প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ২

প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ২
Zannat Xhowdury

রোজা কান্না করবে করবে অবস্থা হঠাৎ GPA 5 পাওয়ার কথা শুনে সে মনে মনে ভাবছে সে কি ভুল শুনলো !
একটু পরে রিধিমা রোজা কে জরিয়ে ধরলো
ধরে বললো দেখলি মিললো তো আমার কথা এবার আমরা সবাই একসাথে জার্মানি যাবো ।
হঠাৎ র‌ওশনা চৌধুরী চেঁচিয়ে উঠলেন ক‌ইগো রিয়ানের আম্মা , এইদিকে আহো দেখো তোমার মাইয়া পরীক্ষায় পাশ করছে মেল্লা নাম্বার পাইছে ক‌ইগো মিষ্টি নিয়া আহো।

রত্না চৌধুরী রান্নাঘরে কাজ করছিলেন, শাশুড়ির কথা শুনে হাতে কাজ ফেলে দৌড়ে বসার ঘরে আসলেন রত্না চৌধুরী।
সাথে সিঁড়ি দিয়ে নামছিলেন রোজার বাবা রাহাত চৌধুরী
তিনি ঘরে বসে অফিসের কাজ করছিলেন।
রাহাত চৌধুরী এসেছিল মেয়ের মাথায় হাত রেখে বললেন congratulations my little princess
আমি জানতাম তুমি ভালো কিছুই করবে ।
বাড়ির সকলে মহাখুশি , একে একে সকলে রোজা কে অভিনন্দন জানালো , হঠাৎ রিয়ানের ফোন বেজে উঠলো
রিয়ান ফোন রিসিভ করে বাহিরে যেতে যেতে বললো
রিয়ান : হ্যাঁ ভাই বলো ,কেমন আছো?
অপরপাশে থেকে : ………………………..
রিয়ান : বোন GPA 5 পেয়েছে ।
অপরপাশ থেকে: ………………………?
রিয়ান : ওকে ভাই , তবে তুমি কী আর দেশে ফিরবে না ?
অপরপাশ থেকে এবার আর কোন উত্তর অসলো না । সে যে কথাটা এড়িয়ে গেলো , সে টা ভালোই বুঝতে পেরেছে রিয়ান । কিছুক্ষণ পর কল ডিসকানেক্ট হয়ে গেলো
রিয়ান একবার হতাশা নিঃশ্বাস ত্যাগ করে ভাবলো কবে ঠিক হবে সব তার জানা নেই ।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

অন্ধকার ঘর থেকে এক যুবক হালকা হেসে তারপর বলতে শুরু করলো ফিরতে তো হবেই অনেক হিসাব এখনো বাকি যে ….
বলে আবারো হাসতে শুরু করলো ।
জার্মানিতে বড় এক আলিশান বাড়িতে থাকে , যুবকটি
এতো বড়ো বাড়ি অন্ধকারে ঘেরা । যেখানে দিনের বেলায় ও জ্বলে না কোনো আলো , যে কেউ মনে করবে এটি ভূতের বাড়ি । অন্ধকার ঘরে করো পৈশাচিক হাসির শব্দ সাথে কুকুরের আওয়াজ যেন এক গা ছম ছম ভাব ।
এর মাঝে শুধু চারটি চোখ দেখা যাচ্ছে , দুটো নীল চোখ
আর দুটো হালকা লাল চোখ ।

