প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ১৩
Zannat Xhowdury
তোর কি নিজেকে নায়িকা মনে হয় নাকি ?
বিশ্বাস কর রোজ তুই ওতোটাও সুন্দর না যে তোকে নায়িকাদের মতো লাগবে ।
ইউ লুক লাইক অ্যা পেত্নি ! ইট’স পারফেক্ট ফর ইউ।
মোটেও আমি পেত্নি না নির্ণয় ভাই । ভাইজান বলে আমি নাকি প্রিন্সেস আর আপনি কিনা পেত্নি বলছেন । আপনি খুব পচা নির্ণয় ভাই আপনার সাথে আমার জীবন কাট্টি আর কথা বলবো না বলে দিলাম।
তোর ভাইজান ঠিক বলে তুই আসলেই প্রিন্সেস রোজ ,আমার প্রিন্সেস। আমার অন্ধকার সাম্রাজ্যের একমাত্র সম্রাজ্ঞী , আমার তিলে তিলে গড়ে তোলা পাপের রাজ্যের একমাত্র পূর্ণতা তুই ।
মনে মনে কথা গুলো বলেই দীর্ঘশ্বাস ফেলল নির্ণয় ।
এক এক করে খাবারের প্লেট দিয়ে পুরো টেবিল ভড়িয়ে দিয়েছে ওয়েটার । এত খাবার দেখে চোখ প্রায় বেড়িয়ে আসার উপক্রম রোজার। প্রায় ৩৫ রকমের থেকে ও বেশি খাবার টেবিলে সাজানো এত খাবার কে খাবে এই ভেবেই যেন মাথা ঘুরছে তার ।
এতো খাবার কে খাবে নির্ণয় ভাই ?
এই যে আমার সামনের চেয়ারে মেয়েটা দেখছিস ও খাবে ।
আচ্ছা নির্ণয় ভাই , আপনি কি কোনো ভাবে আমাকে মেরে ফেলার ফন্দি করেছেন । না মানে , একটু খাবার খেতে চেয়েছিলাম তাই বলে খাবারের চুবিয়ে মারবেন । যাতে আব্বু বড় আব্বু আপনার দোষ দিতে না পারে তাই না।
যাই হোক সবি বুঝলাম , এখানে এতো খাবারের মাঝেও একটা খাবার মিসিং নির্ণয় ভাই ।
নির্ণয় ভ্রু কুঁচকে তাকালো খাবারের পানে , কিছু বুঝতে না পেরে আবারো তাকালো রোজার মুখের দিকে তা দেখে মুসকি হাসলো রোজা ।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
কি মিসিং বলতো ?
আইসক্রিম ! আর এখন আমার আইসক্রিম চাই ।
No way রোজ ! এখন কোনো আইসক্রিম পাবিনা তুই ।
ওমা নির্ণয় ভাই আপনার এতো খাবারের টাকা হলো শুধু আমার আইসক্রিমের টাকা হলো না । ওটার বেলায় এত কিপ্টা হলেন আপনি ছিঃ ছিঃ ।
What means কিপ্টা ।
কিপ্টা মানে কৃপণ । এইটুকু জানেন না তাতেই এতো বড় হয়েছেন। দুদিন পর তো বুড়ো হবেন , এখনো তো ঘর সংসার হলো না বাচ্চা-কাচ্চা নাহয় বাদি দিলাম । দেখবেন আমার বাচ্চা আপনাকে মামা না বলে দাদুভাই বলবে !
What? তোর আমাকে বুড়ো মনে হচ্ছে ! তোর চোখের ডাক্তার দেখাতে হবে রোজ তোর চোখের প্রবলেম আগে বলিস নি কেন ।
কালো চশমা তো আপনি পড়েন তাহলে আমার চোখের সমস্যা হবে কেন বলেন তো ।
বড্ড বকবক করিস তুই !
যাহ বাবা এখন আমার কথা বলাও বিরক্ত লাগে আপনার?
Just shut up রোজ ।
ওকে রোজা চুপ ! বলেই দুই ঠোঁটের উপর আঙ্গুল রাখলো রোজা প্রায় ৫ মিনিট কোনো কথা বলছে না সে । এতেই আরো বিরক্ত হচ্ছে নির্ণয় এরি মধ্যে প্রায় পাঁচ রকমের আইসক্রিম এনে টেবিলে রাখলো ওয়েটার । এতেও রোজার কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই নির্ণয় এবার হালকা ঝুকে দু হাত জোর করে বললো
ক্ষেমা দে মা তোর মুখ বন্ধ করা আমার উচিত হয় নি । আমার আম্মা এইবার আইসক্রিম খেয়ে আমাকে উদ্ধার কর।
যুদ্ধ জয় করার মতো হাসলো রোজা । তারপর নিজের পছন্দের চকলেট ফ্লেভারের আইসক্রিমের বাটি হাতে নিয়ে মনের সুখে আইসক্রিম খেতে লাগলো সে ।
ফাঁকা রাস্তা ডাইভিং সিটে বসে আড়চোখে কাচুমাচু হয়ে থাকা মেয়েটিকে পর্যবেক্ষণ করছে অর্ণব । গাড়ির কাচ হালকা নামানো থাকায় বাতাসে খোলা চুল গুলো উড়ছে তার । তাতেও নেই কোনো খেয়াল । চোখের কোণে কাজল কিছু লেপ্টে আছে তা কি এই মেয়ে জানে । তার ওই কাজল কালো চোখ দুটো যে বড্ড টানে আমায় ।
আর কত সময় নিবেন আপনি ?
