love with a slap part 4+5
আশু
____বাইকের ফিউল ফুরিয়ে বেচারি অরশী মাঝরাস্তায় বসে। এদিকওদিক তাকানোর পর একটা সাইনবোর্ড চোখে পড়তেই বুঝতে পারলো সে দিনাজপুর আছে৷ নিজের কাছে না আছে ফোন না আছে টাকা৷ অরশী বাইকটাকে ঠেলে সামনে যেতেই একটা গ্যারেজের দেখা মিললো অরশী জোরে দম ছাড়ে। ভেতরে দুটো লোক কাজ করছিল।
অরশী এগিয়ে গিয়ে তাদেরকে বলে,,”সে বাইকটা বিক্রি করবে এটার ফিউল শেষ আর কাগজপত্রও নেই বাড়ি যেতে টাকাও নেই।”
লোকদুটোর মধ্যে একজন বললো,,,” এভাবে আমরা কিনতে পারি না মেডাম চুরির জিনিসও তোহ্ হতে পারে৷”
অরশী একটু থতমত খেয়ে বলে,,”আমাকে চোর মনে হচ্ছে আপনার। আচ্ছা বেশ আপনি বাইকটা নিজের কাছে রেখে আমি কিছু টাকা দিন আমি পরে এসে নিয়ে যাবো।”
লোকটি এবার নড়েচড়ে বলল,, “কত চান?”
অরশী বলে,,”একলাখ দিন ‘
লোকটি বলে,,”কি বলেন মেডাম এতো টাকা?”
অরশী বলে,,” নব্বই হাজার দিন আর দামাদামি করবেন না প্লিজ।। ”
বাইকটা চেক করে লোকটা অরশীকে নব্বই হাজার টাকা দিয়ে দেয়। অরশী টাকা গুণতে গুণতে আকাশের দিকে তাকিয়ে বলে,, “খোদা বেচারাকে ভবিষ্যতে বাইকের টাকা দিয়ে দিব পাপ নিও না আমি অসহায় বান্দা এবারের মতো মাফ করে একটা বাস পায়িয়ে দাও।”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
অরশী সামনে হাঁটছে কারণ এখানে অটোরিকশা ছাড়া বাস কাউন্টারের দেখা নেই। খিদেও পেয়েছি বেচারি আর না পেরে রেস্টুরেন্টে চলে আসে। একদম শান্তি মতো পেট ভরে খাওয়ার পর অরশী উঠে দাঁড়ায়।
রেস্টুরেন্ট থেকে বেরুতেই অরশী সামনে এক বৃদ্ধা এসে বলে,,”মারে খায় না পাঁচদিন কিছু টাকা দে”
অরশী বলে,,”বুড়ি তুই পাঁচদিন কেমনে না খেয়ে আছত আমি কালকে একবেলা না খেয়েই মরতে নিছিলাম। ”
বৃদ্ধা থতমত খেয়ে বলে,,”আরেহ্ মা গরিব তোহ্ সহ্য করে নিয়েছি”
অরশী বলে,,”আমি মেডিকেল স্টুডেন্ট এসব ধান্দা বাদ দে পাঁচদিন না খেলে এত কড়া রৌদে হাঁটছিস কীভাবে? এই নে বুড়ি একশ টাকা রাখ আর এসব ভন্ডামি ছেড়ে কিছু কর “বলে অরশী যেতে নিলে,,
বৃদ্ধা অরশীর যাওয়ার পাণে তাকিয়ে বলে,,”ছেমরি তর কথায় তো আমার ভাত আইবো”
অরশী ঘুরে বলে,,”ভাত না আসলেও বিরিয়ানি পাবি বুড়ি চেষ্টা করে তো দেখ হাহ্”
_____বাস কাউন্টারে অরশী টিকেট কেটে দাঁড়িয়ে আছে। তখন সামনে একটা ছেলে স্মোক করছিল। অরশী না পারছিল পেছাতে না এগোতে মানুষজন ঠেলে দাঁড়িয়ে বাস এসে পড়বে।
অরশী ছেলেটাকে বলে,,”পাবলিক প্লেসে বিড়ি টানা বাদ দাও ভাই।”
ছেলেটি ঘুরে বলে,,”কেন পাবলিক প্লেস কি তর বাপের?”
