মেহরিনের সপ্নরঙ পর্ব ৩৯
মির্জা সূচনা
মেহেরের মনটা হঠাৎ করেই খারাপ হয়ে গেল।
কোন কারণ ছাড়াই অকারনেই মনটা খারাপ হয়ে গেল।রিদ শুধু মেহুর নাম নিচ্ছে কই মেহেরের নাম তো নিচ্ছে না। রিদকে তো ভালো করে চেনেই না মাত্র কিছুদিনের পরিচয় বন্ধুত্ব হয়নি তবু বুকের ভেতরটা যেনো টনটন করছে।
মেহের নিজেই বুঝে উঠতে পারছে না—এ কিসের অভিমান কেনো এই খারাপ লাগা?
— আচ্ছা, তাহলে আমি যাই,” বলল মেহের হেসে।
তুষার বলল, এখনই চলে যাবে? আরেকটু বসো না।
মেহের হালকা হাসি দিয়ে বলল, “আজ অফিসে অনেক কাজ, কাল বাংলাদেশে যাচ্ছি। সব কাজ গুছিয়ে না গেলে পাপার একা একা সব কিছু সামলাতে প্রবলেম হয়ে যাবে।
রিদ একটু অবাক হয়ে বলল,
— পাপা মানে… ফিরোজ আঙ্কেল ওনি তো এখানে থাকেন না। আর উনি তো বিজনেস করেন না জব করেন, তাই না?
মেহের হেসে বলে,
— হ্যাঁ, বাবা জব’ই করে । আর ‘পাপা’ বিজনেসম্যান। পাপা আর বাবা দুজনেই আলাদদ বুঝলেন।
রিদ ভ্রু কুঁচকে বলল,
— মানে?
মেহের বলে,
— অন্য কোনোদিন বলব।
পাশ থেকে জেরির ফোন আসে।
ওকে এখনই বের হতে হবে, গাড়িও আনেনি, তাই রিদ তুষারকে বলে ওকে এগিয়ে দিতে।
জেরি তুষারের সাথে চলে যায়।
এবার শুধু মেহের আর রিদ।
দুজনের মধ্যে একটা নিরব—রীতিমতো ঝড় বইছে ওদের ভিতরে।
একটা অদৃশ্য টান।
মেহের এগিয়ে চলছে, পিছনে রিদ।
মেহের ভাবছে,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
আমি কি বেশি ভেবে ফেলছি? রিদ তো মেহরিনকে চেনে। আমি আর মেহু যেহেতু জমজ বোন তাই হয়তো আমাদের কতটা মিল আছে সেটা দেখার জন্যই বলে।
অন্যদিকে, রিদের মনেও অস্থিরতা।
মেহরিনের জন্য ভালো লাগাটা ছিল একরকম, কিন্তু এই মেহের? তার চোখ, তার কথা বলা তার চুপচাপ হাঁটা, আমার হৃদয়টাকে এমন নেড়ে দিচ্ছে কেন? আমি কি মেহরিনের ছায়ায় মেহেরকে খুঁজে নিচ্ছি?কেন বারবার ওর ওই নীল চোখে হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করছে আমার?কেন হচ্ছে আমার সাথে এমন? কেন ওর কাছে থাকলে পাশে থাকলে ভালো লাগছে?
তাদের কেউ কিছু বলছে না।
তবুও দু’জনের মাঝে একটা অনুভব জড়িয়ে আছে।
হঠাৎ রিদ মেহেরকে ডাকে—
— “মেহের।”
মেহের পেছনে ঘোরে না, কিন্ত থেমে যায়।
রিদ এগিয়ে আসে। মেহেরের সামনে দাঁড়িয়ে বলে,
— আমরা কি বন্ধু হতে পারি?
মেহের একটু অপ্রস্তুত হয়।
তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে বলে,
—আপনি যদি মেহুর বন্ধু হতে পারেন, তাহলে আমারও হতেই পারেন… হ্যাঁ, অবশ্যই হতে পারেন।
সে হাত বাড়িয়ে দেয়।
রিদ ঠোঁট কামড়ে হাসে।
মেহেরও হেসে ফেলে।
ঠিক সেই সময়, একটা দামি গাড়ি গর্জন তুলে ওদের পাশে আসে।গাড়ি চালানোর ভাব দেখে বুঝা যাচ্ছে ড্রিঙ্ক করে ড্রাইভ করছে।এরা হচ্ছে বড়লোক বাপের বিগ্রে যাওয়া সন্তান।
গাড়িটা মেহেরের খুব কাছ ঘেঁষে চলে যায়।
হঠাৎ রিদ এক টানে মেহেরকে নিজের দিকে টেনে নেয়।
মেহের গিয়ে পড়ে যায় রিদের বুকে।
রিদের পারফিউম আর ঘামের গন্ধে মিশে থাকা যাযালো গন্ধ আর শরীরের উষ্ণতা যেনো মেহেরের সমস্ত স্নায়ু শিথিল করে দেয়।
তার হৃৎস্পন্দন বেড়ে যায়।
ওর দেহ কাঁপতে থাকে—আর সেই কাঁপুনির মাঝে সে অনুভব করে, রিদের বুকেও জোরে জোরে ধুকপুক করছে।
মেহের কান পাতে রিদের বুকে পরিষ্কার শুনতে পাচ্ছে সেই স্পন্দন।
সে মাথা তোলে—রিদের চোখ লাল, নাকের পাটা ফুলে উঠছে রাগে আর ঘন ঘন শ্বাসে। ঠোঁট নরছে।
রিদ দাঁত চেপে গাড়ির দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে ওঠে,
— Hey bloody b******! Stop!
