এলিজা পর্ব ৭৩+৭৪
Dayna
সূর্য কিছুক্ষন থম মেরে থেকে বললো, এবং তোর পুলিশ অফিসারের চাকরিটাও তোর বাবার টাকার জোরেই হয়েছিল।কারন পুলিশ অফিসার হতে হলে নিখুঁত থাকতে হয়।
যেখানে জাহাঙ্গীর এর বেইমানির খেলা যেখানে শেষ হয়।সেখান থেকে শুরু হয় মালাইকা সিকদারিনীর মৃ’ত্যু খেলা। অপূর্ব অবাক হয়। ভাঙ্গা গলায় জিজ্ঞেস করলো, কোথায় সে?সে এসব করে কি পাবে? জানি আমার বাবা খারাপ করেছে আমি নিজ হাতে তাকে শাস্তি দেবো।আইন সবার জন্য সমান। এবং এই হিং,স্র মালাইকাকেও। আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া অন্যায়। একজন পুলিশ অফিসার অন্যায় করেছে। কিন্তু সবাই তো আর এক নয়।মালাইকা চাইলেই এর জন্য আইনি ব্যবস্থা নিতে পারতো। এবং পাপীদের শান্তি দিতে পারতো। কিন্তু তারজন্য একাধিক প্রান নেয়াটা কাম্য নয়।
সূর্য বললো, তুই পারবি মালাইকা কে ,তার জঘন্য পাপের শাস্তি দিতে?
অপূর্ব রক্ত মাখা চোখে বললো, যেখানে আমি আমার বাবাকে শাস্তি দিতে পারবো, সেখানে মালাইকাকে কঠিন ও থেকে কঠিনতম শাস্তি দিতে পারবো। অপূর্বর কথা বলার ভঙ্গিমায় ছিলো,রাগ,ঘৃনা। অপূর্বর তার বাবার প্রতি ঘৃনা জমে গেছে।
অপূর্ব জিজ্ঞেস, করলো কোথায় মালাইকা সিকদারিনী!সে কত বড় সাহসী নারী তা আমি দেখতে চাই।
সূর্য কিছু বলতে শুরু করবে ঠিক তখনি একজন চালা উপস্থিত হয়, সূর্য কে বললো,স্যার ১নং ঘরে আপনাকে জরুরি ডাকছে। সূর্য অপূর্ব কে বললো, তুই বোস আমি আসছি। অপূর্ব এদিক সেদিক পরোক্ষ করে ভারি একটা দ্বির্ঘশ্বাস ফেললো। রঞ্জনার দাদির দিকে দৃষ্টি স্থাপন করলো। বসে বসে বির বির করে কিছু বলছে। অপূর্ব উপেক্ষা করলো। অপূর্ব বসা থেকে উঠে দাঁড়ায়। আগ্রহ নিয়ে বাহিরে বের হয়।১নং ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ।যাওয়া যাবে না। অপূর্বর হঠাৎ চোখ পরে মধ্যখান দরজার দিকে। অপূর্ব দেখলো দরজা টা খোলা।মনে মনে ভাবলো হয়তো দাদী এই ঘরেই ছিলো।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
দরজাটা খোলা ।এই মালাইকা হয়তো এখানেই আছে। অপূর্ব ঘরটির ভেতর ধিরে ধিরে প্রবেশ করে। চারদিক দিনের মত আলোকিত। সোনালী রঙের দেয়াল। সবকিছু সোনালী রঙে চিকচিক করছে। অপূর্বর বুকের ভেতর ধুকবুকানি টা বেড়ে চলেছে। শরীর থেকে ঘাম ঝরছে। অপূর্ব সামনে এগোয়। কিছু দাসীরা উল্টো ঘুরে বিভিন্ন কাজ করছে।তবে এরা কেউ দেশী নাগরিক নয়।সবার সাদা শরীর।পরনে স্কার্ট, সাথে ছোট পাথরের আবরনের ব্লাউজ।এদের মধ্যে কি কেউ কি মালাইকা। অপূর্ব সামনে এগোতে থাকে।ঘরটা দেখে মনে হচ্ছে এটা আরাম আয়েশ করার ঘর। ময়ূরপঙ্খী খাট।স্বর্নের প্রলেপ দেয়া।ঘরটির মাঝ বরাবর একটি দরজা।
