মোহমায়ার বাহুডোরে পর্ব ৫৪

মোহমায়ার বাহুডোরে পর্ব ৫৪
সাদিয়া

ভোরের দিকে ইহাম জোর করে মায়রা কে টেনে ঘুম থেকে তুলে। আলসে মেয়েটা কে সাথে করে একসঙ্গে নিয়ে শাওয়ার দেয়। মেয়েটা কে নিয়ে ফজরের নামাজ পড়ে এরপর ডিউটি তে যায়। ৫.৩০ এ ডিউটি শুরু হওয়ার আগে এর মাঝেই ইহাম রান্নাটাও করে নেয়। কি আর করা শখের বাচ্চা বউটা এখনো সব কিছু রপ্ত করাতে পারেনি।
প্রতিদিন মায়রা কে দেখা যায় নামাজ পড়েই গিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ে। ইহামও আর বারণ করে না। তবে আজ মায়রা নিজ থেকেই এসেছে রান্নাঘরে। এসেই দেখতে পেল টমেটো দিয়ে রুইমাছ রান্না করছে মানুষটা। প্রতিদিন ডিউটি করে এসে আবার রাতের রান্নাটাও নিজে করে। দুজন মানুষ রাতের তরকারিই শেষ হয় না তাই সকালে অল্প কিছু হলেই চলে যায় দুপুর পর্যন্ত।

মায়রা কে দেখেই ইহাম মাথা তুলে বলে, “কি ব্যাপার আজ মহারাণী না ঘুমিয়ে কিচেনে যে?”
ইহাম কে বড্ড তাড়াহুড়ো করতে দেখা গেল। ঘড়িতে তখন ভোর ৪ টা বেজে ৪৬ মিনিট। মায়রা মলিন মুখে জবাব দিলো, “এমনি ঘুম আসছিল না।”
“অভ্যাস চেঞ্জ হয়ে যাচ্ছি নাকি?”
“হুম।”
মায়রা এগিয়ে এলে ইহাম জায়গা ফাঁকা করে মেয়েটার কোমর তুলে কিচেন কাউন্টারের উপর বসাল।
“হা করো।”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

মায়রা হা করতেই একটা সিদ্ধ ডিম মুখে খুঁজে দিয়ে আবার নিজের কাজে ব্যস্ত হলো মানুষটা। ডিমে কামড় বসিয়ে মায়রা গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করল ইহামের দিকে। মানুষটা যতই রুক্ষ হোক অগাধ দায়িত্বশীল আর কেয়ারিং। মুখে স্বীকার না করুক ভালোবাসা নিয়ে কাজে তা প্রকাশ করে দেয় নিখুঁত ভাবে‌। না হয় উনার প্রকাশের ভাষাটা একটু কম হলো। কিন্তু এই মানুষটার তরেই তো তার সকল প্রশান্তি লুকায়িত।
“আচ্ছা ক্যাপ্টেন সাহেব রোজ ডিউটি করে এসে এসব কাজ করতে আপনার বিরক্ত লাগে না?”
“আপাদত লাগছে না। কিন্তু বদলে যাওয়া স্বভাবের মানুষ আমরা লাগতে কতক্ষণ?”
“আমি তো বলি সকালের রান্নাটা করার প্রয়োজন নেই। কিছু একটা খেয়ে নিবো। আর রাতের তরকারি তো থাকেই।”
জবাব দিলো না ইহাম। ঢাকনা তুলে দেখে নিলো তরকারিটা। এরপর ভাজামাছ গুলি দিয়ে অল্প ধনেপাতা ছড়িয়ে দিলো তারউপর।

“আপনি ডিম খেয়েছেন?”
“নো।”
“হা করুন আমি দিচ্ছি।”
“আমি এভাবে কারো কাছ থেকে কিছু খাই না।”
মুখে ডিম নিয়ে বিস্মিত নজরে তাকিয়ে মায়রা। তার কৌতূহলী মুখটায় নজর বুলিয়ে ইহাম এগিয়ে এলো। গালে মৃদু চাঁপ প্রয়োগ করে মায়রার মুখের ডিমটুক নিজের ঠোঁটে তুলে নিল অনায়াসে। বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে অধর মুছে বলল, “ইট’স সো ডেলিসিয়াস।”

