মায়াবতীর ইচ্ছা পর্ব ৫২
ইশরাত জাহান
শাহানা পারভীনের পাশে এসে বসে মায়া।আজকের রাত মায়া এখানে কাটাবে।মন্ত্রী মশাই না থাকার কারণে মায়া তার মাকে সময় দিতে চেয়েছে।এমনিতে প্রতিদিন সময় করে এখানে আসে।শাহানা পারভীনের হাত ধরে মায়া বলে,”জানো মা তোমাকে যারা যারা মারতে চেয়েছিলো আমি তাদের খুঁজে বেড় করেছি।এক এক করে সবাইকে আমি শাস্তি দিবো।নিজের হাতে খুন করব ওই লোকগুলোকে।দাদুকে যারা খুন করেছে অসহায় মেয়েদেরকে যারা নিজেদের স্বার্থে ব্যাবহার করেছে সবাই শাস্তি পাবে।
শুধু তুমি একটু রেসপন্স করো মা।প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার আগে মনে হয় কাল সকালে তোমাকে সুস্থ পাবো।আবার ঘুম থেকে উঠেই মনে হয় এখনই হয়তো ফোন আসবে তুমি রেসপন্স করেছো।ও মা!তোমার কিসের এত চিন্তা?আমার কথায় একটু রেসপন্স করো।আমাকে তোমার বুকে আগলে নেও।আমি যে তোমার ভালোবাসা খুব মিস করি।আমার দুনিয়া যে তুমি আর আমার মন্ত্রী মশাই।”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
বলতে বলতেই মায়ার চোখ গড়িয়ে পানি পড়ে।শাহানা পারভীনের সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো মনে পড়ে মায়ার।কত সুন্দর দিন ছিলো তাদের।সব শেষ হয়ে যায় শুধু মাত্র সোনালীর আগমনে।শুধু তো সোনালী দায়ী না।ওই মোহন সরদারও নারী লোভী ছিলো।সরদার বাড়ি থেকে আসার পরও সুখে ছিলো সবাই।তাহলে কেনো এই দুর্ঘটনা হতে হলো।শাহানা পারভীনকে কেউ মারতে না চাইলে মায়া আজ এই হিংস্র হতো না।মোহন সরদার সহ আরো সকলের বিনাস চাইতো না মায়া।
সকাল বেলা,
চোখ পিটপিট করে তাকায় সিয়া।চোখ মেলতেই দেখতে পায় সামনে বসে আছে আদ্র।এক লাফ দিয়ে উঠে হাঁটু গেড়ে বসে পড়ে সে।খাটের অন্য প্রান্তে পিছিয়ে যায়।আদ্র সিয়ার এক হাত ধরে টান দিয়ে নিজের কাছে আনে।সিয়ার কপালে কপাল রেখে বলে,”ভয় করছে কি?”
আদ্রর কপালে মাথা রাখা অবস্থায় আদ্রর চোখের দিকে তাকালো সিয়া।কোনো কথা না বলে চুপ করে আছে।আদ্র বলে ওঠে,”এত ভয় পেলে চলবে!তুমি না মন্ত্রীর বোন হও এত নরম মনের কেনো?আবার সপ্ন দেখো অর্থোপেডিক ডক্টর হবে।”
আদ্রর কথার সাথে তার মুখের গরম নিঃশ্বাস বেড় হতে থাকে।এই নিঃশ্বাস সিয়ার চোখ মুখ ছুঁয়ে নিতে থাকে।সিয়া চোখ বন্ধ করে নেয়।চোখ বন্ধ করা সিয়ার চোখদুটো দেখে আদ্র নেশাক্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।টুক করে সিয়ার দুই চোখে আলতো চুমু খেয়ে নেয় আদ্র।কেপে ওঠে সিয়া।সিয়ার হাত এখনও ধরে আছে আদ্র।সেই হাত ছাড়ানোর বৃথা চেষ্টা করে যাচ্ছে সিয়া।হালকা হেসে আদ্র বলে,”ভয় নেই বেশি কিছু করব না।যা হবে বিয়ের পর।”
