ধূসর রংধনু পর্ব ৩৪
মাহিরা ইসলাম
রমণী এসে বসলো তাদের পাশে তার জন্য বরাদ্দ রাখা চেয়ারে।
সৃজন হাসি মুখে বলল,
-” আসতে কোনো সমস্যা হয়নি তো তাসফি।”
তাসফি মুচকি হেঁসে বলল,
-” একদম না। আপনারা সবাই কেমন আছেন বলুন?”
আরশী বলল,
-” ভালো নেই গো তুমি ভালো আর থাকতে দিলে কই।”
তাসফি ইতস্তত করে বলল,
-” কেন আপু আমি আবার কি করলাম। আমার তো এমন কিছু করেছি বলে মনে পরছে না।”
সৃজন বলল,
-” ওদের কথায় কান দিও না তুমি শান্ত হয়ে বসো।তোমায় কিছু কথা বলি।সরাসরি বলছি।এই কারণেই তোমায় জরুরি তলব করা।”
সৃজন তাসফির সামনে প্যাকেটে মোড়ানো কিছু কাগজের টুকরো রাখলো।
তাসফি অবাক হয়ে জানতে চাইলো এগুলো কি ভাইয়া?
সৃজন ঠান্ডা স্বরে বলল,
-” ডিভোর্স পেপার।”
তাসফি হতভম্ব হয়ে তার দিকে চেয়ে রইলো।ডিভোর্স পেপার টুকরো টুকরো কেন?
সৃজন তাসফির চোখের ভাষা ঠাহর করতে পেরে শান্ত স্বরে বলল,
-” নিস্তব্ধ পেপারে সই করে নি।এই যে টুকরো টুকরো করে ছিড়ে আমাদের নিকট সে খুব আনন্দের সহিত প্রদান করে দিয়েছে।আর বলেছে,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“তোদের ভাবী আমার সঙ্গে বর্তমানে একটু খানি লুকোচুরি খেলছে। তোদের সাথে খেলবে না জানি।তাই তোরাই এই টুকরো গুলো একটু কষ্ট পৌঁছে দিস তার নিকট।আর জানিয়ে দিস এই নিস্তব্ধ ইয়াসার না চাইলে কিছুই সম্ভব নয় ওইটুখানি মেয়ের দ্বারা কিছু করা।
আর লুকোচুরি সে কতদিন খেলতে পারে আমিও দেখছি।”
কিছু বুঝলে তাসফি?
তাসফি শুষ্ক ঢোক গিললো।
সৃজন আবারো বলল,
-” দেখ তাসফি নিস্তব্ধ তোমায় কোনোদিন ডিভোর্স দিবেনা।আর সে না দিলে তোমার কিছু করার নেই।তার প্রতি যে তোমার সামান্য তম হলেও দুর্বলতা আছে তা আমরা কিন্তু বুঝতে পারছি।
আর নিস্তব্ধ সে তো তোমার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে। ”
তাসফি সৃজন কে থামিয়ে বলল,
-” আপনাদের বিশ্বাস হয় আপনার ওই অহংকারী বন্ধু
আমার প্রেমে পরবে?”
