অন্তঃদহন পর্ব ১১

অন্তঃদহন পর্ব ১১
DRM Shohag

আকাশ সন্ধ্যার দিকে চেয়ে বলে,
– তোমার জুতো ঠিক আছে?
সন্ধ্যা হাসি আটকে মাথা নেড়ে সম্মতি দেয়। আকাশ বলে,
– গাড়িতে গিয়ে বসো। যাও।
সন্ধ্যা মাথা নিচু করে শো-রুম থেকে বেরিয়ে যায়। আকাশ বিল মিটিয়ে অরুণের কাঁধে হাত রেখে শো-রুম থেকে বেরিয়ে যেতে যেতে বলে,
– তোর গার্লফ্রেন্ডদের কি অবস্থা?
অরুণ অসহায় মুখ করে বলে,

– সব ভেগে গিয়েছে। কিভাবে যে কি হলো! কিছুই বুঝলাম না ইয়ার! সবাই একসাথে আমার সাথে দেখা করতে চলে এসেছিল। এরপর নিজেরাই চুলোচুলি করছিল, আমি ভেগে এসেছি। খুব বোরিং টাইম যাচ্ছে আমার।
আকাশ মনে মনে হাসলো। পিছনে কাঠি তো সে নেড়েছিল। বাইরে বেরিয়ে আশেপাশে তাকিয়ে কিছু খুঁজল। শো-রুমের ভেতরে যাওয়ার সময় চোখে পড়েছিল। কাঙ্ক্ষিত মানুষদের দেখতে পেয়ে অরুণকে নিয়ে সেদিকে যেতে যেতে সিরিয়াস কণ্ঠে বলে,
– তোকে কয়েকটা গার্লফ্রেন্ড খুঁজে দিচ্ছি, টাকা খরচ করতে হবে বেশি এটাই। পারবি না?
অরুণ চোখ ছোট ছোট করে তাকায়। এই আকাশ এতো ভালো হলো কবে থেকে? ভাবনা রেখে বলে,
– সত্যি বলছিস?
আকাশ স্বাভাবিক গলায় বলে,
– অফকোর্স।
বলতে বলতে কয়েকজনের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। অরুণ ভ্রু কুঁচকে চেয়ে আছে। আকাশ তাদের সামনে দাঁড়ানো চারটে হি’জ’রা’র উদ্দেশ্যে বলে,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

– আমার বন্ধু আপনাদের গার্লফ্রেন্ড বানাতে চায়। আপনাদের সবাইকে ওর পছন্দ হয়েছে।
আকাশের কথা শুনে অরুণ চোখ বড় বড় করে তাকায়। এই বে’য়া’দ’ব এর পেটে তাহলে এই ছিল!
সামনে দাঁড়ানো হি’জ’রা গুলো অরুণের দিকে তাকালে দেখল বিদেশি ছেলে। তারা আকাশের তারা পাওয়ার মতো রিয়েকশন দেয়। সবাই একসাথে তালি দিতে দিতে বলে,
– তাই বাবু?
অরুণ চোখমুখ কুঁচকে বলে,
– ছিহ! কি জ’ঘ’ণ্য লাগছে বাবু শব্দ টা!
আকাশ অরুণের কাঁধ থেকে হাত নামিয়ে গম্ভীর গলায় বলে,
– বিদেশি ছেলে। কোটি টাকার মালিক। আপনাদের সব ডিমান্ড ও পূরণ করবে।
আকাশের কথা শুনে অরুণ কটমট দৃষ্টিতে তাকায়।
উল্টো ঘুরে যেতে নিলে হি’জ’রা গুলো এসে অরুণকে টেনে ধরে। অরুণ কাঁদোকাঁদো মুখ করে বলে,

– এই আমাকে ছাড়! ছাড় বলছি!
হি’জা’রা গুলো অরুণকে টেনে তাদের মাঝে নিয়ে যায়। অরুণ অসহায় কণ্ঠে বলে,
– শা’লা আকাশ বাঁচা। আমার ই’জ্জ’ত নিয়ে নিবে এরা।
আকাশ মনে মনে হেসে উপর থেকে স্বাভাবিক গলায় বলে,
– আরে নাহ, ওরা ভালো। তুই শুধু টাকা ফালাবি। আমি গেলাম, বাই।
কথাটা বলে উল্টোঘুরে তার গাড়ির দিকে এগিয়ে যায় আকাশ।
ওদিকে হি’জ’রা চারজন অরুণকে মাঝ বরাবর দাঁড় করিয়ে গোল হয়ে নাচতে শুরু করেছে। একটু পর পর তাদের কাপড় পুরো উঁচু করে তুলছে। অরুণ চোখ বড় বড় করে দু’হাতে চোখ ঢেকে চেঁচিয়ে বলে,
– ইয়া আল্লাহ আমাকে বাঁচাও! আমার চোখ নষ্ট হয়ে গেল রে!
আকাশ তার গাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে একবার পিছু ফিরলে হি’জ’রাদের এমন কাপড় তুলে ফেলা দেখে তার চোখ বড় বড় হয়ে যায়। বিড়বিড় করে,

