এমপি তামিম সরকার পর্ব ৪
কাফাতুন নেছা কবিতা
তামিমের চোখের রং রাগে রক্তিম বর্ন ধারন করে! কেউ তার শখের রমনীকে অসম্মান করেছে মানে তাকে অসম্মান করেছে। আর এই আরশি নগরে যে তার নাম রঙ্গমঞ্চ খানায় লেখা হয়ে গেছে তা নিশ্চিত শতভাগ।
পঞ্চ পান্ডবরা যে যার কাজে খুব সুন্দর মতো লেগে গেছে কারণ তারা জানে, আজ যদি এক চুলও ভুল হয়, তাহলে তামিম তাদের ও শেষ করে দিবে।
ঠিক তখনই ফোন আসে কালা মানিকের,,
”ভাই, লোকজন রেডি! প্রিন্সিপাল, সেকেন্ড মাষ্টার আর তিনজন টিচার, সবাই গাড়িতে!”
তামিমের মুখে চিরোচেনা সেই হাসি…….
রঙ্গমঞ্চ খানায় নিয়ে আয়। আজকে ওদেরকে শেখাতে হবে, ‘সরকার’ কারে কয়!”
—————————রঙ্গমঞ্চ খানা —————————-
টিচারদের এক এক করে নামানো হয়। সবার চোখে কালো কাপড়, হাত বাঁধা।
তামিম চেয়ার ঘুরিয়ে পায়ের উপরে পা তুলে বসে। এক এক করে সবার চোখের কাপড় খুলে দেওয়া হয়। প্রিন্সিপাল, যিনি তার বউকে কলেজ থেকে বের করে দিয়েছে! আর সাথে আর কয়জন সহযোগী।
“কীরে? কে তোকে ক্ষমতা দিছে আমার শখের নারীকে বের করে দেওয়ার ?”
প্রিন্সিপাল কাঁপতে কাঁপতে বলে,,,
” স্যার,, মাফ করবেন! আমরা জানতাম না ও আপনার পছন্দের! ”
তামিম মৃদু হাসে।
” আমার শখের নারীকে না চেনার অপরাধ পুরো আরশি নগর দেখবে এবার!”
তামিমের কথা শুনে সকল শিক্ষক ভয়ে কাঁপতে থাকে। আর কান্নায় ভেঙে পরে। কিন্তু তাতে ও মন গলেনি তামিমের।
তারপর ইশারা করে সাকিবকে……….
“শিক্ষা দে এদের!”
সাকিব আগুনের মতো চোখে তাকায়।
“ভাই, শুধু শিক্ষা না…শরীরে লি’খে দিমু—’সরকারের আদেশ অমান্য করা মানেই মৃ’ত্যু’!”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
——————পরদিন সকাল——————
খুব সকাল করে ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস সুবহার। আজও তার ব্যতিক্রম নয়! কিন্তু আজকের সকালটা কেমন যেনো বিষাদময়। না চারপাশে আওয়াজ কানে আসছে। আর না কোনো কোলাহল। কেমন যেনো নিঃস্ব লাগছে সবকিছু। সকালে চারপাশ কেমন যেন অস্বাভাবিক শান্ত। কিন্তু এমন তো হয় না সচারাচর। সুবহা একটুর জন্য বারান্দায় যায়। যেয়ে দেখে পুরো রাস্তা ফাঁকা। হয়তো সে আজকে খুব তাড়াতাড়ি উঠেছে।
সুবহা ফ্রেশ হয়ে নিচে আসে।
মা রান্নাঘরে, আর সুবহার বাবা টিভিতে কিছু একটা দেখছে।
একটাই খবর!
আরশি নগরের নামকরা কলেজে আ’গুন, তিনজন শিক্ষক গুরুতর আহত! প্রিন্সিপাল নিখোঁজ!
নিউজ টা শোনা মাত্র সুবহার পা ঠান্ডা হয়ে যায়। ভয়ে তার চোখে পানি চলে আসে। ঠিক তখনই সুবহার বাবা তাকে পিছনে দাড়িয়ে থাকতে দেখে।
” দেখেছিস মা! তোদের কলেজে ভয়াবহ আগু’ন লেগেছে। তবে তুই কোনো চিন্তা করিস না। আমি তোকে অন্য কলেজে ভর্তি করে দিবো।”
সুবহা তার বাবার কথায় মাথা নেড়ে হ্যাঁ জানায়। কিন্তু তার মনে চলছিলো অন্য ভয়।সে জানে, এসব কার কাজ! সুবহা যেনো দাড়িয়ে থাকার শক্তি টুকুও হারিয়ে ফেলে। তাই সে নিজের রুমে যেতে থাকে।
” সুবহা নাস্তা করে যা মা!”
” জ্বী আচ্ছা মা!”
সুবহা তার পরিবারের সাথে কোনো রকম নাস্তা করে। খাবার যেনো তার গলা দিয়ে নামছেই না। সুবহা কোনো রকম খেয়ে রুমে চলে আসে। রুমে এসে কান্নায় ভেঙে পরে সে। ঠিক তখনই তার ফোনে একটা নোটিফিকেশন আসে।
মোবাইলটা হাতে নেয়। একটি ছোট্ট মেসেজ আছে তাতে………..
” বিকেল ৫ টায় দেখা হচ্ছে পরী!”
মেসেজটা পাওয়া মাত্র সুবহার কলিজার পানি শুকিয়ে যায়। সে এই কোনো বিপদে পড়লো।
সুবহা এবার আয়নায় নিজেকে দেখে। ভয়, অভিমান, অসহায়ত্বসব মিশে যাচ্ছে।
নিজেকে জিজ্ঞেস করে….
“কীভাবে বাঁচবো আমি তামিম সরকারের হাত থেকে? ”
——————————-সরকার ভিলা———————
তানভীর সরকার কিছু একটা নিয়ে চরম চিন্তিত। উনি তার দলের লোকদের সাথে কিছু একটা নিয়ে আলোচনা করতে থাকে।
” ভোট কীভাবে আসবে জানি না! কিন্তু সরকার আমাকেই হতে হবে।”
” স্যার অপজিট পার্টি রা এবার আচ্ছা করে মাঠে নেমেছে। মনে হয় না এতোটা সহজ হবে!”
ঠিক তখনই উপর থেকে গম্ভীর কন্ঠ ভেসে আসে
” না বলে কোনো শব্দ আমার ডিকশনারিতে নাই নেতা!”
তামিমের কথা শুনে উপস্থিত নেতারা ভয়ে থতমত খায়। কারণ এই একজনই আছে যাকে ৮-৮০ সকলে যমের মতো ভয় পায়। তামিম সিড়ি দিয়ে নামতে থাকে আর নেতারা সাথে সাথে দাড়িয়ে যায়।
এমপি তামিম সরকার পর্ব ৩
” নির্বাচন হোক কিংবা না হোক প্রধানমন্ত্রী আমার আব্বাজানই হবে! আর যদি না হয় নিজেদের কবর কোথায় খুড়’তে হবে সেই জায়গায় ঠিক করে নিও!”
তামিমের কথায় সকল নেতারা শুকনো ঢোক গিলে।
” স্যার আপনি কোনো চিন্তাই করবেন না আমরা আছি তো।”
” এসব বিষয় নিয়ে চিন্তা তামিম করে না!”

Shundor