অনুভবে তুমি পর্ব ৫

অনুভবে তুমি পর্ব ৫
লিজা মনি

ইয়ানা মাথায় হাত দিয়ে উঠতে যাবে এমন সময় আহান ইয়ানার মুখ চেপে ধরে। ইয়ানা ছোটার জন্য ছটফট করছে কিন্তু সে সামনে থাকা ব্যক্তিটির শক্তির সাথে পেরে উঠছে না। আহান এবার প্রচন্ডভাবে রেগে যায় ও ইয়ানার দুহাত দেয়ালের সাথে চেপে ধরে ঠোঁটে ঠোঁট বসিয়ে দেয়। এই মুহূর্তে আহান রাগের বশবর্তী হয়ে একটা হিংস্র হায়েনার চেয়েও কম লাগছে না। ইয়ানা আগত্ত ব্যক্তিটির থেকে তার জন্য ছটফট শুরু করে। এইবার আহান রেগে গিয়ে ইয়ানার ঠোঁটে কামড় বসিয়ে দেয়। ইয়ানা ব্যথাই কুকরিয়ে ওঠে। মনে হচ্ছে ঠোঁট থেকে রক্ত বেরোচ্ছে। কিন্তু সামনে থাকা ব্যক্তিটির কোনো হেলদুল নেই। ইয়ানা এবার ব্যাথা সহ্য করতে না পেরে চিৎকার দিয়ে উঠে। আর কাঁদতে কাঁদতে বলে,,,,,

“”” কে আপনি। আমার সাথে এমন করেছেন কেনো? একটা মেয়েকে তার অনুমোতি ছাড়া ছোয়ার সাহস কি করে হয় আপনার।””
ইয়ানার এই কথাটা যেন রাগ আরো বারিয়ে দেয়। সে তার কোমরে গুঝে থাকা গানটা মুখের ভিতর ঢুকিয়ে রাগে চিৎকার দিয়ে বলে,,,,
”চুপ যদি আর একটা কথাও মুখ থেকে উচ্চারণ করো তাহলে এখানেই শেষ করে দেবো তোমায় ইয়ানা। সাহস কি করে হয় তোর আমার কথা অবাধ্য করার। বারণ করেছিলাম না শাড়ি পরতে বল কেন পড়েছিস?শাড়ি পড়েছিস তো পড়েছিস আবার নাচতেও চলে গেলি। ছেলেদের রূপে দেখাতে খুব ইচ্ছা তাই না।”
আহান এবার ইয়ানার মুখে থাকা গানটাকে আরেকটু চেপে ধরে বলে,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

-মেরে দেয় কি বলিস। এমনিতেও আমার অবাধ্য যারা হয় তাদের বাঁচিয়ে রাখি না। তোকে কেন বাঁচিয়ে রাখবো বলতো। ইয়ানা এবার ভয়ে ফুঁপিয়ে কেদে উঠে। ইয়ানার কান্নার শব্দ আহানের কানে আসতেই যেন ওর হুস আসে।তারাতারি করে নিজের গানটা ইয়ানার মুখ থেকে নামিয়ে নিজ জায়গায় রেখে দেয়। ইয়ানা যেন এতক্ষণে নিজের প্রাণ ফিরে পেল। আহান এইবার ইয়ানার দুই গালে আলতো হাত রেখে বলে,,,,
– ইনু বেবি প্লিজ কান্না থামও।কেনো অবাদ্ধ হও আমার। এরপর থেকে যেনো এমন ভুল আর না হয় কেমন। তবে একটা কথা মনে রেখো তোমাকে চাই আমার। আমার অনুভব তুমি। এই বলে সামনে থাকা ব্যক্তিটি তাড়াতাড়ি করে রুম ত্যাগ করে। ইয়ানা আহানের কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে বসে রইল। কি বলে গেলো লোকটা।

