প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ২৮ (৩)
Zannat Xhowdury
ঘুমন্ত রোজাকে পাঁজাকোলা করে নীরকুঞ্জের সদরে এসে দাঁড়ায় রিয়ান। পেছনে তৃধা, অপূর্ব, আয়ান, রিধিমা সকলের মুখে এক রহস্যময় উত্তেজনা।
চারপাশে তখন রাতের প্রায় চূড়ান্ত স্তব্ধতা। নীরকুঞ্জের চৌকাঠে বেল পড়ছে চারপাশে রাতের কুয়াশার ছায়া, বাতাস শীতল , মন মাতানো পরিবেশ।
বেল বেজেছে বেশ কয়েকবার ।তবুও দরজা খুলছে না। হাত বাড়িয়ে আবারো কলিং বেল চেপে ধরে রিয়ান।
হঠাৎ খট আওয়াজে খুলে যায় দরজা । আধো আধো ঘুম চোখে দরজা খুলে দাড়িয়ে থয় নাজমা চৌধুরী । বার বার চোখ কজলে পরখ করছেন সামনের সব কিছু
বড় মা আমাদের কি বাহিরেই রাখবে ?
রিয়ানে করা প্রশ্নে যেন মূহুর্তে সব ক্লান্তি পালিয়ে যায় নাজমা বেগমের । রিধিমা দ্রুত এগিয়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরে মাকে মূহুর্তের মধ্যে যেন সব ক্লান্তি, সব অবসাদ গায়েব হয়ে যায় নাজমা বেগমের চোখ থেকে মায়ের বুকের কাছে মাথা রেখে এখটু কাদুরেকেঁদে ওঠে।
নাজমা বেগম দু’হাত আলতো করে ছুঁয়ে রাখে রিধিমার মাথায়,
নরম আওয়াজে বলে—
ভেতরে এসো তোমরা , মূহুর্তে পুরো বাড়ি ভরে ওঠে নাজমা বেগম একনাগাড়ে সকলকে ডেকে জড়ো করে ঠিক বসার ঘরে ।
রত্না জলদি দেখে যা কারা এসেছে , আম্মা – আব্বা জলদি নিচে আসেন।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
বড় জালের ডাক পেতে নিজের ঘর থেকে বেড়িয়ে উপর থেকে নিচে উকি দেয় রত্না চৌধুরী , রিয়ান রোজা চোখে পড়লেই দ্রুত সিঁড়ি বেয়ে নামেন তিন । ধীরে ধীরে সকলে এক এক করে এসে জড়ো হতে থাকে বসার ঘরে ।
ঘুমন্ত রোজাকে ডিভেনে শুইয়ে দেয় রিয়ান, নিঃশ্বাস ঘন । যেন গভীর ঘুমে তলিয়ে আছে সে । রিয়ান কিছুক্ষণ তাকায় রোজার দিকে । তৃধা , আয়ান, অপূর্ব কেবলি নীরব দর্শক তারখ সকলে যেন পরিবার কে উপলব্ধি করছে
রোজার হাতের ব্যান্ডেজ দেখে কেঁপে ওঠেন রত্না চৌধুরী। কোনো শব্দ করেন না, শুধু ধীরে ধীরে এগিয়ে যান ডিভানের দিকে। তাকিয়ে দেখতে থাকেন হাতের ব্যান্ডেজটা চোখে তখন বিস্ময়, ভয় আর চাপা ক্রোধের অদ্ভুত মিশেল।
আমার রোজার কি হয়েছে ? ওর হাতে ব্যান্ডেজ কেন রিয়ান ?