অরশীর মেজাজ খারাপ হয়ে যায়,,অরশী বলে,,,”তর বাপের কীনা জানি না তবে আমার বাপের ঠিকই কারন আমার বাপ তো পাবলিক ভাই”
ছেলেটি এবার সিগারেটের ধোঁয়া অরশীর মুখের সামনে ছাড়ে,, ব্যাস বেচারির রাগ আর কন্ট্রোলে থাকে না। ঠাটিয়ে একটা চড় মারে ছেলেকে। এবার ছেলেটিও ভীষণ রেগে অরশীর দিকে তেড়ে আসবে অরশী একটু হকচকিয়ে দৌড় লাগায় কারণ ছেলেটার সাথে তার পারা তো বোধগম্য নয়। আর পাবলিক তে মজা নেওয়ার মধ্যে আছে।
অরশী সামনে একটু যেতেই দেখতে পায় আশিস দাঁড়িয়ে পেছনে তার দুটো গার্ড। অরশী দাঁড়িয়ে যায় পেছনে বাঘ সামনে আগুন বেচারি পড়ে যায় ধাঁধায়।
ছেলেটি অরশী কাছে আসামাত্র আশিস তেড়ে গিয়ে
ছেলেটিকে পেটাতে থাকে৷ অরশী ভাবছে,,এ আমাকে পায় কীভাবে বার বার?
তারপর অরশী চোখ যায় বাস চলে যাচ্ছে। অরশী দৌড়ে বাসে উঠে,,চিল্লিয়ে বলে,,,”ধন্যবাদ শালাবাবু ”
আশিসের যাখন হুশ আসে অরশী আবার চলে যাচ্ছে। আশিস চেঁচিয়ে বলে,,”শালী নাম বলছি তকে পেলে আমি আস্ত জবাই করব”
অরশী একটা ফ্লাইং কিস ছুঁড়ে বলে,,”উম্মাহ শালাবাবু টাটাটা”
আশিস রেগে মারতে থাকা ছেলেটিকে জোরে একটা লাথি মেরে বলো,,”শিট্ দম কতো আমার জান পুরা তেজপাতা বানিয়ে ঘুরছে শালীর বাচ্চা”
বাসের ভিতর গিয়ে নিশ্চিন্তে সিটে মাথা হেলিয়ে দেয় অরশী। এত ধকলে ঘুমানোর সময় কই। তাই বাসেই ঘুমিয়ে পরে। বাসটি ধীর ধীর যানঝট পেরিয়ে রাজশাহী থামে। অরশী বাস থেকে নেমে সোজা শপিংয়ে চলে যায়। রাজশাহীতে অরশী একটা বেস্টফ্রেন্ড যার বিয়ে অরশী না করে দিয়েছিল তবে যা অবস্থা অরশী ভাবছে কিছুদিন নিজের বান্ধবীর বিয়ে খেয়েই কাটাবে।
অরশী একটা ফোন কিনে সাথে সাথে নিজের বাবার কাছে ফোন দিয়ে বলে,,”বাবা কেমন আছো?”
অরশী বাবা বলে,,”আমরা ঠিকআছি মা তুই কোথায়”?
অরশী বলে,,”যেখানেই থাকি তোমার ফোন এটা বন্ধ করে ফেলো আশিস হয়ত জেনে যাবে আমি ফোন দিয়েছি, বাবা আমাকে এখন ইমিডিয়েটলি টাকা পাঠাও কিছু।”
অরশী ফোন কেটে দেয়। তারপর নিজের একাউন্ট খুলে দেখে টাকা এসে গেছে। অরশী খুশি খুশি মনে নিজের বান্ধবীর বাসায় যাওয়ার জন্য বাসে উঠে।
অরশী বাসে উঠতেই আশিস বেরিয়ে আসে আর অরশী বাসের পাণে তাকিয়ে বলে,,”এবার জানেমান সুইটি তোমাকে তোহ্ আমার হতেই হবে শালী, পইপই করে সব উসুল করব আমাকে ঘোরানো বেয়াদব মহিলা। ”
অরশী নিজের বান্ধবীর বাসায় চলে আসে। অরশীর বান্ধবী দীপা যার বিয়ে। অরশীকে দেখে তো দীপা শকড্ আর খুশিতে জরিয়ে ধরে লাফাচ্ছে। অরশী বলে,,”ইয়ার তর বিয়ে না এসে পারলাম না এবার বেশ কয়েকদিন থাকব ঘুরব মজা করবে দোস্ত।”
দীপা বলে,,”সে আর বলতে”
