হৃদয় মাঝে হঠাৎ তুমি পর্ব ১৭
সানা শেখ
আলভীর ক্ষত শুকিয়ে উঠেছে। এখন স্বাভাবিক ভাবেই হাটা চলা করতে পারে। তবে ডান হাতের ব্যাথা এখনো পুরোপুরি ঠিক হয়নি।
মাঝ খানে এক দিন পেরিয়ে গেছে। সব কিছু আগের মতোই রয়ে গেছে। আলভী আর মায়ার সম্পর্ক একটুও উন্নতি হয়নি। আলভী কে দেখলেই দশ হাত দূর দিয়ে হাটে মায়া। আলভী কথা বলতে চাইলেও সুযোগ দেয় না। আর আগামী পরশু আলভীর নানীর বাড়ির সবাই ফিরে যাবে।
আলভী নিজের রুমে বেডের উপর বসে ল্যাপটপে ভিডিও কলে কথা বলতে ব্যস্ত। জার্মানি থেকে ওর পিএ আমান কল করেছে।
কথা শেষ করে সামনের দিকে তাকিয়ে দেখে লিরা দাঁড়িয়ে আছে। আলভীর বুঝে আসে না এই মেয়ে বাড়িতে থাকলেও কেন এত মেকআপ করে?
লিরা আলভীর কাছে এগিয়ে এসে দাঁড়ায়। আলভী বিরক্ত হলেও চুপ করে রইলো। এই মেয়ের মতলব বুঝতে বাকি নেই আলভীর। মেয়ে মানুষ হয়ে কিভাবে যে একটা ছেলের দিকে তাকিয়ে থাকে কে জানে? এই মেয়ের যে লজ্জা সরম বলতে কিছু নেই তা বুঝতে বাকি নেই আলভীর।
এই রাতের বেলা যুবতী মেয়ে হয়ে একটা ছেলের রুমে আসা কোন ভালো মেয়ের কর্ম নয়। এগুলো বাড়ি থেকে বিদায় হলেই বাঁচে আলভী।
লিরা কিছু বলার জন্য উসখুস করছে। কিন্তু ওর কথা শুনতে চায় না আলভী। তাই নিজে থেকেই বলে,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“বাইরের কোন মেয়ে হুটহাট আমার রুমে আসুক তা আমার পছন্দ না লিরা। তুমি এখন আসতে পারো।”
“আমি বাইরের মেয়ে?”
“তুমি যেভাবে বুঝেছো আমি সেভাবে বলিনি। বাইরের মেয়ে বলতে বুঝিয়েছি আমার বউ বাদে অন্য কোন মেয়ে আমার রুমে আসুক তা আমার পছন্দ না। তুমি এখন আসো আমি ঘুমাব।”
লিরা অপমান বোধ করে। ও স্পষ্ট বুঝতে পেরেছে আলভী ওকে বাইরের মেয়েই বলছে কারণ লিরা এই বাড়ির মেয়ে নয়। ওই মায়ার মধ্যে কি আছে সেটা ওর মধ্যে নেই? ও কি মায়ার চেয়ে কম সুন্দরী নাকি?
“লিরা তুমি যাও এখন।”
লিরা মুখ কালো করে রুম থেকে বেরিয়ে আসে। গেস্ট রুমের সামনে ওর দাদি সামসুন্নাহার বেগম দাঁড়িয়ে ছিলেন। লিরা গেস্ট রুমে ঢুকে রাগে ফেটে পড়ে। সামসুন্নাহার বেগম ডোর লাগিয়ে দিয়ে লিরার সামনে এসে দাঁড়ান। গল্পের রাইটার সানা শেখ। আগে আগে গল্প টি পড়তে সানা শেখ পেজ টি লাইক ফলো দিয়ে রাখবেন।
“বলেছিস?”
“কি বলবো? তোমার নাতি তো আমার কোন কথা শুনতেই চায় না। উল্টো বার বার অপমান করে। আজকে বললো আমি নাকি বাইরের মেয়ে। আমি ওই রুমে যাই সেটা তোমার নাতির পছন্দ না।”
“তোকে বাইরের মেয়ে বলেছে?”
