মেহরিনের সপ্নরঙ পর্ব ৪৯
মির্জা সূচনা
কেটে গেছে দু’দিন।
সবাই এখন মোটামুটি সুস্থ।
মির্জা বাড়ি আজ বিয়ের সাজে সেজে উঠেছে।
বিয়ের আমেজ চারপাশে ছড়িয়ে পড়েছে।
রূপা বেগম এখন মির্জা বাড়িতে,
আর তাঁর সাথে কুলসুম-ও এসেছে।
মালিহা মির্জা আর রূপা বেগম বসে গল্প করছেন,
আর বাকি সবাই রেডি হচ্ছে।
আজ সবাই মিলে শপিং-এ যাবে,
বিয়ের আর বেশি দিন বাকি নেই।
এদিকে ফিরোজ মির্জা বসে আত্মীয়দের কার্ড পাঠানোর জন্য লিস্ট করছেন,
আর কুলসুম সবার হাতে হাতে গরম চা দিচ্ছেন।
বিকেল তখন ৩টা পেরিয়েছে।
রাজ আর লাবিব নিচে নেমে আসে, বসে ফিরোজ মির্জার পাশে।
তিনজন মিলে বিয়ের প্রস্তুতি নিয়ে আলাপ আলোচনা করছে।
ফিরোজ মির্জার তো কাজ একদম নেই বললেই চলে!
প্রায় সব দায়িত্বই এখন রাজ আর লাবিবের কাঁধে। সব লাবিব আর রাজ সামলে নিচ্ছে।
ফিরোজ মির্জা হেসে মনে মনে বলে,
দুই ভাই কত দায়িত্ববান।কেমন সব কিছু নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছে। কিন্ত এই ছেলে গুলোই ছোট বেলা কতই না কষ্ট করেছে কত কিছু সহ্য করেছে। আরে দুঃখ কষ্ট সহ্য করার পরেও হয়ে উঠেছে আদর্শ সন্তান আদর্শ মানুষ দায়িত্ববান দুই সুপুরুষ। এক হাতে বাড়ি অফিস সব সামনে নেয়।
এই ছেলেরা তাঁর জামাই, এই পরিচয়ে তিনি গর্ব অনুভব করেন। লাবিব রাজের দিকে তাকিয়ে হাসেন তিনি।
ঠিক তখনই নেমে আসে মেহরিন, মেহবুবা আর মেহের।
মেহরিন বলে,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
—চলুন, আমরা রেডি!
লাবিব ঘড়ি দেখে চোখ বড় করে বলে,
—ভাবি, তোমাদের এত তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেল? মানে মাত্র তিন ঘণ্টা?
এই কথা শুনেই তিন বোন একসাথে ফুসে ওঠে।
রাজ মনে মনে হাসে,
তবে প্রকাশ্যে হাসতে সাহস করে না।
কেননা তার একমাত্র বউ মেহরিন শিকদার,
আর সে বউয়ের হাতে মার খেতে চায় না।
তাই নিজের হাসি গিলে নেয়।
মেহরিন বলে,
—এর উত্তর টা বরং মেহবুবা দিক!
এই বলে মেহরিন আর মেহের মেহবুবার দিকে তাকায়।
মেহবুবা একেবারে অ্যাটিটিউডের সাথে বলে,
—এই যে শুনুন!
লাবিব দুই হাত জোড় করে বলে,
—আমার ভুল হয়ে গেছে!
সবাই হেসে ফেলে।
ফিরোজ মির্জা হেসে বলেন,
—বুঝলে বাবা রা, বাইরে যতই বাঘ থাকো না কেন, ঘরে তোমাদের বিড়াল হতেই হবে।
রাজ আর লাবিব একসাথে বলে,
— একদম, একদম!
সবাই হেসে ওঠে।
রাজ বলে,
—চলো, দেরি হয়ে যাচ্ছে।
সবাই বের হয়ে যায়।
বাড়ি থেকে বের হতেই দেখে রিদ বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
মেহের হাসে।
মেহরিন একটু টিটকারি মেরে বলে,
—বুঝলি তো মেহবুবা, কিছু মানুষের প্রেম দেখলে আমার খুব হিংসে হয়।
মেহবুবা বলে,
— আমারও।
রাজ ভ্রু কুঁচকে বলে,
—কি বললে তুমি? আমি কি তোমার সাথে কম প্রেম করি যে অন্যের প্রেম দেখে হিংসে করো?
মেহরিনের মুখের হাসি ফুস হয়ে যায়।
বোকা বোকা মুখ করে বলে,
— আরে আজব! এটা কখন বললাম আমি? আমি তো ওদের…
রাজ বলে,
—চুপ! আজ থেকেই আমি আমার প্রেমের ডোজ বাড়াবো, ওয়েট! কত বড় সাহস, অন্যের প্রেম দেখে হিংসে করো? আমি কি প্রেম কম করি?
