ধূসর রংধনু পর্ব ২০
মাহিরা ইসলাম
নিস্তব্ধ তাসফিদের বাড়ি থেকে বের হয়েছিল হসপিটালে জরুরি কাজ আছে বলেই।তবে সে হসপিটালে যায় নি।একবারে বাসায় এসেছিল।
বিকালের দিকে নিস্তব্ধ নিজের রুমেই বসেছিল।
হঠাৎ হসপিটাল থেকে কল এলো,ইমারজেন্সি রুগী এসেছে তাকে একটু আর্জেন্ট হসপিটালে পৌঁছাতে হবে।
গোধূলি বিকেল।পরিবেশ বোধহয় একটু বেশিই উত্তপ্ত। গাড়িতে হঠাৎ করে নিস্তব্ধ’র কেমন অতিরিক্ত উষ্ণ অনুভব হচ্ছে। প্রচন্ড অস্থির লাগছে।রাস্তায়ও বোধহয় আজকের জ্যামটা একটু বেশিই মনে হচ্ছে। হঠাৎ এমন অস্থিরতা কাজ করার কারণ নিস্তব্ধ’র বোধগম্য হলো না।
হসপিটালে পৌঁছাতে নিস্তব্ধ’র একটু দেরিই হয়ে গেল।পেশেন্টের অবস্থা তখন ক্রিটিক্যাল।
ডাক্তাররা মিটিংয়ে বসেছে। তাদের পক্ষে তার চিকিৎসা করে এই ক্যান্সার সারিয়ে তোলা সম্ভব না।পেশেন্টের ব্লাড ক্যান্সার লাস্ট স্টেজে আছে।
এই ক্যান্সার দ্রুত রক্তের মাধ্যমে কোষ কে ক্ষতিগ্রস্ত করে। ভদ্রলোক যদি আরো আগেই সতর্ক হয়ে চিকিৎসা নিতেন তাহলে ব্যাপারটা এতটা ভয়ংকর পর্যায় যেতো না।উপসর্গ গুলোকে এরিয়ে না গিয়ে তার চিকিৎসা নেওয়া জরুরি ছিল।
বর্তমানে এমনি হয়। মানুষ ছোট ছোট উপসর্গগুলোকে পাত্তা না দিয়ে পরবর্তীতে বিরাট ঝুঁকির সম্মুখীন হয়। এটাই বাঙালীর দোষ।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
ডাঃ হাবিব নিস্তব্ধ কে জিজ্ঞেস করলেন,
তুমি কি কিছু বলতে চাও রিপোর্ট গুলো দেখে?
নিস্তব্ধ রিপোর্টটা পাশে রেখে কাঁপা কন্ঠে শুধু জবাব দিল,
-“আমি একটু পেশেন্ট কে দেখতে চাই।”
বলেই সে বেরিয়ে গেল।
উপস্থিত ডক্টররা কিছুটা ভরকে গেলেন।নিস্তব্ধ কখনো এমন অস্বাভাবিক আচরণ করেনি।
হঠাৎ কি হলো তার।
নিস্তব্ধ পেশেন্টের রুমে যেতে যেতে বাম হাত দিয়ে কপালের ঘাম টুকু পুছে ফেলার চেষ্টার করলো।তবে সফল হলো না।সে যেটা ভাবছে তা যেন কিছুতেই না হয়।তাহলে সর্বনাশ হয়ে যাবে।কি করে সম্ভব তা।দুপুরের আগ মুহুর্তেও লোকটাকে সুস্থ স্বাভাবিক দেখে এসেছে সে।
নিস্তব্ধ ঝটপট আইসিউতে ঢুকে গেল।আশে পাশে কে আছে এই মুহুর্তে কিছুই সে খেয়াল করলো না।
তার পিছু পিছু অন্য একজন ডাক্তার ওও এলো।
