মায়াবতীর ইচ্ছা পর্ব ২০

মায়াবতীর ইচ্ছা পর্ব ২০
ইশরাত জাহান

“আমার থেকে পালাচ্ছিস ভালো কথা।কিন্তু খাঁচার পাখি উড়াল দিয়ে অন্য খাঁচায় যাস না।এই রুদ্র সইতে পারবে না।”
প্রতিউত্তর করে না হিয়া।পিছনে ঘুরে দরজা খুলতে যায়।রুদ্র হিয়ার হাত আটকে ধরে।হিয়া রুদ্রের ছোয়া পেয়ে আজ ভয় পায়।এই হাত যে কাউকে খুন করেছে।রুদ্র হিয়াকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বলে,”কার থেকে পালাচ্ছিস তুই?তুই যার থেকে পালাবি তার থেকেও ভয়ংকর রূপ দেখতে পাবি।”
হিয়া চুপ করে শুনলো রুদ্রের কথা।ভাবতে লাগলো সে তো রুদ্রের দুর্বলতা হয়ে তাকে বিনাশ করতে চায়।তাহলে এমন ভয় পেলে তো হবে না।সাহস নিয়ে হিয়া বলে,”পালাবো কেন আমি?আমি তো শুধু অবাক হয়েছি আপনি আমার লাইব্রেরীতে।”

“আমি তো প্রায়ই আসি এখানে।”
“এভাবে এত সকালে আমার আগে আসেন না আপনি।তাই ভয় পেয়েছি।”
“আচ্ছা?”
“হুম।আপনি কি গল্পের বই পড়বেন?”
“না।তুই পড়বি আমি শুনবো।তোর মুখে ওই সাহিত্যিক প্রেমের বিশ্লেষণ শুনলে আমার মনের ভালোবাসার জাগ্রত হয়, হিয়াপাখি।”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

হিয়া হালকা হেসে বুকশেলফ থেকে বই নিয়ে পড়তে থাকে।রুদ্র টেবিলে দুই হাত ভাঁজ করে তাতে মাথা এলিয়ে তাকিয়ে থাকে হিয়ার দিকে।হিয়ার বইয়ের মাঝে আবদ্ধ চোখ।চশমার ভিতরে বড় বড় পাপড়ি আলা চোখ,বইয়ের প্রতিটি লাইনের সাথে সাথে চোখের দৃষ্টি পাল্টাতে থাকে।ঠোঁটের নড়াচড়ার পরিবর্তন হতে থাকে।রুদ্র হিয়ার বলা কথাগুলো কানে নিচ্ছে না।কারণ তার মন জুড়ে হিয়ার মুখমণ্ডল বিরাজ করছে।হিয়া বুঝতে পারছে রুদ্রের এই দৃষ্টি।কিন্তু সে পাত্তা দিচ্ছে না।সে চায় রুদ্র এখন তার প্রতি দূর্বল হোক।তারপর সে রুদ্রের থেকে ভালোবাসার ছলনা করে সবকিছু আদায় করে নিবে।

ঢাকার এয়ারপোর্টে এসে প্লেন থেকে একে একে নামতে থাকে সব গার্ড।সবাই নেমে সাইড হয়ে লাইন দিয়ে দাড়িয়ে থাকে।তারপর প্লেন থেকে নামে রাজ।রাজের পরপরই প্লেন থেকে নেমে পড়ে মায়া। পিয়াশ মৌয়ের হাত ধরে একসাথে নামতে থাকে প্লেন থেকে।চেকিং কমপ্লিট করে মায়া রাজ ও মৌ পিয়াশ এক জায়গায় দাড়ায়। গার্ডগুলো তাদের পিছনে দাঁড়িয়ে আছে।মায়ার দিকে তাকিয়ে রাজ কিছু বলতে যাবে তার আগে মায়া দৌড়ে যেয়ে কোনো এক যুবককে জড়িয়ে ধরে।রাজ ও পিয়াশ অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। পিয়াশ বলেই ফেলে,”এ আবার কোন চরিত্র?”
মায়া যুবকটিকে জড়িয়ে ধরে বলে,”ডু ইউ মিস মি?”
যুবকটি মায়ার গালে হাত রেখে বলে,”মিস ইউ লট মাই বেবিডল।”
মায়া একগাল হেসে তারপর যুবকটির হাত ধরে রাজের সামনে আসে।রাজের দিকে তাকিয়ে বলে,”মিট মাই উড বি,মিহির।”

