ধূসর রংধনু পর্ব ২২

ধূসর রংধনু পর্ব ২২
মাহিরা ইসলাম

হতাশা নিস্তব্ধকে চারিদিক দিয়ে ঘিরে ধরেছে।ল্যাম্পোস্টের আলো ও যেন কেমন অস্পষ্ট। না চাইতেও নিস্তব্ধ ঠিক ভাবে হাটঁতে পারছে না।তার পা চলছে না।কেমন থরথর করে কাঁপছে। তাসফির করুণ আর্তনাদ তার হৃদয় ছিদ্র করে দিতে চাচ্ছে। বার বার মনে হচ্ছে সে অন্যায় করেছে।বিরাট বড় অন্যায় করেছে সে।তার স্ত্রীর সঙ্গে সে অন্যায় করেছে।তার অর্ধাঙ্গীনীকে কে কোনো কারণ ব্যতীত কষ্টে জর্জরিত করেছে।তাই তো এই শূন্য পৃথিবীতে তার সবচেয়ে প্রিয় আপনজন হওয়া সত্ত্বেও সে তার অর্ধাঙ্গীনীর প্রিয় হতে পারে নি। তার ভরসা হয়ে পাশে দাঁড়াতে পারেনি আজ।মিছে আশ্বাস টুকুও সে দিতে পারেনি।

নাহ সে আর পারছে না।নিস্তব্ধ রাস্তার পাশে শাঁই শাঁই করে বাঁধানো দেওয়ালের সঙ্গে হেলান দিয়ে বসে পড়লো।
সে দীর্ঘক্ষণ মাথা নিচু করে বসে রইলো।
হঠাৎ তার কাঁধে কেউ হাত রাখলো।নিস্তব্ধ চমকে উঠলো।
তার গাঁ শিউরে উঠলো।
রাত তখন প্রায় একটা এই মাঝ রাতে কে এখনো বাহিরে। তার মতো কি আরও এমন কেউ আছে নাকি।যারা সিদ্ধান্ত হিনতায় ভুগছে।আছে কোনো গভীর অপরাধ বোধ কাঁধে নিয়ে।
নিস্তব্ধ মাথা তুলে দেখলো একজন জোব্বা পড়া মুখে দাঁড়ি ওয়ালা লোক তার সামনে দাঁড়িয়ে।
লোকটা জিজ্ঞেস করলো,”কি হে যুবক রাস্তায় কেন? পোশাক আশাক তো বংশীয় পরিচয় দেয় তবে রাস্তায় কি?
নিস্তব্ধ কন্ঠে বিষাদ ঠেলে বলল,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

-“আমার করা কৃতকর্ম আমায় এখন উষ্কে দিচ্ছে। যা করতে চেয়েছিলাম তা চেয়েও করতে পারছি না।কাউকে ভালো রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি কিন্তু তা পালন করতে পারছি না।”
লোকটা মুচকি হেঁসে বলল,
-“বিয়ে করেছ?”
নিস্তব্ধ মাথা নাড়লো।
-“কোনো কিছু নিয়ে হতাশা তাই তো?
নিস্তব্ধ আবারো দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো।
অতঃপর লোকটা জিজ্ঞেস করলো” তোমার পেশা কি?”
নিস্তব্ধ নিস্পৃহ স্বরে জবাব দিল,
-“ডাক্তার। ”
লোকটা এবারে আগের থেকে দ্বিগুন হেঁসে বলল,
-” মুসলিম রাইট?পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড় তো যুবক?
নিস্তব্ধ মাথা নিচু করে নিলো।
কারণ সে তো নামাজ পড়লেও তার পক্ষে পাঁচ ওয়াক্ত পড়া হয়ে উঠে না।
লোকটা বলল,