অরশীকে রুম দেওয়া হয়,, অরশী ক্লান্ত হয়ে বিছানায় আরামে ঘুমিয়ে পড়ে। সন্ধ্যাবেলা অরশী নিজের একাউন্টে যেতেই দেখতে পারে আশিস মেসেজ দিয়েছি,,”শালী তোকে আমার বাচ্চার মা না বানিয়ে ছাড়ছি না, যতই পালিয়ে যাস শেষমেশ আমার বাচ্চার মা ডাক তকে শুনতেই হবে”
অরশী বিরক্ত হয়ে বলে,,”মর তুই শালা”
এরপর আশিসকে ব্লক করে অরশী বেরিয়ে আসে।
সকাল সকাল সারা বাড়িতে বিয়ের আমেজ। অরশী বিয়েতে এটেন্ড করা হলেও এমন গ্রাম্য বিয়েতে আসা এই প্রথম। কফি কালারে একটা ড্রেস পড়া চুলগুলো কোনোমতো খোপা করে বেরিয়েছে। তখনি দীপার মা এসে বলে,,”মা তুমি নাস্তা করে নাও আসো আসো”
অরশী দীপার মার সাথে খাবার টেবিলে বসা মাত্রই দীপার মা খাবার বেড়ে দিচ্ছিল আর বলছিল। অরশী খাচ্ছিল। দীপার সাথে অরশীর বন্ধুত্ব কলেজ লাইফ থেকে। দীপা ঢাকায় ওর মামা বাসা থেকে পড়াশোনা করত। সে হিসেবে অরশীকে দীপার বাড়ির সবাই চিনে। আর অরশীও দীপার পরিবারের সাথে বেশ ভালো সম্পর্ক। দীপার মা অরশীকে বলে উঠে,,”মা তুমি দীপার বিয়ের পরও বেশকদিন থাকবে এই প্রথম রাজশাহী এসেছো এতো সহজে ছাড়ছি না৷” অরশী মুচকি হেসে মাথা নাড়ায়।
তখনই ছোটবড় সব হৈ-হুল্লোড় করতে করতে বের হয়। সবার মুখে একটাি কথা “ক্যাপ্টেন” আসছে ।
অরশী খাওয়া শেষে দাঁড়িয়ে বলে,,”এ আবার কোনো শালা মনে হচ্ছে সবগুলোর মাথা কিনে রেখেছে।”
পাশ থেকে দীপা এসে বলে,,”রাতেই উঠতি দোস্ত”
অরশী দীপার কথা ইগনোর করে বলে,,”কোন ক্যাপ্টেন আসছে রে?”
দীপা বলে,,”তোকে বলেছিলাম আমার চাচাতো ভাই ঢাকা থাকে। ”
অরশী বলে,,’এমন চিল্লাছে কেন সব?”
দীপা বলে,,”আরে আশিস ভাই মানে ক্যাপ্টেন এত হ্যান্ডসাম্ আর বাড়ির একমাত্র ছেলে তাই তো সবার মাথার তাজ ”
অরশী আশিস নাম শুনে একটু ঘাবরে বলে,,”কোন আশিস?”
অরশীর কথার মাঝে হলরুমে প্রবেশ করে আশিস। আশিসকে দেখে অরশীর স্তব্ধ হয়ে যায়। যার জন্য পালাতে পালাতে এতদূর এখন আবার তারই খাঁচায়। আশিস অরশীকে দেখে মুচকি হেসে এগিয়ে আসতে নেয়। অরশী দীপাকে বলে,,”এ তোর ভাই তুই সিওর?”
দীপা সোজা আশিসকে বলে,,”কেমন আছো ভাইয়া?”
“এই তো ভালো’
অরশী আশিসকে ভ্রুকুচকে পর্যবেক্ষণ করছে। সাদামাটা একটা টি-শার্ট আর হাফ প্যান্ট মনে হচ্ছে বিশ বাইশের যুবক এমন হাবভাব। অরশী মনে মনে বলে,,”শালার লজ্জা সরম নাই দেখি। এবার আমি পালাবো কি করে?”
আশিস অরশীকে বলে,,”হাই” বলে হাত বাড়িয়ে দেয়।
অরশী আশিসের দিকে তীর্যক দৃষ্টিতে তাকিয়ে জোরে বলে,,”আসসালামু আলাইকুম বড় ভাইয়া।”
অরশী সালামের জোর এতো বেশি হয়েছে সবাই ওদের দিকে তাকিয়ে। আশিস মনে মনে বলে,,”শালী নাটকের মাস্টার ঢং সব এবার বের করব হতচ্ছাড়ি”
আশিস না পেরে মুচকি হেসে সালামের উত্তর দিয়ে উপরের দিক হাঁটা শুরু করে। দীপা অরশীকে বলে,,”আরো জোরে দিতি!!!” হঠাৎ এমন করলি কেন?”
অরশী বলে,,”বড় ভাই সম্মান দিলাম তাও দোষ বল!!”
