ধূসর রংধনু ৩ পর্ব ২৬

ধূসর রংধনু ৩ পর্ব ২৬
মাহিরা ইসলাম মাহী

সন্ধ্যা নামার পরমুহূর্ত।
পড়াশোনা বাদ দিয়ে মাহরিসা বসে আছে বেলকনিতে। শিরশিরে হিমেল হাওয়া দিচ্ছে প্রকৃতি।
হালকা শীত শীত পরতে শুরু করেছে ইতোমধ্যে। দুদিন যাবত সে লক্ষ করছে তার বেলকনিতে থাকা গাঁধা ফুলের গাছ দুটোয় শিশির জমতে দেখা যাচ্ছে। গাছ দুটো এনেছিলো সে তার বান্ধবী কাছ হতে।
ছোট ছোট কড়ি ও এসেছে তাতে কতগুলো।মাহরিসা চিন্তিত ফুলগুলা বড় হবে নাকি ছোট। ছোট হলে তার এত দিনের সকল কষ্ট বৃথা।

মাহরিসা ফোন হাতে নিয়ে আদ্রিতের নাম্বারে ডায়াল করে। খরগোশ দুটোর জন্য এখন তার নোজপিনের দোকানের লোকেশন জানতে হবে।
আদ্রিত ডিউটিতে ছিল।পেশেন্টের উন্নতি, অবনতির ফাইল চেক করছিলো দাঁড়িয়ে।
পকেটে থাকা হঠাৎ ফোনটা বেঁজে উঠলো তার।
বের করে মেরিগোল্ড সেভ করা নাম্বার খানা দৃষ্টিগোচর হতেই বাঁকা হাসে।
বোকা পাখিটা আজ তাকে নিজে থেকে ফোন করেছে? বাহ ইন্টারেস্টিং।
আদ্রিত ফোন রিসিভ করে।মুহুর্তে ফাইল রেখে সামনে হাঁটে নিজ চেম্বারের উদ্দেশ্যে।
তার পেশেন্ট অবাক দৃষ্টিতে চোখ দুটো গোল গোল করে শুধু ডাক্তার সাহেবের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“ কেউ কি কাউকে মিস করছিলো? আসব?”
“ কেউ আপনাকে মিস করছিলো না আদ্রিত ভাই।”
“ তুই শিওর?ওকে, এ্যাজ ইউ’র উইশ, বাই রাখছি।”
আদ্রিত ফোন কাটতে উদ্যত হয়।
“ আরে না না শুনুন…”
“ জ্বী বলুন।”
“ নোজপিনটা কোন দোকান থেকে কিনেছেন আদ্রিত ভাই?”
“ ভাই টুকু বাদ দে বলছি।”
“ মানে?”
“ আশ্চর্য তোরা দুই ভাই বোন এত মানে মানে করিস কেন বলতো? সোজা কথা বুঝিস না তোরা?”
মাহরিসা আমতা আমতা করে,

“ আ..আদ্রি..ত,”
“ স্টপ।আ.. আ…আ কি হুউউ? সারেগামাপা গান হচ্ছে? “
“ আদু।”
“ সাটআপ।আর একটা শব্দ বলিস না তুই। তোকে আস্ত রাখবোনা আমি মারু।যাস্ট সাটআপ।”
মাহরিসা কাঁদো কাঁদো মুখ করে বলল,
“ বলুন না প্লিজ শুধু জায়গাটার নাম টা বলে দিন।”
“ নাম দিয়ে কি করবি তুই? ফর কাইন্ড ইউর ইনফরমেশন এটা দিয়ে কোনো খাবার তৈরি করা যাবে না। আরো লাগবে তোর? বল? এনে দিচ্ছি।”
মাহরিসা গাল ফুলায়।
কোনো জবাব দেয় না।মাহরিসার নিরবতা লক্ষ করে আদ্রিত সুধায়,
“ ঠিক আছে বলতে পারি তবে একটা শর্তে।”
মাহরিসার চোখ দুটো চকচক করে উঠে মুহুর্তেই।