– আসতাগফিরুল্লাহ!
বলেই একপ্রকার দৌড়ে গিয়ে গাড়ির ড্রাইভিং সিটে বসে পড়ে।
সন্ধ্যা ঝাঁকি দিয়ে ওঠে। আকাশ সিটে বসে মাথা এলিয়ে মুখ চেপে হাসছে। সন্ধ্যা অবাক হয়ে চেয়ে আছে। এই লোক হাসতে জানে তার মানে।
হঠাৎ আকশের সন্ধ্যার কথা মনে পড়লে নিজেকে সামলে নিয়ে পিছু ফিরে তাকায়। সন্ধ্যার দৃষ্টি দেখে কেমন অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে। গলা ঝেড়ে বলে,
– আমাকে তোমার ড্রাইভার বানানোর শখ জেগেছে?
সন্ধ্যা বোকাচোখে তাকায়। অরুণকে দেখে সে পিছনে বসেছে। ওই লোকটা কোথায়? আকাশ সন্ধ্যাকে এখনো বসে থাকতে দেখে বিরক্ত হয়ে বলে,

– তাড়াতাড়ি সামনে আসো। নয়তো নেমে যাও গাড়ি থেকে।
সন্ধ্যা থমথমে মুখে নামে গাড়ি থেকে। আকাশ গাড়ির দরজা খুলে এক পা ভেতরে রেখে আরেক পা বাইরে রেখে বা হাত গাড়ির ছাদে রেখে পিছনে তাকায়। মূলত অরুণের অবস্থা দেখতে চাইছে সে। সন্ধ্যা গাড়ির অপর পাশে দাঁড়িয়ে গাড়ির দরজা খুলে বসতে গিয়েও আকাশের দৃষ্টি অনুসরণ করে পিছনে তাকালে তার চোখেমুখে বিস্ময় ভর করে। কতগুলো হি’জ’রা অরুণকে ঘিরে আছে আর গোল হয়ে কিভাবে কাপড় উঁচু করছে। সন্ধ্যা চোখমুখ কুঁচকে নেয়। আকাশ সন্ধ্যাকে ওদিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে দ্রুত গাড়ির ভেতর বসে সন্ধ্যার হাত টেনে ঠাস করে সন্ধ্যাকে সিটে বসিয়ে দেয়। রে’গে বলে,
– তুমি তো আসলেই বে’য়া’দ’ব। ওরা থার্ড জেন্ডার বলে কি ওদের ল’জ্জা নেই? তুমি তো ওদের সব ই’জ্জ’ত মে’রে দিলে।
সন্ধ্যা চোখ বড় বড় করে তাকায়। অরুণের কথা মনে পড়লে ইশারায় বোঝায়,

– আপনার বন্ধু বিপদে পড়েছে, তাকে বাঁচান।
আকাশ বিরক্ত হলো। সন্ধ্যার দিকে এগিয়ে গিয়ে গাড়ির দরজা ঠাস করে লাগায়। এরপর গাড়ি স্টার্ট দিয়ে বিরক্তি কণ্ঠে বলে,
– বেশি দরদী হলে তোমাকে-ও ওদের হাতে তুলে দিয়ে আসবো ইডিয়ট।
এরপর তোমার কাছে টাকা না পেয়ে জামাকাপড় খুলে নিতে পারে। অরুণকে বাঁচাতে যেতে চাও?
সন্ধ্যা কপালে ভাঁজ ফেলে আকাশের দিকে চেয়ে আছে। আকাশ একবার সন্ধ্যার দিকে তাকায়। এরপর গাড়ির স্টিয়ারিং ঘোরাতে ঘোরাতে বলে,
– মনে হচ্ছে তুমি ওদের জামাকাপড় দিতে চাইছ। ওকে ফাইন। উইথআউট ড্রেসে মেয়েদের খারাপ লাগে না!
সন্ধ্যা রে’গে তাকায় আকাশের দিকে। কি পরিমাণ বে’য়া’দ’ব হলে এসব কথা বলে দেখ! কি ব’জ্জা’ত লোক!
আকাশ সন্ধ্যার দৃষ্টি দেখে রে’গে বলে,
– আবার বে’য়া’দ’বি!
কথাটা বলে হঠাৎ-ই গাড়ি ঘুরিয়ে নেয়। সন্ধ্যা পড়তে পড়তে বেঁচে যায়। অবাক হয়। এই লোক সত্যি সত্যি তাকে ওদের কাছে রেখে আসবে না-কি! মেয়েটি ঢোক গিলল। কিন্তু নাহ, আকাশ অন্যএকটি পথ দিয়ে এসেছে দেখে সন্ধ্যা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। আকাশ একটু হাসলো।

