ভ্রু নাচিয়ে নাচিয়ে বলল,
“ওহ, ওহ! আই গট ইট। তুমি তো মুশকিলে পড়ে গেছো ডেয়ার। এবার তোমার সমস্যার একটা সল্যুশন দরকার, রাইট?”
‘এলিজাবেথ সন্দেহে চকিতে তাকাল রিচার্ডের দিকে। সোজা হয়ে বসে বলল,
“সমাধান? ডোন্ট টেল মি দ্যাট,আপনি নতুন বউ আনার প্ল্যান করছেন!”
‘রিচার্ড চোখ রাঙালো,”জাস্ট ফাক অফ বেবি।!
“তাহলে?!
“চলো একটা ডিল করি কেমন?”
“কেমন ডিল?”
“তুমি আমার আন্ডারওয়্যার ধুবে,আর আমি তোমার,,,,
‘বাক্য সম্পূর্ণ করার আগেই এলিজাবেথ ছুটে গিয়ে রিচার্ডের মুখ চেপে ধরে চিৎকার করে উঠল,
“ছিঃ! কত অশ্লীল আপনি! চুপ থাকুন!”
‘রিচার্ড মুখ থেকে হাত সরিয়ে নিয়ে বাঁকা হেসে বলল,
“আমি কখনোই সুশীল ছিলাম না, রেড।”
‘থেমে,
“বউয়ের সামনে অশ্লীল না হলে কিসের ভিত্তিতে পুরুষ আমি?”
‘খিলখিলিয়ে হাসল মেয়েটা। কি জানি কি হল এলিজাবেথের। বিয়ের পর, ভালো একজন স্বামী পেলে মেয়েরা বোধহয় বাচ্চা হয়ে যায়। শিশুর মতো আচরণ করে। এলিজাবেথও তাই। আবারও দু’হাতে রিচার্ডের গলা জড়িয়ে ধরল। বাচ্চাদের মতো অবুঝ আবদারের ঝুড়ি নিয়ে বসল। কাইঁকুইঁ করে রিনঝিনিয়ে বলল,
“আমাকে দুনিয়ার সমস্ত ভালোবাসা এনে দিন না রিচার্ড কায়নাত, মাই ডেয়ার ক্রিমিনাল হাসবেন্ড।”
‘রিচার্ড সুচারু দৃষ্টিতে তাকাল এলিজাবেথের দিকে। অমন প্রশ্ন নাকের পাটা টানটান হয়ে উঠল। কপোলে বিরক্তির ভাঁজ ফেলে রাশভারি আওয়াজে বলল,
“আমার ভালোবাসা কি কম পড়ে গিয়েছে ডার্লিং, দুনিয়ার কথা ভাবছ যে? আমার বাইরে গিয়ে তুমি নিজের কথা ভাববে সেটাও যে আমি মেনে নিতে পারব না ওয়াইফি। সো শাট দ্য মাউট অফ।”
‘এলিজাবেথ মুখ কাচুমাচু করে ঠৌঁট বাঁকাল। বলল,
“ইউ আর সো মাচ জেলাস মি.কায়তান।”
‘রিচার্ড বিগলিত হাসল। দৃশ্যমান হলো বাঁ গালের অনুপম সৌন্দর্য। সন্নিকটের রমণীর সুধাভরা নিঃশ্বাসের মোহে বিভোর হয়ে তাকে আরো কাছে টেনে নিল। কানের লতিতে দন্ত বসিয়ে হিসহিসিয়ে বলল,
“ফা’ক অফ রেড। আই অ্যাম ম্যাডলি অবসেসড উইথ ইউ।”
‘এলিজাবেথ অকারণে আঙুল চালাতে শুরু করল রিচার্ডের ঢেউ খেলানো বুকে। পাশাপাশি আমোদিত মনে স্বপ্নালু কণ্ঠে বলল,
“আমাকে ভালোবেসে তাজমহল বানিয়ে দিন না, ঠিক যেভাবে শাহাজাহান, মমতাজের জন্য তাজমহল বানিয়েছিল।”
‘রিচার্ডের অতলস্পর্শী দৃষ্টি নিবিষ্ট ছিল এই রুশরমণীর হাওয়ায় মিঠাই রঙা পেলব চেহারায়। পাখির ডানার ন্যায় নরম, তুলতুলে একটি হাত ছিল তার ড্রাগনের ট্যাটু খচিত হাতের মুঠিতে। তখনও মন্ত্রমুগ্ধের মতো তাকিয়ে ছিল সে। নিমেষহীন দীর্ঘক্ষণ তাকিয়ে থাকতেই হঠাৎ মোহাচ্ছন্ন হাসিতে উদ্ভাসিত হলো ঠৌঁটের কোণ। এলিজাবেথের হাতের পিঠে চুমু খেয়ে অভাবনীয় এক কণ্ঠে বলল,
“হ্যাঁ আর?”