দীপা বলে,, “বাদ দে চল”
অরশী দীপার সাথে ছাদে চলে আসে। তখনি দীপার হবু হাসবেন্ড ফোন করলে দীপা ছাদের একপাশে দাঁড়িয়ে কথা বলতে থাকে। অরশী ছাদের বাতাস দেখে চুল গুলো ছেড়ে দেয়। একটু প্রশান্তি অনুভব করার জন্য। অরশী পেছনে কারো উপস্থিতি টের পেয়ে ঘুরে দাঁড়ানের আগেই। কেউ পর মুখ চেপে ছাদের চিলেকোঠায় নিয়ে আসে।
অরশীর ছোটাছুটি করতে করতে আশিসের বুক বরাবর হাতের কনুই দিয়ে এক ঘা বসিয়ে দেয়। আশিস অরশীকে ছেড়ে বলে,,”আরেহ্ শালী মারবি নাকি?”
অরশী ন্যাকা ন্যাকা করে বলে,,”বড় ভাইয়া তুমি? ”
আশুস ভ্রুকুচকে অরশী পানে তাকিয়ে বলে,,,”জামাই বল কীসের ভাই?”
অরশী বলে,,”এ কেমন কথা ভাইয়াাাাাাা”
আশিস বলে,,”অশী সুইটি এবার পালাবি কি করে বল তো? ”
অরশী বলে,,'”অনেক পালিয়েছি আর পারব না। এতদিন না পালালে তর আমার দুইটা জমজ ছাও মাও পৃথিবীতে চলে আসতো কি বলিস শালা??”
আশিস কপাল কুচকে বলে,,”সবই ঠিক কিন্তু শেষে আবার শালা কেন বললি শালী?”
“বারে শালী শুনালে শালা শুনবে না??”
আশিস বলে,,”যতই চালাকি কর লাভ নেই পুরো বাড়ি আমার গার্ড দ্বারা ঘেরা”
অরশী একটু ঘাবড়ে বলে,,”দূর তাতে কি হয়েছে আমি কি পালাবো নাকি?”
আশিস অরশী কাছে এসে অরশীর কপালে গাঢ় চুমু খেয়ে বলে,,”ঐ চিন্তাও এনো না সুইটী।”
আশিস চলে যেতেই সামনের টেবিল বরাবর অরশী লাথি বসিয়ে বলে,,,”শালা তোর বিয়ের ভূত না ছুটালে আমিও অরশী না হাহ্”
সন্ধ্যাবেলা বাড়িতে মেহমানের আনাগোনা বেড়ে যায়। অরশী ঘুণাক্ষরেও শাড়ী পড়বে না। শাড়ীতে তার মহামারী এলার্জি, শাড়ী পড়ে হাঁটা যায় নাকি এমনিতেও দিনে চৌদ্দবার উস্টা খাওয়ার স্বভাব আছে এখন আবার শাড়ী পরে চৌদ্দ চৌদ্দ আঠাশবার কি উস্টা খাবে নাকি। অরশী হলুদ একটা চুড়িদার পড়ে হালকা মেকআপ ব্যাস অপসরী থেকে কম লাগছে না। এদিকে আশিস একবার বের হচ্ছে তো আরেকবার অরশীর রুমের দিকে চক্কর দিচ্ছে। নিশপিস করছে মনটা বার বার উথালপাতালের ঢেউ খেলছে অরশীকে দেখার জন্য। খানিবাদে ক্লান্ত হয়ে বেচারা সোফায় ধারাম করে বসে বিরবির করে,,”নাহ্ শালী আর নামবে না ধ্যান করতে বসেছে ওলি বাবার নামে”
আশিসের কথা শেষ হতেই এদিকে অরশী লাফাতে লাফাতে নামছে। নিজের কপালে ঘাম মুছে সিঁড়ি দিকে চোখ পড়তেই আশিসের চোখ জোড়া আটকে যায় অরশীর পাণে। অরশীও একবার তাকায়, নাহ্ হলদে পাঞ্জাবিতে খারাপ না বেশ মানাচ্ছে। চারপাশের কুমড়োপটাশদের থেকে আশিসকেই বেশ লাগছে।
অরশী আশিসকে দেখে বিরবির করে বলে,,”শালা হ্যান্ডসাম হলি একটু সভ্যটব্য হতি এমন গুন্ডামাস্তান না হলে তোহ্ বিয়ে করেই নিতাম যতই হোক নিজের বাচ্চাদের তোহ সুন্দর একটা বাপ দিতে পারতাম।”
অরশী আশিসকে পাশ কাটিয়ে সামনে একটা গিয়ে একটা বাচ্চাকে বলে,,”এই পুঁচকে শোন তদের এখানে শপিংমলে যেতে কতমিনিট লাগবে?”
বাচ্চাটি বলে,,,”আফা একদম পুঁচকে বলবেন না। তিন তিনটা গার্লফ্রেন্ড আমার মাত্র একটা জুটিয়েছি এসব শুনলে ব্রেকআপ হয়ে যাবে আপনি বুঝেন গার্লফ্রেন্ড হারানের বেদনা??”
