প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ২৪ (২)

প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ২৪ (২)
Zannat Xhowdury

ভালোবাসি নির্ণয় ভাই!
আবারো ছলনা.. হো হো করে হেসে উঠলো নির্ণয় , হাসির মাঝেই বুকে চাঁপা কষ্টগুলো যেন বুকে ঠিক মাঝ বরাবর গিয়ে জমা হয়েছে । হেচকা টানেই সামনে এনে জানালার গ্রিলে শক্ত করে চেপে ধরে রোজাকে । কিছুটা হকচকিয়ে আবারো নিজেকে সামলে নেয় রোজা । দৃষ্টি মেলায় ক্ষিপ্ত চোখ জোড়ায় , যে চোখে কিছুসময় পূর্বের এই নারীর জন্য ছিলো হাজারো ব্যাকুলতা। শক্ত হাতের থাবায় গলা চেপে ধরতেই চোখের কোণে পানি এসে জমা হয় তার , নিজেকে শান্ত করার প্রয়াসে ঘন ঘন শ্বাস ছাড়ছে নির্ণয় ।
কি ভেবেছিস আমার থেকে পালিয়ে যাবি !

দম আটকে আসছে রোজার চোখ জোড়া ও লাল‌ হতে শুরু করছে।পরাণ পাখি এবুঝি যায় যায় । রোজা হাত পা ছুড়ে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করেও‌ ব্যর্থ সে ।ধীরে ধীরে নিভতে থাকে মেলে থাকা সাদা মনির চোখ জোড়া ।
“কি হলো এই , মুখ খুল !
আমি ম মা মরে যাচ্ছি নির্ণয় ভাই
ভাঙ্গা ভাঙ্গা কন্ঠের এক লাইনের এই কথাতেই আলগা হয় হাতের বাঁধন , বুকে মাঝে ধুক করে উঠে নির্ণয়ের, হাতের বাঁধন আলগা হতেই কাশতে থাকে রোজা । এতক্ষণের যায় যায় প্রাণটায় একটু আশার আলো ফিরে পায় ,বড় নিঃশ্বাস নিয়েও লাভ হচ্ছে না।
চিকচিক করতে থাকা চোখ জোড়াই হয়তো বর্তমান অবস্থা বুঝাইতে সক্ষম। গলায় হাত রেখে অনাবরত কাশতে থাকে সে ।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“লেগেছে পাখি , দেখি কোথায় লেগেছে ।
ব্যস্ত হাতে গলা থাকা রোজার হাত সরাতে নিলে খেপে ওঠে রোজা , এতক্ষণ শান্ত মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন যেন মূহুর্তে বেড়ে চলছে । খপ করে ধরে ফেলে নির্ণয়ের হাত ,এক ঝটকায় দুরের সরিয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করতে আবারো ব্যস্ত সে ।
আপনি স্বাভাবিক নন‌ আপনি একজন সাইকো নির্ণয় ..!
মূহুর্তে নির্ণয়ের পৈশাচিক সত্বা ফিরিয়ে আনে রোজার উচ্চারিত একটি
শব্দ “সাইকো ” তেড়ে গিয়ে এবার গলা নয় দু আঙুলে চেপে ধরে রোজার গাল।
দাঁতে দাঁত খিচে বলতে লাগে
এই শালি এই , তোর মারে সালাম শালি ।
খুব কথা ফুটেছে তাইনা , তোর মুখে গু পুরুক শালি ।
উমম;

হাতের সাহায্যে নির্ণয়ের হাত ছাড়ানোর যথেষ্ট চেষ্টা করছে রোজা । তবে কোনো ভাবেই না পেয়ে শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে যায় সে।
“লাগছে খুব ব্যাথা লাগছে তাইনা ..!
আমার‌ও লেগেছে ভীষণ লেগেছে ঠিক এইখানটায় লেগেছে ।
রোজার গাল ছেড়ে আঙ্গুলের সাহায্যে বা পাশে বুকে হার্ট বরাবর দেখিয়ে দেয়। কিছুক্ষণ থেমে অনুভুতি পানিতে ফেলে আবারো সেই একই রূপে গাল চেপে ধরে রোজার , চোখে মুখে হিংস্রতা ।
কানে খুলে শোন শালি..!!