ভেতরে ঢুকে পেশেন্টের মুখাবয়ব অবলোকন করতেই নিস্তব্ধ থমকে দাঁড়িয়ে পড়লো।শেষ।সব শেষ।
রিপোর্ট স্পষ্ট লেখা ছিল পেশেন্টের নাম মোস্তফা কামাল।নামটা অবলোকন করে অজানা আসঙ্ক্ষায় নিস্তব্ধ’র কেমন দম বন্ধ হয়ে আসছিলো।তার সেই অজানা আসঙ্ক্ষায় সত্যি প্রমাণিত হলো।মনটা বার বার নাম টাকে এরিয়ে যেতেই চাইছিলো কিন্তু হলো না। হবে কি করে ঘটনা তো আরো অনেক আগেই ঘটে গেছে।
নিজ শ্বশুর কে এভাবে মৃত্যু পথযাত্রায় দেখে নিজেকে সামলাতে নিস্তব্ধ পাশের চেয়ারখানা শক্ত করে আকরে ধরলো।
তার যদি এই অবস্থা হয় তবে তার ধানিলঙ্কা বউয়ের এই মুহুর্তে কি অবস্থা। সে কি জানে বাবার এই অবস্থা? মেয়েটার তো বিকালে অবাড়ি যাওয়ার কথা ছিল। তবে কি থেকে কি হয়ে গেল হঠাৎ
নিস্তব্ধ অসাঢ় পায়ে বাইরে বের হলো।
দেখতে পেল তার ধানিলঙ্কা বউটা কেমন নির্জীব হয়ে পড়ে আছে মেজ চাঁচির কাধের সঙ্গে দেওয়ালে হেলান দিয়ে।হেছকি তুলে কান্না করে যাচ্ছে। চোখ মুখ লাল হয়ে আছে।চোখের পানি শুকিয়ে কাঠ।সকালের মতো তার মুখের সেই উজ্জ্বল নেই।মলিন হয়ে এসেছে।কন্ঠের তেজ ফুরিয়েছে। প্রিয়জনের অসুখে এমনই অনুভব হয়।কষ্টরা বাসা বাঁধে বক্ষমাঝে।তার দাদি অসুস্থ হলে ছোট নিস্তব্ধ ও এভাবে কেঁদেছিলো।
তাসফিট পাশেই তার ভাবী আয়েশা বসে আছে।পান্না ঘুমিয়ে, তার চোখ মুখেও ও চোখের পানি শুকিয়ে কাঠ।নিশ্চয়ই কাকিয়ার কান্নায় সেও কান্না করেছে।
মেজ চাঁচি জামাই বাবাজীকে দেখে যেন একটু সাহস সঞ্চয় করলো মনে।তাছাড়া তাসফির কাকা রা দুজনেই দেশের বাইরে। বাড়িতে সাহায্য যোগ্য পুরুষ মানুষ বলতে মোস্তফা সাহেবই ছিলেন।সেই এখন এই অবস্থায়। কি করে কি করবেন কিছুই বুঝছেনা সে মহিলা মানুষ।
ভাগ্যিস সঙ্গে আয়েশা ছিল। সেই তো ডক্টর দের সঙ্গে কথা বলে সব ব্যবস্থা করলো। মেয়েটা তো বাবার এই অবস্থা দেখে একদম নির্জীব হয়ে আছে। প্রথমে মা এখন বাবা।মেয়েটা কি করে সব সামলে উঠবে ভাবছে সে। ভাইজান তো ঠিক এই ভয়টাই পাচ্ছিলেন। কিন্তু সত্য কি বেশিদিন লুকিয়ে রাখা যায়।
নিস্তব্ধ তাসফির থেকে চোখ সরিয়ে আয়েশার দিকে এগিয়ে গেল, ভারী কন্ঠে বলল,
– “কখন হলো এসব ভাবী আমায় আরো আগে জানাও নি কেন।”
আয়েশা দেওর কে সব ঘটনা খুলে বলতে লাগলো…..