লজ্জায় রঙ্গিম মুখ নুয়ে আনে মায়রা। লোকটা যেমন পাষাণ তেমনি আদুরে।
ইহাম জিজ্ঞাস করে, “রুটি ভাজতে হবে তোমার জন্য?” মাথা নাড়িয়ে মেয়েটা না বুঝায়।
“৬০ কেজি হয়ে যাও আমার পিচ্চি মিসেস চৌধুরী।”
মায়রা চোখ দুটি বড়বড় করে আচমকা বলে উঠে, “পাগল নাকি আপনি?”
“উমম বলতে পারো বউ পাগল।”
এরপর মায়রা কি বলবে তা আর ভেবে পায় না। শুধু লজ্জায় রাঙ্গা হয়ে আসে কপোল দুটি।

মায়রা তখন দুপুরের রান্না বসিয়েছে। বেগুন ভাজি, ডিম ভুনা, আর মুরগির গোশত। পাক্কা রাঁধুনি না হলেও এখন টুকটাক কাজ চালিয়ে নিতে পারে সে। একেবারে না খাওয়ার উপযোগীও হয় না। একটু খারাপ হলেও ইহাম বকাবকি করেনা বরং শান্ত ভাবে বলে দেয় কোথায় ভুলটা হয়েছে আর কিভাবে পরবর্তীতে করতে হবে।
সাড়ে বারোটা বাজতেই কলিংবেল বেজে উঠে। মায়রা রান্নাঘর ছেড়ে গিয়ে দরজা খুলে আবার ফিরে আসে। পেনে তখন বেগুন ভাজা বসিয়েছে।
অল্প সময় যাওয়ার পর মায়রা চোখ তুলে তাকায়। প্রতিদিন তো লোকটা কিচেনে এসেই শুরু করে দেয় অসভ্যতামি। তো আজকে কি হলো তার? মায়রা তাকিয়ে দেখতে পেল সাহেবের রঙ্গিম মুখ। কি ব্যাপার রেগে আছে নাকি মানুষটা? চুলার আঁচ কমিয়ে মায়রা এগিয়ে গেল। ফ্রিজ থেকে বানানো শরবতটা নিয়ে সোফার কাছে গেল। এগিয়ে দিয়ে বলল,

“কিছু কি হয়েছে? কেমন দেখাচ্ছে আপনায়।”
“রাতেই রেডি হবে তোমায় নিয়ে ডক্টরের কাছে যাবো।”
আচমকা এহেন কথায় মায়রার কপাল কুঁচকে আসে। কি বলে এই লোক? হঠাৎ ডক্টরের কাছে যেতে হবে কেন? তার তো কিছুই হয়নি।
কপাল কুঁচকেই জিজ্ঞাস করে মায়রা, “ডক্টরের কাছে যাবো কোন হঠাৎ?”
“কারণ এখন ডক্টরের কাছে না গেলে দেখা যাবে কিছুদিন পর তোমার মাথার চুল মাথার না থেকে এখানে ওখানে আমার শরীরে পাওয়া যাবে।”

মায়রা কিছু বুঝতে না পারলেও ইহামের খানিক রাগী চেহারা দেখে হাসি পায় তার। ঠোঁট টিপে হেসে জানতে চায়, “কি হয়েছে বলা যাবে কি? আমার চুল কি দোষ করল? শুনতে পারি?”
“যে ভাবে আগ্রহ নিয়ে জানতে চাইছো যেন তোমার চুল পিএইচডি নিয়ে এসেছে দেশের জন্য।”
“হয়েছে কি বলবেন তো? কি দোষ করেছে আমার চুল?”
“করেনি বলছো? মিটিং এর সময় আমার ইউনিফর্ম, কাঁধ থেকে তোমার ইয়া লম্বা চুল বের করে সিনিয়রা। সেটা কি?”
ঠোঁট টিপা হাসি একটু প্রশস্ত করে মায়রা। হেসে হেসে প্রশ্ন করে, “এটা কি আমার দোষ? সারাক্ষণ তো আপনিই চিপকে থাকতে চান আমার সাথে।”

