তুই শুধু আমার উন্মাদনা পর্ব ১৮

তুই শুধু আমার উন্মাদনা পর্ব ১৮
তাবাস্সুম খাতুন

“কেউ না জানুক, আমি তো জানি…
সিমি কার.. কেউ না জানুক, আমি তো জানি…
নিশান সাইকো.. কেউ না জানুক, আমি তো জানি…
নিশান পাগল, ছাগল, গরু…. কেউ না জানুক,…!”
বাকি গান শেষ করতে না দিয়ে নিশান ধমক দিয়ে বললো,,
“হারামি এইসব কি গান গাচ্ছিস তুই?”
জিহান গান থামিয়ে বিরক্তি কণ্ঠে বললো,,

“বাল থামাস কেন? আমার গান টা আজ কত বছর পরে একটা গান গাচ্ছি তোকে ক্রেডিট করে কই একটু প্রশংসা করবি টা না করে হারামি বলিস ছিঃ।”
নিশান দাঁতে দাঁত চেপে বললো,,
“শালা এইটা এয়ারপোর্ট তাই বেঁচে গেলি নয়তো তোর বোনের মতো তোকেও কবর দিতাম জ্যান্ত।”
জিহান দাঁত কেলিয়ে হেসে বললো,,
“আমি জানি আমি তোর শালা বারবার না বললেই হবে, উপস সরি ভাই আরেক টা গান মনে পড়ছে আমাকে গাইতে দে আমি গেলাম।”

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

বলে জিহান নিজের গলা পরিষ্কার করে গাইতে শুরু করলো,,
“প্রেমে পড়েছে সাইকো প্রেমে পড়েছে…
এত প্রেমে পড়েছে সে যে জ্যান্ত কবর দিচ্ছে রে…
প্রেমে পড়েছে সাইকো প্রেমে পড়েছে….
জীবন কেড়ে নিতে গেছে রে প্রেমে পরেছে….!”
নিশান স্লো ভয়েসে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,,
“জিহানের বাচ্চা তুই যদি চুপ না করিস তো আমি এয়ারপোর্ট মানবো না এইখানেই তোকে মারা শুরু করবো।”
জিহান মুখ ভাঙিয়ে বললো,,
“আগে কথা ঠিক কর, আমার এখনো বাচ্চা হয় নি যে আমার বাচ্চা কে ডাকবি অবশ্য তোরা চাইলে হতেই পারে। তার জন্য একটা মেয়ে খুঁজে আন বিয়ে করে ক্রিকেট টিম বানালে তখন বলিস জিহানের বাচ্চা একেবারে ক্রিকেট টিম তোর ডাকে সারা দেবে।”

নিশান শান্ত কণ্ঠে বললো,,
“তোর ক্রিকেট টিম হলে আমার ফুটবল টিম হবে। তোর ক্রিকেট টিমের সাথে আমার ফুটবল টিম মারতে দেবো। এখন চুপ করে বস নয়তো সত্যিই তোকে খুন করে ফেলবো।”
এর মধ্যে নিশান উঠে পড়লো ফ্লাইট ar সময় হয়ে গেছে প্লেনে উঠে বসবে। নিশানের পিছু পিছু জিহান ও গেলো। দুইজনে এক জায়গায় বসলো। নিশান আগে থেকেই জিহান কে সাবধানী বাণী দিলো,,
“দেখ জিহান আর একটা ফালতু কথা বললে তোকে কিন্তূ আমি সত্যিই খুন করে ফেলবো মুখে সুপার গুলো আঠা দিয়ে বসে থাক।”
জিহান আর কিছু বললো না সে নিজের ফোন বাহির করে গেম খেলতে লাগলো। আর নিশান ফোন স্ক্রল করতে লাগলো।