আকাশ মেইন গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে কলিংবেল চাপলে আনিকা দরজা খুলে দেয়। আকাশ ভ্রু কুঁচকে বলে,
– তুই এখানে কি করছিস?
আনিকা একবার সন্ধ্যার দিকে তাকায়, আরেকবার আকাশের দিকে। এরপর হেসে বলে,
– লং ড্রাইভে কেমন হলো?
আকাশ বিরক্ত হয়ে আনিকাকে পাশ কাটিয়ে ভেতরে চলে যায়। আনিকা সন্ধ্যাকে গালে হাত দিয়ে হেসে বলে,
– কেমন আছো?
সন্ধ্যা মাথা নেড়ে বোঝায় ভালো। আনিকা সন্ধ্যাকে টেনে ভেতরে নিয়ে যায়। আসমানি নওয়ানের উদ্দেশ্যে বলে,
– আন্টি আজকে সবাই চলো না! মানুষ বিয়ের কতদিন আগে যায়। তোমাদের আগেরদিন যেতে বলছি তাও যাচ্ছ না!
আসমানী নওয়ান মৃদু হেসে বলে,

– কালকে সক্কাল সক্কাল যামু মা। তুমি খাইয়া যাইও।
আনিকা মন খারাপ করে মাথা নেড়ে সম্মতি দেয়। আসমানী নওয়ান রান্নাঘরের দিকে যায় রান্না বসাতে।
আনিকা সন্ধ্যার হাত ধরে বলে,
– এসো সন্ধ্যা তোমাকে সাজানো শেখাই। কালকে কিন্তু অনেক সেজে যাবে বুঝেছ?
সন্ধ্যা বিব্রতবোধ করল। আনিকা আকাশের দিকে তাকিয়ে বলে,
– এই আকাশ আমাকে বাড়িতে রেখে আসিস।
আকাশ দোতলা থেকে একবার নিচে তাকিয়ে বলে,

– তোর পা নেই?
আনিকা হেসে বলে,
– নাহ। তোর কোলে উঠে যাব।
এরপর সন্ধ্যার দিকে তাকিয়ে বলে,
– তোমার স্বামীর কোলে অনেক আরাম বুঝলে?
সন্ধ্যা অস্বস্তিতে পড়ে যায়। আকাশ রেকর্ডার চালু করে, যেখানে আনিকার বলা মাত্র রেকর্ড অনবরত বাজছে। আকাশ রেকর্ডটি আনিকার স্বামীর হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে আনিকার দিকে চেয়ে বাঁকা হেসে ভয়েসে বলে,
– রাব্বি ভয়েস টি খুব ইম্পর্ট্যান্ট। দ্রুত শোনো।
আনিকা চোখ বড় বড় করে তাকায়। মাথায় হাত দিয়ে বলে,
– আরে আরে আমার সংসারে আগুণ লাগাস ক্যান? তোর বউ তোকে উঠতে বসতে লাত্থি দিবে দেখিস।
সন্ধ্যা চোখ বড় বড় করে তাকায় আনিকার দিকে। আকাশ একবার সন্ধ্যার দিকে তাকালো। এরপর তার ঘরে চলে যায়। আনিকা অসহায় কণ্ঠে বলে,

– এই ভয়েস শুনে রাব্বি আমাকে থা’প’ড়া’বে।
এরপর সন্ধ্যার দিকে তাকিয়ে বলে,
– তুমি এতো ভদ্র কেন সন্ধ্যা? আমি তোমাকে ট্রেনিং দিব। সত্যি সত্যি লাত্থি দিবা একে।
আনিকার কথা বলার ধরনে সন্ধ্যা হেসে ফেলল।

প্রায় ঘণ্টাখানেক পর খাওয়াদাওয়া শেষে আকাশ আনিকাকে রেখে আসার জন্য বাইরে বেরিয়ে আসে। আনিকা পিছু পিছু আসছে।
আকাশ তার গাড়ির কাছে গিয়ে দাঁড়ালে দেখল অরুণের ফর্সা মুখ লাল হয়ে আছে। আনিকা অরুণের বেহাল অবস্থা দেখে এগিয়ে গিয়ে অরুণের বাহুতে হাত দিয়ে বলে,
– কি রে তোর এই অবস্থা হলো কি করে?
অাকাশ অরুণের দিকে চেয়ে বলে,
– ওকে স্পেশাল ক্লাস করতে দিয়ে এসেছিলাম।
এরপর ভ্রু নাঁচিয়ে বলে,
– কেমন লাগলো অরুণ?
অরুণ এগিয়ে এসে আকাশের গালে ঠাস করে থা’প্প’ড় মে’রে রে’গে বলে,
– তুই বন্ধু না শত্রু?
আকাশ সাথে সাথে অরুণের একই গালে দু’টো থা’প্প’ড় দিয়ে দাঁত কিড়মিড় করে বলে,

