ধূসর রংধনু পর্ব ৩
মাহিরা ইসলাম
এই যে যখন তাসফির শাড়ি পড়া নিয়ে কথা উঠলো, শ্বাশুড়ি মা মুচকি হেঁসে বললেন,,
“কি যে বলেন না ভাবী। এখন কি আর আগের যুগ আছে। শাড়ি পড়ায় আর কি আসে যায়। মানুষের ব্যবহার -আচরণই হচ্ছে আসল পরিচয়। পোশাক মার্জিত হলেই তো হলো । শাড়ি আর ফোড়াকে কি আসে যায় বলুন।”
মহিলাটি তখন নিজ মুখখানা কালো করে নিয়েছে।
তারপরও কথা বলতে যায়,, “তবুও ভাবী এখন তো….”
অনিমা বেগম তাকে থামিয়ে দেয়, মুচকি হেঁসে বলল,
“থাক ভাবী আপনার আর কিছু বলার দরকার নেই। নতুন বউ দেখতে এসেছেন দেখুন না। আপনি তো আর তার সাথে থাকবেন না যে এত প্রশ্ন করছেন। আপনার ছেলের জন্য ওও তাকে নিচ্ছেন না তাহলে এত জেনে কি করবেন বলুন। বাকিটা আমরাই জেনে নেবো।
তাছাড়া আপনার বড় বউ তো শাড়িই পরতো সর্বক্ষণ। তবে সেই শাড়ি তো আপনাদের কাল হয়ে দাঁড়ালো তাই না বলুন ভাবী।বউতো ঠিকই অন্যের সঙ্গে ভেগে গেল।”
মহিলা গুলোর মুখটা এবারে এক্কেবারে চুপসে গেল।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
বেশ হয়েছে।তাসফি মন মনে কুটকুটিয়ে হাঁসে।একেই বলে শান্ত মস্তিষ্কে হেঁসে হেঁসে মানুষকে মোক্ষম জবাব দিয়ে অপমান করা। নতুন বউ না হলে এদের সে দেখে নিতো।কেন রে তোরা হচ্ছিস পারা প্রতিবেশী তোদের এত গাইগুই এর দরকার টা কি বাপু। শ্বাশুড়ি মা একেবারে তার লাখে একটা। একদম তার মনের কথা গুলো বলে দিয়েছে।
অথচ কত কি না ভেবেছিলো সে। কেমন দজ্জাল হবে তার শ্বাশুড়ি মা, এই নিয়ে তো সে ভারী চিন্তায় পড়ে গিয়ছিল।আজ যেন তাসফি একদম নিষ্চিন্ত হলো অবশেষে।
তাসফির মতে তার শ্বশুড় বাড়ির সব ঠিক। মানুষ ঠিক, ঘরবাড়ি ঠিক সব ঠিক। শুধুমাত্র তার বর ডাক্তার নিস্তব্ধ ইয়াসার নামক পুরুষটিই ঠিক নেই। অভদ্র পুরুষ সে। যে নিজের বউকে সম্মান দিতে জানে না।
চাঁদনি রাতে আকাশে তাঁরার মেলা।তাদের ঝিক মিক আলোক সাজে সেঁজে উঠেছে ধূসর গগন।
নিস্তব্ধ দাঁড়িয়ে ছিল ব্যলকনিতে।
তার সুঠাম দেয়ে অবস্থান করে নিয়েছে ছাই রঙা টিশার্টের সঙ্গে কালো টাউজার।বলিষ্ঠ বাহুগুলো স্পষ্ট দৃশ্যমান। ফর্সা হাতের তালু ফুলে ফেঁপে আছে। ধূসর আকাশের চাঁদমামা মাঝে মাঝে উকি দিয়ে দেখছে পুরুষটির সৌন্দর্য।
তাসফি নিঃশব্দে তার পেছনে এসে দাড়ালো।
গম্ভীর অথচ সংকোচহীন শীতল কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো,
” আমায় কেন বিয়ে করেছেন ডাক্তার সাহেব?”