রুয়ানা : আপু কোন সময় প্রিন্সিপাল রুমে গেলো এখনও আসছে না কেন।
আকাশ : হয়তো স্যাররের কোনো কাজ করে দিচ্ছে।
আয়াত : মাথা মোটা আজকে নবীন বরণ। স্যার কেনো আজ কাজ দিতে যাবে যা করার কাল তো করেছি।
আরু: হুম তাহলে এখনও আসছে না কেনে বলতো।
রুয়ানা : ঠিক আছে তোমরা বসো আমি আপুকে নিয়ে আসছি।
রুহান : তুই নিয়ে আসবি তুই প্রিন্সিপাল রুম চিনিস। তোরা বস আমি নিয়ে আসছি।
রুয়ানা: না না ভাইয়া আমি চিনি। তাছাড়া একটু পর তোমার আকাশ ভাই আর একটা প্রোগ্রাম আছে। তোমরা বসো আমি যাচ্ছি ।
সুমাইয়া: ঠিক আছে যা।

রুয়ানা প্রিন্সিপালের রুমে যাচ্ছিল ঠিক সেই সময় বেখিয়ালিভাবে হাঁটার কারণে কারো সাথে ধাক্কা খেয়ে ছিটকে পড়ে জোরে চিৎকার দিয়ে উঠে। আকাশ সুমু তারা যেহেতু ব্যানারের লাস্টের দিক দিয়ে বসে ছিল আকস্মিক ঘটনায় সবাই পিছনে ফিরে তাকায়। দেখে রুয়ানা মাটিতে পরে আছে আর সামনে একটা সুদর্শন ছেলে দাড়িয়ে আছে। তারা সবাই রুয়ানার কাছে যায়।
রুয়ানা: শালা এনাকন্ডা দেখে হাটতে পারিস না। আমার শরীরটা কি তোর বাপের পৈতৃক সম্পত্তি যে দৈত্যের মত আমাকে ফেলি দিলি।শালা লেজবিহীন হাতি, আমার মত একটা বাচ্ছা মেয়েকে ফেলি দিলি। এইসব বলতে বলতে রুয়ানা উঠে দাঁড়ায়।
আকাশ : পাগলি খেপেছে আর কিছু বলার আগে তোরা আটকা গিয়ে।
তারা সবাই রুয়ানাকে কিছু বলতে যাবে তার আগের ছেলেটি রুয়ানার পিছন দিয়ে হাত মুচড়ে ধরে দাতে দাত চেপে বলে,,,,

– how dear you সাহস হয় কি করে হয় এইরকম অভদ্র ভাষায় গালিগালাজ করার। এইটুকু একটা পিচ্চি মেয়ে মুখের ভাষার এই হাল।
ওই সময়তো মুখে অনেক কথা বের হয়ছে এখন সাপের মত মুচড়ামুচরড়ি করছো কেনো।
রুয়ানা: শয়তান দানব হাত ধরেছিস কেন। আমাকে বাচ্চা মেয়ে পেয়ে পেয়ে নির্যাতন করছিস। একবার শুধু আমার জামায়টারে আসতে দে পরে বুঝামু মজা।
ছালেটি: কিহহ তুমি ম্যারিড। এইটুকু একটা মেয়ে বিয়েও করে ফেললে এজন্যই তো বলি ভাষার কেনো এই হাল।
ইয়ানা : আরে ভবিষ্যৎ ভাই ভবিষ্যৎ। ভবিষ্যৎ জামাইর কথা বলছি।
ছেলিটি: এই তুমি কি পাগল।
রুহান : সবাই দাড়িয়ে সারকাস দেখছিস কেনো?আটকা গিয়ে পাগল রে, খেপছে ভালো করেই। আল্লাহ ওই জানে আর কি কি বলতে শুরু করে।
ঠিক তখনই একটি ছেলে এসে বলে,,,,,