বিকালে,,
সব কিছু ঠিকঠাকই ছিল। মোস্তফা সাহেব মেয়ের সঙ্গে গল্প করছিলেন। পান্নার সঙ্গে দুষ্টুমি করছিলেন।
দুপুরে খাবার খেয়ে রেস্ট নিয়ে বিকালের আগ মুহুর্তে রেডি হয়ে বিদায় নিয়ে তাসফিরা ওবাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্য বের হলো।মোস্তফা সাহেব কে কেমন চিন্তিত লাগছিলো। তাসফি ভেবলছিলো তার যাওয়ায় বুঝি বাবার মন খারাপ। তাই আদুরে স্বরে বলল,
-” চিন্তা করো না তো বাবা আমি আবার আসবো তো।আমার মিষ্টি বাবা।”
কিন্তু তাসফি কি জানতো এটাই বোধহয় তার বাবার সঙ্গে মন খুলে তার শেষ কথা হবে।
তাসফি গাড়িতে উঠতে গেলেই মেজ চাঁচি ভাইজান বলে চিৎকার করে উঠলো।সবার কি হলো কি হলো শব্দে মুখে বুলি।
তাসফি পিছু ফিরে দেখলো তার বাবা আস্তে আস্তে মেজেতে লুটিয়ে পড়ছে।
তাসফি বাবা…. বলে চিৎকার দিয়ে হাতের ব্যাগ ফেলে দৌড়ে এলো।
মোস্তফা সাহেব তখন বড় বড় করে নিশ্বাস নিচ্ছেন। কিছু ক্ষণের মাঝেই তিনি জ্ঞান হারালেন মেয়ের হাত শক্ত করে মুঠোয় পুরে।
সবাই ধরাধরি করে তাকে হসপিটালে আনলো।
তাসফির বাবার শোকে মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। আয়েশা সব ফর্মালিটিস পূরণ করে মোস্তফা সাহেব কে ভর্তি করালো।
তাড়াহুড়োয় সে মোবাইল টাও আনার কথা ভুলে বসেছিল।তার দেওর যে এই হসপিটালে তাও মাথায় ছিল না। আসলে বিপদের সময় সবারই মাথা টা একটু কম কাজ করে।মানুষ অধিক উত্তেজিত হয়ে পরে।
আয়েশার কথা শেষে তাসফি শক্ত হয়ে বসলো।
চোখের পানি মুছে আয়েশার উদ্দেশ্যে বলল,
-” ভাবী ওনাকে বলুন আমার বাবার রিপোর্ট আমাকে দিতে। আমার বাবার কি হয়েছে জানার সম্পূর্ণ অধিকার আমার আছে।”
নিস্তব্ধ কিছু বলল না।
তাসফি আবারো বলল,
-” বাবার এখন কি অবস্থা? আমায় তাকে দেখতে দিতে বলুন।”
নিস্তব্ধ থমথমে কন্ঠে বলল,
-” এখন দেখা করা সম্ভব নয়।”
তাসফি বিরুদ্ধিতা করে বলল,
-” কেন সম্ভব নয়।আমিও একজন মেডিকেল স্টুডেন্ট এমন তো নয় আমি ভেতরে গিয়ে হাঙ্গামা করবো।”
নিস্তব্ধ জবাব দিল না। মেজ চাঁচি কে একটু দূরে ডাকলো।
তাসফি সঙ্গে সঙ্গে বলল,
-” ভাবী ওনাকে বলুন যা বলার আমায় বলতে।চাঁচি কে কেন বলবে। আমার বাবার সম্পর্কে জানার কি আমার কোনো অধিকার নেই বলো।কেন সবাই আমার সাথে এমন করছো।কেন আমায় কিছু বলছো না তোমরা।আমায় বাবাকে দেখতে দাও।”
আয়েশা তাসফিকে শান্ত হতে বলল,
-” শান্ত হও বোন আমার এমন করো না। আঙ্কেল কে তো নিস্তব্ধ দেখছে ।তুমি এমন করলে কি করে হবে বলো।ভেতরে ঢোকা এখন সবারই নিষিদ্ধ। ”
-” ঘোড়ার ডিমের ডাক্তার উনি ভাবী আমার বাবাকে সুস্থ করে দিতে পারছে না। পঁচা ডাক্তার উনি।কিছু জানে না সে।কোনো পড়াশোনা করে নি।আমার জন্ম আরো কয়েক বছর আগে হলে আমি ঠিক এতদিনে ডাক্তার হয়ে বাবাকে সুস্থ করে তুলতাম।”
বলেই আবারো হেঁচকি তুলে কান্না করতে লাগলো।
আয়েশা তাকে সামলানোর চেষ্টা করলো।বুঝলো অতি শোকে মেয়েটা আবল তাবল বকছে।
খবর পেয়ে অনিমা বেগম আর বাসন্তী ওও হসপিটালে আসছে।