সকাল ৯ টা
হলরুমে তিন জন ব্যক্তির চেঁচামেচি শুনা যাচ্ছে , একজন মেয়ে দুজন ছেলে ।
একটু পরেই তোর Bike raceing শুরু হয়ে যাবে আর নবাবের বংসধর এখনো ঘুমাচ্ছে
ফোন টাও বন্ধ করে রাখছে ।
এসব কথার মাঝেই মেয়েটি আবার ডেকে উঠলো
নীর এই নীর কোথায় তুই ?
তোর সিংহের গুহা থেকে দয়া করে বের হো
এবার অপরজন ডাকতে শুরু করলো নবাবের বংসধর আপনি আসুন প্লিজ আমাদের দেরি হচ্ছে ।
এইভাবে বলতে বলতে তিনজন গিয়ে খাবার টেবিলে বসে আপেল চিবোতে শুরু করলো।
এরা তিনজন হচ্ছে তৃধা ,আয়ান , অপূর্ব এরা হলো নির্ণয় চৌধুরী খুব কাছের বন্ধু আয়ান বাংলাদেশি , তৃধা আর অপূর্ব ভারতীয় ।

Raceing এর কথা মনে হতেই ধুপ করে বিছানা ছেড়ে উঠে ফ্রেশ হতে চলে গেলো নির্ণয় , ২০ মিনিটের মাথায় ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমে তিন জনের উদ্দেশ্য বললো সকাল সকাল বিরক্ত করতে চলে আসছিস তোরা তোদের নিয়ে আর পারিনা ।
এবার আয়ান ঠোঁট উলটে বলতে শুরু করলো এভাবে বলতে পারলি তুই আমাদের আমরা তোকে ভালবাসি তাইতো আসি তাইনা বল ‌।
নির্ণয় : আমাকে কি তোর ইয়ে মন হয় নাকি যে আমি ছেলেদের ভালোবাস জন্য দৌড়াবো ।।
নির্ণয়ের এমন কথায় আয়ান পুরো থতমতো খেয়ে গেলো তৃধা আর অপূর্ব মুখ টিপে হাসেছে।
এবার অপূর্বকে বলতে শুরু করলো তোরো কি কোনো কাজ নাই?
তুই কেন আস্তে গেলি ? বলেই রাগ দেখাতে শুরু করলো।

তৃধা আপেলের শেষ অংশ টুকু মুখে পুরে এসে নির্ণয়ের কাঁধে হাত রেখে বললো ….. রিলেক্স বেবি তোর আজকে raceing আছে তাই ভাবলাম সকাল সকাল তোকে ঘুম থেকে তুলে একটু আড্ডা দেই ‌‌।
এবার নির্ণয় তৃধার হাত কাঁধ থেকে নামিয়ে দিয়ে কাউচে গিয়ে বিশাল মনিটরে বাইক রেসিং গেম এমন ভাব করে খেলতে শুরু করলো যেন তার আশেপাশে কে আছে কি হচ্ছে কোন খেয়াল নেই ।
এর মাঝে হঠাৎ করে আয়ান বলেই উঠলো
ব্রো , রিয়ান কবে আসবে জানিস তুই ?
উত্তরে নির্ণয়ে ঠোঁট বাকা করে বললো আসবে কিছু পর হয়তো ।এবার আয়ান তৃধাকে খোঁচা দিয়ে বললো আমি তো ভেবেছিলাম আর আসবেনা বিয়ে করে ওখানেই থাকবে বলেই অর্ণব আর আয়ান হসতে শুরু করলো
তৃধা বেশ বুঝতে পারলেও সে তাদের কথা গায়ে না মাখিয়ে নির্ণয় কে বললো তাদের পরবর্তী মিশন কী …

নীর কুঞ্জ , সারা এলাকায় মিষ্টি বিলানো শেষ করে বাড়িতে ফিরেছে রিয়ান । চৌধুরী বাড়ির এটা একটা নিয়ম বললে চলে , কোন খুশির খবরে পুরো এলাকায় মিষ্টি বিলি করে তারা । বসার ঘরে রিধিমা আর রোজা বসে গল্প করছিল তার পাশেই বসে পান চিবোচ্ছিলো র‌ওশনা চৌধুরী ।
রত্না চৌধুরী আর নাজমা চৌধুরী রান্নাঘরে কাজ করেছিল ,
রিয়ান এসে বোনের পাশে বসলো হাতে তার একটা বক্স
যেটি রঙ্গিন পেপারে মোরানো । বক্সটি এনে বোন হাতে দিয়ে বললো খুলে দেখ তো পছন্দ হয় কিনা ।
ভাইয়ের দেওয়া উপহারে রোজা ভীষণ খুশি হলো , সঙ্গে সঙ্গে ভাইকে জড়িয়ে ধরলো , ভাই ও বোনকে আদর করে বক্সটি খুলে দেখতে বললো।।