মাহীন বলে উঠলো
-” অবশ্যই বিশ্বাস হয়। বিশ্বাস না হওয়ার এখানে কিছু নেই।তোমার মিসিং হওয়ার খবর শুনে ওও কতটা ডেস্পারেট হয়ে গিয়েছিল তা আমি আর সুজন সামনে থেকে অবলোকন করেছি।সারাক্ষাণ কেমন হাঁসফাঁস করেছে আমরা দেখেছি।কারো প্রতি এমনি এমনি কখনো প্রজেসিভ নেস তৈরি হয় না তাসফি।”
তাসফি শক্ত কন্ঠে বলল,
-” কিন্তু ভাইয়া তাতেই তো সে আমার প্রেমে পরেছে এটা প্রমাণ হয় না।আপনাদের বন্ধু তো আমায় বলেনি সে আমাকে পছন্দ করে বা ভালোবাসে।এমনকি আমার বাবার মাটির পর সে এক সেকেন্ড আমার কাছে এসে ও বসে নি।তো আমি কি করে তার প্রেম ভালোবাসা অনুভব করতে পারবো বলতে পারেন।”
সৃজন বলল,
-” দেখ তাসফি আমি তোমার কথা বুঝতে পারছি।কিন্তু নিস্তব্ধ একটু অন্যরকম। ওর ভালোবাসা প্রকাশের ধরণ ওও অন্য রকম।এই যে আমাদেরই দেখ না আজ পর্যন্ত আমাদের সামনে ওও কখনো নিজের বন্ধুত্ব জাহির করে নি।আমরা যেমন হাসি মজা করি ওও নরমাল মাঝে মাঝে দু একটা কথা বলে।
ওও কিন্তু আমাদের সবাইকে ভীষণ ভালোবাসে কিন্তু সেটা কখনো প্রকাশ করতে রাজি নয় সে।”
সৃজন থেমে আবারো বলল,
-“তুমি যত যাই বলো না কেন বোন। আমরা খুব সুক্ষ্ম ভাবে খেয়াল করে দেখেছি বিয়ের পর নিস্তব্ধ’র পরিবর্তন। আগে কখনো আমাদের আড্ডায় ওও হাসি মজা করতো না। কিন্তু এখন ওও তা অহরহ করে।একদন ভিন্ন একজন মানুষ কে চিনেছি আমরা।
সবার সঙ্গে তাল মিলিয়ে হাসি ঠাট্টা করে।তোমার কি মনে হয় এগুলো এমনি এমনি?
আচ্ছা তুমি কি তার মাঝে কোনো পরিবর্তন দেখ নি?”
তাসফি মনে মনে বলে,
-” দেখেছি তো। আপনাদের বন্ধু দিন দিন অসভ্য হয়ে উঠছে।সুযোগ পেলেই সে আমার নরম কোমর খানা আকরে ধরতে চেষ্টা করে । অসভ্য লোক। আসতাগফিরুল্লাহ মার্কা কথা বার্তা বর্তমানে আমায় সে শোনাচ্ছে। দিন দিন সে বড্ড লাগামহীন হয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু সেগুলো আপনাদের কি করে বলি বলুন তো।
আপনাদের বন্ধুর কীর্তিকলাপ তো বলার যোগ্য নয়।”
তাসফি নির্লিপ্ত কন্ঠে সুধালো,
আচ্ছা ধরুন মেনে নিলাম সে আমায় ভালোবাসে বা আমার প্রেমে পড়েছে।
কিন্তু সে আমায় মুখে এর কোনোটাই বলে নি।
আমি কি সেধে সেধে যাবো
যে আমি আপনাকে ডিভোর্স দেব না। আমায় আপনার বাড়ি নিয়ে চলুন।
আমি মোটেও এতটা বেহায়া হয়ে যাইনি যে সে আমায় একবারো কিছু বলবে না। এমন কি নিজের মুখে আমায় বলতে পারলোনা তোমায় ডিভোর্স দেব না। আমার সঙ্গে থাকবে সারাজীবন। কই কখনো তো এমন কথা বলেনি আমায়।
সে নিজে থেকে আমায় কখনো বলবেনা। আর আমি তার চালচলন দেখে ভাববো সো আমায় ভালোবাসে আর আমি জেনে বুঝে পুনরায় অপমান হতে যাবো? তা তো কখনো এই তাসফি পুনরাবৃত্তি করবে না ভাইয়া।
তাসফি তাসফি আবারো বলল,
-” আপনারা যত যাই বলুন না কেন।
ওই অহংকারী লোকের অহংকার না ভাঙ্গা পর্যন্ত তাসফি তার নিকট ধরা দিচ্ছে না।ভালো যখন বাসে সাহস করে সামনে এসে বলুক না।আপনার বন্ধুকে তো কেউ আর নিষেধ তো করছে না।”
আয়ানা বলল,
-” প্রকাশ করলে তুমি মেনে নিবে তো বোন।ভেবে বলছো তো।”
তাসফি মিষ্টি হেঁসে বলল
-” আগে সে প্রকাশ করুক। তারপর নাহয় ভাবা যাবে। অভিমানের শুরু কি এত সহজে শেষ হয় বলুন?”
