এমপি তামিম সরকার পর্ব ৪১
কাফাতুন নেছা কবিতা
” প্রেরেম বড় আম্মা! ”
” হ্যা?”
” মানে ফ্রেরেন্ড বড় আম্মা! ভাবিসাপের ফ্রেরেন্ড আসছে তো তাই দাড়ায় আছি, যদি কিছু লাগে!”
” হই বড় আম্মা!”
আয়েশা বেগম জোড়া বলদের মতিগতি খুব ভালো মতোই টের পাই! ছোটো থেকে তামিমের সাথে তাদের ও বড় করেছে সে, কোনো মেয়ে দেখলেই যে সাকিব আর মানিক হেলনা হয়ে যায় এটা নতুন কোনো বিষয় নয়! এই নিয়ে ৬৩ বার দু-জনে প্রেম করার চেষ্টা করে গেছে! কিন্তু কোনো বারই তাদের জীবনে প্রেম আসে না!
” দরজা ওইদিকে, বিসমিল্লাহ বলে বের হ!”
সাকিব আর মানিক এক জন আরেকজনের মুখের দিকে তাকিয়ে বের হয়ে যায়!
” আমাগো সুখ কেউ দেখবার পারে না!”
” প্রেরেম ও হয় না!”
জোড়া বলদ একজন আরেকজনের গলা ধরে বের হয়ে যায়! তামিম আর বাকি তিন জন বাইরে ল্যাপটপ নিয়ে কিছু একটা করছি! সাথে কো’পা শাসমু ও দাড়িয়ে আছে!
” সিল মারিবেন কোন খানে?”
” কো’পা শাসমুর মাঝখানে! ”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
মাকিন আর সাকিব এসেই স্লোগান দিতে থাকে!২ বছর আগে কো’পা শাসমুকে ওর্য়াড কাউন্সিলর বানানোর জন্য তামিম নির্বাচনে দাড় করায়! তার মার্কা ছিলো গরু! গরু মার্কায় ভোট দিন স্লোগানটি শামসুর জন্য একটু অন্য রকম লাগে! রীতিমতো তাকে গরুর সাথে তুলনা করা হচ্ছিল! তাই মানিক আর সাকিব এই স্লোগান বের করে! তারা পুরো নির্বাচন জুড়ে একটাই স্লোগান দিতে থাকে, ” সিল মারিবেন কোন খানে? কোপা ভাইয়ের মাঝখানে! ” বিষয়টি হাস্যকর হলে ও গরুর থেকে শতগুন ভালো হওয়ায় শামসু ও কিছু বলে নি! কিন্তু তারপর থেকে শামসু যতবারই জোড়া বলদের সামনে পড়তো তারা এই স্লোগান দিয়ে উঠতো!
” ভাইইইই! আমি কিন্তু ওগো নল্লি কাই’ট্টালাম!”
তামিম কোনো রিয়েকশন না দিয়ে নিজের হাসি লুকোনোর চেষ্টা করে! সত্যি বলতে তার পঞ্চ পান্ডবের এই কাজগুলো দেখতে দেখতে তামিম এতোটায় অভ্যস্ত হয়ে গেছে যে, তারা চুপচাপ থাকলে তামিমের দিনই শুরু হয় না!
” কয়ডারে কো’পাইলি রে শামসু ভাই?”
” আপাতত দুইডারে কো’পামু! একটার নাম সাকিব, একটার নাম মানিক! ”
সাকিব মেয়েদের মতো কোমর বাঁকাতে বাকাতে শামসুর কাছে এসে বুকে সিরিয়ালের নায়কাদের মতো হালকা বারি দেই!
” উফ! দুষ্ট ছেলে খালি রাগ করে!”
সাকিবের এমন মেয়েদের নকল করার একটিং দেখে তামিম সহ উপস্থিত সকলে আর নিজেদের হাসি আটকিয়ে রাখতে পারে না!