‘রিচার্ডের এই অভিন্ন স্বর কর্ণগোচর হতেই মনোজগতে প্রফুল্ল মনে বিচরণ করতে থাকা আরক্ত রমণীর টনক নড়ল। তড়াক ওঠে বসল সে। অবিস্মরণীয় চোখে তাকাল রিচার্ডের দিকে। ঘোর বিস্ময় কুয়াশার মতো ঘিরে ধরে তাকে। সচকিত চোখের বিস্ময়ের ঘোর কাটিয়ে পরপর কয়েকবার শুষ্ক ঢোক গিলে গলা ভিজিয়ে বলল,
“হ্যাঁ আর মানে? আপনি কি সত্যি, সত্যি তাজমহল বানাবেন আমার জন্য?”
‘রিচার্ড ভাবলেশহীন শুয়ে পড়ল। বিস্ময়ের উষ্ণ চাদর গায়ে জড়িয়ে চিত্রপুত্তলিকার মতো মন্থর স্থিতিশীলতার মতো বসে থাকা এলিজাবেথ’কে এলিজাবেথ’কে বুকে ওপর আঁচড়ে ফেলে শূন্য অভিব্যক্তিতে বলল,
“কি জানি!”
‘এলিজাবেথ ধড়ফড়িয়ে ওঠে বসল। বিহ্বলিত দৃষ্টিতে ফিরে তাকাল রিচার্ডের দিকে। পুলকিত তনুমন আবেগাপ্লুত হয়ে হুট করে বলে উঠল,
“তাহলে তো আমাকে আগে মমতাজের মতো মরতে হবে।”
‘ঠাসসসসসসস,,,,
‘একটা দানবীয় থাবা আচমকা এসে আঁচড়ে পড়ল গালে। তাল সামলাতে না পেরে এলিজাবেথ ছিটকে গিয়ে বিছানা থেকে মেঝেতে পড়ে যায়। ঠোঁট ফেটে রক্ত ঝরে। উঠে বসে নিজেকে সামলে নেওয়ার আগেই দ্বিতীয় আঘাত এসে পড়ে তার গায়ে। রিচার্ড ক্ষুধার্ত বাঘের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে চিবুক চেপে ধরল এলিজাবেথের। দু’চোখে তখন গনগনে অগ্নিশিখা। বিষে জ্বলা ভাষায় চিৎকার করে উঠল,
“কুত্তার বাচ্চা! আজকের পর থেকে জবানে লাগাম টানবি। ফারদার যদি তোর মুখে এমন কথা শুনে, আল্লাহর কসম, জানে মেরে ফেলব তোকে!”