মেহরিন কপাল চাপড়ে বলে,
— আল্লাহ মাবুদ! তুলে নাও আমায়!
রাজ বলে,
—এই খবরদার! এসব কথা বলবা না!
মেহবুবা হাসছিল।
লাবিব এসে দাঁতে দাঁত চেপে বলে,
— আমারও তাই না?
মেহবুবা হাসতে হাসতেই বলে,
—হ্যাঁ, তাই তো! আমারও হিংসে হয়।
লাবিব বলে,
— প্রেমে চুবিয়ে মারবো তোকে, দাঁড়া, ল্যাদা বাচ্চা!
মেহবুবা রাগে তাকায়।
লাবিব জিভ কাটে,
— এভাবে রাগী রাগী লুক দিও না জানেমান… ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’!
মেহবুবার মুখ জামটা দেয়।
আর তিন জোড়া পাখি বেরিয়ে যায়…
শপিংয়ের উদ্দেশ্যে।
মাহির আজ বাড়িতে নেই, তাই লাবিবা-ও যায়নি।
সে আগেই বলেছে,
— আমি বাবা কাবাব মে হাড্ডি হতে চাই না।
তাই আর কেউ জোর করেনি।
সবাই শপিং মলে ঢুকে একসাথে।
সবাই প্রথমে গেল রিদের শেরওয়ানি কিনতে।
মেয়েদের শপিং-এ তো বেশি সময় লাগে, তাই আগে বরের জিনিস কেনা হবে—এই সিদ্ধান্ত নিল মহিলা পার্টি!
হ্যাঁ,ছেলেরা নয়, সিদ্ধান্তটা মেয়েরাই নিয়েছে।
পুরুষগণের এত বড় দুঃসাহস—এখনও হয়নি যে মহিলা বিষয়ক সিদ্ধান্ত নিয়ে তারা টু শব্দটি করবে।
বিষেশ করে রাজ, লাবিব, রিদ—তিনজনের কারও সাহসও নেই!
ওই দিনের ঘটনার পর মনে হয় না, আর হবেও।
সবাই বসে আছে।
একটার পর একটা শেরওয়ানি দেখানো হচ্ছে—কিন্তু কারও পছন্দ হচ্ছে না।
তার থেকেও বড় কথা—মেহেরের পছন্দ হচ্ছে না।
রাজ এখন একদম বিরক্ত।
সে রিদের কানে কানে বলে,
—ভাই, আমার এখন আর সহ্য হচ্ছে না। ভাব তোকে নিয়ে এত সময় নিচ্ছে, তাহলে ওদের শাড়ি, গহনা, জুতো, চুড়ি, স্নো, পাউডার, আটা, ময়দা কিনতে কতো সময় লাগবে, ভাই! আজ শেষ আমরা।
রিদ বলে,
—চুপ থাক! শুনলে খবর আছে!
লাবিব এক জায়গায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই ঘুমাচ্ছে।
তা দেখে মেহবুবা ফুসে উঠে,লাবিবের কাছে গিয়ে জুতা দিয়ে এক পাড়া মার দেয়।
লাবিব চোখ খুলে বলে,
—কোন শালা বেহ…?
মেহবুবা দুই হাত বুকে বেঁধে বলে,
—আমি বেহ! আমি তোর হবু বউ!
লাবিব বলে,
— আমাকে ল্যাংড়া করতে চাস, পরে বিয়ে করবি তো? ল্যাংড়া জামাইকে?
মেহবুবা বলে,
—আমি কোনো ল্যাংড়া জামাইকে বিয়ে করব না!
লাবিব দাঁতে দাঁত চেপে বলে,
—তাহলে এমন হিল পরে পাড়া দিচ্ছিস কেন?
মেহবুবা বলে,
— এখানে আপনি ঘুমাতে এসেছেন, হ্যাঁ?
লাবিব বলে,
—তো আমি কী করব? তোমাদের একটা শেরওয়ানি পছন্দ করতেই এত টাইম লাগে।
এই কথা একটু জোরে বলে ফেলার কারণে
সবার কানে যায়।
মেহরিন আর মেহের ঘুরে তাকায় লাবিবের দিকে।
একেক জনের চোখ থেকে যেন আগুন ঝরছে!এমনি কোন শেরওয়ানি পছন্দ হচ্ছে না, তার ওপর লাবিবের এমন কথা আগুনে ঘি ডলার মত কাজ করলো।
লাবিব ঢুক গিলে বলে,
— প্লিজ ভাবীগণ, এভাবে লুক দিয়েন না, আমি ভয় পাই।
আমি আসলে বলতে চেয়েছিলাম যে এই এখানকার শেরওয়ানি গুলোই ভালো না…
মেহরিন আর মেহের মাথা নাড়ে।
রাজ আর রিদ হা হা করে হেসে দেয়।
লাবিবের দিকে আঙ্গুল তুলে ইশারা করে। হাসতে থাকে।
লাবিব মুখ ছোট করে বলে,
—তোমরা এমন করলে কিন্তু আমি চলে যাব।
রাজ আর রিদ হাসতেই থাকে।
মেহরিন আর মেহের বিরক্ত হয়ে তাকায়।
ওদের তাকানো দেখেই রাজ আর রিদ—
যেমন হাসছিল, তেমনই হাসি মুখ বেলুনের মতো চুপসে যায়।
তা দেখে লাবিব আবার হা হা করে হাসে।
রিদ আর রাজ রাগী চোখে তাকায়।
মেহবুবা বেঁকা আসে,
লাবিবের পায়ে আরেক বার পাড়া মারে!
