প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ১৬
Zannat Xhowdury
ঘোর লাগানো দৃষ্টিতেই ধীর পায়ে রোজার সামনে এসে দাড়ালো নির্ণয় । এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে শুষ্ক ঢোক গিলছে সে !
ও নির্ণয় ভাই ,
রোজা নির্ণয়ের কোনো সাড়া না পেয়ে বেশ বিরক্ত হলো । একে তো নিয়ে এসেছে শাড়ি । যা সে জিবনে পড়ে নাই , কই তাকে শাড়ি
পড়তে সাহায্য করবে । তা না করে এই লোক কিনা ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছে । কন্ঠে খানিকটা বিরক্তি নিয়ে আবারো ডাকতে লাগলো রোজা।
ও নির্ণয় ভাই , শুনছেন আপনি ?
না এবারেও যেন কোন কথা বলছে না সে , রোজার বিরক্তির চরমে পৌঁছে নির্ণয়ের হাত ধরে ঝাকি দিতেই দৃষ্টি ফেরালো নির্ণয়।
ভ্রু জোড়া কুঁচকে তাকালো রোজার পানে ।
এই ভাবে অর্ধেক শরীর বের করে ঠায় দাঁড়িয়ে আছিস কেন ?
কি করবো শাড়ি পড়তে পাড়ি না তো !
কেন ?
কেন মানে কি নির্ণয় ভাই ?
কেন মানে Why !
রোজা থতমত খেয়ে কেবলার মতো তাকিয়ে রইলো নির্ণয়ের পানে। তা খেয়াল করেই নির্ণয় নিজের ডান ভ্রু নাচিয়ে কি হয়েছে বুঝাইতে মুখ খুললো রোজা ।
আমি তো জানতাম why মানে কেন ? এখন তো দেখছি কেন মানে why !
তোর ফাকা মাথায় এতো প্রেশার দিস না তো । এখন সমস্যা কি এটা বল ?
ওয়েট ওয়েট , বাই এনি চান্স তুই কি আমাকে শাড়ি পড়িয়ে দিতে বলেছিস ।
রোজা ঠোট উল্টিয়ে বাচ্চাদের মতো বলতে লাগলো ।
দেন না নির্ণয় ভাই ! আমি তো পারছি না ।
তোকে নিয়ে আর পাড়ি না ।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
নির্ণয় বেড থেকে শাড়ি হাতে নিয়ে রোজা কে পড়াতে লাগলো । শখের পুরুষের ঠান্ডা হাতের স্পর্শে বার বার কেপে উঠছে সবে আঠারো যে পা দেওয়া লাস্যময়ী মেয়েটি । প্রণয়ের প্রথম পুরুষের ছোঁয়া যেন হৃদয় গহীনে ভালোবাসা সুপ্ত ফুল হয়ে ফুটে উঠেছে তার । তা কি আজ নতুন ? না একদমই নয় এই অনুভুতির জোয়ারে সে ভেসেছে আরো আগে । তা এই পুরুষের জানার কথা নয় ।
কুচি তুলে , রোজার নাভির নিচে গুজে দিয়ে গেলেই কাপতে শুরু করে রোজা । পুরো শরীর অবস হওয়ার উপক্রম তার নির্ণয়ের বুকেও যে ঝড় উঠেছে । তার পিচ্চি বউ যে এতো বড় হয়েছে তা সে বুঝতেই পারে নি ।
কুঁচির শেষ অংশ গুজে দিতেই চোখ মুখ খিচে নির্ণয়ের হাত খামচে ধরে রোজা নির্ণয় বুঝতে পারলো রোজার অনুভুতি । রোজার কাছ থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে আলতো হাতে বুকে জড়িয়ে নিলো তাকে । এখনো কাঁপছে মেয়েটা নির্ণয় রোজার পানে তাকিয়ে মুচকি হেসে ডাকলো ..
রোজ পাখি !
হুঁম ।
কাপা কাপা কন্ঠে উত্তর দিলো রোজা আরো শক্ত করে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে মুখ লুকালো নির্ণয়ের বুকে । নির্ণয়ের অনুভব করলো মেয়েটার উত্তেজনা । তবে এখন ভুল কিছু করা যাবেনা , ভেবে নিজেকে কন্ট্রোল করে নিলো ।
পকেট থেকে কালো রঙ্গের রুমাল বের করে হাতে নিলো সে । আবারো আলতো হাতে বুক থেকে রোজা মুখ তুলে দাড় করালো তার সামনে । উল্টৌ ঘুরিয়ে দিয়ে মুখ ডুবালো রোজা হাটু ছুঁই ছুঁই চুল গুলোতে । বেশ মিষ্টি একটা সুভাস আসছে সেখান থেকে নির্ণয় বেশ বড় একটা নিঃশ্বাস টেনে নিলো
অ্যালকোহল !