“হ্যাঁ।”
সামসুন্নাহার বেগম চুপ করে রইলেন।
লিরা বলে,
“তুমি ফুপি কে সরাসরি বললেই তো পারো।”
“কোন লাভ নেই। তোর ফুপিই তো মায়া কে আলভীর বউ বানিয়েছে। আমি অনেক আগেই বলেছিলাম মায়া আর আলভীর ডিভোর্স করিয়ে আলভী কে আবার বিয়ে করাতে। তোর ফুপি রাজি হয়নি। এখন তো আলভী নিজেই মায়া কে ছাড়তে চাইছে না সেখানে ঐশী তো আরো চাইবে না। মায়ার দিক থেকে আলভীর মন ঘুরাতে হবে।”
“সেটা কিভাবে? তোমার নাতি তো সারা দিন মায়া মায়া করেই দিন পাড় করে।”
“তুই কোন চিন্তা করিস না যা করার আমিই আর তোর মা ই করব।”
“কি করবে?”
“বললাম তো তোকে ভাবতে হবে না। তুই ঘুমিয়ে পড় এখন।”
ফ্রেস হওয়ার জন্য ওয়াশরুমে প্রবেশ করে লিরা। সামসুন্নাহার বেগম ছেলের বউ কে ডেকে নিয়ে আসেন নিজের রুমে।
এক মগ কফি নিয়ে আলভীর রুমের সামনে এসে দাঁড়ায় মায়া। এত রাতে কেন কফি খেতে হবে? এখন তো ঘুমোনোর সময়, এখন কফি খেলে ঘুম আসবে?
মায়ের উপর খুব বেশি রাগ হচ্ছে মায়ার। ওকেই কেন কফি দিয়ে পাঠাতে হবে? নিয়ে আসতে রাজি হয়নি বলে আদেশ দিল। তাও যে সে আদেশ নয় একদম কড়া আদেশ। না করায় এমন ভাবে তাকিয়েছিল যেন ও কফি নিয়ে না এলে আলভী এখনই ম রে যাবে, দুনিয়া উল্টে যাবে, এই বাড়িটা ঠাডা পড়বে। মায়ের রাগের মুখে পড়ে বাধ্য হয়ে কফি নিয়ে আসতে হলো।
কে জানে এই বদ লোক ওর মাকে কি যাদু করেছে? সব সময় শুধু আলভী আলভী।
আস্তে করে ডোরে টোকা দেয় মায়া। ভেতর থেকে ভেসে আসে আলভীর গলার স্বর।
“ভেতরে আসো।”
আলভীর গলার স্বর শুনেই বুকটা লাফিয়ে ওঠে মায়ার। বুকে থু থু দিয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করে ভেতরে পা বাড়ায় ডোর ঠেলে।
মায়া কে দেখে আলভী অনেক বেশি অবাক হয়। ভাবেনি মায়া কফি নিয়ে আসতে পারে। এই মেয়ের যা তেজ হয়েছে আজ কাল। তাকালেও মনে হয় চোখ দিয়ে ভস্ম করে দেবে।
কোন কথা না বলে কফির মগ এগিয়ে দেয় আলভীর দিকে।
“টেবিলের উপর রাখো।”
এগিয়ে গিয়ে বেড সাইট টেবিলের উপর রাখে কফির মগ টা। ততক্ষণে আলভী রুমের ডোর লক করে দিয়েছে।
চলে যাওয়ার জন্য দ্রুত ঘুরে পা বাড়ায় মায়া। এগিয়ে এসে খপ করে হাত টেনে ধরে আলভী। রাগী চোখে তাকায় মায়া।
“হাত ছাড়ুন বলছি।”
“অন্য কোন মেয়ে কে ধরেছি?”
“ধরুন নিষেধ করেছে কে? শুধু আমাকে ধরবেন না ছোঁবেন না, হাত ছাড়ুন এখন।”
“বউ থাকতে অন্য মেয়ে কে কেন ধরতে যাব ছুঁতে যাব?”
“আপনার বউ মরে গেছে অনেক আগে।”
“আগের বউ কে বাঘে খাক তাতে আমার সমস্যা নেই। বর্তমান বউ টা থাকলেই হলো। যদিও আগের বউ টা বেশি কিউট ছিল, সহজ – সরল, নম্র – ভদ্র, বোকা পাখি। বর্তমান বউ টা বদ রাগী, কথাই বলা যায় না খ্যাক খ্যাক করে।”
রাগে মায়ার নাক লাল হয়ে ওঠে।
“হাত ছাড়ুন নয়তো কিন্তু মাথায় বারি মা/র/ব।”
“বিধবা হওয়ার এত তাড়া কেন?”