-” শোনো হে যুবক তুমি যে কোনো কিছু নিয়েই চিন্তিত, হতাশাগ্রস্থ থাকো না কেন, মহান রবের ধর্মীয় ইবাদত সবচেয়ে বেশি কার্যকরী।রবের ইবাদতের দ্বারাই তুমি খুব দ্রুত সেই দুঃচিন্তা, হতাশা থেকে মুক্তি পাবে।তোমার চলার পথ সহজ হবে।তিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন। মহান রবের কাছে তুমি মন থেকে যা চাইবে এবং সেই অনুযায়ী চেষ্টা করলে অবশ্যই তুমি সফল হবে।তুমি যতই হতাশা গ্রস্থ হও না কেন। কখনো ধৈর্য্য হারাবে না।
ধর্মীয় তিলাওয়াত, ধর্মীয় সকল ফরজ কাজ আমাদের রবের সাথে সংযোগ স্থাপন করে।আমাদের পাহাড় সমান দুঃখ ও তিনি চাইলে এক নিমিষে নিঃশেষ করে দিতে পারে।কিন্তু তুমিই যদি তার সাথে সংযোগ বন্ধ করে দাও তবে তুমি পথ খুঁজে পাবে কেমন করে।তিনিই তো আমাদের উত্তম পথ প্রদর্শন কারী।তিনি চাইলে এই আসমান ওও ধ্বসে পড়তে পারে। তোমার ধর্মীয় পাঠ তুমি করো।জায়নামাজ টা বিছিয়ে নামাজে দাঁড়িয়ে যাও।মনের গহীন থেকে রবকে ডাকো।তোমার অশান্ত মন,শীতলতায় ছেয়ে যাবে।তিনিই তো উত্তম পরিকল্পনা কারী।”

” আর বিবাহ যেহেতু করেছ নিশ্চয়ই স্ত্রী নিয়ে হতাশা।
শোন যুবক।একজন স্ত্রী হচ্ছে তোমার অধাঙ্গ।
তাদের কখনো অসম্মান করো না।তারা ভুল করলে বোঝানো সকল পুরুষের দ্বায়িত্ব।
স্ত্রীর প্রতি সকল দ্বায়িত্ব পালন করা তোমার কর্তব্য।তোমার জীবনে তার গুরুত্ব অপরিসীম। তোমার সেটা বুঝতে হবে।স্ত্রীর প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখা তোমার কর্তব্য।তাকে কখনো ছোট করো না।এমন কোনো কাজ করো না যাতে সে কষ্ট পায়। তোমার প্রতি তার হাজারো অভিমান অভিযোগ জমা হয়।
বিয়ে কোনো ছেলে খেলা নয়।বিয়ে একজন পুরুষ ও একজন নারীর মাঝে বন্ধন কে মজবুত করে।একজন নারী তার যত্নের দ্বারা তার প্রিয় পুরুষ কে অসৎ পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে।একজন আদর্শ স্ত্রী তোমার জীবন বদলে দিতে পারে।তোমার স্ত্রী জানমালের খবর রাখা তোমার একান্ত দ্বায়িত্ব।
তাদের কখনো হেলা করো না। মুখে না চাইলেও চক্ষু সামনে তাদের কখনো হেয় করো না যুবক। ”

লোকটা চলে গেল।
নিস্তব্ধ তার সমস্ত কথার ভাঁজে যেন নিজেকে খুঁজে পেল।কেন সে হতাশা নিয়ে বসে আছে।কেন তার মাঝে জড়তা কাজ করবে?কেন করবে?
তাসফির প্রতি তো তার দ্বায়িত্ব আছে।সে চাইলেই তা পালন করতে পারে।তবে কেন তার মধ্যে হীনমন্যতা কাজ করবে।
সে যে এতগুলো দিন তাসফিকে দুঃছাই করে কষ্ট দিলো।তাতে কি তাসফির কাছে ক্ষমা চাইলে তাকে সে মাফ করবে?
কেন করবে না। তাকে করতেই হবে। মেয়েটাকে সে চায় ভীষণ করে চায়।সে তার কাজের জন্য লজ্জিত।
মেয়েটার সাথে সে ভীষণ অন্যায় করেছে।
সে চায় তার ভুল গুলোকে সুধরে নিতে।