দাঁত চেঁপে ইহাম মায়রার কোমর টেনে নিজের কাছে আনে। তবে বলে না এই মিছে রাগ শুধু তার চুলের জন্য নয় বরং অফিসিয়ালি কাজের প্রেশার বেশি দায়ী।
“হাসবে না বলে দিচ্ছি। মাথায় তুলে আছাড় মারব।”
“উমম। বললেই হলো?”
“হলো” বলতে বলতে আচমকা ইহাম তাকে পাজোকোলে তুলে নেয়।
আকস্মিক কান্ডে ভড়কে মেয়েটা বলে উঠে “ছাড়ুন।”
“মায়রা তোমার এই ছাড়ুন কথাটা শুনলেই আমার মাথায় রক্ত উঠে যায়। মেজাজ পুরো বিগড়ে যায় বলে দিচ্ছি ফারদার যেন এটা না শুনি।”

ইহামের কাঁধে হাত পেঁচিয়ে মায়রা মাথা নত করেই মিনমিন স্বরে জানায়, “চুলায় বেগুন ভাজা পু’ড়ে যাবে।”
“ছাই হয়ে যাক। এই মুহূর্তে আমি যে পুড়ছি সেটা তোমার চোখে পড়ছে না স্টুপিড?”
কোনো প্রত্যুত্তর করতে পারে না মায়রা। ঘাড় নুয়িয়ে ইহাম এক পল দেখে গুটিয়ে যাওয়া ছোট্ট অঙ্গখানা। এরপর দুপদাপ পায়ে আগে এগিয়ে যায় কিচেনের দিকে। বা হাত দিয়ে গ্যাসের চুলাটা অফ করে দিয়ে চিরাগত গম্ভীর স্বরে বলে,

“এক সাথে শাওয়ার নিবো চলো।”
“কিন্তু আমি তো গোসল করে ফেলেছি” ঝটপট করে জবাব দেয় মায়রা।
ইহাম তাকায় না তার দিকে। বেডরুমের দিকে যেতে যেতে উত্তর দেয়, “নো প্রবলেম। স্বামীর সাথে বেশি বেশি ফরজ গোসল করা উত্তম। সাওয়াব হবে তোমার।”
ইহামের গাম্ভীর্য মুখ আর এহেন কথায় তব্ধা লাগা চোখে তাকিয়ে থাকে মায়রা। কি উত্তর দিবে এই লোককে কিছু বুঝেও না সে।

দম বন্ধ হয়ে আসছে শিফুর। রিং হওয়া সময়টুকও সে নীরব থাকতে পারছে না। ফাঁপা একটা কষ্ট ভেতরে বুদবুদ আকারে বেড়েই চলছে ক্রমশ। শঙ্কা সংশয়ে হাত পাও তার কাঁপছে। একবার দুই বার চারবার রিং হওয়ার পর তুহিন ভাই কল রিসিভ করল।
“কি ব্যাপার শিফু? দেখো কল তুলছি না তবুও এতবার কল করছো কেন?”
শিফু কান্না আটকে রাখা ফাঁপর কন্ঠে কোনো রকম বলল, “তু তহিন ভাই।”
ওপাশে বহুদূরে থাকা তুহিন সেই কন্ঠ শুনে কপাল কুঁচকে নেয়। ভার্সিটির মাঠের এক কোণায় গিয়ে অধির কন্ঠে শুধায়,

“কি হয়েছে শিফুটিফু?”
জবাব দিতে পারে না মেয়েটা। ঢোক গিলে তুহিন আবার জিজ্ঞাস করে, “এতবার কল করছো কেন? কি হয়েছে বলো?”
“আ আমার না কেমন যেন লাগছে তুহিন ভাই।”
ভ্রু কুঞ্চন করে সে জানতে চায়, “কেমন লাগছে?”
“বুঝতে পারছি না।”
“খারাপ লাগলে পরিবার কে বলো। ডক্টরের কাছে যাও।”
“আমার আপনার জন্যে খারাপ লাগছে। অস্থির লাগছে কেমন।”

