প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ২২ (২)
Zannat Xhowdury
ভ্যাঁপসা গরমে বিরক্ত পুরো ধরনী । যেমন রোদ তার তেমনি গরম সাথে যোগ হয়েছে ধুলো সদ্ধিবাধ । বাংলাদেশে বৈশাখের শুরুতেই বেশ কড়া রোদের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে । এই রোদ মাথায় নিয়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নির্ণয়ের বাগান বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে বেশ বড় একটা দল ।
কালো রঙের দুটো মার্সিডিজ গাড়ি ছুটে চলেছে নিজ গন্তব্যে উদ্দেশ্য । প্রথম গাড়িতে রিধিমা , তৃধা , আয়ান , অপূর্ব । তাদের থেকে মাত্র কয়েক সেন্টিমিটার দূরে ছুটে আসছে অপর গাড়িটি । পেছনের বে রয়েছে সিটে নির্ণয় চৌধুরী , যার কোলের উপর ল্যাপটপ রাখা আর দৃষ্টি যেন তাতেই স্থির । নিজের প্রয়োজনীয় কাজেই ব্যস্ত সে ।
অপরদিকে ড্রাইভিং সিটের ঠিক পাশের সিটে বসে হাসফাস করছে রিয়ান । মনে হাজারো প্রশ্ন জিলাপীর মতো পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে মোচড় মারছে তার পেটে । পেট ফেটে বেড়িয়ে আসতে চাইছে ,
তবে এই ছোট্ট বুকে এতো সাহস যে কুলোচ্ছে না তার ।
নিজের মনের সাথে বেশ রসিয়ে যুদ্ধে নেমেছে সে । মনে চলছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই , একবার ভাবছে প্রশ্ন করবে ভাইকে , পরমুহূর্তেই যেন সিন্ধান্তে পালটি দিয়েছে সে । নির্ণয় চৌধুরী কে প্রশ্ন করা মানে যেতে নিজেকে কুয়োতে ফেলা । যা এখন মোটেও চাইছে না রিয়ান । পেটে গুড়গুড় করতে থাকা প্রশ্নের ঝুড়ি কে বেশ আলতো হাতে ছুয়ে দিয়েছে সে ।
কিছু বলবি ?
নির্ণয়ের ছোট এই প্রশ্নেই যেন মনে কিছুটা সাহসের সঞ্চার হয় তার। বড় এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিজেকে স্থির করে নেয় সে ,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
– আ আসলে ভাই আমরা যাচ্ছি টা কোথায়?
– বাগান বাড়ি ।
– ইয়ো, ওই ধুলো চিটচিটে গ্রামে , ছিঃ ভাই ।
– এমন ভাব ধরেছিস জেনো গ্রামে মানুষ থাকেনা সব গরু ছাগল। থাকে ।
কিন্তু বাসায় না গিয়ে এখন আমরা বাগান বাড়ি যাচ্ছি টা কেন যাচ্ছি টা কেন ?
তুই যতটা মাথা মোটা , তোর বোন ঠিক ততটাই চালাক ।
-দেখো ভাই তুই এইভাবে আমাকে অপমান করতে পারো না ।
সিরিয়াসলি মান অপমান বলে কিছু আছে তোর জিবনে। তোরে বলেছিলাম আমার বউয়ের খেয়াল রাখতে নজরে রাখতে অথচ তোর চোখের আড়ালে আমার বউ গোয়েন্দা হয়েছে কিভাবে ?
তুমি কি বলছো আমি সত্যি কিছু বুঝতে পাড়ি না ভাই ।
বলেছি তোর বাপের আবার বিয়ে করাবো !
ছিঃ ভাই এখন তো আমাদের বিয়ের করার বয়স , কোথায় এখন আমার বিয়ের ডিসকাশন করবে তুমি , তা না শশুরে হাঙ্গা দিতে চাইছো তুমি ।
তোর বিড়ালের পুটকির মতো চেহারা নিয়ে বিয়ের স্বপ্ন দেখছিস শালা , তোর মেশিনে ঠাডা পুরুক ভস্ম হয়ে যাক তোর জুলে থাকা আলু। নিভে যাক তোর বংশে বাতি । আমার বউ ভাগিয়ে নিজে বউ বউ করছিস তোর বউকে অন্য কারো বউ বানাবো আমি ।
আমার বউ আবার কোথায় পেলে তুমি ?