নিস্তব্ধ অদ্ভুত সম্মোধন সূচক শব্দের উৎস খুজে চমকে পেছনে তাকালো।
তাসফি করা প্রশ্নে ভ্রু বাকিয়ে চাইলো। কন্ঠে বিরক্তি ঠেসে বলল,
“তোমায় উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন মনে করছি না।”
কি আশ্চর্য তাকে বিয়ে করলো অথচ এখন বিয়ে মানবেনা মানেটা কি।তাকে বিয়ে করেছে এখন সে জানতে পারবেনা কেন বিয়ে করেছে।
যদি নাই মানিস বিয়ে টা করলি কি জন্য। বিয়ে মানবি না, পুঁচকে আমি, তাহলে বিয়ে আসরে গিয়েছিলি কেন? পালিয়ে যেত।এখন কি সারাজীবন এভাবে থাকতে হবে তার।
কিন্তু মনের কথা গুলো পুরোটা সে উগলে দিতে পারলো না।
তাসফি তেঁতে উঠে আরো কয়েক পা এগুলো,
ঝাঁঝালো স্বরে বলল,
” কেন উত্তর দেবেন না আপনি। সারাক্ষণ আমায় অপমান করেন আপনি পিচ্চি পিচ্চি বলে। পিচ্চি হলে বিয়ে কেন করলেন।”
” পিচ্চি হলে কি হবে। ঝাঁজ আছে তো ঠিকই।”
এই কি বললেন আপনি?
“নাথিং পিচ্চি মানুষের এত রাগ মানায় না।বড় হলে রাগ দেখিও।”
বলেই নিস্তব্ধ হনহন করে চলল রুমের ভিতর।
তাসফির গাঁ জোলে যাচ্ছে লোকটার এমন খাপছাড়া কথাবার্তায়।
নিঃশব্দে সে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলো বেলকনিতে।
পশ্চিমা বাতাস বৈছে। দূরে মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে থাকা মেহগনি গাছে ডেকে উঠলো হুতুম পেঁচা।
অতঃপর,তাসফি ও নিস্তব্ধ ইয়াসারের ঘুমন্ত দ্বিতীয় রাত টি ও কাটলো নিরামিষ ভঙ্গিতে। বিশাল ফাঁকা জায়গা তাদের মাঝে দূরত্ব করে রেখেছে। চারপাশে এক অদৃশ্য দেওয়াল। কবে এই দেওয়াল ভেঙে দুজন একত্রিত হবে জানা নেই।
তবে আজ তাসফি মাঝে ফাঁকা রাখেনি, সেখানে কোলবালিশ হিসেবে সতিন রেখে দিয়েছে। বউ যখন মানিস না তবে বউয়ের গায়ের গন্ধও যাতে না পাস এটা তারই ব্যবস্থা রে ব্যাটা।
বর মশাই কোলবালিশ খানাকে ভ্রু কুচকে চোখ বড় বড় করে দেখেছে। তবে পাল্টা কোনো প্রত্যুত্তর করেনি।
না করুক। তার প্রত্যুত্তর না করাই যেন শ্রেয়।
পরদিন শুক্রবার। নিস্তব্ধ’র বাড়িতে ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও থাকতে হলো। সকালে ল্যাপটপ ওপেন করে সে চমকে গেল। তার হসপিটাল থেকে মেইল এসেছে। ডাক্তার নিস্তব্ধ ইয়াসারের বাবার করা আর্জিতে তার দুদিনের ছুটি মুঞ্জুর করা হলো।
প্রচন্ড বিরক্ত হলো সে। সে কি ছুটি চেয়েছে। সে তো কাজে ব্যস্ত থেকে একটু রিল্যাক্স হতে চেয়েছিলো। বাবা কেন এই বাড়াবাড়িটা করলো।
তাসফি রুমে ঢুকলো ব্যস্ত ভঙ্গিতে। বাসন্তী আপা বললো তার সমস্ত জিনিসপত্র গুলো যেন গুছিয়ে রাখে। জিনিসগুলো ব্যাগেই রয়ে গেছে।
