প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ৩৪

প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ৩৪
Zannat Xhowdury

হাসপাতালের ঝামেলা পেরিয়ে কিছু সময় আগেই রিসোর্টে ফিরেছে সকলে। সারাদিনের টানা দৌড়ঝাঁপ, উদ্বেগ আর অজানা আতঙ্কে ক্লান্ত শরীরগুলো যেন এখন একটু স্বস্তির খোঁজে। সন্ধ্যা নামার মুহূর্ত, আকাশের রং বদলাচ্ছে ধীরে ধীরে। আলো আর অন্ধকারের মাঝখানে একটা থমকে থাকা নিস্তব্ধতা।
রিসোর্টের চারপাশে হালকা বাতাস বইছে। কারো আর কানে আসছে না তেমন।
ঘরের এক কোণে ফ্লোরে বসে আছে রোজা ,। নির্ণয় চুপচাপ তার পাশে এসে দাঁড়ায়। কিছু বলে না। শুধু একবার হাতটা বাড়িয়ে দেয় রোজার দিকে।

‘ রোজ বেইবি প্লিজ stand up
রোজা চোখ পিটপিট করে ফ্লোর ছেড়ে তাকায় নির্ণয়ের মুখ পানে , এদিকে একহাতে এখনো নির্ণয়ের শার্টের কোণা ধরা।
বেশ দরকারি এক কাজে রোজাকে রুমে পৌঁছেই বাইরে বেড়োতে চেয়েছিল নির্ণয়। কিন্তু হঠাৎই তার শর্টের এক কোণা টেনে ধরে যেন দাঁড় করিয়ে দিল রোজা। আপাতত এইভাবেই চলছে সব
গাল ফুলে আছে, ঠোঁটটা একটু বাঁকানো একদম অভিমানী বাচ্চার মতো মুখ।
কোথাও যাচ্ছেন না আপনি
রোজার কণ্ঠে অভিমান মেশানো সাথে কিছু টা গম্ভীরতা ,আদলে স্বামীর আদুরে ব‌উ হ‌ওয়ার একটু প্রয়াস
নির্ণয় কাঁধ নামিয়ে একটু হাসল, একদম ঝুঁকে আসে রোজা মুখ বরাবর হাত রাখে তার‌ দুই গালে
বিলিভ মি জান, এই যাবো আর আসবো …কাজটা ভীষণ দরকারি
“আমার চেয়েও দরকারি?

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

চোখে পানি টলটল করছে, যেন উত্তর পেলে সঙ্গে সঙ্গেই ঝরে পড়বে।
নির্ণয় এবার পুরোপুরি থ হয়ে যায় তার চোখ পড়ে রোজার ছোট্ট আঙুলে, যেখানে এখনও শক্ত করে চেপে আছে শার্টের কোণা।
” তুই তো আমার দরকারগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়টা, জান।
রোজা নাক টানে , ঠিক যেন ঠান্ডায় নাকের পাসায় সর্দি জমেছে
“তাইলে আমাকে ফেলে কোথা যাচ্ছেন যে।
আমি না গেলেই তুই খুশি ?“
নির্ণয় কণ্ঠে প্রতিজ্ঞার মত কিছু বাজে। রোজা সহসাই উঁচু নিচ মাথা ঝাঁকায় মানে সে ভীষণ খুশি আপতত নির্ণয় কে কাছে চাইছে সে

‘ ওকে যাচ্ছিনা
রোজা এবার ধীরে ধীরে তার শার্টের কোণা ছেড়ে দেয়।
তবে মুখের গাল এখনো ফুলানো, ঠোঁটের কোণে সামান্য কাঁপুনি।
নির্ণয় হালকা করে তার কপালে চুমু খায়। ছোট ছোট বেবি হেয়ার গুলো দুহাতে কানের পাশে গুজে। কিছু না বলেই কোলে তুলে নেয় রোজাকে
হকচকিয়ে ওঠে রোজা , পড়তে নেওয়ার ঝোক সামলে দুহাতে চেপে ধরে নির্ণয়ের গলা।
নির্ণয় তাকায় রোজার চোখের পানে ধীরে এগিয়ে যায় ওয়াস রুমের দিকে। রোজা ঘোর লাগা দৃষ্টি তে তাকিয়ে থাকে নির্ণয়ের মুখ পানে।

