প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে সিজন ২ পর্ব ৬৯

প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে সিজন ২ পর্ব ৬৯
আদ্রিতা নিশি

“আপনি আমাকে নিতে আসবেন আগে বলেননি কেন?”
ক্যাম্পাসে ঘটা ঝামেলা সামলে সারহান গাড়িতে ড্রাইভিং সিটে উঠে বসতেই অরিত্রিকা সন্দেহাকুল কন্ঠে জানার আগ্রহ প্রকাশ করল। সারহান তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকাল পাশের সিটে বসে থাকা অরিত্রিকার দিকে। তাতে কপালের মধ্যাংশে সূক্ষ্ম ভাজ পড়ল। পুরুষালী চাহনি প্রগাঢ় এবং গভীর। সেই চাহনি যেন অরিত্রিকার বুকে কাঁপন ধরাল। এমন সিংহের মতো কে তাকায়? মনে হচ্ছে, তাকে এখনি এক থাবায় শিকার করবে। সে শুকনো ঢোক গিলল। হাসার ভাণ করে নরম কন্ঠে বলল;

“এসেছেন খুব ভালো করেছেন। আপনার জন্য অসভ্য লোকটা চরম শিক্ষা পেয়েছে। কলিজা কতো বড়! রাজশাহী ১ আসনের এমপির বউকে প্রপোজাল দেয়। কিন্তু আমার একটা প্রশ্ন মাথায় ঘুরঘুর করছে। আপনি ইলহাম তালুকদারকে আ*ঘাত করে পানি খেতে দিলেন! আসার সময় ভালোভাবে কথা বলে আসলেন! উনি তো আপনার শত্রু। তাহলে এমন নমনীয় আচরণ কেন করলেন?”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

সারহানের ভাবমূর্তি অক্ষুন্ন রইল। গাম্ভীর্য ভাব নিয়ে খানিকটা ঝুকে আসলো অরিত্রিকার দিকে। অরিত্রিকা কিঞ্চিৎ ভড়কে গেল। চক্ষুদ্বয় বড় করে তাকিয়ে সিটের সাথে মিশে গেল। বুঝতে পারল না মানুষটা এভাবে তার কাছে কেন আসছে? উল্টো পাল্টা চিন্তা নৃত্যরত তখন তার মস্তিষ্কে। সে দুহাতে বইয়ের ব্যাগটা বুকে চেপে কাচুমাচু করে বসমান। সারহান অরিত্রিকার উদ্ভট ভাবনায় এক বালতি পানি ফেলে দিয়ে সিট বেল্টটা আঁটকে সোজা হয়ে বসল। সামনে দৃষ্টি রেখে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে স্টিয়ারিংয়ে হাত রেখে ভরাট কন্ঠে বলল;

“কিছু ক্ষেত্রে মানুষকে দ্বিতীয়বার শুধরানোর সুযোগ দিতে হয়। সেই সুযোগটাই ইলহামকে দিয়েছি আমি।”
গাড়ি যানবাহন পেরিয়ে চলছে গন্তব্যে। অরিত্রিকা বেশ অবাক হলো। সারহান ভাইয়ের স্বাভাবিক থাকাটা তাকে চিন্তিত করে তুললো। এতো বড় একটা ঘটনা ঘটে গেল অথচ সেটাকে সামান্য ভুলের সাথে তুলনা দিলো? এটা আদৌও কি মেনে নেওয়ার মতো বিষয়? তার মনে নানাবিধ চিন্তা বাসা বাঁধল। সবকিছু রহস্যময় মনে হলো। আচ্ছা, ইলহাম তালুকদারের সাথে মানুষটার শত্রুতার সূত্রপাত ঘটল কীভাবে? তবে কি ভার্সিটিতে পড়াকালীন সময়ে কোনো কিছু ঘটেছিল? ধীরে ধীরে কৌতূহল বাড়ল। সে দম ফেলে স্বাভাবিক ভাবে বসল। সাহস সঞ্চার করে ধীরজ কন্ঠে শুধালো ;

“আপনারা ভার্সিটিতে থাকাকালীন ফ্রেন্ড ছিলেন?”
সারহান প্রশ্নটা ইচ্ছাকৃত উপেক্ষা করে গম্ভীর কন্ঠে বলল;
“ইলহামের সাথে কেন কথা বলেছিস? বলেছিলাম তোকে ওর থেকে দূরে থাকতে।”
“আমি কথা বলতে চাইনি। উনি জোর করে কথা বলার চেষ্টা করছিল।”
“জোর করে কথা বলার চেষ্টা করেনি। তোকে প্রপোজ করেছে। ওর জায়গায় অন্য কেউ থাকলে জি*হ্বা ছিঁড়ে দিতাম। ব্লাডি বাস্টার্ড একটা! প্রথম বার তোকে গোলাপফুলের বুকে আর চিরকুট দিয়েছিল আর আজ প্রপোজ করল। তুই ষ্টুপিডের মতো.. ”