মায়া আশে পাশে নজর বুলায়। রুম ঝাড়ু টা দেখতে পায়। কিন্তু ওটার কাছে যাবে কিভাবে? এই শয় তান লোকের যেই শক্তি। হাত ছাড়াতে পারবে বলে মনে হয় না।
“আপনার কফি ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।”
“হোক।”
“সবাই ঘুমিয়ে গেছে গরম করে দেওয়ার জন্য কেউ নেই।”
“আমি করতে পারি।”
হাত ছাড়াতে না পেরে আলভীর হাত কামড়ে ধরে মায়া। এত জোড়ে কা মড় দেয়ার পরেও আলভী ছারে না মায়ার হাত। আলভীর হাত ছেড়ে আলভীর মুখের দিকে তাকায়। এই লোক কোন মাটি দিয়ে তৈরি? এত জোড়ে কা মড় দিল ব্যাথা পায়নি নাকি? এমন স্বাভাবিক আছে কিভাবে?
“হাত ছাড়ুন।”
ছেড়ে দেয় আলভী। মায়া দ্রুত ডোরের কাছে এগিয়ে যায়। উপরের ছিটকিনি লাগিয়ে দিয়েছে শয় তান লোক টা। ওই পর্যন্ত মায়ার হাত পৌঁছাচ্ছে না। এত বড় করে কেন ডোর বানাতে হবে? এই ডোরের ভেতর দিয়ে কি জাহাজ চলাচল করবে নাকি?
মায়া আশে পাশে নজর বুলিয়ে টুল আনার জন্য এগিয়ে যায়। আলভী ডোরের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। আজকে আর যেতে দেবে না এই রুমের বাইরে। পুরো দুদিন পর আজকে হাতের নাগালে পেয়েছে। রাইটার সানা শেখ।
“সামনে থেকে সরুন।”
“সরাও।”
“কি শুরু করেছেন? বাড়ির সবাই মিলে মজা করছেন আমার সাথে?”
“বাড়ির সবাই করলে করতে পারে কিন্তু আমি করছি না।”
কয়েক কদম এগিয়ে গিয়ে ঝাড়ু টা হাতে তুলে উল্টো করে ধরে।
“সামনে থেকে সরুন নয়তো ঝাড়ু দিয়ে মা/রব।”
“পারলে মা/রো।”
“সত্যি সত্যিই কিন্তু মা/রব।”
“মারো।”
“সরবেন না?”
“না।”
“সরবেন না?”
“আমার সব কথা শুনবে তারপর।”
“কেন শুনব আপনার কথা?”
“কারণ আমি বলব তাই।”
“কেন বলবেন?”
“তোমাকে বোঝানোর জন্য?”
“কেন বোঝাবেন?”
“যেন দশ বারোটা বাচ্চা পয়দা করতে পারি।”
বিরক্ত হয়ে শেষের কথা গুলো খুব দ্রুত বলে আলভী। মাথা হাতের ঝাড়ু টা দিয়ে ঠাস করে বারি বসায় আলভীর বাম হাতের বাহুতে।
“অসভ্য, অভদ্র, শ য় তান, লোক ঠাডা পড়বে মুখের মধ্যে।”
অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল আলভী। সত্যি সত্যিই বারি মা রল? এই বউ তো ওর গলা কে টে দিতেও দুই মিনিট ভাববে না।
হাতের ঝাড়ু ফেলে জোরে শক্তি প্রয়োগ করে আলভী কে ধাক্কা দেয় মায়া। অন্যমনস্ক থাকায় টাল সামলাতে না পেরে পাশের দেয়ালের সাথে বারি খায় মাথায়। বারি খেয়ে সাথে সাথেই আবার নিচে পড়ে যায়। কোন রকমে ডোর খুলে রুম থেকে বেরিয়ে আসে। দৌড়ে নিজের রুমে এসে ডোর লক করে দেয়।
শরীর থরথর করে কাপছে। দ্রুত বেডে শুয়ে পড়ে উপুর হয়ে। কি করে ফেললো? ওর মা যদি জানতে পারে আলভী কে ঝাড়ু দিয়ে মে রে ছে তাহলে ওকেই ঝাড়ু দিয়ে মে রে বাড়ি থেকে বিদায় করবে। আলভীর মুখে অমন কথা শুনে হাত দুটো আপনা আপনি বারি