অপূর্ব অবাক হয় এই ঘরেও একটা দরজা। অপূর্ব আগ্রহ নিয়ে দরজাটির কাছে এগোয়। অপূর্ব বারবার ঢেক গিলছে।বুকের ভেতর ধরফর করছে। হঠাৎ এরকম কেন অনুভূতি হচ্ছে।মনের মধ্যে এত কুহ ডাকছে কেন। অপূর্ব দরজাটি খুললো।দরজাটি খোলাই ছিল। অপূর্ব দেখলো আলোকিত এটি সিড়ি বেয়ে গেছে নিচের দিকে। সামনের স্থান টা আয়োতনে বড়। কিন্তু এই দেয়াল গুলো ঈটের মত রঙ,হয়তো এগুলো শুধু ঈট দিয়েই বাধাই করা। অপূর্ব কিছুটা নিচে নামতেই দেখলো,একটি ছোট পুকুর।তবে সাধারণ কোন পুকুর নয়। পুকুরের ঘাট রুপা দিতে বাধাই করা।পানি গুলো নিলাকার। অপূর্ব দেখলো একটি মেয়ে পুকুরের ভেতর গোসল করছে।যার চুল অনেক বড়, সমস্ত শরীর ধবধবে ফর্সা,পরনে কালো রঙের স্কার্ট, সাদা পাথরের আবরনের ব্লাউজ।কমরে স্বর্নের বিছা।
মাথায় একটা ছোট মুকুট। তার দু পাশে ৬জন দাসী। পুকুরের পানি কমর অব্দি।পানিতে হাজারো বেলিফুল। অপূর্ব ভাবলো,এটাই হয়তো মালাইকা।
একজন দাসী, উল্টো দিকে মুখ ঘুরিয়ে থাকা,মালাইকার লম্বা চুল ধুয়ে দিচ্ছে। একজন মাথায় দুধ ঢেলে দিচ্ছে। অপূর্ব মালাইকাকে দেখতে চাইলো। অপূর্ব সিড়ি বেয়ে নিচে নামলো। অপূর্বর বুকের ভেতর ধরফর করছে। অপূর্ব নিচে নেমে হাতের বা দিকে যাচ্ছে।পুকুরটি গোলাকার। অপূর্ব ঘুরে গিয়ে সামনে থেকে মালাইকার মুখটি দেখবে। অপূর্ব ধির পায়ে এগোচ্ছে। অপূর্ব যত বা দিকে যাচ্ছে।মালাইকা তত ডান দিকে ঘুরছে। অপূর্ব পুকুরের মাঝ বরাবর। মালাইকা মুখ ঘুরিয়ে সামনের দিকে রেখেছে। অপূর্ব দেখতে পারলো না।মালাইকা ভেজা চুল গুলো এপাশ ওপাশ করছে।মালাইকা পা ভাজ করে পানির ভেতর ডুব দেয়। অপূর্ব অপেক্ষা করছে কখন উঠবে। অপূর্ব মনে মনে বলছে,এদিকে ঘুরেই যেন ডুব থেকে উঠে। মালাইকা ডুব থেকে ধিরে ধিরে উঠলো।মালাইকা চোখ বোঝা অবস্থায় পানির ভেতর থেকে উঠলো। অপূর্বর হঠাৎ করেই চোখ গুলো ছানাবরা হয়ে যায়।পূরো পৃথিবী এলোমেলো হয়ে যায়। অপূর্ব চট করে গিয়ে দেয়ালে ধপাস করে ঘেষে পরে। সামনে থাকা সব কিছু ঝাপসা হয়ে আসছে। অপূর্বর মাথা ঘুরে যায়। অপূর্ব কাপা ঠোঁটে একবার বললো,এলিজাহহহ।
এলিজা চোখ বন্ধ অবস্থায় উল্টো ঘুরে যায়।পুকুর থেকে উঠে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে যায়। অপূর্ব কে দেখেনি।অপূর্বর নিমিষেই শরীরের সমস্ত শক্তি ফুরিয়ে যায়। অপূর্ব দেয়াল ঘেঁষে বসে পরে। অপূর্ব কাকে দেখেছে,এ কোন এলিজা,কি তার অঙ্গ ভঙ্গি।