নিলয় সাহেব এই মুহূর্তে শহরে নেই।
ওসামান শেখ ওও আসবে।তার শরীরটাও বেশি ভালো নয়।
নিস্তব্ধ মেজ চাঁচিকে বলললেন,
-” আঙ্কেলের এই অসুস্থতার কথা আপনারা কতদিন ধরে অবগত চাঁচি।”
চাঁচি মাথা নিচু করে নিলো।
নিস্তব্ধ আবারো বলল,
-“চুপ করে থাকবেন না চাঁচি আমায় বলুন।”
মেজ চাঁচি মুখখুললেন।
-” মাস তিনেক আগে ভাইজানের রোগ তখন দ্বিতীয় স্টেজ তখনই ব্যাপারটা তিনি আমায় জানান।”
নিস্তব্ধ চোঁয়াল শক্ত করে নিল।বলল,
-” তাহলে আরো আগে চিকিৎসা করান নি কেন? ও মাই গড বিয়ের পরেও তো আমায় একটু বলতে পারতেন।এখন এই মুহুর্তে এসে…..।
নিস্তব্ধ কপাল কুঁচকে রইলো।
মেজ চাঁচি মিন মিন করে বলল,
-” আসলে ভাইজানই চাননি চিকিৎসা করাতে।তিনি বলতেন বুঝলে ‘শরীফা আমি আর বেশি দিন বাঁচবোনা। আমার তাসফির মায়ের কাছে চলে যাওয়ার সময় হয়েছে।শুধু শুধু টাকা নষ্ট করে কি লাভ বলো, বরং টাকা গুলো থাকলে মেয়েটার আরো কাজে দেবে। তাছাড়া আমার চিকিৎসা করাতে গেলে ওই সামান্য টাকায় কিছুই হবে না।শুধু মৃত্যুর আগে এবারে মেয়েটার একটা গতি করতে পারলেই হয়।তুমি আমায় কথা দাও শরীফা তাসফিকে তুমি কখনো এই বিষয়ে কিছু জানাবে না।”
নিস্তব্ধ যা বোঝার বুঝে গেল।
আসলে দুনিয়াটাই এমন। টাকার অভাবে মাঝে মাঝে কতলোক সঠিক চিকিৎসার অভাবে মারা যাচ্ছে তার ইয়ত্তা নেই।এভাবেই চলছে মানুষের জীবন।
নিস্তব্ধ বলল,
-” আঙ্কেল কে এই মুহুর্তে এখানে রেখে চিকিৎসা করানো সম্ভব না।আমি চাচ্ছি তাকে লন্ডন নিতে। সেখানে কিছুটা হলেও যদি কিছু…”টাকার কথা চিন্তা করবেন না সেটা আমিই দেখবো।
মেঁজ চাঁচি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন,
-” যা ভালো বোঝো তাই করো বাবা।আমি আর কি বলবো। তবে মেয়েটাকে কিছু বলো না বাবা। আমি ভাইজানের কথা ফেলতে পারবোনা।”
বলেই চাঁচি চোখের পানি মুছে আবারো চললেন তাসফির নিকট।”
নিস্তব্ধ চাইলো তাসফির মাথাটা তার কাঁধে নিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে বলুক,
-” তুমি কেঁদনা বোকা মেয়ে। তোমার বাবার যা হবে আল্লাহ তায়ালাই দেখবেন।তুমি টেনশন করো না। আমি আছি তো।”
কিন্তু হাজারো জড়তায় হাহাকারে মনটা তার বিষিয়ে গেল। হৃদয়ের লোকানো অনুভূতি কে আর প্রকাশ করা হলো না তার। হসপিটাল থেকে বেরিয়ে এলো নিস্তব্ধ। শ্বশুরের জ্ঞান নেই । পরিবেশটা তার জন্য কেমন বিষাক্ত। কই এর আগে তো কত পেশেন্ট কে এমন মৃত্যু শজ্জায়িত অবস্থা দেখে এসেছে।কই তখন তো এমন হয় নি।তবে কি আপন জন বলেই এমন হচ্ছে।
সব শুনে ওরা নিস্তব্ধ কে কি বলে সান্ত্বনা দেবে বুঝতে পারলো না। তবে এতটুকু খুব ভালো করে বুঝলো।তাদের চুপচাপ বন্ধু নিস্তব্ধ বউকে মানবেনা মানবে না করার পরেও বউয়ের প্রেমে সে ভীষণ ভাবে ফেঁসেছে।এখন শুধু তার বন্ধুটা তা একটু অনুভব করতে পারলেই হলো।তাহলে আর কখনো তাসফিকে অবহেলা করতে পারবেনা।
সৃজন নিস্তব্ধ’কে তার দিকে ফিরিয়ে দিয়ে প্রশ্ন করলো,
-” তাসফিকে ভালোবাসিস?”
