মেহরিনের সপ্নরঙ পর্ব ২৮
মির্জা সূচনা
সন্ধ্যা ৭টা
চারদিকে হালকা আলো, গান বাজছে মিষ্টি সুরে— চারপাশে উজ্জ্বল আলো, মঞ্চে সাজানো ফুল আর ঝিকিমিকি লাইটের মাঝে বসে আছে মিলি—এক হাতে মেহেদী আর্টিস্ট নিপুণ হাতে নকশা আঁকছে।
আরেক হাতটা মেহরিন নিজের হাতে ধরে রেখেছে, মিষ্টি করে চোখে চোখ রেখে বলছে—
–ভালো করে বসো তো, নাহলে নষ্ট হয়ে যাবে!
মিলি মুচকি হেসে বলে:
–তুমি না এমন করো না, আমার তো এখন থেকেই নার্ভাস লাগছে!
পাশে বসে থাকা চুমকি, রাহি, মেহবুবা, নুপুর সবাই হাসি-ঠাট্টায় মেতে আছে।
কেউ মেহেদী লাগাচ্ছে, কেউ হাতের নকশা দেখে চমৎকৃত হচ্ছে।
পেছনে চলছে হালকা সাউন্ড সিস্টেমে গানের তাল, আর কানে শোনা যায় হাসির শব্দ।
এমনই এক মুহূর্তে রাহি মেহরিনের কানের কাছে ফিসফিস করে বলে:
–তুই কবে বসবি এইখানে, বল তো মেহু আপু?
মেহরিন হাসে, আর দূরে দাঁড়িয়ে থাকা রিদের চোখে তার সেই হাসি পড়ে—রিদ চুপচাপ দাঁড়িয়ে তাকিয়ে থাকে…
আর মনে মনে বলে চিন্তা করিস না বোন ওকে খুব তাড়াতাড়ি এই জায়গায় বসাবো।
সন্ধ্যা বেলা, মেহেদির ঘ্রাণ ছড়িয়ে আছে পুরো বাসায়। সবাই বসে আছে মেহেদির প্লেট আর হলদে পরীদের মাঝে।
মেহরিন একটা বড় নিঃশ্বাস নিয়ে বলে:
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
-আল্লাহ! বিয়ে মানেই কি এত কাজ? আমি তো ভাবছিলাম শুধু ফুল আর ফটোশুট
রাহি চোখ বড় বড় করে বলে:
–আর আমি ভাবছিলাম, বিয়েতে শুধু লাল শাড়ি আর গায়ে হলুদ… কিন্তু এই যে নাচ, গাওয়া, প্ল্যানিং—এটা তো পুরো এক্সাম সিজন!
চুমকি একটা মুচকি হেসে বলে:
–আমি ঠিক করে ফেলছি, আমার বিয়েতে সব রান্না বাইরের ক্যাটারিং, গান চালাবো রেকর্ডেড, আর বরকে বলবো ভিডিও কলে বিয়ে দেয় যেনো।
মেহবুবা হেসে বলে:
–তাহলে তোর বর তো মেহেদির বদলে মোবাইলে লাইক রিঅ্যাক্ট দিবে! ‘Love’ রিঅ্যাক্ট দিয়েই শেষ।
মিলি, হাত মেলে মেহেদি শুকাতে শুকাতে বলে:
–তোদের কথা শুনে আমার ভয় করছে, আমি ঠিকঠাক বিয়ে করতে পারবো তো?
মেহরিন সাথে সাথে বলে:
–দেখো, যেহেতু তোমার মেহেদির ডিজাইনে একটা হৃৎপিণ্ড দেখা যাচ্ছে, বুঝে নিও—বিয়েটা জমবে!
রাহি চোখ টিপ দিয়ে বলে:
–আর যদি সেই হৃৎপিণ্ডের পাশে ছোট করে ‘আমি তার বউ’ লেখে, বুঝে নিস বরটা ধনী!
সবাই হেসে গড়াগড়ি খায়, আর চারপাশে মেহেদির মাঝেই জমে ওঠে বিয়ের আগের সেরা আড্ডা।
সন্ধ্যা নেমে এসেছে পুরো তালুকদার বাড়িতে। রঙিন আলোর সাজে উঠোনটা যেনো রূপকথার এক দৃশ্য। লাইটের ঝিকিমিকি, সানাইয়ের সুর, আর হাসির শব্দে মুখর চারপাশ।
এসবের মাধ্যমনী হচ্ছে মিলি আর তার সাথী হচ্ছে মেহরিন, চুমকি, মেহবুবা, রাহি আর নুপুর।
চুমকি বলল:
–দেখছিস রে! এই জায়গাটা তো একদম মুভির শুটিং স্পট!লাগছে
মেহবুবা হেসে বলে:
–আর তুই এই সিনেমার হিরোইন! ছবি তুলতে আসিস, ব্যাকগ্রাউন্ডে ফুল ঝরে পড়ে!