সৃজন বলল,
-” তার মানে তুমি তোমার সিদ্ধান্ত থেকে পিছু পা হবে না তাই তো।”
তাসফি টুকরো টুকরো করে ছেড়া কাগজ গুলোয় হাত বুলালো।
অতঃপর মুচকি ফিসফিস করে কিছু বলল।
ওরা তাসফির কথা শুনে চোখ বড় বড় করে চাইলো।
আরশী হতভম্ব স্বরে বলল,
-” বলো কি গো বোন।তুমি তো বহুত সেয়ানা।”
তাসফি লজ্জা পাওয়ার ভঙ্গি করে বলল,
-” যাহ কি যে বলেন না আপু।”
তাসফি তার তস্থ কদমে বেরিয়ে গেল।
সুজন আহাজারি করে বলল,
-” ভাই তোরা আমারে কেউ হসপিটালে দিয়ে আয়। আমার মাথা ঘুরছে। যেমন বন্ধু তার তেমন বউ।কেউ কারো থেকে কম নয়।একজন সিংহ হলে আরেকজন তাকে পোষ মানানো শাবক। নিস্তব্ধ কে এই কথা জীবনেও কেউ পাছ’কান। তাহলে ভালোবাসা স্বীকার করা তো দূর আরো বেঁকে বসবে সালা।”
ওরা পাঁচজন নিস্তব্ধ’র তাসফির প্রতি দুর্বলতা দেখে ভেবেছিলো তাসফিকে বোঝাবে। যেন তার সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসে এখনো সময় আছে।
কিন্তু এই মেয়ে তো দেখা যাচ্ছে এখন অন্য সুর গাইছে।
তাসফি ক্যাফে থেকে বের হয়ে এখন সোজা কলেজে যাবে। এই তো কাল সন্ধ্যায় আয়ানা আপু ফোন দিয়ে বলল তাদের সঙ্গে দেখা করতে আর্জেন্ট কিছু কথা আছে।প্রথম যেহেতু আজ ক্লাস ছিল না তাই সে ভেবেছিলো একদম তাদের সঙ্গে দেখা করে সোজা কলেজে যাবে।
বাতাসের বেগ প্রবল।নিস্তব্ধ কফি হাতে দাঁড়িয়ে আছে তার চেম্বারের জানালার নিকট।অদ্ভুত ছন্দ তুলে বিগলিত চিত্তে সে চুমুক বসাচ্ছে কফির কাপে।
পুরুষটির চিত্ত তো আনন্দিত হবেই।ওই যে আজ তার বউয়ের নাদুসনুদুস মুখখানা সে অবলোকন করতে পারছে স্পষ্ট ভাবে।
নিস্তব্ধ তিনতলার নিজের চেম্বার থেকে দাঁড়িয়ে তাসফিকে মাস্ক,ব্যতীত উৎফুল্ল চিত্তে ঘোড়া ঘুড়ি করতে দেখে বাঁকা হাসলো।
তার টোপ খানা তার বোকা বউ খুব সুন্দর ভাবে ভক্ষণ করে নিয়েছে।
আরাধ্য তাসফিকে আগের লুকে দেখে প্রশংসা করে বলল,
-” বাহ। এই তো আমাদের তাসফি আগের লুকে ফিরে এসেছে।ঝাক্কাস লাগছে তোকে মানা।
-” চুপথাক”
সন্ধ্যার আগ মুহুর্ত। প্রাকটিক্যাল ক্লাস শেষে তাসফিকে আশা জোরজবরদস্তি শুরু করলো আজ তার সঙ্গে তার বাসায় যাওয়ার জন্য।
এবং এখনি ফোন করে তার চাঁচিকে সেই কথা জানিয়ে দিতে।
তাসফি বুঝতে পারছে না আশা কেন এত জোরাজুরি করছে আজ হঠাৎ করে।
তাসফি মানানোর ভঙ্গিতে বলল,
-” এমন করিস না পাখির বাসা। আজ থাক। অন্য কোনো দিন।
কিন্তু আশা তার কথা কানেই তুললো না। না শোনার ভঙ্গিতে রইলো একদম।
শেষেমেশ উপায় না পেয়ে তাসফির ওর কথাই চাঁচি কে জানিয়ে দিলো সে আজ রাত তার বান্ধবীর বাসায় থাকবে চিন্তা না করতে।
অথচ দুজন মানুষের চতুরতার সঙ্গে করা ষড়যন্ত্র তাসফি ঘুনাক্ষরে ও বুঝতে পারলো না।একজন কর্তা অন্যজন তার কর্মী।
আশা আরাধ্য আর সর্নিধি কে বুঝিয়ে শুনিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দিলো।
অতঃপর তাসফিকে বলল,
-” দোস্ত চোখ বন্ধ কর।তোর জন্য বিশাল সারপ্রাইজ আছে।”
-” কিসের সারপ্রাইজ? ”
-” আরররে! আছে ভাই ।তুই চোখটা বন্ধ করনা ।একদম চোখ খুলবিনা বলে দিচ্ছি আমি না বলা পর্যন্ত। ”
তাসফি কৌতুহল চিত্তে চোখ বন্ধ করলো
আশা তাকে হাটিয়ে পার্কিং এরিয়ায় নিয়ে এলো।
বলল,
-” খবরদার আমি না বলা পর্যন্ত একদম চোখ খুলবি না।”
এই কথা বলেই সে আস্তে আস্তে করে কেটে পড়লে সেখান থেকে।
তাসফি কটমট করে বলল
-” আশা। কোথায় গেলি পাখির বাসা? চোখ কি খুলবো?
