প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ৩১ (২)

প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ৩১ (২)
Zannat Xhowdury

সময় গড়িয়ে এখন প্রায় বিকেল ৪টা। রত্না চৌধুরী নিজের ঘর থেকে রান্নাঘরের জন্য বেরিয়ে পড়েন। আজ একটু আলাদা কিছু ভাবছেন , ছেলে-মেয়েদের জন্য মজার কোনো বিকেলের নাস্তা বানাবেন। মনটা ভীষণ ভালো, মুখে হালকা একটুখানি হাসি।
ভাবতে ভাবতে এগিয়ে আসেন সিঁড়ি দিকে ।একদম কাছাকাছি এসে নামার জন্য পা বাড়াতেই আচমকা যেন পা থেমে যায় তার।
পেছন থেকে যেন কে ডাকছে
‘ফুপি
রত্না চৌধুরী ধীর চোখে ঘুরে দাঁড়ান। তার থেকে ঠিক কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে রেহান। চোখমুখ কেমন শুকনো লাগছে ছেলেটার।

‘আরে রেহান , কিছু বলবি বাপ?
‘ফুপি, আমার তোমার সাথে কিছু জরুরি কথা ছিলো।”
রত্নার কপালে ভাঁজ পড়ে। এক ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করেন
‘ হ্যা বল কী হয়েছে?
রেহান এদিক-ওদিক তাকিয়ে আশেপাশ পর্যবেক্ষণ করে একটু এগিয়ে আসে, কণ্ঠস্বর খাদে নামিয়ে বলে
বলবো তবে এখানে নয় ঘরে চলো ফুপি।
রত্না চৌধুরীর বুকের কোথাও যেন হালকা কাঁপুনি দেয়। রান্নার কথা, ছেলেমেয়ের নাস্তা সব কিছু এক মুহূর্তে যেন ভুলে বসে । ধীরে ধীরে পেছন ঘুরে ঘরের দিকে হাঁটা দেন তিনি।
এক নিঃশ্বাসে ভারী হয়ে উঠেছে চারপাশের বাতাস। ঘরে ঢুকে বিছানায় গিয়ে শান্ত হয়ে বসেন । রেহান ভেতরে ঢুকে দরজাটা হালকা ভাঁজিয়ে দেয় , যেন বাইরের এক ফোঁটা শব্দও ভেতরে না আসে।
হ্যাঁ, কি যেন বলছিলি?

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

রত্না চৌধুরীর গলায় শান্ত স্বর, কিন্তু চোখে অনুচ্চারিত কৌতূহল।তিনি এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন রেহানের দিকে
রেহান নিজেও কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে। নিজেকে হালাকা সামলে নিয়ে, এগিয়ে এসে নিচু গলায় বলে
ফুপি… আমি তোমার কাছে কিছু চাইলে না করবে না, নিশ্চয়ই?”
রত্না চৌধুরী হালকা হেসে ওঠেন নিজের ডান হাত রাখেন রেহানের মাথায়। হালকা এলোমেলো করে দেন রেহানের চুল গুলো।আবারো শান্ত কন্ঠে বলেন
পাগল ছেলে আমার… বল, কি চাই তোর?
মেহরিন।

কোন প্রকার বনিতা ছাড়াই উত্তর করে রেহান।এক মুহূর্তে যেন সময় থমকে যায়।রত্না চৌধুরীর মুখ ফ্যাকাশে হয়ে যায়, ঠোঁটটা কাঁপে একটু।তিনি কিছু বলতে যাচ্ছিলেন, কিন্তু শব্দ আটকে যায় গলায়। চোখে ভেসে ওঠে অজস্র স্মৃতি মেহরিনের ছোটবেলার চুল বাঁধা, তার হাসি, তার অভিমান, তার ঠিক পর মূহুর্তে ভেসে ওঠে নির্ণয় করা পাগলামি। আচমকাই রেহমানের থেকে ছিটকে সরে যায় রত্না চৌধুরী।
ক কি ?
গলাটা কেঁপে ওঠে রত্নার। শুষ্ক ঢোক গিলে নেয় জিহ্বা দিয়ে হালকা ঠোট ভিজিয়ে নেয়
রেহানের মাথা নিচু ফ্লোরের দিকে দৃষ্টি রেখেই বলতে থাকে সে
“আমি মেহরিনকে ভালোবাসি, ফুপি। অনেক দিন ধরে।
রত্নার বুকের ভেতরে হঠাৎ কেমন দম আটকে আসে। তার চোখ চলে যায় জানালার বাইরে… বিকেলের আলো যেন হঠাৎই ধোঁয়ায় ঢেকে গেছে।