রাহি কানে কানে বলে:
–আর আমাদের মেহু আপু? ওর এক ঝলকেই তো কারো কারো মুড চাঙ্গা হয়ে যায়, আবার কারো হার্টবিট বেড়ে যায়!
মেহরিন চোখ ছোট করে বলে:
–তোর ইঙ্গিত কার দিকে?
রাহি হেসে মুখ ঘুরিয়ে নেয়। এদিকে ওদের পাঁচজনের প্রবেশেই যেনো অনুষ্ঠান জমে ওঠে। লাল-হলুদ শাড়ির মেলা, খোলা চুলের ঢেউ, আর কাচের চুড়ির ঝঙ্কার—সব মিলিয়ে যেন এক ঝলক বসন্তের হাওয়া।
স্টেজের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা রিদ, শান্তো আর রাকিব ওদের দিকে তাকিয়ে কিছুক্ষণ নিশ্চুপ।
শান্তো কাঁধে হাত দিয়ে রিদের বলে:
–এই যে ভাই, মেহেদি শুরু দেওয়া শেষ হয়নি, তোরা আগে ই প্রেমে পড়ে গেলি!
রিদ হেসে বলে:
–না ভাই, প্রেম না… এটা তো একদম ‘দৃষ্টির পূর্ণতা
এদিকে রাকিব তো রাহির দিকে তাকিয়ে মুগ্ধ। কিন্তু রাহি হঠাৎ চোখ পাকিয়ে তাকায়—রাকিব সঙ্গে সঙ্গে চোখ সরিয়ে নেয়।
নুপুর হেসে বলে:
–আসো, শুরু করি আজকের রাতটা—হাসি, আনন্দ আর মেহেদির রঙে ভরা!
আর তারপরেই বাজে ঢোল-তবলার সুর, আর সবাই মিলে মঞ্চে ওঠে, শুরু হয় বিয়ের রাতের প্রথম নাচ।
স্টেজের আলো একটু ম্লান হয়ে আসে। হালকা মিউজিক বাজছে। হঠাৎ করেই শুরু হয় বিয়ের এক জনপ্রিয় মজার গানের বিট।
মেহরিন, চুমকি, রাহি, মেহবুবা আর মিলি একসাথে স্টেজে উঠে দাঁড়ায়। প্রত্যেকেই একেকটা ভিন্ন রঙের শাড়ি পরে একদম সিনেমার মতো সাজানো।
গানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তারা নাচ শুরু করে—
চুমকি প্রথমে একটু নাটুকে মুখ করে ডায়ালগ বলে—
–বিয়েতো একটা serious ব্যাপার, কিন্তু আমাদের ডান্স ছাড়া complete না। কী বলো সবাই?
সবাই হেসে ওঠে, আর নাচ শুরু করে। হাতের চুড়ির টুংটাং, চুলের গন্ধ, আর হাসির মেলবন্ধন যেন পুরো আয়োজনটাকে আরও জীবন্ত করে তোলে।
প্রথম গানের শেষে যখন সবাই হাঁপাচ্ছে, তখন শান্তো রাকিব আর রিদ তিনজন একসাথে স্টেজে ওঠে। রিদ মাইক হাতে নিয়ে বলে—
–বিয়েতো একটা partnership… so এই partnership এ একটা ছোট পার্ট আছে।
তারপর শুরু হয় মেয়েদের সঙ্গে ছেলেদের যুগল নাচ। রাহির পাশে রাকিব, চুমকির পাশে শান্তো আর… মেহরিনের পাশে এসে দাঁড়ায় রিদ।
চুমকি পাশে থেকে বলে—
–এই রে… বুঝি গানের থেকেও বেশি গম্ভীর প্রেম জমে উঠছে!
সবাই হেসে ওঠে আর নাচ চলতে থাকে—এক ঝলক রঙ, হাসি, আলো আর চোখের ভাষায় ভরা রাত।
তালুকদার বাড়ির পেছনের এক শান্ত কোণে আলো-আঁধারিতে মেহবুবা তার মায়ের সঙ্গে নিচু স্বরে কথা বলছে। শাড়ির আঁচলটা বারবার সামলাচ্ছে, চোখে মুখে একরাশ প্রশান্তি।
ঠিক তখনই দরজার পাশ দিয়ে ভেতরে ঢুকে রামিম তালুকদার। হাসিখুশি স্বভাবের ছেলে, কিন্তু আজ মুখটা থমথমে। চেহারায় ক্লান্তি, চোখে একটু বিরক্তি। কিছু খুঁজতে খুঁজতে পেছনের দিকে আসে—আর তখনই চোখ পড়ে যায় মেহবুবার উপর।
এক মুহূর্ত, দুইটা চোখ… আর বাকিটা থেমে যায়।
রামিম থমকে দাঁড়ায়। কানে যেনো কোনো শব্দ আসে না, চোখের সামনে শুধু ওই একটাই ছবি—মেহবুবা। পরনে নরম রঙের শাড়ি, কপালে ছোট্ট একটা টিপ, আর ঠোঁটের কোণে একরাশ সহজ হাসি। গলার আওয়াজটাও শান্ত, মায়াবী।
রামিম নিজের ভেতরে হঠাৎ এক অদ্ভুত কাঁপুনি টের পায়।
মনে মনে বলে ওঠে:
এই মেয়েটা কে? কেন এত চেনা চেনা লাগছে? আর এত সুন্দর? এটা কী…?
