অনুভবে তুমি সিজন ২ পর্ব ৩
লিজা মনি
শিখা চৌধুরি অগ্নির রুমে এসে ধাক্কা দিতে থাকে। দরজা ধাক্কানোর আভাস পেয়ে অগ্নি বিরক্তি নিয়ে দরজা খুলে দেই। শিখা চৌধুরি রুমের ভিতরে এসে হতভাগ। এই ছেলে পুরো রুমে ভেঙ্গেচুরে রেখেছে। তিনি পুরো রুমে এক পলক তাকিয়ে অগ্নির দিকে হতাশা ভড়া দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে,,,,,
” কি হয়েছে? এইভাবে রেগে আছো কেনো? নিজের কাজে ঝামেলা হয়েছে?
অগ্নি নিচের দিকে তাকিয়ে ছোট্ট করে উত্তর দেয়…
” না”
শিখা চৌধুরি — যদি কিছু না হয় তাহলে এইভাবে উত্তেজিত হচ্ছো কেনো? জানি না তুমি কেনো প্রফেস্যার হতে চাইলে। তুমি তো এইসব কাজ করার ছেলে না। তবে এইটা ভেবে খুশি লাগছে যে কারনেই হও না কেনো ভালো কাজে জয়েন হয়েছো। এখন ও সময় আছে ওইসব কাজ ছেড়ে দাও। নৈতিকতা আর আদর্শের পথ বেছে নাও তাহলে জীবন দেখবে এর চেয়ে ও সুন্দর। দেশে পুরোপুরি ভাবে থেকে যাও। দেখতেই পাচ্ছো তোমার বাবা তোমাকে মন্ত্রী পদে দেখতে চাই। শুধু তোমার বাবা না দেশের জনগন ও।
শিখা চৌধুরির কথা অগ্নি এতক্ষন মনযোগ সহকারে শুনে। তবে ঠোঁটের কোনে লেগে আছে এক তাচ্ছিল্য হাসি। নিজের হাসিটাকে আড়াল করে শিখা চৌধুরির উদ্দ্যেশ্যে বলে,,,,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
” মন্ত্রী হবো তা ও আবার আমি? হাসালে আম্মু। তুমি খুব ভালো করে জানো এইসব কাজ আমার সাথে যায় না। সময় আসলে সব ঠিক হবে আম্মু। এখন আপাযত সব কিছু সিক্রেট থাক।
শিখা চৌধুরি নিজের ছেলেকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষন করেন। হয়ত কিছু একটা বুঝতে ও পেরেছে।
শিখা চৌধুরি — জানি না তোমার মনে কি চলছে। তবে মা হয় আমি তোমার। তোমার এই ছন্নছাড়া অনিশ্চিত ভবিষ্যত মিশ্রিত জীবন সহ্য করতে পারব না। এখন ও সময় আছে ঠিক হও অগ্নি । মানুষের জীবন সীমিত। এই সীমিত জীবনটাকে সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে হয়। তুমি একটা এডাল্ট ছেলে আশা করি ভেঙ্গে ভেঙ্গে বুঝাতে হবে না।
অগ্নি — ছন্নছাড়া জীবন কোথায় দেখলে আম্মু? আমি তো একদম ঠিক আছি।
শিখা চৌধুরি এই নিয়ে আর কিছু বলে না। হাজার বললে ও কিছু হবে না।
শিখা চৌধুরি আলিয়াকে ডাক দিয়ে বলে,,,
” রুমটা পরিষ্কার কর। আর সাবধানে করিস হাতে কাচ গেথে যেতে পারে। ”
আলিয়া ভয়ে ভয়ে একবার অগ্নির দিকে তাকায়। কেনো জানি অগ্নিকে দেখলেই ওর ভয়ে আত্না কেঁপে উঠে। প্রথম যেদিন অগ্নি কানাডা থেকে চৌধুরি ভিলায় আসে ওইদিন আলিয়ার মনে হয়েছিলো কোনো হলিউড নায়েক এসেছে চৌধুরি বাড়িতে । পরে জানতে পারে উনি এই বাড়ির বড় ছেলে। যেমন গম্ভীর তেমন রাগচটা বদমেজাজী। এইসবের বাহিরে ও তার কাছে অগ্নিকে কেমন রহস্যময় মনে হয়। অগ্নির সামনে গেলেই ওর ভয় করে।
