love with a slap part 1
আশু
“আজকে আমার মেয়ের বিয়ে মি.আশিস খান আমি খুব শিগ্রই আপনার সব টাকা দিয়ে দিব৷”
_”তর মেয়ের বিয়ে হউক বা তর বিয়ে টাকা আমার আজই চাই মানে চাই৷ আমি ভালো করেই জানি তর কাছে টাকা আছে।”
_”মি.আশিস খান বুঝার চেষ্টা করুন এখন আমি টাকা দিতে পারবো না। ”
আশিস রেগে সোহরাব চৌধুরীর কলার ধরে ঝাঁকি মেরে বলে,,”টাকা কি দিবি নাকি না?”
__দূর থেকে নিজের বিয়ে নিয়ে মেতে থাকা অরশী নিজের বাবার সাথে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা দেখে দৌড়ে যায়। তারপর অরশী কোনোদিক বিবেচনা না করে নিজের বাবাকে আশিসের থেকে ছাড়িয়ে কষিয়ে আশিসকে একটা থাপ্পড় মেরে বলে,,”লজ্জা করে না আপনার বাবার বয়সী মানুষের সাথে এরকম ব্যবহার করতে। আর বাবা তুমি এসব ফালতু লোককে ইনভাইট্ করেছো কেন?”
সবাই স্তম্ভিত হয়ে ওদের দেখতে থাকে।
আশিস রেগে অরশীর পাণে তাকায়। অরশীর পাণে তাকাতেই আশিসের কিছু মনে পড়ে যায়।
_”এরপর কিছু একটা ভেবে আশিস বলে,,you know who i am?”
অরশী বলে,,”not interest now get lost”
আশিস অরশী দিকে এগিয়ে যায়। এরপর অরশীর হাত চেপে ধরে বলে,,”চলো ইন্টারেস্ট আনছি তোমার।”
অরশী বলে,,”ছাড়ুন বলছি, কি করছেন টা কি?”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
অরশী বাবা আটকাতে গেলেও পারে না আশিসের লোক সবার মাথায় রিভলবার তাক করে চেপে ধরে রাখে। অরশী জোরাজোরি করে ছাড়ার চেষ্টা করছে নিজেকে। আশিস একঝটকায় অরশীকে পাজকোলে নিয়ে এগিয়ে যায় একটি রুমের দিকে। অরশীকে বিছানায় ফেলে আশিস রুমের দরজা লাগিয়ে দেয়।
অরশী উঠে এসে আরেকটা থাপ্পড় বসিয়ে আশিসের গালে।
আশিস গালে হাত দিয়ে বলে,,”ওফসস্ বেশি করে ফেললে এবার।”
আশিস তেড়ে এসে অরশীকে বিছানার সাথে চেপে ধরে বলে,,”আজকে বিয়ে ছাড়া বাসর করে ফেলি এই সামান্য শাস্তি না হয় দিলাম কেন জানো cuz uh damn sweet।”
অরশী রেগে আশিসের হাত কামড়ে বলে,,”বাসর করার শখ বিয়ে করে নেন”।
আশিস ভ্রুকুচকে বলে,,”সিরিয়াসলি ?”
