অনুভবে তুমি পর্ব ২৪

অনুভবে তুমি পর্ব ২৪
লিজা মনি

আহান তব্দা লেগে আছে। কি বললো এইসব। সুনাম করলো নাকি দুর্নাম।এই মেয়ে আমাকে পাগল করে দিবে।
অনেক্ষন পর্যন্ত আহানের কোনো সারা শব্দ না পেয়ে ইয়ানা ভেবেছে আহান হয়তো চলে গেছে। এর পর আসতে আসতে করে দরজা খুলে উকি দেয়। উকি দিতেই কারোর বলিষ্ঠ হাতের হেচকা টানে শক্তপোক্ত বক্ষগহ্বরে গিয়ে ধাক্কা খায়। হাতের মালিকের দিকে দৃষ্ট দিতেই চোখ বড় বড় করে তাকায়। আহান একটা বাকা হাসি দিয়ে ইয়ানার মুখের উপর আলতো করে ফুঁ দেয়। তারপর বলে,,,,,,

“” কি যেনো বলছিলে আবার বলোতো? “”
ইয়ানা নিজের শুষ্ক ঠোঁট জোরা ভিজিয়ে আমতা আমতা করে বলে,,,,
“” আব.. আ.. আমি তো কিছুই বলেনি। আমি কি বলবো?”””
আহান মুখটা একটু গম্ভির করে বলে,,,,,
“” এখন ঝগড়া করছো না কেনো? তোমার স্বামী যেনো কে? “”
ইয়ানা :: আমার স্বামী কে আমি কি করে বলবো? জানি না আমি।
আহান ইয়ানাকে নিজের সাথে মিশিয়ে বলে,,,
“” বলবে না তাইতো, ঠিক আছে বলো না। “”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

এরপর আহান ইয়ানাকে পাজাকোলে নিয়ে ওয়াশরুমে ডুকে পরে।
ইয়ানা আহানের দিকে চোখ বড় বড় করে তাকায়। তারাতারি করে নিজের ঠোটগুলো দুই হাত দিয়ে ঢেকে ফেলে।
আহান ইয়ানার অবস্থা দেখে ঠোট চেপে নিজের হাসি আটকে রেখেছে।
এরপর শাওয়ারের নিচে দাড়া করাতেই ইয়ানা ছটফট শুরু করে। ঠোট উল্টে বলে,,,,
“” আমি মাত্র শাওয়ার নিয়ে বের হয়েছি প্লিজ আমাকে ভিজিয়ে দিবেন না “””
আহানের সোজাসাপ্টা উত্তর,,,,
“” ভিজাবো না যদি বলো তোমার স্বামী কে? “”
ইয়ানা একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলে,,,,,

“” আপনার অফিসের তো দেরি হয়ে যাচ্ছে তাই না। আপনি শাওয়ার নিন। আমি খাবার নিয়ে আসছি। “”
আহান ইয়ানার কপালের চোলগুলো কানের নিচে গুজে দিয়ে বলে,,,,
“” তুমি তো চাইছিলে যাতে আমার অফিসের দেরি হোক। তোমার সাথে সারাদিন রুমান্স করি “””
ইয়ানা নিজের দুই কানে হাত দিয়ে বলে,,,,
“” নাউযুবিল্লাহ, আমি কেনো এইসব চাইবো? “”
আহান ::: সেটা তুমি যানো। এখন বলো তোমার স্বামী কে? যদি না বলো বিলিভ মি টু ডু দ্যা শাওয়ার এগেইন।””
ইয়ানা আহানের কথা শুনে মনে মনে ভাবে,,,,
“” কি কপাল আমার, ওনাকে জব্দ করতে প্লেন করি আর সেই ফাদে আমিই বারবার বলি হয়। “”
তারপর আহান বলে,,,

“” ঠিক আছে বলবে নাতো? তাহলে পুনরায় শাওয়ারের প্রস্তুতি নেও।ভেবেছিলাম অনুমতি নিয়ে সব করবো। কিন্তু কি করার বউ তো একটা ঘার ত্যারা।
আহানের কথা কানে যেতেই ইয়ানা সাথে সাথে বলে,,,,,
“” আপনি , আপনি আমার স্বামী। “”
আহান গম্ভির হয়ে বলে,,,
“” হয়নি। স্বমীর সাথে আপনি শব্দটা ঠিক মানায় না। তুমি করে বলো।
ইয়ানা আহানের দিকে তাকিয়ে বলে,,,,,
“”” আপনি আমার বড়। আমি কিভাবে তুমি সম্মোধন করবো?””
আহান ::: একটু আগে যে বউ তুই সম্মোধন করছিলো তার মুখে এইসব মানায় না। তাই তারাতারি বলো।
ইয়ানা একটা তপ্ত শ্বাস ফেলে তারপর বলে,,,,