রোজা বক্সটি খুলে তো পুরোই অবাক Iphone 16
Wow ভাইয়া এইটা আমার জন্য ?
রিয়ান : না পাশের বাসার ভাবীর জন্য ,বলতো ওনাকে দিলে কেমন হবে ?
রোজা : তুই পাশে বাড়ির ভাবিরে ফোন দিবি কুদ্দুসের বাপ দেখলে তোরে প্যান্ট খুলে লুঙ্গি নাচ নাচাবে‌‌। 🤨
রিয়ান : কিহ্ প্যান্ট খুলে কেমনে লুঙ্গি নাচ নাচে ?🙄
রোজা : আরে গোলামের পুত তুই বুঝবি না । 😐🫠
রিয়ান : আমি গোলামের পুত ‌তুই কি ? 🤨
রোজা জিহ্বা দিয়ে ভেংচি কাটলো ।
রিয়ান তা দেখে ওর মাথা গাট্টা মেরে বললো অনেক ফাজিল হয়েছিস এখন বল পছন্দ হয়েছে ।
রোজা আবার বললো হ‌ইলেই আমার আর কি দিবি তো সেই সকিনা ভাবিরে ।😐
রিয়ান : তবে যে সয়তান ।
ওদের কান্ড দেখে হেসে যাচ্ছে রিধিমা আর তার দাদি ।
রোজা এক দৌড়ে রুমে চলে আসলো সেখান থেকে

বেলা ১১ টা বাইক‌ রেসিং এর জন্য রেডি হয়ে বেড়িয়ে পড়লো চারজন নির্ণয় , অর্ণব তৃধা আর আয়ান গ্যারেজে এসে অনেক গুলো বাইকে মধ্যে সবচেয়ে পছন্দের (KTM 390 advance ) বাইকটাটে চড়ে বসলো নির্ণয় চৌধুরী
এক এক করে বাকিরাও তাদের পছন্দ মতো বাইক নিলে নিলো , যদিও অপূর্ব বাইক চালাতে পারে না তাই সে আয়ানের বাইকে উঠে বসলো । তিনটি বাইক চললো
রেসিং স্পোটে …
তিনটা বাইক রেসিং স্পোটে পৌঁছার সাথে সাথেই

সকলে নীর নীর করে জয়ধ্বনি দেওয়া শুরু করলো .
এতে নির্ণয়ের কোন হেলদোল দেখা গেলো না ।
রাস্তায় দুপাশে বড় বড় গাছের নিচে অনেক মানুষের ভীড় করছে ,, একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে বড় বড় গাছের বেশ দূরেই বড় বড় বিল্ডিং সমারোহ । তবে এই মূহুর্তে আশেপাশে মানুষে সমাগমে কারোরি গাছে ফোটা ফুলের সৌন্দর্য বিশ্লেষণের আগ্রহ নাই ।

প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ১

বরং গাছের ফাঁক ফোকরে সবাই এখন উচ্ছ্বাসিত কাঙ্ক্ষিত জিনিসটি দেখার জন্য ।একটু পরেই রেসিং শুরু হবে একদিকে নীড় অন্য দিকে তার শত্রু মার্কো, শত্রু বললে ভুল হবে নির্ণয় কখনোই রেসিং এ তাকে শত্রু ভাবে নি ,,বার বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কারনে মার্কো তাকে শত্রু ভাবে ।
৫ মিনিট পর…
শুরু হলো বাইক রেস নির্ণয় তার (KTM 390 advance ) সাথে বাকি বাইক গুলো ও যাত্রা শুরু করলো ….

প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ৩