“উনি আমায় ফুলের বুকে দিয়েছিল? কত্তো বড় শয়তান! ওই লোকের জন্য আপনার হাতে থাপ্প*ড় খেয়েছিলাম। সেই থাপ্প*ড়ের কথা মনে পড়লে গাল এখনো চিনচিন করে। আপনি আমায় আগে কেন জানাননি? ”
“জানালে কি করতি?”
সারহান গাম্ভীর্য বজায় রেখে আগ্রহের সহিত জানতে চাইল। অরিত্রিকা চোখ মুখ শক্ত করে রাগত স্বরে জবাব দিলো ;
“আগে জানলে, ইলহাম তালুকদারের দুগালে চারটা থাপ্প*ড় মা*রতাম।”
সারহান পূর্বের ন্যায় বলল;
“আজকে প্রপোজ করেছিল তখন থাপ্প*ড় মা*রার সাহস হয়নি আর এখন সাহসী সাজার ভাণ করছিস?”
“আসলে তখন মাথা হ্যাং হয়ে গিয়েছিল।”
“এখন তোর মোটা মাথা ঠিক আছে?”
“সারহান ভাই!”

“ভাই বলে ডেকে মাথা বিগড়ে দিস না ফাইরুজ! আমি তোর ভাই নই। তোর হাসবেন্ড হই।”
সারহান বিরক্তি প্রকাশ করে বলল। অরিত্রিকা অসহায় বোধ করল। সতেরো বছর ধরে ডেকে আসা সম্বোধন কি এতো সহজে পরিবর্তন হয়? সে যদি জানতো এই খারুস কাজিন ব্রো তার বর হবে তাহলে আগে থেকে প্রেকটিস করে রাখতো — ওগো, হ্যা গো, শুনছো বলার। হঠাৎ সম্পর্ক বদলে গেল চোখের পলকে। ভাইয়া থেকে ডিরেক্ট ছাইয়া হয়ে গেল। সে তপ্ত শ্বাস ফেলল। কথাটা ঘুরিয়ে পুরনো এক ঝামেলার কান টেনে এনে সেই কথা বলা শুরু করল ;

“আপনি আমায় থাপ্প*ড় মে*রেছিলেন সেদিন কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। সেই রাতে কেউ একজন এসে এন্টিসেপটিক আমার গালে লাগিয়ে দিয়েছিল। কে এই মহান কাজটা করেছিল তাকে খুঁজে পায়নি।”
সারহান এসময় কথাটা আশা করেনি। সে আড়চোখে একবার অরিত্রিকার নিষ্পাপ মুখখানা দেখল। মেয়েটা এখনো পুরনো কাহিনী মনে রেখেছে? সে ভেবেছিল হয়তো ভুলে গেছে। ড্রাইভিং করতে করতে পুরূ কন্ঠে বলল;
“কে কাজটা করেছে বলে তোর মনে হয়?”
“জানি না। তবে একজনকে সন্দেহ হয়।”
“কাকে?”
“আপনাকে। আপনি সেদিন রাতে কি আমার রুমে এসেছিলেন?”
“এসেছিলাম।”
সারহান সহজ- সরল কন্ঠে স্বীকারোক্তি টানলো। অরিত্রিকা আশ্চর্যিত হলো। অবিশ্বাস্য চাহনিতে পরখ করল। সেতো আন্দাজে ঢিল ছুড়েছিল। এভাবে সঠিক নিশানায় লাগবে জানা ছিল না। ভাবনার মাঝে কিঞ্চিৎ রাগ হলো। গালে থা*প্পড় মে*রে সেই আ*ঘাত প্রাপ্তস্থানে মলম লাগিয়ে দিয়েছিল মানুষটা! বুকে জমা হলো এক আকাশসম অভিমান। রাগ,অভিমান মিশ্রিত কন্ঠে বলল;

“মে*রে মলম লাগিয়ে দিয়েছিলেন! মানে জুতো মে*রে গরু দান?কেন এসেছিলেন সেদিন?”
সারহান শান্তশিষ্ট ভঙ্গিমায় অভিযোগ শুনলো। মেয়েটা বড্ড সংবেদনশীল। পূর্বে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে পুনরায় অভিমান করছে। সে তার ভুল বুঝতে পেরেছিল। সেদিন রাতে রাগের মাথায় থা*প্পড় দেওয়া একদম উচিত হয়নি। এখনও সেই ভুলের কারণে মন বিষন্ন থাকে। যার শরীরে দীর্ঘ দুবছর ফুলের টোকা পর্যন্ত পড়তে দেয়নি তাকে সে কষ্ট দিয়েছে। সে ইচ্ছাকৃত করেনি। অরিত্রিকার তর্ক করায় রাগের কারণে হাত তুলেছিল।