রাজ অবাক হয়ে বলে,”উড বি?”
মায়া মিহিরের দিকে তাকিয়ে বলে,”ইয়াহ, মাই ওয়ান অ্যান্ড ওনলি লাভ।আপনাকে তো বলেছিলাম আমার জীবনে কেউ আছে।ওই যে চট্টগ্রামে যাওয়ার দিন প্লেনে।”
রাজের মনে পড়ে যায়।তারমানে মায়া এই ছেলেটির কথা বলেছিলো।মায়া মিহিরের দিকে তাকিয়ে বলে,”ইউ নো হোয়াট?আমাদের মন্ত্রী মশাই আমাকে পুরো জার্নিতে সাপোর্ট করেছে।আমাকে অনেক বিপদের মুখ থেকে রক্ষা করেছেন তিনি।তার জন্যই বলা যায় আমি বেঁচে গেছি।উনি না থাকলে হয়তো আমার উপর আরো অ্যাটাক হতো।”
মিহির সহানুভূতি প্রকাশ করে বলে,যদিও আমার বেবিডল অনেক ব্রেভ। ও এমনিতেই সবকিছু ম্যানেজ করে নিতো কিন্তু আপনি ওকে অনেক হেল্প করেছেন।থ্যাংক ইউ সো মাচ।”

রাজ কোনো রিয়েকশন দেখায় না। মায়া মিহিরের হাত ধরে চলে যায়।রাজ তাকিয়ে দেখছে মায়া ও মিহিরের হাত একসাথে।তারা একই দিকে একসাথে বড় বড় পা ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে।গাড়িতে উঠে মায়া মিহিরের দিকে তাকিয়ে ভিলেনি হাসি দিয়ে বলে,”গুড জব।”
মিহির নিজেও হো হো করে হেসে বলে,”তোমার মন্ত্রী মশাই তো পুরো বোম হয়ে আছে, বেবিডল।বেচারা বুঝলো না আমরা নাটক করছি।”
“শাহমীর রাজকে এত কাচা ভেবো না মিহির ভাই।ওনার চোখে আগুনের আভাস দেখেছি।যেটা এখন দাউ দাউ করে জ্বলবে আর তার বেনিফিট আমার হবে।”

সন্ধায়,
মোহন সরদার আজ ক্ষেপে আছেন।তার কোম্পানির প্রমোটের জন্য একজন অ্যাকট্রেস হায়ার করেছিলো।সে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়েছিলো।সামান্য একটু খাবার খেয়ে তার সুনাম করবে ক্যামেরার সামনে।এটাই ছিলো কোম্পানির প্রমোটের বিশেষ কাজ।এটা বিভিন্ন চ্যানেলে এড হয়ে আসলে তার বেনিফিট হবে।কারণ সে এখন কোনো ডিল পাচ্ছে না।আবার ছোটখাটো দোকান ছাড়া তার খাবারগুলো কেউ নিচ্ছে না।মোহন সরদার তার এসিস্ট্যান্টকে জোর গলায় বলেন,”কোথায় সেই মারিয়া?আমার থেকে মোটা টাকা নিয়ে পালিয়েছে কেনো?”
এসিস্ট্যান্ট ভয় পেয়ে যায়।বলে,”আসলে স্যার উনি কোন ফ্যাশন হাউজের প্রোমোট করতে গেছে।ওটা নাকি ওভার বেনিফিট।”