“ বলুন?”
“ আমার শর্ত, কাল আমি তোর কাছে যা চাইবো তাই দিতে হবে এগ্রি?”
মাহরিসা শুষ্ক ঢোক গিলে রাজি বলে দেয়।এছাড়া তার কাছে আর কোনো উপায় ওও নেই।
“ লোকেশন বলুন প্লিজ।”
“ লন্ডন।”
আদ্রিত নির্লিপ্ত কন্ঠে সুধায়।
আদ্রিতের এমন জবাবে মাহরিসা বেকুব বনে।
“ মানে? কি আবল-তাবল বলছেন?”
“ তোর কি হয় আমি মিথ্যা বলছি?তোর জন্য মিথ্যার বহর সাজাচ্ছি?”
মাহরিসা মাথা নাড়ায়।অর্থাৎ করছে না।তবে উত্তরটা এমন হবে সে নিজেও আশা করেনি।
তাছাড়া তার মনে প্রশ্ন জাগছে তার আদু ভাইয়া আগেই থেকেই বিদেশ ভূঁইয়ে তার জন্য নোজপিন নিয়ে এসেছে?

“ আপনি আমার জন্য এনেছিলেন এটা?”
আদ্রিত ঝটপট উত্তর করে,
“ উহু আমার ওয়াইফের জন্য।”
মাহরিসা লাজুক হাসে।
“ হাসছিস কেন? আমার ওয়াইফ অন্যকেউ হলে তোর জায়গা তার হতো।”
আদ্রিতের এবারের কথায় মাহরিসার রাগ হয়।ভীষণ রাগ হয়।অন্যকারো জায়গা তার আদু ভাইয়ের নিকট হবে কেন? হুয়াই?
“ তো দিন না দিন। তাকে নিয়েই দিয়ে দিন সব।আমি কাল সব ফিরিয়ে দেব।”
রাগে দুঃখে খট করে ফোনটা কেটে দেয় সে।
আদ্রিত অবুঝ অর্ধাঙ্গিনীর নিরব অভিমানে গাঁ দুলিয়ে হাসে।
তার ছোট মেরিগোল্ড তবে অভিমানি হতেও শিখে গেছে।বাহ দারুণ ইন্টারেস্টিং।

অদিতির আজ প্রচন্ড তাড়া।
বাসা থেকে বের হতে লেট করে ফেলেছে সে। নেহাৎ-ই সবটাই দোষ তার মা তৃপ্তির। মা খাওয়ার জন্য তাকে জোড় না করলে নির্ঘাত আরো ক’টা মিনিট আগে পৌঁছাতে পারতো সে।
মায়ের কথা সকালে খালি পেটে বের হওয়া যাবে না।বের হবে তো সারাদিন না খেয়ে থাকবে। সারাদিনে তোমায় আর একবারো খেতে দেখলে এক থাপ্পড় মেরে ঘরের দ্বার দিয়ে বন্ধ করে আটকে রাখা হবে তাকে।
অদিতি ঠিকই বোঝে এসব তার মায়ের কারসাজি।সব তাকে খাবার খাওয়ানোর ধান্ধা মাত্র।
তাই তো দেরী হওয়ায় ঝড়ের গতিতে পা চালাচ্ছে সে।
কিন্তু ঝড় থেমে গিয়ে হঠাৎ তূফানের গতিতে সে কারো সঙ্গে ধাক্কা খেল তুমুল বেগে।
ছিটকে পরলো সে কংক্রিটের তৈরি ফ্লোরে।

পুরুষালী শক্ত পোক্ত বুকে কপালে বারি খাওয়ার দরুণ ব্যথায় টনটন করে উঠলো অদিতির কপাল খানা।
জাওয়াদ ভ্রু কুঁচকে চেয়ে আছে অদিতির হতভম্ব মুখশ্রীর পানে।
ইতোমধ্যে ক্লাস শুরু হওয়ায় পুরো করিডর ফাঁকা।
অদিতি কাঁদো কাঁদো মুখ করে উপরে তাকালো।
জাওয়াদের মুখশ্রী অবলোকন করে সে আরো চুপসে গেল।
জাওয়াদ চোখ ছোট ছোট করে এক হাত নিচু করে বাড়িয়ে দিলো। নিচু কন্ঠে হেয়ালি স্বরে বলল,
“ আপনার লক্ষ টাকা দিয়ে কেনা ফ্লাইট এর সময় চলে যাচ্ছে না মিসসস অতিথি। এভাবে দৌঁড়ালে শুধু জীবন্ত মানুষের উপরে পরবেন না,বরং দেখা গেল রেলিং টপকে তিন তলা থেকেও নিচে পরতে পারেন, সঙ্গে হাড়গোড় ভাঙা তো এক্সট্রা পরিশ্রম। যাকে বলে বিনা পয়সার পরিশ্রম।
উঠে আসুন।”
অদিতি আরো চুপসে গেল,নিজের নানখানা সুধরে জানায়,