“কেন এসেছিলাম? প্রশ্নটার উত্তর তোর কাছে আছে আমি জানি। তবুও উত্তর দিচ্ছি আমি। যাকে মন- প্রাণ দিয়ে ভালোবেসেছি। তার চোখে একটিবার অশ্রু দেখার চেয়েও ভয়ংকর আর কিছুই আমার কাছে নেই। তাই সেই রাতে তাকে কষ্ট দিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমানোর মতো পাষাণ আমি হতে পারিনি। জানিস, সে-সময়টায় হৃদয়ে তখন অশান্ত ঝড় বইছিল। ভেতরে ভেতরে কাঠিন্যতার খোলসে জড়িয়ে নিয়েছিলাম অথচ কী এক অদ্ভুত জেদে তোর সামনে গিয়েও নিজেকে এমনভাবে মেলে ধরলাম যেন তুই আমার জীবনে কোনো মূল্যই রাখিস না। বলেছিলাম, তোকে অপছন্দ করি। অথচ সত্যিটা ছিল ঠিক তার উল্টো।তুই ছিলি আমার সমস্ত অস্থিরতার উৎস, তুই ছিলি সেই একটিমাত্র সুখ— যেখানে আমি শান্তি খুঁজে ফিরছিলাম। কিন্তু ভালোবাসা স্বীকার প্রকাশ মতো সাহস তখন আমার ছিল না। তাই ভালোবাসার স্থলে রেখে এলাম অপছন্দের মুখোশ।”

সারহান গুরুগম্ভীর আওয়াজ তুলে বলল। অরিত্রিকা বিস্ময়াভিভূত। এটা কি শুনল সে। মানুষটা তাকে লুকানো অনুভূতি প্রকাশ করছে। সারহান রাস্তার দিকে দৃষ্টি রেখে ভাবমূর্তি পরিবর্তন করে স্বাভাবিক কন্ঠে বলে উঠল ;
“এভাবে হা করে তাকিয়ে থেকে আমায় দেখিস না। তোর অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে কার কথা মনে পড়ছে জানিস?”
অরিত্রিকা নিজেকে সামলে বলল;

“কার কথা মনে পড়ছে?”
“ মঞ্জুলীকার কথা মনে পড়ছে।”
“আমাকে মঞ্জুলীকার মতো মনে হয়?”
“হুমম। ছোট্ট মঞ্জুলীকার মতো মনে হয়।”
সারহান নিঃশব্দে হাসল। অরিত্রিকা কটমট করে তাকিয়ে মেকি রাগ দেখিয়ে বলল;
“আমি আর ছোট নেই। আমায় ওই নামে ডাকবেন না।”
সারহান হাসি বজায় রেখে বলল;
“তারমানে ছোট্ট মঞ্জুলীকা বড় হয়ে গেছে! বাই দ্য ওয়ে, লাল-সাদা মিশ্রণের শাড়ি পড়া মঞ্জুলীকা সাজটা কিন্তু অসাধারণ ছিল।”
অরিত্রিকার মুখখানা চুপসে গেল। মিনমিন করে বলল;

“আপনি ওই ভুতূরে সাজে আমায় দেখেছিলেন? ”
সারহানের মনে শীতল শিহরণ বয়ে গেল। সুগভীর কন্ঠে বলল ;
“ মঞ্জুলীকার মতো অদ্ভুত সাজটাই আমায় সতেরো বছর বয়সী কিশোরীর প্রতি কৌতূহলী করে তুলেছিল। সেই কৌতূহল মেটাতে গিয়ে তুই নামক অসুখে আক্রান্ত হয়েছিলাম। ”
“আমি অসুখ? এসব কি বলছেন?”
“তুই নামক প্রিয় অসুখ। এই অসুখ সাধারণ কোনো অসুখ নয়। এটা হলো প্রেমরোগ।”
“কথা শুনে মনে হচ্ছে সত্যি প্রেমরোগে ধরেছে আপনাকে। এ কোন আজব রোগীর সাথে বিয়ে হলো আমার।”
“রোগটা কিন্তু ছোঁয়াচে।”
সারহান বাঁকা হেসে গলা খাদে নামিয়ে নিচু স্বরে বলল। অরিত্রিকা ড্যাবড্যাব করে তাকাল। বিরবির করে আওড়ালো ;