রামিম ধীরে ধীরে এগিয়ে আসে। মেহবুবা মায়ের সঙ্গে কথা শেষ করে ঘুরতেই ওর চোখ পড়ে রামিমের দিকে।
মুহূর্তে চোখাচোখি।
রামিম একটু নার্ভাস হয়ে পড়ে, কিন্তু সাহস করে বলে—
–আপনি কি… মেহরিনের বোন?
মেহবুবা হালকা হাসে, মাথা নাড়ে—
–হ্যাঁ। আপনি…?
রামিম একটু হেসে হাত বাড়িয়ে দেয়—
–আমি রামিম তালুকদার। মিলি আর নুপুরের ভাই।
মেহবুবা একটু চমকে উঠে বলে—
_আচ্ছা! আপনি ওই রামিম ভাইয়া? অনেকে তো আপনার কথা বলে।
রামিম মুচকি হেসে বলে—
–ভালো না খারাপ?
মেহবুবা চোখ ছোট করে বলে—
–দেখেই বুঝে ফেললাম, আপনি দুষ্টুমিতে কম যান না।
ওদের কথার মাঝখানে হালকা হাওয়ায় গাছের পাতা দুলে ওঠে। একটা অজানা আনন্দ, লজ্জা আর কৌতূহল যেনো দু’জনের মাঝখানে জমে ওঠে।
তালুকদার বাড়ির কোনায় কোনায় সাজসাজ রব। বিছানার ওপরে নানারকম গহনার বাক্স ছড়িয়ে ছিটিয়ে, সোনার চুড়ি, কানের দুল, নাকফুল—সব কিছুর মাঝেই আলো ঝলমল করছে।
রামিম আর আরাফ ঠিক কিছুক্ষণ আগেই বাইরে থেকে ফিরেছে। মিলির জন্য গহনা আনতে গিয়েছিল।
রামিম মূলত খুঁজতে এসেছিল রিদকে, আর এসে মেহবুবার সাথে দেখা।
–আপনি জানেন, এই দোকানটা একেবারে ভয়ংকর! এক দোকানে ঢুকেছি, বলে রুবির সেট নেই, তো আবার আরেকটায় ঢুকতেই বলে অফার শেষ! শেষমেশ আরাফ ভাই বলল, যেটা মিলে সেটাই নিই—তখন তো আমি ভাবলাম, মিলে মানেই মিলি না, তাই না?
মেহবুবা চোখ তুলেই একটু কপাল কুঁচকে তাকায়। মাথা নাড়িয়ে শুধু বলে—
– “হুম… বুঝলাম।
রামিম থামে না, আরও বলে—
– “আর জানেন, এই আরাফ ভাইটা সব সময় সিরিয়াস, কিন্তু আমি না! আমি সবকিছুকে একটু হালকা করে দেখি। আপনি কি জানেন, লাইফে হিউমার থাকাটা কত দরকার?
মেহবুবা ভিতরে ভিতরে বিরক্ত হলেও মুখে কিছু বলছে না। সৌজন্যবশত হাসি দিয়ে শুধু বলে—
– “হ্যাঁ, হয়তো তাই।
–আপনি হয়তো একটু বেশি সিরিয়াস টাইপ, তাই না?
রামিম আবার বলে—
–আপনি কোথায় পড়েন? ইকোনমিক্স না? না না, সেইটা তো মেহরিন… আপনি তো… ওহ! আপনি কি সাহিত্য পড়তেন?
মেহবুবার বিরক্তি যেনো চোখে মুখে ফুটে উঠছে এবার। কিন্তু তবুও নিজেকে ধরে রাখে। ঠোঁটে একটুখানি হাসি এনে বলে—
–আপনি মনে হয় অনেক কথা বলেন তাই না?
রামিম হেসে ফেলে, বিন্দুমাত্র দমে না—
–হাহা! এই যে! আপনিও অবশেষে কিছু বললেন!