চারপাশে ধীরে ধীরে অন্ধকার তার অস্তিত্বের আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করেছে।
আশার সম্পূর্ণ অবয়ব মূর্ছা যেতেই তাসফির সন্নিকটে ধীরালয়ে এগিয়ে আসলো এক সুদর্শন পুরুষের অবয়ব।
সে তাসফির কানের সঙ্গে সয়ং ঠোঁট জোড়া স্পর্শ করে ফিসফিস করে বলল,
-” ইয়াহ। অফকোর্স!”
হঠাৎ পরিচিত পুরুষালী কন্ঠস্বরের সঙ্গে তাসফি নিজের কোমরে পুরুষালী স্পর্শ পেতেই।ঝট করে চোখ মেলে চেয়ে ছিটকে দূরে সরে গেল।
আবছা আলোতে সে নিস্তব্ধ মুখ খানা স্পষ্ট অবলোকন করতে পারলো।
তাসফি হতবুদ্ধি হয়ে আমতাআমতা করে বলল
-” আপ..নি।আপনি কিভাবে। আপনি তো দুদিনের জন্য কোথাও যাবেন বলেছিলেন।”
নিস্তব্ধ তাসফির দিকে এক পা, এক পা করে আগাতে আগাতে রহস্যময় হেঁসে বলল,
-” কখন? কবে?”
নিস্তব্ধ কে আগাতে দেখে তাসফি আতঙ্কে পেছাতে লাগলো।আশা বা গেল কোথায়।এই লোকের মতিগতি সে ঠিক দেখছে না।নিশ্চয়ই কোনে গভীর ষড়যন্ত্র
করা হয়েছে তাকে নিয়ে।
তাসফি ভয়ে ভয়ে বলল,” আপনি আগাচ্ছে কেন।”
নিস্তব্ধ নির্লিপ্ত কন্ঠে বলল,
-” আপনি কেন পেছাচ্ছেন ম্যাডাম?”
তাসফি শুষ্ক ঢোক গিললো।
পেছাতে পেছাতে তাসফি একটা গাড়ির সঙ্গে ঠেকে গেল।
আশ্চর্য এই গাড়িটাকে এখানেই কেন পার্ক করতে হলো।
তার ভেতরকার সত্তা বিরক্ত নিয়ে বলল,
-” বোকার মতে কথা বলবি না তাসফি পার্কিং এরিয়ায় গাড়ি পার্ক করা থাকবে না তো কোথায় থাকবে।তুই ভয় পেয়ে পিছিয়ে না গিয়ে সামনে দিয়ে দৌড় মারতি।ইডিয়েট।”
মুহুর্তে নিস্তব্ধ তাসফির একদম সন্নিকটে এসে দাঁড়ালো। একহাতে হ্যাঁচকা টানে রমণীর পেবব কোমরখানা তার সঙ্গে মিশিয়ে ধরলো সন্তর্পনে। অপরহাতে তাসফির দুইহাত মুচড়ে পেচিয়ে ধরে পেছনে নিয়ে ধীর স্বরে সুধালো ,
-” নিস্তব্ধ ইয়াসার কে তার বেগম ডিভোর্স দিবে এটাই ফাইনাল তাইতো?”
