প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ১০

প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ১০
Zannat Xhowdury

কি বলিস বার্বি ডল এমন করছে কেন ?
মেয়েটা খুব জেদি রে ওর বাচ্চামো স্বভাব এখনো যাই নাই নাম মাত্র বড় হয়েছে। পরিবারে সকলের খুব আদরের , ওর কিছু হ‌ইলে মা -বাবা কে কি করে মুখ দেখাবো আমি ।
তোরা কত সুখি তাইয়া রিয়ান তোদের পরিবার আছে …আর আমাকে দেখ , বাবা মা থেকেও নেই , পরিবার ওইটা তো আরো নেই । জানিস আমার না একটা পরিবারের খুব দরকার ছিলো । কতগুলো ভালোবাসার মানুষের দরকার ছিলো ভাগ্য আমার সাথে ছলনা করলো কেন বলতে পারিস । যে বয়সে বাচ্চারা বাবা মায়ের সান্নিধ্য পেতে চায় সে বয়সে আমি তাদের বিচ্ছেদ দেখি কথাগুলো বলেই ওয়াইনের গ্লাসে চুমুক দিলো তৃধা। রিয়ান একমনে তাকিয়ে কথাগুলো শুনছিলো তার কি বলা উচিত ভেবে পাচ্ছে না সে । বিছানা ছেড়ে উঠে গিয়ে বসলো তৃধার পাশে ।

হাত রাখলো তার মাথায় …. রিয়ান কে পাশে পেয়ে তৃধা মাথা রাখলো তার বুকে নেশা বেশ চড়ে গিয়েছে তার । বিড়বিড় করে বলতে লাগলো কেন এমন হলো আমার সাথে , কেন এম… বলতে বলতেই রিয়ানের বুকে ঘুমিয়ে পড়লো সে ।
রিয়ান কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিলো তাকে তারপর নিজেই এসে কুশনে ঘুমিয়ে পড়লো
মেয়েটা কষ্টের পাহাড় টা যদি ভাঙ্গা সুযোগ পেতো। সারাদিন দা – কুমড়োর মতো হয়ে থাকলেও মেয়েটিকে অসম্ভব ভালোবাসে রিয়ান । বিছানার দিকে মুখ করে শুয়ে পর্যবেক্ষণ করতে লাগলো তৃধার ঘুমন্ত মুখটি । একদম বাচ্চা বাচ্চা লাগছে নিষ্পাপ মুখ । এখনি জেগে থাকলে হয়তো বলতো
তুই আমার আশেপাশেও আসবি না হারামখোড় কথাগুলো ভেবেই মুসকি হাসলো রিয়ান । এমন নয় যে সে তৃধা কে ছেড়ে দেয় ।
ছেড়ে দেওয়া কথা টা ভাবলেও বুকে অসহ্য যন্ত্রণা হয় তার । ভালোবাসা বুঝি এমনি হয়

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

গভীর রাতে বাড়ি ফিরেছে নির্ণয় পুরো শরীরে জখম হয়ে আছে তার হাত ছুলে গিয়ে সেখান থেকে রক্ত পড়ছে …. তাতে যেন কোন ভ্রুক্ষেপ নেই তার । সিঁড়ি বেয়ে উঠে সোজা রোজার ঘরে দরজা সামনে এসে দাড়ালো সে । দরজা লক করা না থাকায় অনায়েসেই ভিতরে প্রবেশ করলো সে । বিছানায় শুয়ে আছে রোজা তার মাথার কাছেই বসে বসে ঘুমোচ্ছে রিধিমা । নির্ণয় বিছানার কাছে এগিয়ে গিয়ে রিধিমা কে ডাকতেই চোখ খুললো সে।
ভ ভ ভাই ? কখন আসলে
এখানে বসে বসে ঘুমতে হবে না , ঘরে গিয়ে ঘুমো ।
আচ্ছা ভাই । বলেই বাধ্য মেয়ের মতো উঠে দাড়ালো রিধিমা । দরজার দিকে পা বাড়াতে খেলায় করলো নির্ণয় হাত খত স্থানে ।
ভাই তোমার হাতে র…
শেষ করার আগেই হাতের ইশারায় থামিয়ে দিলো নির্ণয় ।
আমি ঠিক আছে তুই যা । রিধিমা কিছু না বলে চলে যেতে নিলে নির্ণয়ের ডাকে ঘুরে তাকালো ।
রিধু !