“তাকে তুলে আনো নাই কেনো?”
“আমরা গিয়েছিলাম।কিন্তু ওই কোম্পানির সিইও অনেক পাওয়ারফুল।তাই সফল হইনি।”
“গাড়ি বের করো মারিয়ার শুটিং প্রেজেন্ট স্পটে।আমি দেখতে চাই কেমন পাওয়ারফুল সিইও।”
বলেই গাড়ি করে বের হয় মোহন সরদার। সোজা মারিয়া মানে প্রোমোট এর শুটিং স্পটে এসে দাড়ালো মোহন সরদার।রাগে হুংকার ছেড়ে মোহন সরদার মারিয়ার বাহু শক্ত করে ধরে বলে,”মা**,তোকে বিছানায় নিয়ে ভালোবেসেছিলাম বলে বেশি লাই পেয়েছিস?আমার কাজের জন্য টাকা নিয়ে আবার আমার সাথে বেইমানি করছিস।”

মারিয়া আশেপাশে তাকিয়ে দেখে।সবাই তাকিয়ে আছে তার দিকে। হ্যাঁ এটা সত্যি যে সে মোহন সরদারের সাথে পার্টনার হয়েছিলো।ইনফ্যাক্ট মোটা অঙ্কের টাকা দুই কাজের জন্য পেয়েছে।কিন্তু এই ডিলটাতে বেনিফিট ছিলো। আর এর জন্য তাকে মোহন সরদারের থেকেও বেশি টাকা দেওয়া হবে।মোহন সরদারকে নিজের পার্সোনাল রুমে এনে ইজি চেয়ারে বসিয়ে দেয় মারিয়া।মোহন সরদারের কোলে বসে বলে,”রিলাক্স সুইটহার্ট।আমি তো এই জায়গায় শুট শেষ করে তোমার কাছে যেতাম।আমি তোমার কাজটাও করবো।এত হাইফার হচ্ছো কেনো?”
“গুল্লি মারি তোর রিলাক্স এর।আমার কাজ বাদ দিয়ে এখানে এসেছিস কেনো?”
“ওহ হো হানি। ইটস কলড বেনিফিট।এই কোম্পানির সিইও আজ চট্টগ্রাম থেকে এসেছেন।ওনার হাতে সময় কম।তাই আমাকে ডাবল পেমেন্ট করে শুটিং করতে নিয়ে এসেছে।”

কে শোনে কার কথা।মোহন সরদার তড়িৎ গতিতে মারিয়াকে টানতে টানতে নিয়ে গেলো নিজের কোম্পানিতে।মারিয়াকে ছুড়ে মারে একটি সোফায়।তারপর একজন মেয়েকে বলে,”ওকে রেডি করে দেও।”
মেয়েটি তৈরি করে দেয় মারিয়াকে শুটিংয়ের জন্য।তৈরি হওয়ার পর মারিয়া ক্যামেরার সামনে আসলে কিছু পুলিশ হাজির হয় সেখানে।ক্যামেরার পিছনে চেয়ারে বসেছিলো মোহন সরদার।পুলিশ দেখে অবাক হলেন তিনি।চেয়ার থেকে উঠে দাড়িয়ে তাকিয়ে আছেন সেদিকে।পুলিশ এসে মোহন সরদারকে বলে,”একটি মেয়েকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজ করার অভিযোগে আপনাকে অ্যারেস্ট করা হবে,মোহন সরদার।”
“হোয়াট?আমি কাকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজ করাচ্ছি?”
“আপনি মিস মারিয়াকে গুরুত্বপূর্ণ শুটিং থেকে জোর করে নিয়ে এসেছেন।সাথে করে ওই কোম্পানির পুরো দিনের কাজকে ওয়েস্ট করেছেন।তারও অভিযোগ করা হয়েছে। আপনি যার কোম্পানির ক্ষতি করতে চেয়েছেন সে এই কেস করেছে।”

