love with a slap part 9

love with a slap part 9
আশু

রাতের নিস্তব্ধতায় আকাশের রুপ তেমন দেখা না গেলেও বিদুৎতের ঝলকানিতে একটু পর পর পুরো আকাশ আলোকিত হচ্ছে আর ধংকা হাওয়া এসে উপচে পড়ছে। এদিকে অরশী হঠাৎ নড়তে গিয়ে বুঝলো আটকে আছে। অরশী পিটপিট করে চোখ খুলে দেখল আশিস সামনের দিকে তাকিয়ে কিছুক্ষণ অনুধাবন করতেই বুঝতেই পারে সে আশিসের কোলে।
অরশী রেগে বলে,,”কোথায় যাওয়া হচ্ছে মি.জলহস্তি”?আপনি কি আমাকে নামাবে নাকি চিল্লাবো?”
আশিস একেবারে ছাদে পৌঁছে অরশীকে একঝটকায় নিচে নামিয়ে দিলো আশিস। অরশী বলে,,”এই মাঝরাতে কি নাটক দেখাতে এখানে আনা হয়েছে?”

আশিস বলে,,”বৃষ্টি দেখতে এনেছি”
অরশী বিরক্তিতে বলে,,”আপনি দেখুন আমি ঘুমাবো টাটাটা” বলে অরশী যেতে নিলেই আশিস অরশীর হাত ধরে বলে,,”কিছুক্ষণ থাকা যায় না।”
অরশী একঝটকায় হাত ছাড়িয়ে বলে,,”না যায় না তার উপর আপনার মতো ধান্দাবাজের সাথে তো অসম্ভব।”
আশিস মুচকি হেসে বলে,,”অথচ সুইটবার্ড তোমাকে এই ধান্দাবাজের সাথেই সারাজীবন পার করতে হবে।”
অরশী বলে,,”সময়ই বলে দেবে সেটা”
আশিস জোরে শ্বাস ছেড়ে বলে,,”একটু বসবে কি?”
অরশী বলে,,”দরকার কোনো?”
আশিস মাথা নাড়ায়।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

দোলনায় একপাশে আশিস আরেকপাশে অরশী।
আশিস হঠাৎ বলে উঠে,,”ভালোবাসা কীভাবে হয় জানো কিউটিপাই? ”
অরশী নাক মুখ কুচকে বলে,,”জানি না এসবে এখনো জড়ানোর সময় পাই নি”
আশিস অরশীর দিকে তাকিয়ে বলে,,,
“দমকা হাওয়ার মতো হয়ত প্রেম হয়”
“ঝড়ো হাওয়ার মতো হয়ত তা ফুরিয়েও যায়”
“তবে ভালোবাসা,
“ভালোবাসা ঐ আকাশের কাঠফাট্টা রৌদ”
“যা শতশত ঝড়ের পরেও দেখা দিবে”
“আর তুমিও তা নিশ্চিন্তে ভরসা করতে পারবে”
অরশী বলে,,”এত বড় বড় ডায়লগ দিয়েন না মি.কুবা আশিস খান। সব আমার মাথার উপর দিয়েই যাচ্ছে হজম করা দায় কজ্ আমি মুক্তি চায় আপনার থেকে।”

আশিস রেগে বলে,,”ঐসব চিন্তায়ও আনিস না শালী তোর আমার সাথেই থাকতে হবে ।”
তখনই হুট করে বৃষ্টি নামলে অরশী দাঁড়িয়ে দৌড়ে যাবে কি আশিস অরশীকে টেনে শক্ত করে ধরে বলে,,
“আসো একটু ভিজি”
“আর একটু অভিমান মুছি”
“ভালো নায় বাসলে,,
“তবে পাশে থাকলে ক্ষতি কি!!!”
অরশী থমকে দাঁড়ায় দৃষ্টি আশিসের পাণে বৃষ্টির টুপটুপ ফোঁটা আশিসের ঘন কালো চুল বেয়ে কপাল মুখে গড়াচ্ছে। কি নিদারুণ!!!! যেন সময় আজই থমকে যাক আর অরশীও দেখুক তার প্রিয় ঘৃণিত পুরুষকে যার থেকে সে সেকেন্ড সেকেন্ড মুক্তি চায়।
আশিসও স্থির পাণে অরশীর দিকে তাকিয়ে শরীরের গড়নের লাল শাড়ী ভিজে যাচ্ছে তবে তার অমায়িক চোখ আর ঠোঁট তাকে আকর্ষিত করছে।যেন,,
“ঠোঁটজোড়া বলছে,,,”আমায় টেনে নাও
নিজের তৃষ্ণা মেটাও”
“চোখ বলছে,,,”আমার গভীরে হারিয়ে যাও”
আশিস নিজের হাত বাড়িয়ে অরশীর গালের এলেমেলো চুলগুলো আস্তেধীরে কানের পাশে গুজার চেষ্টায়। তখনই অরশী আশিসের হাত ধরে বলে,,
“মায়া বাঁধবেন না মি.