বলতে বলতে মেয়েটার কন্ঠ কেঁপে উঠল। ওপাশের তুহিন বুঝল মেয়েটা কাঁদছে হয়তো। নয়তো কান্না চেঁপে রাখার চেষ্টায় আছে। ভাই এর মতো শক্ত কিনা। অবশ্য সে নিজেও প্রথমে ইহামের উপর রেগে থাকলেও এখন পরিস্থিতিটা অনেকটা বুঝের মাঝে এসেছে। গভীরভাবে ভাবলে ইহাম ভাই এর কথাতে যথেষ্ট যুক্তি আছে। তারউপর মায়রার শাশুড়ি প্রথম যেদিন তার সামনে নিজের বোনের উপর রাগারাগি করতে শুনেছে সেদিন আরো ভালো করে অনুভব করেছে কিছু একটা। শিফুর দাম ইহাম ভাই এর কাছেও যে এমন দামীই হবে তাও বুঝেছে ভালো করে। এই কারণে নিজেকে অনেকটা শক্ত করতে পেরেছে সে। ভবিষ্যৎ না হয় কথা বলবে।

ফোঁস করে নিশ্বাস ঝেড়ে তুহিন বলে, “এখন আমি কি করতে পারি শিফু?”
মেয়েটা জবাব দিতে পারে না। চুপ করে মুখে হাত চেঁপে রাখে।
“নিজেকে একটু সময় দাও শিফু। আশাকরি সব ঠিক হয়ে যাবে। ফোন রাখব?”
“না। রাখবেন না ফোন। একটু কথা বলুন না প্লিজ। আমার কষ্ট হচ্ছে খুব।”
“এসব কষ্ট খনিকের। অল্প দিনেই ভুলে যাবে।”
“আপনিও কি সব ভুলে গিয়েছেন তুহিন ভাই?”
“সব না ভুললেও অনেক কিছু ভুলতে হয়েছে। আমার ক্লাস ছিল শিফু।”
“আজকাল আপনি খুব ব্যস্ত। একটু কথা বলারও সময় নেই আর। বিদেশ গিয়ে আপনি পাল্টে গিয়েছেন তুহিন ভাই।”

তপ্ত শ্বাস ফেলার শব্দ শুনা গেল। তুহিন নরম গলায় বলল, “শুরুতে তোমার ভাই এর উপর রাগ করেছিলাম কিন্তু এখন ফিল করি উনি ৯০% ঠিক শিফু। তোমার বয়সটা কম তাই আবেগ টা হঠাৎ বেশি বেড়েছে আমার এড়িয়ে যাওয়া নিয়ে। কিন্তু আমি তোমায় এড়িয়ে যাচ্ছি না শিফুটিফু। আমি আমার ক্যারিয়ার নিয়ে ব্যস্ত শুধু। তুমি এটাকে খুব গাঢ় ভাবে নিও না প্লিজ।“
শিফু ফুঁপিয়ে উঠে, “আ আপনি পরে..” কথা আটকে আসে মেয়েটার। দুজনই কিছুক্ষণ নীরব থাকে। এরপর তুহিন ক্ষীণ গলায় বলে, “আমি আমার জায়গার ঠিক থাকার চেষ্টা করব শিফু। তবে অপেক্ষা জিনিসটা করো না। সব কিছু নরমাল মনে করে পড়াশোনায় ফোকাস দাও। এসব বিষয় নিয়ে যত ভাববে যত গুরুত্ব দিবে ততই হাইপার হয়ে যাবে অস্বস্তি হবে। কিন্তু সবটা স্বাভাবিক ভেবে টেনশন করো না দেখবে সব কিছু নরমাল লাগছে। স্বাভাবিক ভিবে এগিয়েও যেতে পারবে। আমি তোমার সাথে যোগাযোগ রাখব ডোন্ট ওরি। শেষে শুধু বলব আমাদের গন্তব্য ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।”