বলেই উঠে দাড়ায় আদ্র।একটি প্যাকেট সিয়ার সামনে দিয়ে বলে,”এটা পড়ে নেও।সারাদিন অনেক ঘুমিয়েছো।অবশ্য আমিও তোমাকে বিরক্ত করিনি।এখন জামা কাপড় পাল্টে কিছু খেয়ে নিবে।”
বিছানা থেকে নেমে সিয়া বলে,”আমি এত কিছু চাই না।শুধু বাড়িতে যেতে পারলেই হবে।আপনার মুখও দর্শন করব না।”
আদ্র এক পা এক পা করে এগিয়ে আসতে নেয়।এটা দেখে সিয়া নিজেও পিছিয়ে যেতে থাকে।এভাবে করতে করতে দেয়ালের সাথে সিয়ার পিঠ আটকে গেলে আদ্র নিজেও সেখানে দাড়িয়ে যায়।পকেটে হাত রেখে বলে,”এটুকু মেয়ের এত তেজ?এত তেজ যে ভালো না।চুপচাপ যেটা বলছি ওটা করো।নাহলে কিন্তু আমার মাথা গরম হলে খবর হয়ে যাবে।”
সিয়া এবার ধাক্কা দিলো অদ্রকে। ধাক্কাতে ধাক্কাতে বলে,”কি করবেন আপনি?”
বেশিক্ষণ ধাক্কাতে পারলো না সিয়া।আদ্রর পকেট থেকে একটি গুলি পড়ে যায়।যেটা দেখে সিয়া স্তব্দ হয়ে আছে।ভয় পেতে থাকে সিয়া।আদ্র বুঝলো এখন তার মেডিসিন হিসেবে এই গুলি কাজে লাগবে।তাই গুলিটি হাতে নিয়ে বলে,”দেখতে চাও কি করতে পারি?”
আর কোনো কিছু বলা লাগলো না অদ্রকে।লক্ষ্মী মেয়ের মতো দৌড়ে ওয়াশরুমে চলে যায় সিয়া।এ যেনো এক ভদ্র মেয়ে।আদ্র হেসে দেয় সিয়ার এমন কাণ্ডে।
বাসায় আসতেই রাজ খবর পেলো মালিনী হসপিটালে ভর্তি।সপরিবারে চলে গেলো হসপিটালে।মায়াও আছে রাজের সাথে।ঘুম থেকে উঠেই খবর পেয়ে চলে আসে হসপিটালে।সোনালী খবর দিয়েছে রাজকে।হসপিটালে এসে আয়রাকে খুঁজতে থাকে মায়া।কিন্তু কোথাও খুঁজে পাচ্ছে না।আয়রার নাম্বারে অনেকবার ডায়াল করতে থাকে।সুইচ অফ আয়রার।এবার মায়ার চোখ গেলো সোনালী দিকে।হাসছে মায়াকে দেখে।মাহমুদ সরদার এসে জিজ্ঞাসা করেন,”কিভাবে হলো এসব?”
সোনালী মায়ার দিকে তাকিয়ে বলে,”আপনার গুণধর বউমা করেছে এসব। বড় আপাকে কাল নির্মমভাবে মেরেছে এই মেয়ে আর ওই নার্স মিলে।”
সোনালীর দিকে তাকিয়ে মায়া বলে,”কোনো প্রমাণ আছে আপনার কাছে?”
বিভান এবার বলে ওঠে,”প্রমাণ তো আমার বোন নিজে।ভাগ্যিস রাতের বেলা আমি তোমাদের বাসায় আসতে নেই।ওর সাথে কথা বলছিলাম ফোনে।হঠাৎ কন্টাক্ট কফ হওয়ায় সন্দেহ হয়।বাসায় আসার সময় দেখে ফেলি ওই আয়রা মেয়েটিকে।পুলিশের আওতায় আছে মেয়েটি।ওই বলেছে তুমি ওকে নিয়ে এসেছ এই বাড়িতে মালিনীর ক্ষতি করতে।”
চোখ বন্ধ করে নিলো মায়া।ধরা পড়েছে সে।কিছুক্ষণ পর রাজের মুখের দিকে তাকালো।রাজের চোখ মুখ শক্ত হয়ে আছে।মায়ার এক বাহু ধরে প্রশ্ন করে,”তোমার জন্যই কি আমার মায়ের এই অবস্থা?”