তাসফি না চাইলে জোড় করে আটকে রাখবে সেই অধিকার তার আছে।বহু আগেই তা সে অর্জন করেছে।নিস্তব্ধ’র ডাকে সারা না দিতে চাইলেঔ তাসফির সারা দিতে হবে। স্ত্রী হিসাবে এটা তাসফির যেমন কর্তব্য,স্বামী হিসাবে নিস্তব্ধ’র এটা অধিকার।
নিস্তব্ধ বাড়ি ফিরে অযু করে জায়নামাজে বসে পড়লো। নামাজ শেষে দুহাত তুলে রবের কাছে মোনাজাতে লিপ্ত হলো।
যেখানে তার ত একমাত্র চাওয়াই ছিল তার একমাত্র স্ত্রীকে নিজের করে পাওয়া।সব ভুলবোঝাবুঝি সুধরে চায় সে তাকে নিজের করে পেতে।সব ইগো কে দূরে ঠেলে তাকে আপন করে পেতে।
দোয়া শেষে নিস্তব্ধ বেলকনি তে এসে বসলো।তার মনটা হালকা হয়ে গেছে। সকল হতাশা হীনমন্যতা কেটে সেখানে প্রফুল্লতার বীজ বপন করেছে।
নিস্তব্ধ ওই দূর আকাশের দিকে তাকালো।কেমন করে চাঁদ মামা উঁকি দিচ্ছে। তার অন্ধকার আকাশের ধূসর রংধনু কেমন রঙিন হতে শুরু করেছে।কি আশ্চর্য!
নিস্তব্ধ’র মুখে ফুটে উঠলো প্রফুল্লতার হাসি।

নিস্তব্ধ রাত। তাসফির চোখের ঘুমেরা পালিয়েছে দূর অজানায়।
এই তো পরশু দুপুরেই বাবা তার মাথায় আদূরে হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলো।
আর আজ তার দেখা সুস্থ সবল বাবা ওই মাটির গহ্বরে শজ্জায়িত। মৃত্যু আমাদের জীবনে এক অনিবার্য পরিণতি। আমরা সকলেই জানি প্রত্যেক কে একদিন না মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করতে হবে। তবুও অতি কাছের,প্রিয়জনের এই পরিনতি আমরা মেনে নিতে পারি না।
মানুষটার হাজারো স্মৃতি আমাদের আক্রে ধরে।গলা চেপে ধরা দমবন্ধ অনুভূতি।প্রথমে ঘাঁ গুলো তাজা থাকলেও ধীরে ধীরে তা মলিন হতে শুরু করে।এটাই প্রকৃতির নিয়ম।কারো জন্য কারো জীবন থেমে থাকেনা।থাকবে না।এটাই প্রকৃতির নিয়ম।

এই যে আজ তাসফি বাবার জন্য হেছকি তুলে কাঁদছে।সপ্তাহ খানেক পর হয়তো আর এই কান্নাটা দীর্ঘ স্থায়ী হবে না। হয়তো বুকের মাঝে জমানো ক্ষত গুলো শুধুমাত্র ক্ষণে ক্ষনে দীর্ঘশ্বাস হয়ে বের হবে।
কখনো বা নিস্তব্ধ রাতের আধারে অথবা ক্লান্ত দুপুরে তার স্মৃতি গুলো মনে পড়ে হৃদয়ে যন্ত্রণা দেবে।ভীষণ পীড়া দেবে অনুভুতিদের।
আবার কোনো হাসি মজার ছলে হয়তো নিমিষেই তা দূর হয়ে যাবে।ভুলে যাবে সেই ক্ষণ।এই তো জীবন।কারো জন্য কারো বর্তমান থেমে থাকেনি,থাকেনা,থাকবেনাও না এটাই নিষ্ঠুর সত্য ।
তাসফি বেলকনি তে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো ওই দূর অজানায় আকাশের বুকে।
আকাশে আজ পরিপূর্ণ চাঁদ। পূর্নিমা হবে বোধহয়।