ওয়াশরুমে ঢুকেই নির্ণয় একহাতে শাওয়ারের নোব ঘোরায়। ঝিরঝিরে পানি ঝরে পড়তে থাকে ঠাণ্ডা জল যেন ধীরে ধীরে গরম হয়ে উঠছে, তাদের দুজনের শরীরের উত্তাপে।
রোজা তখনও নির্ণয়ের বুকে সেঁটে আছে, নির্ণয়ের গরম নিঃশ্বাস তখনো তার ভেজা কাঁধ ছুঁয়ে যাচ্ছে। নির্ণয় ধীরে ধীরে মাথা উঁচু করে তাকায় রোজার মুখের দিকে। এদিকে পানি তাদের চুল, চোখ, মুখ ভিজিয়ে দেয়, যেন সমস্ত ক্লান্তি, সমস্ত হিসাব এক ঝলকে ধুয়ে দিচ্ছে।
ধীরে রোজাকে কোল ছেড়ে নামিয়ে দেয় নির্ণয় দুজনেই তখন কাঁপছে পানি ঠান্ডা ঝাপটায় সাথে শরীরের এক অসীম উষ্ণতা
চারপাশ অদ্ভুত এক নিস্তব্ধতা শুধু পানির আওয়াজ, আর দুটো অস্থির হৃদয়। নির্ণয়ের কণ্ঠে নেমে আসে এক নিমগ্ন সুর, ”

তৃষ্ণার্ত আমার পিপাসা মেটাতে খুব করে কিছুর প্রয়োজন…. জান
রোজার ঠোঁট কেঁপে ওঠে, চোখজোড়া আধভেজা, তবুও দৃষ্টি কঠিন
কিহ চাইছেন আপনি ?
ইঁদুরের গর্তে সাপের আশ্রয়
মাতাল নির্ণয়ের চোখে শুধু একরাশ তৃষ্ণা, উত্তাল হৃদয়, সাথে আধিপত্যের এক অসীম খেলা।
বদ্ধ ঘরে পানির শব্দ যেন গিলে নিচ্ছে দুটো উত্তাপ মানুষের হৃদয়। নিস্তব্ধতা যেন আরো একধাপ এগিয়ে দিচ্ছে তাদের
হঠাৎ এক টানে রোজার গায়ে জড়ানো ভিজে জামাটা খুলে ফেলে নির্ণয় ।ভেজা কাপড়টা নেমে যেতে না যেতেই, কালো রঙের ইনার উঁকি দেয় পানির ছাঁটে, যা আরো স্পষ্ট করে তোলে রোজার অবয়ব।
ধীরে ধীরে ঝুঁকে আসে নির্ণয়, ঠোঁট ছুঁয়ে যায় রোজার কাঁধে। ভেজা ত্বকে ঠান্ডা ঠোঁটের স্পর্শে কেঁপে ওঠে রোজা শরীরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে বিদ্যুতের মতো এক অনুভব।
পানির টুপটাপ শব্দের ফাঁকে ওদের নিঃশ্বাস ভারী হয়ে ওঠে। রোজা চোখ বন্ধ করে শ্বাস টেনে
নির্ণয় ভাই ….

হুসসস্ লেটস্ ইনজয় বেইবি
নির্ণয়ের আঙুলগুলো এবার আলতো করে নেমে আসে রোজার বাহু বেয়ে কোমরের দিকে, কাঁপা কাঁপা হাতে আঁকড়ে ধরে তাকে।
ভেজা শরীর, অন্ধকারে হালকা আলো আর ঘরের গুমোট নিঃশব্দতা সবকিছু যেন একসাথে ঝাঁপিয়ে পড়ে ওদের ওপর।
রোজার শরীরটা ঠেলে দেয় নির্ণয়ের বুকের ভেতরকার আগুনে।
নির্ণয় ফিসফিস করে বলে,
তোর মায়া আমায় এমন ভাবে ঘিরে নিয়েছে যে , পৃথিবীর সমস্ত নারী যদি আমায় বিনা পারিশ্রমিকে এক রাতের অফার করে । আমি অনায়াসে তাদের ছেড়ে তোর কাছে ছুটে আসবো জান।
আস্তে আস্তে গাঢ় হতে থাকে নির্ণয়ের স্পর্শ। হাতটা ধীরে ধীরে বেয়ে ওঠে রোজার ঘাড় থেকে, পিঠ হয়ে কোমরের নিচে…