পরনে তার কি পোশাক। তৎক্ষণাৎ সূর্য আসে। সূর্য বুঝতে পেরে যায়। অজানা হিং,স্রী নারী তার চোখের সামনে,সে যে আর কেউ নয়,তার প্রিয়তমা স্ত্রী। অপূর্ব আরো একবার কাপা ঠোঁটে বিড়বিড় করে বললো,এলিজাহহ। অপূর্বর কথা বলার মত শক্তি নেই। সূর্য অপূর্বর মুখের কাছে গিয়ে,এক অদ্ভুত স্বরে বললো,সে এলিজা নয়,সে মালাইকা সিকদারিনী। বাবররাজ্যর রাজকুমারী।তাকে সবাই রাজকুমারী বলে। সূর্য খিল খিল করে হেসে উঠে। অপূর্ব নিস্তেজ, নিঃস্ব, অপূর্বর দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।বুকের ভেতর দুমরে মুচড়ে যাচ্ছে।
সুর্য অপূর্বর পাশে এক পা টান করে দেয়াল ঘেঁষে বসে। অপূর্বর এক পা ভাঁজ করা।অন্য পা টান করে বসে আছে।
অপূর্ব নিস্তব্দ।ভেতরে ভেতরে মরে যাচ্ছে।চোখ দিয়ে পানি পরছে। অথচ কান্নার শব্দ নেই। অপূর্ব কাপা ঠোঁটে বললো, সব সত্যিটা বল।
সূর্য বলতে শুরু করলো,
তোর বাবার সেই জঘন্য কাজের জন্য ধ্বংস হয় সুন্দর একটি পরিবার।
সেদিন মালাইকা ওর ছোট বোনকে নিয়ে পালিয়ে আসে।তখন প্রিয়ার বয়স ৬।
মালাইকা ছিল ভিতু। সবকিছুতেই ভয় পেয়ে যেত।একটা মেয়ে মানুষ কোথায় যাবে,কার কাছে যাবে,সবাই যে অচেনা।মালাইকা সেদিন রাতে প্রিয়াকে নিয়ে আলি বাড়ি ওঠে।আলির রান্না ঘরে মালাইকা প্রিয়া রাত কাটানোর জন্য স্থান নেয়। প্রিয়া কেঁদে উঠে।মা বাবার জন্য।তখন জয়তুন কারো কান্নার আওয়াজ শুনে রান্না ঘরে যায়। জয়তুন দেখলো দুটো মেয়ে ঘাপটি মেরে বসে আছে। তখন ছিল শীতের দিন।মালাইকা শীতের থেকে ও বেশি ভয়ে কাপছিলো। জয়তুন এর মায়া হয়। জয়তুন, রমজান সবকিছু জিজ্ঞেস করে।মালাইকা সবকিছু খুলে বলে। জয়তুন রমজান এর সন্তান না থাকায়, ওদের সন্তানের জায়গাটা দিয়ছিলো।
কিন্তু অপরাধী নিজেকে যত বড় চালাক ই মনে করুক না কেন সে কোন না কোন ভুল করেই থাকে।যেদিন হাসপাতালে তোর বাবা আর ডাঃ ইব্রাহিম অন্তিম কে মেরে ফেলার,ও তার সম্পত্তি হাতিয়ে নেয়ার চুক্তি করে সেদিন নার্স রিয়া সব শুনে ফেলে। নার্স রিয়া বলেছিলো পুলিশ কে জানিয়ে দিবে।তখন ডাঃ ইব্রাহিম রিয়াকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এবং চেষ্টা ও করে কিন্তু পারেনি। সেদিন থেকে রিয়া গায়েব হয়। তোর বাবা রিয়াকে খু,ন করার জন্য কিছু গুন্ডাদের টাকা দেয়।রিয়া বুঝতে পেরে গেছিলো যে ওর আয়ু আর বেশিদিন নেই।আর পুলিশ কে যদি রিয়া জানিয়ে দেয় তবে ওর পরিবার কেও শেষ করে দিতো।সেই ভয়ে আর রিয়া পুলিশ কে জানালো না।রিয়া খোজ করলো বাবররাজ্যর। জানতে পারে বাবর ও তার স্ত্রী মারা গেছে। বেঁচে আছে তার দুই মেয়ে কিন্তু তারা কোথায় তা জানা নেই।রিয়া অনেক কষ্টে খুজে পায় মালাইকাকে , সেদিন মালাইকাকে সব কিছু বলে দেয়। কিন্তু পরবর্তীতে রিয়া কে জাহাঙ্গীরের লোকেরা মেরে ফেলে।
