প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ১
Zannat Xhowdury
ছোট আম্মু তোমার মেয়েকে আমার সাথে বিয়ে দিবে ? বড় হলে তোমার মেয়েকে আমি বিয়ে করবো । সদ্য জন্ম নেওয়া বাচ্চাটিকে কোলো নিয়ে কথাটা বলে এক ছোট ছেলে ।
৭ বছরের এক ছেলের মুখে এমন কথা শুনে চমকায় বাড়ির সকলে ! ছোট একটা ছেলে হঠাৎ এমন কথা বলতে পারে এটা কেউ কল্পনাও করতে পারে নাই ।ছোট চাচ্চুর মেয়ে হয়েছে শুনে ছেলেটিও মায়ের সাথে তাকে দেখতে আসে । দেখতে এসে সে কোলে নিয়ে কিছুসময় তার ভ্রু জোড়া কুচকে বাচ্চা মেয়েটির হাস্যোজ্জ্বল মুখে তাকিয়ে থাকে।
তারপর হঠাৎ করেই বিস্ফোরণের মতো বিয়ের কথাটা বলে সে।
ছেলেটির এ কথায় হেসে তার চাচি আম্মু বলে তোমার কি , বাবু কে খুব পছন্দ হয়েছে ?
ছেলেটিও হেসে উত্তর দিলো “খুব” ।
কি সুন্দর ওর চোখ , ঠোঁট , হাসি ।
আমি বড় হলে ওকেই বিয়ে করবো ।
ছেলের এমন কথায় অবাক হলেও সকলে হেসে ওঠে ।
হঠাৎ করে বাচ্চাটি কান্না শুরু করে দেয় , এতে করে ছেলেটি ভয় পেয়ে বাচ্চাটিকে তার মায়ের কোলো দিয়ে দেয়।
মায়ের কোলে যাওয়া পর যখন বাচ্চাটি চুপ হয়ে যায় ও হাসতে শুরু করে , এতে করে ছেলেটার ভীষণ রেগে যায় আর মনে মনে বলে ,
পাজি মেয়ে তুই কেন আমাকে ভয় পাবি ,
তুই কেন অন্যের সাথে হাসবি ,
তুই শুধু আমার জন্য হাসবি।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
তোকে শুধু আমার কাছে রাখবো।
বলেই একটু হেসে বাহিরে চলে গেলো সেখান থেকে ।
সকলে তার যাওয়ার পানে তাকিয়ে থাকলেও পরক্ষণেই বাচ্চা মেয়েটির দিকে তাকায় ।
কি সুন্দর মায়ের কোলে খেলছে সে ।
অন্ধকার ঘরে হঠাৎ কারো ডাকে পুরনো স্মৃতি থেকে বের হয়ে আসে যুবকটি ।
পাশ থেকে ভয়ে ভয়ে এগিয়ে আসে অন্য আরেকটি যুবক যার নাম আয়ান সিকদার।
Bro the work is done. he is finished.
আয়ানের কথায় ঠোঁটের কোণে এক বাঁকা হাসি ফুটে ওঠে যুবকটির ।
আয়ানকে ইশারা করতেই সে চলে যেতে গিয়েও আবার ফিরে আসে
আজকে এইচএসসি রেজাল্ট দিবে তুই কি তার রেজাল্ট দেখবি ?
যুবকটি কিছু একটা ভাবে আবারো একটু হাসলো তারপর ইশারা করতেই , আয়ান ছেলেটি চলে গেলো ।
ছেলেটি চলে যেতেই , কিছুটা গম্ভীর কষ্টস্বরে যুবকটি বলে উঠলো ‘জালে তোকে পড়তেই হবে সুইটহার্ট’ ,
হয় আমি আসবো তোর কাছে আর না হয় তুই আসবি আমার কাছে ।
শুধু অপেক্ষা ক্ষণিকের ….
I will come to destroy your life .
I will come Mary Jan .
বলেই ল্যাপটপে মনোযোগ দিলো ।
নীর কুঞ্জ……
এইচএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট দিবে এই চিন্তায় সারারাত ঘুম না হওয়ায় সকালে উঠে চিল্লাচিল্লি করে পুরো বাড়ি মাথায় তুলে ফেলাছে চৌধুরী বাড়ির ছোট মেয়ে
‘ রোজা চৌধুরী ‘ যার পুরো নাম ‘ মেহরিন জান্নাত রোজা ‘
চৌধুরী বাড়ির কর্তা রায়হান চৌধুরীর ও তার স্ত্রী
রওশনা চৌধুরীর দুই পুত্র রেজওয়ান চৌধুরী ,রাহাত চৌধুরী । বড় ছেলে রেজওয়ান চৌধুরী এক ছেলে ,
নির্ণয় চৌধুরী।আর ছোট ছেলে রাহাত চৌধুরী এক ছেলে এক মেয়ে । রিয়ান আর রোজা ।
রেজওয়ান চৌধুরী ভালোবাসে বিয়ে করেছিলেন নৌরিন চৌধুরীকে তবে ১ম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর আবার বিয়ে করেন নাজমা চৌধুরী কে । তার ঘরেও এক মেয়ে নাম রিধিমা ।
সে রোজার থেকে ৪ বছরের বড়ো।
ছোট ছেলে রাহাত চৌধুরী বাবার পছন্দে তার খালাতো বোন রত্না চৌধুরী কে বিয়ে করেন ।
সকাল সকাল উঠে গরুর মতো চিল্লাচিল্লি করছিস কেন শুনি?