ভাইয়ের আদরে মাখা ডাক শুনে চোখ ছলছল করে উঠলো তার।
রোজ খেয়েছিলো কিছু ।
রিধিমা বুঝলো ভাইয়ের ব্যাকুলতা ।
কন্ঠ খাদে নামিয়ে বললো ।
খেতে চাইছিলো না তবে মেডিসিন নিতে হবে তাই শুধু সুপ খাইয়েছিলাম। ঘুমের মধ্যে বেশ কয়েকবার তোমার নাম নিয়েছে ।
নির্ণয় বড় একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল । তাকালো রোজের মুখ পানে একদিনেই কেমন হয়ে গিয়েছে মেয়েটা । মুখটা শুকনো দেখাচ্ছে । রিধিমা চলে গেলো নিজের রুমের উদ্দেশ্যে , যাওয়া সময় দরজা টেনে দিয়ে গিয়েছে।
নির্ণয় মন ভড়ে দেখছে তার প্রেয়সী কে । তার বাচ্চা ব‌উ কে । কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে ফার্স্ট এইড বক্স খুজতে শুরু করলো । কিছুক্ষণের মধ্যে পেয়েও গেলো ‌। রোজের মাথা কাছে বসে হাতে ঔষধ লাগাতে শুরু করলো । ঔষধ লাগিয়ে ব্যান্ডেজ করে নিলো। আবারো তাকালো রোজার মুখের দিকে ।‌ তারপর সেখান থেকে বেড়িয়ে গেলো নিজের রুমের দিকে মাথাটা ভীষণ ধরেছে। লম্বা একটা শাওয়ার নেয়ার প্রয়োজন তার ।

রুমে প্রবেশ করে টাওয়াল আর‌ কাবার্ড থেকে একটা কালো টিশার্ট আর ট্রাউজার নিয়ে ওয়াস রুমে ঢুকে গেলো ।
২০ মিনিট পড় বেড়িয়ে এলো । চুল গুলো ভালো করে মুছে নিয়ে হাটা ধরলো রোজার রুমে দিকে তবে যাওয়ার আগেই চোখ পড়লো টাইগারের ঘরের দিকে । নির্ণয় টাইগারে ঘুরের দরজা থেকে ভিতর পর্যবেক্ষণ করে নিয়ে রোজার রুমে গেলো । ঘুমতে চায় সে । ঘরে এসে দরজা লক করে দিলো , লাইট ওফ করে ড্রিম লাইট ওন করে দিয়ে শুয়ে পড়লো রোজার পাশে । আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে নিলো নিজের সাথে । আফটার অল তার বিয়ে করা ব‌উ বলে কথা । তবে এই মেয়ে কি তা জানে , না জানবেই বা কি করে কেউ কি তাকে জানিয়েছে নাকি । একদম না , রোজাকে বুকে নিয়ে ডুব দিলো অতিতে রোজার যখন ৪ বছর নির্ণয় তখন ১১ বছর । এর মাঝেই নির্ণয় জেদ ধরেছে সে রোজাকে বিয়ে করবে, তার পরিকে তার ব‌উ হিসাবে চাই মানে চাই । বাড়ির কেউ আপত্তি করেনি সেদিন । ঘরের মেয়ে ঘরে রাখবে এই ভেবেই মুন্সি ডেকে ইসলামী শরিয়তে বিয়ে পরানো হয়েছিলো তাদের । ছোট রোজাকে পড়ানো হয়েছিল লাল টুকটুকে শাড়ি , তার কোলে ছিলো ছোট একটা পুতুল । তাকে বলা হয়েছিল পুতুলের বিয়ে হবে আজ। ১১বছরের নির্ণয় সেদিন ৪বছরের রোজার কে দেখে নতুন এক অনুভূতির জোয়ারে ভেসে গিয়েছিল। বয়স না হ‌ওয়ায় ইসলামী শরিয়তে বিয়ে পরানো হয়েছিল দুজনের । ঠিক হয়েছিল বড় হলে তখন রেজিস্ট্রি করানো হবে । তবে এতো বছর ……
এইসব ভাবনার মাঝেই ঘুমের দেশে পাড়ি জমায় নির্ণয় ।