মায়ের মন যেন অল্পতেই অস্থির হয়ে ওঠে । রত্না বেগমের চোখে পানি এগিয়ে যায় ঘুমন্ত রোজার দিকে ।ডিভানে নিঃসাড় পড়ে থাকা রোজার দিকে তাকিয়ে চিত্তে জমে ওঠে আশঙ্কার পাহাড়। রোজার মুখে একরকম নিষ্পাপ অবচেতনতা,কিন্তু সেই নিস্তব্ধতাই যেন আরও অস্বস্তিকর।
রত্না চৌধুরী হাত বাড়ান কপালে ছোঁয়ার জন্য
কিন্তু হঠাৎ কারো ডাকে হাতটা মাঝপথে দাঁড়িয়ে যায়, হাওয়ায় ঝুলে থাকে কিছুক্ষণ
ওর ঘুমে যদি বিন্দু পরিমাণ ব্যঘাত ঘটে এই বাড়ির প্রতিটি কোণে আগুন ধরিয়ে ছাড়বো ।
শব্দ নয় ,শাস্ত্রের মতো উচ্চারিত সেই কণ্ঠ। শান্ত, গম্ভীর, অথচ হিমশীতল আতংকের ধারা। রত্না চৌধুরীর হাত যেন হঠাৎ জমে যায় মাঝপথে। ঘরে উপস্থিত সবাই স্তব্ধ। কন্ঠে মালিক খুঁজতেই
সব চোখ ঘুরে যায় দরজার দিকে।
পড়নে ব্ল্যাক কালার শার্ট, শার্টের উপরের দুই বোতাম খোলা তার ফাঁক গলে উঁকি দিচ্ছে বুকের বেশ কিছুটা অংশ। ফর্সা ত্বক, নিখুঁত ছাঁটা বুকের গড়ন লোভনীয়, স্পষ্ট এবং বেশ আকর্ষণীয়।
উপস্থিত সকলের দৃষ্টি যেন নির্ণয়ের সৌন্দর্য গননায় ব্যস্ত। কেউ মনের বেদনা মুছতে আবার কারো মুখে তৃপ্তির হাসি ,তবে নির্ণয় চোখ যেন সকল কিছু উর্ধ্বে তার ঘুম পরির রূপে মুগ্ধ। তার এক অপার্থিব পরির রূপ ধরা দিয়েছে ঘুমের মাঝে যেন ত্যাগ, কোমলতা আর প্রতিজ্ঞার মিশেলে গড়া এক নিখুঁত মুখ।
সে যেন বিস্মৃত হয়ে গেছে নিজের দীর্ঘ অনুপস্থিতি, নিজের শরীরের ক্লান্তি, রাগ, ইতিহাস সব মুহূর্তে মিলিয়ে গেছে এক নিষ্পাপ মুখে তাকিয়ে ।
বাড়ির বড় নাতির এত বছর পর আগমনে খুশিতে গদগদ রওশনা চৌধুরী । লাঠি হাতে চোখে মোটা ফ্রেমে চেন লাগানো চশমা নাক থেকে উপড়ে ঠেলে এগিয়ে আসেন দরজার কাছে । শান্ত চোখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে নির্ণয়ের মুখ পানে। কিছু সময় বাদে এক হাতে চশমাটা টেনে নামিয়ে আনেন,অন্য হাতে লাঠি সামলে এক গাল হাসি নিয়ে বলে ওঠেন
এই তো এলি শেষে!
তা কত কালের অন্ধকার ঠেলে এসে পৌঁছালি আজ?
নির্ণয় একঝলক তাকায় দিদার চোখে।, ঠোটে সেই ছিলো চেনা বাকা , ধ্বংসাত্মক হাসি। সে হালকা মাথা ঝাঁকায়। ভেতরে হাঁটতে হাঁটতে শুধু এতটুকু বলে
অন্ধকার কেবল সময়ের ছিল না, মানুষদের মাঝেও ছিল, দিদা।
কথাটুকু শুনেই ঘরে আবার স্তব্ধতা। রওশন চৌধুরীর মুখের হাসি জমে যায় একটু, তবুও তিনি কিছু না বলে পাশে সরে যান নির্ণয়ের যাবার পথ করে দেন।
নির্ণয় ধীরে ধীরে ঘরের ভেতর ঢুকে পড়ে তার পায়ের নিচে বিছানো দামি কার্পেট,তবুও যেন প্রতিটি পা ফেলছে কোনও অপরিচিত জায়গায়।ছোটবেলার সকল স্মৃতি মোড়ানো তার এই বাড়ি , সেই দেয়াল সবই আছে, কিন্তু কোথাও যেন সব শূন্য ।
পেছনে দাঁড়ানো নাজমা চৌধুরী নিঃশব্দে চোখে পানি আটকে রাখছেন। রিয়ান আর রিধিমা পরস্পরের দিকে তাকায়—
স্পষ্ট বুঝতে পারছে নির্ণয়ের বলা প্রতিটি শব্দের ভার
রওশন চৌধুরী আবারো লাঠিতে ভর দিয়ে সামনে এগিয়ে আসেন,নির্ণয়ের পেছনে চোখ রেখে ধীরে ধীরে বলেন
আজো এতো অভিমান দাদুভাই ?