রেহান আবারো কিছু টা এগিয়ে যায় রত্না চৌধুরীর দিকে, কণ্ঠটা থরথর করে কাঁপছে, চোখে পানি চিকচিক করছে ছেলেটার
‘ আমি মেহরিনকে বিয়ে করবো, ফুপি প্লীজ ফুপি, তুমি না করো না। তুমি না বললে কেউ পাশে দাঁড়াবে না আমার।
রত্না চৌধুরী চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে থাকেন। ঠোঁটের কোনে এক টুকরো কম্পন, চোখে অদ্ভুত রকমের অশান্তি। মনে হয় যেন কোনো এক পুরনো কফিনের ঢাকনা খুলে গেছে, যার ভেতর আছে বিস্মৃত, চাপা পড়া কিছু যন্ত্রণা, কিছু অভিশাপ।তার গলাটা শুকিয়ে আসে। বহু কষ্টে তিনি বলেন
‘ রেহান এই বিষয়ে নিয়ে আবার কখনো আমার সামনাসামনি হবে না তুমি
রেহান থমকে যায়। সে ভেবেছিল হয়তো মিসেস চৌধুরী তাকে শান্ত করবে রোজাকে পেতে সাহায্য করবে
‘কিন্তু ফুপি

রত্নার কণ্ঠ এবার কঠিন, অবিচল তিনি ধমকে ওঠেন রেহানকে।
“আমি যা বললাম, সেটাই শেষ কথা। মেহরিনকে নিয়ে এসব আর কখনো যেন না শুনি আমি
‘ কিন্তু কেন? মেহরিন আমার হলে সমস্যা কোথায়।
রত্না এবার চোখের দৃষ্টি সরিয়ে জানালার বাইরে তাকান। বিকেলের আলো যেন ধূসর হয়ে এসেছে, যেন তার চোখে এক অন্ধকার ছায়া পড়েছে।
‘ সব জিনিস পাওয়ার অধিকার সবার থাকে না রেহান। তুমি যা চাইছো তা হবার নয় ।
রেহান হতবাক। মুখে কোনো কথা , মাত্র বলা কথাগুলো যেন হজম করতে পারে না সে
‘ তুমি কী বলতে চাইছো, ফুপি?
রত্না চৌধুরীর চোখের দৃষ্টি জানালার বাইরে স্থির, কিন্তু কণ্ঠস্বর যেন ছুরির মতো কেটে যায় বাতাস
‘নির্ণয় আর রোজার বিয়ে অনেক আগেই হয়েছে, রেহান। সেই ছোটবেলায়, যেটা চাইলেও আমি অস্বীকার করতে পারবো না।”রোজার জিবনে বিন্দু মাত্র সিদ্ধান্ত তো দূর নির্ণয়ের অনুমতি ছাড়া ওর গায়ে হাত লাগানো নিষেধ।
রেহান থমকে যায়। কিছু সময় নিশ্চুপ থাকে সময় বয়ে চলছে। বুকের কোথাও যেন হাড়ানো ঘন্টা তাল বাজিয়ে যায়।

‘ কিন্তু এই বিয়ের তো…
হাত উঁচিয়ে থামিয়ে দেয় রত্না চৌধুরী। জানালার থেকে দৃষ্টি সরিয়ে ঘুরে দাড়ায় রোহানের দিকে।
‘আমি জানি তুই কি বলতে চাইছিস‌ !
‘ তাহলে কেন ফুপি আমি ওকে পাবো না ?
রত্না চৌধুরী কিছু বলতে যাবে তার আগেই থামিয়ে দেয় রেহান।
ভেজা গলা হঠাৎ গম্ভীর হয়ে উঠে তার ‌।
আমার রোজ কে চাই যেভাবেই হোক। তুমি নিশ্চয়ই চাও তোমার মেয়ে সুখে থাকুক ভালো থাকুক। মেয়েকে নিজের কাছে চাই তোমার।
হঠাৎ এতো সময়ের শক্ত খোলস যেন মূহুর্তে নরম হয়ে আসে। ধুক করে ওঠে রত্না চৌধুরী বুকে , নিজের মেয়েকে ছুঁতে না পারার কাছে আনতে না পারার মতো কষ্ট হয়তো দুনিয়ার কোথাও নেই বুকের মানিক রে বুকের রাখতে মা দের‌ কত না আহাজারি।