কিন্তু মেহের কিছু শুনতে পাচ্ছে না।
সে শুধু দেখতে পাচ্ছে রিদ কিছু বলছে,যার জন্য রিদের ঠোঁট গুলো নড়ছে, মেহের এক ধ্যানে তাকিয়ে থাকে পর্যবেক্ষণ করতে থাকে খুব কাছ থেকে রিদকে।
তাদের চারপাশে অনেক মানুষ,থাকা সত্ত্বেও মেহেরের মনে হচ্ছে আশেপাশে কেউ নেই।
মেহেরের চোখে শুধু রিদ।
এ যেনো কোনো সিনেমার দৃশ্য।
পাশে কোথা থেকে যেনো বাজছে এক স্লো রোমান্টিক গান।
মেহের মনে মনে বলে ওঠে,
হায় আল্লাহ! আমি কি কোনো স্বপ্নে এসে পড়লাম?
ঠিক তখন, রিদ মেহেরের এক কদম কাছে এসে আর তার ঠোঁটে ঠোঁট ছুঁইয়ে দেয়।
মেহের প্রথমে চমকে উঠলেও পরক্ষণে চোখ বন্ধ করে নেয়।
দুজনেই ডুবে যায় সেই আবেগীও মুহূর্তে।
তাদের ঠোঁট এক হয়ে যায়, ভালোবাসা নামক এক বন্য আবেগে।
রিদ মেহেরের কপাল, নাক, গাল—সব জায়গায় চুমু খেতে থাকে।
মেহের শিহরিত হয়, কিছু বলার শক্তিও হারিয়ে ফেলে।
ঠিক সেই মুহূর্তে…
রিদ আবার মেহেরের ঠোঁট আঁকড়ে ধরে।
ঠিক তখনই শরীরে একটা ঝাঁকুনি অনুভব করে মেহের। ভালো করে তাকিয়ে দেখে রিদ তার বাহু ধরে ঝাঁকিয়ে বলছে, ঠিক আছো তুমি? এই মেহের! কথা শুনতে পাচ্ছো?
মেহের বুঝে যায়, এতক্ষণ সে জেগে থেকেও জাগরণে স্বপ্ন দেখছিল। রিদের দিকে তাকিয়ে ভাবে, ” oh noooo! এতক্ষণ আমি কী ভাবছিলাম ছিঃ! ভাগ্য ভালো উল্টাপাল্টা কিছু বলিনি বা করিনি, না হলে আমার মানসম্মান তো রাস্তায় গড়াগড়ি খেতে খেতে ইঁদুরের গর্তে ঢুকে যেতো। আমি… আমি তো পাগল হয়ে যাচ্ছি। কেউ জেগে জেগে এমন স্বপ্ন দেখে নাকি ছিঃ। আই হেট মাই মাইন্ড .. আমার মাইন্ড কবে থেকে এত খারাপ হয়ে গেল।
মনকে গাল দিতে দিতে রিদের দিকে ফিরে একটা কেবলা হাসি দিয়ে বলে, সরি, সরি, আমি… ও ওই আসলে… আ আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে বাই!” বলেই দৌড়ে সেখান থেকে চলে যায়।
কিছুটা এগোতেই রিদ ডাকে, এই মেহের! কী হলো? তোমার কোনো সমস্যা হলে আমাকে বলো!
মেহের আবার এগিয়ে এসে রিদের সামনে দাঁড়ায়। অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে বলে, আপনার ফোনটা দিন।
রিদ একটু অবাক হয়ে তাকিয়ে ফোনটা বের করে দেয়। মেহের নিজের নাম্বার টাইপ করে দেয় আর দ্রুত পায়ে সেখান থেকে চলে যায়। যাওয়ার সময় দুইবার হোঁচট খায়। সেটা দেখে রিদ বলে, মেহের, আস্তে!