দুপুর দুইটা বেজে পাঁচ মিনিট। সিমি বাড়িতে আসছে সেই সকালে। আজকে সে শান্তিতে আছে অনেক। বিশেষ করে বিদেশি কুত্তা নেই তো সেইজন্য। বাড়ির কর্তা সহ গিন্নিরা নিজেদের রুমে রেস্ট নিচ্ছে। মেহেরিমা আর রুবেল ও নিজেদের রুমে। তিহান এইখানে এসে বন্ধু বানিয়েছে তাদের সাথে আছে বাইরে। পিহু, মিহু দুইজনে ঘুমিয়ে আছে।মিষ্টি নিজের রুমে আছে ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করছে। কিন্তূ চার বাঁদর সিমি, সামিয়া, জারা আর রাত্রি তারা বাঁদরামি করে বেড়াচ্ছে। কতদিন পরে তারা চারজন একসাথে হলো। সিমি কে পেয়ে তারা তিনজন অনেক খুশি হয়েছে। এখন তারা রুমের ভিতরে বসে খেলা করছে।কাঁচের বোতল ঘুরিয়ে তারা খেলা করছে চারজন। বোতলের মুখ যার দিকে যাবে তাকে যা জিজ্ঞাসা করা হবে তাই বলবে যা করতে বলা হবে তাই করবে অনেক টা ট্রুথ ডেয়ার। প্রথমে সামিয়া ঘোরালো বোতল। ঘুরতে ঘুরতে রাত্রির দিকে গিয়ে থামলো জারা প্রশ্ন করলো,,,

“সত্যি করে বল কাউকে ভালোবাসোস?”
রাত্রি লজ্জা লজ্জা ভাব নিয়ে মাথা নাড়লো। ওর মাথা নাড়তে দেখে তিনজনে চিৎকার দিয়ে বললো,,,
“কিহহহ।”
রাত্রি কানে হাত দিলো। সামিয়া বললো,,
“কে রে সেই মহান ব্যাক্তি?”
রাত্রি — “নাম বলব না, তবে তোরা তাকে চিনিস।”
সামিয়া বললো,,,
“সর বেডি নাম না বলতে পারলে কিসের কি?”
জারা বললো,,
“আচ্ছা থাক চল আবার শুরু করি।”

বলে জারা ঘুরালো। এইবার গিয়ে থামলো সামিয়ার কাছে সিমি বললো,,
“সামু তোকে বেশি কিছু করতে হবে না শুধু একটা চিরকুট লিখতে হবে লিখে সেইটা জিহান ভাই এর রুমে বালিশের নিচে রেখে আসবি। চিরকুট এ লিখবি,, “ও আমার প্রাণ প্ৰিয় জিহান বেবি..তোমাকে ছাড়া আমি পারছিনা থাকতে, কবে নেবে তুমি আমাকে তোমার ঘরের বউ বানিয়ে?”
সিমির কথা শুনে জারা রাত্রি অবাক। সামিয়া ভাব নিয়ে বললো,,
“আচ্ছা অপেক্ষা কর আমি লিখে রেখে আসছি।”
বলে সিমির কথা মতো সামিয়া চিরকুট এ লিখলো সেইটা গিয়ে জিহানের বেডে বালিশের নিচে রেখে আবার চলে আসলো। সামিয়া কে দেখে রাত্রি বললো,,
“বইন আমার ভাই কিন্তূ সুবিধার না সাবধান।”

সামিয়া — “চিরকুট কেডা দিসে? আমি তো লিখতে জানিনা।”
রাত্রি — “তাইতো কে দিলো?”
জারা — “আচ্ছা আচ্ছা থাম শুরু কর।”
রাত্রি এইবার বোতল ঘুরালো থামলো সিমির দিকে। সামিয়া হাসছে সামিয়া কে হাসতে দেখে সিমি বললো,,
“এই সামু হাসছিস কেন?”
সামিয়া নিজের হাসি কন্ট্রোল করে বললো,,,
“তেমন কিছু না সোনা তোমার একটা কাজ দেবো পারবে তো?”
সিমি এটিটিউড এর সাথে বললো,,,
“বলে দেখ কমপ্লিট করে আসছি।”
সামিয়া — “নিশান ভাইয়া তো বাড়িতে নেই বিদেশে চলে গেছে। ”
সিমি — “হা বিদেশি কুত্তা চলে যাওয়ায় নিজেরে পাখি লাগছে যেইখানে খুশি সেখানে উড়ে বেড়াচ্ছি।”
সামিয়া এইটু কেশে বললো,,,