মায়া নিশ্চুপ।মিথ্যা সে বলতে পারবে না এই চোখের দিকে তাকিয়ে।মায়াকে কিছু বলতে না দেখে রাজ বুঝে নেয়।মায়াকে ছেড়ে দিয়ে বলে,”তোমার থেকে এটা আশা করিনি আমি মায়াবতী।আমার মাকে কিছু করতে বলেছিলাম না তোমাকে।তুমি কথা দিয়েছিলে আমাকে কিছু করবে না আমার মায়ের।”
“আমার কথা শুনো..”
আর কিছু বলার আগে মায়াকে দূরে সরিয়ে দেয় রাজ।বলে ওঠে,”আর কি শুনবো। একের পর এক গোপনীয়তা রেখেছো তুমি।প্রথমে বীর এখন মা।আর কি কি শুনতে বলো তুমি?আমি সবসময় বলে এসেছি পূর্ণ করব আমার মায়াবতীর ইচ্ছা।কিন্তু না।এখন থেকে আমি অপূর্ণ রাখবো মায়াবতীর ইচ্ছা।তোমার ইচ্ছা এখন পূরণ হবে না।আমার থেকে আমার আপনজনদের কেড়ে নেওয়া ব্যাক্তিকে আমি ছেড়ে দিবো না।শাস্তি তো পেতে হবেই।”
বলেই বেড় হয়ে যায় রাজ।নিজের গাড়িতে উঠে ড্রাইভ করতে থাকে।মায়া দৌড়াতে থাকে রাজের গাড়ির পিছনে।কিন্তু না লাভ হয়না।রাজ ততক্ষণে চলে যায়।মাহমুদ সরদার নিরব দর্শক হয়ে আছেন আজ।মালিনীকে ভালো না বাসলেও মালিনী তো তার বউ।বউ হিসেবে মনের মধ্যে আলাদা জায়গা গড়ে ওঠে মালিনীর জন্য।সিয়া ও হিয়ার মা সে।রাজের সেবা যত্ন ত্রুটি থাকলেও পরিবারের জন্য একেবারে খারাপ ছিল না।অন্তত রাজ তো তাকে নিয়ে কোনো দাবিদার রাখেনি।সবাই ভালো ছিলো।এখন সিয়া ও হিয়ার কাছে কি বলবে বুঝতে পারছেন না তিনি। মাটিতে হাটু গেড়ে বসে কান্না করছে মায়া।সোনালী এসে দাড়ালো মায়ার পাশে।খোঁচা দিয়ে বলে,”পারলে না তো বরকে আটকে রাখতে!কি বলো তো যে খেলার মাস্টার মাইন্ড আমি বিগত বিশ বছর ধরে সেই খেলা তুমি দুদিনের মেয়ে হয়ে জিতে নিবে এটা তো হতে পারে না।তারপরও তোমাকে আমি রাজের জীবনে ফেরত আনতে পারি।শুধু একটা জিনিষ আমাকে বলে দেও।”
মায়া তাকালো সোনালীর দিকে।বলে,”কি বলব?”
“লকারের পাসওয়ার্ড।যেটা তোমার দাদু তোমাকে আর তোমার আগের শাশুড়ি মানে রোহিণীকে বলে রেখেছিলো।ওই পাসওয়ার্ড দিয়ে দেও বাকিটা আমরা বেড় করে নিব।”
অবাক হয়ে তাকালো মায়া।সোনালী শয়তানি হেসে বলে,”কি করে জানলাম তোমার আসল পরিচয়?আসলে একটু কারেকশন করে দেই।তোমার সম্পর্কে আমাদের এমন একজন ইনফরমেশন করেছে যে তোমার অতি কাছের।তার নিজেরও স্বার্থ জড়িয়ে আছে এখানে।সেও সপ্ন দেখছে বিলিয়নার হওয়ার।”
“কে সে?”