তাহলে হয়ত ফিরতে কষ্ট হবে
আমি চায় না কোনো খারাপ মানুষের সঙ্গ
যার অন্রেরন্ধ্রে পাপ”
আশিস অরশীর দিকে একপা এগিয়ে বলে,,,
“আজ যদি সব পাপ বৃষ্টির ফোঁটার পরশের ন্যায় মুছে দেই রবে কি চিরকাল মিসেস?”
অরশী থমকায় ঠোঁট কাপে চোখ হয় সন্দিহান যেন উত্তর দিতেও বাঁধা সে কি রবে না হারাবে। আশিস ধীর গতিতে অরশী কাছাকাছি চলে আসে। অরশী একদম স্থির। আশিসের চোখ অরশীর কাঁপা ঠোঁট একটু পর আশিস ধীরে ধীরে সেটা নিজের দখলে নিয়ে নেয়। অরশী চোখ বন্ধ করে নেয়। না তার ফিরানোর ইচ্ছা জাগছে, না তার খারাপ লাগছে সে শুধু অনুভব করছে। আদোও কি আশিস সব ছেড়ে আজ তার হয়ে গেল গভীর ভাবনায় অরশী চোখ বুঝে হিসাব মিলাচ্ছে। আশিস অরশীকে ছেড়ে দাড়াঁয়। অরশীর ভাবমূর্তি পরিবর্তন না দেখে আশিস অরশীর গালে হাতে রেখে বলে,,,,

“সুইটবার্ড আমার নিজের করে নাও”
“তোমায় তৃষ্ণায় বড্ড তৃষ্ণার্থ আমি”
অরশী কিছু বলবে তার আগেই।
“ঐ ছাদে কি করছ আশিস? ঐ মাতারী তর জ্বর আনার লিগা ধইরা নিয়া গেছে নাকি!!”
অরশীর এতক্ষণে হুশ আসে সে আর আশিস একঝটকায় সরে দাঁড়ায়। মিনারা খাতুন ছাতা নিয়ে আশিসের মাথার উপর ধরে অরশীর দিকে তাকিয়ে বলে,,”অসভ্য মাতারী আমার নাতীর জ্বর আসলে,,”
আর কিছু বলার আগেই আশিস অরশী নিজের বাহুতে টেনে বলে,,”তোমার নাতবউ সেবা করবে চলো দাদীজান”
তারপর তিনজন কথা ছাড়াই চলে আসে।
সকাল সকাল তোরজোর হচ্ছে। সবাই রেডি হয়ে নামলেও অরশীর দেখা নেই। আশিস অনেক আগেই বেরিয়েছে বলেছে মাঝরাস্তায় গাড়িতে উঠবে অফিসের কাজ আছে। সবাই নামার পর মিনারা খাতুন একবার চোখ বুলিয়ে বলে,,”মাতারী ডা কই রে?”

দীপার মা বলে,,”আম্মা আপনি তোহ্ তারে মানেন না তাই মাইয়া ডা ঘরে শুয়ে আছে।”
মিনারা খাতুন চিল্লিয়ে বলে,,”আমি মানি না তাতে কি?ওর ঠ্যাং নাই? কথার বেলা চ্যাং চ্যাং করা পারে!!! যাওয়ার বেলা ঠ্যাং ঠ্যাং কইরা আসতে পারে না??যত্তসব কাকপক্ষীর মামলা!!!”
মিনারা খাতুন লাঠিতে হালকা ভর দিয়ে ঠকঠক করে অরশীর রুমে এসে দাড়াঁয় দেখতে পায়। মেয়েটা বসে বসে বই পড়ছে। মিনারা খাতুন বলে,,”ঐ বগীর বাচ্চা তরে টিকেট দিয়া নামানি লাগবো নাকি তাড়াতাড়ি রেডি হইয়া নাম।”
অরশী বলে,,”কিন্তু দাদী?”
“তর কিন্তুর গোষ্ঠী মারি বগীর বাচ্চা তাড়াতাড়ি নাম।”
অরশী কি করবে এমনিতেও কালকে আশিসের সাথে ঘটা মুহূর্ত নিয়েই নিজের মধ্যেই দ্বিধায় আছে। এরপর অরশী সব ঝেড়ে ফেলে নিচে নেমে আসে।
অরশীকে নামতে দেখে। মিনারা খাতুন বলে,,”দীপার মা সবাইরে বইলা দাও বাড়ির বউ যেন একটাও মাথায় কাপড়া ছাড়া না বাইর হয় ”

দীপার মা অরশীর শাড়ীর আঁচল অরশীর মাথায় দিয়ে বলে,,”কি করেছো বুড়ি দেখি যত্নআত্নি করছে।”
অরশী আলতো স্বরে বলে,,”জানি না ছোটমা”
বিশাল একটা ট্রুর বাস নেওয়া হয়। দীপাও ওর হাসবেন্ড নিয়ে এসেছে। সবার সামনে আশিসের দাদী তার সাথে তানু দি। এর পিছনে অরশী। এরপর সবাই জোড়া বসেছে। মাঝপথে আশিস তাড়াহুড়ো করে অরশী পাশে এসে বসে বলে,,”বাহ্ বউ বউ সেজেগুজে দেখছি।”
অরশী ভ্রুকুচকে বাইরের দিকে চোখ ফিরায়। হালকা হালকা বৃষ্টি থাকায় আশিসের চুলেও পানি পরেছে যা চোখমুখে নেমে আসছে। আশিস অরশীর আঁচল দিয়ে নিজের মাথা মুছতে মুছতে বলে,,

love with a slap part 8

“ছোটবেলায় দাদীর আঁচল ছিল
“এখন বউয়ের আঁচল কি কপাল আমার।”
অরশী বলে,,”করছেন কি?”
আশিস বলে,”,মুছে দাও তোহ্ পেছনে।”
অরশী স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে।আশিস আবার বলে,,
“প্লিজ দাও না”
“ঠান্ডা লাগবে তোহ্ কিউটপাই”
অরশী কি করবে বেচারী এবার মুছতে শুরু করে।
খানিকবাদে অরশী ঘুমঘুম চোখে আশিসের কাঁধে মাথা রাখে খারাপ লাগছে। আশিসও অরশীকে ধরে রেখেছে।

love with a slap last part