অরশী মুখে হাত দিয়ে বলে,,”আবে কয় কি? এই লেদা বাচ্চার তিন তিনটা অথচ মোর কপালে একটাও জুটলো না শালা কপালের দোষ দিমু না চেহারার?”
তখনই দীপা বলে,,”অরশী ভাইয়ার সাথে যা, ভাইয়া সব চিনে।” অরশী ভ্রুকুচকে তাকায় আশিসের পাণে যে বত্রিশপার্টি দাঁত কেলিয়ে তার পাণে তাকিয়ে।
অরশী বলে,,”বড় ভইয়া আপনি ফ্রি?”
আশিস বলে,,”অলয়েস কিউটিপাই।”
অরশী মুখ ভেঙিয়ে বলে,,”কত রংঢং শালার?”
আশিস অরশীর কাছে আসতে নিলেই একটা মেয়ে বলে,,”আশিস ভাইয়া তুমি কি ফ্রি আছো চলো না ছাদে যাই”।
আশিস বিরক্ত হয়ে বলে,,”সর ব্যাস্ত আছি এমন ঢেং ঢেং করসি না থাপ্পড়ে চান্দে পাঠায় দিমু সর তোহ্”
অরশী বিরবির করে বলে,,”মেয়েটার রুচির দুভিক্ষ হয়ত নাহলে এমন গাম্বুসটার পেছনে লাগবে কেন?”
আশিস বলে,,”কি কিউটিপাই চলেন!!”
অরশী বলে,,”এই সব আ*বাল বা*ল ছা*ল নামে না ডাকলে হয় না বড় ভাইয়া?”
আশিস বলে,,”শালী তেড়ামী করিস না ভালেবাসার ডাক বুঝো না ”
অরশী বলে,,”তর ডাক তর কাছে রাখ শালা জলহস্তি”
আশিস বলে,,” কি বললি তুই?”
অরশী এবার তার সবকটি দাঁত বের করে বলে,,”ভাইয়া চলুন দেরি হচ্ছে তো!!”
আশিসের বাইকের পেছনে অরশী বসে,,আর মনে মনে পণ করেছে ঝড়ে উড়ে গেলেও এই গাম্বুসটার কাঁধে হাত রাখবে না।
আশিস বলে,,”ধরে বস পড়লে তো একবারে অক্কা পাবি এমনি ডাক্তার হয়ে যাবি পেশেন্ট”
অরশী রগে বলে,,”ভাই তুই যা তর আমারে নিয়া ভাবা লাগবো না”
আশিস বিরক্ত হয়ে বাইকের স্পিড বারিয়ে চালানো শুরু করে অরশী ঝাঁকি খেয়ে আশিসকে ধরতে বাধ্য হয়। আশিস মেকি হাসে অরশীর হাত রাখায়।
আশিস বলে,,”তুই এমন ধান্দাবাজি হলি কেমনে রে তর বাপ মা তো একবারে নাদান।তার দাদায় মনে হয় ভন্ড ছিল নয়ত তুই এমন জংলি গো মতো পালাছ কেমনে?”
অরশীর মেজাজ যায় বিগড়ে যায় আশিসের ফালতু পেচালে,,অরশী বলে,,”ধান্দাবাজের পিছনে ঘুরিস কেন শালা?”