রেহানের মুখে যুদ্ধ জয়ের হাসি তীর‌ যেন ঠিক নিশানায় লাগিয়েছে সে । মুখে হাসি লুকুয়ে ডোস আরো কিছুটা বাড়িয়ে তোলে সে
আমি শুধু মেহরিন কে চাই ফুপি তুমি আজ‌ই সকলের সামনে আমাদের বিয়ে কথা বলবে প্লিজ বাকিটা আমি সামলে নিবো।
ফোঁস করে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে রত্না চৌধুরী। শান্ত চোখ তাকায় রেহানের দিকে। তারপর নরম স্বরে বলে
তুই পারবি নির্ণয়ের থেকে আমার মেয়েকে আমার কাছে এনে দিতে।
রেহান মাথা ঝাঁকিয়ে উত্তর জানিয়ে বিদায় হয় ঘর থেকে। চোখ থেকে দুফোঁটা পানি ঝড়ে পড়ে রত্না চৌধুরীর রেহান চলে যেতেই তিনিও বেড়িয়ে পড়েন ঘর ছেড়ে।

ধীরে ধীরে সূর্য যেন মুখ লুকাচ্ছে প্রকৃতির কোলে,দিনের শেষ আলো ছুঁয়ে যাচ্ছে তাল-নারকেলের মাথা, আকাশে দেখা মেলে লাল-কমলা রঙের এক মোহময় রেখা । পাখিরা ফিরছে তাদের নীরে । আযানের ধ্বনি যেন জানিয়েছে যাচ্ছে সন্ধ্যা নামার খবর
নীরকুঞ্জ যেন আজ আসর জমেছে । সন্ধ্যার নরম আলোয় স্নান করা হলরুমে যেন এক অন্যরকম প্রাণচাঞ্চল্য পরিবেশ । এক এক করে সারি বসেছে বেঁধেছে সকলে।

বাদ যান নি বাড়ির বয়োজ্যেষ্ঠরা । র‌ওশনা চৌধুরী আর রায়হান চৌধুরী যেন সামিল তাতে। কতশত গল্পের পুরোনো স্মৃতিতে মুখরিত হলরুম। রায়হান চৌধুরী গল্প বলছেন আয়ান, রিধিমা , তৃধা যেন মন দিয়ে তা শুনছে ।
রোজা বসেছে এক ঝুড়ি চিপস চকলেট নিয়ে তবে, তা নিয়েই দুই ভাই বোনের মারামারি। আমাদের হিরো সাহেব তিনি আবার এসব থেকে দশ হাত দূরে। নিজের দামি ফোনে গেম খেলায় মেতে রয়েছে সে।
গল্পের মাঝেই প্লেটে প্লেটে সাজানো নানা রকমের স্ন্যাকস হাতে হাজির হন নাজমা চৌধুরী । তিনিও যেন সিং ভেঙে যোগ দেন বাছুরের দলে।

রায়হান চৌধুরী আসর জমিয়েছে , গল্প জুড়ে দিয়েছে নিজের বাপ দাদা পৈতৃক বাড়ি, সম্পত্তির এসব কিছুই পুরো বাড়ি গুলোর ভয়ংকর রহস্য সব মিলিয়ে বেশ জমেছে সব ।
মাত্র‌ই ডেরি মিল্ক চকলেটে এক বসিয়েছে রোজা হঠাৎ ফোনের আসা টুং করে বাজা মেসেজের শব্দে চকলেট থেকে মনোযোগ সরে যায় তার। হাতে নেয় পুতুলে মাড়ানো বেক কভারের ফোনটি । ফোন স্ক্রিনে স্পর্শ করে মেসেজে ঢুকতেই মুখে ফুটে এক মিষ্টি হাসি।
রোজ পাখি