লাবিব “আহ!” করে ওঠে।
রাজ আর রিদ গর্বের সঙ্গে মেহবুবাকে বলে,
— well done!!
মেহবুবা হাসে।
লাবিব মনে মনে বলে,
—এরা সব কটা মিলে আমার জীবনটা একদম করোলা বাজি করে খায় ফেললো গো!
লাবিব খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলে যায় ওয়াশরুমের দিকে।
ওদের তিন বোনের শেরওয়ানি পছন্দ এখনো হয়নি।
রিদ আর রাজ বসে বসে হাই তোলে।
রাজ বলে,
—না, আর সহ্য হচ্ছে না।এটা বলে এগিয়ে যায় রাজ।
রাজ দোকান কর্মচারীকে ডেকে বলে,
—ওই যে উপরের তিন নম্বর শেরওয়ানি, ওটা দেখান!
স্টাফ সেটা নামিয়ে দেয়।
রাজ সেটা রিদের দিকে ছুঁড়ে দিয়ে বলে,
— যা ভাই, পরে আয়। তোর বউ একবার দেখুক।
রিদ সেটাই পরে আসে।
আর সেই শেরওয়ানিই সবার পছন্দ হয়!
রিদ ইশারায় ধন্যবাদ জানায়।
রিদের শেরওয়ানি, জুতা, প্রয়োজনীয় সবকিছু কিনে
তারা এবার যায় মেহেরের জন্য লেহেঙ্গা কিনতে।
সেখানে গিয়েও সেই একই সমস্যা!
৪০ মিনিট ধরে একটার পর একটা দেখে যাচ্ছে—কিন্তু কিছুই পছন্দ হচ্ছে না।
রাজ বলে,
—ভাই, তোর বউ তুই নিজে পছন্দ করে দে যা। না হলে আজ সারারাত আমরা এখানেই থাকব।
রিদ আগিয়ে যায়,
চোখ বুলাতে বুলাতে একটা লেহেঙ্গায় চোখ আটকে যায়।
লেহেঙ্গাটা খুব সুন্দর, গর্জিয়াস,
কালচে খয়েরির মাঝখানে সোনালি কাজ।
প্রথম দেখাতেই রিদের খুব পছন্দ হয়।
রিদ স্টাফকে বলে,
—ওটা দেখান।
স্টাফ সেটা নামিয়ে দেয়।
রিদ হাতে নিয়ে মেহেরের দিকে তাকায়।
মেহরিন রিদের হাত থেকে লেহেঙ্গা নিয়ে
মেহেরের গায়ে ধরিয়ে দেয়।
বলে,
—বাহ! এটা খুব সুন্দর! খুব মানাবে মেহেরকে। কী বলিস?
মেহবুবা হাসে,
— তা তো লাগবেই! বরের পছন্দ বলে কথা!
মেহের হেসে ফেলে।
সত্যি বলতে, তারও পছন্দ হয়ে গেছে।
আর তার থেকেও বড় কথা—এটা রিদ পছন্দ করে দিয়েছে।
একে একে মেহেরর সব কিছু কেনা হয়ে গেছে মোটা মোটি সব রিদের পছন্দ মতই কেনা হয়েছে আর ফাইনালি শপিং শেষ!
রাজ একটা বড় নিঃশ্বাস নিয়ে বলে,
— আল্লাহ বাঁচাইছে!
একজনের শপিং করতেই এত কষ্ট, এখনো দুইজন বাকি!
রিদ বলে,
— ভাই, আস্তে ক।
রাজ বলে,
— হে হে, তাই তো!
কোন কথা আবার শুনে ফেলে পরে রণমূর্তি ধারণ করবে।
সে যাই হোক,
ওদের পিছনে ঘুরতে ঘুরতে, ব্যাগ টানতে টানতে খিদা লেগে গেছে।
রিদ হেসে দেয়।
এদিকে লাবিব খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে এসে বলে,
—ভাইগণ, আমায় একটু সাহায্য করো…
রিদ বলে,
— তোর আবার কী হল?