আর আজকে এত সকালে উঠছিস যে ….
বলে রোজাকে বকতে বকতে সিঁড়ি দিয়ে নামছিলেন রোজার মা। রোজা মায়ের বকা শুনে বাচ্চাদের মতো ঠোঁট উলটে বলতে শুরু করলো তুমি আমাকে বকলে মাম্মা ?
বলেই আবারো চিল্লাতে শুরু করো পাপা ,ভাইয়া , বড় আব্বু , দাদু – দাদিন কোথায় তোমারা এখনি নিচে আসো মাম্মা আমাকে বকতেছে । বলে কান্না জুড়ে দিলো ওর কান্না শুনে প্রথমে রিয়ান ঘুম ঘুম চোখে দৌড়ে এসে বোন কে জড়িয়ে ধরলো । তারপর আদর মাখা সুরে বলে কি হয়েছে সোনা পাখি কাঁদিস কেন বল ভাইয়াকে কি হয়েছে ?
একটু পর বাড়ির সবাই এক এক করে জড়ো হলো ।
রিধিমা এসে রোজাকে পানি এনে দিল , তারপর নরম সুরে বললো কখন উঠে আসলি তুই আমাকে ডাকিস নি কেন ?
রোজা কান্না জমানো মিশ্রিত কন্ঠে বললো আজকে আমার রেজাল্ট দিবে তোমারা ভূলে গেছো ?
রেজোওয়ান চৌধুরী এসে রোজার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো তা কি ভুলতে পারি ।
তাইতো আজ আমরা অফিস থেকে ছুটি নিয়েছি বাসায় থাকবো সবাই । একটু পর রায়হান চৌধুরী আর রওশনা চৌধুরী আসলো নাতনিকে কান্না করতে দেখে রত্না চৌধুরীকে বললো সকাল সকাল মেয়েটাকে বকা শুরু করে দিয়েছো বাচ্চা মেয়ে ওকি বুঝে কিছু।
এবার রত্না চৌধুরী মেয়ের কাছে এসে আদুরে সুরে বললেন এতো টেনশন করিস নাতো , যা হবে ভালোই হবে ।
তোর টেস্ট এর রেজাল্ট তো ভালোই হয়েছিল
এবার যা , বাবা আরা বড় আব্বু পাশে গিয়ে বস আমি কফি দিচ্ছি । সাথে রিয়ান আর রিধিমাকে বললো তোরাও গিয়ে বস ওর কাছে । বলে ই রান্না ঘরের দিকে চলে গেলো
আর রোজা গিয়ে তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে বসে রইলো রিয়ান আর রিধিমা গিয়েও বোনের পাশে বসলো ।
বেলা ১১টা ,
একসাথে বাড়ির সবাই বসে আছে। , রোজা তো পুরাই কান্না কান্না অবস্থা ,আর তাকে পাশে থেকে সান্ত্বনা দিচ্ছে রিধিমা।
রিয়ান চুপচাপ বসে ল্যাপটপে কি যেন করছে ।
নাজমা চৌধুরী ঘরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রান্না ঘর থেকে বের হতেই খেয়াল করলেন রেজওয়ান চৌধুরী বারবার কাউকে ফোন করছেন ,তিনি তার কাছে আসলেন ।
রেজোওয়ান চৌধুরী একবার স্ত্রী দিকে মুখ তুলে দেখে আবার ফোনের দিকে তাকালেন , সেই একি নাম্বারে আবার কল করলেন ।এবারো বেজে বেজে কেটে গেলো ।
রেজোওয়ান চৌধুরী এইবার স্ত্রী পানে চেয়ে করুণ সুরে বললো ,
আমার ছেলেটা কে কি আর পাবোনা নাজমা ?
কোথায় সে ?
সে কিহ আর ফিরবেনা ?
নাজমা এবার কান্না মিশ্রিত কণ্ঠে বললেন আপনি ভেঙ্গে পড়বেন না ।সে ঠিক ফিরবে তাকে ফিরতে হবে নীর কুঞ্জে।
আমি মা ডাক শুনতে চাই তার মুখে ,তাকে ফিরতে হবে ।
এর মাঝেই রিয়ান বলে উঠলো বোন congratulations তুই GPA 5 পেয়েছিস …..