তাসফি রুমে এসে আলমারিতে হাত দিতেই নিস্তব্ধ তার নিস্তব্ধতা ছাড়িয়ে বর্জ্যকন্ঠে বলে উঠলো,
” এই পুঁচকি একদম আমার আলমারিতে হাত দেবেনা।”
তাসফি চোখ মুখ কুচকে সূধালো,
” তাহলে আমার জামাকাপড় গুলো রাখবো কোথায়”
নিস্তব্ধ দায়সারা ভাবে জবাব দিলো,
” যেখানে খুশি রাখো, তবে আমার জিনিস পত্রে হাত দেবেনা। মাইন্ড ইট।”
তাসফি কি উত্তর দেবে ভেবে পেল না।ডাক্তার তো নয় একটা কষাই। তাসফি নিশ্চিত এই লোকের কাছে একবার যে রুগী এসেছে দ্বিতীয়বার আর সে এ মুখো হয়নি।
ব্রেকফাস্টের টেবিলে নিস্তব্ধ হাজির হলো তার চিরাচরিত গম্ভীর মুখকানা নিয়ে।
— কি রে ভাই বিয়ে দিয়ে তোকে এত সুন্দর একটা লাল টুকটুকে বউ এনে দিলাম তবুও সারাক্ষণ মুখখানা গম্ভীর করে কেন রাখিস।
নিস্তব্ধ ভ্রু কুচকে তার আপার দিকে চায় কোনো উত্তর দেয় না। অহেতুক তর্ক করে এদের সঙ্গে তার কোনো লাভ নেই।
“গুড মর্নিং কাকাই”
পান্নার কথায় নিস্তব্ধ মুচকি হেঁসে জবাব দেয়,,
“গুড মর্নিং মামনি।”
তাসফি এই মানবের একটুকরো হাসি দেখে যেন আকাশ থেকে পড়লো। তার বর হাসতে ও জানে। ভারী আশ্চর্য ব্যাপার স্যাপার। তবে হাসতেই পারে সে তো আর রোবট নয়।
“পান্না মামনি তোমায় লাস্টদিন কোন প্রশ্নের উত্তরটা শিখিয়েছিলাম বলোতো?”
-পান্না তার ছোট মুখে জবাব দেয়
” ফাস্টএইড বাক্সে কি কি থাকে”
“ভ্যারী গুড গার্ল। এবার কয়েকটা নাম বলে ফেলোতো।”
ছোট্ট পান্না তোতাপাখির মতো বলতে থাকে,
“স্যাভলন, তুলা, কাঁচি, গজ কাপড়,মলম।”
“তা পান্নাকেও তোমার ডাক্তারি পনা শেখাবে নাকি নিস্তব্ধ ।”
বাবার কথায় নিস্তব্ধ পুনরায় বিরক্ত হয়।
অনিমা বেগম তাকে মৃদু ধমকান।
“কি শুরু করলে নিলয়, তুমি তোমার ওকালতি নিয়ে থাকো না। ছেলেটার পেছনে কেন পড়েছো।তাছাড়া ওতো খারাপ কিছু শেখাচ্ছে না।”
অনিমা বেগমের কথা শেষ হতেই নিস্তব্ধ বলতে শুরু করে,,
“বাবা ডক্তারি শেখানো তো খারাপ কিছু না। টুকি টাকি ডাক্তারি জানা টা অতন্ত্য জরুরি। ধরো তোমার পা’টা কেঁটে গেল।”
নিলয় সাহেব চোখ বড় বড় করে ছেলের দিকে চাইলেন।শেষে কিনা ছেলে তার পা কেটে ফেললো।ছেলেকে ডাক্তারি পড়িয়ে শেষে ভুল করলেন না তো।
“আহাঃ রাগছো কেন ধরো কথার কথা, তোমার পা কেটে গেল। বাড়িতে কেউ নেই শুধু তুমি আর পান্না। পান্না যদি প্রাথমিক চিকিৎসা জানে তবে ওই কিন্তু তোমার সেবা করতে পারবে। তুমি তো সারাদিন ওকালতি নিয়ে থাকো। তুমি কি আর প্রাথমিক চিকিৎসা জানবে বলো।”
অসভ্য ছেলের কথায় নিলয় সাহেব বেজায় চটে গেলেন,,
“তোমার কি মনে হয় আমি প্রাথমিক চিকিৎসা জানি না। রশিকতা করছো তুমি আমার সাথে।”
” না-পারা টাই স্বাভাবিক নয়কি?”