“ওহ হো তুমি না আসলেই বোকা।নাহলে প্রশ্ন করতে কে সে?আরে তুমি জিজ্ঞাসা করবে আর আমি বলে দিবো এমনটা হয় নাকি?”
মায়া তেড়ে আসতে নেয় সোনালীর দিকে।মায়ার দিকে হাত দিয়ে থামিয়ে সোনালী বলে,”তুমি আমার কিছু করবে না।আমি জানি এটা।যদি করতে তো প্রথম দিন করতে।যেদিন জানতে পারো রিমুর কিডন্যাপ আমিই করিয়েছি।তোমার যে আমাকে চাই।কারণ আমার কাছে আছে সরদার বাড়ির ব্যাবসার চাবিকাঠি।যেটাতে রয়েছে তোমার দাদুর আর তোমার মায়ের সপ্ন।কি ভাবো তুমি আমি জানি না?তুমি এই বাড়িতে শুধু তোমার মন্ত্রী মশাইয়ের জন্য না পুরো ব্যাবসা নিজের করতে এসেছো।যেটা নিয়ে তোমার মায়ের সপ্ন।তোমার মাকে তো শেষ করাই হয়েছে এখন তুমি এসেছো।মা মেয়ের কি মরতে খুব ইচ্ছা করে বলো তো?যাই হোক তোমাকে এতদিন অনেক খুঁজেছি।পড়ে কোনো এক ভাবে তোমার পরিচয় জানতে পেরে আমি শান্তিতে কাটিয়েছি।পাসওয়ার্ড বলে দেও দেখবে সুখে থাকবে।”
“যদি না বলি?”
“তাহলে আজকে একটা ডেমো দেখবে।তোমার কাছের মানুষ যাকে তুমি করো ভরসা সেই তোমার জীবন থেকে কেড়ে নিবে একেক করে সবাইকে।”
“আমার কাছের মানুষ মানে?”
সোনালী আর কিছু বলতে যাবে তার আগে মায়ার ফোনে কল আসে।মায়া রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে হাসি বলে,”আ আমি জেনে গেছি কে কে তোমার মা ও দাদুকে খুন করতে চায়।”
মায়া একটু অবাক হয়ে বলে,”তুমি এভাবে তোতলাচ্ছো কেনো হাসি?”
“আমাকে ওরা শুট করেছে।একেক করে তোমার কাছের সবাইকে শেষ করে দিবে।অনেক কষ্ট হচ্ছে কথা বলতে।শুধু এটুকুই বলব হুট করে কারো কথা বিশ্বাস করো না।প্রমাণ আমি রেখে গেছি।একটি ভিডিও ক্লিপ আছে আমার ঘরে।ওটা দেখো।”
হাসিকে শুট করেছে শুনেই দৌড়ে নিজের গাড়ির দিকে উঠে পড়ে মায়া।হাসিকে বলে,”হাসি তুমি অন্য গার্ডকে ডাকো নি কেনো?”
হাসি কোনো কথা বলছে না।ফোনের ওপাশ থেকে শুধু পায়ের শব্দ আসছে।কিছু একটা পড়ে যাওয়ার শব্দ পেলো মায়া।গাড়ির স্প্রিড বাড়িয়ে দিলো।বাড়ির সামনে এসে মায়া দৌড়ে হাসির ঘরে এসে দেখে হাসির চোখদুটো বড় বড় হয়ে মেলে আছে।পেট গড়িয়ে পড়ে তাজা রক্ত।দৌড়ে এসে হাসির মাথা নিজের হাঁটুতে রেখে মায়া বলে,”হাসি কি হয়েছে তোমার?কে করেছে তোমার এই অবস্থা?ও হাসি,হাসি মা কথা বলো।তোমার মায়াবতী মা এসেছে।কিছু হবে না কথা বলো।”
হাসির কোনো সারা শব্দ নেই।মায়া পালস চেক করে দেখে হাসি আর জীবিত নেই।বাড়ি কাঁপিয়ে চিৎকার করে ওঠে মায়া।বলে ওঠে,”তুমি ছিলে আমার দ্বিতীয় মা আমার হাসি মা।এখন আমি কিভাবে আমার মায়ের শূন্যতা পূর্ণ করব?আমার আরেক মা যে তুমি ছিলে হাসি মা।ও হাসি মা ওঠো না।তুমি তো বলেছিলে মা সুস্থ হলে আমরা অনেক মজা করব।তুমি নাকি আমার মাকে খেপাতে থাকবে যে তুমি আমাকে মায়ের থেকেও বেশি যত্ন করেছো।কোথায় গেলো এখন সেই কথা?চোখ মেলো হাসি মা।”
বলেই কান্না করে দেয় মায়া।মায়ার কান্নার মাঝেই সেখানে দৌড়ে আসে মিহির।মায়ার কাছে এসেই হাসির মুখ দেখ পুরোপুরি চুপ হয়ে যায়।হাসির দিকে তাকিয়ে মিহির যেনো থমকে গেছে।কিছু না বলে হাঁটু গেড়ে বসে পড়ে।মায়া তাকালো মিহিরের দিকে।মিহিরকে দেখে মায়া বলে ওঠে,”হাসি মা আর নেই মিহির ভাই।কে খুন করতে পারে হাসি মাকে?”