“এই ছোঁয়াচে রোগটা আপনার কারণে ধরেছে আমায়। সারাক্ষণ শুধু সদ্য প্রেমে পড়া প্রেমিকার মতো প্রেম- প্রেম পায়।আপনার আশে পাশে থাকতে ইচ্ছে হয়।”
সারহানের কর্ণকুহরে প্রবেশ করল কথাটা। তার ওষ্ঠদ্বয় প্রসারিত হলো। সুগভীর কন্ঠে বলল;
“আমার আশেপাশে থাকার জন্য ব্যবস্থা করব?”
অরিত্রিকা অবুঝের ন্যায় বসে রইল। কথাটার মর্মার্থ বুঝতে পারল না। সারহান আর মর্মার্থ বিশ্লেষণ করল না। ফুরফুরে মেজাজে ড্রাইভিং করতে লাগল।

অফিসের নিজস্ব ডেস্কে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে আছে ইরফান। চোখে মুখে লেপ্টে আছে একরাশ ক্লান্তি। শরীরটা মেজমেজ করছে। এসি চলছে অথচ ঘেমে নেয়ে একাকার অবস্থা। সে অধৈর্য হয়ে শার্টের উপরের একটা বাটন খুলে ফেলল। আজকাল নিজেকে খুবই ভালো ভাবে সামলে নিয়েছে। কাউকে ভুলতে কাজের মাঝে ডুব দিয়েছে। জীবনটা যেন আগের থেকে খানিকটা স্বাভাবিক হয়েছে। সবার সাথে সম্পর্ক ঠিক হচ্ছে। বিশেষ করে সারহানের সাথে কথাবার্তা বলা হয়। পুরনো দিনের দৃঢ় সম্পর্কটা জোড়া লাগছে। যেমনটা ছিল — ছোটবেলায়। এই পাঁচদিনে সে একটা বিষয় খেয়াল করেছে। অবসর সময়ে কিংবা কাজের ফাঁকে রাহাকে মনে পড়েছে।

কেন মনে পড়েছে তা যেন অজানা। হয়তো মেয়েটার চঞ্চল স্বভাব, যেচে কথা বলছে তাই মনে পড়েছে। ইরফানের ভাবনার মাঝে ফোন ভাইবেট হলো। তার ভাবনার জাল ছিন্ন হলো। পূর্বের ন্যায় বসা অবস্থায় ফোনটা টেবিলের ওপর থেকে তুলে স্ক্রিনে দৃষ্টি ফেলতেই দেখতে পেল অপরিচিত নাম্বার থেকে কেউ একজন ছবি পাঠিয়েছে। সে কৌতূহলবশত হোয়াটসঅ্যাপে ঢুকে ছবিগুলো দেখতেই দৃষ্টি আঁটকে গেল। আকস্মিক অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু দেখায় তার সত্তা থমকে গেল। তটস্থ ভঙ্গিতে সোজা হয়ে বসল। মস্তিষ্ক যেন অচল হয়ে পড়ল। এক কথায় স্তব্ধ হয়ে গেল। ঠিক সেসময়ে সেই নাম্বার থেকে কল আসল। ইরফানের মনঃসংযোগ কমে এলো। সে যান্ত্রিক ভঙ্গিমায় কল রিসিভ করে ফোনটা কানে রাখল। তখনি ভেসে এলো প্রাণোচ্ছল প্রাণবন্ত এক মেয়েলী কন্ঠস্বর ;

“ইরফান ভাইয়া ছবিগুলো পেয়েছেন?”
ইরফান দীর্ঘ শ্বাস টেনে চেয়ারে হেলান দিলো। ছোট্ট করে প্রতিত্তোর করল;
“হুমম।”
ওপর পাশ থেকে রাহা মৃদু হেসে বলল;
“ছবিগুলো কেমন হয়েছে?”
ইরফান গম্ভীর কণ্ঠে বলল;
“ভালো। আমার নাম্বার কোথায় পেলে?”
“অরিত্রিকা দিয়েছে। আপনার ছবিগুলো আমার ফোনে ছিল। সব কয়টা ছবি দেখতে মোটামুটি ভালো হয়েছে। তাই ভাবলাম আপনাকে হোয়াটসঅ্যাপে সেন্ড করি।”

“অনুমতি ব্যতিত আমার ছবি কেন তুলেছো?”
“স্যরি। অনুমতি ব্যতিত ছবি তোলার জন্য।”
রাহা ওপর পাশ থেকে অনুতপ্ত কন্ঠে বলল। ইরফানের কাঠিন্যভাব কমে এলো। সে অনুভব করল, মেয়েটি বাঁচাল, চঞ্চল হলেও ভুল স্বীকার করার সাহস আছে। সে ঠান্ডা কন্ঠে বলল;
“তুমি সেলফি গুলো কেন পাঠিয়েছো?”
রাহা চমকানোর অভিনয় করে বলল;
“ওহ শীট! ওই ছবিগুলোও চলে গেছে?”
“নাটক কম করো।”