মেহের পেছনে ফিরে আবার একটা দাঁত বের করে হাসি দিয়ে বলে, আমি পড়িনি তো, দেখলাম আপনি দেখলেন কিনা!” বলেই কোনোরকমে পালায়।
রিদের চোখের আড়ালে গিয়ে বুক চাপড়ে শ্বাস নেয় মেহের। “আল্লাহ গো! আর একটু হলেই আমার হার্ট বেরিয়ে আসতো! কী সাংঘাতিক ব্যাপার! এগুলো কী হচ্ছে আমার সাথে! মাবুদ, বাঁচাও আমাকে!
এইসব ভাবতে ভাবতেই সামনে তাকিয়ে দেখে, রিদ আসছে। গায়ে কালো শার্ট, কালো প্যান্ট, চোখে সানগ্লাস। মেহের চোখ কচলে তাকায়। দেখে রিদ হাসছে। বামে তাকিয়ে দেখে, রিদ সাদা পাঞ্জাবি আর পায়জামা পরে হাসছে। ডানে তাকিয়ে দেখে, রিদ সাদা টি-শার্ট আর ট্রাউজার পরে, দুই হাত বুকের ওপর জড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
চার পাশে রিদকে দেখে কান্না-কান্না মুখ করে বলে মেহের, ও আল্লাহ! আমার সাথে কী হচ্ছে! এতগুলো রিদ এল কোথা থেকে!
বলে মুখ ঢেকে ফেলে। তারপর আঙুল ফাঁক করে দেখে রিদ আছে কি না। যখন দেখে নেই, তখন এক দৌড়ে বাসার দিকে চলে আসে।বাড়ির গেটতেই ঢুকতেই দারোয়ান গুড মর্নিং বলে মেহেরকে। মেহেরও গুড মর্নিং বলে তাকায় আর দেখে গেটের পাশে রিদ দাঁড়িয়ে আছে। চোখ কচলে তাকায়, আবার দেখে দারোয়ান। নিজেই নিজের মাথায় গাট্টা মারে মেহের আর বাড়িতে ঢুকে পড়ে।
তারপর রুমে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল শুকাতে থাকে হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে। হঠাৎ আয়নায় তাকিয়ে দেখে, পেছনে দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে রিদ। তাকিয়ে হাসছে। মেহের চোখ বন্ধ করে ফেলে, আবার পিট পিট করে তাকায়, কিন্তু কিছুই নেই।
মেহের ধপ করে বসে পড়ে বিছানায়, নিজের চুল চেপে ধরে বলে, মেহের স্টপ! প্লিজ স্টপ! তা না হলে আমি সত্যিই পাগল হয়ে যাবো!
মেহের রেডি হয়ে বেরিয়ে যায়, অফিসের উদ্দেশে। রিদ ফোন করেছিল—মেহের জানিয়েছে, সন্ধ্যায় দেখা করবে।
অন্যদিকে রাজ মেহরিনের পেছনে পেছনে ঘুরছে। কারণ সে সব ম্যানেজ করে ফেলেছে—আজ রাতেই তারা সাজেক যাবে।
মেহরিনও রাজি ছিল, কিন্তু এখন বেঁকে বসেছে। যাবে না, কিছুতেই যাবে না।
রাজ বারবার বোঝানোর চেষ্টা করছে—কিন্তু মেহরিন গোঁ ধরেছে।
তার একটা মাত্র অভিযোগ—সে “না” বলার পরও রাজ জোর করে ওকে চুমু খেয়েছে।তাই এখন সে যাবে না।
রাজ অনেকক্ষণ ধরে পেছনে পেছনে ঘুরে বোঝানোর চেষ্টা করছিল।
শেষমেশ রাগে-অভিমানে ঝাঁঝালো গলায় বলে বেরিয়ে গেল,
—বালের লাইফ! বালের গ্যাংস্টার আমি। আমার বউরে সামান্য একটা চুমু খাইছি, এই জিনিস নিয়াও এমন করছে যেনো নিজের বউকে না অন্যের বউকে গিয়ে চুমু খেয়েছি সেই অপরাধে হানিমুনে যাবো না! কেন ভাই চুমু খাওয়ার ১০০% অধিকার আছে আমার। আমি তিন কবুল বলে বিয়ে করেছি আর একটা চুমু খেতে পারবা না। এটা কোন বালের নিয়ম? আর কিছু বলাও যায় না… তোমারে কোথায় কোথায় মেরে দাও। তোমার মতো একটা বউ আমার শত্রুর ও হোক! আমি একা কেন জ্বলবো? ওরাও জ্বলুক। তোমার জ্বালাতনে আমার জীবন যৌবন শুকাইয়া কিসমিস হইয়া যাইতেছে।
এই বলে দরজায় এক ধাক্কা মেরে চলে গেল।
রাজ বেরিয়ে যেতেই মেহরিন ফোঁস করে একটা হাসি দিল।
তারপর বিছানার উপর গড়াগড়ি খেতে লাগল হাসতে হাসতে।
এসবটাই সে করছে রাজকে জ্বালানোর জন্য!