– তোর ক্লাস কম হয়ে গেল না-কি? মা’র’ছিস কেন?
আনিকা অরুণকে টেনে পিছিয়ে এনে বলে,
– আরে কি হয়েছে তোদের?
অরুণ ছ্যাঁত করে ওঠে। আনিকার হাত ঝাড়া মে’রে বলে,
– তুই এমন চিপকাস ক্যান? সর সর!
আনিকা অবাক হয়ে বলে,
– বাতাস বাবুর বাতাস লাগলো না-কি তোর?
আকাশ অরুণের দিকে চেয়ে বাঁকা হেসে বলে,
– লেগেছে?
অরুণ অসহায় কণ্ঠে বলে,

– এই শা’লা আমাকে একদল হি’জ’রার মধ্যে ছেড়ে এসেছে। সব নিয়ে নিয়েছে আমার। ফোনটা পর্যন্ত নিয়ে নিয়েছে। শার্ট, প্যান্ট খুলে নিচ্ছিল। বহুক’ষ্টে পালিয়ে এলাম। এক টাকা নেই। হেঁটে হেঁটে এসেছি। ইশ! জীবন টা শেষ।
অরুণের কথা শুনে আনিকা চোখ বড় বড় করে তাকায় আকাশের দিকে। আকাশ তার গাড়ির ডিকিতে উঠে বসে। ডান পা গাড়ির উপর তুলে, ডান হাত পায়ের উপর রেখে বলে,
– নাম্বার নিয়ে আসা লাগতো ওদের। তোর প্যান্ট শার্ট খুলে না নিয়ে ছেড়ে দিল। এটা তো স্পেশাল ক্লাস হলো-ই না।
অরুণ ধুপধাপ পা ফেলে বাড়ির দিকে যেতে যেতে বলে,
– কালকেই বিদেশ চলে যাব আমি। এরকম শত্রুর বাড়ি থাকার কোনো ইচ্ছে নেই আমার।
আনিকা বহুক’ষ্টে এতোক্ষণ হাসি চেপে রেখেছিল। অরুণ যেতেই হো হো করে হেসে দেয়। হাসতে হাসতে রাস্তায় বসে পড়েছে। অনেক কষ্টে হাসি থামিয়ে বলে,
– তাই বলে হি’জ’রা দের কাছে ছেড়ে দিলি? আল্লাহ!
অরুণ এগিয়ে এসে চেঁচিয়ে বলে,

– তুই-ও মজা নিচ্ছিস?
অরুণের কণ্ঠ পেয়ে আনিকা থতমত খেয়ে তাকায়। হাসি আটকাতে চাইলো। কিন্তু পারলো না। হাসতে হাসতে বলে,
– দোস্ত আজকেই লাস্ট হাসি। আর হাসবো না।
অরুণ চেঁচিয়ে বলে,
– তোদের মতো হা’রা’মি যে দেশে আছে। সেই দেশে আর একদিন নেই আমি।
আকাশ পকেট থেকে ফোন বের করে বলে,
– টিকিট বুক কর। ফোন তো গার্লফ্রেন্ড দের দিয়ে এলি।
অানিকা হাসতে হাসতে বলে,
– এই আকাশ থাম। করুণ বাবু তুই কাঁদিস না। তোর জন্য আমি একটা বউয়ের ব্যবস্থা করব। গার্লফ্রেন্ডদের জন্য আর ভিখারি হয়ে ঘোরা লাগবে না।
অরুণ ইনোসেন্ট ফেস বানিয়ে বলে,
– কালকে বিয়েতে একটা মেয়ে পটিয়ে দিস। তাহলে থেকে যাবো।
অরুণের কথায় আনিকা আরেক দফা হাসলো।