রাজ হেসে বলে,
— মনে হয় শালিকা ভালুপাসা দিছে।ভালুপাসা……
রিদ হাসে।
লাবিব বলে,
—মজা করোনা, ব্যথা পাইছি।
রাজ বলে,
— এইদিকে আয়, একটা লাথী দিয়ে দেখি পা ঠিক আছে কি না!
ঠিক না থাকলে বলবো, তোর ভাবিকে যেনো ওই স্পেশাল ছুড়িটা ইউজ করে!
আয় আয় ভাই আয়!
লাবিব পিছিয়ে গিয়ে বলে,
—না না! আমার পা একদম ঠিক আছে! এই দেখো!
বলে পা নাড়াতে থাকে।
রিদ হেসে বলে,
— নাটকবাজ!
রাজ হেসে বলে,
—All time ড্রামা লেগেই থাকে।
এমন ড্রামাবাজ যে অফিসে আমাকে ‘Sir sir’ করে, আবার ‘আপনি আজ্ঞে’ও করে! ভাবতে পারছিস?
লাবিব বলে,
— বি প্রফেশনাল!মেন।
রাজ বলে,
— আয় তোর পশ্চাতে এক লাথি দিয়ে প্রফেশনাল বানাই দেয়।
লাবিব মুখ ছোট করে দাঁড়িয়ে থাকে।
এমন সময় মেহরিন আসে।
রাজের হাত ধরে বলে,
—চলো, রেস্টুরেন্টে যাই।
খিদা লাগছে আমার।
রাজ হেসে বলে,
— তা তো লাগবেই!
বউ অতক্ষণ এত কাজ করল!
মেহরিন বলে,
—হ্যাঁ তাই তো! চল, চল!
রাজ মনে মনে ভাবে,
— গাধার খাটনি খাটাচ্ছে আমাদের,
আর ওদের নাকি খিদা লাগছে!
ভাই, মানবতা আজ কোথায়?
সবাই মিলে একটা রেস্টুরেন্টে যায়।
জিনিস গুলো সব পাঠিয়ে দেয় রাজ তার লোক দিয়ে।
তাই কোনো ঝামেলা নেই, সবাই খাচ্ছে আর গল্প করছে।
হঠাৎ মেহরিন আর মেহেরের ফোনে আসে একটা এসএমএস।
তারা একে অপরের দিকে তাকায়।
তারপর এসএমএসটা পড়ে।
এসএমএসে লেখা—
“Mission start. So be ready and come first.”
মেহরিন আর মেহের বাঁকা হেসে একে অপরের দিকে তাকায়।
মেহরিন রাজকে বলে,
— আপনারা বাড়ি চলে যান।
আমি আর মেহের একটু পরে আসব।
রাজ পুরো ব্যাপারটা খেয়াল করলেও কিছু বলে না।
শুধু বলে,
— কোথায় যাবে?
মেহরিন শান্ত চোখে রাজের দিকে তাকায়ে বলে,
— আমি চাই না আপনাকে মিথ্যা বলি।
তাই জিজ্ঞেস করবেন না।
সময়মতো জানতে পারবেন।
রাজ কিছু না বলে মাথা নাড়ে।
শুধু বলে,
— নিজের খেয়াল রেখো।
মেহরিন হাসে।
মেহের রিদের দিকে তাকায়।
রিদ ভ্রু নাচায়।
মেহের হাসে।
রিদ বলে,
—Be careful.
খুব একটা সহজ কাজ যে করতে যাচ্ছো না,
তা আন্দাজ করতে পারছি।
তাই সাবধানে থেকো।
মেহের বাঁকা হাসে,
— “Oh chill!”
এদিকে লাবিব আস্তে আস্তে বলে,
— হয়ে গেল!! কার জানি ১২টা বাজাতে যাচ্ছে।
আল্লাহ জানে, কাউকে বোমা মারবে,
নাকি কাউকে গুলি মেরে খুলি উড়িয়ে দেবে, কে জানে!
মেহরিন আর মেহেরের দিকে এক নজর তাকিয়ে আবার বলে,
—মাসুম দেখতে এই দুই মহিলা,
কিন্তু কী ভয়ানক!