“তোকে এখন নিশান ভাই এর রুমে যেতে হবে, গিয়ে নিশান ভাইয়ার কাভার্ড থেকে একটা সাদা শার্ট বাহির করবি। সেইটা পড়বি সুন্দর করে সাজবি। মানে ঠোঁটে লিপিস্টিক দিবি চোখে কাজল মুখে মেকাপ চুলগুলো ছেড়ে দিবি। আর অবশ্যই শার্ট এর ডান পাশের হাতা একটু নামিয়ে রাখবি মানে তোর তো তিল আছে ডান হাতে বাহুর কাছে। ঐরকম করে একটু স্টাইল দিয়ে সুন্দর কয়টা পিক তুলে আমাদের এনে দেখা যা।”
সামিয়ার কথা শুনে সিমি বললো,,
“শালিরা আমাকে ঘুরেফিরে ওই বিদেশি কুত্তার রুমেই পাঠাচ্ছিস কেন?”
জারা — “উহুম উহুম ভাবি যেইটা বলা হয়েছে আপনাকে সেইটাই করতে হবে। ভাইয়া তো বাড়িতে নেই যাও যাও আমরা অপেক্ষা করছি।”
সিমি উঠে দাঁড়িয়ে বললো,,

“যাচ্ছি যাচ্ছি কপাল করে মিরাজাফরের মতো বোন পায়সী যা শত্রুর প্রয়োজন পড়বে না।”
বলে সিমি চলে গেলো। সিমির যাওয়ার সাথে সাথে ওরা তিনজন ও বেড়িয়ে আসলো। সিমি সোজা নিশানের রুমে ঢুকলো। ওরা তিনজন দরজার কাছে এসে একটু ফাঁকা করে দেখতে লাগলো সিমি কি করে সেইটা। সিমি রুমে ঢুকে লাইট অন করলো। কাভার্ড এর কাছে গিয়ে একটা সাদা শার্ট হাতে নিলো শার্ট টা সামনে এনে বললো,,
“বিদেশি কুত্তা, আপনি কোন দেশে চলে গেলেন কিন্তূ আমার জাওড়া বোন গুলো আপনাকে আবার আনতে বলছে মানে আপনার পোশাক আমাকে পড়তে বলছে পোড়া কপাল।”

বলে সিমি ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো। পাঁচ মিনিটের মধ্যে নিশানের সাদা শার্ট পরেই বেড়িয়ে আসলো। ডেসিং টেবিলের কাছে গেলো। সবকিছু খোঁজাখুঁজি করলো না এইখানে তার সাজার জিনিষ কিছু নেই কি করবে এইবার? তখনি তার চোখ যাই টি টেবিলে রাখা তার কালো ব্যাগ এ তার ব্যাগে সবসময় সাজ গজ এর জিনিষ থাকে। সে ব্যাগ টা এনে ডেসিং টেবিলের সামনে নিজেকে সাজাতে লাগলো। মুখে পন্ডস ক্রিম মাখলো। ঠোঁটে লাল লিপিস্টিক গাঢ় করে দিলো। চোখে কাজল। আর চুলগুলো সুন্দর করে আছড়িয়ে হাল্কা উঁচু করে বাঁধলো। কিন্তূ এখনো তাকে আরেক টা কাজ করতে হবে ঘাড় থেকে জামা একটু সরাতে হবে। সিমি ঘাড় থেকে জামা সরিয়ে দিলো। তারপর নিজেকে আয়নায় দেখলো, খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে নিজেকে দেখে বললো,,,

“না মন্দ লাগছে না বিদেশি কুত্তার শার্ট পরে দারুন লাগছে আমাকে ইসসস সিমি সেইই লাগছে তোকে।”
সিমি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন পোজ দিলো কেমন ভাবে থাকলে কেমন ভাবে দাঁড়ালে সুন্দর লাগে তাকে। এইদিকে সিমির কান্ড দেখে তারা তিনজন হাসছে। সিমি এইবার তার ফোন বাহির করা কয়টা পিক তুললো সুন্দর সুন্দর। ফোন রেখে আবারো আয়নার সামনে পোজ দিতে লাগলো। মডেলিং রা যেইভাবে হেঁটে যাই সিমি ও ওদের মতো করে রুমের এই মাথা থেকে ওই মাথা হাঁটতে লাগলো।