নির্ণয় পেছনে তাকায় না। শুধু একবার কাঁধ ঝাঁকিয়ে ফেলে দেয় বুকের মধ্যে জমে থাকা দীর্ঘশ্বাসটা, আরো এগিয়ে গিয়ে ঠাঁয় দাঁড়ায় রোজার ডিভেনের পাশে ।
তার হাত ধীরে ধীরে এগিয়ে আসে রোজার কপালের একপাশে সরিয়ে দেয় এলোমেলো চুল।রোজা এখনও ঘুমন্ত, তবু তার নিঃশ্বাসে যেন এক অদ্ভুত আশ্রয় খুঁজে পায় নির্ণয়। সে মৃদু স্বরে বলে
আমার ব্যক্তিগত জিনিসের টানে ফিরেছি।
ফেরত পেলেই তোমাদের অস্তিত্ব এই নির্ণয় চৌধুরী তার জিবে রাখবে না ।
ডুকড়ে ওঠে রত্না চৌধুরী আগলে নিতে চায় রোজাকে। তবে আবারো সে গম্ভীর কন্ঠ বেঁধে দেয় তার হাত ।
Don’t touch ছোটমা ।
হাত থেমে যায় রত্না চৌধুরী । চোখে পানি যেন আজো মন গলাতে পারছে না নির্ণয়ের।
ধীরে ধীরে এগিয়ে আসে নাজমা চৌধুরী। গায়ে হালকা কাঞ্জিভরম শাড়ি, মনের ভেতরে চলতে থাকা তোলপাড় সামলে খুব ধীরে, খুব সচেতন পায়ে সামনে এসে দাঁড়ান নির্ণয়ের মুখোমুখি।শান্ত কণ্ঠে বলেন,
“নীড় রোজা ওদের মেয়ে। তুমি প্লিজ এমন করো না,
ঘরে যেন হঠাৎ করে ঠান্ডা বাতাস বইয়ে দেয় এই কণ্ঠস্বর।
অপূর্ব নরম অথচ দৃঢ় ভাষা।নির্ণয় এক পলক চেয়ে থাকে তার মুখের দিকে। চোখে সেই চিরচেনা মায়ের আলো মূহুর্তেই মনে ভেসে ওঠে নৌরিন চৌধুরীর মুখ
ওদে..
নাজমা চৌধুরীর পুরো কথা শেষ করার আগেই হাত উঁচিয়ে থামিয়ে দেয় নির্ণয়। চোখে বিদ্বেষ কন্ঠে রাগ
“আপনার মতো বাহিরের মহিলার মুখে জ্ঞান-বাণী শুনতে এই নির্ণয় চৌধুরী বিন্দু পরিমাণ আগ্রহ রাখে না, মিসেস চৌধুরী।”
ঘরে একটা নিঃশব্দ বিস্ফোরণ ঘটে যেন।নাজমা থমকে যান।
এতখানি অসম্মান প্রত্যক্ষ, প্রকাশ্য, এবং নির্মম।
তবুও যেন মুখে কোনও রাগ নেই, শুধু চোখের কোণে গাঢ় একটা যন্ত্রণার রেখা ফুটে ওঠে।
নীড়?
নির্ণয় চৌধুরী বলুন।
নীড় শুধু আমার মায়ের দেওয়া নাম কোনো পাতানো মায়ের নয়।
একটা খচখচে তীর যেন ঘরের বাতাস চিরে ছুটে যায়। নাজমা চৌধুরী কিছু বলতে পারেন না। চোখের দৃষ্টিটুকু স্থির তবু তাঁর নরম হৃদয়ের অভ্যন্তরে যে ঢেউ উঠেছে, তা বুঝতে কারও বাকি নেই।
রত্না চৌধুরী ঠোঁট কামড়ে ধরে, রওশনা চৌধুরী ধীরে ধীরে চোখ বুজে ফেলেন।
এই ঘরে ভালোবাসার নাম আছে,তবে স্বীকারের জায়গা নেই।
এই ঘরে রক্তের সম্পর্ক আছে,তবে স্বীকৃতির ছায়া কোথাও পড়ে না।
সকলে মাঝেই হাত মুষ্টিবদ্ধ করে রয়েছে একজন । রেজওয়ান চৌধুরী এত বছরে ও এই কুলাঙ্গারে বিন্দু পরিমাণ পরিবর্তন হয়নি ভেবেই । রাগ লাগছে তার ।
শুধু কি বাড়ির ছেলের ওয়েলকাম করলেই হবে । আমাদের দিকেও একটু তাকাও ?
নাটকীয়, প্রলম্বিত সুর আবার দরজা থেকে ভেসে আসছে পুরো ঘরে ।ঘরের বাতাস মুহূর্তে ভারী হয়ে যায়।আবারো সকলের দৃষ্টি ঘুরে যায় দরজার দিকে।
রেহানে দিকে চোখ পড়তে মূহুর্তে এতো ক্ষণ সব ভুলে যায় রত্না চৌধুরী ছুটে এসে দাঁড়ায় লোহানের সামনে ।
কেমন আছো বাপজান ?