অরশী উঠে যেতে নেবে। আশিস অরশীর কোমড় পেচিয়ে নিজের হাঁটুতে বসিয়ে চেপে ধরে বলে,,”বাসর তো করবই আমি আর সেটার সাথী তুই হবি অশী সুইটি” বলে আর দেরি না করে অরশী ঠোঁট নিজের দখলে নিয়ে নেয় আশিস।
বেশ কিছুক্ষণ পর আশিস অরশীকে ছেড়ে দিলে অরশী আবারও তেড়ে আশিসকে চড় মেরে বসে।
আশিস এবার রেগে অরশীর দিকে তাকিয়ে বলে,,,”দেখা হওয়ার পর থেকে যে কয়েকটা থাপ্পড় খেয়েছি তার শোধ না তুলে থামছি না অশী সুইটি। এরপর আশিস অশীকে টানতে টানতে বাইরে নিয়ে আসে।
___”আশিস খান আটাশ বছর বয়সী যুবক। দেখতে যথেষ্ট হ্যান্ডসাম একজন বিজনেসম্যান। তবে শুধু নামে তার প্রতিটা কাজই দুর্নীতিতে ভরপুর৷ আশিসের আসল কাজ নামিদামি বিজনেসম্যানদের টাকা দিয়ে চড়ামূল্যে তা উসুল। এর বাইরে যে যাবে সেদিনই তার জীবনের শেষদিন হবে।আশিসের পরিবার বলতে শুধু তার বাবা যে নিজে ছেলের সাথে যুক্ত না থাকলেও রাজনীতি নিয়ে বেশ আছে। এলাকায় বাপছেলের রাজ্যত্ব চলে বলে ধরা যায়।
___অরশী বাবা মায়ের একমাত্র মেয়ে। অরশী মেডিকেল স্টুডেন্ট। অরশী বাবা একজন নামকরা বিজনেসম্যান তবে তার ব্যাবসার হাল খারাপ যাচ্ছে। যার সম্পূর্ণ সুযোগ আশিস কাজে লাগায়।
______অরশীর দিন ভালোই যাচ্ছিল। সেদিন অরশীদের মেডিক্যাল প্রোগামে একটা কলেজে যেতে হয় স্টুডেন্টদের ব্লাডগ্রুপ টেস্টের জন্য। অরশী চলে আসে। কলেজের এত বড় মাঠ আর সৌন্দর্য দেখে সবাই অনেকটা ঘুরাঘুরিও করে।
কাজের ফাঁকে অরশী পানি খেতে বাইরের বের হতেই দেখতে পায়। সামনে মারামারি হচ্ছে। অরশীর আনচান মনে ছুটে যায়। অরশী দেখতে পায় একটা লোকের মাথায় বেশ আঘাত পেয়েছে। লোকটির গার্ডরা বার বার বলছে গাড়ি আনো তাড়াতাড়ি। অরশী ভিড় ঠেলে নিজের হাতে পানি খাওয়ার জন্য বোতলটি লোকটির মাথায় হাত রেখে সামনে ধরে পানি খাওয়াতে থাকে আর আশেপাশে লোকদের বলে,,,”প্লিজ সরুন ওনাকে একটু খোলামেলা থাকতে দিন। ”
অরশীর গায়ে এ্যাপ্রোন দেখে সবাই একটু দূরে দাঁড়ায়। অরশী নিজের ওরনা দিয়ে লোকটির মাথা থেকে রক্ত মুছার চেষ্টা করে যা লোকটির চোখে এসে পড়েছে।
__একটুপর লোকটি আলতো আলতো চোখে অরশীর দিকে তাকিয়ে বলে,,”i need you sweetie”
তখনই গাড়ি চলে আসে সাথে বড় বড় ডাক্তার। অরশী পিছিয়ে যায়। তবে লোকটির নিজের হাত দিয়ে অরশীর ওরনা আঁকড়ে ধরায় অরশী আর সেটা পায় না।
_______লন্ডনের টাওয়ার ব্রিজের সেতু উপর দাঁড়িয়ে আশিস৷ তার দৃষ্টি টেমস নদীর দিকে। সেদিন তার উপর চালানো এ্যার্টাকে আশিস অনেকটাই ঘায়েল হয়ে গিয়েছিল। আশিসের বাবা নিজের ছেলের জন্য কোনো রিস্ক নিতে চান না তাই হসপিটালে নরমাল ট্রিটমেন্টের পর লন্ডনে নিজের ভাইয়ের কাছে পাঠিয়ে দেন।
___দু’মাস কেটে গেছে আশিস লন্ডনে। দেশে থাকতে মারামারি জোরজুলুম করলেও হত্যাকান্ডে আশিস খুব কমই জড়িয়েছে বা জড়ানোর প্রয়োজন হয়নি।
সেদিনের পর থেকে আশিস আরো চুপচাপ হয়ে গিয়েছে।