“” তুমি আমার স্বামী। মন শান্তি হয়েছে। এইবার ছাড়ুন।
আহান একটু রহস্যময় হাসি দিয়ে বলে,,,
“” হুম এইবার ঠিক আছে। তারপর ইয়ানা বুঝার আগেই ওর ঠোটে একটা গাঢ় চুম্বন খায়। “””
ইয়ানা নিজের ঠোঁটে হাত দিয়ে আহানের দিকে বড় বড় চোখে তাকায়।
আহান ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলে,,,,
“” আমি এখন শাওয়ার নিবো। যদি এখানে কেউ দাঁড়িয়ে থাকে তাহলে মাথা ঠিক রাখতে পারবো না। পরে কিন্তু আমার দোষ দেওয়া যাবে না। আই এম এ জেন্টাল বয়।”
ইয়ানা রাগে ফুস ফুস করতে করতে বের হয়ে আসে। বিরবির করে বলে,,,,
“” জেন্টাল না ছাই। অসভ্য লুচ্ছা একটা। “””

দুপুরের খাওয়া দাওয়া করে ইয়ানা দাদুমনির সাথে আড্ডা দিচ্ছিলো। আহিয়া স্কুলে গেছে। দাদুমনি থেকে সবার কথা জানছিলো। হঠৎ করে আহানের মায়ের কথা জিজ্ঞাসা করাতে দাদুমনি চুপসে যায়। ইয়ানা দাদুমনির দিকে তাকিয়ে বলে,,,,,
“” কি হলো দাদুমনি? ওনার মা এখন কোথায়? “”””
দাদুমনি একটা শ্বাস ছেড়ে বলে,,,,,
“” খবরদার এই প্রশ্ন আমাকে করেছো কিন্তু ভুলেও আহান দাদুভাইকে যেনো এইসব না বলো। “”
ইয়ানা দাদুমনির কথা শুনে কিছুটা চিন্তিত হয়ে বলে,,,,
“” কিন্তু দাদুমনি কেনো? মা হচ্ছে আল্লাহর সৃষ্টির সেরা নিয়ামত। কিন্তু ওনি ওনার মাকে এত ঘৃনা করে কেনো?
দাদুমনি নিজেকে আড়াল করে বলে,,,,

“” আজ এইসব প্রশ্ন থাক। অন্যদিন তোর সব প্রশ্নের উত্তর দিবো। কিন্তু ভুলে ও যাতে আহান দাদুভাই না জানে। “”
ইয়ানা অন্যমনস্ক হয়ে ছোট করে উত্তর দেয়,,,
“” হুম। ঠিক আছে তুমি এখন রেস্ট নাও আমি রুমে যাই”
ইয়ানা রুমে গিয়ে কিছু একটা ভেবে বেলকনি দিয়ে বাহিরে তাকায়। তারপর বিরবির করে ভাবে,,,,,
” আজ তাহলে কোনো গার্ড নেই। মি অগ্নি চৌধুরি নিজের শিকারকে আজ বডিগার্ড ছাড়া রাখলেন। তাহলে এই সুজোগ বাহিরে গিয়ে সুমুর সাথে দেখা করার। ওনি আসতে আসতে রাত হবে আমি এই সুজোগে সবার সাথে দেখা করে চলে আসতে পারবো। যেই ভাবা সেই কাজ “”
এর পর ইয়ানা বাড়ির চারপাশ ভালোভাবে দেখে একটা কালো রঙ্গের বোরকা পরে নেয়। নিজেকে আবৃত করে সকল গার্ডেের নজর এরিয়ে চৌধুরি মঞ্জিলের বাহিরে পা রাখে। এতদিন পর বাহিরের জগৎটাকে দেখে নিজেকে মুক্ত পাখির ন্যায় লাগছে।