“ অতিথি নয় স্যার অদিতি।”
“ আই নো।বাট আপনি আমার জীবনে শীতকালে হঠাৎ আগমন করা অতিথি পাখিই বটে।”
অদিতি জাওয়াদের কথার মানে বুঝতে সক্ষম হয় না।পিটপিট করে চায় সে।
“হাত ধরে উঠে আসতে বলেছি কথা কানে যায় না?”
জাওয়াদের রাগী স্বরে অদিতি থতমত খায়। এভাবে রেগে যাওয়ার কি আছে আশ্চর্য।
নিজের কম্পনরত হাত রাখে সে প্রফেসর জাওয়াদের শক্ত পোক্ত হাতে।অথচ সে যদি জানতো এই হাত ধরাই তার জীবনের কাল হবে তবে এ হাত সে ইহজনমে ছোঁয়ার চেষ্টা করতো না।উহু কখনোই না।
প্রফেসরের ঠান্ডা, শীতল হাতের সঙ্গে নিজের উষ্ণ হাতের স্পর্শ হতেই শিউরে উঠে অদিতি।
জাওয়াদ সেই ভীতু মুখশ্রীর পানে চেয়ে বাঁকা হাসে।
জাওয়াদ শক্ত করে আঁকড়ে ধরে ফর্সা হাত খানা।

এক টানে উঠিয়ে নেয় নাজুক মেয়েটাকে পুরো দেহ সহিত।
সঙ্গে সঙ্গে অদিতি নিজের হাত ছাড়িয়ে দৌঁড়ে পালায়।
অদৃশ্য এক অনুভূতি তার মাঝে বাঁসা বাধে চরম মাত্রায়।
ইতোমধ্যে প্রথম ক্লাসটা শেষ।
অদিতিকে এভাবে হাঁফাতে হাঁফাতে ক্লাসে প্রবেশ করতে দেখে কাশফি আর নাওমী অদ্ভুত চোখে চায়।
সেই মুহুর্তে ক্লাসে প্রবেশ করে প্রফেসর জাওয়াদ।
পুনরায় হৃদযন্ত্রের ধুকপুক ধ্বনি এলোমেলো ছুটে পালাতে চেষ্টায় খুব অদিতির।কিন্তু সম্ভব হয় না।
অদিতি শুষ্ক ঢোক গিলে।
জাওয়াদ একপলক অদিতির পানে চেয়ে নিজ কার্যে মনোযোগী হয়। ঘোষণা দেয় আগামীকাল কেমিস্ট্রি ল্যাবে একটি ইম্পর্টেন্ট এক্সপেরিমেন্ট আছে। প্রফেসর জাওয়াদের সঙ্গে জুনিয়রদের সাহায্য করতে কিছু সিনিয়র ভাইয়া আপুরাও তাতে অংশ নেবে।সকলকে থাকার আদেশ করা হলো।
সকলে মাথা নাড়ায়।

ভার্সিটি থেকে বাড়ি ফেরার পথে নিস্তব্ধতা খেয়াল করে সাদাফ আর নাওমী নামের মেয়েটা ফিসফিস করে কিছু নিয়ে কথা বলছে।
নিস্তব্ধতা ভ্রু কুঁচকে এগিয়ে গেল।
“কি করছিস তোরা এখানে?”
নিস্তব্ধতার আগমনে নাওমী দ্রুত কেটে পরলো।
সাদাফ জবাব না দিয়ে নিস্তব্ধতাকে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিতেই নিস্তব্ধতা বাঁধা হয়ে দাঁড়ালো সামনে,
“দাঁড়া।কি লুকচ্ছিস তুই আমার থেকে?”
সাদাফ গম্ভীর মুখ করে দাঁড়িয়ে পরলো।প্যান্টের পকেটে দু হাত গুঁজে ভাবলেশহীন কন্ঠে প্রত্যুত্তর করলো,