ঠিক তখনই দরজায় টুক করে ঠকঠক শব্দ।
রুমে ঢোকে চুমকি, লামিয়া আর মেহবুবা।
মেহরিনকে বিছানায় গড়াগড়ি খেতে দেখে চুমকি বলে,
— এই কি হইছে সোনা? তুই জামাই ছাড়া একা একা গড়াগড়ি খাচ্ছিস কেন?
লামিয়া বলে,
— কেনো জামাইকে নিয়েই গড়াগড়ি খেতে হয়, বুঝি!
মেহবুবা গিয়ে মেহরিনের পাশে বসে।
চুমকি আর লামিয়ার থুতনি ধরে বলে,
— ওলে আমারল ছোট বাবুলে, তুমি জানো না, বিবাহিতরা জামাই ছাড়া গড়াগড়ি খায় না?
একা একা গড়াগড়ি খাইলে কি আমরা খালামণি, তুমি ফুপ্পি হতে পারবা নাকি?
লামিয়া সিরিয়াস মুখে মাথা নাড়ে,
— হ্যাঁ, কথাটা কিন্তু ভুল না।
মেহরিন বালিশ ছুঁড়ে দিল চুমকির দিকে।
চুমকি সেটা ক্যাচ করে নিয়ে বলল,
— দেখেছো? আমি বলি পয়েন্টে পয়েন্টে আর!লাগে জয়েন্টে জয়েন্টে।
মেহরিন মুখ ছোট করে বলল,
— চুপ কর, শয়তান বেডি!
সবাই আবার হেসে ওঠে।
চুমকির ফোনে কল আসে।
চুমকি ফোন স্ক্রিনে চোখ রাখতেই মুখে চাপা হাসি।
মেহরিন সেটা দেখে চট করে বলে,
— অরে বাবা! এতক্ষণ আমাকে বলছিলো। এখন শুরু হবে প্রেম লিলা।
তারপর ঘাড় ঘুরিয়ে লামিয়ার দিকে তাকিয়ে বলে,
— লামু, এবার দেখবে কত ঢং কত পিরিতের কথা বলবে! এখন শুধু দেখো।
লামিয়া হেসে ফেলে।
মেহবুবা হেসে বলে,
— এই চুমকি আপু, তুই সারাক্ষণ এত কথা বলিস কীভাবে রে? আমি তো ক্লান্ত হয়ে যাই শুনতে শুনতে!
চুমকি গম্ভীর মুখে বলে,
— তোমাদের পরে দেখছি। আগে আমার শান্ত বাবাজি কে দেখে আসি।
এই বলে ফোন হাতে নিয়ে ব্যালকনিতে গিয়ে কথা বলতে শুরু করে চুমকি।
মেহবুবা ঘাড় ঘুরিয়ে চেয়ে বলে,
— কি রে ভাইয়া ওমন রেগে মেগে চলে গেলো কেন? কিছু করেছিস বুঝি?
তোর হাহা-হিহি দেখে বুঝাই যাচ্ছে কিছু একটা কান্ড করেছিস।
মেহরিন বলে, কাছে আয় বলতেছি, তারপর একা একা সব বলে।
সব শুনে তিনজনেই হেসে কুটিকুটি।
লামিয়া বলে,
— ভাবিমণি, তুমি আমার ভাইয়াকে একদম পেইন দিচ্ছো! এটা ঠিক না কিন্তু।
মেহবুবা কপাল ঠুকে বলে,
—হ্যাঁ রে, বেচারা ভাইয়া!
মেহরিন চোখ টিপে মুচকি হেসে বলে,
— ঠিকই করেছি! না হলে সারাদিন আমায় জ্বালাতো।
সবাই আবার হেসে ওঠে।
একদিকে রাজ রেগে আছে, চুমকি প্রেমে ব্যস্ত, আর ওরা তিনজন একসাথে বসে দুষ্টুমিতে মেতেছে।
ঘরটা যেন একরাশ প্রাণচাঞ্চল্যে ভরে গেছে।
বিকেলটা যেনো একটু বেশি শান্ত। মেহরিন নিজের ব্যাগ গোছাচ্ছে। পাশে বসে আছে লামিয়া, চুমকি আর মেহবুবা।চারজনের হালকা-পাতলা কথার মাঝে হঠাৎ করেই আসে লাবিব।
— ভাবি! ভাবি! দরজার পাশে দাঁড়িয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে ডাকে সে।
মেহরিন কপাল কুঁচকে বলে,
— কি হইছে লাবিব?