সৌম্য উদাম শরীরে রাস্তার ধারে বসে আছে। পরনে একটি সাদা লুঙ্গি। চারপাশ থেকে ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক ভেসে আসছে। অমাবস্যার রাত। সৌম্য’র দৃষ্টি দূর অজানায়৷ মিটমিট বাতাস এসে গা ছুঁয়ে দেয়। সৌম্য অনুভব করল তার ঠান্ডা লাগছে। সৌম্য বুঝল তার গায়ে জ্বর। কিন্তু সে উঠলো না এখান থেকে। সারাদিন রোদের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকায় হয়তো তাপমাত্রা বেড়েছে। সৌম্য দীর্ঘশ্বাস ফেলে। বা হাত মাটিতে ঠেকানো। ভার্সিটির এক দিনের স্মৃতি চোখে ভাসল।
ইরা দৌড়ে এসে সৌম্য’র দু’হাত ধরে বলে,

– দোস্ত কাচ্চি বিরিয়ানি খেতে যাবো। আয়।
সৌম্য চোখ ছোট ছোট করে বলে,
– কেন?
ইরা হেসে বলে,
– বিয়ে ভেঙেছে, সেই খুশিতে।
সৌম্য রে’গে বলে,
– তোর সমস্যা কি? আন্টি আমাকে গতকাল অনেক বুঝিয়েছে, তেকে যেন বোঝাই। তার ফলাফল বিয়ে ভেঙে আমাকে কাচ্চি খাওয়াতে এসেছিস? তুই খা যা। তুই বিয়ে ভাঙিস। আমি আন্টির কাছে কালার হয়ে বসে থাকি।
ইরা মন খারাপ করে বলে,
– আরে আম্মুর কথা পাত্তা দিস না। আমি আরেকটু বড় হয়ে নেই। তারপর বিয়ে করব।
– সেই বড় কবে হবি? তোর বয়স ২৩ পেরিয়েছে ইরা।
ইরা সৌম্য’র হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে যেতে বলে,

– আমার বিয়ে নিয়ে এতো না ভেবে তুই তাড়াতাড়ি চাকরির পড়া শুরু কর।
সৌম্য দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে,
– বোনুর অনেক জ্বর এসেছে।
ইরা মন খারাপ করে বলে,
– গ্রামে যাবি?
– হুম।
– খেয়ে যা।
সৌম্য মলিন স্বরে বলে,
– বোনুকে অসুস্থ রেখে খেতে পারবো না।
ইরা চট করে বলে,
– তাহলে তোদের দুই ভাইবোনের জন্য প্যাক করে দিই, আয়।
সৌম্য ইরার হাত থেকে তার হাত ছাড়িয়ে বলে,
– তুই খেয়ে বাড়ি যা। আমি গ্রামে যাচ্ছি।
ইরা দৌড়ে সোম্য’র সামনে দাঁড়িয়ে মাথা উঁচু করে বলে,

– এমন করিস না। আর কিছু চাইবো না। এই একটা উপহার হিসেবে নে। প্লিজ!
সৌম্যকে চুপ করে নিজের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে ইরা দু’হাতে সৌম্য’র দু’গাল এদিক-ওদিক নাড়িয়ে বলে,
– না করলে কান্না আসে আমার। প্লিজ সৌম্য নিয়ে নে।
কথাটা বলে ইরা ভ্রু কুঁচকে নেয়। ডান হাতের উল্টোপিঠে সৌম্য’র কপাল চেক করে বলে,
– তোর-ও জ্বর এসেছে।
সৌম্য ইরার হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বলে,
– আমার জ্বর গায়ে লাগে না।
ইরা চট করে বলে,
– কিন্তু আমার লাগে।
কথাটা বলে ইরা থতমত খায়। সৌম্য ইরাকে সরিয়ে দিয়ে যেতে যেতে গম্ভীর গলায় বলে,
– বাড়ি যা।
ইরা ঢোক গিলল। দ্রুত সৌম্য’র হাত টেনে বলে,
– সৌম্য?
সৌম্য বিরক্তি কণ্ঠে বলে,

– ইরা আমি তুই দু’জনেই অনেক বড়। তুই যখন তখন এভাবে এসে আমাকে ধরবি না। হাত ছাড়।
ইরা সৌম্য’র হাত ছেড়ে বিড়বিড় করে,
– সময় হলে সারাদিন ধরে বসে থাকবো।
সেদিন সৌম্য কাচ্চি নিজের জন্য আর তার বোনের জন্য প্যাক করে নিয়েছিল, সাথে ইরার পাশে বসে ইরার খাওয়া দেখেছিল। বিল সে-ই দিয়েছিল। ইরা শতশত ইমোশোনাল কথা বলে-ও সৌম্য’কে মানাতে পারেনি। তবে এক পাতা ওষুধ ইরা সৌম্য’র হাতে দিয়ে অনুরোধ করে বলেছিল,
– এটা ফিরিয়ে দিস না প্লিজ! এবার তুই না মানলে এই ভরা রাস্তায় তোর পা ধরব বলে দিলাম।
সৌম্য মৃদুহেসে ওষুধের পাতা নিয়ে পকেটে রেখেছিল।