” আমার পরী কী করে? ”
” বান্ধবী গো ধইরা কান্দা কাটি! ”
তামিমের চোয়াল শক্ত হয়ে আসে!
” সকাল জড়াইয়া ধরছে?”
” হো, তিনজন তিন জনরে?”
তামিম উঠে সোজা হনহনিয়ে ভেতরে আসতে থাকে!
” আচ্ছা সুবু! এখানে সবাই এমন পুরনো ঢাকার লোকদের মতো কথা কেন বলে, মনে হয় না এটা প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন! ”
” আমার শাশুড়ী আম্মু পুরান ঢাকার মেয়ে! একদম খাটি! উনি সবাইকে নিজের শেখরের অস্তিত্ব ভুলতে দেননি! ”
” আচ্ছা! ”
” সুবু, তোর গালে ওটা কী! ”
কলী সুবহার গালে লেগে থাকা কিছু একটা সুন্দর মতো পরিষ্কার করছিলো! ঠিক তখনই তামিম ভেতরে আসে! সে ছাড়া অন্য কেউ সুবহার গালে হাত দিচ্ছে এটা খুব সহজে মানতে পারলো না তামিম! ঘাড়ের রগটা একটু বেঁকে গেলো তার! হাতের মুঠো শক্ত করে রাগ নিয়ন্ত্রণের বৃথা চেষ্টা করতে লাগলো! তামিম কয়েক মিনিট এভাবেই দাড়িয়ে রইলো, কিন্তু তার ভেতরের কিছু একটা হয়ে যাচ্ছিল! ঠিক বুঝতে পারছে না তামিম!
তামিম এসে সোজা সুবহার হাত ধরে দাড় করায়!
” একটু উপরে আসো দরকার আছে!!”
তামিম রীতিমতো হেচকা টান দিয়েই নিয়ে যেতে লাগলো সুবহাকে! তামিমের এমন হঠাৎ আক্রান্তক আচরণ বুঝতে পারলো না সুবহা!আজকে তো তেমন কোনো কিছু করেনি সে, আর না তামিমের কথার অবাধ্য হয়েছে! সকাল অব্দি তো তামিমের মুড একদম ফুরফুরে ছিলো! তাহলে হঠাৎ এমন কী হলো? আর সুবহা নিজের অজান্তে করলোই বা কী? ভয়ে একদম ভেতর থেকে শেষ হয়ে আসছিলো সুবহা! তামিমের কদিনের এতো নরম ব্যবহারে, খু*নি তামিমের অস্তিত্ব প্রায় ভুলতে বসেছিলো সুবহা! কিন্তু আজকে তামিমকে সেই চিরচেনা ভয়ংকর রুপে দেখে ভিতর অব্দি আতঙ্কের বাসা বাঁধে। ভয়ে হিম শীতল হয়ে যায় সুবহার শরীর!
তামিম সুবহার হাত এতো জোড়ে ধরেছে যে, সুবহার চোখ পানিতে চিকচিক করতে লাগলো! যে কোনো সময় টপটপ করে পড়তে পারে!
তামিম সুবহাকে নিয়ে রুরে প্রবেশ করেই এক ঝটকায় তাকে ফেলে দিলো! তাল সামলাতে না পেরে স্ব জড়ো ফ্লোরে পড়ে গেলো সুবহা! বুকের ক্ষতটায় যেন একটু ব্যাথা ও পেলো!
তামিম দরজা লক করে সুবহার হাত ধরে টেনে তুলে তাকে নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়ে! তারপর বড় মিররের সামনে দাড়ায় করায়! সুবহাকে নিজের দিকে ঘুড়িয়ে নিয়ে নিজের শরীরে আয়ত্তে নিয়ে আসে সুবহার ছোট্ট দেহটি! শরীরে হাফ ভর ছেড়ে দিয়ে সুবহাকে একদম দড়ির মতো পেঁচে ধরে! নড়াচড়া করার মতো স্পেস দেওয়া হয় না সুবহাকে! তামিমের শরীরে ওজনের ভার নিতে পারে না সুবহা! হাসফাস করে উঠে সুবহা! নিঃশ্বাস নিতে ও সমস্যা হয় তার! কিন্তু তামিম তো তামিমই! তাকে নাড়ানোর শক্তি সুবহার নেই!