নিস্তব্ধ বিরস কন্ঠে জবাব দিল,
-” ওমন শক্তপোক্ত ধানিলঙ্কা কে ভালোবাসার সাধ্যি কি আমার আছে বল,সে তো আমায় তার অনলে পুরিয়েই ছাঁই করে দেবে।তাকে পোড়াতে চেয়েছিলাম।অথচ দেখ আমি প্রতিনিয়ত তার অনলে পুড়ে ছাঁই হয়ে যাচ্ছি। আবার বলছিস ভালোবাসা।”
সৃজন আবার প্রশ্ন করলো,
-” বউকে ভালোবাসিস?”
নিস্তব্ধ রাগি চোখে তাকিয়ে বলল,
-” তোদের কতবার বলেছি। আমি ওই পুঁচকে মেয়েকে বউ হিসেবে মানবো না।হোক সে আঠারো প্লাস।তবুও সে আমার হাঁটুর সমান। আবার বলছিস ভালোবাসা।”
সৃজন, সুজন, মাহীন তিনজন হতভম্ব হয়ে নিস্তব্ধ’র দিকে ভ্যাবলাকান্তের মতো তাকিয়ে রইলো।
মানেটা কি তাসফি কে ভালোবাসবে না।বউকে বলছে মানবেনা তবে এই সালা কষ্ট পাচ্ছে কার জন্য।
সালা তো গিরগিটির থেকেও দ্রুত রং পাল্টায়।
সুজন নিস্তব্ধ’র গলা চেপে ধরে বলল,
-” সালা বউকে মানিস না তাসফিকে ভালোবাসিস না তবে কষ্ট পেয়ে এইযে নিজেকে কষ্ট দিচ্ছিস কি জন্য শুনি।মেরে না তোর হাড়গোড় ভেঙে ফেলবো।
নিস্তব্ধ আবারো হতাশ কন্ঠে বলল,
-” ভালোবাসি না তো।ওই বোকা মেয়েকে ভালোবাসা যায় নাকি।একটুও ভালোবাসি না আমি ওকে।একটুও না।”
মাহীন তো কম সয়তান নয়।সে চট করে নিস্তব্ধ’র কথাটা রেকর্ড করে নিলো।সুযোগ বুঝে সে কাজে লাগাবে।
ওরা হাল ছেড়ে দিলো।
ওদের তাসফির জন্য সত্যি খুব খারাপ লাগছে। কি চাইছে নিস্তব্ধ। এমন অবুঝপনা কেন করছে।
ওরা আর দাঁড়িয়ে থাকলো না।হসপিটালের চলল তিনজন।নিস্তব্ধ কে শত বলেও নিতে পারলো না।
অতঃপর তারা একাই গেল। এই মাঝ রাতে।
নিস্তব্ধ হসপিটাল আসলো দুইটার দিকে।
ধূসর রংধনু পর্ব ১৯
তাসফি হঠাৎ জ্ঞান হারিয়ে ফেলায় তাকে কেবিনে দেওয়া হয়েছে।
নিস্তব্ধ নিঃশব্দে আইসিউতে ঢুকলো।
অতঃপর কিছু মুহুর্তেই সে সাক্ষী হলো ভয়ংকর কিছু অনুভূতি সঙ্গে। একে একে সমস্ত অস্থিরতা তোলপাড় করে তুললো তার সারা অঙ্গজুড়ে।