শিখা চৌধুরি আলিয়ার ভয়ার্ত মুখ দেখে বলে,,,
” এইভাবে ভয় পাচ্ছিস কেনো? অগ্নি কিছু করবে না তকে। যা রুমটা ক্লিন করে ফেল।
এরপর অগ্নির দিকে তাকিয়ে বলে,,,
” ফ্রেশ হয়ে খেতে আসো ”
শিখা চৌধুরি চলে যেতে নিলে আলিয়া ও পিছু পিছু যায়। এরপর ভয়ার্ত মুখ নিয়ে বলে,,,
” খালাম্মা আমাকে বাঘের গুহায় রেখে কই যাচ্ছেন? অগ্নি ভাই খাওয়ার জন্য নিচে নামলে তখন পরিষ্কার করে দিমু খালাম্মা। এখন ভাইজানের সামনে পরিষ্কার করতে গেলে সব উল্টা পাল্টা করে ফেলব। পরে ভাইজানের সেই আত্না কাঁপানো রাম ধমক খাওয়া থেকে কেউ আটকাতে পারবে না। আবার মাইর ও পিঠে পড়তে পারে। ও খালাম্মা এখন না করে একটু পরে করলে হয় না।
শিখা চৌধুরি আলিয়ার কথা শুনে ফিক করে হেসে ফেলে। শিখা চৌধুরি আলিয়াকে গ্রাম থেকে এনেছে। শিখা চৌধুরি আর সাজিদ চৌধুরি গ্রামে জগন্নাথপুর গিয়েছিলেন কোনো একটা কাজে। তখন তাদের সামনে এক রিক্সা বৃদ্ধা এক্সিডেন্ট করে মারা যায়। আর সেই বৃদ্ধার মেয়ে হচ্ছে আলিয়া। লোক জন বলাবলি করছিলো মেয়েটার শেষ সম্বল নাকি তার বাবা ছিলো। এখন এই বারো বছরের মেয়েটার কি হবে। তখন আলিয়ার এই নিষ্পাপ মুখ দেখে শিখা চৌধুরির ও প্রচুর মায়া হয়। তখন তিনি আলিয়াকে নিজের সাথে করে চৌধুরি বাড়িতে নিয়ে আসে। এখন আলিয়ার বয়স প্রায় সতেরো। চৌধুরি বাড়ির সকল স্টাফদের সাথে তার খুব সখ্যতা।
শিখা চৌধুরি — ঠিক আছে পরে করলে ও সমস্যা নেই। এত ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
ঘড়ির কাটার টংটং শব্দে জানান দিচ্ছে এখন রাত একটা। হঠাৎ ফোনের রিংটনে অগ্নির কাচা ঘুমটা ভেঙ্গে যায়। ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে রাগটা ধপ করে চেপে বসে। ফোন রিসিভ করে দাতে দাত চেপে বলে,,,,
” শালা ফোন করার সময় পাস না। এত রাতে ফোন দিয়েছিস কেনো?
ওইপাশ থেকে — ওমা তুই এখন এত তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যাস। আচ্ছা বাদ দে এইসব কথা। কানাডায় কবে ফিরছিস?
অগ্নি — এর জন্য এত রাতে ফোন দিয়েছিস?
ওইপাশ থেকে — না কারনটা আসলে এইটা না। খবর এসেছে তুই নাকি বাংলাদেশে মন্ত্রী পদে নির্বাচনে দাঁড়াবি।
এই নিউজটা শুনে আমি আর ইউভি কিছুক্ষন মন খুলে হেসেছি। জীবনের প্রথম এমন অসাধারন জোক্স শুনেছি। অগ্নি চৌধুরি নাকি মন্ত্রী পদে নিয়োগ হবে হা হা হা।
অগ্নি — এখানে হাসার কি আছে? আর দাঁড়ালে ও সমস্যা কোথায়?