কথাগুলো ভেবে সৌম্য দীর্ঘশ্বাস ফেলল। সন্ধ্যার কথা মনে পড়লো। সন্ধ্যা থাকলে তাকে মায়ের মতো শাসন করতো। একটু কিছু করলে সন্ধ্যা চোখ পাকিয়ে তাকাতো। সৌম্য হেসে আবার-ও শুয়ে পড়তো।
সৌম্য’র আজ-ও জ্বর এসেছে। কিন্তু ইরা তার খোঁজ নেয়নি আর। কার উপর অভিযোগ করবে সে? যার ভাগ্যে দুঃখ ছাড়া কিছু লেখা নেই।
সৌম্য’র চোখ দু’টো লাল, সাথে জ্বালা করছে।
সৃজা সৌম্য’র পাশে অনেকক্ষণ থেকে দাঁড়িয়ে আছে। সৌম্য’কে এমন স্ট্যাচু হয়ে বসে থাকতে দেখে ধীরে ধীরে সৌম্য’র পাশে বসে মিনমিন করে বলে,
– ভাইয়া রাতের খাবার খাবেন না?
সৌম্য যেভাবে ছিল, সেভাবেই উত্তর দেয়,

– না।
– কেন?
সৌম্য কিছু বলল না। সৃজা মৃদুস্বরে বলে,
– আপনি কি ইরাবতীর কথা ভাবছেন?
সৌম্য বিরক্তি কণ্ঠে বলে,
– সবার জন্য ওর নাম ইরা।
কথাটা বলে সৌম্য বড় বড় পা ফেলে বাড়ির দিকে যায়। সৃজা সৌম্য’র পিছু পিছু দৌড়ায়। বেচারি ভ’য় পেয়েছে। কত সাহস সঞ্চয় করে এখানে এসেছে। আর লোকটা তাকে রেখেই চলে যাচ্ছে।

সকাল ৯ টার পর পর-
ইরা সৌম্য’র মেসের সামনে দাঁড়িয়ে আছে গত একঘণ্টা যাবৎ। হঠাৎ পরিচিত কাউকে চোখে পড়লে ইরা এগিয়ে গিয়ে ডাকে,
– ভাইয়া?
মেয়ে কণ্ঠে রিহান পিছু ফিরে তাকায়। একটু ভেবে বলে,
– আপনি ইরা?
– জ্বি ভাইয়া, সৌম্য কোথায় জানেন?
রিহান মৃদুস্বরে বলে,
– জানিনা।
ইরা খুব ভালোই বুঝল, রিহান তাকে মিথ্যা বলছে। রিহান সৌম্য’র সাথে এক মেসে থাকে। ইরা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে,
– সৌম্য’র রুমের চাবিটা একটু দিন।
রিহান ভ্রু কুঁচকে বলে,
– কেন?
ইরা হাতজোর করে বলে,
– প্লিজ ভাইয়া দিন, আমার দরকার আছে।
রিহান দিতে রাজি হয়না। ইরা বেশ অনেকক্ষণ জোরাজুরি করে রিহানের থেকে চাবিটা নেয়। এরপর সে সৌম্য’র ঘরে যায়।

সৌম্য’র ঘরে তেমন কিছু নেই। একটি চৌকি পাতা, সাথে একটি আলনা যেখানে কাপড় রাখা হয়। আর একটি ছোট কাঠের টেবিল। ঘরের এক কোণে কিছু হাড়ি-পাতিল রাখা।
ইরা সৌম্য’র টেবিলের সামনে গিয়ে বসে। অনেকটা সময় চুপচাপ বসে থাকে সেখানে। একটি ছোট্ট ডায়রি পায়। ডায়রি টি উল্টেপাল্টে দেখে। এরপর ডায়রিটি হাতে নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে রুমে তালা দেয়।
রিহান ইরার পিছনে দাঁড়িয়ে বলে,
– চাবি দিন।
ইরা রিহানের পাশ কাটিয়ে যেতে যেতে বলে,
– সৌম্যকে আমার থেকে চাবি নিয়ে আসতে বলবেন।
রিহান রে’গে বলে,
– আপনি চাবি দিন আপু। সৌম্য আমার উপর রা’গ করবে।
ইরা রিহানের দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বলে,
– আপনি সৌম্য’র বন্ধু, একটু রা’গ নাহয় সহ্য করলেন!
রিহান বিরক্তি কণ্ঠে বলে,