তা নিজের চোখে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করবে না।
মেহরিন আর মেহের বেরিয়ে যায় শপিং মল থেকে।
বের হতেই দেখে একটা গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে।
তারা হাসতে হাসতে পা চালিয়ে এগিয়ে যায়।
গাড়িতে উঠে বসে। ওরা উঠে বসতেই গাড়িটা ছেড়ে দেয়।
গাড়ি ছুটে চলে—
নিজস্ব এক গন্তব্যের দিকে।
রাজ আর রিদ একে অপরের দিকে তাকায়।
হঠাৎ রাজ বলে,
—লাবিব, তুই মেহবুবাকে নিয়ে বাড়ি চলে যা।
আমার একটু কাজ আছে।
লাবিব বলে,
— “কিন্তু…”
রাজ চোখ দিয়ে কিছু একটা ইশারা দেয়।
লাবিব মাথা নেড়ে বলে,
—আচ্ছা, আমি মেহবুবাকে নিয়ে যাচ্ছি।
রাজ মাথা নাড়ে।
লাবিব বেরিয়ে যায় মেহবুবাকে নিয়ে।
রাজ বলে,
— কিছু একটা আছে,
যা ওরা প্রকাশ করতে চায়না।
আমার মন বলছে কিছু একটা হবেই আজ।
আমি জানি, ওরা সাহসী।
কিন্তু কেন যেন মনে হচ্ছে ওদের বিপদ আসছে।
রিদ বলে,
—তো কি চাসিস? ওদের পিছু নিবি?
রাজ বলে,
— না, পিছু নেবো না।
ওরা যেহেতু আসল বিষয়টা প্রকাশ করেনি, তাহলে আমরাও জানবো না।
রিদ ভ্রু কুঁচকে বলে,
— তাহলে?
রাজ উঠে দাঁড়ায়।
শার্টের হাতা গুটাতে গুটাতে বলে,
—দূর থেকে তো দেখতেই পারি ওদের কেরামতি! কি বলিস?
রিদ হেসে বলে,
—মানে বলতে চাসিস—সাপও মরবে, আর লাঠিও ভাঙবে না?
রাজ হেসে।
তারপর মুখ শক্ত করে বলে,
—ওরা সব সামলে নিলে তো ভালই।
কিন্তু যদি কোনো বিপদ আসে—
স্রেফ ওটা দেখবো… চল।
রিদ মাথা নাড়ে।
দুজনে বেরিয়ে পড়ে।
বাইক নিয়ে মেহরিনদের লোকেশন ট্র্যাক করে।
দুজনে পাশে পাশে।
রিদ লোকেশন দেখে বলে,
— কি ব্যাপার?
ওরা জঙ্গল এর দিকে কেন যাচ্ছে?
রাজ বলে,
— আমার সন্দেহ যদি ঠিক হয়,
তাহলে ওরা কিছু দেশদ্রোহী + অস্ত্র পাচারকারীদের টাইট দিতে যাচ্ছে।
রিদ হঠাৎ বলে,
— You mind? ওরা?!
রাজ হাসে।
রিদ বলে,
— Oh my god bro!
ওই জায়গাটা কতটা বিপজ্জনক তুই জানিস!
রাজ বলে,
— I know bro, চিন্তা করিস না।
ওখানে আমার লোক রাও আছে।
বেশি ঝামেলা হলে—
সবগুলোকে কেটে কুচিকুচি করে ফেলবে।
রিদ বলে,
—কিন্তু আমরা যাচ্ছি সেটা ওরা জেনে গেলে…
রাজ বলে,
— না।
আমরা উল্টো পথে যাবো।
আর এমন জায়গায় থাকবো যাতে কেউ না থাকে।
আমরা শুধু নীরব দর্শক।
বুঝলি?
রিদ মাথা নাড়ে।
দুজন চলে…
ভালোবাসার মানুষদের রক্ষক হয়ে।
যদিও তারা নিজেরাই নিজেদের জন্য যথেষ্ট।
তবু… তারা গেল।
অন্যদিকে…
লাবিব আর মেহবুবা যাচ্ছে মির্জা বাড়ির দিকে…
মেহবুবা আর লাবিব খুনসুটি করতে করতে বাড়ির পথে ছুটে চলেছে।
হঠাৎ করেই বাইকের চাকায় কিছু একটা বাজে, আর সামনের চাকা উপরে উঠে যায়। ফলস্বরূপ, মেহবুবা আর লাবিব পড়ে যায়। হেলমেট থাকায় কেউ বেশি আঘাত পায়নি, তবে হাত-পা ছিলে গেছে অনেক জায়গায়।
লাবিব দৌড়ে গিয়ে ধরে মেহবুবাকে।
— তুমি ঠিক আছো? বেশি লেগেছে?