কি ভেবেছিস তৃধার প্রেমে তুমি প্যান্ট ভিজাচ্ছো, ক্যালরি খরচ করছো , এইসব কি আমার চোখের অগোচরে হচ্ছে ।
তবে আমার বউ না পেলে তোর বিয়ে তো দূর তোর বউ তোর না হয়ে অন্য কারো হবে , তারপর দুজনে মাল খেয়ে গান গাইবো
মাতাল হয়ে হিসু করবো দেয়ালে ,
শালা যা হবে ,দেখা যাবে কাল সকালে
হেই মাতাল হয়ে হিসু করবো দেয়ালে ,
যা হবে দেখা যাবে কাল সকালে !
চোখ দুটো এক একটা রসগোল্লার মতো করে বিস্ময়ের চেহারায় নির্ণয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে রিয়ান । এসব কি ঠিক শুনছে না স্বপ্ন দেখছে নির্ণয় ভাই এইসব বলতে । শরীরে বেশ জোরে করে এক চিমটি কাটে রিয়ান ।
উঃ লেগেছে তার মানে সব সত্যি ভাই বলেছে এইসব ।
হ্যা যে আমি বলেছি , চিমটি কাটতে হবে আমাকে বললেই তো কেটে দিতাম । সে যাই হো এখন আমার বউকে আনার ব্যবস্থা কর নাহলে তোর বউকে অন্য কারো সাথে বাসর করাবো । আমার বউ চাই আমার ।
বিশ্বাস করো ভাই , আমি সত্যি জানি না রোজা কই ?
কোলে থাকা ল্যাপটপ রিয়ানের দিকে এগিয়ে বেক সিটে গা এলিয়ে দেয় নির্ণয় লোকেশন ।
তার মানে ভাই , তুমি এতোক্ষণ লোকেশন ট্র্যাকিং করছিলো।
ইউ আর আ জিনিয়াস ভাই । রিয়েলি জিনিয়াস !
আমার বউকে জলদি আনার ব্যবস্থা কর !
আমি এখনি লোকেশনে আমাদের লোক পাঠাচ্ছি ভাই ওকে তুলে আনতে ।
বাঁকা হাসে নির্ণয় ।রহস্য ঘেরা সে হাসি যা দু ঠোট গলিয়ে বাহিরে পেয়ে যাবে তার ছিটে ফোটা ও দেখা মেল না দু ঠোটের মাঝে আটকে রয়েছে।
গ্রীষ্মের দুপুর কড়া রোদের সাথে এই বিরক্তকর জ্যাম দুটোই যেন বাঁশ হয়ে জীবনে আসে । চোখে মুখে একরাশ বিরক্তি নিয়ে প্রায় আধাঘণ্টা ধরে জ্যামে ধৈর্য্যের পরীক্ষা দিচ্ছে রোজা।
একচুলও এগোবার উপায়ান্তর নেই । সামনে কি হয়েছে ভিরের মাঝে বুঝে উঠতে পারছে না সে । ক্লান্তি ও যেন ভর করেছে পুরো শরীরে অপরদিকে সূর্য মামা ও যেন ঠিক মাথার উপরে তার জলন্ত কিরণে শরীরে আগুন ধরাতে ব্যস্ত ।
হেলমেটের কাচ উঁচু করে হাতের সাহায্যে মুখের ঘাম মুছে নেয় রোজা, আকাশের দিকে তাকিয়ে সূর্যের অবস্থান নির্ণয় করে রাগান্বিত স্বরে বলে ,
উফ ! সূর্য মামা, মামির সাথে ঝগড়া করে এতো তাপ না দিলেই কি হচ্ছিল না তোমার । পুরো শরীরে যেন কারেন্ট ধরিয়ে দিয়েছো তুমি। তার মাঝেই এই অসহ্য জ্যাম , জ্বালিয়ে মারলো ।
আরো কিছুটা সময় অপেক্ষা করে রোজা , তবে ধৈর্য্য জেনো কুলিয়ে উঠছে না । সামনে কি হয়েছে দেখতেই মাথা থেকে হেলমেট খুলে
লম্বা চুলগুলো আজ বেনুনিতে প্যাঁচানো , যা হেলমেট খুলতেই কোমর পেড়িয়ে হাঁটুতে ঠেকে । বাইক থেকে নেমে সামনে দিকে এগোতে থাকে রোজা । তবে এতে ভিরের মাঝে নির্দিষ্ট স্থানে পৌছাতে বেশ ক্ষানিক সময় লেগেছে তার ।