মেহবুবা এবার আর না পেরে বলে—
– আচ্ছা আমি বরং যাই, আপনি যে কাজে এসেছিলেন তা করুন কেমন?আপনি তো মনে হয় রিদ ভাইয়াকে খুঁজতে এসেছেন আপনি বরং তাকে খুজেন।
রামিম গলা খাঁকারি দিয়ে বলে—
–আপনি চাইলে আমি শুধু রিদ ভাইকে না, চাঁদ-সূর্যকেও এনে দেব!
মেহবুবা এবার সত্যি হেসে ফেলে। কিন্তু নিজের হাসিটা চাপা দিয়ে ঘুরে যায়। মনে মনে ভাবে, এই ছেলেটা চুপ করানো যাবে তো?
ঘরে এক টুকরো টান টান নিঃস্তব্ধতা। রাজ এখনও হতবিহ্বল রাগে, রূপা বেগম তার পাশে বসে শান্ত করার চেষ্টা করছেন।
ঠিক তখনই দরজার ফ্রেমে ভর দিয়ে দাঁড়ায় লাবিব। চোখে গভীর অভিব্যক্তি, মুখে কোনো শব্দ নেই।
সে ধীরে ধীরে ঘরের ভেতর আসে। একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে রাজের পাশে দাঁড়ায়। রাজ তাকে লক্ষ্য করে না, কারণ তার চোখ তখন ল্যাপটপের স্ক্রিনে—যেখানে মেহবুবা হাসছে, রামিমের সঙ্গে।
লাবিব হঠাৎ থেমে যায়। তার চোখেও পড়ে সেই দৃশ্য।
এক মুহূর্তের জন্য চোখটা সরিয়ে নিতে চায়, কিন্তু পারে না। চোয়াল শক্ত হয়ে ওঠে, বুকের ভেতর কী যেন পাথরের মতো জমে যায়।
তার হাতের আঙুলগুলো ধীরে ধীরে মুঠো বেঁধে ফেলে। মুঠিটা এতটাই টাইট, যেনো নিজের রক্ত চলাচল থেমে যাবে
—তবে মুখে কিছু নেই, কেবল চোখদুটো জ্বলছে এক অন্যরকম আগুনে।
রূপা বেগম চোখ মেলেন—লাবিবের দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে গিয়েও থেমে যান।
রাজ অবাক হয়ে তাকায় লাবিবের দিকে—প্রথমবার। দুই ভাইয়ের চোখ একসাথে আটকে যায় স্ক্রিনে—সেখানে এখনো মেহবুবার হাসি জমে আছে।
তখনই লাবিব নিচু স্বরে বলে—
–এই হাসি যদি কারও সাথেই হোক… আমার কেন এতটা খারাপ লাগছে?
তার গলার স্বর জেদি, জমানো। এবং অনেকটা ভেঙে পড়ার মতো।
মুহূর্তেই রং পাল্টে যায় লবিবের
লাবিব দাঁতে দাঁত চেপে বলে—
এই ল্যাদা বাচ্চার সাহস তো দেখি বেশ বেড়েছে আজকাল। দাঁত বের করেছে, তাই না? ঠিক আছে… তোর দাঁত আমি ভাঙব। ওয়েট কর।
তারপর রাগে গমগম করতে করতে পকেট থেকে ফোনটা বের করে। স্ক্রিনে একটুখানি তাকিয়ে, তৎক্ষণাৎ কল দেয়— “Mehbuba”।
অন্যদিকে…
মেহবুবা ঠিক তখনই হাসতে হাসতে রামিমের কোনও এক নিরীহ কথায় উত্তর দিচ্ছিল। এমন সময় ফোনটা বেজে ওঠে। স্ক্রিনে নামটা দেখে চোখ চকচক করে ওঠে। একটুখানি হাসি চাপিয়ে, খুশি হয়ে মনে মনে বলে—
উফফ ফাইনালি এই ছেলের বকবকানি থেকে বাঁচা যাবে!
রামিমকে বলে—
ভাইয়া, পরে কথা হবে। আজকে তো আমার ফোনও আমার উপর জেলাস!
হাসতে হাসতেই ফোনটা কানে দেয়। ও পাশ থেকে একটা ঠান্ডা অথচ বিদ্ধ বিষের মত গলা ভেসে আসে—
কি রে? খুব মজা করছিস তো? দাঁড়া, আজকে তোকে বুঝিয়ে দিচ্ছি আসল লাইন কাকে বলে।বিয়ে বাড়ি গিয়ে লাইন মারা শুরু করে দিয়েছিস।এই ল্যাদা বাচ্চা তোর বয়স কত হয়? এখনই লাইন মারা শিখে গেছিস, থাপরে তোর চাপরা সব করে দাঁত ফেলে দিব চুপচাপ রুমে গিয়ে বসে থাক ।
মেহবুবার মুখের হাসি এক মুহূর্তে ফিকে হয়ে যায়। কিন্তু তবুও ঠোঁটে একটুখানি বাঁকা হাসি রেখে বলে—
আমি এখন বড় হয়েছি হ্যাঁ, আর লাইন মারার বয়স হয়ে গেছে আমি। লাইন মারি আর লাইনে শুয়ে থাকি আপনার কি হে?