লাবিব একটু ইতস্তত করে মেহবুবার দিকে তাকায়। মেহবুবা মুখ ঝামটা দিয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে নেয়।
— আমার মাথাটা অনেক ব্যথা ধরছে… ভাবি, কফি…
মেহরিন ঠোঁটে হালকা হাসি টেনে বলে,
— তুমি যাও, আমি পাঠাচ্ছি।
লাবিব ‘আচ্ছা’ বলে আবার একবার মেহবুবার দিকে তাকিয়ে চলে যায়।
মেহরিন একটু চুপ থেকে বলে,
— মেহবুবা, যা তো… এক কাপ কফি করে দিয়ে আয়।চিনি একটু বেশি দিস।
মেহবুবা মুখ বাঁকিয়ে বলে,
— একটু করলার রস দিয়ে দিবো নাকি, বল?
মেহরিন হেসে বলে,
— ওটা সময় হলে দিস, আপাতত চিনি দিয়ে দে।
এতক্ষণ চুপ করে বসে থাকা লামিয়া এবার হেসে বলে,
— মেহবুবা, তুমি না ভাবির থেকে মারামারি শেখে ফেলো! ফিউচারে তা কাজ দিবি নিশ্চিত।
মেহবুবা দুষ্টু হেসে লামিয়ার দুই গাল টেনে ধরে বলে,
— ওরে আমার বুদ্ধি ওয়ালী রে!
লামিয়া এবার মেহবুবার গাল হালকা টেনে বলে,
— ওরে আমার ছোটো ভাবি রে!
মেহবুবা খানিকটা লজ্জা পেয়ে উঠে দাঁড়ায়,
— যাহ…
এই বলে সে কিচেনে চলে যায়। কফির মগে সে একটুও চিনি দেয় না। ভিতরে ভিতরে শয়তানি হাসি দিয়ে বলে ওঠে,
— সারাদিন আমাকে ‘ ল্যাদা বাচ্চা’ বলে ডাকে… এখন বোঝ, কেমন লাগে বাচ্চামি করলে!
ঠিক তখনই মালিহা মির্জা ঢুকে। চোখে মুখে সন্দেহ।
—কি রে, কার জন্য এই কফি?
মেহবুবা হাসিমুখে বলে,
— ওই যে… আমার বিয়াই সাহেবের জন্য।
মালিহা মির্জা ভ্রু কুঁচকে বলেন,
— কোন রকম বেয়াদবি করছিস না কিন্তু মেহবুবা! ওদের কাছে আমাদের সম্মান টা রাখিস কিন্তু বেহুদা কিছু করিস না। ওরা আমাদের মেহমান।
মেহবুবা বিরক্তি নিয়ে বলে,
— উফ মা… আমি কিছু করিনি। ঠিকঠাকই দিচ্ছি।
এই বলে সে কফির কাপ হাতে বেরিয়ে যায়—লাবিবের জন্য বরাদ্দ করা ঘরের দিকে।
কফির কাপ হাতে মেহবুবা এসে দাঁড়ায় লাবিবের রুমের সামনে। দরজায় একখানা টোকা দিয়ে বলে,
— আসব?
ভেতর থেকে লাবিবের চেনা কণ্ঠ,
— আসো আসো! তুমি আসার জন্য আবার অনুমতি নিতে হবে নাকি, সোনা?
মেহবুবা মুখ কুঁচকে বলে,
— ছিঃ কি সব বলছেন এইসব! আপনার এই নাটক আর কথার ভাব দেখেই তো মাথা ধরে যাচ্ছে। এতো বাজে না বকে কফিটা খান আর খেয়ে আমাকে উদ্ধার করুন।
লাবিব একটু উদাস গলায় বলে,
—আমার এখন কফি খেতে মন চাচ্ছে না।
মেহবুবা মনে মনে ক্ষেপে ওঠে,
খাবি না তো বানাতে বললি কেন, রে শালা! তুই না খেলে আমার প্ল্যানটাই তো মাঠে মারা যাবে।
এর পর গলা পরিস্কার করে মিষ্টি গলায় বলে,
— খেয়ে নিন না, কত কষ্ট করে বানালাম! আমার কষ্টের কোনো দাম নেই বুঝি?
লাবিব চোখ কুঁচকে মেহবুবার দিকে তাকায়। মনে মনে ভাবে,
কি ব্যাপার! আজ এই মিষ্টি সংলাপ? নিশ্চিত কোনো গ্যাপলা আছে! না হলে এই ল্যাদা বাচ্চা আমার সঙ্গে এমনভাবে কথা বলবে কেন?
লাবিব বলে,
—আচ্ছা, তুমি এত কষ্ট করে বানিয়েছো… তাহলে তুমি আগে খাও, তারপর আমি খাব।
মেহবুবা একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে বলে,
— এমা তাহলে তো এটো হয়ে যাবে। আপনি আমার এটো কফি খাবেন?