আশিস বলে,,”আমার দাদা তোহ্ আমার দাদীরে তুইলা নিয়া বিয়ে করছে সেই রক্ত বুঝোস নাই। তাই ঘুরি বংশের হাল ঠিক রাখতে হইব তো।এরপরে তর আর আমার পোলা হইলে দেখবি সেটাও আমার মতো বংশের হাল ধরব।”
অরশী বলে,,”ভাই সন্ধ্যারাতে স্বপ্ন দেখা বাদ দে। আমার বাচ্চা তরে বাপের ব ও ডাকবো না”
“দূর শালী বাপ বলবো কে আব্বা কইবো আব্বা আর তরে বলবো নাকবোচা আম্মা”
অরশী রেগে আশিসের গলা চেপে ধরে বলে,,”তোর নাকবোচা শালা তর চৌদ্দগৌষ্ঠীর নাকবোচা হারামি ইবলিস।”
“ছাড় শালী এক্সিডেন্ট করমু ছাড়।”
“কর তুই আজকে তরে জমের বাড়ি পাঠামো ”
“কিউটিপাই সুইটী ছাড় সামনে খাম্বা”
অরশী আরো জোরে চেপে ধরলে বেচারা দম আটকে বাইকের ব্রেক কষতে গিয়ে খাম্বার সাথে লেগে ছিটকে পড়ে। আশিস অরশীর হাত ধরে কোনোমতো আগলে রাখে যাতে খাম্বায় বারি না খায়। আশিসের মাথায় আঘাত লাগে বেশ। অরশী ভয়ে আশিসকে ঝাপটে ধরে আছে। আর ফুপিয়ে কান্নাও শুরু করে দিয়েছে।
আশিস মাথায় হাত রেখে অরশী উপর থেকে উঠে বলে,,”শালী বার বার না করেছিলাম”
অরশী কান্না করতে করতে বলে,,”আমি কি জানতাম নাকি শালা তুই কাচা বাইকার”
“দম আটকাইয়া রাখলে চালামো কেমনে আমারে কি সিনেমার নায়ক পাইছো নাকি শালী? ”
অরশী বলে,,”হসপিটালে চল মরবি তোহ্ তাও গলা থামবো না শালা ইডিয়েট”
সামনে অটো আসতেই অরশী আশিসকে ধরে উঠায়। তারপর না চাইতেও নিজের ওরনা দিয়ে আশিসের মাথা বেঁধে দেয়। হসপিটালে অরশী দাঁড়িয়ে আশিসকে ডক্টর ব্যান্ডেজ করছে।
তখন একটা নার্স এসে দাড়িয়ে অরশীকে বলে,,”নিজের হাসবেন্ডের খেয়াল রাখবেন নিয়মিত ঔষধ দিবেন। ”
অরশী বলে,,”ওনি আমার কোন জন্মের জামাই ওনি তো,,”
অরশীকে বলতে না দিয়ে আশিস বলে,,”বউ রাগ করিস না সরি”
নার্স মুচকি হেসে বেরিয়ে যায়। অরশী রেগে আশিসের দিকে তাকায়। যার কোনো হেলদুল নেই।
এরপর ডক্টর একটা ইনজেকশন পুশ করার জন্য সিরিজ হাতে নেয়।
অরশী আশিসের হাত ধরে বলে,,’ভয় পাইয়েন না ভাইজান সামান্য একটু ব্যার্থা লাগবে।”
আশিস ভ্রুকুচকে বলে,,”ভয় কার লাগবে?”
ওদের কথার মাঝে ডক্টর ইনজেকশন পুশ করতে গেলে আশিস তাকিয়ে দেখে অরশী ওর হাত ধরে চোখ মুখ খিঁচে আছে। আশিস মুচকি হাসে অরশীর হাল দেখে। ডক্টর যাওয়ার পর আশিস বলে,,”সামনে ডক্টর হবে এখনি এসবে ভয়।?”
অরশী থতমত খেয়ে বলে,,”ডক্টর হলে ঠিক হয়ে যাবো নতুন নতুন তোহ্,,বাসায় চলুন”
আশিস বলে,,”এইভাবে চলে যাবো আমি?”
অরশী বলে,,”তোহ্ আপনাকে কি আমি স্বামী সেবা করব হসপিটালে?”
আশিস অরশীকে টান মেরে নিজের কাছে বসিয়ে বলে,,”করলে ক্ষতি কি?”
অরশী একঝটকায় দাঁড়িয়ে বলে,,”শালা তর বাঁদড়ামি কমে না মাথা কেটে কুপোকাত তবুও পাগলামিতে উৎপাত।”
তখনই ডক্টর এসে বলে,,”ওনাকে ইমিডিয়েটলি ভারী খাবার খায়িয়ে ঔষধটা খাওয়াবেন প্লিজ।”
অরশী ঔষধ হাতে নিয়ে বেরিয়ে যেতে বলে,,”খাবার আনছি বসুন”।
একঘন্টা পার হয়ে যায়। এদিকে অরশী আশেপাশে কোনো রেস্তোরাঁ পায় না। লোকজনের কাছে জিজ্ঞেস করে সামনে দিকে এগিয়ে যায়। তারপর খাবার অর্ডার দিবে কি দেখতে পায় খোলামেলা দোকান খাবার ঠান্ডা। অরশী বিরক্তিতে চোখমুখ খিঁচে বলে,,নতুন রান্না করুন এসব খাওয়া যাবে নাকি। রেস্তোরাঁর লোক বলে দশমিনিট অপেক্ষা করুন আফা রান্না শেষের দিকে। বেচারি দাঁড়িয়ে থাকে ”