জ্বরে বিছানায় পড়ে আছে নিলীমা । শরীর যেন চলছে না । দুদিন জ্বরে বেশ কাহেল করছে তাকে । চোখ দুটো লাল বর্ণ ধারণ করেছে ,
জেমি এসে খাবার দিয়ে গেছে বেশ কিছু ক্ষণ আগেই তবে তার উঠার শক্তি হচ্ছে । শরীরে এখনো বেশ জ্বর , জ্বরে গা গুলিয়ে আসছে তার ।
অনেক কষ্টে ওঠে বসলো বিছনায় , মাথাটা কিছুক্ষণ চেপে বসে র‌ইলো । তার ধীর পায়ে উঠে এগিয়ে গেলো ফ্রেশ হতে , ১০ মিনিট পর ফ্রেশ হয়ে এসে খাবারের প্লেট হাতে নিলো খেতে একদম ইচ্ছে করছে না । অনেক কষ্টে দুবার মুখে দিলো , আর খেতে পারলো না সে ।
খাবার প্লেট রেখে হাত ধুয়ে নিলো । তার মেডিসিন খেয়ে আবারো শুয়ে পরলো । বালিশের পাশে রাখা ফোনটা বেজে উঠলো অপরিচিত নাম্বার দেখে নিয়ে ওভাবেই ফোন টা রেখে দিলো সে ।

ফোন বেজে বেজে কেটে গেলো ।তবে কিছুক্ষণ থেমে আবারও একি নাম্বারে কল এসেছে নিলীমা ফোন রিসিভ করে চুপ করে র‌ইল । অপর পাশের মানুষটিও মেয়ে না ছেলে তা বোঝার চেষ্টা করছে সে । তবে মানুষটিও তার মতো বোবা বনে গেছে
বেশ অনেক ক্ষণ থেকেই চলছে তাদের এই বোবা খেলে অপূর্বর যেন এবার নিজের ধৈর্য হাড়িয়ে ফেলছে । নিরবতা ভেঙ্গে। শান্ত কন্ঠে বলে উঠলো
কেমন আছো নিলীমা ?
কথাটা কর্ণপাত হতেই যেন নিলীমা শরীরের হিম শীতল বাতাস বয়ে যাচ্ছে । অনুভুতি রা যে ছুটে পালাতে চাইছে , আচ্ছা এমন কেন হচ্ছে তার
কি হলো কথা বলছো না যে ?
জ্বি আলহামদুলিল্লাহ ভালো । আআ আপনি কেমন আছেন ।
শরীর ভালো আছে তো , জ্বর কমছে ?
জ্বি না ।
ঔষধ খেয়েছো ?
জ্বি !

এর মাঝেই নিলীমা ভাবতে বসলো উউনি কিভাবে জানলে যে আমার জ্বর আমি তো ওনাকে বলি নি। ওনাকে কে কি জিজ্ঞেস কবরো ।
কিহলো চুপ কেন ?
আআ আসলে ।
কিভাবছো কিভাবে জানলাম ?
কাল‌ তোমার রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলাম তোমার খবর নিতে তখন একজন স্টাফ বললো তুমি দুদিন যাবত আসছো না । তোমার নাম্বার সেখান থেকেই নিয়েছিলাম । তারপর কল ও করেছিলাম তবে তবে ঘুমিয়ে ছিলে । চারবারের মাথায় কল রিসিভ করেছিলো তোমার রুমমেট জুনি তখনি শুনেছিলাম ।
আআ আমি ঘুমোবো ।
পালিয়ে যাচ্ছো উত্তর দেওয়ার ভয়ে ??
পালাচ্ছিনা আমার কিছু টা সময় লাগবে ।