লাবিব একটু এগিয়ে এসে নিচু স্বরে বলে,
—সময় হলে শুধু আোমার মুখের খাবার কেন, তোমাকেও…”
মেহবুবা বলে,
— চুপ! চুপ! বুঝতে পারছি, আমি আগে খাচ্ছি।
তারপর মনের ভেতরে চাপা ক্ষোভে বলে,
শালা অসভ্য! না জানি আর কী কী বলতো! ইচ্ছে করছে মুখটাই সেলাই করে দিই!সারাক্ষণ মুখ দিয়ে উল্টাপাল্টা কথাই বেরোতে থাকে।মন চায় একদম মেরে থুতা মুখ ভোঁতা করে দিই।
লাবিব বলে,
— কি হলো? খাও না?
মেহবুবা এক চুমুক কফি খায়, কিন্তু এমনভাবে যেনো কিছু হয়নি।কফি একদম ঠিকঠাক।
লাবিব কফিটা হাতে নিয়ে মেহবুবা যেই জায়গায় ঠোঁট লেগেছিল, সেখানেই ঠোঁট ছুঁইয়ে পুরো কফিটা শেষ করে ফেলে। আর চোখ রাখে মেহবুবার চোখে।
মনে মনে বলে,
আমার বোকা পাখিটা বুঝেই না…শুধু চিনি ছাড়া কফি কেনো সে বিষ দিলেও হাসতে হাসতে খেয়ে নিতাম… আর এইটা তো সামান্য এক কাপ চিনি ছারা কফি, তাও তোমার ছোঁয়া আছে!
মেহবুবা এবার নিজের মাথা চুলকাতে চুলকাতে ভাবে,
কি হলো ব্যাপারটা? কিছু বলছে না কেন?
বলে ওঠে,
— কফি ভালো হয়েছে?
লাবিব কাপটা পাশে রেখে হেসে বলে,
— হুম… আমার জীবনের বেস্ট কফি এটা। থ্যাঙ্কস, এত মিষ্টি একটা কফি খাওয়ানোর জন্য।
মেহবুবা কিছুটা অবাক হয়ে ভাবতে থাকে কি!মিষ্টি কফি?—লাবিব ধীরে ধীরে এগিয়ে আসে।
মেহবুবা নিজের ভাবনায় ডুবে যায়—কফি খেয়ে মিষ্টি বলল? চিনি তো দিইনি!
হঠাৎ লাবিব মেহবুবার কোমর জড়িয়ে ধরে। মেহবুবা চমকে ওঠে,
— এই এই… বিয়াদপ! কি করছেন? ছাড়ুন আমাকে! এটা কেমন ব্যবহার?দেখুন আমি মানছি আপনি বাঁদর। তাই বলে আপনার সব বাদরামি আমি মেনে নিবে না বলে দিলাম।
ছাড়ুন বলছি কেউ দেখে থাকলে কিভাবে হ্যাঁ বেয়াদব অসভ্য বদমাইশ লোক।
লাবিন মেহবুবাকে নিয়েই দরজার পাশে এসে দাঁড়ায়, এক হাতে দরজার ছিটকিনি লাগায়। মেহবুবার বুক ঢকঢক করে ওঠে।
—আ আপনি..
মেহবুবার ঠোঁটে আঙুল রাখে লাবিব,
— কফিতে চিনি দাওনি কেন?
মেহবুবা মুখ নিচু করে মিনমিন করে বলে,
— দিয়েছিলাম তো…”
লাবিব তার মুখটা হাতে তুলে ধরে বলে,
— আমার দিকে তাকাও।
একটা ছেলে তাকায় মেহবুবা কিন্ত চোখে চোখ পড়তেই এক অদ্ভুত কাঁপুনি বয়ে যায় মেহবুবার বুকে। নিঃশব্দে চোখ নামিয়ে ফেলে সে।
— ছাড়ুন আমাকে…”
লাবিব বলে,
— তুমি চিনি দাও নি তাই কফিতে চিনি ছিল না… এখন আমার মুখটাই তেঁতো হয়ে গেছে। এখন কী করব আমি?
মেহবুবা বলে,
—তাহলে আগে বললেন না কেন! নাটক করে খেলেন তো অমৃতের মতো করে! আচ্ছা, ছাড়ুন, আবার বানিয়ে আনছি।
লাবিব হেসে বলে,
— না, দরকার নেই। একটা মিষ্টি দাও, তাহলেই হবে।
মেহবুবা বলে,
আচ্ছা ছাড়ুন আমি মিষ্টি এনে দিচ্ছি।
লাবিব বলে,
উহু, কোথাও যেতে হবে না মিষ্টি এখানেই আছে।
মেহবুবা বিরক্তি মিশিয়ে বলে,
— হ্যাঁ হ্যাঁ… আমি তো ফ্রিজ সঙ্গে করে নিয়ে ঘুরি, তাই না?