“আমি যে তার ক্ষতি করেছি অথবা মারিয়াকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে এনেছি তার কোনো এভিডেন্স আছে?”
“বিনা কোনো এভিডেন্সে চলে না মেহেরুন জাহান মায়া।মায়ার কাজ ও মায়ার ইচ্ছা মায়ার জীবনের মেইন টার্গেট।সেই টার্গেটে যে বাধা হয়ে আসে তার জীবনে কাল হয়ে আসে এই মায়া।নামের সাথে কিন্তু কাজের মিল নেই মিস্টার মোহন সরদার।”
বলতে বলতে সেখানে এন্ট্রি নেয় মায়া।মোহন সরদার তাকায় মায়ার দিকে।মায়ার মুখে রহস্য বিদ্রুপ নিয়ে ভরা।
মায়ার দিকে তাকিয়ে মোহন সরদার বলেন,”কি প্রমাণ আছে তোমার কাছে?”
“আপনি মনেহয় দেখেননি আপনি যখন শুটিং স্পটে এন্ট্রি নেন তখন মারিয়ার শুটিং চলছিলো।সে তখন ক্যামেরার সামনেই ছিলো।আপনি বয়সে বড় হলেও খেলায় কাচা।অবশ্য এমন ইউজলেজ নারী আসক্তি পুরুষদের কি অন্যদিকে হুশ থাকে!আপনার আর মারিয়ার সমস্ত কীর্তিকলাপ আমাদের ওই ক্যামেরায় সুন্দরভাবে সেট হয়ে আছে।”

মোহন সরদার চুপ হয়ে গেলেন।মরিয়া ভয় পেয়েছে।যদি ভিডিও ভাইরাল করে দেয় মায়া।মায়া পুলিশদের উদ্দেশে বলে,”নিয়ে যান আসামিকে।আমার জীবনে কাল হয়ে আসার একটা ডেমো তো তাকে দেখতেই হবে।এনার এই কাজে আমার কোম্পানির লস হতে পারে।প্রমোট না পেলে তো আমি উন্নতি করতে পারবো না। আর আমার সাথে যেভাবে ডিল করেছে তার প্রমাণ আমার কাছে আছে।সুতরাং আমি তো তাকে শাস্তি দিবোই।”

মোহন সরদারকে পুলিশ এরেস্ট করে নিয়ে যায়।যাওয়ার সময় মোহন সরদার অগ্নি দৃষ্টি দিয়ে তাকিয়ে আছে মায়ার দিকে।মায়া ডেভিল হাসি দিয়ে তাকায় মোহন সরদারের দিকে।মোহন সরদার চলে যাওয়ার পর মায়া তাকায় মারিয়ার দিকে। মারিয়া সাথে সাথে চলে যায় মায়ার ঠিক করা শুটিং স্পটে।সবাই চলে যাওয়ার পর মায়া তার গলায় হাত দেয়।গলায় থাকা ছোট লাভ শেপের একটি লকেট সহ চেইন আছে। লকেটটি হাতে নিয়ে খুলে দেখতে থাকে।ওখানে ছোটবেলার মায়া ও শাহানা পারভীনের ছবি আছে।মায়া শাহানা পারভীনের ছবির দিকে তাকিয়ে বলে,”আমি আজ পেরেছি মা।এক একটা করে সবাইকে শেষ করে দিবো।আজ মোহন সরদার জেলে গেছে। হ্যাঁ উনি ওনার পরিবারের দাপটে ছাড়া পাবে।কিন্তু শান্তিতে থাকতে পারবে না।কারণ মন্ত্রী মশাই এখন মায়ার পাতানো ফাঁদে পা ফেলেছেন।তার কি আর হুশ আছে পরিবার কোথায়?”