আসাদ হোসেন ভিবানে বসে নিউস দেখছিলেন। ঠিক তখনি কলিং বেলের শব্দ পেয়ে রুয়ানাকে ডাক দিয়ে বলেন,,,,
“” রুই দেখতো মা কে এসেছে? “”
রুয়ানা দরজা খুলেই সামনে থাকা ব্যক্তিটিকে দেখে খুশিতে জরিয়ে ধরে চিৎকার দিয়ে বলে,,,,,
“” আপুইইইইইইইইইইইইই “”
রুয়ানার চিৎকার শুনে সবাই দরজার দিকে তাকায়। এতদিন পর ইয়ানাকে দেখে সবাই খুশিতে কান্না করে দেয়। ইয়ানা এক এক করে আসাদ হোসেন, সেলিনা হোসেন আর সুমুকে জড়িয়ে ধরে। নিজের মেয়েকে এতদিন পর দেখে তারা আবেগপ্লুত হয়ে পড়ে।
সেলিনা হোসেন দরজার দিকে তাকিয়ে বলে,,,,

“” কিরে মা তুই কি একা এসেছিস নাকি জামাই আসেনি?”
ইয়ানা মায়ের কথা শুনে চুপসে যায়। কি বলবে সে? যে আহানকে না জানিয়ে চলে এসেছে? ওনি তোমাদের মেয়েকে আসতে দেয় না মা। তোমাদের এক নজর দেখার জন্য চুরের মতো লুকিয়ে আসতে হয়েছে। নাহহ এইটা বলা যাবে না। শুধু শুধু চিন্তা করবে।
এরপর ইয়ানা মুচকি হাসি দিয়ে বলে,,,,,
” কি আম্মু? এতদিন পর মেয়ে আসলো কই একটু আদর করবা তা না করে জামাই জামাই করছো। আর তাছাড়া আমার হাতে বেশি সময় নেয় একটু পর চলে যাবো। “”
সবাই ইয়ানার দিকে আশ্চর্য হয়ে তাকায়। রুয়ানা মন খারাপ করে বলে,,,,
“” সে কি আপু আসলেই তো এই মাত্র। তাহলে আজ চলে যাবে কেনো? “”
সবাই রুয়ানার কথায় সম্মতি জানায়।
ইয়ানা সবার উদ্দেশ্যে বলে,,,,

“” চিন্তা নেই আমি আবার আসবো। এখন ওনার অফিসের অনেক কাজ তাই বাড়ি ফিরতে হবে। আর ওনার দাদি ও অসুস্থ। তাই আজ থাকতে পারবো না। “”
এরপর সুমুকে চোখের ইশারা করে উপরে যাওয়ার জন্য।
ইয়ানা ফ্রেশ হওয়ার কথা বলে সুমুর সাথে সাথে উপরে চলে যায়। গিয়েই ঠাস করে দরজা লাগিয়ে দেয়।
সুমু ইয়ানাকে জড়িয়ে ধরে বলে,,,,,
“” তুই জানিস আমরা তোকে কত মিস করি। এমন একটা দিন বাধ যায় না তোর কথা হয় না।””
ইয়ানা সুমুর দিকে তাকিয়ে বলে,,,,
” আকাশ, আয়াত, আরু,রায়ান তারা কেমন আছে? “”
সুমু মন খারাপ করে বলে,,,,
” তোকে ছাড়া ভালো নেয়। খুব মিস করি। আগের মতো ভন্ডামি করে না একদম শান্ত হয়ে গেছে। আমাদের জীবনটা এমন কেনো হলো? “”

ইয়ানা সুমুর দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলে,,,,
“” তুই কি রায়ান ভাইয়াকে ভালোবাসিস? ”
হঠাৎ ইয়ানার এমন প্রশ্নে ভরকে যায়। অন্যদিকে ফিরে বলে,,,,,
“” কি সব বলছিস আমি ওনাকে ভালোবাসতে যাবো কেনো? ওনি আহান ভাইয়ার ফ্রেন্ড। ”
ইয়ানার সোজাসাপ্টা প্রশ্ন,,,
“” ওনি তোকে প্রপোজ করেছিলো। কিন্তু তুই এক্সেপ্ট করিস নি। যদি ভালো না বাসিস তাহলে একদিনে শরিরের এই হাল কেনো? মনে হচ্ছে সারা রাত ঘুমাস নি। কান্না করতে করতে চোখের পাতা গুলো ফুলে গেছে। সুমু তুই ভুলে যাস না একসাথে বড় হয়েছি। বন্ধু কম বোন হোস তোরা আমার। তাই বলছি প্লিজ আমার থেকে অন্তত লোকাস না। “””