‘এলিজাবেথের ঠোঁট কেঁপে ওঠে। ব্যথায় না অভিমানে তা বোঝা যায় না। রাগ বা কান্নার বদলে নিঃশব্দে রিচার্ডের বুকে মাথা গুঁজে দেয় একটা অভিমানী বিড়ালের ছানার মতো। আগের এলিজাবেথ হলে এতক্ষণে কান্না ফেলে দিত ঝরঝর করে। কিন্তু এখন আর তা হয় না। এখন এলিজাবেথ জানে, বোঝে, অনুভব করে এই হিংস্র রাগের নিচে লুকিয়ে আছে এক অতল প্রেমসমুদ্র, হারানো ভয়। রিচার্ডের নিঃশ্বাস অসম হয়ে যাচ্ছে। বুক ধড়ফড় করছে। মাথার আগুন নিভে যেতেই সে এলিজাবেথের মুখে ঝুঁকে পড়ে। তারপর বর্ষণ নামল চুমুর।চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে দেয় গাল, বিশেষ করে যেখানে আঙুলের ছাপ বসে আছে। ঠৌঁটের ফাটলের রক্ত মুছে যায় জিভের লেহনে। গুনে গুনে দু’শ চারটা চুমু খেয়ে তবে থামে রিচার্ড। অভিমানী মেয়েটার মাথাটা নিজের বুকের সাথে চেপে ধরে আবার শক্ত গলায় বলল,
“দিস রিচার্ড হ্যাজ অনলি ওয়ান ফিয়ার ইন দিস ইউনিভার্স — দ্য ফিয়ার অফ লুজিং হিজ এলি জান। ডোন্ট ইউ এভার সে সাজ অ্যা থিং এগেইন, জান। আই ক্যান্ট এনডিউর ইট। মাই মাইন্ড ফিলস লাইকের ইটস অ্যাবাউট টু এক্সপ্লোড। আই সোয়্যার টু গড, ইফ ইউ এভার টক অ্যাবাউট ডাইং এগেইন, আই’ল কিল ইউ মাইসেলফ।”
‘এলিজাবেথ গালের পেছল ভাব হাতের পিঠ দিয়ে মুছতে মুছতে ঠোঁট বাঁকিয়ে বলে,
“আংরেজি মাত বলিয়ে স্যার। একদিন বাংলায় এমন একখান গালি দিব, তার মানে খুঁজতে বিশ দিন লাগবে আপনার!”
‘রিচার্ড মৃদু হেসে বলল, “আচ্ছা, শুনি তো দুইটা গালি।”
“খিটাংকি, সিটিনাল।”
“এ্যাৎ?”
‘রিচার্ডের মুখে এমন শব্দ শুনে ফিক করে হেসে উঠল এলিজাবেথ। রিচার্ড ফোঁস করে একটা নিশ্বাস ফেলে এলিজাবেথকে কোলে তুলে বলল,
“অনেক গল্প হলো, রেড। এবার চল।”
“কোথায়?”
“আর ধৈর্যের পরীক্ষা নিও না, আই রিকুয়েস্টেড ইউ জান।”
“নো মিন্স নো।”
‘এক হাতে এলিজাবেথকে বহন করে, অন্য হাতে চিবুক চেপে ধরে রিচার্ড এবার কঠিন গলায় বলল,
“ওয়াচ ইয়োর টোন, হানি, অর আই’ল শাট ইয়োর মাউথ ইন মাই ওয়ে।”
‘এই মৃদু হুমকির জবাবে এলিজাবেথ রিচার্ডের থুঁতনিতে আঙুল ঠেলে মুখটা উপরের দিকে ঘুরিয়ে দেয়। তারপর কণ্ঠনালিতে দুই আঙুল চেপে ধরে বলল,
“আমি বলেছি গল্প করব মানে, শুধু গল্পই করব। আজ কিছু হবে না। শুনতে ইচ্ছে না হলে ঘুমিয়ে পড়ুন আপনি।”
‘রিচার্ড গরম নিঃশ্বাস ফেলে হতাশ স্বরে বলল,”ওকে, বেশ। ঘুমাবো আমি।” এই বলে এলিজাবেথকে কোলে থেকে নামিয়ে দিয়ে রিচার্ড উল্টে শুয়ে পড়ে। বলল,
“বিকেলের আগে ডাকবে না আমায়।”
‘রিচার্ড শুয়ে থাকলেও ঘুমায় না। মুখ ভার করে পড়ে থাকে। এলিজাবেথ উঁকি মেরে দেখে ঠোঁট চেপে হাসে। তারপর টিপটিপ পায়ে হাঁটতে হাঁটতে ওয়াশরুমের দরজায় গিয়ে দাঁড়ায়। আকর্ষণ জাগাতে গলা খাঁকারি দেয়,
“উঁমহু… উঁমহু!”