বলেই ডেভিল হাসি দিতে থাকে মায়া।
রাগে গজগজ করে রাতের বেলায় বাসায় ফিরে রাজ।এতক্ষণ তার কাজে ছিলো।কাজ শেষ করে বাসায় চলে আসে।বাসায় এসে পুরো অবাক হয়ে যায় রাজ।সবকিছু পাল্টে গেছে।বাড়ির সমস্ত লাইট অফ করে অন্ধকারে ছোট ছোট লালবাতি জ্বালিয়ে পার্টি করছে সোনালী ও তার বন্ধু বান্ধবী। পরিবারও আছে এখানে। জারা মিলি ও মালিনী আছে সেখানে।সিয়া হিয়া নিজেদের ঘরে দরজা আটকে বই পড়ছে।ওদের এসব ভালো লাগে না।রুদ্র বাইরে আছে।মাহমুদ সরদার নিজের গ্রামে গেছেন কাল আসবে।মন টানলেই তিনি গ্রামের বাড়ি যেয়ে তার বাবার কবর জিয়ারত করে আসে।রাজ বাড়ির এই অবস্থা দেখে থ মেরে দাড়িয়ে থাকে।রাজ জানে না মাহমুদ সরদার নেই। জারা ড্যান্স করছিলো হঠাৎ দেখলো দরজার দিকে রাজ দাড়িয়ে।রাজের চোখ লাল কপালের শিরা ফুলে আছে।কিন্তু এটা কারো নজরে নেই। জারা রাজের দিকে এগিয়ে এসে বলে,”ওহ মাই বেইবী।তুমি এসেছো। মিস ইউ লট, বেইবী।”

জারা একটু টান দিয়ে কথা বলে।যেগুলো বিদেশে ব্যাবহার করা হয়।রাজ এমনি ক্ষেপে আছে আবার এখন উটকো জারা হাজির।রাজ গুরুজনদের দেখে প্রতিক্রিয়া করে না।সোজা চলে যায় নিজের ঘরে।রাজ উপরে যাওয়ার পর পরই রুদ্র আসে বাড়িতে।কিন্তু রুদ্র দেখতে পায়নি রাজকে।সোনালী জারার কাছে এসে একটি ওয়াইংয়ের বোতল ও দুইটা গ্লাস দিয়ে বলেন,”এটা নিয়ে যাও রাজের ঘরে।রাজের দিকে আসার জন্য এটার থেকে বেস্ট টনিক আর হতেই পারে না। আর হ্যাঁ এই টেবলেট রাজের ড্রিংকে মিলিয়ে দিবে।নেশার ঘোরে কিছু বুঝতে পারবে না। রাজ ঘুমিয়ে গেলে তুমি ওর পাশে ঘুমিয়ে যাবে।সকালে রাজ তোমার হয়ে যাবে।কারণ সেখানে আসল ধামাকা দিবো আমি।”

জারা খুশি হয়ে নিলো জিনিসগুলো।তারপর চলে গেলো উপরে।রুদ্র এদের প্লান শুনে মনে মনে হাসতে থাকে।রাজ ফ্রেশ হয়ে নরমাল বাসায় পড়ার ঢিলা গেঞ্জি পরেছে।ফ্রেশ হয়ে মাত্র বসে কিছু প্লান করে মিটমিট হাসতে থাকে রাজ।জারা এসে রাজের গেট নক করে।রাজ তাকায় সেদিকে।দেখতে পায় শর্ট ড্রেস পরে গেটের সামনে হাতে বোতল ও ছোট ছোট ড্রিংকের গ্লাস নিয়ে হাঁটু বেকা করে দাড়িয়ে আছে জারা।গাঢ় সবুজ রঙের শর্ট ড্রেস আর পরনে হাই হিল।রাজের তাকানো দেখে জারা এগিয়ে আসতে আসতে বলে,”সো! নাউ টাইম টু চিল বেইবী।”
বলেই বোতল ও গ্লাস দুটি টেবিলে রেখে দেয়।রাজের দিকে এগিয়ে বসে চিকুন কণ্ঠে বলে,”ওহ বেইবী।কতদিন তোমাকে দেখিনি।আজ আমার এই চোখের থ্রিস্না মেটাবো।”