মেহবুবা, লাবিবের অস্থিরতা দেখে হাসে।
লাবিবের হাত বেশ অনেকটাই কেটে গেছে, রক্ত বের হচ্ছে।
আর সে এই অবস্থাতেও মেহবুবার কথাই ভাবছে।
মেহবুবা হেসে বলে,
— আরে মশাই, আমি ঠিক আছি। আপনি নিজেরটা দেখেন, রক্ত বের হচ্ছে।
লাবিব শান্ত চোখে তাকায় মেহবুবার দিকে।
আবেগি কণ্ঠে বলে,
— আমি থাকা অবস্থায় তোমার রক্ত ঝরেছে,
এই একটা ব্যাপার আমার মনে যে কী ঝড় তুলছে—
তা যদি দেখতে…
মেহবুবা বলে,
— আরে আমার কিছু… ঠিক তখনই… লাবিবের পেছনে তাকিয়ে দেখে একজন লোক লাবিবের দিকে গুলি তাক করেছে।
মেহবুবা লাবিবের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে,
আর লাবিব তা সামলাতে না পেরে রাস্তায় পড়ে যায় মেহবুবাকে নিয়ে।
ঠিক সেই মুহূর্তে একটা গুলির শব্দ।
লাবিব তাকায় মেহবুবার দিকে।
মেহবুবা তাড়াতাড়ি উঠে লাবিবকে টেনে বাইকের পেছনে নিয়ে যায়।
—একজন আপনাকে গুলি তাক করছিল!
লাবিব বিপদের মধ্যেও হাসে।
এই ভেবে যে মেহবুবার কাছে সে কতটা গুরুত্বপূর্ণ…
লাবিব মেহবুবার হাত ধরে বলে,
— চিন্তা কোরো না, কিছু হবে না।
তুমি এখানেই বসো। বের হবে না।
মেহবুবা মাথা নাড়ে।
লাবিব উঁকি দিয়ে দেখে কয়েকজন লোক এগিয়ে আসছে।
হাতে অস্ত্র।
লাবিব ফোনে কাউকে লোকেশন দিয়ে বলে,
— ফার্স্ট এসো।
তারপর প্যান্টের ভিতর গুঁজে রাখা শর্টগান বের করে,
নিশানা তাক করে গুলি ছোঁড়ে।
একটা গুলিও মিস যায় না।
সবটাই সঠিক নিশানায় লাগে।
সামনের লোকগুলো একে একে পড়ে যায়।
সন্ধ্যা হওয়ায়।
তেমন লোকজন নেই।
কিছু গাড়ি যাচ্ছে, কিন্তু সবাই নিজের মতো চলে যাচ্ছে।
লাবিব বেরিয়ে আসে।
এগিয়ে যেতে থাকে সেই লোকগুলোর দিকে।
ঠিক তখনই…
পেছন থেকে কয়েকজন লোক এসে কিছু বুঝে ওঠার আগেই
লাবিবকে ছুরি মারে।
লাবিব পড়ে যেতে যেতে উঠে দাঁড়ায়।
মেহবুবা একটা চিৎকার দেয়—
লাবিব…….
চিৎকারটা এত জোরে ছিলো যে,
চারপাশে বসে থাকা পাখিগুলোও উড়ে যায়।
লাবিব মেহবুবার দিকে তাকায়।
মেহবুবা দৌড়ে এসে ধরে লাবিবকে।
লাবিব ছুরিটা এক টানে বের করে ফেলে,
আর সাথে সাথেই কল কলিয়ে রক্ত ঝরতে থাকে।
লাবিব বলে,
—মেহবুবা, এখনই চলে যাও, দৌড়াও! যাও এখান থেকে।
মেহবুবা কাঁপা কণ্ঠে বলে,
—না… না, না! আমি আপনাকে ছেড়ে কোথাও যাবো না!
লাবিব দমকে বলে,
—এটা তর্ক করার সময় না, যাও!
এটা বলতেই—
আরেকটা ছুরি এসে লাগে ঠিক আগের আঘাতের জায়গায়।
লাবিব পরে যায় আর কাশতে থাকে কাশির সাথে রক্ত ওঠে আসে।
রক্ত দেখে মেহবুবা অস্থির হয়ে উঠে।
লাবিব আটকে আটকে বলে—
— পালাও… মেহবুবা, প্লিজ…
আর আমাকে… মাফ করো…
আমি তোমাকে…
বলতে বলতেই লাবিব জ্ঞান হারায়।
মেহবুবা গলা ভাঙা চিৎকার দেয়।
লাবিবকে পাগলের মতো ডাকতে থাকে,
কান্নায় ভেঙে পড়ে।
— এই লাবিব, উঠোন না!
আমার সাথে ঝগড়া করো! উঠোন!
আপনি এমন করতে পারেন না!
আপনি আমাকে একা রেখে চলে যেতে পারেন না!
দেখুন, ভাইয়্যা কিন্তু আমাকে ঠিকঠাক বাড়ি পৌঁছাতে বলেছে!
আমি কিন্তু বিচার দিবো!
আপনি আমাকে মাঝ রাস্তায় ফেলে, ব্যথা দিয়ে দিয়েছেন বলে দিবো আমি!
উঠোন! উঠোন না….কান্নায় ভেঙে পড়ে মেহবুবা।
— উ…উঠোন না…
আমাদের তো এখনও অনেক কিছু বাকি…
আপনার জন্য তো আমি এখনো বউ সাজি নাই!