“রিচার্ড বিরক্ত ভঙ্গিতে ভুরু কুঁচকে ফিরে তাকিয়ে বলল,
“হোয়াট?”
‘এলিজাবেথ ভেজা চোখে মাসুম চেহারা বানিয়ে জিজ্ঞেস করল,”আপনি কি সত্যিই ঘুমাবেন?”
‘রিচার্ড চোয়াল শক্ত করে চিবিয়ে চিবিয়ে বলল,”হ্যাঁ। আর কিছু?”
‘এলিজাবেথ ঠোঁট উলটে আঙুল কচলাতে কচলাতে মৃদু স্বরে বলল,”কিন্তু আমি তো জানতাম, বিয়ের দিনই বাসর হয়,এই প্রথা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। মানলাম এখন দিন। তাই বলে কি…
‘কথা শেষ করতে পারল না এলিজাবেথ। তার আগেই রিচার্ড ঝড়ের মতো ছুটে এসে তাকে কোলে তুলে নিল, পরম মুহূর্তেই আঁচড়ে ফেলল বিছানায়। তারপর বিদ্যুতের গতিতে রুমের পর্দা টেনে দিয়ে, এসির তাপমাত্রা নামিয়ে ফেলল একেবারে ঠান্ডায় জমিয়ে দেওয়ার মতো। ফের চকিতে কম্ফোর্টারের ভেতর ঢুকে এলিজাবেথ’কে নিজের সাথে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে রিচার্ড নিচু গলায় ফিসফিস করে বলল,
“এখন বলো, কে কাকে ঘুমাতে দিচ্ছে না?”
‘ঝকঝকে এক উজ্জ্বল সকাল। স্বচ্ছ নীলাকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে সাদা তুলোর মতো শরতের মেঘ। কাঁচের গ্লাস ছুঁয়ে ঢুকে পড়া সূর্যের কোমল রশ্মি মুখ ছুঁতেই পিটপিট করে চোখ মেলে তাকায় এলিজাবেথ। চোখ খুলতেই প্রথমেই ধরা দেয় রিচার্ড। বিছানায় কনুই ঠেকিয়ে, তালুতে গাল রেখে এক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে তার দিকে। যেন সারা পৃথিবীর সব অবসর জমা করেছে এই এক সকালে। এলিজাবেথ বিস্ময়ে তাকায় তার ঔদ্ধত্যমাখা কোমল চাহনিতে। তারপর চমকে নিজ শরীরের দিকে। লজ্জায় গাল রঙ ধরে জাফরানের মতো। কম্ফোর্টারটা আরও আঁটসাঁট করে জড়িয়ে নেয় সে। রিচার্ড একটুখানি হেসে সুরেলা কণ্ঠে ফিসফিসিয়ে বলল,
“গুড মর্নিং, প্রিন্সেস।”
‘এলিজাবেথ আলতো হেসে বলল, “গুড মর্নিং।”
‘রিচার্ড শব্দ করে এক গাঢ় চুমু আঁকল এলিজাবেথের কপোলে। মুগ্ধ কণ্ঠে বলল,
“মাই প্রিন্সেস ইজ অ্যাওয়েক। স্লেপ্ট ওয়েল, লিটল ওয়ান?আই সেন্ট সাম মানি টু ইয়োর কার্ড. বাই হোয়াটএভার ইউ লাইক।ইউ’আর মাই কুইন, অ্যান্ড আই’ল স্পয়েল ইউ এভরি ওয়ে আই ক্যান, বিকজ আই লাভ ইউ, মাই ফিয়ার্স, ফাকিং ডার্ক রেড।
‘এলিজাবেথ রিচার্ডের উষ্ণ নগ্ন বুক ঘেঁষে গলে পড়া স্বরে বলল,” আই জাস্ট নিড ইউ মি.কায়নাত।”
‘রিচার্ড থমকে গেল। চমকে উঠল, আবার আনন্দে ঠোঁট বাঁকলো তার নাজুক বউয়ের আমূল পরিবর্তনে। রিচার্ড এলিজাবেথের ওপর ঝুঁকে এসে হিসহিসিয়ে বলল,
“হোয়্যার ডু ইউ নিড মি, বাবিগার্ল?