তবে সামনের দিকে তাকাতেই চোখে মুখে আগুন জ্বলে উঠে তার রাগ যেন রিরি করে ছড়িয়ে পড়ে শিরায় উপশিরায় । নিজেকে শান্ত করতেই হাত মুষ্টিবদ্ধ করে সে ।
রাস্তায় বেশ কিছু জায়গায় লেগে আছে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ , তার পাশেই পড়ে রয়েছে একজন বৃদ্ধ লোক । যার মাথা থেকে অনাবরত রক্ত পড়ছে।
তার ঠিক কিছু দূরেই একটা সাদা গাড়ি দাঁড়ানো যেখানে কয়েক জন ছেলে দাঁড়িয়ে তাস খেলায় ব্যস্ত । ছেলেগুলোর পা ও কাছে নতজানু হয়ে বসে একজন বৃদ্ধা , বার বার আকুতি কন্ঠে বলছে
আল্লাহর দোহাই লাগে আব্বা , আমার সৌয়ামি রে তোমরা বাঁচতে দেও আব্বা , আমার সোয়ামি রে হাসপাতালে লইতে হইবো , হের মাথা থেইকা মেলা রক্ত ঝরছে ।
ও বাবা আমারে যাইতে দেও পা ধরি ।
ভেজা কন্ঠে কিছুটা থেমে যায় বৃদ্ধা , রাস্তায় এতো মানুষ তবে তাদের সাহায্য করার কেউ নেই । সকলেই যেন দাঁড়িয়ে মজা দেখতেই ব্যস্ত।
তামাগো দুইডা পায়ে ধরি আমাগো যাইতে দেও । কেউ তো সাহায্য ভিক্ষা দেও ।
বৃদ্ধার কোন কথাই যেন কানে ঢুকছে না ছেলেগুলোর , নিজেদের কাজেই অন্য তারা । উপায়ান্তর না পেয়ে বসা ছেড়েউঠে দাঁড়ালো বৃদ্ধা ।ছেড়া শাড়ির আঁচল পেতে সকলের কাছেই সাহায্যে অনুনয় করতে লাগলো বৃদ্ধা।
এতোজন দাড়িয়ে তবে একজন মানুষকে সাহায্য করতে কেউ এগিয়ে আসছে না এরা কি মানুষ , শালা সব কয়টা কে গুলি করে মারতে পারলে ভালো লাগতো । রাগে ফুঁসছে রোজা নিজেকে শান্ত করতে অপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে উঠেছে সে তবে ….
না হচ্ছে না , পারছে না নিজেকে থামতে ।
পকেট হাতরে দুটো রুমাল টেনে বের করে সে ,একটি দিয়ে খুব সুন্দর করে পুরো মুখ ঢেকে নেয় । অপরটি পেঁচিয়ে নেয় হাতে , সামনে এগোনোর আগেই শাড়ির আঁচল পাতানো হাতে বৃদ্ধা এসে দাঁড়ায় রোজার সামনে। ,
মারে আমায় একটুখানি সাহায্য কর মা আমার সোয়ামি রে সাহায্য কর মা ।
পাতানো আচালেই নিজের হাত এগিয়ে দেয় রোজা । ভেজা চোখ জোড়া যেন চকচক করে উঠে বৃদ্ধার ।
ভীর ছেড়ে সামনে এগিয়ে যায় রোজা, হাঁটু ভাঁজ করে বসে মাটিতে লুটিয়ে থাকা বৃদ্ধার পাশে ,হাত ছুঁয়ে দিতে যায় কপালে তবে তার আগেই কেউ যেন আটকে দিয়েছে তার হাত ।
হাতের মালিক খুঁজতেই উপরে দিকে তাকায় সে শ্যামবর্ণে এক ছেলে মুখ ভর্তি খোচা খোচা দাড়ি , মাথায় ঝাঁকড়া চুল । এক ঝটকায় নিজের হাত ছাড়িয়ে নেয় রোজা । হাত ঝড়তে ঝাড়তে দাড়ায় , এমন ভাবে পরিষ্কার করতে থাকে যে কোনো আবর্জনা লেগেছে তার হাতে
কে রে বাল তুই , দেখছিস না কেউ সাহায্য করছে না । কোথাকার বেগম রোকেয়া হয়ে এলি সাহায্য করতে ?