এইতো ফুপি ভালো তুমি কেমন আছো
রেহানের দিকে এক পলক তাকিয়ে রত্না চৌধুরীর মুখের রেখাগুলো যেন নরম হয়ে আসে। চোখের কোনে কাঁপতে থাকা জলের বিন্দুগুলো এবার গড়িয়ে পড়ে।
আমার বাচ্চারা, আমার চোখের আলো .এত বছর পর ফুপির কথা মনে পড়েছে তোর
রেহান সামান্য মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে, যেন কিছু একটা বলতে গিয়ে আবার থেমে যায়। আলতো হাতে জড়িয়ে নেয় ফুপু কে
— এসব কি বলছো তুমি , তোমারে ভুলে কেমনে থাকি বলো তো ।জানোই তো পাপা কিছু কাজে বাহিরে পাঠিয়েছিলো তাই তো খোজ নিতে পারি নি
রত্না চৌধুরী হঠাৎ করেই দুই হাতে রোহানের মুখটা জড়িয়ে ধরে।
— “তোর গালে হাত দিলেই যেন মনে হয়, আমার ভাইটা ফিরে এসেছে। তোর বাবার মতো মুখটা… একেবারে ছাঁচে ঢালা!”
এইখানেই দাঁড়িয়ে রাখবে আমাদের নাকি ?
আমাদের বলতেই রত্না চৌধুরী চোখ যায় রেহানের পাশে দাঁড়ানো জারার উপর যার পড়ে ওয়েস্টান চুল গুলো ব্রাউন কালার করে কার্ল করা ।
রত্না চৌধুরী খানিক তাকিয়ে থাকে জারার চোখে । পর্যবেক্ষণ করে মেয়েটিকে । কড়া নজরে এসে কেমন হাসফাস করছে জারা ।
এইটা কে ?
আমার ফ্রেন্ড!
বলেই কোনো উত্তর বা অনুমতির অপেক্ষা না করে পাশ কাটিয়ে চলে যায় ভিতরের দিকে।
ফ্রেন্ড না অন্য কি হুম হুম ?
জারা থমকে দাঁড়ায়। পেছন থেকে রত্না বেগমের গলা ভেসে আসে
জারার মুখে হাসি ফুটে ওঠে, অস্বস্তি লুকাতে চায় সে,
কিন্তু মুখের কোণে দেখা যায় এক ফোঁটা ঘাম।
এতক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে সব দেখছিল রিয়ান চোখে বিরক্তির ছায়া, ঠোঁট একটু বেঁকেছে যেন আর এক মুহূর্তও সহ্য করতে পারছে না এই বাড়াবাড়ি।
হঠাৎ করেই কপালটা কুঁচকে মুখ ঘুরিয়ে ফেলে সে।
দুই হাতে চুল টেনে পেছনে গোঁজা, তারপর একধরনের জোরে নিঃশ্বাস ফেলে বলে ওঠে
— “আচ্ছা, থামবে কেউ নাকি ! মনে তো হচ্ছে কোন ড্রামা সিরিয়ালেই ঢুকে পড়েছি
রিয়ার গলা তীক্ষ্ণ, কিন্তু সুরে একধরনের ঠাণ্ডা রাগ।সে এক পা এগিয়ে এসে রত্না চৌধুরীর দিকে না তাকিয়ে, নিচু গলায় বলে
এখানে আমরাও এসেছি আম্মু তোমার ভাইয়ের ছেলের থেকে নজর সরিয়ে আমাদের একটু দেখো ।
রেহান মুসকি হেসে হাত রাখে রিয়ানে কাধে ।
আরে ছোটো জেলাস তুমি ?
জেলাস তাও তোকে , আমাকে তোর ইয়ে মনে হয় নাকি ।যে তোর ফিগার আছে আমার কেন নেই , তোর ওটা বড় আমার হয়না কেন এসব নিয়ে জেলাস হবো । জেলাস হওয়ার মতো কোন ক্যাটাগরিতে তুই পড়িস ?
রিয়ান !
তেতে ওঠে রত্না চৌধুরী । কন্ঠে এক রাশ বিরক্তি , সঙ্গে রাগের আবির্ভাব।
দিন দিন অসভ্য হয়ে উঠেছো তুমি ?