“আমি তোরে ভালোবাসি,
অসম্ভব রকমের ভালোবাসি।
এই কথা তুই বিশ্বাস কর বা না কর।
তাতে আমার বা**ল ছেঁ*ড়া গেলো ।
তোরে ভালোবাসি মানে ভালোবাসি।
তোর এই ফা**কিং ডিপার্টমেন্টের থেকে
নির্ণয় চৌধুরীর টুনটুনির জোর অনেক বেশি।
তুই আমার মানে ,শুধুই আমার।
পালাতে চাইবি জানে মেরে দিবো ।

নির্ণয়ের মুখের কথা শেষ হতেই সাত ,পাঁচ না ভেবেই আচমকা নির্ণয়ের বুকে মাঝে নিজেকে গুটিয়ে নেয় রোজা । বেশ অবাক হলেও , কিছু ক্ষণ আগে বিগড়ে যাওয়া মেজাজ নিয়ন্ত্রণে আনতে এটার খুব দরকার ছিলো নির্ণয়ের । হঠাৎ করেই ফোপানোর আওয়াজ কানে আসে , রোজ কাঁদছে । নির্ণয়ের জান কাঁদছে , অস্থির হয়ে উঠে নির্ণয় । দুহাতে আগলে নেয় তার শান্তি ।
কাঙ্ক্ষিত মানুষটির আশকারা পেয়ে এবার যেন বেশ জোরে করেই কেঁদে দেয় রোজা । মেয়েরা নাকি প্রিয় মানুষের কাছে আদুরে শিশুর মতো হয় তার জলন্ত প্রমাণ নির্ণয়ের বাচ্চা ব‌উ । কেঁদে কেঁদে নাকের পানি চোখের পানি প্রায় মিশিয়ে সরবত বানিয়েছে রোজা । তবুও যেন কান্না থামানোর নাম নেই তার …
এই তোকে গোয়েন্দা বানিয়েছে কে রে ?
হাত দিয়ে নাক মুছেতেই নাক থেকে এক গাদা পানি হাতে লাগে রোজার ,। ভ্রু কুঁচকে রোজার কর্মকাণ্ড নিখুঁত পর্যবেক্ষণ করে নির্ণয় কেঁদে কেটে পুরো চেহারাই পাল্টে ফেলেছে মেয়েটা ।
কে আবার সরকার !

গা ছাড়া ভাবে , সামনে দিকে এগিয়ে দুলতে থাকা রকিং চেয়ারে গিয়ে বসে নির্ণয় । বোকার মতো নির্ণয়ে দিকে তাকিয়ে কিছু একটা বুঝতে চাইছে রোজা।
“এইসব বা**লের সরকারের মাথায় ও তোর‌ মতোই গোবর আছে বুঝলি …! তা না হলে তোর মতো ” ই ছাড়া ভো*দা*ই নাকি গোয়েন্দা বিভাগের চাকরি করছে।
হাহ!
কি বললে তুমি , আমি কি …?
বোলদের পেটে জন্ম নেওয়া আইশটা বলদ ?
“রাগে গজগজ করতে লাগে রোজা , নাকের পাটি ইতোমধ্যে ফুলতে শুরু করেছে তার । অপমানের প্রতিশোধ নিতেই এগিয়ে গিয়ে বসে নির্ণয় কোলে । দুহাতে জড়িয়ে নেয় নির্ণয়ের গলা ।
ব্যপার কি এভাবে চড়ে বসেছিস কেন ? নাম বলছি !

উঁহু !
কি চাই ?
যা চাইবো দেবে ;
না !
নির্ণয় ভাই ,🥺।
কাঁদো কাঁদো ইমোশনাল ফেস বানিয়ে নির্ণয়ের গলা জড়িয়ে থাকে রোজা ,
চোখ জোড়া বন্ধ করে চেয়ারে দোল ক্ষেতে থাকে নির্ণয় ।
অভিমান করেছো নির্ণয় ভাই ?
টুক করে চোখের পাতা মেলে তাকায় নির্ণয় । নিজের গায়ের সাথে আরো শক্ত করে জড়িয়ে নেয় রোজাকে ।” কন্ঠ ধরে এসেছে গলার মাঝেই কথাগুলো যেন জোটলা বেঁধে ঘোরপাক ধরেছে , ধরা কন্ঠেই , রিনরিনিয়ে বলে
তুই ছাড়া আমার কে আছে রোজ।
বল কে আছে ?
আমি বলছি !