” কিরে uv তুই এখানে কেনো? আহান বলল ও নাকি আজ বাড়ি যাবে তাই তাড়াতাড়ি চলে গেছে।”
আরু : আরে রায়ান ভাইয়া আপনি এইখানে। আহান ভাইয়া ও এসেছে নাকি কই ওনাকেতো দেখেনি ।
রায়ান : আব.. এসেছিলতো তবে আবার চলে গেছে। বাড়িতে একটু দরকার ছিল তাই চলে গেছে আরকি। ঠিক তখনই রায়ানের চোখ যায় uv উপর।
তারপর ঠাট্টার সুরে বলে,,,,
” কিরে ভাই দেশের মাটিতে পা রেখেই দেশের মেয়েদের উপর লেপটে আছিস কেনো”?
তৎক্ষণাৎ uv রুয়ানা হাত ছেড়ে রায়ানের দিকে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলে,,,
“”পাবনা থেকে পলাতক পিচ্চি পাগলের পাল্লায় পড়ছি। তাই তারে একটু দেখতে ছিলাম পাগলটা কেমন””
রুয়ানা : এই আপনি আমাকে পাগল বললেন।
আকাশ : প্লিজ বোন আমার চুপ কর। আচ্ছা রায়ান ভাইয়া আপনি উনাকে চিনেন।
রায়ান : হুম ওর নাম সেহজাদ uv। আমার আর আহানের ফ্রেন্ড। আবার ভাই ও বলতে পারো। আমরা সবাই একসাথে বিদেশে পড়তাম। কিন্তু ও কাল দেশে বেক করছে।
ইউভি: তুইকি তাদের চিনিস।

রায়ান : হুম ওরা ইয়ানার ফ্রেন্ড।
ইউভি : আর এই পিচ্চিটা ও?
রুহান : না ভাইয়া ও আমাদের ছোট বোন মানে ইয়ানার বোন। কিন্তু আপনি ইয়ানাকে কিভাবে চিনেন ভাইয়া?
ইউভি এবার একটু আমতা আমতা করে বলে,,,,,
“আরে তোমাদের কথা ওদের থেকে শুনেছি। সবার নাম জানি বাট মুখ পরিচিত না”
আয়াত : আচ্ছা।আপনি..
আয়াত আর কিছু বলতে পারল না তার আগেই ইয়ানা এসে উপস্থিত হয়। ইয়ানার অবস্থা দেখে সবাই ভরকে যায়।
ইয়ানাকে রুয়ানার হাত ধরে বলে,,রুই বাড়ি চল।সবাই ইয়ানার ব্যবহারে চমকে যায়।
রুয়ানা : কি হয়েছে আপু এমন করছিস কেনো? আর ভয় পেয়েছিস কি জন্য?
আরোরা: হ্যা ইনু কি হয়েছে তোকে এমন লাগছে কেনো?তুইতো প্রিন্সিপাল স্যারের রুমে গিয়েছিলি স্যার কিছু বলেছে?

ইয়ানা : আরে না না স্যার কি বলবে। স্যার কিছু বলে নি। আসলে শরীরটা ভালো লাগছে না তোরা আয় আমি চলে যায়। এই বলে সে রুয়ানার হাত ধরে এখান থেকে প্রস্থান করে।
রায়ান.: কি হয়েছে বলোতো এভাবে চলে গেলে কেনো? মনে তো হয়েছে কোনো কিছু নিয়ে ভয় পেয়েছে।
আকাশ : সেটা তো ভাইয়া বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসা করেই বলতে পারবো।
রায়ান : হুম তাহলে তোমরা থাকো আমরা যায়। আবার দেখা হবে।এই বলে রায়ান তারা চলে যায়।
আরোরা সুমাইয়াকে খোঁচা মেরে বলে,,,,, আহান ভাইয়ের ফ্রেন্ড তারা কি খায় বলতো সবগুলা এত সুদর্শন। শুধু ক্রাশ খেতে মন চায়।

অনুভবে তুমি পর্ব ৪

রুহান: খাবি ওইটা তো তোদের স্পেশাল কু খাদ্য। না খেলে পেট বড়বে নাকি।
আয়াত : তুই জানিস এইটা আমাদের মেয়েদের জন্মগত অধিকার। so চুপ থাক।
তারা বিভিন্ন কথা বলে অনষ্ঠান রেখেই চলে যায়। উদ্দেশ্য ইয়ানাদে বাড়িতে যাওয়া।
আর এইদিকে……….

অনুভবে তুমি পর্ব ৬