তা আমি না হয় বেগম রোকেয়া তুই কোন ক্ষেতের মুলা ?
আমরা চেয়ারম্যানের লোক !
আই সি ; তো ওনাকে কে মেরেছে ?
আম… কথা শেষ করার আগেই শক্ত এক ঘুসিতেই ছিটকে কয়েক সেন্টিমিটার দূরে ছিটকে পড়ে ছেলেটি। ঘটনা এতো দ্রুত হওয়ায় হতবাক সকলে।ভরকে যায় বাকি ছেলেগুলো । কারো দিকে না তাকিয়ে ছিটকে পড়া ছেলের দিকে এগিয়ে যায় রোজা , হালকা ঝুকে আবারো জিজ্ঞেস করে
কি হলো বল কে মেরেছে ?
শা… এবারো ঝড়ের বেগে জোড়ে এক থাপ্পর এসে পড়ে ছেলেটির গালে। গালে হাত দিয়ে বুঝতে চাইছে আসলে হলোটা কি ? কেটে গেলো বেশ কিছু সময় , এবার যে হুস ফিরলো বাকি ছেলেগুলো । সকলে ছুটে এসে দাঁড়ায় পড়ে থাকা ছেলেটির পাশে সজা হয়ে দাঁড়ায় রোজা ! শান্ত দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করে সব কয়টা কে । ছেলেগুলোর মাঝে বেশ মোটা নাদুসনুদুস , লাইক টেডিবিয়ার টাইপ একটা ছেলে রয়েছে ।
রোজা কিছুটা হেটে হাত রাখে ছেলেটির কাঁধে , সকলে যেন এবার অবাকের চরম সীমানায় পৌঁছে গেছে , এমন টা হয়তো কারো কল্পনায় ছিলো না । হাটে সামনে আগাতে থাকে দুজনেই,
নাম কি ?
প্রশ্নের উত্তর না পেয়ে যেন বিরক্ত রোজা । হাতের উল্টো পিঠের সাহায্যে এক থাপ্পর বসিয়ে দেয় ছেলেটির গালে । গালে হাত বিস্ময়ের চোখে রোজার মুখের দিকে তাকায় ছেলেটির। আসলো ঘটনা কি ঘটলো বুঝতে বেশ দেরি হলো তার
কাহিনী মস্তিষ্কে প্রসেসিং হতেই ক্ষিপ্ত চোখে তাকায় রোজার চোখে
এই মেয়ে আমাকে মারলে কেন?
নাম কি ?
বাকেট মন্ডল !
ভ্রু কুঁচকে নেয় রোজা , কিসের বাকেট তুই টিউবওয়েলের নাকি অন্য কিছুর ।
নিশ্চুপ ছেলেটি ।
আবারো এক থাপ্পর পরে ছেলেটির গালে , অপর হাতে আবারো পাশের গাল চেপে ধরে ছেলেটি। নাটকীয় ভঙ্গি করে রোজা বলে ,
শোন বাকেট , তোরে যদি আমি এমনে মারি তাহলে কি তোর খুব লাগবে ?
উপর নিচ মাথা ঝাঁকায় বাকেট , মানে তার খুব লাগবে ।
উত্তরে বেশ খুশি হয় রোজা , তাহলে একটা কাজ কর মার খাইতে না চাইলে ওই বৃদ্ধা দুটোকে এখনি হাসপাতালে দিয়ে আর যদি কথার নরচর হ….