ওইপাশ থাকা ব্যক্তিটি যেনো কোনো অবিশ্বাস্য বার্তা শুনেছে।
ওইপাশ থেকে — সত্যি বলছিস ভাই? তাহলে তো আমি অনেক হ্যাপি। আমি ও চাই তুই এসব ছেড়ে দিয়ে ভালো কাজে নিয়োগ দে । এরপর একটা বিয়ে করে বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে নে।এরপর বাচ্চাকে কোলে নিয়ে ঘুরে বেড়াবি। তাহলে দেখবি জীবন সুন্দর।
ওইপাশ থেকে এইসব শুনে অগ্নি বিরক্তি নিয়ে বলে,,,
” আই সয়ার রায়ান তুই যদি এখন কানাডায় না থেকে বাংলাদেশে থাকতি তাহলে তর ভবিষ্যৎ বাতি নিভিয়ে মেয়েলি স্বভাব দুর করতাম শালা।
অগ্নির কথা শুনে রায়ান ভেবাচেকা খেয়ে যায়। এরপর সিরিয়াস ভাব নিয়ে বলে,,,
” তকে ঙ্গান দেওয়াটা ও বোকামি। আরেকটা কথা জিজ্ঞাসা করছি ত্যারা কথা বলবি না একদম। শুনেছি তুই ভার্সিটির প্রফেস্যার নিয়োগ হয়েছিস কিছুদিনের জন্য? বিশ্বাস কর এত কিছু আমরা এক সাথে নিতে পারছি না। নিজের কাজে জন্য দেশের মাটিতে পা রাখলি এর মধ্যেই একদম নিতীবান ন্যায়পরায়ন হয়ে গেলি ভাবা যায়।
অগ্নি — পাঁচ সেকেন্ড সময় দিলাম ফোন কাট। নাহলে এখন ওই কানাডার উদ্দ্যেশ্যে বের হব শুধু তকে পিটানোর জন্য।
সাথে সাথে ওই পাশ থেকে ফোন কেটে যায়। অগ্নি পুরো রুম জুড়ে একবার চোখ বুলায় এরপর রহস্যময় হাসি দিয়ে ঘুমের রাজ্যে পারি জমায়।
মিসেস শিখা চৌধুরি আর আলিয়া কিছু গার্ড নিয়ে মর্নিং ওয়াক করার জন্য বের হয়। আলিয়া আসতে না চাইলে ও শিখা চৌধুরি জোড় করে নিয়ে আসে। সকালের মিষ্টি বাতাস সব মনুষ্য জাতির জন্য এক নিয়ামত। পিছনে চার পাাঁচ জন গার্ড আর সামনেই শিখা চৌধুরি আর আলিয়া হাটছে। তারা চৌধুরি ভিলা থেকে প্রায় অনেক দুর পর্যন্ত চলে এসেছে।
শিখা চৌধুরি — আজকে এই পর্যন্ত ওই থাক। অনেক দুর পর্যন্ত চলে এসেছি।
আলিয়া — চলেন খালাম্মা আমার ও ক্লান্ত লাগছে।
শিখা চৌধুরি যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই চোখ যায় কয়েকজন পথ শিশুর দিকে। যারা গোল হয়ে রেয়েছে আর তার মধ্যে রয়েছে একটা মেয়ে। মায়াবী মুখশ্রী তার সাথে স্নিগ্ধ হাসি। পোশাক – কাপড় যথেষ্ট সাবলীল। পথশিশুগুলোকে হাসি মুখে খাবার বিতরন করে দিচ্ছে। যেনো এই কাজে মেয়েটি পর্যাপ্ত শুখ পাচ্ছে।
এই দৃশ্য দেখে শিখা চৌধুরির মনে এক ভালোলাগা বয়ে যায়। আজকাল মেয়েরা তো দাপটের সাথে চলে কয়জনে এই অভুক্ত শিশুদের খবর নেই।
শিখা চৌধুরি ধীর পায়ে পথশিশুদের কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। মেয়েটি শিখা চৌধুরিকে দেখে সম্মানের সহিত সালাম দিয়ে বলে,,,,,
” আসসালামু আলাইকুম আন্টি। জি কিছু বলবেন?”
শিখা চৌধুরি হাসি দিয়ে বলে,,
” না মা কিছু বলার জন্য নয় দেখার জন্য এসেছি। এই যুগে এসেও এত ভালো মেয়ে পাওয়া যায়। কি নাম তোমার?