লাবিব দাঁতে দাঁত চেপে বলে,
— তুই এত গাধা কেন বলতো? সবসময় মুখ চলে কেঁচির মতো… কিন্তু ঘটে একটুও বুদ্ধি নেই!
মেহবুবা ক্ষেপে বলে,
— এই! তুই তুকারি করছেন কেন?
লাবিব হেসে বলে,
— শুধু এখন কেনো বিয়ের পরেও করব!
‘বিয়ের পর’ কথাটা শুনেই মেহবুবা চুপ করে যায়। বুকের ভিতরকেন যেনো একটা করেছে। অদ্ভুত একটা অনুভূতি হচ্ছে, মনে হচ্ছে পেটের ভিতর প্রজাপতি উড়ছে।
মেহবুবা ধীরে বলল,
— “ছাড়ুন…”
লাবিব ঠোঁট কামড়ে হেসে বলল,
— ইসস… এভাবে বলো না! মাথায় উল্টাপাল্টা কিছু আসে তো।পরে কন্ট্রোললেস হয়ে গেলে কিন্তু আমি দায়ী থাকবো না বলে দিলাম।
মেহবুবা লাবিবের কথার মানে বুঝে ফেলে। ভীষণ লজ্জা পায়, মুখ লাল হয়ে, কান গরম হয়ে উঠে!
মুচড়ে-মুচড়ে করতে থাকে লাবিবের কাছ থেকে ছাড়া পেতে ছুটে পালাতে চায় যেনো, ছাড় পাওয়ার জন্য ছটফট করে।
লাবিব বলে,
—কি হইছে এমন ব্যাগের মতো লাফালাফি করতেছো কেন?
মেহবুবা থেমে গিয়ে বলে,
— আপনি আমাকে ব্যাগ বললেন?
লাবিব ঠান্ডা গলায় বলে,
— না রে, বলছিলাম ব্যাগের মতোই করতেছো।
মেহবুবা চটে উঠে বলে,
—ওই তো এক কথাই! নাকি?
লাবিব হাসে,
— একই না…
মেহবুবা রাগে গিয়ে লাবিবের পায়ে একখানা চাপ দেয়।
লাবিব চটে গিয়ে বলে,
— এমন মারা মারি করছো কেন ল্যাদা বাচ্চা!
মেহবুবা রেগে গিয়ে লাবিবের কাঁধে ঝাঁপিয়ে পড়ে, খামচে ধরে।
লাবিব বলে,
— বিয়ের আগেই লাভ বার্ড বানাছো!দাও দাও সমস্যা নেই,কেউ যদি দেখে জিজ্ঞেস করে কি হইছে, আমি বলে দিবো তুমি কি করছো আমার সাথে!
মেহবুবা বলে,
— শয়তান! খবিশ একটা!
লাবিব মুচকি হেসে মেহবুবার নাকে হালকা ছোঁয়া দিয়ে বলে,
— আমার বোকা পাখি!
মেহবুবা সঙ্গে সঙ্গে লাবিবকে এক ধাক্কা মারে।
মেহবুবা ভাবছিল, ধাক্কা মেরে ছুটে পালাবে, কিন্তু হল উল্টা!
লাবিব পড়ে যায়, আর মেহবুবা পড়ে যায় লাবিবের উপরে।
লাবিব হাসে, মেহবুবার বোকামিতে।
বলে, ধাক্কা দিলেই তোমাকে ছেড়ে দিবো ভেবে ছিলে সোনা।
মেহবুবা বলে,
— খবিশ লোক! আমাকে ছাড়েন!
লাবিব বলে,
— একবার যেহেতু ধইরেই ফেলছি, আর ছাড়ছি না তোমারে।
মেহবুবা হালকা একটু ঝুঁকে কপালে ঠাস করে এক ঘা দেয়! লাবিব সাহে।
মেহবুবা চমকে উঠে বলে,
— এইস! এটা কপাল না পাথর?
— “ইস্! আমার মাথা টা মনে হয় ফেটেই গেলো।
লাবিব হেসে দেয়, তারপর উঠে দাঁড়িয়ে বলে,
— রেডি হও। ভাইয়ারা ফিরে আসলেই তোমাকে আমার ঘরে তুলে নিবো, তখন বুঝবা আমার মিষ্টি কোথায় আছে!
মেহবুবা বলে,
— শয়তান! খবিশ লোক! তোকে আমি বিয়ে করবো না!
লাবিব হেসে বলে,
— কিন্তু আমি তো তোকেই করবো! সেটা হোক স্বেচ্ছায়, না জোর করে!