সেদিন সব সত্যি মালাইকা জেনে যাওয়ার পর, ভীতি মালাইকা হয়ে ওঠে হিং,স্রী মালাইকা। নিজের পরিচয় বদলে ফেলে। নিজের নাম দেয় রত্না এবং প্রিয়ার নাম দেয় পাখি। এভাবে কিছুদিন কেটে যায়। জয়তুন ছিলো আল্লাহ ভীরু, জয়তুন বললো রত্না নামটা ভালো না।আজ থেকে তোর নাম এলিজা।
এলিজা ভেতরে ভেতরে ফন্দি আটতে থাকে। সাধারণ,থেকে হয়ে ওঠে অসাধারণ।এই অসাধারণন্ত-ছিলো হিংস্র-তা। এলিজার পরিকল্পনা জয়তুন বা রমজান এবং পাখি এরা কেউ ই জানতো না। আমি জানতে পারি মালাইকা কোথায় ।আমি দেখা করতে যাই।তখন মালাইকা আমায় সবকিছু খুলে বলে। এবং আমিও খুলে বলি,যে রঞ্জনা কে কারা মেরেছে।
সেদিন থেকেই শুরু হয় মৃত্যু খেলা। আমরা দুটো জায়গায় আস্থানা তৈরি করি।একটি বাবররাজ্য এবং রুশরাজ্যে। এই বাড়িটা যারা কিনেছিলো তারা আর আসেনি।কারন বাবর ও তার স্ত্রী আত্মহ,ত্যা করেছে বলে। আমরা একে একে অনেক নিরীহ মানুষের প্রান নেই। দূর্জয় সহ অনেক কে শেষ করি। শুরু হয় ২৭ বছরের ছেলেদের কিডন্যা,পিক।আমি টাকা দিয়ে হিমেল এবং চীপস কে কিনে নেই।চীপস জানায় তার আরো একজন ডাক্তার লাগবে।
তখন ডাঃ ইব্রাহিম কে আমাদের মৃত্যু খেলায় নিয়ে আসি।কারন,ডাঃ ইব্রাহিম ভয় পেয়ে গিয়েছিল যদি সবকিছু পুলিশ কে বলে দেই। সেদিন থেকে ইব্রাহিম ও জড়িত হয়। এলিজা জানতো না যে,রিয়া যে জাহাঙ্গীর এর কথা বলেছে আমি তার পরিচিত।আমি তোকে চিনী তা এলিজা-জানতো না। এবং আমিও বলিনি। কারন আমি তোর মৃত্যু চাইনি।এলিজার মূল উদ্দেশ্য ছিল তোকে হ,ত্যা করা। চাইলে এলিজা জাহাঙ্গীর কে অনেক বার মেরে ফেলতে পারতো কিন্তু ওর নিসানা ছিলিস তুই। কিন্তু আমি এলিজা কে বলতাম তার ছেলে বিদেশ। মিথ্যা বলতাম যাতে ও তোর খোঁজ, এবং তোকে খু,ন না করতে পারে।তোকে না পেয়ে এলিজা একে একে হাজারো নিরীহ ২৭ বছরের ছেলেদের খু,ন করতে থাকে। এবং ওদের হার্ট গুলো বিদেশ পাচার করে দিতো। এবং সেই টাকা অসহায়দের মধ্যে বিলিয়ে দিতো। সেই সাথে কিড,ন্যাপ করা হত সদ্য বিয়ে ঠিক হওয়া কনেদের।এটা করতো রঞ্জনার জন্য।
এভাবেই মৃত্যু খেলায় কেটে যায় দির্ঘ একটি সময়।
একদিন এলিজা আমাকে খোজ পাঠায় যে,আমরা যাকে খুঁজছি সে আমাদের নাগালে।আমি সেদিন আদমরা হয়ে গিয়েছিলাম।কি বলছে এসব।আমি জিজ্ঞেস করি মানে কি,তখন ও বললো, জাহাঙ্গীর চৌধুরীর ছেলে অপূর্ব রুশরাজ্যে এসেছে।