সুমু ইয়ানাকে ধরে ফুপিয়ে কেদে উঠে,,,
“” তুই জানিস ইনু আমি ওনার যোগ্য নয়। আমি ভালো মেয়ে নয়। অন্য পুরুষের ছোয়া আছে আমার শরীরে। ওনি আমার মতো মেয়েকে ডিসার্ব করে না। আমার ভালোবাসা দিয়ে কি হবে ইনু। “”
ইয়ানা সুমুর চোখের পানি মুছে দিয়ে বলে,,,,
“” তুই নিজে ও জানিস ওইদিন ছেলেগুলো তোকে কিছু করতে পারে নি। তাহলে তুই কিভাবে কলঙ্কিত হলি। তুই কলঙ্কিত নয় খারাপ ছিলো ওইলোকগুলো। তাহলে ওদের অন্যায়ের সাস্তি তোরা কেনো ভোগ করবি।
রায়ান ভাইয়া খুব ভালো ছেলে সুমু। ওনি আহানের থেকে পুরো আলাদা। হতে পারে আহানের বন্ধু কিন্তু ওনি খুব ভালো একজন ছেলে। ওনি এখন হসপিটালে ভর্তি আছে। সুমু প্লিজ এইভাবে মুখ ফিরিয়ে নিস না। “””
হসপিটালের কথা শুনে সুমুর বুক ধুক করে উঠে। এরপর কাপাকাপা কন্ঠে বলে,,,,

“” হসপিটাল! কিন্তু ওনি হসপিটালে কেনো? কাল তো ওনি সম্পূর্ন সুস্থ ছিলো তাহলে??”
ইয়ানা একটা ঘভীর শ্বাস ফেলে সবটা খুলে বলে।
সুমু কান্না করতে করতে বলে,,,,,
“” সব আমার জন্য হয়েছে। প্লিস ইনু আমাকে ওইখানে নিয়ে চল। আমি ওনাকে এক নজর দেখতে চায়। ওনি খুব কষ্টে আছে। কাল ওনাকে আমি অনেক কষ্ট দিয়েছি।””
সুমুর অতিরিক্ত কান্নার ফলে নাক মুখ লাল হয়ে যায়।
ইয়ানা সুমুর দিকে তাকিয়ে বলে,,,
“” হায় এত ভালোবাসা। কান্না করতে করতে একদম গালমুখ টমেটো বানিয়ে ফেলেছিস। রায়ান ভাইয়া দেখলে তোকে টুপ করে খেয়ে ফেলবে। যা ফ্রেশ হয়ে আয়। তারপর আব্বু আম্মুকে কিছু একটা বলে বের হচ্ছি।””
সুমু ইয়ানার কথায় লজ্জায় পরে যায়। তাপর তারাতারি করে ওয়াশরুমে চলে যায় ফ্রেশ হওয়ার জন্য। এইদিকে ইয়ানা হাসতে হাসতে বিছানায় গড়াগড়ি খাচ্ছে। হঠাৎ করে হাসি থামিয়ে নিজের জীবন নিয়ে একটা তাচ্ছিল্য হাসি দেয়। কত দিন পর এইভাবে আসছে। এই দুই মাস তো হাসতেই ভুলে গিয়েছিলো।

হসপিটালের করিডরে দারিয়ে আছে সুমু আর ইয়ানা। ইয়ানা যেহেতু নিজেকে অন্য রুপে ডেকে রেখেছে তাই ইউভি আর রায়ান ইয়ানাকে চিনতে পারে নি। ইয়ানা তারা যখন হসপিটালে ডুকতে যাবে ঠিক তখনি আহান কালো মার্জিসিয়ান গাড়িটি নিয়ে হসপিটাল থেকে বের হয়।
রায়ান সুমুর দিকে একপলক তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নেয়।
সুমু রায়ানের দিকে তাকিয়ে ফুপিয়ে কেঁদে উঠে।
রায়ান ইউভির দিকে তাকিয়ে বলে,,,
” ইউভি তুই একজনকে বলে দে যাতে কান্না না করে। তার কান্না একজনের হৃদয়ে তীরের ফলার মতো বিদ্ধ হয়। সে তো আর ভালোবাসে না তাহলে কান্না করবে কেনো? ”
ইয়ানা এইবার বলে,,,,