মেহবুবর কথা শুনে ভয়ঙ্কর রেগে গেল লাবিব ওরে নিজের রাগ সংযত করার চেষ্টা চালাচ্ছে ।
কোন কথা শুনতে না পেয়ে মেবুবা ফোনটা কান থেকে নামিয়ে দেকে কল কেটে গেছে কিনা যখন দেখে কলটা কাটেনি তখন।
মেহবুবা ফোনটা কানে নিয়েই বলল,
হ্যালো—”
ওপাশ থেকে মুহূর্তেই গর্জে উঠল লাবিবের গলা,
ল্যাদা বাচ্চা! খুব দাঁত বের করিস আজকাল, তাই না? দাঁতগুলো যদি ভেঙে দিই কেমন হয় বল তো?
মেহবুবার মুখের হাসি মুহূর্তে গায়েব। চোখ-মুখ শক্ত করে কিছু বলার চেষ্টা করতেই, লাবিব আবার বলে উঠল—
আর যদি দেখি কোনো ছেলের সঙ্গে দাঁত বের করে কথা বলিস—কসম করছি, তোর দাঁত গুলো তুলে ইঁদুরকে দিয়ে দেব! আর তোর লাইন মারার বয়স হয়ে গেছে তাই না। তাহলে রেডি থাক লাইনে তোর শুয়ে থাকতে হবে না। অন্য কোথাও শুয়ে থাকবি কিছুদিন সময় দে ওই ব্যবস্থাই করছি।
এরপরই একটুও সময় না দিয়ে, ঠাস করে কলটা কেটে দেয়।
মেহবুবা স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে কিছুক্ষণ। তারপর ধীরে ধীরে বলে ওঠে—
হা…!
এক মুহূর্ত চুপ করে থেকে ঠোঁটের কোণেই হাসি ফুটে ওঠে। নিচু গলায় ফিসফিস করে বলে—
এই বাদরটা কোন জঙ্গল থেকে এসেছে কে জানে।
হঠাৎ করে একটা কথা মনে আসে। আমি যে এখানে দাঁড়িয়ে একটা ছেলের সাথে কথা বলছি এটা ও জানলো কিভাবে?
তারপর আবার মনে মনে উত্তর দিল এদের দ্বারা সব সম্ভব। এই বলে হাসতে হাসতে ভিতরে চলে গেল ।
মেহরিন আর চুমকি বসে মেহেদি পড়ছে। মেহবুবা ভেতরে ঢুকতেই রাহি ডেকে ওঠে,
এই মেহবুবা! আয় আয়, তোর হাতেও মেহেদি লাগাতে হবে।
মেহবুবা হেসে গিয়ে পাশে বসে। কিছুক্ষণ পরে সবার হাতে মেহেদি লেগে গেলে পাশেই বসে থাকা এক মধ্যবয়সী মহিলা হঠাৎ বলে ওঠেন,
শোনো মেয়েরা, মেহেদির রঙ যত গাঢ় হবে, বুঝবে স্বামী তাকে ততটাই ভালোবাসে!
এ কথা শোনামাত্রই সবাই থমকে যায়। মুহূর্ত পরেই চোখাচোখি, তারপর হেসে ওঠে চারদিক।
রাহি বলে,
চুমকি, তোর তো রঙ একদম কালচে হতে চলেছে! কিরে, কার ভালোবাসা এমন জ্বলজ্বলে, বল দেখি?
চুমকি চোখ গোল করে বলে,
আমি কিছু বলিনি! কিন্তু মেহরিনের তো রঙ দেখি কনকচাঁপার মতো গাঢ়! বুঝাই যাচ্ছে কোনো গোপন আগুন আছে!
মেহরিন মুখ বাঁকিয়ে বলে,
“তোমরা কেবল পেছনে লাগো! দ্যাখো তো, মেহবুবার রঙ কতটা গাঢ় হয়!”
মেহবুবা হেসে বলে,
আমার রঙও যদি হালকা হয়, আমি কিন্তু বিয়ের পর জামাইকে ধরে উড়ুম ধুরুম কেলাবো — বুঝলা।
এই বলে সবাই মিলে হাসতে থাকে, কেউ কারো নাম ঠিকমতো না বললেও মজার ফাঁকে ইঙ্গিতগুলো স্পষ্ট! মেহেদির ঘ্রাণ, গানে গানে মেয়েরা ব্যস্ত, আর নিজেদের মধ্যকার দুষ্টু-মিষ্টি খুনসুটি যেন উৎসবটাকে আরও রঙিন করে তুলেছে।
মেহেদির পর সবাই যখন গল্পে ব্যস্ত, সেই সময় মেহরিন একটু আড়ালে গিয়ে জানালার ধারে দাঁড়ায়। হাতের মেহেদির দিকে তাকিয়ে একরাশ মুচকি হাসি তার ঠোঁটে। পেছন থেকে চুপিচুপি আসে রাহি।
রাহি ফিসফিসিয়ে বলে,
কি রে, কার নাম লিখছিস মেহেদির ভেতরে? কেউ খুঁজে পাবে না?