সময় নাও তবে উত্তর যেন হ্যা হয় ‌ । অপেক্ষায় থাকবো ‌ ভালো থেকো ।কথা শেষ করেই কল ডিসকানেক্ট করে দিলো ।
ফোনটা আগের জায়গায় রেখে আধশোয়া হয়ে বসলো নিলীমা ভাবতে লাগলো সেদিনের কথা…..
রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করছে অপূর্ব তার পিছনের নিলীমা । অপূর্ব প্রথমে গিয়ে মেনেজার কে বলে ছুটি করিয়ে নিলো তার তার একটা টেবিল বুক করে সেখানে গিয়ে বসলো । নিলীমা ও গিয়ে বসলো সামনের চেয়ারে । দুটো কফি ওর্ডার করলো অপূর্ব ।
অপূর্ব বে শ খুটিয়ে খুটিয়ে পর্যবেক্ষণ করছিলো নিলীমা কে । দুজনেই চুপচাপ , অপূর্ব কে পর্যবেক্ষণ করতে দেখে নিলীমা যেন হাসফাস করছিলো । তার এসব একদম ভালো লাগছিলো না । অপূর্ব নিলীমা অস্বস্তি বুঝতে পেরে মুসকি হেসে নিলো
একধ্যানে নিলীমা কে দেখে যাচ্ছে সে , যেন এর থেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ নেই তার । নিলীমাও আড়চোখে বেশ কয়েকবার দেখেছে তাকে যার ফলে চোখাচোখি হয়েছে দুজনে । এতে বেশ লজ্জাই পড়েছে নিলীমা ।

আমার অর্ধাঙ্গিনী হবেন মিস নীলিমা ?
দেখুন আমি কিন্তু আর পাচজনে মতো প্রেম করে সময় নষ্ট করতে পারবো না তা সোজাসুজি বলছি বিয়ে করবেন আমাকে ।
অপূর্বে কথায় চোখ দুটো রসগোল্লা মতো করে তাকিয়ে আছে নিলীমা সে বুঝতে পারছেনা তার কি রিয়েকশন দেওয়া উচিত । বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে র‌ইলো তার মুখ পানে । অপূর্ব কিছু সময় থেমে আবারও বলতে লাগলো
আপনি চাইলে সময় নিতে পারেন ভাবার জন্য ? ইতিমধ্যে ওয়েটার কফি দিয়ে গেলো । অপূর্ব কফিতে চুমুক দিয়ে আবারো তাকালো নিলীমার দিকে । নীলিমা এক ধ্যানে তাকিয়ে তাকেই দেখছে
অপূর্ব তুরি বাজাতেই যেন ধ্যান ভাঙ্গলো তার ।
আমাকে পরেও দেখা যাবে এখন কফিটা খান ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে ।
নীলিমা কফির কাপ হাতে নিলো তবে চুমুক না দিয়ে কিছু একটা ভাবছে সে , অপূর্ব এবার বেজায় বিরক্ত ।
এই মেয়ে কি ভাবছো ?
অপূর্বের রাগি স্বরে ভরকে গেলো নিলীমা ।সে মাথা ডানে বামে নাড়িয়ে , কিছু না বুঝিয়ে কফিতে চুমুক দিলো ।