আপনি না বলেছিলেন খুব তাড়াতাড়ি আপনার ঘরে তুলবেন আমাকে…!
আমি তো আপনার জন্য লাল শাড়ি পরবো… খুব সুন্দর করে সাজবো…বউ সাজবো আপনার বউ।
আর আপনি আমার পায়ে আলতা পরিয়ে দিবেন…
আপনি দেখবেন না আমায় বউ সাজে?
আপনি তো বলেন আমি শাড়ি পরলে বউ-বউ লাগে…
যখন আপনার জন্য পরবো, তখন দেখবেন তো… উঠুন…
লাবিব, এই বাদর, উঠ না!
দেখ, আমার খুব খুব কান্না পাচ্ছে। উঠো না…
আচ্ছা, আমি ভালোবাসি বললে উঠবেন, ঠিক আছে?
ভালোবাসি… ভালোবাসি…
লাবিব, শুনতে পাচ্ছেন? আমি ভালোবাসি আপনাকে…
আমি আপনার বউ হবো…
সারা জীবন আপনার কাছেই থাকবো…
এই এই, আপনি তো বলেছিলেন—আমার এই ঠোঁটে আপনার বিচরণ চলবে…
উঠুন… উঠুন…
এই বলে মেহবুবা লাবিবের কপালে, মুখে চুমু খায়।
আর বলে,
—উঠোন না লাবিব… আমার কষ্ট হচ্ছে তো…
মেহেরের বিয়ের পরই তো আমাদের বিয়ে!
এমন সময় আপনি আমাকে একা করে চলে যেতে পারেন না…
একদমই না! আমি তা হতে দেবো না…
মেনে নেবো না… আমি একদমই মেনে নেবো না…
বলেছি তো—
আমরা অনেকদিন একসাথে থাকবো…
১০-১২টা বাচ্চার বাবা মা হবো তো!
আমরা নাতি-নাতনির মুখ দেখি নাই…
আপনার সাথে তো আমার জীবন শুরুই হলো না…
তার আগেই সব শেষ হয়ে যেতে পারে না!
কিছুতেই না… উঠোন!
এই… উঠ… উঠ না… উঠ উঠ উঠ!”
বলতে বলতে লাবিবের বুকে মুখ গুজে কাঁদে।
এই অবস্থায় লোকগুলো কাছে চলে আসে।
মেহবুবাকে কাঁদতে দেখে একজন হেসে বলে,
— আরে দ্যাখ দ্যাখ, মজনুর জন্য লায়লা কাঁদছে।
মেহবুবা মাথা তোলে।
আগুনচোখে তাকায় তাদের দিকে।
মেহবুবার সেই তাকানো এতটাই ভয়ানক ছিল যে,
লোকগুলো মেহবুবার সেই চাহনিতে ভয় পায়।
তাদের একজন বলে,
— এই মেয়ে, চলে যা!
ওটাকে আমরা সামলে নিবো টুকরো টুকরো করে মাছদের খাতে দিয়ে দিবো।
মেহবুবা হাসে।
প্রথমে আস্তে হাসলেও ধীরে ধীরে হাসির শব্দ বাড়ে।
উচ্চ স্বরে হেসে ওঠে।
আবার লাবিবের বুকে মুখ গুজে একটা লম্বা নিঃশ্বাস নেয়।
তারপর প্যান্ট টা একটু উপরে তুলে ঠিক মেহরিনদের মতো
একটা ধারালো ছুরির মতো দেখতে অস্ত্র বের করে।
আর বলে—
“আল্লাহু হুকবার।”
এই বলে দৌড়ে গিয়ে
সেই অস্ত্র গেঁথে দেয় দুই জনের বুকে।
হঠাৎ এমন হওয়ায় সবাই চমকে যায়।
দুইজন মাটিতে পড়ে যায়।
বাকিরা পিছিয়ে যায়, তাকিয়ে থাকে বোকার মতো।
মেহবুবার চুলগুলো বাতাসে উড়ছে, চোখে মুখে রক্ত লেগে আছে, চোখগুলো অসম্ভব লাল দেখাচ্ছে।
একদম রক্তচুষা লাগছে, ল্যাম্পের আলোয় জ্বলজ্বল করছে চোখগুলো দেখতে আরো ভয়ংকর লাগছে তাই।
মেহবুবা বলে,
—কি বললি? জানোয়ারের বাচ্চারা!
কি করবি?
ওকে কেটে মাছদের খেতে দিবি?
এতো সহজ?
আমার সামনে আমার ভালোবাসার মানুষকে মেরে দিলি!
তোদের এত বড় কলিজা কে দিলো?
আজ আমিও তোদের কলিজা দেখবো…
দেখি কত বড়…!”