“ নাথিং ”
“তাই?”
সাদাফ মাথা নাড়লো।
নিস্তব্ধতা এক মুহুর্তে অপেক্ষা করলো না।
“ নাথিং তাই না? নাথিং?”
নিজের হাতের বড় বড় নখ গুলো নিস্তব্ধতা সাদাফের গলায় গেঁথে দিলো।
সাদাফের হাতে নিজের সর্বস্ব শক্তি প্রয়োগ করে দাঁত বসিয়ে কাঁমড় বসালো।
ঘটনার আকস্মিকতায় সাদাফ হতভম্ব নেত্রে চেয়ে। তীব্র ব্যথায় চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে নিলো।
“ নিরবতার বাচ্চা, কাঁচা মাংশ খেয়ে ফেলবি নাকি আমার? আমাকে কি তোর লোভনীয় খাদ্য মনে হয়?”
“ না লোভনীয় খাদ্য নয়, পঁচা, গন্ধ যুক্ত খাদ্য মনে হয় আমার তোকে। লোভনীয় হলে তুই কি ভাবলি এখনো আমার সামনে আস্ত দাঁড়িয়ে থাকতি? উহু একদমি না আমি সেই সুযোগই দিতাম না।একদম লবন মরিচ ছাড়া তোকে কাঁচা চিবিয়ে খেতাম সজনেডাঁটার বাচ্চা। “
সাদাফ হাতের দিকে অসহায় মুখ করে চেয়ে।
নিস্তব্ধতা মুখ ঝামটি মেরে চলে গেল।

ক্লাস শেষে ভার্সিটি আজ প্রায়ই ফাঁকা।
গেটের কাছে পৌঁছানোর তাগিদে কাশফি যখন পা বাড়ালো কি মনে করে পেছনের দিকটায় চাইতেই নীলাদ্রকে বাইকে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলে দেখলো সে। সঙ্গে তার নীল সমুদ্র কে মনের সুখে সিগারেট ফঁকতে দেখে তার নীতির বিরুদ্ধ এক অদ্ভুত ইচ্ছে জাগ্রত হলো হৃদয়ে।
মনের ইচ্ছে তার কিছুতেই অপূর্ণ রাখা সাজে না।উহু একদমি না।
চট করে গুটি গুটি পা ফেঁলে নীলাদ্র’র পানে এগিয়ে গেল সে।
নীলাদ্র’র দিকে চেয়ে দাঁত কেলিয়ে হাঁসলো।
নীলাদ্র তার হঠাৎ অদ্ভুত হাসি দেখে ভ্রু কুঁচকে চাইলো।
নিজের ইচ্ছেখানা পূরণ করতে কাশফি ঝট করে নীলাদ্র’র হাত থেকে সিগারেট টা নিয়ে ফেলে দিয়ে আবারো দাঁত কেলিয়ে হাসলো।
নীলাদ্র চোখ বড় বড় করে রাগি চোখে চাইলো।
ধমকে উঠলো,

“ স্টুপিড, কি করলে তুমি এটা হুপিং কাঁশি।”
“ আ..মি তো আপনাকে সেটাই বোঝাতে চেষ্টা করছি নীল সমুদ্র । যখনই দেখি তখনই আপনি বিঁড়ি টানছেন। ক্লাসে তো বাহিরে,রাস্তায় তে ঘাটে।আহাঃ এই সিম্পল কথাটা আপনি বুঝতে পারছেন না কেন বলুন তো? এত বেশি বিঁড়ি খেলে কাশির ভাইরাসে আক্রমন করবে তো আপনায়।”
“ সাটআপ,বিঁড়ি নয় এটা বেন্সন সিগারেট , ইডিয়েট।আর শুনো কাশি একদম এসব আজে বাজে নামে ডাকবে না আমায়।”
“ বা রে… আর আপনি যে আমায় কাশি ডাকছেন, তার বেলা? কি রকম করে নির্দিধায় আমায় রোগ বানিয়ে দিলেন।”
নীলাদ্র হাসলো।
মুহুর্তে কাশফির এক হাত শক্ত করে চেপে ধরলো।
ফিসফিস করে বলল,