“নাটক করছি না। আপনি আমায় ভুল বুঝবেন না। আসলে আমি সেলফি তোলার সময় আপনাকে খেয়াল করিনি। তাই সেলফিগুলোতে আমার হাস্যরত মুখের সাথে আপনার গম্ভীর মুখটা ক্যামেরাবন্দি হয়েছে।”
“তোমার ফোন থেকে আমার সব ছবি ডিলিট করো এবং সেলফিগুলো থেকে আমার ছবি ক্রপ করে কেটে দাও।”
“আপনার ছবিগুলো ডিলিট করে দিয়েছি। কিন্তু সেলফিগুলো কোনো কাটাকাটি করব না। আপনি ভালো করে দেখুন ওগুলো। কত্তো সুন্দর লাগছে আমাদের। মনে হচ্ছে, কিউট কাপল।”
রাহা মেকি রাগ দেখিয়ে বলল। ইরফান হতভম্ব হয়ে গেল। মেয়েটা তাকে রাগ দেখাচ্ছে! ভাবসাব মোটেও সুবিধার লাগছে। খানিকটা বিরক্ত প্রকাশ করে গম্ভীর কন্ঠে বলল;

“আমরা কাপল নই। জাস্ট পরিচিত।”
রাহা মুখ ফসকে বলল;
“আপনি আমি জানি, আমরা কাপল নই। কিন্তু আমার ফ্যামিলি, রিলেটিভরা আর ফেসবুক ফ্রেন্ডরা জানে আমরা কাপল। দীর্ঘ দিন ধরে রিলেশনে আছি।”
“এই মেয়ে কি বললে?”
“কিছুনা।”
খট করে কলটা কেটে গেল। ইরফান কান থেকে ফোনটা নামিয়ে টেবিলের ওপর রাখল। তার বিচক্ষণ মস্তিষ্ক বলছে মেয়েটা কোনো গন্ডগোল পাকিয়েছে। নিশ্চয়ই সামনে কোনো বড়সড় কান্ড ঘটাবে। সেই কান্ডে ফাঁসিয়ে দেবে তাকে। এখন থেকে এই মেয়ের থেকে একশ হাত দূরে থাকতে হবে। সে টেবিল থেকে পানির গ্লাসটা নিয়ে ঢোক ঢোক করে সব পানি খেল। এই অদ্ভুত মেয়েটা কি ঘটিয়েছে তা জানতে হবে। নিশ্চয়ই অরিত্রিকা এ বিষয়ে জানে। অফিস থেকে ফিরে অরিত্রিকার সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে হবে।

“অরিন আপু লেভিকে ক্যাট ফুড দিয়েছিলে?”
অরিন নিজের রুমে বসে পড়ছিল। মাসখানেক পরে পরীক্ষা তাই কলেজে ক্লাস বন্ধ আছে। দীর্ঘ দিন পরে ভূগোল বিষয়টা পড়ছে। কিন্তু একটা শব্দও মনে রাখতে পারছে না। এক ঘন্টা ধরে পাঁচ পৃষ্ঠা পড়ে ক্লান্তবোধ করছে। তাই শুয়ে একটু বিশ্রাম নিচ্ছিল। সেসময়ে ইশরা রুমে আসে। সে শুয়ে রইল। ইশরাকে উদ্দেশ্য করে বলল ;
“দিয়েছি। তুই ভার্সিটিতে যাস নি?”
ইশরা দরজার সামনে দাঁড়িয়ে জবাব দিলো ;

“নাহ। শরীরটা ভালোলাগছে না।”
অরিন সন্দিগ্ধ কন্ঠে বলল;
“শরীর খারাপ নাকি মন খারাপ? কয়েকদিন ধরে দেখছি কেমন যেন ঝিমিয়ে আছিস।”
ইশরা হাসার ভাণ করল ;
“পড়ার চাপ বেড়েছে। লেভি কোথায় গেছে দেখেছো?”
“লেভি সাদাতের কাছে।”
“ওহহ।”
ইশরা কথা না বাড়িয়ে ছোট্ট প্রতিত্তোর করে যেতে লাগল। অরিন পিছু ডাকল ;
“ইশরা! একটা কাজ করে দিতে পারবি?”
ইশরা থেমে গেল। পিছু ফিরে বলল;
“কি কাজ আপু?”
“সাদাতকে গিয়ে বল আমি ডেকেছি।”
“কি কাজ বলো আমি করে দিচ্ছি।”