মেয়েটি —জি ইয়ানা বিনতে আসাদ। ডাক নাম ইয়ানা।
শিখা চৌধুরি — বাহহ খুব মিষ্টি নাম ঠিক তোমার মত। আজ কি উপলক্ষে এদের খাবার খাওয়াচ্ছো তাও সকাল সকাল।
ইয়ানা — কোনো উপলক্ষ নয় আমি তাদের সপ্তাহ দুই দিন খাবার খাওয়াই এমনি। খাওয়াতে ভালো লাগে। তাদের মুখের তৃপ্তিময় হাসি আলাদা এক শান্তি কাজ করে।
শিখা চৌধুরি — মেয়ে হিসেবে তুমি খুব নমনীয় ভদ্র সুশীল তা কিছুক্ষনের মধ্যেই অনুধাবন করতে পেরেছি। ধন্য সেই বাবা যিনি তোমার মত মেয়েকে জন্ম দিয়েছেন। তাহলে আজ আসি। কোনো একদিন আবার দেখা হবে।
ইয়ানা *— ঠিক আছে আল্লাহ হাফেজ।
শিখা চৌধুরি ভিবানে বসে বসে কিছু একটা ভাবছে। এমন সময় অগ্নি ড্রয়িং রুমে প্রবেশ করে। পরনে জিম করার ড্রেস। ব্লেক ট্রাওজার, গায়ে হাতা কাটা গেঞ্জি। ফলে জিম করা বডির সাথে বাহুগুলা দৃশ্যমান। গেঞ্জিটা বডির সাথে শক্ত হয়ে লেপ্টে আছে। হাতের আর ঘারের ট্যাটুগুলো দেখা যাচ্ছে। প্রায় অনেক্ষন জিম করার ফলে ফর্সা মুখখানায় লাল আভা ছড়িয়ে পড়েছে।
শিখা চৌধুরি অগ্নির যাওয়ার পানে কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকে। মুখের কোনে লেগে আছে মুচকি হাসি।
আলিয়া শিখা চৌধুরিকে হাসতে দেখে কপাল কুচকে নেয়। খালাম্মাকে কি ভুতে ধরলো নাকি? সেই কোন সময় থেকে একা একা হেসে যাচ্ছে।
আলিয়া — খালাম্মা এইভাবে হাসতাছেন কেন?
শিখা চৌধুরি — আজ রাস্তায় যে মেয়েটার সাথে দেখা করেছি মেয়েটা অনেক সুন্দরী সাথে ভদ্র ও তাই না।
আলিয়া — একদম খালাম্মা আমার ও খুব ভালো লাগছে। তার উপর গরিবদের কত মায়া করে। যারা গরিবদের মায়া করে তাদের আমার খুব ভালো লাগে নিজে গরিব তো তাই। ওই মাইয়াটা যদি বড় ভাইজানের বউ হইত তাইলে কত ভালো হইত তাই না খালাম্মা।
শিখা চৌধুরি — এত দিনে একটা মনের মত সত্যি কথা বলেছিস। আমার তো খুব মনে ধরেছে। এই মেয়ে চৌধুরি বাড়ির বউ হওয়ার যোগ্যতা রাখে।
আলিয়া মন খারাপ করে বলে,,,,
” কিন্ত বড় ভাইজান তো জীবনে ও রাজি হবে না। ওনি শুনলে আর ও ঘূর্নিঝর শুরু করবে। ”
শিখা চৌধুরি — এইটাই তো ভয় ছেলেটাকে নিয়ে। কিন্তু এমন কাজ করব যে ও করবে সাথে ওর বাপে ও করবে।
শিখা চৌধুরির কথা শুনে আলিয়ার চোখ বড় বড় হয়ে যায়।
আলিয়া — খালাম্মা আপনি খালুজানের আবার বিয়া দিবেন?
শিখা চৌধুরি — আরে আহাম্মক এইটা কথার সাথে বার্তা। তবে আমার এই বিয়ের মিশনে তর সাহায্য লাগবে।
আলিয়া — আরে খালাম্মা আমি তো আপনার এসিস্টেন্ট নাকি কি কয় ওইটা। শুধু আদেশ করবেন আমি আলাদিনের দৈত্যের মত সব হুকুম পালন করা শুরু করব।
শিখা চৌধুরি — চাপা কম মার মা। মেয়েটার নাম ইয়ানা বলেছিলো তাইতো?