এই বলে ঝাঁপিয়ে পড়ে লোকগুলোর ওপর।
কেউ মেহবুবা কে ধরতেই পারছে না।
মেহবুবার মধ্যে যেনো ৪০ জনের শক্তি এসে গেছে।
লোকগুলোর অবস্থা খারাপ।
হঠাৎ একজন আসে,
মেহবুবার মাথায় বন্দুক ঠেকায়।
মেহবুবা হাসে।
লোকটা ভয় পেলেও বন্দুক ধরে রাখে মেহেবুবার মাথায়।মনে মনে বলে,
—এইটুকু ছোট একটা মেয়ে কিনা
এমন টগবগে যুবকদের দুলিসাৎ করে দিলো!
এখন যে কেউ মেহবুবাকে দেখলেও ভয় পাবে।
মেহবুবা বলে,
—মেরে দে!
নইলে তুই মরবি।
তোর ওই হাত আমি রাখবো না!
এই হাত দিয়েই আমার লাবিবকে—
আমার ভালোবাসার মানুষকে—তুই মেরেছিস!তাই না?
এই বলে লোকটার দুই পায়ের মাঝ বরাবর
একদম মেইন পয়েন্টে
শরীরের সব শক্তি দিয়ে একটা লাথি মারে।
লোকটা চিৎকার দিয়ে পড়ে যায় মাটিতে।
মেহবুবা উঠে বসে তার বুকের ওপর।
টানা ৪-৫ বার কুপ বসায় বুকে।
লোকটা রক্তে ভেসে যায়।
মেহবুবার মুখও রক্তে রঙিন।
থু থু ফেলে মেহবুবা।
তারপর দাঁতে দাঁত চেপে বলে,
—জানোয়ারের বাচ্চা!
এই হাত দিয়ে মেরেছিস না?এটা বলেই
ওই হাতটাই কেটে ফেলে মেহবুবা। শুধু হাত কেটেই ক্ষ্যান্ত হয়নি।
আঙুলগুলো এক এক করে কেটে ফেলে।
তারপর উঠে দাঁড়ায়।
রাস্তা যেনো আরও শুনশান হয়ে গেছে।
এখন আর একটা গাড়িও দেখা যাচ্ছে না।
মেহবুবা যেনো এক জড় পদার্থ হয়ে গেছে।
মোবাইল খুঁজে পাশেপাশে ঘোরে, পায় না।
এগিয়ে গিয়ে লাবিবের বুকে মাথা রাখে।
শুয়ে পড়ে। চোখের পানি জড়ায়।
—আমাকে রেখে যাবেন না, লাবিব…
আমি আপনাকে ছাড়া বাচবো না…
আমাকেও সঙ্গে নিয়ে যান।
আমি আপনার সাথেই থাকতে চাই…
এই জীবনে হোক, বা ওই জীবনে…আমি সবসময় আপনার সাথে থাকতে চাই। বাঁচলেও আপনার সাথে বাচবো, মরলেও আপনার সাথে মরবো।
ঠিক সেই সময়,
তিনটা গাড়ি এসে থামে ওদের সামনে।
প্রায় ২০-২৫ জন কালো পোশাক পরা লোক নেমে আসে গাড়ি থেকে।
লোকগুলোকে দেখেই মেহবুবা গর্জে ওঠে।
—খবরদার!
আমার লাবিবের ধারে কাছেও যাবার চেষ্টা করবি না!
জানে, মেরে ফেলবো।
একজন বলে,
—ম্যাম, আমরা স্যার-এর লোক…
স্যার কল করেছিলেন…
মেহবুবা বলে,
— এতো দেরি করলেন কেন?
— ওকে… ওকে… ওকে… হসপিটালে নিয়ে যান…
বলতে বলতেই ঢলে পড়ে।
লোকটা দৌড়ে আসে, ধরে ফেলে মেহবুবাকে।
— ম্যাম… ম্যাম…
মেহবুবা সাড়া দিচ্ছে না দেখে লোকটা কাঁধে।
তুলে নেয় মেহবুবাকে।
সবাইকে বলে—
—স্যারকে গাড়িতে তোলো!
হসপিটালে যেতে হবে!
—বাকিরা রাস্তা ক্লিয়ার করো!
পাশে যদি সিসিটিভি থাকে, ভেঙে ঘুরিয়ে দাও!
আশা করি এইসব ম্যাম করেছেন!
গো ফার্স্ট!
আর যদি কেউ দেখে থাকে, তাকে তুলে নাও!
ম্যাম যেনো বিপদে না পড়ে!
সবাই কাজে লেগে যায়।
মেহবুবাকে লোকটা নিজের বাসায় নিয়ে যায়।
প্রথমে তার স্ত্রীকে বলে—
মেহরিনের সপ্নরঙ পর্ব ৪৮
গোসল করিয়ে, চেঞ্জ করে দাও ম্যামকে।
তার স্ত্রী তাই করে।
তারপর মেহবুবাকে নিয়ে যায় হাসপাতালে…