“ভূগোল প্রেকটিক্যাল খাতা আমার ফ্রেণ্ডের বাসায় গিয়ে আনতে হবে। তুই পারবি না একা অতদূর যেতে। সাদাতকে ডেকে দে। ও বাইক নিয়ে তাড়াতাড়ি নিয়ে আসতে পারবে।”
“আচ্ছা আমি ওকে ডেকে দিচ্ছি।”
কথাটা শেষ করে প্রস্থান করল ইশরা। চোখমুখ অন্ধকার করে পা বাড়াল সাদাতের রুমের দিকে। যার সাথে একমুহূর্ত কথা না বললে মন খারাপ হয়ে থাকে তার সাথে পাঁচ দিন কথা বন্ধ। এই সময়টাই যেন দীর্ঘ সময় বলে মনে হলো। ভালোবাসা আসলেই আজব অনুভূতি। কখন কিভাবে হঠাৎ করে এ অনুভূতির সৃষ্টি হয় বোঝাই যায় না! সে শুনেছে, ভালোবাসা কখনো মানুষ চিনে হয় না। হুট করে করে হয়ে যায়। সে কলেজে,ভার্সিটিতে নিজ চোখে দেখেছে সমবয়সী সম্পর্কে বিচ্ছেদ!

এসব সম্পর্ক সর্বোচ্চ দুই – তিন বছর টিকে। তারপর বিচ্ছেদ হয়। যাদের সম্পর্ক দৃঢ়, মজবুত, বিশ্বাস অটুট সেসব সম্পর্ক হয়তো পূর্ণতা পায়। সাদাত ভালো ছেলে। বন্ধু হিসেবে বিশ্বাসযোগ্য কিন্তু একজন জীবনসঙ্গী হিসেবে বিশ্বাসযোগ্য কিনা তা বোঝা দায়। সাদাতের বলা সেদিনের কথাগুলো তার কাছে মিথ্যা মনে হয়নি। প্রতিটা কথা সত্য মনে হয়েছে। এমনকি অনুভূতি ব্যক্ত করাটা বেশী বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়েছে। তবে সাদাতের আগের করা কৃতকর্ম পোড়ায়! কোনোদিন যদি সে ভালোবাসা গ্রহণও করে তবে ভবিষ্যতে কি হবে? মামা – মামীদের বাড়িতে থেকে মামাতো ভাইয়ের সাথে অগোচরে সম্পর্কে রাখা ধোকার সমতুল্য হবে। সবাই যখন জানবে তখন কি হবে। বাড়ির প্রতিটা সদস্য তাকে খারাপ ভাববে। ইশরা এসব ভেবে তপ্ত শ্বাস ফেলে। মনের মাঝে সাদাতকে নিয়ে ভেবে অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল তা চতুরতার সাথে লুকায়। এ অসহনীয় অস্থিরতাকে অন্য কোনো নাম দেওয়া যাবে না।
ইশরা সাদাতের রুমের সামনে দাঁড়াল। নিজেকে অতি শান্ত এবং স্বাভাবিক করে দরজায় নক করল। দুই – তিনবার নক করেই ভেতর থেকে সাদাতের কন্ঠস্বর ভেসে এলো;

“দরজা খোলা আছে ভেতরে এসো।”
ইশরা অনুমতি দরজা খুলে ধীর পায়ে ভেতরে প্রবেশ করল। রুমের ভেতরে প্রবেশ করতেই দৃষ্টি আঁটকে গেল বিছানার এককোণে। লেভি চার পা ছড়িয়ে আয়েশ করে ঘুমাচ্ছে। সে আশেপাশে তাকিয়ে সাদাতকে খুঁজল। সাদাত রুমে নেই। হয়তো ওয়াশরুমে গেছে। সে এগিয়ে গিয়ে বিছানায় বসল। অপেক্ষা করতে লাগল সাদাতের। মনে মনে ভাবতে লাগল কিভাবে কথা বলবে? পূর্বে কখনো অস্বস্তি, জড়তায় জর্জরিত হয়নি। তবে এখন হয়েছে। সে অশান্ত মন নিয়ে আশে পাশে তাকাল। সামনে দেয়ালে চোখ পড়তেই ওষ্ঠকোণে হাসি ফুটে উঠল। দেয়ালে অসংখ্য ফটোফ্রেম লাগানো। তার পাশেই দুইটা গিটার ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।