– আপনি চাবি দিন।
ইরা শুনলো না। রিহান হঠাৎ-ই বলে,
– আপনার মতো মেয়েকে সৌম্য পছন্দ করে না।
রিহানের কথায় ইরার পা থেমে যায়। উল্টো ঘুরে অবাক হয়ে বলে,
– মানে?
রিহান ইরার পোষাকের দিকে একবার চোখ বুলায়। এরপর বলে,
– এসব পোষাক সৌম্য পছন্দ করে না।
ইরা নিজের দিকে তাকালো। তার পরনে একটি জিন্স প্যান্ট, উপরে টপ, গলায় একটি স্কার্ফ ঝুলানো। অতঃপর রিহানের দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে বলে,
– সৌম্য এসব ব্যাপারে আমাকে কখনো কিছু বলেনি তো!
রিহান তার রুমে যেতে যেতে বলে,
– কারণ আপনি সৌম্য’র নন।
কথাটা শুনে ইরার চোখজোড়া ভরে ওঠে। বাক্যটি ছোট, অথচ ইরার হৃদয়ে আ’ঘা’ত হানলো তীব্রভাবে। বিড়বিড় করল,
– সৌম্য।

শিমু সন্ধ্যাকে পার্পেল কালার জর্জেট এর একটি খুব সুন্দর শাড়ি পরিয়ে দিয়েছে। সাথে ম্যাচিং করে হিজাব পরিয়েছে। গতকাল রাতে সে আনিকার বোনের বিয়ের জন্য একটু কেনাকাটা করতে গিয়েছিল, সন্ধ্যার জন্য-ও অনেককিছু নিয়েছে। সন্ধ্যাকে সাজিয়ে দিতে নিলে বেচারি শিমুকে আটকে দেয়। শিমু তবুও জোর করে হালকা একটু সাজিয়ে দিয়েছে।
আনিকাদের বাড়ি আসতে আসতে প্রায় ১১ টা বেজে যায়। আকাশ অফিসের কাজে আটকে গিয়েছে। দুপুরের আগে চলে আসবে। আসমানী নওয়ান সন্ধ্যার হাত ধরে ভেতরে যায়। বিয়ে বাড়িতে এতো এতো মানুষের মাঝে সন্ধ্যার অস্বস্তি হয়। মেয়েটি এসব পরিবেশে অভ্যস্ত নয়।
আশপাশটা অবাক হয়ে দেখছে। এতো জাঁকজমকপূর্ণ বিয়ে বাড়ি এটাই তার প্রথম দেখা।
শিমু সন্ধ্যাকে টেনে আনিকার বোনের ঘরের দিকে যায়। সন্ধ্যা চুপচাপ শিমুর সাথে পা মেলায়।
আনিকার ছোট বোন অনামিকা। বয়স ১৯ বছর। অনার্স ফার্স্ট ইয়ারে পড়ছে। মেয়েটিকে বউ সাজিয়ে বসে রাখা হয়েছে বেডের মাঝখানে। সন্ধ্যা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। মেয়েটিকে পুরো পুতুল লাগছে। সৌম্য’র একটি কথা কানে বাজলো,

– বোনু তোকে পুতুল সাজিয়ে এক রাজপুত্রের হাতে তুলে দিব, দেখিস!
কথাটা ভেবে সন্ধ্যা মৃদু হাসলো। শিমু ফিসফিসিয়ে বলে,
– আকাশ ভাইয়ার বিয়েতে আমি এভাবেই সাজতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কিভাবে বিয়ে হলো, বুঝতেই পারলাম না।
শিমুর কথাটা শুনে সন্ধ্যার মুখ মলিন হয়।
অনামিকা উশখুশ করছে। সবার মাঝ থেকে উঠে আসলো। এরপর সবাইকে এড়িয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। আশেপাশে একটি ফাঁকা জায়গা পেয়ে সেদিকে এগিয়ে যায়। তার কেন যেন দমবন্ধ লাগছে। অনামিকার থেকে কিছুটা দূরত্বে অরুণ দাঁড়িয়ে সিগারেট ফুঁকছে। হঠাৎ অনামিকার দিকে নজর পড়লে অরুণের নজর আটকে যায়। অনামিকাকে ডান পাশ থেকে দেখা যাচ্ছে। অরুণ অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল।