ইয়ে মানে কি কিসের সময় ।
আপনার স্মৃতি শক্তি এতো দুর্বল বুঝি ? সব এতো তাড়াতাড়ি ভুলে যান ।
না মানে তা কেন হবে ।
তাহলে ?
কি তাহলে ?
বেশ রাগ লাগলো অর্ণবের , এই মেয়ে কি তাকে ম্যানুপুলেট করার ধান্দায় এসেছে ।তবে যধা সম্ভব শান্ত রাখার চেষ্টা করলো সে নিজেকে।
আমার উত্তর চাই মিস নীলিমা আজ আর এখনি । অনলি ফাইভ মিনিট টাইম।
আসলে…..
Your time start now ;
বেশ কিছুক্ষণ থ মেরে বসে রইলো নীলিমা অর্ণব ও তাকে ঘাটালো না দুজনের মধ্যে বেশ নিরবতা বিরাজ মান ।
4,
3
2
1
0
Now stop.
এখন বলুন , কি ডিসিশন নিলেন । আশাকরি উত্তর হ্যাঁ আসবে আর না আসলেও হ্যাঁ কিভাবে করতে হয় আমার জানা আছে সো ভেবেই উত্তর দিবেন আশাকরি ।
না মানে হ্যাঁ ।
কি না মানে হ্যাঁ ?
আমি রাজি ।
বাঁকা হাসলো অর্ণব সে তো চেয়েছিলো মেয়েটা নিজের মুখে বলুক সে রাজি
তবে ,
কাপালে ভাজ পড়লো অর্ণবের তবুও শান্ত চোখে তাকালো সে
তবে কি ?
আমার কিছু সময় চাই ? নিজেকে তৈরি করার জন্য।
ওকে ।
কথা শেষ করেই গাড়ি ব্রেক করলো অর্ণব । নীলিমা বাইরে তাকাতেই দেখলো তার রেস্টুরেন্ট চলে এসে । একবার অর্ণবে দিকে তাকিয়ে গাড়ি থেকে নেমে গেলো সে । নীলিমা নামতেই গাড়ি ঘুরিয়ে চলে গেলো অর্ণব । তার যাওয়ার পানে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলল নীলিমা । ধীর পায়ে এগিয়ে গেলো রেস্টুরেন্টের দিকে ।
সন্ধ্যা ৭টা নীর রঞ্জনে গোল মিটিং বসেছে । মিটিংয়ের আসল উদ্দেশ্য এখনো খোলাসা নয় । সকলের কপালে চিন্তার ছাপ ,
কিচেন থেকে সকলের জন্য কফি হাতে এগিয়ে আসছে রিধিমা ।
এ্যানসি কে জানানোর পরেই আমাদের প্লান ফাইনাল করা উচিত কি বলিস তোরা ।
কফিতে চুমুক দিয়ে সকলের উদ্দেশ্যে কথাগুলো বললো তৃধা ।
আয়ন, অর্ণব , রিধিমা সকলের মাথা ঝাঁকিয়ে সায় জানালো তবে এর মধ্যেই ফোড়ন কাটলো রিয়ান ।
কেনো রে তোর এ্যানসি ছাড়া কি আমরা কিছু করতে পারি না ।
তোর টুনটুনির জোর কম তো তাই , এ্যানসি উপর ডিপেন্ডেন্ট তুই।
এই শালি আমার টুনটুনি কি তোকে দিয়েছিলাম আমি কেমনে জানলি জোর কম !
তোর শরীর দেখছিস ফাটা বাঁশের মতো ! তাহলে টুনটুনি আর কত হবে বল ।
দুজনে ঝগড়া বেশ উপভোগ করছে সকলে । আয়ান কফির কাপ রিধিমার হাতে দিয়ে বেশ আরাম করে বসলো । হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখতে । সকলের মাঝে এখন টানটান উত্তেজনা কে জিতবে এই নিয়ে ।
তুই বুঝি টুনটুনি ব্যবসা শুরু করেছিস ?
ব্যবসা করলেও তোর টা কিনবো না শালা শুয়োর ।
এদের ঝগড়ার মাঝেই ঘুমন্ত রোজা কে কোলে নিয়ে হল রুমে প্রবেশ করলো নির্ণয় । রিধিমার চোখ ওদের উপর পড়তেই ব্যাস্ত ভঙ্গিতে বসা থেকে উঠে নির্ণয়ে কাছে গেলো সে ।
ভাই কি হয়েছে রো…. কিছু বলার আগেই থামিয়ে দিলো নির্ণয়
ও ঘুমোচ্ছে , তোদের কারো কথায় যদি ওর ঘুম ভাঙ্গে তার গর্দান নিবো আমি , বলেই রোজকে কোলে নিয়ে সিঁড়ির দিকে হাটে গেলো নির্ণয় ।
প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ১২
ওর যাওয়ার পানে তাকিয়ে আয়না বিড়বিড় করে বললো …
এই শালা কি আমাদের থ্রেট দিলো নাকি ভয় দেখালো ।
সাবধান করলো ! অর্ণবের কথায় থতমত খেলো আয়ান ।
তুই শালা সব খানেই কান পাতিস কেন বলতো ? নাজানি আমার বাসর ঘরে দরজায় ও সাউন্ড শুনতে কান পেতে থাকিস কিনা কে জানে । দেখ ভাই আগেই বলছি আমি তোদের ডিস্টার্ব করবো না তোরাও করিনা । এত বছরের সাধনার পর একটা বউ পাবো তোদের জন্য যদি আমার বাসর নষ্ট হয় তবে আমার অভিশাপে ধ্বংস হবি সবগুলো
কে কার অভিশাপে ধ্বংস হলো ?