কথা শেষ করার আগেই বাকেট উধাও , হো হো করে হেসে উঠে রোজা । কিছুক্ষণে মধ্যে গাড়ি নিয়ে হাজির বাকেট, বৃদ্ধা কে গাড়িতে উঠিয়ে গাড়ি ছাড়বে এমন সময় গাড়ির সামনে বাকি দুজন এসে হাজির । রোজার অগ্নি চোখে তাকায় দুজনের দিকে তবে তাতেও যেন কোন নড়চড় নেই ওদের । সামনে তাকিয়ে শুষ্ক ঢোক গিলে বাকেট ।
আরে আরে ব্রাদার্স ওদের যেতে দে তোরা , যা কথা আমার সাথে বল ।
তুই কে বে , মা*
তোর আম্মা বলেই হেংলা পাতলা ছেলেটির বুক বড়াবড় সজোরে এক লাথি মারে রোজা বেশ কিছু দূরে ছিটকে পড়ে ছেলেটি । অপর ছেলেটির এগি আস্তে নিলেই তা ঠিক নাক বরাবর এক পাঞ্চ করে । দুজনের ই যখন রাস্তায় পরে এলোপাথাড়ি ঘুসি দিয়ে কারো নাক , মুখ থেতলে দেয় রোজা , ওদিকে বাকেট অনেক আগেই বেড়িয়ে গেছে বৃদ্ধা মহিলা ও তার স্বামী কে নিয়ে ।
বেশ কিছুক্ষণ ক্ষণ পড়ে ছেলেগুলোকে ছেড়ে দেয় রোজা , হাত বেশ কেটে গিয়েছে তার । ক্ষত স্থান থেকে রক্ত ঝরছে ,
আর কখনো যদি কোন সাধারণ মানুষের ক্ষতি করতে দেখি আজকে মেরেছে এর পর পুরুষত্ব হারাতে হবে ।
কথা বলতেই কাশি উঠে রোজার, একে তো এই গরম তার মাঝে এত ঝামেলা গলা শুকিয়ে কাঠ হয়েছে ।
আপা এই যে পানিডা লন , কাশি কইমা যাইবো ।
হাতের কাছে এক বোতল পানি পেতেই ছো মেরে নেয় রোজা , এক মোচরে খুলে বোতলের ছিপি , ঢকঢক করে পুরো বোতলটা খালি করে সে ।
যাক এবার শান্তি লাগছে , তবে পানি কে দিয়েছে খুঁজতে সামনে পড়ে বাচ্চা একটি ছেলে , গায়ের রং বেশ সাদা , তবে অযত্নেই তা ঢাকা পড়েছে । চোখ দুটো বেশ টানা টানা , হাফ প্যান্ট সাথে একটা সেন্ডো গেন্জি ।
তুই পানি দিয়েছিস ?
হো আপা আপনের কেমন কাশ উঠছিল , হের লাইগা তো বোতল খানা দিলাম ।
তা নাম কি তোর ?
পাপ্পু ।
কোন ক্লাসে পড়িস?
পড়ি না তো !
কেন ?
এইযে কাম করি নাইলে খামু কেমনে ।
তোর বাপ মা কেউ নাই !
বাপে আমারে আর মারে ফালাইয়া আরেক বেডিয়ে বিয়া করছে । হের পরে মা আমারে লইয়া বস্তিতে থাকতো তয় কিছুদিন আগে আম্মায় মইরা যায় । তাই এইযযে এহন কাম কইরা খাই ,
অসম্ভব সুন্দর একটি মুখ , কি মায়াবী তাঁর চোখ এমন বাচ্চা ফেলেও তার বাপ যেতে পারে ভেবে বুকটা হাহাকার করে উঠে রোজার ।
তয় এহন আমি যাই আফা , মাল বেইচা মহাজনরে টাকা দিতে হইবো ।
তোর পানির দাম নিবি না ?
লাগবো না আফা , আপনারে আমি খুশি হইয়া দিছি আফা ।
ভ্রু জোড়া কুঁচকে আসে রোজা এক ভ্রু নাচিয়ে প্রশ্ন করে সে
তা তোর খুশির কারণ কি ।
ছেলেটি হাসি মুখে সহসাই হাতে আঙ্গুল উঁচিয়ে দেখায় মাটিতে পড়ে কাতরানো ছেলেগুলোর দিকে ।ও
এরা পুরো এলাকার মানুষরে খুব জ্বালায় , একদিন জোর কইরা আমার কাছ থেকে পানি নিচ্ছিলো তয় কোনো দাম দেয় নাই ।
মুসকি হাসে রোজা , হাতে রাখে ছেলেটির মাথায় ।
– তুই যাবি আমার সাথে ?
না না মহাজনের টাকা দিতে হইবো !
– তোর মহাজনের টাকা আমি দিয়া দিবো । আমার লগে যাবি ,
অবাক চোখে তাকায় ছেলেটির , চোখে অবিশ্বাস ।
আপনে সত্যি কইতাছে আমারে লইয়া যাবেন
প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ২২
– হ্যা ।
আজ থেকে আমার লগে থাকবি তুই।
সত্যি আফা ?
তিন সত্যি ,