আনিকা অরুণের হাত ধরে টেনে তার ঘরে নিয়ে যায়। অরুণের মাথা নিচু। আনিকা তার ঘরে অরুণকে নিয়ে ঠাস করে দরজা ভিড়িয়ে দেয়। এরপর রা’গে চিৎকার করে বলে,
– এই জা’নো’য়া’র তুই কি মানুষ? কি করে পারলি তুই এমনটা করতে বল?
বলতে বলতে অরুণের গালে সপাটে এক থা’প্প’ড় মে’রে দেয় আনিকা।
সন্ধ্যার খারাপ লাগছিল, তাই আনিকা সন্ধ্যাকে তার ঘরে বিশ্রাম নিতে রেখে গিয়েছিল। সন্ধ্যা বেলকনিতে দাঁড়িয়ে ছিল। চিৎকার শুনে বেলকনির দরজায় এসে দাঁড়ায়। অরুণকে থা’প্প’ড় মা’র’তে দেখে অবাক হয়ে তাকায়।
আকাশ আনিকাদের বাড়ি মাত্র এসেছে অফিস থেকে। আনিকার ঘরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল, হঠাৎ এমন চিৎকার কানে আসতেই দরজা ঠেলে ভেতরে দৃষ্টি দিলে অরুণকে থা’প্প’ড় মা’রা’র দৃশ্য চোখে পড়ে তার। দ্রুত ঘরের ভেতরে গিয়ে বলে,

– আনিকা কি হয়েছে? অরুণকে মা’র’লি কেন?
আনিকার চোখ থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে। আকাশের দিকে চেয়ে বলে,
– এই জা’নো’য়া’রের সাথে আমরা বন্ধুত্ব করেছিলাম আকাশ? ও মানুষ নয়।
আকাশ অরুণের দিকে তাকালে দেখল অরুণের মাথা নিচু। আনিকা তার হাতের ফোন বাড়িয়ে দেয় আকাশের দিকে। আকাশ বিনাবাক্যে আনিকার হাত থেকে ফোন নিয়ে ফোন নিচ দিকে স্ক্রোল করতে থাকে। দু’মিনিট পেরিয়ে যেতেই আকাশ দৃষ্টি সরিয়ে নেয় স্ক্রিন থেকে। হাতের ফোন বেডের উপর ছুঁড়ে মে’রে এদিক-ওদিক হাঁটলো কয়েক পা। রা’গ কন্ট্রোলের উপায়। বা হাত কোমরে রেখে ডান হাতে গাল চুলকে একটু হেসে বলে,
– মারাত্মক রা’গ লাগছে। কি করব এখন?
কয়েক সেকেন্ডের মাথায় হঠাৎ-ই অরুণের উপর বাঘের ন্যায় হামলে পড়ে আকাশ। সমানে অরুণের নাক বরাবর ঘুষি মা’র’তে মা’র’তে চিৎকার করে বলে,

– একে আজ এইখানে কু’র’বানি করব আমি। আনিকা যা দা নিয়ে আয়।
আনিকা, সন্ধ্যা দু’জনেই ভ’য় পেয়ে যায়। আনিকা আকাশকে টেনে কান্নামাখা গলায় বলে,
– আকাশ ছাড়। ও ম’রে যাবে।
আকাশ যেন নিজের মাঝেই নেই। অরুণের নাকমুখ দিয়ে র’ক্ত বেরিয়ে এসেছে। কিন্তু অপরাধীর ন্যায় চুপচাপ মা’র খাচ্ছে।
আনিকা আকাশকে ঠেলছে, কিন্তু পারছে না। সে বুঝল সে পারবে না। রাব্বিকে ডাকার জন্য দৌড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়।

সন্ধ্যা অরুণের দিকে ভীতচোখে চেয়ে আছে। দ্রুতপায়ে এগিয়ে এসে আকাশকে টেনে সরাতে চায়। আকাশ বাঁধা পেয়ে রা’গে সন্ধ্যাকে গায়ের জোরে ধাক্কা দেয়। সন্ধ্যা ছিটকে কয়েক হাত দূরে পড়ে যায়। দেয়ালের সাথে একটি গ্লাস খাড়া করে রাখা ছিল, যেটা সন্ধ্যার হাত লেগে ঠাস করে এসে তার পায়ের উপর পড়ে টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে যায়। সন্ধ্যার ডান পা পুরো র’ক্তা’ক্ত হয়ে যায়।
এতো জোরে শব্দ পেয়ে আকাশ দ্রুত বাম দিকে ফিরে তাকালে সন্ধ্যাকে দেখে অবাক হয়। সন্ধ্যার পায়ের অবস্থা দেখে আকাশের চোখেমুখে বিস্ময় ভর করে। অরুণকে ছেড়ে আকাশ দৌড়ে সন্ধ্যার কাছে বসে পড়ে। সন্ধ্যার পা টেনে নিয়ে উল্টেপাল্টে দেখে আর হাঁপানো কণ্ঠে বলে,

অন্তঃদহন পর্ব ১০

– স্যরি স্যরি! আমি তোমাকে দেখিনি। স্যরি!
সন্ধ্যা ভেজা চোখে আকাশের দিকে তাকায়। আকাশের দু’হাত র’ক্ত দ্বারা মাখামাখি।

অন্তঃদহন পর্ব ১২