দেয়ালে লাগানো সবচেয়ে বড় ফটোফ্রেমে চৌধুরী বাড়ির সবাই রয়েছে। বাকী ছোট বিশ থেকে পঁচিশটি ফটোফ্রেমের অর্ধেকাংশে সারহান ও সাদাতের ছবি আর বাকীগুলো অরিত্রিকা, সাদাত এবং তার নানা দুষ্টু মিষ্টি ভঙ্গিমার ছবি দৃশ্যমাণ। সাদাত অরিত্রিকার আকদের আগের দিন রাতে রাত জেগে নতুন করে রুমটা ডেকোরেশন করেছিল। ডেকোরেশনের একটু আকটু বুদ্ধি সে দিয়েছিল। তবে দেয়াল জুড়ে ছবি রুপে পুরনো স্মৃতিগুলো ধরে রাখার বুদ্ধি সাদাতের ছিল। এর মাঝেই গোসল সেরে ওয়াশরুমের দরজা খুলে বের হয়ে হয়ে আসলো সাদাত। তোয়ালে দিয়ে ভেজা চুলগুলো মুছে রুমের ভেতরে আসতেই দেখল ইশরা আনমনা ভাব নিয়ে বসে আছে। এ সময় মেয়েটাকে নিজের রুমে দেখে অবাক এবং অপ্রস্তুত হলো। সে ভেবেছিল তানিয়া বেগম এসেছে।

ইশরা ক্ষীণ পায়ের শব্দে সামনে তাকাল। সাদাতকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে নড়ে চড়ে উঠল। অরিনের বলা কথাটা বলতে যাবে এমন সময় সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটার ভেজা উন্মুক্ত শরীর দেখে চক্ষুদ্বয় বড় হয়ে গেল। দুহাত মুখে গুঁজে তড়িঘড়ি করে অন্যত্র তাকাল। হৃদস্পন্দন বাড়ল। মনে মনে বকে চলল— ছেলেটার কি লজ্জা সরম নেই। কাপড় বিহীন শরীরে ঠাই হয়ে দাঁড়িয়ে আছে? সাদাতের মাঝে কোনো দোলাচলন দেখা গেল না। সে নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে কাবার্ড থেকে একটা কালো রঙের টি শার্ট পড়ে এগিয়ে আসল। ইশরার সামনে দাঁড়িয়ে বুকে হাত গুঁজে গম্ভীর কন্ঠে বলল;
“কি চাই?”
ইশরা মুখ থেকে দুহাত নামিয়ে ফেলল। অন্যত্র তাকিয়ে মিনমিন করে বলল;
“হেল্প চাই।”

সাদাত অনেকদিন পর ইশরাকে খুব কাছ থেকে দেখল। মেয়েটা পূর্বের থেকে অনেকটা শুকিয়ে গেছে। মুখের লাবণ্যতা কমে এসেছে। দু’চোখের নিচে ডার্কসার্কেল পড়েছে। বোঝা যাচ্ছে ঠিকঠাক ভাবে ঘুমায় না। মুখশ্রীর প্রাণবন্ত ভাবটা কমে এসেছে। এ পরিবর্তনের কারণ কি? সে তো শুধু মনের কথা জানিয়েছিল। ভালোবাসার দোহাই দিয়ে জোর করেনি। তবে এমন প্রাণহীনের ন্যায় কেন দেখাচ্ছে। বন্ধুত্ব হারানোর ভয় নাকি অন্য কিছু? সে ভাবনার সমাপ্তি ঘটাল। দাম্ভিকতা নিয়ে বলল;
“কি হেল্প?”
ইশরা সরাসরি তাকায় সাদাতের দিকে। ছেলেটা এই কয়েকদিনে অনেকটা বদলে গেছে। পূর্বের থেকে অনেক নিশ্চুপ হয়ে গেছে। চোখ মুখে হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে যাওয়ার ছাপ। দূর থেকে সে চলনবলন অবলোকন করেছে। সবকিছুতে পরিবর্তন এসেছে। তার মনটা খারাপ হয়ে। নিজের মনের ভাব বুঝতে না স্বাভাবিক ভাবে বলল;

“আমার না অরিন আপুর হেল্প লাগবে। আপু তোকে ডাকছে।”
“ওকে আপুর সাথে দেখা করছি।”
“আচ্ছা।”
ইশরা ছোট্ট করে প্রতিত্তোর করে বিছানা থেকে উঠে দাঁড়াল। বুকের ভেতরটা তোলপাড় হয়ে গেল। সাদাতের নিশ্চুপতা, নির্লিপ্ততা ভীষণ কষ্ট দিলো। আগে দেখা হলে কতো কথা বলতো অথচ এখন চুপচাপ। তার দম বন্ধ হয়ে আসল। হঠাৎ কান্না ভেতর থেকে দলা পাকিয়ে আসল। সে এক মুহুর্ত না দাঁড়িয়ে দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেল। আজ কেউ পিছু ডাকলো না, কেউ টমেটো বলে রাগালো না। সাদাত ভাবলেশহীন দেখল সেই দৃশ্যটুকু। ইশরার হঠাৎ দৌড়ে বেড়িয়ে যাওয়ার কারণ বুঝল না।