“এটা থ্রিস্না না তৃষ্ণা।”
“ওকে,লেট ইট বী।আজ আমরা একসাথে কিছু মোমেন্ট কাটাব।ওনলি তুমি আর আমি। আর কেউ না বেইবী।”
রাজ কিছু না বলে তাকিয়ে আছে জারার দিকে। জারা বোতলের মুখ খুলে দুটি গ্লাসে ওয়াইং ঢেলে রাজের চোখের দিকে তাকিয়ে থেকে গ্লাসে একটি নেশার ঔষধ মিশিয়ে দেয়।যেটা সোনালী দিয়েছিলো জারার হাতে।ড্রিংক রেডি করে জারা গ্লাসটি নিয়ে আরো একটু এগিয়ে আসে রাজের দিকে।রাজ তাকিয়ে আছে জারার স্মকি চোখের দিকে।রাজের সামনে গ্লাস নিয়ে জারা বলে,”দিস স্পেশাল ড্রিংকস বাই ইউর লাভলি জারা।”
রাজ গ্লাসটি না নিয়ে তাকিয়ে আছে জারার দিকে। জারা ইশারা করে রাজকে বলে,”টেক ইট বেইবী।ইটস স্পেশাল ফর ইউ অ্যান্ড মি।”

রাজ এবার জারার হাত থেকে ড্রিংকের গ্লাস নেয়। জারা খুশি হয়ে তাকিয়ে থাকে।রাজ নিজেও তাকিয়ে আছে জারার দিকে।রাজ গ্লাস এনে নিজের মুখের সামনে ধরে বলে,”দিস স্পেশাল ড্রিংক বিলং টু মাই জারা বেইবী,রাইট?”
“ইয়েস।”
“দা স্পেশাল ড্রিংকস শুড গোস টু মাই স্পেশাল জারা বেইবী।”
বলেই সমস্ত ওয়াইং জারার মাথার উপর ঢালতে থাকে রাজ।হঠাৎ ওয়াইংয়ের আক্রমণ বুঝে উঠতে পারে না জারা।চোখ পিটপিট করে তাকিয়ে থাকে রাজের দিকে।রাজ গ্লাসের ড্রিংক ঢেলে শেষ করে টেবিলের ওপর গ্লাস রাখে। জারা বলে ওঠে,”তুমি আমাকে ভেজালে কেনো বেইবী?”
“একচুয়ালি তোমাকে ভেজানোর এর থেকে বেটার অপশন আমার কাছে নেই, বেইবী।”
জারা আর কিছু বলবে তার আগে রাজ চিল্লিয়ে বলে,”নাও গেট লস্ট।”

জারা বোতল ও গ্লাস নিয়ে বের হয়। সিড়ি দিয়ে নামার সময় দেখতে পায় রুদ্র সিড়ি দিয়ে উপড়ে উঠছে।রুদ্র জারার দিকে তাকিয়ে দেখে জারার মাথার চুলগুলো ভিজে আছে।বিদ্রুপের সুরে রুদ্র বলে,”পারলি না তো!আগেই জানতাম পারবি না।আসলে কি বলতো আমরা ছেলেরা তোদের মত মেয়েদের ভোগ্য মনে করি আর মায়াবী দেখতে মেয়েদের নিজেদের উত্তরাধিকারী মনে করি।এটা না বুঝেই তোদের মত যেসব মেয়েরা ঢলে পড়িস তারা ভুগতে থাকিস।”

মায়াবতীর ইচ্ছা পর্ব ১৯

“ওহ শাট আপ।তুমি তোমার মিশন দেখো।তোমার হিয়াকে তো তুমি তোমার দিকে ফেরাতেই পারোনি।আবার আমাকে বলো।”
“আমার পাখি আমার খাঁচাতে থাকবে।তোকে ভাবতে হবে না।”
বলেই নিজের ঘরে চলে যায় রুদ্র।

মায়াবতীর ইচ্ছা পর্ব ২১