তাসফির কাছে আজ রাতটা যদি ওই আকাশের মতো চাঁদের আলোয় উজ্জ্বল হয়ে রইতো।খুব কি ক্ষতি হতো তাতে?
যে বাবা তাকে কোলে পিঠে মানুষ করলো,যার সঙ্গে হাজারো অভিমান সে আজ তার পাশে নেই।চাইলেই আর তাকে ফোন করে শত অভিযোগ সাজাতে পারবেনা।কলেজে কেউ বদনাম করলে নালিশ জানাতে পারবেনা।
তাসফি বেলকনি থেকে এগিয়ে এলো রুমের মাঝে থাকা ওয়্যারড্রব এর কাছে।
সবার উপরের ড্রয়ার খুললো সে।

সে ড্রয়ার ভর্তি হাজারে চিঠি লেখা তার বাবার হাতের গুটি গুটি অক্ষরে।
তাসফি ছুঁয়ে দেখলো তা।সব গুলোয় হাত বুলালো।
তার বাবার লেখা প্রত্যেকটা চিঠি সে সযত্নে রেখে দিয়েছে।
এগুলো পড়েই এখন সে বাবার সঙ্গে গল্পে মশগুল হবে।বাবার সঙ্গে অভিমান করবে।দুঃখের সাগরে জর্জরিত হবার চেয়ে এটাই উত্তর পন্থা নয় কি?
তার বাবা তো সব সময় এটাই শেখাতেন।মাগো কখনো কোনো ব্যাথায় দুঃখে জর্জরিত হবে না বেঁছে নিতে চেষ্টা করবে কোনো উত্তম পন্থা।

যেমনঃ আঘাত পেলে বা কোথাও কেটে গেলে বসে বসে কান্না না করে সেই স্থানে ঔষুধ লাগিয়ে তা সেরে তোলার চেষ্টা করবে,এটাই তো বিপরীত উত্তম পন্থা।কান্না করলে চোখের পানি নষ্ট হতো,চোখে জ্বালা করতো,ব্যাথা স্থানে আরো ব্যাথা হতো।কিন্তু ঔষুধয়ের ইফেক্টে সেই ক্ষত দ্রুত সারবে।তেমনি ভাবে সব কিছুরই না কিছু বিপরীত উত্তম পন্থা আছে।মানব জীবনে যে কোনো বিপদে,দুঃখে সেগুলোই খুঁজে বের করে কাজে লাগাতে চেষ্টা করবে।তবেই তো জীবনে সফল হবে।
বাবার স্মৃতি মনে করে তাসফি মুচকি হাসলো।
এই তো বিপরীত পন্থা কাজে লাগিয়ে তার মুখে হাসি ফুটেছে। ক্ষতি কি তাতে।
তাসফি একখানা চিঠি উঠিয়ে নিলো।
তাতে গুটিগুটি অক্ষরে লেখা,
আমার অভিমানী রাজকন্যা,
সে কি জানে তার চিন্তায় বাবা আজ দুপুরে খাবার খায় নি।সে যদি চায় তার বাবা সুস্থ থাকুক তবে একছুটে তার প্রিয় বাবার কোলে জাপিয়ে পরুক।

ইতি
তার অভুক্ত বাবা
তাসফির মনে পড়ে সেই দিনটির কথা আসলেই সে সেদিন চিঠি পড়ে বাবার কোলে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।
এটাই তার ইমোশন। বাবাকে সে একটুকু খারাপ দেখতেই পারেনা।আর বাবাও তার অভিমানের ঢাল হিসাবে তার এই ইমোশন কে কাজে লাগাতো।তাইতো সে বাবার সঙ্গে অভিমান করে টিকতে পারতো না। সে খুব করে চেষ্টা করতো বাবা যেন তার অভিমান না বুঝে।কিন্তু ঠিকই বাবা কি করে যেন বুঝে যেতেন।এটাই তাহলে বাবার অতিরিক্ত ভালোবাসা অন্যদের থেকে।অন্যরা যা খালি চোখে দেখতে পায় না। বাবা-মা তার সন্তানের মাঝে সেই অদৃশ্য সত্তা গুলোকেই উপলব্ধি করতে পারে।
তাসফি পুনরায় সযত্নে চিঠিখানা ভাজ করে রাখলো।
আরেকটা চিঠি তুলে নিলো।
আমার প্রজাপ্রতি রাজকন্যা,
সে কি জানে তার বাবাও কিন্তু তার উপর ভীষণ অভিমান করেছে।সে সব সময় প্রজাপ্রতির নেয় আকাশে উড়ে বেড়ায় ঠিকআছে। কিন্তু তার কিন্তু মোটেও ঠিক নয় অন্যের সন্তানের সঙ্গে হাঙ্গামা করা।
সে কি চায় আজকের মতো প্রতিদিন তার বাবা প্রিন্সিপালের কাছে অপমানিত হোক।
ইতি
আপনার অভিমানী বাবা
তাসফি আনমনে মুচকি হাঁসলো।