নিলয় সাহেন থতমত খেয়ে ছেলের দিকে চেয়ে থাকলেন।কই তার আর ছেলে দুটো তো এমন অসভ্য নয়। তবে তার এই ছেলেটা কার মতো স্বভাব পেলো।
টেবিলের সবাই মিটমিট করে হাসছে।বাপ ছেলের এমন খুনশুটি অহরহ ঘটে এই ওসমান ভিলায়।
নিলয় সাহেব অর্ধেক খাবার রেখেই উঠে গেলেন,মা ছেলে মিলে নতুন বউয়ের সামনে তাকে কেমন হাসির পাত্র বানিয়ে দিল।
তাসফি এতসময় শ্বাশুড়ির পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। নিলয় সাহেব চলে যেতেই তাসফি নিঃশব্দে গিয়ে নিস্তব্ধ’র পাশের চেয়ারে বসে পড়লো।
ফিসফিস করে কিছুটা আদেশের স্বরে বলল,,
“বাবার কাছে গিয়ে ক্ষমা চেয়ে আসবেন। একজন ডাক্তারের থেকে তার বাবা এটা আশা করেন না। বলেই তাসফি নিজের মতো করে খাবার নিয়ে খেতে শুরু করলো।”
নিস্তব্ধ চকিতে তাসফির দিকে আশ্চর্য বদনে চাইলো,এই পুঁচকে মেয়ের কত বড় সাহস তাকে কি না আদেশ করে। কত বড় বেয়াদব মেয়ে। হাসবেন্ড এর সঙ্গে কিভাবে কথা বলতে হয় মিনিমাম কার্তেসি টুকু নেই। অসভ্য মেয়ে।
সে তার বাবার কাছে ক্ষমা চাইবে কি না চাইবে সেটা সে বুঝে নেবে।যত্তসব!
দুপুরের রান্নার সময় তাসফি জোড় করে রান্নাঘরে ঢুকে গেল।
জোড় করে শ্বাশুড়ি মাকে সরিয়ে দিল। বলল,
“মা তুমি সরো তো। আজ আমি রান্না করবো। তাছাড়া ভাবি আর রুম্পা তো আছেই সে আমাকে কুটতে বাটতে সাহায্য করবে। কি ভাবী করবে তো।”
— হ্যাঁ হ্যাঁ অবশ্যই।
অগত্যা অনিমা বেগমের না চাওয়া সত্ত্বেও আজকের মতো তার রান্নাঘর ত্যাগ করতে হলো।
রান্না করতে করতপ একফাঁকে তাসফি পায়েলকে ইনিবিনিয়ে সূধালো,
” কি ব্যাপার বলোতো ভাবী। ইনায়া ভাবীকে তো দেখছি না। সে কোথায়। তোমায় সাহায্য টাহায্য কিছু করে না কাজে বুঝি।”
পায়েল কিছুটা ইতস্তত করে হেঁসে বলল,,
” তেমন কিছুনা। মেজো আবার একটু পরিষ্কার থাকতে ভালোবাসে তো তাই আর এদিকটায় আসেনা।
মেজো ভাই তো বাহিরে থাকে সে সারাক্ষণ ফোন দিতে থাকে তার সাথেই কথা বলতে ব্যস্ত থাকে।”
তাসফি ভ্রু কুঁচকে বলল,
” তো পরিষ্কার থাকতে পছন্দ করে বলে কি বাড়ির কাজে সাহায্য করতে পারবে না।আমরা বুঝি পরিষ্কার থাকিনা”
পায়েল উত্তর দেয় না। কি বা উত্তর দেবে সে। বড় লোকের বেটিকে কি আর বলবে সে।
তাসফি মনে মনে সয়তানি হাসে।
দুপুরে খাবারে তাসফি বিশাল আয়োজন করলো।
সাদা ভাত,পোলাও, গরুর মাংস, মুরগীর মাংস,ডিম ভোনা, ধনেপাতা ভর্তা,শিম আলু দিয়ে ট্যাংড়া মাছের ঝোল, শাক ভাজী।