মে/রে/ছে ওর কোন দোষ নেই। ও মা/রতে চায়নি তো সত্যি সত্যিই। এখন কি হবে? শোয়া থেকে আবার লাফিয়ে উঠে বসে। যেই জোরে ধাক্কা টা দিল, ঠাস করে দেয়ালের সাথে গিয়ে মাথায় বারি খেলো। বেঁচে আছে না ম/রে গেছে? নাকি অজ্ঞান হয়ে গেছে? এত জোড়ে বারি খেয়েও তো চিৎকার করলো না। ভয়ে মায়ার হাত পা আরো বেশি কাঁপতে শুরু করে। আলভী যদি ম রে যায় তাহলে ওকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে। জেল হবে, ফাঁসি হবে তারপর ও নিজেও ম রে যাবে। নাআআআ এ কিছুতেই হতে পারে না। আলভীর কি অবস্থা কে জানে? ওর তো এখনই শ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে।
নাহ্ কিছু হবে না আলভীর। এত বড় হাতির মতন একটা লোক ওর মতন মশার ধাক্কা খেয়ে ম র তে পারেই না। হয়তো মাথায় আঘাত পেয়েছে, বরফ দিলে ঠিক হয়ে যাবে। বেড থেকে নেমে দাড়ায়। একবার দেখে আসা উচিত কি অবস্থা আলভীর।
থরথর করে কাঁপতে কাঁপতে রুম থেকে বেরিয়ে আসে। আলভীর রুমে না গিয়ে আগে নিচে কিচেনে আসে। ফ্রিজ থেকে একটা ঠান্ডা পানির বোতল নেয়। আইস কিউব নেয় সাথে। তারপর আবার উপরে উঠে আসে। বাড়ির কারো কোন সাড়া শব্দ নেই। সবাই নিজেদের রুমে নিশ্চুপ হয়ে রয়েছে। রাইটার সানা শেখ। গল্পের পরবর্তী পার্ট আগে আগে পড়তে সানা শেখ পেজ টি লাইক ফলো দিয়ে রাখবেন সবাই।
আলভীর রুমের ডোর ঠেলে ভেতরে উঁকি দেয়। কই আলভী কই? ঝাড়ু টুল কিছুই তো নেই সামনে আর না আলভী আছে। হাওয়া হয়ে গেল নাকি?
মাথা টা আরেকটু ভেতরের দিকে নিয়ে পুরো রুমে নজর বুলাতেই দেখে আলভী ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে ওর দিকেই। এভাবে তাঁকিয়ে থাকতে দেখে ভয় পেয়ে পিছিয়ে আসে মায়া। যাক বাবা ম রেনি, অজ্ঞান ও হয়নি। ব্যাথা তো পেয়েছে নিশ্চিত। নিজেকে স্বাভাবিক করে নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে বির বির করে হেঁটে।
আলভীর কপালের বাম পাশ টা লাল হয়ে ফুলে উঠেছে। বাম পাশের গাল ও লাল হয়ে আছে। ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকেই দেখছিল।
মায়া যে আবার ওর রুমে আসবে কল্পনাও করেনি।
যা না ভাবে তাই শুধু হচ্ছে আজকে।
মায়া হাতের আইস কিউব গুলো এগিয়ে দেয় আলভীর দিকে।
“বরফ দিলে ব্যাথা তাড়াতাড়ি কমে যাবে।”
আলভী মুখ ঘুরিয়ে বলে,
“লাগবে না। মাথা ফাটিয়ে এখন এসেছে বরফ দিতে।”
মায়া মনে মনে বলে,
“মেয়েদের মতন ঢং ও করতে পারে আবার।”
“বরফ টা লাগান গোলে যাচ্ছে তো।”
আলভী বেডে গিয়ে আধশোয়া হয়ে বসে।
“লাগিয়ে দেওয়ার ইচ্ছে থাকলে দাও নাহলে নিয়ে চলে যাও।”
মায়া আগের মতোই দাঁড়িয়ে রইলো। আলভী আবার বলে,