এই যে বাবা মেয়ের অভিমান হলে তাদের সম্পর্ক তুমি থেকে আপনিতে চলে যায়।এটাই তো মধূর অস্পর্শ অনুভূতি। সেবার তাকে কলেজের কিছু ছোঁড়া রাগিং দিতে চেয়েছিলো।কিন্তু তাসফি তো অতটা ভদ্র মেয়ে নয়। তাই তো তাদের সঙ্গে হাঙ্গামা করেছিলো।সে কথা প্রিন্সিপালের কান পর্যন্ত পৌঁছেছিল।
চিঠি পাওয়ার পর তাসফি ফিরতি চিঠি লিখেছিল,
আমার অভিমানী বাবা,
সে কি জানেনা তার রাজকন্যা অন্যায় ভুল মেনে নিতে পারে না।সে কি জানেনা তার রাজকন্যা প্রতিবাদ করতে ভালোবাসে। সে সব সময় উড়তেই ভালোবাসে।তবে কেন তার এই আবেগের প্রস্তাব।তার প্রস্তাব অকৃতকার্য ঘোষণা করা করা হলো।
ইতি
আপনার প্রজাপ্রতি রাজকন্যা
তাসফি সেই চিঠিটাও সযত্নে ভাঁজ করে রাখলো।প্রত্যেক চিঠির আলাদা আলাদা সম্মোধন। এটাই তো চিঠির মজা।
তাসফি আরেক খানা চিঠি তুলে নিলো তবে বোঝা যাচ্ছে এটা তাসফির আগে পড়ে রাখা কোনো চিঠি নয়। চিঠির ভাঁজখানাও নতুন।

তারিখ লেখা পরশু আগের রাতের।
তার মানে এটা বাবার মৃত্যু একদিন আগেই সে লিখে গিয়েছে। কি এমন লেখা তাতে?
তাসফি চিঠিপুরো ভাঁজ খুললো,
এটা কোনো ক্ষুদে চিঠি নয়।বিরাট বড় লেখা চিরকুট।
তাসফি তা হাতে নিয়ে বিছানার দিকে এগিয়ে গেল।তার বাবার শেষ চিঠিটা বরং গভীর যত্ন নিয়ে পড়া যাক তবে।
ঘড়ির কাটায় রাত তখন প্রায় তিনটার কাছাকাছি কোন ঘরে।তাসফির বেলকনির দরজা খোলা।বেলকনির সঙ্গে মেশানো শিমুল গাছ।সেখানেই দেখা যাচ্ছে এক আবছা অবয়বের।

ধূসর রংধনু পর্ব ২১

এতক্ষণে রমণীর বাবার চিঠি পড়ার ফাঁকে ফাঁকে মুচকি হাসি সে তার হৃদয় অন্তঃস্থল থেকে অনুভব করছিলো।এটাই তো সে চায়।যাক রমণী তাহলে তার বাবার স্মৃতি আঁকড়ে থাকতে পারবে।
পুরুষটি বিরবির করে উচ্চারণ করে গভীর অনুভূতি মিশ্রিত একটি বাক্য।ছোট্ট বাক্য,তবে তাতে অনুভুতি মিশ্রিত হাজারো।
“সব ধ্বংস হোক, তবু রমণীর মুখের হাসিটুকু বিলীন না হোক।”

ধূসর রংধনু পর্ব ২৩