মিহির কোনো কথা না বলে হাসির এক হাত ধরে।মৃত মানুষের হাত শক্ত হয়ে আছে।মিহির চোখের পানি ফেলতে থাকে।মায়া এদিকে ওদিক তাকালো।কিছুটা দূরে হাসির শরীরের রক্ত দেখা গেলো।ঠিক তার পাশেই একটি ঘড়ি।হাসিকে ছেড়ে মায়া ঘড়ির কাছে আসতেই অবাক হলো মায়া।ঘড়িটি হাতে নিয়ে মায়া বলে,”মন্ত্রী মশাই!ও এখানে এসেছিলো?”
মায়ার কথাগুলো কানে আসলো মিহিরের।চোখের পানি মুছে মিহির বলে,”শাহমীর রাজ এখানে কেনো এসেছিলো?”
“জানি না তবে ওর ঘড়ি এটা আমি শিওর।এই ঘড়ি আমি ওকে গিফট করেছিলাম।আমার স্পষ্ট মনে আছে।”
মিহির এবার মায়ার কাছে এসে বলে,”তারমানে ওই আমার মাকে মেরেছে। খুন করেছে আমার মাকে।তোমার মন্ত্রী মশাই আমার মায়ের খুনী।”
মায়ার মাথা কাজ করা বন্ধ করে দেয়।মিহিরের দিকে তাকিয়ে বলে,”কিন্তু এতে লাভ কি?হাসির খুন করে কি হবে ওর।ও তো বলে..”
বলতে না বলতেই মায়ার মনে পড়ে রাজের বলা কথাগুলো।রাজ বলেছিলো মায়ার পূর্ণতাকে অপূর্ণ করে দিবে আবার সোনালী বলেছিলো এমন ব্যাক্তি মায়ার পতন চায় যে মায়ার খুব কাছের।মায়া চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে রাজকে।এটাই তো দুইয়ে দুইয়ে চার হয়।আর তার থেকেও বড় কথা হাসিকে মারতে রাজ এখানে না আসলে রাজের ঘড়ি এখানে আসতো না।এর মধ্যে মায়ার ফোনে কল আসে।নার্স কল করেছে।রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে বলে,”আপনার মাকে ওরা নিয়ে গেছে ম্যাম।আমি আটকাতে পারিনি।”
মায়াবতীর ইচ্ছা পর্ব ৫১
কল কেটে দিলো মায়া।চোখের মধ্যে পানি জমাট বেঁধেছে।চোখের পাতাগুলো বুঝতেই পানিগুলো গড়গড় করে পড়তে থাকে।কিছুক্ষণ পর চোখ মেলে চোখের পানি মুছে মায়া বলে,”আমি তোমাকে ছাড়বো না।এতদিন এই মেহেরুন জাহান মায়ার মায়াবতী রূপ ছিলো তোমার জন্য।এখন এই মায়ার রক্তবতী রূপ তোমার জন্য শুধুমাত্র তোমার জন্য।”