মেহরিন চোখ বড় করে তাকায়, হাসে, তারপর বলে,
তুইও না, দেখ ভালো করে আমি লিখি নি কোনো নাম সারাক্ষণ শুধু আমার পিছনে লাগা তাই না।
এই দৃশ্য দূর থেকে দেখছে রিদ। তার চোখ আটকে আছে মেহরিনের মুখে। সেই নিষ্পাপ হেসে কথা বলার ভঙ্গি, আঁচল খসখসে বাতাসে দুলে উঠছে। রিদের চোখে সেই চেনা বিস্ময়। মনে মনে শুধু একটা কথাই ঘুরছে—
এই মেয়েটাকে আমি… শুধু আপন করে রাখতে চাই।
ওদিক দিয়ে চুপিচুপি আসছে চুমকি, মেহবুবার কানে কানে কিছু বলে হাসে। মেহবুবার মুখে লজ্জার আভা, আর চোখের কোণে কে যেনো আছে বলে বুক কেঁপে ওঠে। কেউ একজন ওকে ঠিক দেখছে, ঠিক বুঝে নিচ্ছে।
এদিকে
রাজ মুখ চাপা দিয়ে হেসে ফেলে। রূপা বেগম তাকিয়ে জিজ্ঞেস করেন,
“কি রে হঠাৎ এত হাসির রাকন কী?
রাজ মুচকি হেসে বলে,
মামনি, লাবিবের অবস্থা দেখছো? মনে হচ্ছে ভাই আমার শালির প্রেমে পুরাই হুঁচট খেয়ে গেছে!
রূপা বেগম অবাক হয়ে লাবিবের দিকে তাকান, তারপর মুখ চাপা দিয়ে হেসে ফেলেন।
“বাপরে! কথা কি সত্যি নাকি?
রাজ চোখ টিপে বলে,
কিন্তু আমি আমার শালিকে ওর সাথে বিয়ে দিবো না মামনি?
এই কথা শুনেই লাবিব এগিয়ে আসে, দুই হাত কোমরে রেখে বলে,
দেখেছো মা! আমি ব্রো’র প্রেমে সাহায্য করি, আর ব্রো আমার প্রেমে দাঁড়াই বাধা হয়ে! এইটা কেমন বিচার!
রূপা বেগম হেসে পেলেন ওদের ঝগড়া দেখে।
লাবিব ঠোঁটে ভঙ্গিমা এনে বলে,
মা তুমি বলতো ব্রো’র তো বিয়ের বয়স হয়েছে তাই না? এখন বিয়েটা করে ফেলুক তাহলে তো আমার লাইনটাও ক্লিয়ার হয়ে যায়।
রাজ থামিয়ে বলে,
আরে চুপ কর বেয়াদব। বড় ভাই ও মায়ের সামনে বিয়ের কথা বলতে লজ্জা লাগছে না।আর আমার শালি টাকে ওমন ভাবে বকলি কেন বেচারীর মুখের হাসিটাই মিলিয়ে গেছে ভয় পেয়েছে মনে হয় ।
লাবিব হেসে বলে,
না আমার লজ্জা করে না। লজ্জা নারীর ভূষণ আমি কেন পাবো আমি তো জেন্টলম্যান।তোমার মত বড় ভাই থাকলে লাজ লজ্জা ভেঙে বিয়ের কথা বলতেই হয়। আর মায়ের ও তো দাদীমা ডাক শুনতে ইচ্ছা করে তাই না। তুমি তো ইচ্ছে করে আমার বিয়ে দিবেনা শেষে দেখা যাবে আমি দাদা ডাক শোনার বয়সে বাবা ডাক শুনবো। আর তোমার শালিকা ভয় পায়নি ব্রো লজ্জা! আমার মতো সুন্দর, স্মার্ট, ছিমছাম ছেলেকে দেখলে তো লজ্জা পাবেই।
এই কথা শুনে রূপা বেগম, রাজ দুজনেই একসাথে হেসে ওঠেন। রুপা বেগম গিয়ে লাবিবের কান টেনে ধরে, খুব বিয়ের সব জেগেছে তাই না।
উফ মা ছেড়ে দাও না, দেখো আমার যদি কান ছিড়ে যায় আমাকে বিয়ে করবে না কিন্তু কেউ।
ওর কথায় রাজ আর রুপা বেগম দুইজনেই হেসে ওঠে ।
রূপা বেগম মুখে হাসি, চোখে জল নিয়ে বলেন—তোমাদের জনকে দেখে আমার গর্ব হয়। কারণ তোমরা দু’জনেই আমার কষ্ট কমিয়ে দিলে।
আমার আর কষ্ট করে তোমাদের জন্যে মেয়ে খুঁজে লাগবে না।
তোমাদের পছন্দ দেখে আমি অবাক হয়েছি, আর খুশিও।
বউমা… দু’জনকেই কিন্তু আমার ভারী পছন্দ হয়ে গেছে!