সে যাই বলো তোমার ভাতিজা কে আমার আর বোনে থেকে দুরে থাকতে বলো ! আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভাইয়ের থেকে দুরে থাকতে বলো বলতে চাইলে ।
বাকা হাসে রেহান। তবে তার সেই হাসি কে থুরি পাত্তা দেয় রিয়ান রাগে গজগজ করে এগিয়ে যায় ডিভেনে আবারো পাঁজাকোলা করে তুলে নেয় রোজাকে সিঁড়ি বেয়ে উঠে চলে যায় সকলে যেন নীরব দর্শক । রিধিমা ফোঁস করে এক নিঃশ্বাস ছাড়ে । তৃধা সহ সকলকে নিয়ে সেও উপরের দিকে পা বাড়ায়
রত্না চৌধুরী তাদের যাওয়ার দিকে একবার তাকিয়ে রেহান দিকে এগিয়ে আসে ।
বাপজান চল ফ্রেশ হয়ে একটু রেস্ট নিবি ।
তুমি জারা কে নিয়ে যাও ফুপি আমি আসছি ..!!
একে একে সকলে স্থান ত্যাগ করতে থাকে । মূহুর্তেই যেন ফাঁকা হয় পুরো হলরুম।
সকলে যেতেই, মুখে এক অদ্ভুত, ছায়াচ্ছন্ন হাসি টেনে রেহান ধীরে ধীরে এগিয়ে যায় নির্ণয়ের দিকে। চোখে লুকোনো ছিল এক অজানা রহস্য, আর পায়ে যেন নিঃশব্দ ধ্বনি যেন সে শুধু মানুষের মাঝে নয়, সময়ের গোপন ছায়ার মধ্য দিয়ে হেঁটে আসছে।
আমার জিনিস আমি ঠিক বুঝে নিবো । তার আগে না হয় তোর সাথে হালকা একটু টুর্নামেন্ট খেলা যাক।
রেহানের প্রতিটা শব্দে ছিটকে পড়ে বিষ। আর সেই বিষের মধ্যেই নির্ণয়ের ঠোঁটে ফুটে ওঠে এক ব্যঙ্গভরা বাঁকা হাসি—যেন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছে নিঃশব্দে।”
চিল্লায় কি মার্কেট পাওন যাইবো কাকা ?
She is only my property .
এতে ভাগ তো দূর বিন্দু পরিমাণ হস্তক্ষেপ এই নির্ণয় চৌধুরী সইবে না । যেটা আমার সেটা শুধু ই আমার ।
নির্ণয়ের কথায় যেন সময় থমকে গেল। তার কণ্ঠে ছিল ধীরে ধীরে ঝরানো বিষাদ, আর চোখে ঝলকানি এক অদ্ভুত অগ্নির। সেই কথাগুলো শুনে রেহানের হাসিও যেন সাময়িকভাবে কেমন জমাট বাঁধল।”
রাগ লাগে রেহানের, মস্তিষ্কে ক্ষিপ্ত এক আগুন জ্বলে ওঠে। যেন সব চিন্তা ঝাঁকে ঝাঁকে তার ভেতরে তুফান তুলছে, যা থামানো অসম্ভব। হৃদয় গর্জনে উত্তপ্ত, আর মুখে বাঁকা হাসিটা ধীরে ধীরে ম্লান হতে থাকে। কন্ঠে তেজ এনে বলে ,
রোজার জিবনে তোর অস্তিত্ব কোথায় ?
মুসকি হাসে নির্ণয় আজ আর সেই হাসি লুকায়িত নয়, মুখ খুলে এসেছে গভীর এক প্রশান্তি। ঠোঁটগুলি বেশ প্রসস্থ, আর চোখে ঝলকছে এক অজানা আত্মবিশ্বাসের আলো।
কাছে আয় কানে কানে বলি !
প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ২৮ (২)
কোন প্রকার বাক্য তর্ক ছাড়াই এগিয়ে আসে রেহান ।ঠিক নির্ণয় মুখে কাছে ।
I injected her my Expensive ক্যালোরি
And she desperately accepted
কথা শেষে এক মূহুর্ত দাঁড়ায় না নির্ণয় ঠোটে বাঁকা হাসি রেখেই পর বাড়ায় সিঁড়ি দিকে , পিছনে তাকানো বিন্দু মাত্র ইচ্ছে পশন করে না সে ! যদি তাকালো তাহলে হয়তো নজরে আসতো এক ক্ষিপ্ত চেহারার মানবে । যার সর্বাঙ্গে রাগ জ্বলছে ,
নির্ণয় যেতেই টেবিলের উপরে থাকা সাইকেল উপর এইটি মেয়ে বসা অসম্ভব সুন্দর শো পিস মাটিতে ছুড়ে ফেলে রেহান যা মূহুর্তেই ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে ।
রোজা আমার , মেহের আমার শুধু আমার ।