লেখাটি পড়েই যেন বোঝার বাকি থাকেনা মেসেজের মালিক মালিক আসলে কে। চকলেট সোফায় রেখেই দ্রুত মেজের রিপ্লাই করতে জামায় হাতে মুঝে টাইপিং করতে থাকে রোজা
হুঁ
ছোট এক উত্তর লিখে সাথে কয়েকটি লাভ ইমোজি পাঠিয়ে দেয় রোজা অপর প্রান্তের উত্তরের আশা না করেই আবারো মনোযোগ দেয় চকলেট খাওয়ায় মনোযোগ দেয় সে ।
পাখি
আবারো সেই মেসেজের শব্দ চকলেট মুখে পুরে নির্ণয়ের দিকে তাকায় রোজা । নির্ণয়ের চোখে চোখ পড়তেই টুক করে চোখ টিপে দেয় নির্ণয়। কেমন যেন লজ্জা লজ্জা লাগে রোজার।
পড়ে থাকা ফোন হাতে তুলে আবারো উত্তর লেখে সে
হুঁ
You looking so hot . I feel something something
কানে দিয়ে রিতিমত ধোঁয়া রেড়োচ্ছে রোজার। লজ্জায় যেন গাল পুরো টমেটো হয়েছে । এই বুঝি টকা দিলেই রক্ত বেড়োবে আবারো মেসেজ আসে

Honey
এবার আর কোনো উত্তর পাঠায় না রোজা। চুপ করে তাকিয়ে থাকে ফোনের দিকে। নির্ণয় যেনো আবারো লিখছে কিছু।
I needs you among my arms bby .
নির্লজ্জ ।
মেসেজের উত্তর দিতে যেনে লজ্জায় মুখ লুকিয়ে নিয়েছে রোজা। নির্ণয় খেয়াল করে তার প্রেয়সীর লজ্জা মাখা মুখটি । মুচকি হাসি ফুটে ওঠে তার মুখে।ইস রোজা যদি দেখতো সেই হাসি নিশ্চিত বলতো
আমি শেষ নির্ণয় ভাই , আপনার ওই সাদা দাঁতে মুসকি হাসি খুন করছে আমায়।
সব পুরুষই তার শখের নারীর কাছে নির্লজ্জ মেরি জান। পুরুষ নির্লজ্জ বলেই না জনসংখ্যা বাড়ে।
অসভ্য পুরুষ !
রোজ পাখি ।
আবারো সেই মধুর ডাক । যা কিনা হৃদয়ের সবচেয়ে নরম তারে ছুঁয়ে যায়, মন যেন মুহূর্তেই গায়েবী পথে হারিয়ে যায়।যেই ডাক শুনে রোজার বুকে বা পাশে থাকা হৃদপিন্ড একটু দ্রুতবিট করে।
যে ডাকে উত্তর ফেরাবার ক্ষমতা হয়তো রোজার নেই । রোজা উত্তর করে
হুঁ ।

একটু বেশি দুষ্টামানি করলে কি, খুব বেশি হয়ে যাবে জান।
একবার কতো গুলো রাগের ইমোজি পাঠায় রোজা। সে যতগুলো রাগের ইমোজি দিয়েছি প্রতিটার বিপরীতে যেন চুমুর ইমোজি পাঠিয়েছে নির্ণয় রোজা অবাক মুখ হা হয়ে গিয়েছে তার।
মুখ বন্ধ কর বেয়াদব নাহলে টয়লেট থেকে মাছি এসে মুখে ঢুকে তোর গু তোকেই খাওয়াবে।
মেসেজ পড়েই যেন চোখ দুটো গোল গোল হয়ে যায় রোজার। টুপ করে বন্ধ করে মুখ । আশপাশে তাকিয়ে নিজেকে শান্ত করে মেসেজ লেখে
আপনার মুখে গু পরুক । আপানাকে গু দিয়ে গোসল করানো উচিত তবে যদি মাথা থেকে টয়লেট গবেষণা বেড় হয় ।
মিটমিয়ে হাসে নির্ণয় রাগে হালকা ঘি ঢেলে আবারো মেসেজ লেখে
জান একটু দুষ্টামানি করি ?
আসুন একটু কম্বল ডান্স করি।
বাবা !