আন্ডারনীথ ইউ?
ডিপ ইনসাইড ইউ?
অর ট্যাঙ্গেল্ড অ্যারাউন্ড ইউ লাইক আ ওয়াইল্ডফায়ার,
হোল্ডিং ইউ সো টাইট ইউ ফরগেট হু ইউ আর?
ডু ইউ ওয়ান্ট মি টু শ্যাটার দ্যাট সুইট ইনোসেন্স,
অর নীল বিফোর ইয়োর ডার্কনেস অ্যান্ড কিস এভরি স্কার ইট হাইডস? জাস্ট সে দ্য ওয়ার্ড—অ্যান্ড টুনাইট, আই’ল বি এভরিথিং ইয়োর শেইকিং, ডিজপারেট বডি ইজ ক্রাইং আউট ফর।”
“লজ্জায় রক্তিম আভা ছড়িয়ে পড়ল এলিজাবেথের চিবুকে। রিচার্ড নিঃশব্দে হেসে নিচু গলায় জিজ্ঞেস করল,
“ফিলিং বেটার নাও?”
‘ইঙ্গিতময় প্রশ্নের গভীরতা বুঝে তলপেটে একঝাঁক প্রজাপতির ডানা ঝাপটালো। এলিজাবেথ ভেংচি কেটে ভণিতার ভঙ্গিতে বলল,”আমি একদম ঠিক আছি।”
‘রিচার্ড ভ্রু কুঁচকে চাইল। বিদ্রুপ সুরে বলল,”রিয়েলি?”
‘এলিজাবেথ কাঁধ ঝাঁকিয়ে প্রবল আত্মবিশ্বাসে বলে,”অফর্কোস।”
‘এই বলে সে আড়মোড়া ভাঙতে গিয়েই থেমে গেল। হঠাৎ এক টানাপোড়েন ব্যথায় মুখশ্রীয়ে ছায়া পড়ল নীলাভ কষ্টের রঙ। রিচার্ড ওকে আলতো চেপে আবার শুইয়ে দিয়ে ভ্রু তোলার ভঙ্গিতে বলল,”হোয়াট?”
‘এলিজাবেথ অসহায় গলায় স্বীকার করল,”আই’ম নট ওকে।”
‘রিচার্ড ওর ঠোঁটে এক গভীর চুমু আঁকে। তারপর উঠে দাঁড়িয়ে,” ইউ নিড রেস্ট জান।” বলে নিঃশব্দে নিচে নেমে যায় রিচার্ড। কিছুক্ষণ পরই খাবারের ট্রে হাতে নিয়ে ফিরে এল রিচার্ড। নিঃশব্দে এলিজাবেথকে নিজ হাতের রান্না নিজের হাত দিয়ে খাওয়াতে লাগল। এলিজাবেথ যতবার তাকে খেতে বলল, সে ততবারই অস্বীকার করল। এলিজাবেথের খাবার শেষ হতেই রিচার্ড খাবারের ট্রেটি কাউচের ওপর রেখে দরজার দিকে যেতেই পিছন থেকে এলিজাবেথ কণ্ঠ তুলল,
ভিলেন ক্যান বি লাভার পর্ব ৬৩ (৩)
“আপনি এই সময় দরজা লাগাচ্ছেন কেন?”
‘রিচার্ডের গম্ভীর কণ্ঠ, “আই হ্যাভ নট হ্যাড ব্রেকফাস্ট ইয়েট, হানি।”