__আশিস নিজের রুমে বসে বড় একটা শ্বাস ফেলে বলে,,”অশী সুইটি আমি ফিরছি তোমার জীবনের নরক হয়ে।”
__আশিস ভাবছে সে লন্ডনে আছে তার কারণ,,আশিস ভালো করে জানে অরশীকে ওর বাবা সোহরাব চৌধুরী কখনোই আশিসের কাছে দেবে না। এজন্য আশিস অরশীর বাবার কোম্পানির পেছে লেগে মাত্র পনেরোদিনে কোম্পানিটিকে নিচে নামিয়ে ফেলে। যা সোহরাব চৌধুরী আন্দাজও করতে পারে না।
__এমতাবস্থায় সোহরাব চৌধুরীকে আশিস হেল্প করার প্রস্তাব জানায়। সোহরাব চৌধুরী রাজি না থাকলে আশিসের এমন সুলভ আচরনে রাজি হয়ে যান। যা তার জন্য কাল ছাড়া কিছুই ছিল না। কারণ টাকা নেওয়ার পর ভালোমতো খুঁজ নিয়ে দেখতে পারেন তার কোম্পানি নিচে নামানোতে হাত আশিসেরই ছিলো। তবে এখন সে সম্পূর্ণ নিরুপায়।
___এরপর আশিস চেয়ে বসে অরশীকে সোহরাব চৌধুরীর নিকট। একসেকেন্ড ও অতিবাহিত না করে সোহরাব চৌধুরী সাথে সাথে নাকোচ করে দেন আশিসের প্রস্তাব। একমাত্র মেয়েকে মারামারি করা গুন্ডা মাস্তানের হাতে তুলে দিতে চান না। তবে আশিস তার প্রত্যুত্তরে শুধু স্মিথ হাসে।
___সোহরাব চৌধুরী যখন বুঝতে পারেন তার মেয়ে আর নিরাপদ নেই সাথে সাথে তিনি নিজ বন্ধুর ছেলের সাথে অরশীর বিয়ে ঠিক করেন। অরশী নিজের বাবার কথা ফেলতে পারে না।
___আশিস যখন জানতে পারে অরশী বাবা চালাকি করে অরশীকে বিয়ে দিচ্ছে। প্রচন্ড ক্ষোভে আশিস লন্ডন ছেড়ে বাংলাদেশে চলে আসে।
________অরশীকে টানতে টানতে বাইরে এনে আশিস সোহরাব চৌধুরীর দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো,,”আপনার মেয়েকে তো চেয়েও পেলাম আজকে না হয় তুলেই নিয়ে যায়।”
এদিকে অরশী নিজের হাত ছাড়াতে ব্যাস্ত।
আশিসের কথায় সোহরাব চৌধুরী বলে উঠে,,”তোমার সব টাকা আমি দিয়ে দিব এখুনি। আমার মেয়েকে ছেড়ে দাও, আমার একটামাত্র মেয়ে”।
আশিস অরশীকে টেনে নিজের বাহুতে আবদ্ধ করে বলে,,”ওকে আমার চাই। চাই মানে বুঝেছন? চাই মানে ও আমার।”
আশিস অরশীকে ছেড়ে বলে,,”অরশীর দিকে তাকিয়ে বলে,,বিদায় নাও বাবা মা থেকে, আজ থেকে তুমি আমার কাছে থাকবে”।
___অরশী রেগে আশিসকে আবারও থাপ্পড় মেরে বলে,,,,,”কখনোই না আপনার মতো একটা কালপ্রিটের সাথে এই অরশী থাকবে?”
আশিস নিজের গালে হাত রেখে অরশীর দিকে এগিয়ে এসে বলে,,”এরকম আর কতগুলো থাপ্পাড় জমা করে রেখেছো? অশী সুইটি রাগিও না আমায়, বললাম তোহ্ তোমাকে চাই আমার।”
____অরশী একদম নিশ্চুপ হয়ে নিজের রুমের দিকে যেতে থাকে। আশিস অরশীর যাওয়ার পাণে তাকিয়ে বলে,,”দেখলেন শ্বশুরমশাই আপনার মেয়ে কি ট্যালেন্টেড আমার এককথায়ই রাজি হয়ে গেল৷।”
অরশী নিজের রুমে গিয়েছে পনেরো মিনিট।
তখনই বাইরে থেকে আশিসের একলোক এসে বলে,,”স্যার ম্যাম তো স্কুটি নিয়ে পালাচ্ছে”।
আশিস ভয়ংকর রেগে বলে,,”পালাবে কতদূর সেই তোহ্ আমার কাছেই ফিরতে হবে”