এতসব আয়োজনে সকলের চোখ কপালে।খেয়ে সবাই প্রশংসা ও করলো।
নিস্তব্ধ শুধু আড়চোখে একবার তাসফিরর দিকে চাইলো। এই পুচকে মেয়ে রান্না করতে ও জানে। তাসফি যেন আঙুল দিয়ে জোড় কদমে দেখিয়ে দিতে চাইছে, সে কোনো পিচ্চি, পুঁচকে, নাবালিকা নয়।
উহু! কিন্তু নিস্তব্ধ তো তা মানতে নারাজ। যত কিছুই করুক না কেন এই মেয়ে তার কাছে পুঁচকেই থাকবে।
তবে পুঁচকে মেয়ের হাতের খাবাবের স্বাদ অসাধারণ সেটা মানতেই হচ্ছে।
সবাই প্রশংসা করলে ও তাসফির ডাক্তার সাহেব নিশ্চুপ বদনে গম্ভীর মুখে একের পর এক খাবার সাবার করেই যাচ্ছে। টু শব্দটি নেই। তাছাড়া তাসফিই বা ওই অহংকারী লোকের কাছে প্রশংসা আশা করে রান্না করেছে নাকি। সে তো সবার জন্য রান্না করেছে।
তাসফির মস্তিষ্কের কথাকে মনের ডাক হেয় করে,
“কি মিথ্যুক রে তুই তাসফি, তুই কি তোর বর থেকে প্রশংসা পাবার লোভে রান্না করিস নি বল?
বাড়িতে তো রান্না জানা সত্ত্বেও কখনো রান্না করতি না। অথচ এখানে একদিন যেতে না যেতেই তুই রান্না ঘরে চলে গেলি।”
তাসফি তার হৃদয়ের ভাবনা কে একধমক দিয়ে চুপ করিয়ে দেয়। সে কারো এটেনশন পাওয়ার জন্য রান্না করে নি।তার ইচ্ছে হয়েছে তাই রান্না করেছে সিম্পল।
খাওয়ার এক ফাঁকে দাদু ওসমান শেখ বলে উঠলেন,
–” তা নাতবউ তোমায় আবার তোমার ঘাড়ত্যাড়া বরটা কোনো ভাবে জ্বালাচ্ছে না তো? যদি দেখ তাকে তোমায় কিছুতে বিরক্ত করতে সোজা আমার কাছে এসে নালিশ করবে।৷ ওর ঘাড়ের সব কটা রগ আমি টেনে ছিড়ে ফেলবো।ডাক্তার হয়েছে দেখে কি সাপের পাঁচ পা দেখে ফেলেছে।
নিস্তব্ধ নাটকীয় ভঙ্গিমায় আওড়ালো,
“সাপের তো পাঁচ পা নেই দাদু কি করে দেখবো বলো।”
“চুপ করো দেয়াদব। তোমার সঙ্গে আমি কথা বলছি না।”
নাতিবউ তুই বল এই হতভাগা তোকে ডিস্টার্ব করে?
তাসফি ভদ্র সভ্য মেয়ের মতো মাথা নাড়লো।
নিস্তব্ধ বিরবির করে আওড়ালো,,
“সব কটা তার জাত শত্রু।
ঘাড়ে বউ চাপিয়ে ও শান্তি হয়নি এই বুরোর”
ফিরোজা বেগম গদগদ হয়ে বলল,,
ধূসর রংধনু পর্ব ২
“বাহ নাত বউ তুই ভারী ভালো রাঁধেছিস তো। ভেবেছিলাম বোধহয় নাত বউয়ের হাতে রান্না বান্না আর খাওয়া হবে না। নাতি আমার বিদেশি ধরে নিয়ে আসবে। তবে এবারে নিশ্চিন্ত হওয়া গেল।
তাসফি ফিসফিস করে বলল,,
” আমি আর নিশ্চিন্ত হতে পারলাম কোথায় নানি বলো। তোমার নাতি তো লাগাম ছাড়া। ঘুড়ি ওড়ানোর আগেই সে সুতো কেটে বেরিয়ে গেছে, কিভাবে যেন।
তার আল টানবো কি করে।”