এদিকে আশিস উঠে বসে,,আশিস ভেবেই নিয়েছে অরশী আবার পালিয়েছে। আশিস মাথাটা ধরে দাঁড়িয়ে বাহির যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে অরশীকে খোঁজার জন্য না পালালেও অচেনা জায়গায় মেয়েটির কিছু হলে।
তখনই অরশী হুড়মুড়িয়ে ডুকে বলে,,”সমস্যা কি দাড়িয়ে পড়লি কেন বললাম না আমি আসছি।”
অরশীকে দেখে আশিস বসে জোরে নিঃশ্বাস ছাড়ে এতক্ষণ সে কীভাবে ছিল অরশীকে বুঝাতে পারবে না। অরশী খাবার নিয়ে সোজা আশিসের মুখের সামনে দরে বলে,,”খেয়ে নে হাতের যা হাল আর যদি আমার হাতেরটা,,,”
আর কিছু বলার আগেই আশিস খেতে শুরু করে। তবে আশিস কি আর চুপচাপ খাওয়ার বান্দা। একবার হাতে কামড় বসাচ্ছে তোহ্ একবার চুমু বসাচ্ছে। অরশী রেগে খাওয়া হাত দিয়ে হালকা করে এক থাপ্পড় লাগিয়ে দেয় আশিসের গালে। ব্যাস আশিস হা করে তাকায় অরশীর পাণে। আর অরশী ঝটপট খাবার আশিসের মুখে দিতে থাকে । এরপর ঔষধ খায়িয়ে টিস্যু দিয়ে মুছে দেয়।
আশিস স্তব্দ হয়ে অরশীর কান্ড দেখছে। মেয়েটা কত সুন্দর গুছিয়ে খায়িয়ে দেওয়ার পর মুখও মুছে দিচ্ছে। আর আশিস তৃপ্তি ভরে তার স্বাদ নিচ্ছে।
অরশী আশিসের মুখ মিছতে মুছতে বলে,,”আশেপাশে রেস্তোরাঁ ছিল না। অনেকদূর যেতে হয়েছে। তারপরও ঠান্ডা খাবার রেস্টুরেন্টে এসব গিলিয়ে তকে আধমরা করার ইচ্ছে ছিল না তাই দাঁড়িয়ে ছিলাম রান্না শেষ হতেই গরম খাবার এনেছি। এবার তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উদ্ধার কর আমাকে।”
অরশীর কথায় আশিসের বুকটা জুরিয়ে যায় মেয়েটাকে দেখে যতটা ভালোবেসেছে আজ তার যত্নে যেন তার প্রতি আরো আসক্তি জন্মে গেল। আশিস একটান মেরে অরশী চুলের পেছন ধরে অরশীকে ঠোঁট আকড়ে ধরল৷ তবে অরশী এক ঝটকায় ছাড়িয়ে বলে,,”কি রে শালা তর তামশা কমে না এত কষ্ট করলাম আর তুই আমাকে রে*প করতে চাইছিস?”
আশিস বলে,,”আস্তাগফিরুল্লাহ বলে কি শালী? ”
অরশী বলে,,,”হয়েছে হয়েছে নাটক কমা শালা, বাড়ি চল”
এরপর অরশী আর আশিস বাসায় চলে আসে। বেচারী অরশী হাঁপিয়ে গিয়েছিল তাই কোনোমতে খেয়ে ঘুমে তলিয়ে যায়। ঐদিকে আশিসকে বাড়িসুদ্ধ সবাই ঘিরে বলছে কীভবে এক্সিডেন্ট হলো।সেই স্কুল লাইফ থেকে বাইক চালানোতে উস্তাদ। এক্সিডেন্ট করার ছেলে না। আশিস বলে,,”ঘুমঘুম ধরেছিল তাই দেখতে পায়নি।
আশিস অরশীর কথা বলে সবার কাছে অরশী জায়গাটা ছোট করতে চায় না। যেহেতু আশিস সবার প্রিয় একথা জানলে সবাই অরশীকে অপছন্দ করবে। তাই আশিস ব্যাপারটা লুকিয়ে রুমে চলে যায়। কেউ আর কিছু জিজ্ঞেস করার সুযোগও পায় না এমনিতেও রাত হয়ে এসেছে।
!!!!!”ক্যাপ্টেন,,, ক্যাপ্টেন”!!!!!!
সকাল সকাল এমন চিল্লানো শুনে আড়মোড়া হয়ে অরশী উঠে বসে। তারপর ধীর পায়ে বেলকনিতে দাড়াতেই দেখে বাইরের স্টেজে আশিস একদম ক্লাসিক লুকে দাঁড়িয়ে সবাইকে ভাষণ দিচ্ছে এটা কর ওটা কর। চোখে সানগ্লাস গায়ে আকাশী রঙা শার্ট সাদা জিন্স। অরশী ঘুমুঘুমু চোখে আশিসের দিকে তাকিয়ে বলে,,”মালটা তো পুরাই ইউনিক এটা আবার কোন শালা?”অরশী একটু লক্ষ্য করতেই দেখতে পায় আশিস। বিরক্তিতে অরশী চোখ মুখ খিঁচে ফেলে।
আশিস ও তখন অরশীকে দেখে মাইকের সামনে বলে উঠে,,”মিস কিউটিপাই কুম্ভকর্ণের মতো না ঘুমিয়ে কাজে লেগে পড়ুন বসে বসে বান্ধবীর বিয়ে খাবেন নাকি?”