তামিম লোফাতে সাওয়ার জেল লাগিয়ে এক হাতে সুবহার গাল খুব শক্ত করে ধরে, আর এক হাত দিয়ে সুবহার গাল ঘষতে থাকে! খানিকটা আক্রোশেই সুবহার গাল ঘষতে থাকে তামিম! খুব জোড়ে কেঁদে উঠে সুবহা! কিন্তু বন্ধ রুমে তার কান্নার আওয়াজ শোনার মতো কেউ নেই! তামিমের রুমের আওয়াজ না বাইরে যায়, আর না বাইরের আওয়াজ ভিতরে আসে! সুবহা যদি কাঁদতে কাঁদতে ম’রে ও যায় তার কান্নার আওয়াজ কখনোই বাইরে যাবে না!
সুবহা অনেক বার চেষ্টা করে তামিমকে বাঁধা দেওয়ার জন্য! কিন্তু কোনো লাভ হয় না! সুবহার কান্না আরো দ্বিগুণ মাত্রায় বেড়ে যায়, যখন তার নরম পাতলা চামড়া ভেদ করে রক্ত বের হয়! শরীরে স্কিনের তুলনায় মুখের অনেকটায় সেনসেটিভ হয়! যার ফলে হালকা কিছু দিয়ে ঘোষলে ও দাগ পরে।সেখানে এতো জোড়ে জোড়ে ঘোষার ফলে রক্ত বের হওয়াটা স্বাভাবিক!
তামিম সুবহাকে উল্টো দিকে ঘুড়িয়ে পানি ছেড়ে দিয়ে ঘাড় শক্ত করে ধরে মুখ পানিতে ধরে! ।
কিছু ক্ষণ পর তামিম সুবহাকে উঠিয়ে মুখ মুছতে থাকে!তাতে খুব ব্যাথা পায় সুবহা! ধৈর্যের সমস্ত সীমা অতিক্রম হয়ে যায় সুবহার! সে তামিমকে ধাক্কা দিয়ে খুব জোড়ে থাপ্প’ড় বসিয়ে দেয় তামিমের গালে! দু’সেকেণ্ডের জন্য তামিম নিশ্চুপ হয়ে যায়! কোনো অনুভূতি বুঝা গেলো না! সে কী রেগে গেলো? গেলো ও কতোটা?
হিংস্র বাঘের মতো তামিম তাকায় সুবহার দিকে! তারপর সুবহার হাত ধরে এক ঝটকাতে নিজের কাছে নিয়ে এসে হাফ কোলে নেই সুবহাকে! সুবহা হাত-পা ছড়িয়ে প্রচুর লাফালাফি করতে লাগলো! কিন্তু কোনো লাভ হলো না! তামিম সুবহাকে বিছানায় ছুড়ে ফেলে দেয়!
সুবহা দু-হাত ঠেলে পিছনে যেতে চায়! কিন্তু তামিম তার পা ধরে টান দিয়ে নিজের শরীরে আয়ত্তের মাঝে নিয়ে সুবহা! সমস্ত ভর ছেড়ে দিয়ে সুবহার হাত দুটো নিজের হাতে দিয়ে খুব শক্ত করে চেপে ধরে! তারপর সুবহার ঠোঁট নিজের আয়ত্তে নিয়ে নেই! সুবহা ইচ্ছে করে তামিম ঠোঁটে কামড় ও দেওয়ার চেষ্টা করে! কিন্তু অসফল হয়! তামিম নিজের ক্রোধের আক্রোশ সুবহার ঠোঁট দিয়ে মিটিয়ে নিচ্ছে! হাজার চেষ্টা করে ও কোনো লাভ হয় না তার! এভাবে ঠিক কতক্ষণ তামিম সুবহাকে কি’স করতে থাকে ঠিক জানা নেই সুবহার! মিনিমাম ১-১:৩০ ঘন্টার বেশিই বলা চলে! তামিমের সারাজীবনের জমিয়ে রাখা শখ বোধ হয় আজকে একবারেই বের করে দিচ্ছে সুবহার উপরে!