আলিয়া — হ্যা।
শিখা চৌধুরি –আজ ওই মেয়ের বাড়িতে প্রস্তাব নিয়ে যাব। তর খালুজানের সাথে কথা বলে আসি। আর খবরদার এইটা যাতে অগ্নি কোনোভাবে জানতে না পারে। সময় হলে ওকে আমরা জানাব। বিয়ে করবে না তাইতো? এখন তাহলে ছলনার আশ্রয় নিব। কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলতে হয়। এখন বিয়ে করতে বাধ্য হবে।
শিখা চৌধুরি রুমে চলে যাওয়ার জন্য উদ্ধত হতেই অরিদ ঘুম ঘুম চোখে ভিবানে বসে পরে। শিখা চৌধুরি অরিদের দিকে তাকিয়ে বলে,,,,
” আজ ও সারা রাত সজাগ ছিলে তাইতো? ”
অরিদ মায়ের দিকে চট করে তাকায়।
অরিদ — হুম কিছু পেইন্টিং বাকি ছিলো? তাই রাতেই করে শেষ করেছি।
শিখা চৌধুরি — নিজের বাবার কথা ও তোমরা দুই ভাই একটু ভেবো। ভবিষ্যতে চৌধুরি কম্পানির হাল তোমাদের ওই ধরতে হবে।
অরিদ — আমি এইসব পারব না আম্মু। আমি একজন আর্টিস্ট হতে চাই এইসব ব্যবসা বানিজ্য আমাকে দিয়ে হবে না।
শিখা চৌধুরি নিজের ছেলে দুইটাকে নিয়ে সত্যি খুব অসন্তুষ্ট। বিরিক্ত নিয়ে বলে,,,,
” তাহলে চৌধুরি ইন্ডাস্ট্রির হাল কে ধরবে শুনি? না অগ্নি এইসবে পাত্তা দিচ্ছে সে আছে তার জীবন নিয়ে আর এইদিকে তুমি আছো তোমার জীবন নিয়ে।
” মাত্র দুই ভাইকে জন্ম দিয়ে একদম ঠিক করো নি আম্মু। তোমার উচিৎ ছিলো চার জন ছেলের জননী হওয়া। আমি আর অরিদ নিজেদের ইচ্ছে নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম আর বাকি দুইজন ব্যবসা আর ক্ষমতা সামলাত। চৌধুরি বাড়ির বড় বউ তুমি এইটুকু বুদ্ধি তোমার আগে কাজ করে নি। এইটা একদম ঠিক করো নি আম্মু।
অগ্নির কথা শুনে অরিদ ঠোঁট চেপে হাসি সংযত করছে। আম্মু ঠিক মত জব্দ হয়েছে। শিখা চৌধুরি ছেলে দুইটার মুখের দিকে তাকিয়ে বিয়াদপ বলে রুমে চলে যায়।
শিখা চৌধুরি চলে যেতেই অরিদ অট্টহাসিতে ফেটে পরে।
অরিদ — ওহহ ভাইয়া তোমার জব্দ করাটা সেই ছিলো ।
অগ্নি গম্ভির হয়ে অরিদের উদ্দেশ্যে বলে,,,
” ভার্সিটিতে জুনিয়র ছেলেদের সাথে মারামারি করিস কেনো? আবার নাকি মেরে হসপিটালে ও পাঠিয়েছিস? নিজের ক্যারিয়ারে ফোকাস কর এইসব মারামারির ভিতরে ডুকছিস কেনো.?
অগ্নির কথা শুনে অরিদ চুপসে যায়।
অরিদ — একটা ঝামেলা হয়েছিলো এরপর হালকা কথা কাটাকাটি। বাট ওর মাথায় যে আঘাত পেয়েছে তা নিজের দোষের জন্য ওই। আমাকে মারতে এসেছিলো আমি সরে গিয়েছিলাম পরে নিজে গিয়ে ব্রেঞ্চে ধাক্কা খায়। এখানে আমি কি করব?
অনুভবে তুমি সিজন ২ পর্ব ২
অগ্নি — হুম এপর যাতে এমন না দেখি।
এই বলে অগ্নি দ্রুততার সঙ্গে ড্রয়িংরুম ত্যাগ করে।
অগ্নির যাওয়ার পানে তাকিয়ে অরিদ বিরবির করে বলে,,
” নিজে চুর হয়ে অন্যকে বলছে চুরি করিস না হুহ। ”