দুপুর পেরিয়ে বিকেল হয়েছে। এখন সময়টা গোধূলি লগ্ন। অম্বরে সাদা – ধূসর রঙা মেঘের সমাহার। প্রকৃতিতে বইছে শীতল হাওয়া। দূরের গাছগুলো হাওয়ায় দোল খাচ্ছে।
অরিত্রিকা একাকী দাঁড়িয়ে আছে ছাদের রেলিঙ ঘেষে। এক ধ্যানে তাকিয়ে রয়েছে অদূরে। তার অর্ধ ভেজা চুলগুলো হাওয়ায় থেমে থেমে নড়ছে। সেই শহুরে অট্টালিকাগুলোর দিকে তাকিয়ে গভীর ভাবনায় মগ্ন। গভীর ভাবনার মূল কারণ বাড়ির অস্বাভাবিক পরিবেশ। ইরফান ভাই, সাদাত ও ইশরার অস্বাভাবিক আচরণ। ইরফান ভাই আগের থেকে কিছুটা স্বাভাবিক হলেও সাদাত ও ইশরা স্বাভাবিক নয়। দুজনের মধ্যে মনমালিন্য বড় আকার ধারণ করেছে। সে জানতো সাদাতের মনের কথা ইশরাকে জানানোর পর বন্ধুত্ব নষ্ট হবে। হিসেব মতো সেটাই হলো। এদের দুজনের কারণে তার মনটা ভালো নেই। পাঁচদিন ধরে কথোপকথন, আড্ডা সবকিছু বন্ধ। এদের আগের রুপে ফেরানোর জন্য কিছু করা দরকার। কি করা যায়? কিয়ৎ সময় ভেবে একটা সমাধান বের করল।

“ছাদে একা দাঁড়িয়ে কি ভাবা হচ্ছে?”
অরিত্রিকা সারহানের কন্ঠস্বর শুনে রেলিঙে হেলান দিয়ে ঘাড় বাঁকিয়ে তাকাল। ক্ষীণ কন্ঠে শুধালো ;
“আপনি পার্টি অফিসে যাননি?”
সারহান এগিয়ে এসে দাঁড়াল অরিত্রিকার সামনে। স্বভাবসিদ্ধ কন্ঠে জবাব দিলো;
“সন্ধ্যার পরে যাবো।”
“কি ভাবছিলেন বিবিজান?”
“বলবো?”
“বলুন। আমিও শুনে দেখি কিসের চিন্তায় বিবিজান আমাকে ভুলে যাচ্ছে।”
“বলবো। তবে আপনাকে আমার একটা আবদার পূরণ করতে হবে।”
অরিত্রিকা বাচ্চামো কন্ঠে বলে উঠল। সারহানের ভ্রুযুগল কুঁচকে এলো। মেয়েটা আবার কোন আবদার পূরণ করার কথা বলছে? যদি অদ্ভুত কোনো আবদার হয় পূরণ করবে না। সে মনে মনে ডিসাইড করে নিলো। অতঃপর শান্ত কন্ঠে বলল;

“আগে বল তারপর ভেবে দেখব।”
অরিত্রিকা মৃদু হেসে আবদারটা জানাল;
“ফ্যামিলি নিয়ে ট্যুরে যেতে চাই। এবার বলুন আমার আবদার পূরণ করবেন।”
“কোথায় যেতে চাস?”
“আমার দাদুর পিতৃ ভিটায়। জানেন, আমার ইচ্ছে ছিল কোনো একদিন সেখানে যাবো। ঘুরে ফিরে দেখব সেই মহল্লা, এলাকা। এ মুহুর্তে মানসিক শান্তির জন্য ওটাই বেস্ট জায়গা।”
“কবে যেতে চাস?”
“আগামীকাল? ”
অরিত্রিকা উচ্ছসিত ভাব নিয়ে বলে উঠল। সারহান প্রেয়সীর দিকে তাকিয়ে শান্ত কন্ঠে বলল;
“আগামীকাল যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নে।”

প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে সিজন ২ পর্ব ৬৮

অরিত্রিকা লাফিয়ে উঠল। এতো সহজে মানুষটা তার কথা মেনে নিবে ভাবতেই পারেনি। সে খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেল। একগাল হেসে সারহানকে জাপটে ধরে আমোদিত কন্ঠে বলে উঠল;
“আই লাভ ইউ সারহান ভাই। আই লাভ ইউ নেতাসাহেব। আই লাভ ইউ কল্প পুরুষ।”
সারহান অকস্মাৎ এহেন কান্ডে অবাক হলো। পরক্ষণে দুহাতে অরিত্রিকাকে আলিঙ্গন করে বিমোহিত কন্ঠে বলল;
“আই লাভ ইউ টু মাই সিক্রেট অ্যামব্রোজিয়া।”

প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে সিজন ২ পর্ব ৭০