অরশীর মেজাজ যায় চটে অরশী রুমে চলে আসে।
বিয়ের বাড়িতে মানুষ গিজগিজ গ্রামের বিয়ে আরো বেশি জমজমাট। বরপক্ষ চলে এসেছে। বরের ছোট ভাই লেগেছে অরশীর পেছনে। আশিস এদিকে একটু ব্যাস্ত থাকলেও বার বার দেখছে অরশীকে কি সুন্দর একটা বার্বিডল ঘুরছে গোলাপীরঙা থ্রিপিস পড়া। হুট করে আশিসের চোখ যায় অরশী আর বরের ছোট ভাই সাদিকের দিকে। তারা দুজন হেসে হেসে কথা বলছে।
অরশী সাদিকের থেকে বাঁচতে ন্যাকা ন্যাকা হেসে অপদস্তই করছিল। তবে দূর থেকে আশিস বেচারার মনে করে তারা প্রেমআলাপ জুড়ে দিয়েছে। এতক্ষণ মাথা ঠান্ডা রাখলে আর পারে না সামনে থেকে সোজা একগ্লাস পানি নিজের মাথায় ঢালে কালকে ব্যার্থাগুলে জ্বলে উঠে।
আশিস তেড়ে এগিয়ে অরশী হাত ধরে বলে,, “ঘেষাঘেষির শখ তাই না চলো কিউটিপাই তোমার রঙঢং বের করছি। ”
অরশী রেগে বল,,”হাত ছাড় শালা কি করছিস?”
আশিস সোজা কাজীর সামনে আসে বলে,,”বিয়ে পড়ান।”
কাজী হকচকিয়ে বলে,,”কি?”
বাড়িশুদ্ধ সব হা হয়ে। আশিস কাজীর দিকে রেগে তাকিয়ে বলে,,”তুই কি বিয়ে পড়াতে জানিস না নাকি কানে কম শুনিস? ”
অরশী উঠে ঠাস করে আশিসের গালে চড় বসিয়ে বলে,,”তামশা হচ্ছে নাকি??”
আশিসও রেগে অরশীকে এক থাপ্পাড়ে বসিয়ে বলে,,”একদম চুপ থাক মেজাজ খারাপ করবি না শালী জানে মেরে দেব।”
অরশী রাগ আরও বেড়ে যায়। কাজী ইতিমধ্যে বিয়ে পড়ানো শুরু করেছে। আশিসের রাগের জন্য কেউ টু শব্দও করতে পারছে না অরশী হাত শক্ত করে চেপে আছে আশিস ছাড়ানোর কোনো নাম নেই। কাজী যখন কবুল বলত বলে,,
অরশী বলে,”,জীবনেও বলবো না এই গাম্বুসকে মরলেও বিয়ে করবো না”
আশিস রেগে বলে,,”শালী তর তেজ একদম পিষিয়ে দিব কবুল বল বলছি।”
অরশী চিল্লিয়ে বলে,,”জীবনে না তর মতো ডাইনাসোরকে আমি কেন বিয়ে করব শালা?”
আশিস রেগে রিভলবার বের করে। অরশী একটু ঘাবড়ে বলে,,,,”হাহ্ আমি ভয় পায় নাকি জীবনেও বলবো না তুই কি করবি কর?”
love with a slap part 3
আশিস রেগে অরশী পায়ের কাছে শুট করতেই। অরশী কানে হাত চেপে ভয়ে চিল্লিয়ে বলে উঠে,,”শালা গাম্বুসের বাচ্চা কবুল কবুল কবুল”
আশিস এবার মুচকি হেসে সবার সামনেই অরশী গালে চুমু দিয়ে বলে,,”আলহামদুল্লিাহ লাভ ইউ শালী”
কাজী বলে,,”বাবা, লাভ ইউ শালী না কবুল বলো”
হাসির রোল পরে যায় অরশী রাগে তীর তীর করে কাঁপছিল।আশিস সুন্দর মতে কবুল বলা শেষ করে বলে,,”আলহামদুলিল্লাহ আজকে থেকে এই শালি একান্ত আমার কিউটিপাই”
অরশী রেগে আশিসের দিকে এখনো তাকিয়ে
এদিকে আশিস ১৯৭১রে যুদ্ধ থুক্কু তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের জয়লাভের মতো হাসছে।