তারপর হঠাৎ গলা শক্ত করে বলেন—
–কিন্তু এইভাবে আর কতোদিন? আবার কবে জানি কী হয়!
এইবার আমার ঘরের লক্ষ্মীদের ঘরে আনার ব্যবস্থা করো।
বিয়েটা পাকাপাকি করো—আমার ঘর আলো করে উঠুক।
লাবিব আর রাজ দু’জনেই একে অপরের দিকে তাকিয়ে হেসে ফেলে,
রাজ হাসতে হাসতে বলে,
–মামনি, তুমি না বললে বোঝতাম না তুমি এতটা রেডি!
লাবিব বলে,
–মা, তাহলে বিয়ের ব্যবস্থা করে ফেল?ব্রো’র ব্যাপারটা আমি জানিনা কিন্তু আমি বিয়ে করতে এক পায়ে রাজি।
হঠাৎ রূপা বেগমের মুখটা কঠিন হয়ে গেল। কণ্ঠে দৃঢ়তা—তোমাদের বিয়ে কোনো সাধারণ বিয়ে হবে না।
তোমাদের বিয়ে হবে আমাদের শত্রুদের ধ্বংসের মাধ্যমে!
তোমরা প্রস্তুতি নাও.. সময় এসেছে শত্রুর মুখোমুখি হওয়ার!
রাজ আর লাবিব একে অপরের দিকে তাকিয়ে ঠোঁটের কোণে এক চিলতে দুর্দান্ত হাসি এনে বলল—
– অবশ্যই, মামনি। এবার খেলাটা জমবে।
রূপা বেগম শক্ত ভঙ্গিতে ঘাড় নেড়ে বেরিয়ে গেলেন, পিছনে রয়ে গেল সেই অদ্ভুত থমথমে উত্তেজনা।
যেনো সামনে কিছু বড় কিছু অপেক্ষা করছে…
হলুদের ঘোর, গানের ছন্দ আর চারপাশের কোলাহল থেকে নিজেকে একটু আলাদা করতেই মেহরিন এসেছে নিরিবিলি একটা ঘরে। ঘরটা ফাঁকা, বাতাসটা একটু ঠাণ্ডা। হাত মুখ ধুয়ে আয়নায় চোখ রাখতেই নিজের ক্লান্ত মুখটা দেখে একটু থমকে যায় সে। চোখে-মুখে হালকা বিরক্তি। আজ সারাটা দিন যেনো তার ওপর দিয়েই যাচ্ছে।
হাত মুছতে মুছতে দরজার দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলো মেহরিন, ঠিক তখনই সামনে এসে দাঁড়ায় কেউ। চোখে-মুখে অদ্ভুত এক অভিব্যক্তি নিয়ে—আরাফ খান।
রিদ-এর ফুফাতো ভাই। চোখে এক ধরনের কুৎসিত কৌতূহল। মুখে একরাশ ঠাণ্ডা হাসি।
মেহরিন এক মুহূর্ত থমকে যায়। বুকের মধ্যে ধুকপুক ধ্বনি। তারপর চোখ শক্ত করে সে সোজা দাঁড়িয়ে যায়।
— কিছু বলবেন ভাইয়া?ঠাণ্ডা অথচ স্পষ্ট কণ্ঠে বলে ওঠে সে।
আরাফ ঠোঁটের কোণে অশালীন এক হাসি টেনে বলে, তোমাকে আজ অসাধারণ লাগছে।
মেহরিনের চোখে তীব্র অস্বস্তি। মুখ শক্ত করে বলে, ধন্যবাদ। এখন সরে দাঁড়ান, আমি যাবো।
কিন্তু আরাফ সরে না। বরং এক পা সামনে এগিয়ে এসে বলে, তোমার মেহেদি খুব সুন্দর হয়েছে, এই বলে হঠাৎ মেহরিনের হাতটা ধরে ফেলে।
আর সাথে সাথেই…
ঠাসসসসস!