হাত-পা ছেড়ে দেয় সুবহা!অবচেতন হয়ে পড়ে থাকে সে! তামিমের সাথে যুদ্ধ করার শক্তি শেষ তার!
কিছু পর তামিম ও থামে! সুবহার বু’কে মুখ গুঁজে চুপচাপ শুয়ে থাকে! চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে সুবহার! তামিমের গালে ও কিছুটা পানি যায়! মুখ তুলে তাকায় তামিম! সুবহার চোখ বন্ধ কিন্তু পানি গড়িয়ে পড়ছে! পরক্ষণেই চোখ যায় সুবহার ঠোঁটে! মৌমাছি কামড়ে দিলে যেমনটা ফুল ঠিক তেমনটাই ফুলে গেছে সুবহার ঠোঁট! কিন্তু তারপর ও তার পরীকে অসম্ভব সুন্দর লাগছিলো!
” এই হালকা পাতলে আদ’রে নেতিয়ে পড়লে হবে! এখনো ও তো কিছু করিনি!”
ঘৃণায় মুখ অন্য দিকে ফিরিয়ে নেই সুবহা!
” আমার দিকে তাকাও পরী!”
সুবহা তামিমের কথা শোনে না! তাতে তামিমের রাগ আরো বেড়ে যায়!
” তাকাইতে বলছি না!”
খুব জোড়ে ধমকিয়ে উঠে তামিম! তামিমের ধমকের সাথে সাথে সুবহা তার দিকে তাকায়!
” ঘৃণায় হোক আর ভালোবাসায় হোক! তোমার দৃষ্টিতে যেনো শুধু আমিই থাকে!”
তামিম সরে যায় সুবহার উপর থেকে! তারপর ফাস্টএইড বক্স নিয়ে আসে! সুবহা তখন ও বিছানাতে ছিলো!
তামিম সুবহার বাহু ধরে খুব আলতো করে ওঠায় তাকে! তারপর সুবহার গা’লে মেডিসিন লাগিয়ে দেয়! ব্যাথায় চোখ বন্ধ করে ফেলে সুবহা! সে এখনো বুঝলো না তামিম হঠাৎ এতো এগ্রেসিভ কেন হয়ে গেছিলো! আর তার দোষটা কোথায়?
তামিম মেডিসিন লাগিয়ে দিয়ে হাতের আঙ্গুল দিয়ে সুবহার ঠোঁটে স্লাইড করতে থাকে!
” রাতে আর একটু আ’দর করে দিলে ঠোঁট ঠিক হয়ে যাবে!””
তামিম চুপচাপ উঠে দরজার লক খুলে আবার তাকাই সুবহার দিকে!
” আমাকে অধৈর্য করে তুলো না সকাল! ৮ দিন তো দূরে থাক ৮ সেকেন্ড ও সময় পাবে না!”
এমপি তামিম সরকার পর্ব ৪০
তামিম বের হয়ে চলে যায়! আর সুবহা খুব জোড়ে ফুফিয়ে ফুফিয়ে কাঁদতে থাকে! এমন নোংরা মানুষের সাথে কী থাকা যায়? তামিম যদি সুবহাকে সাধারণ ছেলেদের মতো নিজের বউ করে নিতো তাহলে হয়তো সে বিনা বাক্যে তামিমকে মেনে নিতো! কিন্তু জোড় করে ও না করার ভান ধরে সুবহার ইচ্ছের বিরুদ্ধে এতো কিছু করানোর পর তামিমের প্রতি এক চিমটি পরিমানে ভালোবাসা আসে না সুবহার মনে!