তাসফি শুষ্ক ঢোক গিললো। নিস্তব্ধ’র নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের গতিবেগ স্পষ্ট সে ঠাহর করতে পারছে।
তাসফি এই মুহূর্তে ভীষণ করে চাইছে শক্ত থাকতে।তার দুর্বলতা নিস্তব্ধ’র সামনে প্রকাশ না করতে।কিন্তু পারছে না লোকটার পুরুষালী স্পর্শ তাকে দুর্বল করে দিচ্ছে।
সে পুনরায় শুকিয়ে থাকা গলা ভেজানোর বিথা চেষ্টা করে শুষ্ক ঢোক গিলে মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলল।
-“আর ইউ সিওর মাই মিসেস? ”
তাসফি শক্ত কন্ঠে বলল,
-” ইয়াহ।”
-” ওকে এ্যাজ ইউর উইস।”
তাসফি নিস্তব্ধকে ধাক্কা দিয়ে এক কদম হাঁটতেই পরবর্তী কদম বাড়ানো সুযোগ পেলো না।উহু সুযোগ দেওয়া হলো না মুহুর্তে নিজেকে শূন্যে আবিষ্কার করলো সে। আঁতকে উঠলো তাসফি।
নিস্তব্ধ তাসফিকে কাঁধে তুলে নিয়েছে।
তাসফি আঁতকে উঠে চাপা চিৎকার করে বলল,
-” কি করছেন আপনি?নিচে নামান আমায় ডাক্তার সাহেব। এখনি নিচে নামান।”
নিস্তব্ধ ভাবলেশহীন স্বরে বলল,
-” তা কি করে হয়। আপনিই তো বললেন ডিভোর্স চাই।”
-” ডিভোর্স চাই তো কোলে কেন নিলেন।”
-” কোলে কোথায়? কাঁধে নিলাম তো।”
তাসফি রাগে নিস্তব্ধ’র পিঠে ঘুসি মারতে শুরু করলো।
নিস্তব্ধ মাদকীয় স্বরে বলল,
-“উফফ এত ছটফট করবেন না ম্যাডাম।আপনার হাসবেন্ডের ওখানে লাগে তো ।”
তাসফি চোখ বড় বড় করে বলল,
-” কোথায় লাগে।”
নিস্তব্ধ উত্তর না দিয়ে বাঁকা হেঁসে হাঁটটে লাগলো।
-“বলুন?”
-” বুকে।”
তাসফি আবারো ধস্তাধস্তি শুরু করলো।
-“আহা বললাম তো, এত ছটফট করবেন না ম্যাডাম।আজ আপনাকে স্পেশাল ডিভোর্স দেব।আই প্রমিস, যেটা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কখনো ভুলবেন না।”
তাসফি রাগী স্বরে বলল,
-” ছাড়ুন। ছাড়ুক আমায়।আমি আপনার সঙ্গে কোথাও যাবো না।এখনি নিচে নামান আমায়। আমি বাড়ি যাবো।আমি আপনার সঙ্গে যাবো না।”
নিস্তব্ধ তা যেন শুনতেই পেল না।
নিজের গাড়ির সামনে এসে একহাত দিয়ে দরজা খুলে তাসফিকে ঠাস করে ফ্রন্ট সিটে বসিয়ে দিলো।
সামান্য পেয়ে তাসফি আর্তনাৎ করে উঠলো।
-” উউউ।”
ধূসর রংধনু পর্ব ৩৩
তবুও তা সে পাত্তা না দিয়ে বেরিয়ে যেতে চাইলো।
কিন্তু নিস্তব্ধ তার সুযোগ দিলো না।
ঠাস করে দরজা লাগিয়ে দিলো।
ওপর পাশ দিয়ে নিস্তব্ধ এসে বসলো ড্রাইভিং সিটে।
তাসফি দরজা ধাক্কাতে লাগলো।
নিস্তব্ধ কৌতুক করে বলল,
-“বোকার মতো করবেন না মিসেস। ওটা লক করা। আপনার ওই পিঁপড়ের মতো শক্তির ধাক্কায় তা মোটেও খুলবেনা।”