সকাল সকাল নিজের সাথে কিছু জড়িয়ে আছে অনুভব হতেই ঘুমের মধ্যে হাসফাস করতে লাগলো রোজা। চোখ না খুলেই ছাড়ানো চেষ্টা করছে নিজেকে । এতে বেশ বিরক্ত হচ্ছে নির্ণয় , তবে চোখে প্রচুর ঘুম তার । রোজা নিজেকে যত ছাড়িয়ে নিতে চাইছে ।
নির্ণয় তাকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে নিচ্ছে ।
উফফ রোজ এত নোরিস না তো ঘুমতে দে ।
ব্যাস এইটুকু কথা কানে আসতেই তড়িৎ গতিতে চোখ খুললো রোজা
নির্ণয় ভাই কোথা থেকে এলো ?
আশেপাশে তাকিয়ে নিজেকে নির্ণয়ের বুকে আবিষ্কার করে যেন আরেক দফা শক খেলো সে ।
আআআআআআআআআ
চোখ মুখ খিচে চেঁচিয়ে উঠলো রোজা । ঘুমের মধ্যেই রোজাকে ছেড়ে দিয়ে ধরফড়িয়ে উঠে নির্ণয় ও চেচাতে শুরু করলো ।
আআআআআআআআআআ

এতে যেন থতমত খেল রোজা , নিজেকে সামলে নিয়ে বলতে লাগলো এই অসভ্য লোক আপনি কেন চেঁচাচ্ছেন ? চেচাবো তো আমি । আপনি আমাকে এইভাবে সাপের মত পেঁচিয়ে রেখেছেন কেন ।
কি সমস্যা রোজ সকাল সকাল বাড়ি মাথায় তুলছিস কেন ।
হ্যা সমস্যা তো আমারি ।। আগে বলুন আপনি আমার রুমে কেন ? তার উপর আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়েছিলেন কেন আল্লাহ এখন আমার কি হবে । আমার তো আর বিয়ে হবে না , বাচ্চা ও হবে না , এ আমার কি হলো গো । এখন আমাকে কে বিয়ে করবে। আমার কি তবে কুমারী মৃত্যু কপালে ছিলো এ্যাঁ এ্যাঁ এ্যাঁ
ইউ ডাফার ! কান্না বন্ধ কর
আমার আর বিয়ে করা হলো না এ্যাঁ এ্যাঁ এ্যাঁ ।
তুই জীবনে কয়বার বিয়ে করতে চাস রোজ ?
কথাটা কর্ণদ্বয় হতেই কান্না থেমে গেলো রোজার , সেই সাথে চেঁচামেচি ও । তা দেখে মুচকি হাসলো নির্ণয় ঠোঁটের কোণে হাসি রেখেই বললো

তুই চাইলে কিন্তু তোর বিয়ে বাচ্চা দুটোর দায়িত্ব আমি নিতে পারি ।
এবার রাগি চোখে তাকালো রোজা ।
আপনাকে দায়িত্ব নিতে বলছি আমি । বলিনি তো , আর কয়বার বিয়ে করবো মানে কি একেবারেই তো হ‌ইলো না এখনো ।
জানেন নির্ণয় ভাই আমার না অনেক দিনের স্বপ্ন আমার বিয়ের পর প্রতি বছর বাচ্চা নিয়ে একটা ফুটবল টিম বানাবো ।

আমার মতো নিষ্পাপ ছেলেকে এত বড় অত্যাচার করতে তোর কষ্ট হবে না রোজ ।
যাহ বাবা ! আপনাকে কেন অত্যাচার করবো অত্যাচার তো আমার একমাত্র জামাই কে করবো ।
তোর একমাত্র জামাইটাই তো আমি । আমার ব‌উয়ের শখের ও বলি হাড়ি , যাইহোক আজ থেকে এনার্জি আরো বাড়াতে হবে ফুটবল টিম বলে কথা । মনে মনে কথাগুলো বলেই বাঁকা হাসলো নির্ণয়
এই নির্ণয় ভাই হাসছেন কেন একা একা ?
হ্যা না কিছু না তুই কন্টিনিউড কর ,,আমি শুনেছি
আর কি কি চাই তোর ।