তুই ছাড়া কেউ নেই বলেই বুকে এতো অভিমান জমিয়ে রাখা । তোর ভালোবাসায় একটু কমতিতেই হতাশায় পুড়ে আমার হৃদয় । নিঃস্ব এই জিবনে কে পূরণ করবে আমার সকল প্রত্যাশা ।
বল কে পূরণ করবে ,?
আপন বলতে শুধু তোকেই চিনি, তোকেই জানি ।
সকলে আমাকে কাঁদিয়েছে রোজ , সকলে কষ্ট দিয়েছে
তুই না হয় ভালোবাসা দিবি ?
কি হলো দিবি তো রোজ !
এতক্ষণ নির্ণয় বলা কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনছিলো রোজা। শক্ত খোলসে মানুষটিও‌ নিজেকে তার সামনে মেলে ধরছে । প্রাপ্তির শ্বাস ফেলে সে।
আমাকে যে…

বাকি কথা শেষ না হবার আগেই গোলাপি ঠোঁট জোড়ায় নিজের ক্ষমতার বিচারণ শুরু করে নির্ণয় । তার ব্যক্তিগত নারীর ব্যাক্তিগত জিনিসে ব্যক্তিগত পরিচর্চা প্রয়োজন ।
বেশ কিছু সময় গড়িয়ে রোজা ঠোট ছেড়ে গা ছাড়া ভাবে চেয়ারে গা এলিয়ে দেয় সে । ঠোঁটে গলিয়ে বেড়িয়ে আসে সে চিরচেনা বাঁকা হাসি। এক হাত জড়িয়ে রয়েছে রোজার ধনুকের মত বাঁকানো কোমড়
ইয়ো ছিঃ ! কোন মা*দা* রি এই লিপ কিস আবিষ্কার করছে রে ? শালারে পাইলে ৭২লাখে আগুন ধরিয়ে দিতাম । এটা কিস না থু থু খাওয়ার প্রতিযোগিতা ওয়াক থুহ ।
রোজার বলা কথায় থতমত খেয়ে যায় নির্ণয়। কথাগুলো মস্তিষ্কে প্রসেসিং হতে বেশ সময় নিয়েছে তার ।
হোয়াট রাবিশ ! কি বলছিস এইসব তুই ….!
যা সত্যি তাই বলেছি , আপনার সব থুতু আমাকে খাইয়ে ছেড়েছেন । আপনার সিগারেট খাওয়া গন্ধ মুখ আমার মুখে লাগিয়েছেন ছিঃ কি নোংরা ব্যাপার স্যাপার ।
ওয়াক !

কিহ কি বললি তুই ,,,”আমার মুখে গন্ধ ?
শুধু গন্ধ নয় অসম্ভব বিশ্রী গন্ধ , এই মুখ আপনি আমার মুখে লাগিয়েছেন। আপনার নামে আমি নির্যাতনে মামলা ঠুকে দিবো বলে দিলাম।
হোয়াট , তোকে নির্যাতন করেছি আমি ?
কোনো সন্দেহ আছে !
রোজ শাট ইয়োর ফা*কিং মাউথ ।

এ্যাঁহ একে তো আমাকে কিডন্যাপ করছেন , একজন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য কে রাতবিরাতে কিডন্যাপ করেছেন । তার উপর খাবার বদলে থুতু খাইয়েছেন। আমাকে কিডন্যাপের অভিযোগে আপনাকে রিমান্ডে নিবো আমি।
ঘড়িতে চোখ পড়তেই ব্যস্ত ভঙ্গিতে উঠে দাড়ায় রোজা তাকে , টিক টিক করতে থাকা ঘড়িতে ৫টা বেজে ৭ মিনিট , তাকে ফিরতে হবে ।
আমায় ফিরতে হবে নির্ণয় ভাই ?
তো যাহ ,কে আঁটকে রেখেছে শুনি!
সত্যি ফিরতে হবে ফ্ল্যাটে পাপ্পু একা , আমাকে যেতে হবেই নির্ণয় ভাই ।
Who is pappu ?
My son !

প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ২৪ 

যা বাবা এক খেলাতেই আমার বাচ্চা পয়দা হলো আমি জানিনা । তুই এতোটা বেইমান কি করে হতে পারিস রোজ ?
How?
কেন আপনার ক্যালরিতে কি , শুকাণু নেই বলতে চাইছেন ?
যাহ বাবা ! শুক্রাণু নেই কখন বললাম । ওটা আছে বলেই তো বাচ্চা পয়দা হয়েছে নাকি ?

প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ২৪ (৩)