হঠাৎ রত্না চৌধুরীর ডাকে সবার মনোযোগ যেন তার দিকে চলে যায়। সকলের নজর এখন তার উপরেই সীমাবদ্ধ । নির্ণয়, রোজা তারাও যেন কৌতুহল নিয়ে তাকিয়ে আছে রত্না চৌধুরী মুখের দিকে। রত্না চৌধুরী একবার চোখ বুলিয়ে নেয় নির্ণয়ের দিকে।
কিছু বলবে ছোট ব‌উ ?
বাবা আমার কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা বলার ছিল আপনাদের এখানে যেহেতু ছেলে মেয়েরা ও উপস্থিত ভাবছি এখনি বলি।
এতো নাটক না করে আসল কথাটা বলো তো আম্মু ।
বিরক্তি মুখে রত্না চৌধুরী দিকে তাকিয়ে কথাগুলো বলে রিয়ান। রত্না চৌধুরী রিয়ানের দিকে তাকিয়ে ফোঁস করে এক নিঃশ্বাস ছাড়ে। নিজের পেটের ছেলে কিনা মাকেই বিরক্ত ভাবে।
আহ রিয়ান এভাবে বলছো কেন মাকে। তা কি বলবি ছোট জলদি বল।

কি হলো ছোট ব‌উ বলো কি বলবে ?
আমি আবার অন্যত্র রোজার বিয়ে দিতে চাই !
হঠাৎ মূহুর্তে যেন শান্ত হয়ে গেল পুরো পরিবেশ। এতো সময়ের মুখরিত পরিবেশ এক নিমেষে শান্ত হয়ে ওঠে । চারপাশের কোলাহল থেমে গিয়ে নিস্তব্ধতা এসে বসে পড়ে ঘরের কোণে।
ঘড়ির কাঁটার টিকটিক শব্দটুকুও যেন কানে বিঁধে যাচ্ছিল এখন।
বাতাস চলাচল করছে ঠিকই, তবে তাতেও যেন একটা ভার জমে ওঠে অদৃশ্য কিন্তু টের পাওয়া যায়। কারো মুখে কথা নেই য়
এক নিমেষে যেন ঘরজুড়ে নেমে এলো এক চাপা আতঙ্ক,
একটা অদৃশ্য চোখ যেন সবার উপর নজর রাখছে এমনই এক অনুভূতি।
কি বললে ছোট ব‌উ ?

র‌ওশনা চৌধুরীর অবুঝ কথায় , হলকা ভরকে যায় রত্না চৌধুরী তবুও আজ শান্ত সে। একদম কঠোর
আমি রোজার অন্যত্র বিয়ে দিবো!
আহ ছোট মা কেন অহেতুক মেয়াদ উত্তীর্ণ খাবার খাইয়ে
নিষ্পাপ এক ছেলের পেট খারাপ করতে চাইছো বলোতো ?
নীরবতা মাঝেই নির্ণয় বলা কথাগুলো যেন প্রাণ নিয়ে আসে হল রুমে রিয়ান হালকা মুচকি হাসে। সকলেই ঠোট চেপে কেমন হাসছে রত্না চৌধুরী আশপাশে একবার তাকিয়ে দেখে সকলের মুখ ভঙ্গি।
কি বলছো কি এসব ?
বলছি মেয়াদ উত্তীর্ণ খাবার সেল করে মারতে চাইছো? এতোই যখন বিজনেস করার শখ তা চাচ্চুর বিয়েটা আবার দেওয়া হ‌উক কি বলো সকলে ?
এবারো যেন মুখ টিপে হাসছে সকলে । রোজা নিজেও তাই!

অসভ্য , নির্লজ্জ ছেলে কি বলছো এইসব ?
তা আমার মুরগি আপনি শেয়াল কুকুরে ভাগে দিবেন
আমি বুঝি আঙ্গুল খাবো ?
কে তুমি ,
আমি তো আপনার ছোট মুরগির বাচ্চার
স্পেশাল ভিটামিন।
What?
উফফ ছোট মা তোমার মুরগির বাচ্চা কে
নাদুসনুদুস বানাতে কেবল আমার এক ডোজ যথেষ্ট।
যা অলরেডি প্রয়োগ করা হয়েছে , ফলাফল পেতে একটু অপেক্ষা করুন।
এই ছেলে কি বলছো এসব ?
পাত্র কে ?

প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ৩১

বাবা আপনি অনুমতি দিলে রেহানের সাথে আমি রোজার বিয়ে দিতে চাই।এটা রোজার বাবা ফিরলে তাকেও জানানো হবে।
হবে না হবে না কুকুরে পেটে ঘি হজম হবে না আম্মু।
রিয়ান !
আমারে ধমকে লাভ নেই তোমার ওই লেজ কাটা ভাইপো কে আমার বোনের থেকে দূরে রেখো। নয়তো প্যাকেট করে রাস্তায় কুকুরের মাঝে তার মাংসের তেহেরি বিরতন হবে

প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ৩১ (৩)