“ব্যাথা তুমি দিয়েছো সারাবেও তুমি। আর না সারানোর ইচ্ছে থাকলে নিজের মাথায় দাও তাতে যদি ওই আগ্নেয়গিরি একটু ঠাণ্ডা হয়।”
মায়া আলভীর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। কোন দুঃখে মায়ের রাগ দেখে ভয় পেয়ে কফি নিয়ে এসেছিল? না কফি নিয়ে ও নিজে আসতো, আর না এসব কিছু ঘটতো। সব ওর মায়ের দোষ।
ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও এগিয়ে যায় আলভীর কাছে।
আইস কিউব হাতে তুলে নেয় একটা। থরথর করে কাঁপতে থাকা হাত বাড়িয়ে কপালের ফোলা জায়গায় বরফ ধরে।
আলভী মনে মনে অনেক হাসে। ও নিজেই বরফ নেওয়ার জন্য যাচ্ছিল নিচে। মায়া কে পানি আর আইস কিউব বক্স নিয়ে এগিয়ে আসতে দেখে দ্রুত সরে এসে ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়েছিল।
তখন মায়া কে দেখে অবাক হওয়ার ভান করেছে।
আলভী মুখ ফুটে বলে,
“অন্যের বউরা তাদের জামাই কে আদর করে, চুমু খায়, মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। মিষ্টি মিষ্টি কথা শোনায় । আর আমার বউ ধাক্কা দিয়ে ফেলে মাজা ভেঙ্গে দেয়, মাথা কপাল ফাটিয়ে দেয়। ঝাড়ু দিয়ে বারি মা/রে। খ্যাক খ্যাক করে কথা বলে। আল্লাহ কবে যেন তোমার এই নিরীহ নিষ্পাপ ভোলা ভালা বান্দার গলা কে টে দেয়। আল্লাহ আপনার এই নিরীহ বান্দা কে হেফাজত করুন।”
মায়ার মুখের দিকে তাকিয়ে আবার আকাশের দিকে তাকায়।
“ও আল্লাহ দেখুন কিভাবে তাকায় আমার দিকে। এভাবে তাকালে তো আমি ভয়েই ম রে যাব।”
“এখানে আসাই ভুল হয়েছে আমার।”
“যাও আর কিছু বলবো না। এখন এই নিরীহ স্বামীর সেবা যত্ন করো একটু।”
পরের দিন সকালে ড্রইং রুমে আসতেই ড্রইং রুমে বসে থাকা সকলে আলভীর দিকে বড় বড় চোখ করে তাকায়। কপালের উপর অত বড় আলু গজালো কিভাবে? ডান পাশের কপালে ছুলে গেছে, বাম পাশের কপালে ফুলে গেছে।
আহনাফ মাহমুদ বলেন,
“আলভী তোমার কপালে আবার কি হয়েছে? এভাবে ফুলে গেল কিভাবে?”
আলভী মায়ার দিকে তাকায়। মায়া বড় ভাইয়ের গা ঘেঁষে চোরা চোখে তাঁকিয়ে আছে ওর দিকে।
নাহার বেগম বলেন,
“কি হলো কথা বলছো না কেন আলভী? কপাল ফুললো কিভাবে?”
“ওয়াশরুমে পড়ে গিয়েছিলাম রাতে, তখন দেয়ালের সাথে বারি লেগেছে।”
আলতাফ মাহমুদ বলেন,
“ওয়াশরুমে গিয়ে নাচানাচি করছিলে নাকি ছোট বাচ্চাদের মতন?”
ঠোঁট চেপে হেসে ওঠে মায়া।
হৃদয় মাঝে হঠাৎ তুমি পর্ব ১৬
“নাচানাচি করবো কেন? সুন্দরী একটা পরী এসে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছিল। রাতে আমাকে সাথে নিয়ে যেতে এসেছিল, আমি যেতে চাইনি বলেই তো ধাক্কা টা
মে রে ছিল রাগে। ছেলে কে সারা জীবন দেখতে চাইলে দ্রুত বউ দাও নয়তো ওই সুন্দরী পরী তোমাদের এই হ্যান্ডসাম ছেলে কে রাতের অন্ধকারে তুলে নিয়ে চলে যাবে।”