আমি কি করবো বুঝতে পারছিলাম না।আমি তখন তোর খোঁজে তোর বাড়ি যাই। এবং জানতে পারি তুই সত্যি ই বিক্রমপুরের রুশরাজ্যে ক্যাম্পিং এ গিয়েছিস।আমি কি করবো বুঝতে পারছিলাম না ।এলিজা আমাদের দলের সবাইকে নিয়ে রুশরাজ্যে উপস্থিত হয়। কিন্তু ওরা দেখলো তোদের টিমে অনেকজন। এলিজা এভাবে অনেক দিন তোর জন্য রুশরাজ্যে যায়। দিনেও অনেকবার ছদ্মবেশে গিয়েছে তোকে দেখার জন্য।ওর ভাইয়ের হৃদয় কার শরীরে তা দেখার জন্য। কিন্তু তোকে দেখার পর থেকে এলিজার হাবভাব অন্য রকম হতে থাকে। দলের অন্যরা তা পরোখ করতো।এভাবে এলিজা তোকে দূর থেকে অনেকবার পরোখ করে। একদিন রাতে এলিজা তোকে দেখার জন্য একাই রুশরাজ্যে যায়।সেদিন ছিলো তোদের ক্যাম্পিং এর বয়স ১৩ দিন। এলিজা তোকে দেখে। অন্ধকার রাতে চাদনীর আলোয় তোর সুন্দর্য এলিজা কে আকর্ষন করে। এলিজা তোকে দূর থেকে পরোখ করতো।তখনি তুই এলিজার উপস্থিতি বুঝতে পারিস। এবং এলিজা কে ধরে ফেলিস। এলিজা নতুন ফন্দি আঁটে।যে,তোকে প্রেমের ফাঁদে ফালাবে।আর এলিজা- এও জানতো ওর রুপের ঝলকে যে কেউ প্রেমে পরবে। সেদিন তুই এলিজাকে দেখিস এবং ওর প্রেমে পরিস।
কিছুটা সময়ের ব্যাবধানে তুই ওকে বিয়ে করার জন্য অস্থির হয়ে যাস। এলিজা ও রাজি হয়।এলিজা শুধু ওর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য তোকে বিয়ে করে।তখন তোর বাবা জানতো না কে এই এলিজা।একটা সময় জানত পারে এলিজাই বাবর সিকদার এর মেয়ে। এটা জানার পর তোর বাবা এলিজাকে মারার জন্য দুজন গুন্ডা ঠিক করে ১০ লাখ টাকা দিয়ে।সেদিন রাতে তোর থানাতে কাজ ও থাকে অনেক। জাহাঙ্গীর সেই সুযোগ কাজে লাগায়। জাহাঙ্গীর সেদিন খাবারের পানিতে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে রাখে। সবাই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন থাকে। কিন্তু এলিজা সেদিন রাতে খাবার ই খায়নি।কারন এলিজা জানতো জাহাঙ্গীর কেমন নিকৃষ্ট মানুষ।সেদিন রাতে এলিজা কে আক্রমন করলে এলিজা কোনরকম বেঁচে যায়। পরবর্তীতে আবার আক্রমন করলে এলিজা কে বায়েজিদ বাঁচিয়ে নেয়। এবং তৃতীয় বার খু,ন করতে চাইলে জাহাঙ্গীর নিজেই বাচায় এলিজা-কে। কারন তোর মা চলে যাওয়ার পর উনি নিস্তেজ হয়।
গুন্জন এবং মৌলবী দুজনেই জেনে গিয়েছিল আমাদের পাপের সম্রাজ্যর কথা। তোদের বিয়ের পরেরদিন তুই আর সাদিক যখন , গুন্জন কে দেখিস,সেদিন গুন্জন তোকে সব বলার জন্য ই গিয়েছিল। কিন্তু তা হয়ে ওঠেনি। এরপর এলিজা-মৌলবী আর গুঞ্জন কে মেরে ফেলতে বলে।
অপূর্ব থম মেরে কাপা ঠোঁটে বললো, যেদিন মৌলবী মারা যায়, সেদিন তো এলিজা-আমার কাছেই ছিলো।যখন গুন্জন মারা যায় তখন ও এলিজা-আমার কাছে ছিলো তবে কারা মেরেছে?