“ এত সাহস জোগালে কি করে? আমার হাত থেকে সিগারেট নিয়ে ফেলে দিলে , এত্ত সাহস?”
কাশফি শুষ্ক ঢোক গিলে।পরপর হাতের ব্যাথায় কাঁদো কাঁদো মুখ করে চায় সে।
“ হাতে ব্যথা পাচ্ছি নীল সমুদ্র। “
“ ব্যথা দেওয়ার জন্যই তো ধরেছি। আমার সিগারেট ছুবে আর সে আগুনে একটু খানি ঝলসাবে না? তা কি হয়?”
“ আর ধরবো না । ছাড়ুন প্লিজ।”
“ সত্যিই তো?”
“ এই দেখুন কানে হাত দিচ্ছি। তিন সত্যি প্রমিস।”
নীলাদ্র হাত ছেড়ে দিতেই কাশফি দৌঁড়ে পালায়।
ইহজনমে সে আর অসভ্য নীল সমুদ্রের সামনে আসবে না।তবে তার এই কথার ক্ষমতা কতদিন টেকে তাই দেখার পালা।

নাওমী আজ টিউশনি তে এলে বাসন্তী তাকে জেঁকে ধরে।
“ সিদ্ধান্ত নিয়েছো মা? কবে আসছো? আর কোনো সমস্যা হয়েছিল কি?”
নাওমী কি জবাব দিবে তাই ভাবছে।
“ আসলে আন্টি ভাবছিলাম সামনে সপ্তাহেই উঠবো। “
“ আলহামদুলিল্লাহ। শুনে খুশি হলাম। ডেট টা আমায় জানিয়ে দিও কিন্তু বুঝলে মা।”
নাওমী মাথায় নাড়ায়।
নীবিড় আপেল চিবুতে চিবুতে ড্রয়িং রুমে এসে সোফায় ঠিক নাওমীর পাশ ঘেঁষে বসে পরে।
ফিসফিস করে বলে,

“ অবশেষে তবে নাউডুবা চশমিশ ঠিক আমাদের ঘাড়ে এসেই জুঁড়ে বসলে তাইনা।মা বললো আর তোমার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের এখানে হাজির হতে হবে? আশ্চর্য। বেহায়া মেয়ে মানুষ।“
নাওমী দাঁতে দাঁত চাপে,
“ শুনুন আপনাদের এখানে না মাগনা থাকবো না। অবশ্যই টাকা দিয়ে তবেই থাকবো বুঝলেন মহিষের বাচ্চা। “
নীবিড় শিঁস বাজায়।
“ আমি মহিষের বাচ্চা হলে তুমি কি গন্ডারের বাচ্চা? দেখে তো তাই মনে হচ্ছে। দিন দিন যেভাবে খেয়ে খেয়ে মোটা হচ্ছো।তোমার ফিগার ডাউন হয়ে যাচ্ছে। “

নাওমী চোখ বড় বড় করে চায়।কত্তবড় অসভ্য ছেলে। নিজ পরনের ওড়না টানে সঙ্গে সঙ্গে নাওমী।
“ এই একদব বাজে কথা বলবেন না আপনি।লজ্জা করে না মেয়েদের ফিগারের দিকে চাইতে।”
“ উহু তোমার ফিগারের দিকে চাইতে লজ্জা করে।আমার চোখ ও তোমার ওই ভুটকো ফিগার দেখে তাচ্ছিল্য হাসে।শুনো মেয়ে এই নীবিড়ের চয়েস না এতটাও খারাপ নয় যে তোমার মতো হুতুমপেঁচার মতো ফিগারের দিকে তাকাবে।”
“ অসভ্য ছেলে। বাজে ছেলে, পঁচা ছেলে।আপনার নামে আমি মানহানি মামলা দেব। ”
“ তো দিতে কে নিষেধ করেছে তোমায়?”

নীবিড় শিঁস বাজাতে বাজাতে নিজের রুমের দিকে এগোয়।
নিশান-নীশানি উঁকিঝুঁকি মেরে তাদের নতুন ম্যামের রাগে লাল হওয়া মুখশ্রী অবলোকন করে শয়তানী হাসে। বেশ জব্দ হয়েছে।বেশ হয়েছে।তার দাদাভাই, ইউ আর দ্যা বেস্ট।।তাদের দিয়ে জোড় করে প্রতিদিন হোমওয়ার্ক করানো তাইনা।

ধূসর রংধনু ৩ পর্ব ২৫

নাওমীর বিচ্ছু দুটোর স্টাডি রুমের দিকে চোখ পরতেই দরজা ধরে দাঁড়িয়ে থাকা নিশান-নীশানির দিকে চোখ গরম করে চায়।
চোখ দিয়ে দুটোকে গিলে ফেলার পায়তারা।

ধূসর রংধনু ৩ পর্ব ২৭