আজকাল রুটিন টা অনেক চেঞ্জ হয়েছে তার। প্রতিদিন নামাজ পড়ে ইহামের সাথে ব্রেকফাস্ট করেই আবার ঘুমিয়ে যায় মায়রা। উঠে আটটা নয়টার দিকে। এরপর লেগে যায় ঘরের কাজে। মানুষটা ঠিক ১২ টা ৩০ এর মাঝে চলে আসে। এরমাঝে নিজেও দুপুরের খাবার শেষ করে। একটু বিশ্রাম নেয়। বিকেল হতে না হতেই এত খিদে পায় মায়রার বলার মতো না। ইদানিং নিজেকে অনুভব করে একটু ভার ভার। নিশ্চয়ই ওজনটা বেড়ে গিয়েছে। দেখতেও অনেকটা পরির্বতন হয়েছে‌‌। খাওয়া বেড়েছে কিনা! ঘরে সব কিছু এনে রাখে লোকটা। কখনো নিজের জন্যে কিছু বানিয়ে খায় তো আবার কখনো ইহামের এনে রাখা শুকনো খাবার দিয়েই ছোট খিদে মিটায়।
দুপুরের খাবার খেয়ে শুয়ার পর ঘুমিয়ে গিয়েছিল সে। নামাজ পড়ে এক কাপ চা বানায় নিজের জন্যে। জিনিস শেষ হওয়ার আগেই ইহাম তা এনে রাখে, কখন কি লাগবে না লাগবে সব দিকে লোকটার খেয়াল আছে। বৈয়াম থেকে টুস্ট বিস্কুট বের করে মনের সুখে চায়ে ডুবিয়ে মুখে তুলল। দুধ চা দিয়ে টুস্ট তার খুব পছন্দের। দুটো বিস্কুট খেয়ে চা নিয়ে চলে গেল ব্যালকুনির দিকে।

মা আর শাশুড়ী দুজনের সাথে কথা বলতে বলতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে এলো। জামাই এর আবার কড়া আদেশ প্রতিদিন যেন উনার মাকে কল করা হয়। তাই সময় করে মা আর শাশুড়ি দুজনকে কল করে সে।
মাগরিবের নামাজ পড়ে মায়রা ঝটপট কিছু নাস্তা বানিয়ে নেয়। সাহেবের এসেই খিদে পায়। কলিং বেল বাজতেই মায়রা গিয়ে দরজা খুলে সালাম দেয়। জবাব দিয়েই ইহাম তাকে জড়িয়ে ধরল।
চিন্তিত সুরে মায়রা জিজ্ঞেস করে, “আপনার কি কিছু হয়েছে?”
“আমায় একটু কোলে নিবে মায়রা?”
হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে থাকে মায়রা। এই লোকটার কি হয়েছে? মাথায় আঘাত টাঘাত পেলো নাকি? কি বলছে উল্টাপাল্টা?

“কি হয়েছে আপনার? শরীর খারাপ নাকি?”
“পারবে না তো? ঠিক আছে মাথায় হাত বুলিয়ে দাও। চলো।”
এরপর ইহাম তার হাত ধরে সোফায় নিয়ে গিয়ে বসায়। চুপচাপ মায়রার কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে পড়ে। অবাক সুরে প্রশ্ন করে মায়রা, “আপনার কি কিছু হয়েছে ক্যাপ্টেন সাহেব? শরীর কি বেশি খারাপ লাগছে?”
ইহাম উত্তর না দিয়ে মায়রার হাতটা নিজের মাথায় রেখে শুধু বলল, “হাত বুলিয়ে দাও।”
শঙ্কিত বদনে মায়রা বলে আবারও, “ইবরাহিম ভাই কে বলে কি ডাক্তার আনব?”

মোহমায়ার বাহুডোরে পর্ব ৫৩

“শুহহহ, যেটা বললাম সেটা করো।”
চিন্তায় মায়রার স্পন্দন বাড়ে। কি হলো লোকটার হঠাৎ? কিছু সময় পর আকস্মিক ইহাম বলে উঠে, “আমি মরে গেলে তুমি কষ্ট পাবে মায়রা?”

মোহমায়ার বাহুডোরে শেষ পর্ব