কিছু বললেন নির্ণয় ভাই ?
আমাদের যেতে হবে যে পাখি !
কোথায় ?
নির্ণয় কোন উত্তর না দিয়েই , হাতে থাকা কালো রুমাল দিয়ে চোখ বেঁধে দিলো রোজা ।
একি নির্ণয় ভা…..
হুসসসস।
কথা শুনে করার আগেই রোজা পিংক কালারের ঠোঁটে উপর হাত রেখে থামিয়ে দিলো সে ।
জাস্ট ফলো মি ডিয়ার !
রোজা আর কোনো কথা না বলেই পা মেলালো নির্ণয়ের সাথে
রাত ১০টা ছুঁই ছুঁই
বিচের পাশেই পার্টিতে উপস্থিত সকলের । পার্টির থিম দেওয়া হয়েছে সাদা রঙ । ডেকোরেশন পুরোটাই সাদাতেই করার হয়েছে । সকলের পড়নে সাদা ড্রেস । সকলের চোখ জোড়া খুজছে পার্টির বিশেষ ব্যাক্তিটির জন্য । তার অপেক্ষাতেই রয়েছে সকলে
সাদা রঙের চুরিদার পড়ে পার্টির একপাশে দাঁড়িয়ে আছে রিধিমা । অপূর্ব সুন্দরী লাগছে তাকে । সাদা চুরিদারে যেন পরি লাগছে তাকে । সবে পিঠে পড়া চুল গুলো অযত্নে ছড়িয়ে রয়েছে সারা পিঠ জুরে । মাঝেমধ্যে বেশ কয়েকটি চুল এসে অবস্থান করছে তার মুখে যা বেশ বিরক্ত হই নিয়েই বার বার সরিয়ে দিচ্ছে সে ।
মুগ্ধ দৃষ্টিতে তার পানে তাকিয়ে তাকে পর্যবেক্ষণ করছে দুটি চোখ ।
কে তুমি?
অপরূপা, লাবণ্যময়ী, হাস্যজ্জল প্রেমদেবী;
আমি হারিয়ে যাই তোমার অন্তরনীলে।
চোখ বলে – আরো দেখি
ভিতর বাহির, অন্তর নদী।
নাক বলে – গন্ধ বুঝি
অন্ধলোকের সার গন্ধ
যেটুকু পাই সবটাই চাই।
মুখ বলে – কিছু বলি
ভাল লাগার কথার ঝুরি।
জিহ্বা বলে – স্বাদ নেবোগো
যা আছে সব চেটে পুটে
অনুভুতিগুলো লুটে নেবো।
কান বলে – কিছু শুনি
সুরেলা কন্ঠে কথার মালা।
বুক বলে – জড়িয়ে রাখি
আদর করে খুব যতনে।
মন বলে – কাছে টানি
অন্তর মাঝে গহীন লোকে।
হৃদয় বলে – ভালবাসি
ভালবাসি, ভালবাসি খুব বেশি।
হাত বলে – ছুঁয়ে দেখি
ধরে রাখি হাত দুটি শক্ত করে
সারাটি জীবণ নিজের করে।
পা বলে – কাছে যাই
আরো কাছে, খুব কাছে
তোমার ওই অন্তরনীলে ॥
মুগ্ধতা, আবেগ মিশ্রিত কথা গুলো কানে আসতেই পিছনে ফিরে তাকালো রধিমা ।
বাহ আপনি কবিতাও পারেন ।
মুসকি হাসলো আয়ান । এখনো রিধিমার পানেই দৃষ্টি স্থীর তার ।
কি হলো ?
কিছু না । অপূর্ব সুন্দর লাগছে আপনাকে ?
বেশ লজ্জা পেলো রিধিমা গাল দুটো ব্লাস করছে তার । তা দেখ হো হো করে হেসে উঠলো আয়ান । এবার যে ভ্রু জোড়া কুঁচকে নিলো রিধিমা ।
একি প্রসংসা করে হাসছেন কেন ।
প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ১৫
আয়ানের উত্তরে আগেই । রিধিমা করলো নির্ণয় রোজ কে পার্টতে এগিয়ে আসছে । চোখে কালো রুমাল বাধা এটা প্লান করেই রাখা হয়েছিলো । রিধিমা আয়ানের উত্তরের ছুটে এলো রোজার দিকে। নির্ণয় রোজাকে পার্টি এনে দাঁড় করাতেই লাইট অফ হয় গেলো ।
কোথায় এলাম আমরা নির্ণয় ভাই ?
এসে গেছি !
চুপচাপ দাড়াতো রোজ ।