একটি সজোর থাপ্পড় এসে পড়ে আরাফের গালে। এমন থাপ্পড় যা শুধু রাগ না, অপমান, ঘৃণা আর প্রতিবাদের মিশেল।
ঘরটা স্তব্ধ। আরাফ চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকে।
মেহরিনের চোখদুটো যেনো আগুন ছুঁড়ছে।
সে গর্জে ওঠে, মেয়ে দুর্বল ভেবে ভুল করবেন না। আর একবার ছোঁয়ার চেষ্টা করলেই হাত ভেঙে দেবো।
আরাফ হতবাক। গালটা লাল হয়ে উঠেছে। সে কিছু বলার আগেই মেহরিন তাকে ঠেলে পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে যায়।
হলুদ, গানের দিন, কিন্তু মেহরিন আজ দেখিয়ে দিলো—একটা মেয়ে যখন প্রতিবাদ করে, তখন সে একাই শত সহস্রের সমান।
আরাফ খান দাঁড়িয়ে আছে স্তব্ধ, চোখে-মুখে অবিশ্বাস, রাগ আর লজ্জার ছাপ। গালে এখনো রাঙা সেই থাপ্পড়ের দাগ। যেনো কেউ তার মুখে আগুন ছুঁড়ে দিয়েছে। চারপাশটা নিঃশব্দ, হাওয়াটাও যেনো থেমে গেছে।
এক পা পিছিয়ে দাঁড়িয়ে মেহরিন, চোখে আগুন, বুক ওঠানামা করছে রাগে। একা এসেছিলো হাত মুখ ধুতে—কিন্তু এই একাকিত্বে কেউ তার সুযোগ নিতে চাইবে, সেটা সে কল্পনাও করেনি।
আর তখনই…
ঘটনাস্থলের একটু পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা এক ভদ্রলোক, রাজের নিযুক্ত মানুষ, যিনি পুরোটা চোখের সামনে দেখেছেন—আরাফের সেই অশোভন আচরণ, মেহরিনের তীব্র প্রতিবাদ, আর সেই জ্বালাময়ী থাপ্পড়।
তিনি এক পা বাড়িয়ে এগিয়ে যেতে চেয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু মেহরিন যেভাবে পরিস্থিতি সামলে নিয়েছে, তাতে থেমে যান। নিজেই মনে মনে বলেন,
এই মেয়েটার সাহসের সামনে তো আমিও দাঁড়াতে পারলাম না।অবশ্য আমার আগে ভাবা উচিত ছিল রাজ শিকদারের মাথায় একজন মানুষ দুর্বল কোন মেয়েকে পছন্দ করবে না।
আর…
ল্যাপটপে তাকিয়ে থাকা রাজ পুরো দৃশ্য দেখে ফেলে। ঠোঁটে মিশ্র হাসি, বিস্ময় আর গর্বের ছোঁয়া। কপাল ছুঁয়ে এক হাত তালি দিয়ে জোরে বলে ওঠে:
হাব্বাস! Moonbeam!
তার চোখ জ্বলজ্বল করে উঠে।
এই দিনের কথা, এই মুহূর্ত—আরাফ খান কোনোদিন ভুলবে না।
আর মেহরিন?
সে সোজা একরাশ সাহস নিয়ে ফিরে যায় ভেতরের দিকে। আজ সে প্রমাণ করেছে, সে কারো ছায়ায় দাঁড়িয়ে নয়—নিজের আলোয় জ্বলে ওঠে।
রাজ টেনে টেনে বলে উঠল,
এই… না হলে গ্যাংস্টার আর টপ বিজনেসম্যান রাজ শিকদারের হবু বউ! এমন অ্যাটিটিউড না থাকলে চলে?
তার গলায় ছিল গর্বের স্পর্শ। চোখে আগুন আর ঠোঁটে হাসি। কিন্তু একা সে না, পুরো ঘটনা দেখেছে লাবিবও। সেও এসে যোগ দিল কথায়।
আমার ভাই যেমন ডেঞ্জারাস, লাবিব হাসি চেপে বলল,
ভাবি তেমন অ্যাটিটিউড কুইন! তোমাদের জুটি একদম ওপরে থেকে সেট। একজন মাস্টারমাইন্ড আরেকজন ঝাঁসি কি রানী।
রাজ এক গাল হেসে লাবিবকে কাঁধে ধাক্কা দিয়ে বলল,
বুঝতেই হবে ভাই… বউটা কার!
লাবিবও মুচকি হেসে মাথা নেড়ে সম্মতি জানাল।
ঠিক তখনই রাজ হঠাৎ করে হাত উঁচু করে একটানা গান বাজালো,
মেহরিনের সপ্নরঙ পর্ব ২৭
হেই নেশা… নেশা…
ও নেশা…নেশা….
নেশা….. নেশা..
লেগেছে প্রেমের নেশা..
জাগে লায়লা মুজনুর মনে ভালবাসা…
আর সেই গানের তালে এক ঝটকায় দু’ভাই একসাথে নাচতে শুরু করল। সে কি নাচ।দুই ভাই একপ্রকার উরাধুরা নাচছে।