ভেজা ত্বকের উপর দিয়ে ঘুরে বেড়ায় স্পর্শের এক অদ্ভুত নেশা।
রোজার নিঃশ্বাস ঘন হয়ে আসে। চোখ আধো বন্ধ, ঠোঁট কাঁপছে কিন্তু মুখ বন্ধ নির্ণয় ঠোঁটের মাঝে।রোজা সমর্পণ করে তার প্রেমিক পুরুষের কাছে। পাগলের মতো রোজা সায় মেলাতে থাকে নির্ণয়ের তালে তালে। তার শরীর আর মন, সবকিছু যেন হারিয়ে যায় এক অদ্ভুত মোহে।
ভেজা কাপড়ের ভিতর জমে থাকা আগুনটুকু যেন আর সহ্য হয় না,
এক টানে ছিড়ে ফেলে রোজার ইনারের বেল্ট… কেঁপে ওঠে রোজা সব বাঁধা পেরিয়ে যুদ্ধ জয়ের মতো অতি খুশি হয় নির্ণয়
রোজা এক মুহূর্তের জন্য চোখ মেলে তাকায় নির্ণয়ের দিকে আজ যেন চোখে নেই কোনো লজ্জা , নেই ভয়। আজ মত্ত শুধু অগাধ ভালোবাসা আর একরাশ পাগলপারা আকাঙ্ক্ষায়
হঠাৎ থেমে যায় নির্ণয় পাগল পারা , বেহায়া , কন্ট্রোললেস পুরুষ যেন আজ নিজেকে সংযত করছে। হতবাক রোজা ….

মুসকি হেসে টুকুশ করে রোজার নাক টেনে দেয় নির্ণয়। ঠোঁট ফুটে ওঠে এক বাঁকা হাসি …
কন্ট্রোল ব‌উ কন্ট্রোল রাত এখনো অনেক বাকি।
লজ্জা যেন ইয়ারফোনের তারের মতো পেঁচিয়ে নিয়েছে রোজা কে।
গাল দুটো টমেটোর মতো লাল টুকটুক হয়ে ওঠে তার গাল।

লম্বা এক শ‌ওয়ার শেষে ওয়াস রুম থেকে বেড়িয়ে আসে দুজন। দুজনের পড়নে সাদা রঙের এক টাওয়াল। ধীরে ধীরে রোজা এসে দাঁড়ায় রুমে আয়নার সামনের। মাথায় পেঁচানো টাওয়াল খুলতেই বেড়িয়ে লম্বা চুল গুলো যার থেকে টুপটুপ করে পানি ঝড়ছে।
এদিকে নির্ণয় … এগিয়ে যায় ব্যাগের দিকে… পুরো ব্যাগ হাতরে খুঁজে বের করে। কালো রঙের ধাতব এক যন্ত্র। যা হাতে নিয়ে এগিয়ে এসে দাঁড়ায় রোজার পাশে , গরম যন্ত্রের সুইচ অন করতেই বেড়িয়ে আসে।এক গরম হাওয়া। যায় সাহায্যে শুকাতে থাকে রোজার চুল।
চুল শুকানো হতেই এবার পালা ড্রেস সিলেকশনের। কেনো‌ জানি আজ রোজার ভীষণ ইচ্ছে করছে নির্ণয় পোশাক গায়ে জড়াতে।

রোজার বরাদ্দকৃত ব্যাগ হতে নিজের একটা জিন্সপ্লাজু নিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে পড়ে রোজা।
বেশ কিছু সময় অতিক্রম হ‌ওয়ার পড়েও পড়নে নেই কোনো কাপড়। এদিকে নির্ণয় ফুল রেডি। রোজার কান্ডে কপাল কুঁচকে নেয় নির্ণয় …
What happened …
আপনি ওটা খুলুন !
রোজার কথায় নিজের গায়ের পড়নের এক সাদা শার্টের দিকে তাকায় নির্ণয়। সাথে সাথেই আবারো তাকায় রোজার দিকে
কেনো কি সমস্যা এতে
খুলতে বলেছি খুলুন ,ওটাতে আপনাকে মানাচ্ছে না।
নির্ণয় কথা বাড়ায় দ্রুততার সাথে খুলে ফেলে গায়ে জড়ানো শার্ট। এই কান্ডে যেন মনে এক প্রকাশ খুশি কিলবিল করছে রোজার।

শার্ট খুলা হতে যেই নির্ণয় ওটা নিয়ে ব্যাগে রাখতে যাবে ওমনি তা কেড়ে নেয় রোজা।
কি হচ্ছে রোজ ?
শার্ট গায়ে জড়িয়ে বোতাম লাগাতে থাকে রোজা। নির্ণয় কথার থুরি কোনো উত্তর করে সে
শার্ট পড়া হতেই তাকায় নির্ণয়ের চোখের দিকে মুসকি এক হাসি দিয়ে বলে …
এবার ঠিক আছে দেখুন।

প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ৩৩ (৩)

নির্ণয় তাকায় না ব্যাগ থেকে আরো একটি শার্ট বের করে গায়ে জড়িয়ে নেয় তার। কেমন এক মিষ্টি সুবাস ভেসে আসে নির্ণয়ের শার্ট থেকে, রোজা নাকের কাছে এনে শুঁকতে থাকে সুভাষ

প্রনয়ের প্রথম পুরুষ পর্ব ৩৪ (২)