সিমির এইসব কাজ কাম দেখে জারা, সামিয়া, রাত্রি হাসি যেন কন্ট্রোল করতে পারছেনা। এইদিকে সিমি ঐভাবে করেই যাচ্ছে এইসব করতে করতে তার হাতা আরো খানিক নেমে গেলো। প্রায় বিশ মিনিট মতো এইরকম এইদিকে ওইদিকে ঘুরে মডেলিং করে বিভিন্ন পোজ দিয়ে থামলো সে। আবারো ওয়াশরুম এ ঢুকলো একেবারে ফ্রেশ হয়ে বেড়িয়ে আসলো। সাদা শার্ট টা আবারো সুন্দর করে ভাজ করে কাভার্ড এ তুলে রাখলো। সিমি কে বাহির হতে দেখে ওরা তিনজন দ্রুত রুমে চলে গেলো। সিমি দরজা লাগিয়ে রুমে গেলো। ওদের পিক গুলো দেখালো। সামিয়া দেখে বললো,,,
“সিমিরে তোকে যা লাগছে না জিজু দেখলে একেবারে পাগল হয়ে যাবে।”
সিমি মুখ ভাঙিয়ে বললো,,
“ওই বিদেশি কুত্তা আসলেই পাগল দেশে ফিরলে বড়ো আব্বু কে বলে পাবনায় ভর্তি করিয়ে দেবো।”

ইতালি তে এসে সেই যে বিজনেস নিয়ে কাজ করছে অনেক টা কাজ এগিয়ে। অর্ধেক রাতে বাড়ি ফিরলো জিহান আর নিশান দুইজনে বাইরে থেকে খেয়ে আসছে। তাই নিজেদের রুমে চলে গেছে।নিশান রুমে ঢুকে দরজা লক করে ল্যাপটপ অন করলো বেডের উপরে ল্যাপটপ রেখে সেট করে দিলো সিমির রুমে থাকা হিডেন ক্যামেরার ফুটেজ যেইখানে সিমিরা খেলা করছে। তখনি সিমি উঠে যাই। নিশান সিমির যাওয়া দেখে আবারো নিজের রুমের হিডেন ক্যামেরার ফুটেজ আনে। দেখে সেখানে সিমি ঢুকছে। নিশান ব্লেজার খুলে শার্ট তাও খুলে ফেললো। টাওয়াল পরে প্যান্ট খুলে ফেললো। তার দৃষ্টি ল্যাপটপ এর উপরে সিমি কাভার্ড থেকে তার শার্ট বাহির করে নিয়ে যাচ্ছে। নিশান ল্যাপটপ নিয়ে সোফায় বসলো টি টেবিলের উপরে ল্যাপটপ রেখে এক গ্লাস পানি খেলো। ল্যাপটপ এর স্কিন এ চোখ যেতেই দেখলো সিমি তার শার্ট পরে বাহির হয়েছে। নিশান ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে। সিমি সাজগোজ করছে সবকিছু দেখলো নিশান। কিন্তূ য্খন ঘাড় থেকে শার্ট নামিয়ে দিলো এইটা দেখে নিশান থ মেরে গেলো। তাকিয়ে রইলো সিমির দিকে এইভাবে থাকাই তাকে hot লাগছে অনেক নিশান চোখ বন্ধ করে নিজেকে কন্ট্রোল করছে। বিড়বিড় করে বললো,,,

তুই শুধু আমার উন্মাদনা পর্ব ১৭

“বিলিভ মি ইশু যদি দেশে থাকতাম তবে আজকেই ফরজ কাজ সেরে ফেলতাম।আমাকে এইভাবে সিডিউস করিয়ে নিজে ভালোই আছিস।”
নিশান আবারো তাকালো। এইবার সিমি বিভিন্ন ধরণের পোজ দিচ্ছে যেইটা দেখে নিশানের নিজেরই হাসি লাগছে। তারপর মডেলিং দের মতো হাঁটা যা দেখে নিশান হেসে ফেললো। হাঁটতে হাঁটতে য্খন আরো সরে গেলো শার্ট তখন নিশান ল্যাপটপ অফ করে দিলো। চোখ বন্ধ করে মাথা নাড়াতে নাড়াতে বললো,,,
“কুল নিশান কুল নিজেকে কন্ট্রোল কর। এর উসুল একেবারে তুলে নিস্। কন্ট্রোল ইওর সেল্ফ নিশান।”
নিশান উঠে এইবার ওয়াশরুম এ চলে গেলো লম্বা সাওয়ার নেওয়া লাগবে।

তুই শুধু আমার উন্মাদনা পর্ব ১৯