মেহবুবা মুখটা গম্ভীর করে চলে যায় ঘরের বাইরে। বাইরে গিয়েও লুকিয়ে হেসে ফেলে।
লাবিব মাথা চুলকে ফিসফিস করে,
— তোমায় যে খুব মিস করি বোকা পাখি… তোমায় ছাড়া থাকা এখন অসম্ভব হয়ে গেছে আমার।
রাজ দীর্ঘ সময় পর বাড়ি ফিরেছে। সবার সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ শেষে রুম এ যাওয়ার সময় লাবিবের সঙ্গে দেখা।
লাবিব ঠাট্টার সুরে বলে,
— কি ব্যাপার, ভাইজান? বউ এখন পাত্তা দেয় না নাকি আপনাকে?
রাজ কোনো কিছু না বলে এক লাথি মারে লাবিবের পেছনে।
— সরে সামনে থেকে!
লাবিব হেসে বলে,
— আমার সাথেই শুধু পারো, ভাবির কাছে মাইরও খাও! এমনকি বাসর রাতও নাকি ঠিকমতো করতে পারোনি! চুমু-টুমু কিছু খেয়েছো তো, সন্দেহ হয়…
এই কথায় রাজ রেগে গিয়ে তেড়ে আসে। লাবিব দ্রুত ঘরে ঢুকে দরজা আটকে দেয়।
রাজ গজগজ করতে করতে নিজের ঘরে ঢুকে দেখে মেহরিন একটা উপন্যাসের বই হাতে নিয়ে বসে আছে।
রাজ দরজা লাগায় শব্দ করে।
মেহরিন মুখ তুলে হেসে বলে,
— কি ব্যাপার? আমার জেদ দরজায় কেনো দেখাছেন।আমার বাপের আপনার মতো ওত টাকা নেই আমার বাপের ক্ষতি করছেন কেনো।?
রাজ কিছু না বলে সোজা এগিয়ে গিয়ে মেহরিনের দুই হাত চেপে ধরে তাকে খাটে ফেলে দেয়। তারপর ঘাড়ে এক কামড় বসিয়ে দেয়।
মেহরিন দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য। তার পর বলে,
— কি সমস্যা আপনার? এমন কামড়াকামড়ি করছেন কেন! অদ্ভুত।
রাজ কামর দেওয়া জায়গাই চুমু দিয়ে মেহরিনের ঘারে মুখ গুঁজে বলল,
— তোমার জন্য আমার ছোট ভাই আমার পুরুষত্ব নিয়ে কথা বলেছে! এটা আমি সহ্য করবো না! সাজেকে গিয়ে সব সুধ নিবো আমি।
মেহরিন আসল ঘটনা বুঝে হেসে ফেলে। তারপর রাজের চুলে হাত বুলিয়ে বলে,
— এই জন্য এত রাগ?
রাজ মুখ তুলে তাকায়,
— বউ, তুমি আমার কষ্টটা বুঝছো না।
মেহরিন রাজের কোলের উপর উঠে বসে বলে,
— সব বুঝি… তবে সবকিছুর জন্য একটা সময় দরকার, তাই না?
রাজ মেহরিনের গালে চুমু দিতে দিতে বলে,
—এত সময় লাগার কি আছে, বউ?
মেহরিন রাজের ঘাড়ে একটা কামড় দেয়।
রাজ হতভম্ব হয়ে চুপ করে যায়।
— বউ আমি তো এত জোরে দেইনি!
— একটা কামড় দিলাম তারও সুধ নিলে তুমি! আমি তো চুমুও দিলাম ওগোর সুধ নাও এখন।
মেহরিন হেসে বলে,
— আমি কিছু ভুলে যায়নি। সময় হলে সব ফিরিয়ে দেবো।
রাজ হেসে তার ঠোঁট ধরে চুমু খায়।
দুজনে ভালোবাসার জোয়ারে ডুবে যায়… সময় থমকে থাকে এক অপূর্ব ঘনত্বে।
কিছুক্ষণ পর রাজ উঠে দাঁড়িয়ে বলে,
— রেডি হও, ঘন্টাখানেক পর বের হবো।
মেহরিন মাথা নাড়ে, সে জানে রাজ যা বলে, তা ঠিক রাখে।
রাত ১১টা। খাওয়া-দাওয়া শেষ। রাজ নীচে বসে সবার সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছে।
মেহরিন রেডি হচ্ছে,
চুমকি হঠাৎ বলে ওঠে,
— সাজেক থেকে ফিরে একটা সুখবর দিবি বইন প্লিজ!
মেহরিন চট করে বলে,
— চুপ থাক।
লামিয়া মুচকি হেসে বলে,
মেহরিনের সপ্নরঙ পর্ব ৩৮
— ভাবিমণি, আমি কিন্তু ফুপি হতে চাই।
মেহরিন হেসে জবাব দেয়,
— সময় হলে সব হবে!
সবাইকে বিদায় জানিয়ে রাজ আর মেহরিন বেরিয়ে পড়ে সাজেকের উদ্দেশ্যে—
একটা নতুন শুরু, নতুন গল্পের দিকে…