“” আচ্ছা ইউভি ভাইয়া চলুন আমরা বাহিরে কফি খেয়ে আসি। কাবাব মে হাড্ডি হতে চায় না “”
ইয়ানার কন্ঠে শুনে ইউভি আর রায়ান চমকে উঠে। ইউভি ভয়ে একটা ঢুক গিলে বলে,,,,,
“” ই.. ইয়ানা তুমি ! ত.. তুমি এইখানে কেনো? আহান আসতে দিয়েছে তোমাকে?
ইয়ানা তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে বলে,,,,
“” না ভাইয়া ওনি জানেন না আমি এখানে এসেছি। ওনি তো আমাকে বনের পশুদের মতো বন্ধি করে ফেলেছেন। নিজের বাবা মা বন্ধু কারোর সাথে দেখা করতে পারবো না। কিন্তু আজ রায়ান ভাইয়া আর সুমুর খবরটা পেয়ে নিজেকে আটকাতে পারলাম না। কিন্তু চিন্তা করবেন না ওনি জানতে পারবে না। “”
ইয়ানার ওই আত্নবিশ্বস দেখে রায়ান ফুস করে একটা শ্বাস ছেড়ে বলে,,,,
” ও অগ্নি চৌধুরি এইটা ভুলে যেও না। সত্রুদের উপর ওর চোখ বাজ পাখির ন্যায় নিবিদ্ধ। আর সেখানে তুমি ওর জীবন তোমার খবর জানবে না এইটা ভাবলে কিভাবে? তুমি জানো না সত্রুরা যদি জানতে পারতো তুমি তাহলে ওরা কি করতো কে জানে। ভাগ্য ভালো কিছু হয় নি। “”
ইয়ানা মুচকি হাসি দিয়ে বলে,,,,

” কি করতো মেরে ফেলতো। আর এখন কি বেঁচে আছি নাকি? অন্তত অগ্নি চৌধুরির হিংস্র রাজত্যে থেকে মুক্তি পেতাম। আর আপনারা চিন্তা করবেন না আমার কিছু হবে না। ”
রায়ান কিছু বলতে যাবে তার আগেই ইয়ানা ইউভিকে নিয়ে কেবিন থেকে বের হয়ে পড়ে।
সুমু রায়ানের পাশে বসে কাপাকাপা হাতে রায়ানের হাতটা নিজের হাতের মুঠো করে ফুপিয়ে কেঁদে উঠে। রায়ান সুমুর স্পর্শ পেতেই আবেগে নিজের চোখ দুটি বন্ধ করে নেয়। অনেক সময় নিরবতা কাটিয়ে রায়ান বলে,,,,
“” তুমি তো আমাকে ভালোবাসো না তাহলে কেনো এসেছো এখানে? “”
রায়ানের কথার উত্তর না দিয়ে হাতের কেন্ডেল গুলোকে ছুয়ে দিয়ে বলে,,,,
“” কি করেছেন নিজের? এত বড় হয়েছেন এখনো বাচ্চামো গেলো না। সে নাকি আবার দেশের সিনিয়র গোয়ান্দা অফিসার আরসানাল রায়ান। যে নিজেকেই ঠিক রাখতে পারে না। “”
রায়ান ইনোসেন্ট ফেইস নিয়ে বলে,,,,

“” কি করবো যাকে বউ বানাতে চেয়েছিলাম সে আমাকে ভালোবাসে না। “”
সুমু রায়ানের দিকে রাগী দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলে,,,
“” সে যদি ভালো না বাসতো তাহলে কি আজ দেখতে আসতো। নাকি তার জন্য সারারাত কান্না করতো। মানুষ প্রেমে পড়লে নাকি কবি হয়। কিন্ত আপনি তো দেবদাস হয়ে হসপিটালের করিডরে পড়ে আছেন। “””
রায়ান সুমুর দিকে তাকিয়ে আস্চর্য হয়ে বলে,,,
“” তার মানে তুমি ও আমাকে ভালোবাসো? আমার জন্য কান্না ও করেছো ! চিন্তা করিও না বিয়ের পর এমনি কবি হয়ে যাবো।””
সুমু রায়ানের পাগলামি দেখে গম্ভির হয়ে বলে,,,,

“” কিন্ত রায়ান আমার অনেক বড় একটা সত্যি আছে। যা আপনাকে জানতে হবে “”
রায়ান সুমুর হাত ধরে বলে,,,
“” যদি সেই কথাটা তোমার চোখের পানির কারন হয় তাহলে জানতে চায় না।
সুমু একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে,,,,

অনুভবে তুমি পর্ব ২৩

“” জানতে হবে রায়ান। কে আমি? কি আমার পরিচয় আর আমি কেনো ইয়ানাদের সাথে থাকি? আমার পরিবার কোথায়? কারন সম্পর্ক সৃষ্টির আগে অপর পক্ষের সব কিছু জেনে নেওয়া ভালো। “”
রায়ান :: ঠিক আছে তুমি যদি বলতে চাও তাহলে বলো।
সুমু পুনরাবৃত করলো সেই অন্ধকার অতীতের যাকে পিছনে ফেলে নতুন করে বাচতে শুরু করেছে।

অনুভবে তুমি পর্ব ২৫