সূর্য ঠোঁট কুঁচকে হেসে বললো, আমিও মারিনি এলিজা ও না। মৌলবী কে মেরেছিল হিমেল,চীপস, এবং শ্যামলী। অপূর্ব অবাক হয়।ভ্রু কুঁচকে ভাঙ্গা গলায় বললো,শ্যামলী??
সূর্য বললো,হ্যা শ্যামলী ।যে বয়সে আমাদের থেকে বড় । সে ছিল অন্তিম প্রেমিকা।অন্তিম এবং শ্যামলী দুজন দুজনকে অসম্ভব ভালোবাসতো। কিছুদিন পরই ওদের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওরাও নিয়তির কাছে হেরে যায়।
সূর্য ভারী একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো, এলিজা-তোকে ভালোবাসে। অপূর্ব মেরুদন্ড সোজা করে বসে। অপূর্ব বললো বিশ্বাস করি না । সূর্য বললো, এলিজা ধিরে ধিরে তোর মায়াজালে ফেসে যায়। এক পর্যায় তোর উপর এবং তোর বাবার উপর থেকে সব রাগ তুলে নেয়। শুধু মাত্র তোকে ভেবে। কিন্তু তারপরেও এলিজা-এই পাপের, জঘন্য মৃ’ত্যু খেলা খেলতে বাধ্য হচ্ছে। অপূর্ব বললো, যে অন্যর নিরীহ জীবন কেরে নিতে পারে সে কখনো অন্যকে ভালোবাসতে পারে না। অপূর্ব ভারী একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাঙা গলায় বললো, তারপর কি হয়েছিল?
সূর্য বললো, মৌলভী কে মেরে ফেলার পর।তার লা,শ কে রাস্তার পাশে ফেলে দেই।
রুশরাজ্যে যে লা,শ টি দেখেছিলাম। সাথে যে মেয়েটি সে কে?
সূর্য বললো, সেদিন ও তোর চোখে ধুলো দিয়েছিলাম। ওটা সাগরের লা,শ নয়। সেটি ছিল অন্তিম এর লা,শ। এবং মেয়েটি ছিলো শ্যামলী। যখন আমার চালারা আমায় বললো, একটা ছেলে ঠুকে পরেছে আমাদের আস্তানায় তখন আমি , ওদের কাছে বর্ণনা জিজ্ঞেস করলে তোর সাথে মিলে যায়। এবং আমি নিশ্চিত ছিলাম ওটা তুই।তাই শ্যামলী কে সরিয়ে ওর জায়গায় একটা দাসী কে বসিয়ে দেই।
এলিজা পর্ব ৭০+৭১++৭২
অপূর্ব কাপা কন্ঠে বললো, নিরার কথা বললি না,তাকে কে মেরেছে?
সূর্য বললো, নিরাকে তো এলিজা ওর বিয়ের আগে মেরে’ছিলো। কিন্তু এলিজা নিরাকে ভাবী হিসেবে খুব ভালো বাসতো। একদিন রাতে এলিজা আর শ্যামলী রুশরাজ্যে আসতে ছিলো তখন নিরা পিছু নেয়।নিরা ভাবী সবকিছু জেনে যাওয়াতে আমরা মিলে সেদিন তাকেও শেষ করে দেই।