জামাইয়ের সাথে অনেক ঘুরবো । দিন রাত অনেক পিটাবো জামাইকে মাঝ রাতে উঠিয়ে আইসক্রিম আনতে বলবো । চকলেটের বস্তা না আনলে তো ঘরে আসতেই দিবো না ।
সবি বুঝলাম তবে পিটাবি কেন এইটা বুঝলাম না।
কোন উত্তর না দিয়ে মিটমিটিয়ে হাসছে রোজা ..
কিহলো বল পিটাবি কেন ?
ওহ নির্ণয় ভাই আপনি না কিছুই বুঝেন না । জামাইদের মাঝে মাঝে একটু শাসনে রাখতে হয় বুঝলেন ।
কথার মাঝে রোজার চোখ হঠাৎ গিয়ে পড়লো নির্ণয়ের হাতের ব্যান্ডেজের দিকে ।বুকটা যেন ধুক করে উঠলো তার।
আপনার হাতে কি হয়েছে নির্ণয় ভাই । কাটলো কি করে ? কখন হয়েছে এমন।
কুল ডাউন রোজ ‌ সামান্য একটু কেটেছে ।

রোজ ঠোঁট উলটে তাকালো নির্ণয়ের মুখ পানে । কাঁদো কাঁদো স্বরে বললো ,
একটু কাটলে বুঝি কেউ ব্যান্ডেজ করে নির্ণয় ভাই। আমি জানি আপনার অনেক টা কেটেছে আপনি আমাকে বলছেন না। বলুন না নির্ণয় ভাই কিভাবে কেটেছে ।
কেটেছে তবে তুই যতটা কেটেছিস তার থেকে কম। এখন গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আয় । বাহিরে যাবো আমরা ।
বাহিরে কোথায় যাবো ?
গেলেই দেখবি , জলদি যাহ ।
আচ্ছা দেখুন এই যাবো আর এই আসবো বলেই ছুটে ওয়াস রুমে ঢুকলো রোজা । নির্ণয় ওর যাওয়ার পানে হা করে তাকিয়ে ছিলো । এমন সময় ঘরে দরজা কেউ নক করলো ।
নির্ণয় বিছানা ছেড়ে উঠে দরজার কাছে গিয়ে দরজা খুলতেই
দেখলো রিয়ান আর তৃধা ।
একি এ্যানসি তুই বার্বি ডলের ঘরে কেন আর বার্বি ডল ক‌ই ?
আমার ব‌উয়ের ঘরে আমি থাকবো নাতো পাড়া প্রতিবেশী ছেলে থাকবে।
মানে !

ওহ তৃধা। বাহিরে দাঁড়িয়েই কথা বলবি নাকি ভিতরে যাবি তুই থাকলে থাক আমি ভিতরে গেলাম । কথা টুকু শেষ করেই তৃধা কে ফেলে রুমে প্রবেশ করলো রিয়ান । তৃধা রিয়ানে যাওয়ার পানে তাকিয়ে ভেংচি কেটে সেও ভিতরে প্রবেশ করলো ।
বোনু কোথায় ভাই ?
ফ্রেশ হতে গেছে ।
বলনা এ্যানসি , তুই বার্বি ডলের ঘরে কেন ?তোরা কি রাতে একসাথে ছিলি ?
এত সকালে তোরা একসাথে কেন কি দরকার ?
তৃধা বুঝলো নির্ণয় তার কথা এড়িয়ে গেলো।
আআ আসলে ভাই….
কি আসলে ?
রোহানের খবর পেয়েছি ও থাইল্যান্ডে আছে । আমাদের দ্রুত কিছু করা উচিত ভাই ।
আমি আর তৃধা ভাবছি থাইল্যান্ড যাবো ।

প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ৯

আমিও যাবো ।
সবাই গেলে বোন রিধিমা ওদের ..
ওরাও যাবে ।
ভাই ওইখানে তো ঘুরতে যাচ্ছি না আমরা , জানিনা কোন বিপদ ওত পেতে আছে ওদের নেওয়া কি ঠিক হবে ।
আমি থাকতে রোজের গায়ে কেউ একটা সিঙ্গেল টার্চ করার সাহস দেখালেও জ্যান্ত পুতে দিবো ওকে আমি ।
কিন্তু ভাই ?
অপূর্ব আর আয়ন কে ইনফরম কর ।
কোথায় যাওয়ার প্ল্যান করছো তোমরা ?

প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ১১